ছুটি বললেই কেন যেন মনে পড়ে যায় একটা সবুজ রঙের ট্রেন, সবুজ মাঠ চিরে হালকা শীতের হাওয়ার ভিতর দিয়ে সোনালী রোদের ভিতর দিয়ে চলেছে দূরপাল্লায়। কূউ উ উ ঝিকঝিক করে ছুটে চলেছে। আকাশ নীল, নীল, নীল, দূরে দেখা যায় সমুদ্রের তীররেখা, পাশ দিয়ে চলে আমাদের ট্রেন। কেন জানি এই ছবিটা মনে পড়ে, এরকম দেখিনি কিন্তু কোথাও, মনে মনে বানানো একটা ছবি, সেই ছোট্টোবেলায় বানানো, তারপরে বড় হতে হতে কেবল আরো গাঢ়ই হয়েছে ছবি, একটুও মোছে নি।
ট্রেনের দেশের মানুষ যে আমি! লোকাল বা দূরপাল্লা দু'খানা ব্যাপারই আমাদের শৈশব থেকেই খুব চেনা, তাই হয়তো স্বপ্নের বেড়ানোতেও একটা ছুটে চলা ট্রেন। সেসব থেকে উপড়ে গিয়ে ট্রেনবিরল দেশে চলে এসেও সেই স্বপ্নটা মোছে না।
ট্রেনে করে দেশের এ প্রান্তে ও প্রান্তে ঘুরে বেড়াবার কত ছায়া-ছায়া আলো-আলো স্মৃতি! পুরী যাবার পথে ট্রেন একজায়গায় এসে সমুদ্রের দিকে বাঁক নেয়, কোন স্টেশান সেটা? মরমী লোকেরা সেখান থেকেই নাকি সমুদ্রের গন্ধ পেতে থাকে। আমি অবশ্য পাই নি। পুরীতে নেমে একেবারে রিকশা করে যেতে সমুদ্রের সাথে মুখোমুখি হবার পরে শক খেলাম। আমি জানি যতবার যাবো ততবার শক খাবো। বহুবার বহু সমুদ্র দেখা থাকলেও হবে, না থাকলেও হবে। ওখানে একটা ম্যাজিক আছে।
গোল্লা পাকিয়ে যাচ্ছে সময়। বোম্বে তখনো মুম্বাই হয় নি। আমরা সেখানে যাচ্ছিলামও না। আমরা যাচ্ছিলাম পুনে। কিন্তু ট্রেন প্রথমে সোজা গিয়ে নামাবে বোম্বেতে, সেখান থেকে আরেক ট্রেনে পুনে। নামালো বোম্বেতে। মাঝরাতের শহর ঘোরা ক'জনে মিলে। উপায় তো নেই, পুনের ট্রেন সকালে। ততক্ষণ কী করা? কেউ কেউ অবশ্য বেড়ালো না, স্টেশানে বসে হাত নেড়ে চলে ফিরে বোবা শ্যারাড খেললো।
তারপরে ফুটফুটে ভোরে সেই ট্রেন এলো। তারপরে বনপাহাড়ের ভিতর দিয়ে টানেলের ভিতর দিয়ে পুনের দিকে যাওয়া। আহা। ফট করে টানেলের ভিতর ঢুকে পড়ে ট্রেন, দিনেদুপুরে ঘন অন্ধকার। একেবারে মিশকালো রাত। কী হোলো? ছোট্টোবেলার প্রথম টানেলের স্মৃতি মনে পড়ে, কোন ট্রেন ছিলো সেটা? কোথায়? শিরশির করে গা, ঠিক তেমনই। প্রথমবারের মত। আবার ফট করে বেরিয়ে এসেছে ট্রেন, টানেল শেষ, আবার ফটফটে দিনের আলো।
আরেকবার, সে এক অক্টোবর মাস। পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখতে বেরিয়ে পড়েছে দলে দলে মানুষ। সেই শেষ রাতে লোকের ভীড়ে আমাদের গোটা স্টেশন একেবারে সরগরম। এরকম ভোররাতে এতো লোক নিশ্চয় স্টেশন দেখেনি বেশী। তারপরে হাওড়া গিয়ে ফের আমাদের ধরতে হলো উলুবেরিয়ার ট্রেন। হাওড়া স্টেশন থেকেই টকটকে লাল সূর্যোদয় দেখা হয়ে গেল। চাঁদের ছায়া সূর্যথালা প্রথম ছোঁবে সাতটার পরে, সে দেরি আছে। চশমাগুলো ঠিকঠাক আছে কিনা দেখে নিচ্ছে লোকেরা। মানুষ দলে দলে ছুটছে। মনে হোলো এরকম পাগল হয়ে এত মানুষ যায় কেবল কুম্ভমেলায়, যদিও নিজে কখনো কুম্ভমেলা দেখি নি। ট্রেন চলে। বীরশিবপুর পার হয়ে কুলগাছিয়া। সেখানেই দলেবলে নেমে পড়ি আমরা পাঁচজন। পূর্ণগ্রহণের গতিপথ এখান দিয়েও গেছে।
চলন্ত ট্রেনের দোলানি রহস্যময় নাচের মতন। রাতের বুক চিরে দূরপাল্লার ট্রেন চলে আর চাকাগুলো কীজানি গান করে লাইনের সাথে সাথে, সমস্ত ট্রেনটা আশ্চর্য ছন্দে নাচে। তারায় ভরা আকাশের নিচ দিয়ে খোলা প্রান্তর চিরে চলে যাচ্ছে ট্রেন, আর কামরায় কামরায় ভরা ঘুম। কেবল ইচ্ছে করতো ট্রেনের ছাদের উপর শুয়ে দেখলে কেমন লাগে এই যাদুবাস্তব। সে আর হয়ে ওঠেনি।
জানি, সেই সবুজ রঙের ট্রেনটা কেবল আসছে আর আসছে। একদিন আমার চলার সাথে তার চলার দেখা হবে, সে তুলে নেবে আমাকে তার কামরায়। ততদিন সে আসছে আর আসছে, পাহাড়ের পাশ দিয়ে, সাগরের পাশ দিয়ে, ঝিকিরঝিক, ঝিকিরঝিক .....
চলতে চলতে থামবো কোথায় গানের শেষে?
মেঘমোহনার আলোকলতার বনের দেশে?
বাক্সো ভরা শরৎচিঠির আল্পনাতে
কাজলদিঘির মায়ার ঘরের গল্প না সে
চলতে চলতে থামবো কোথায় গল্প শেষে?
তারায় ভরা অবাক রাতের বিজন দেশে?
মন্তব্য
পছন্দনীয়ের স্বগতোক্তি: 'আমি বিজয় দেখেছি!'
এটা ইস্কুলবেলা বা উপকথা সিরিজ নয়, কাজেই প্রথম মন্তব্যের দায় নেই।
(তবে খুব ইচ্ছে করলে খানিকটা কচু খেয়ে নিতে পারেন...)
দুনিয়া শুদ্ধ নিজেই খেয়ে ফেললে অন্যদের জন্য তো কচুই থাকে এমন হিংসুটে সৎভাইও হয়না! কেমন রে কচু খেতে বলে
কারেকশন, সবকিছু খাওয়ার দায় আমি একা নিতে রাজি আছি, কিন্তু দুনিয়াসুদ্ধ মুরগী আমি একা খেয়ে কমাইনি, ওই কাজে কৌস্তুভের কিছু অবদান আছে।
আমার সেজ চাচি কচুর লতি খুব শখ করে খান।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
নাও সামলাও! একজন কচুর কথা বলে, ইনি আবার লতি নিয়ে এলেন খাওয়া নিয়েই থাকেন ভাইসকল...আমি ঘুমোতে চললাম
লেখা যথারীতি ভালো লাগলো। শেষের কবিতাটুকু একটু বেশিই সুন্দর......
ধন্যবাদ মৌনকুহর।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সুবোধ বালক ছন্দ বলছে, "আমি যুদ্ধ দেখেছি।" অবিকল সোনার কেল্লার মুকুলের মতো গলা।
নাও হে বালক, এক গেলাস ঘোলের সরবত নাও।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পাজির পাঝারা একেকটা! এ আবার দাঁত বের করে দেখাচ্ছে, যেন পেপসোডেন্টের বিজ্ঞাপন
ঘোলের শরবত? আশালতা আয়নামতিকে চুরমুর, চানাচুর, আলুকাবলি, চটপটি খাইয়ে আমার বেলায় শেষটা "ঘোল খাওয়ালেন"?
আহা ঘোলকে সাধুভাষায় বলে দধি-সরবত। মাথা ঠান্ডা রাখতে এই স্নিগ্ধ পানীয়ের জুড়ি নাই। কিছুদিন আগে যেরকম "প্রীতিভোজন" করলে, এখন কিছুদিন তোমার "চিপিটক সিক্ত করিয়া দধিশর্করা সহযোগে" খাইতে হইবে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সরবত কী করে সাধুভাষা হল?
সরবতের সাধুভাষা কী?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
মডুদের কাছে একখান আন্তরিক অনুরোধ। মাউস দিয়ে বাংলার বাক্সোটা একটু ঠিক করুন, একটু বড় করুন, আর সব এমনিতে হচ্ছে, শুধু অ ৎ ঞ এসব নিতে হয় ওখান থেকে। আর চন্দ্রবিন্দু একেবারে পারছি না।
আগাম ধন্যবাদ রইলো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
একটা ট্রেনের হঠাৎ থামায়
সবুজ রঙের একটা দারুন অবয়বে
নড়েচড়ে জেগে উঠে অঘোর শৈশব;
বহুদূর দেখা যায় অবারিত চরাচর -
তার মাঝে মিহিন ঘাস, কাঁশবনে
হঠাৎ তাকিয়ে পাওয়া একটা ফিঙে
বহুদূর পড়ে থাকে -
সেসব পুরনো দিন হাত দিয়ে এখনো ছুলে
ভেতরের জলে জলে অবিরাম ঢেউ,
চোখে জল চিকচিক, ধমনীতে ঘোর।
রাতের একাকীত্বে ঘুনপোকা কুড়ে খায় সবটুকু ঘুম
তারমাঝে একটা সবুজ ট্রেনের এতোটুকু কামরায় বসে
শব্দের আলোড়নে পড়ে যাওয়া যতটা সময় -
অশেষ নৈবদ্য দিলো যাপিত জীবনে!!
একজন প্রিয় ব্লগারের ব্লগ, মন্তব্য করতে যেয়ে একদম লিখেই ফেললাম। নিবেদন গৃহীত হোক সবুজ অলিন্দে!!
অনেক অনেক ধন্যবাদ তানিম এহসান। খুব ভালো লাগলো আপনার এই কাব্যিক নিবেদন।
শুভেচ্ছা নিন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তুলিদি ব্র্যান্ড কুম্ভমেলা নিয়ে একটা পোষ্ট লেখা যায় নাকি তুলিদি? ঐ মেলায় কী হয়? সিনেমায় খালি কুম্ভমেলায় হারিয়ে যাওয়ার কথা শুনেছি, ব্যাপারটা আসলে কী? মন্তব্যে তো আজ লাড্ডু গুড্ডু হলাম, আলুকাবলি দেবে তো
হে হে হে... আমিও ঠিক এই মন্তব্যটাই করতে যাচ্ছিলাম...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আরে আমি নিজেই কখনো কুম্ভমেলা যাই নি।
তবে কালকূটের "অমৃতকুম্ভের সন্ধানে" পড়লাম, আর সিনেমাটা দেখলাম।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কোনটা বলতে চেয়েছিলেন রে? কুম্ভমেলা নিয়ে নাকি মন্তব্যে লাড্ডু খেয়েছি সেটা নিয়ে? প্রথমটা হলে ঠিক আছে...কিন্তু দ্বিতীয়টা হলে একদমই ঠিক নেই! ভার্চুয়াল গাট্টা দেবো গুনে গুনে দশটা
ছি ছি, আপনার আলুকাবলি তে আমি ভাগ বসাবো কেন? তুলিদিদি আমাকে অমনি দেবেন আলাদা করে না হয়...
আমি কুম্ভমেলার কথাই বলতে গিয়েছিলাম।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
সাধে কী আর বলেছি...
আজকে সবাইকেই দধির সরবত, যা গরম!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এক্কেবারে আমার ছোটবেলার কথাটাও কেমন করে বলে ফেললেন!
আমার জীবনে প্রথম সমুদ্দুর দেখা ছোট্টবেলায় দীঘাতে। বাসটা উত্তর থেকে দক্ষিণে ঢোকে শহরটায়, তখনও সমুদ্দুর দেখা যায় না, হঠাৎ একসময় পশ্চিমদিকে ঘুরে সৈকতের সমান্তরাল রাস্তা নিলে সারি সারি হোটেলের ফাঁক দিয়ে একঝলক দেখেছিলাম সমুদ্রটাকে। সেটায় নীল বলে কিছু নেই, দুপুরবেলার সূর্য শুধু লক্ষ লক্ষ ঝিকমিকে সোনার টুকরো ছড়িয়ে রেখেছে সেটার উপর জুড়ে। এত বড়, এত বিশাল একটা জিনিস, উঁচু উঁচু বাড়িগুলোর ফাঁক দিয়ে যেটুকু দেখতে পাচ্ছি তাতেই এমন লাগছে, সামনে গেলে তো খেই হারিয়ে ফেলব! একটা শক-ই ছিল বটে।
সুযোগ পেলে একবার কক্সবাজারে ঘুরে যান।
বাস যখন শেষ মোড়টা ঘোরে তার পরেই খানিকটা সোজা রাস্তা আর তার শেষে সমুদ্র। বেশ খানিকটা দূর থেকে দেখা যায়, দু'চারটা জেলেডিঙিকে দোল খেতেও দেখতে পারেন, অপার্থিব একখানা দৃশ্য।
জীবনে কক্সবাজার গেছি মাত্র একবার, কিন্তু এই দৃশ্যটা ভুলতে পারি না।
(কিঞ্চিৎ অফটপিকঃ ভ্রমণটা অবশ্য উপভোগ্য হয়নি, আমার সুনাম আছে "লিস্ট প্রোব্যাবল" ঘটনাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করার। ওখানে মাইল দুয়েক লম্বা একখানা রাস্তা আছে, ফুটপাথ সহ, ওই সময়ে সেই মাইল দুই রাস্তায় একখানা মাত্র গর্ত ছিলো, তা-ও ইঞ্চি ছয়েক গভীর আর ওইরকমই লম্বা আর চওড়া। নিজেই হিসেব করে বলুন (দুই মাইল x চার ফুট) ফুটপাথে ৬" x ৬" একখানা গর্তে পা ফেলার সম্ভাব্যতা কত? প্রথম দিনেই আমি গিয়ে পড়েছি সেই গর্তে, পা মচকে ধপাস করে পড়ে সেই পায়ের ব্যথায় পুরো ঘোরাঘুরির বারোটা। ডাক্তার ব্যাপার শুনে বললো গোড়ালি যে দুই টুকরো হয়ে যায়নি সেটাই নাকি "লিস্ট প্রোব্যাবল", নইলে পূর্ণবয়স্ক মানুষ একখানা গোড়ালিতে পুরো ভর দিয়ে মচকে পড়লে...)
হায়, ঢুকতে দিলে তো!
গর্তগুলোর একটা অ্যাট্রাকশন পোটেনশিয়াল থাকে। কিন্তু কোনো নীলবসনা সুন্দরীর দিকে হাঁ করে চেয়ে ছিলেন কি?
দেখুন হে ভ্রাত, আমি হলাম গিয়ে কপালপোড়া - প্লাস হোঁদলকুৎকুৎ, গায়ের রঙটা কাক্কেশ্বরের মত, চেহারাখানায় হুঁকোমুখো হ্যাংলার আদল একেবারে পরিষ্কার এবং সেইরকমই গোমড়ামুখো। কোন সুন্দরী বা অন্য কেউ আমার দিকে ফিরেও তাকায় না সেটা আমি বিলক্ষণ জানি। আর জানি বলেই ওই লস্ট প্রজেক্টের পেছনে সময় এবং শক্তি খরচ করতে রাজি নই - তাকিয়ে যখন কোন লাভ অথবা 'লাভ' হবেই না, তখন কেন খামোকা সময় নষ্ট করা? তাকিয়ে ছিলাম রাস্তার দিকেই, কিন্তু ওই হতচ্ছাড়া গর্তটার ঠিক উপরেই একখানা মাপমত বিশাল পাতা পড়ে ছিলো।
থাকতো যদি আপনার মত একখানা পালিশ মারা চকচকে চেহারা, সারাদিন সুন্দরীদের দিকেই তাকিয়ে (এবং বিচিত্র ভ্রূভঙ্গী করে) কাটিয়ে দিতাম।
পুরাই স্যাবোটাজ গঠনা মনে হচ্ছে...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
শাক দিয়ে মাছ যদিবা ঢাকা যায়, পাতা দিয়ে গর্ত ঢাকা যায় না...
আর এই এমন সুবোধ বালক ছন্দকে কিছুতেই প্রচ্ছন্ন রাখা যায় না, সামান্য একটা পথের গর্ত বলে কি সাধ আহ্লাদ নাই তার! কতকাল থেকে সে মনে মনে গাইছে "চরণ ধরিতে দিও গো আমারে", তার একটা সিদ্ধি নাই???
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সেই। প্রথম সমুদ্র দেখার শক একটা কেমন আশ্চর্য ব্যাপার!
দীঘার কথাও মনে আছে, ক্লাস থ্রীতে পড়ার সময় গেছিলাম। তখন দীঘা অনেক জনবিরল, শান্ত পরিচ্ছন্ন। সজনে গাছে ঘেরা ছোটো ছোটো কটেজগুলোর কথা মনে পড়ে আজো। আর মনে পড়ে বিদায় নিয়ে চলে আসার দিন বারে বারে সমুদ্রের ধারে গিয়ে চেয়ে থাকছি, কেমন একটা নামহীন অনুভূতি, "সুচির বিরহ মিলন ক্ষণিক/ তাই চেয়ে থাকে আখি অনিমিখ " এরকম একটা ব্যাপার! সমুদ্র আমার চিরকালের সবচেয়ে ভালো লাগা। পাহাড়, আসলে মহান হিমালয় সেভাবে একেবারে তার তুষারহৃদয়ে গিয়ে দেখা হয় নি, তাই এখনো পাহাড়ের প্রেমে পড়া হয় নি। সমুদ্রই বিজয়ী হয়ে আছেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আর সেই সমুদ্র যদি হয় ভূমধ্যসাগর বা ক্রান্তীয় প্রশান্ত মহাসাগর, তাহলে তো...
আহা গো, বইলো না। অখনই যাইতে মন চায়।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
মন খারাপ করা
একগাদা খবর আর লেখা,
তার-ই ফাঁকে
ভয়ংকর রৌদ্রপোড়া দিনের শেষে
ভোররাতে এক পশলা বৃষ্টি।
সাথে,
খুব মিষ্টি একটা হাওয়া।
ঠিক এই লেখাটার মত..
অসঙ্খ্য ধন্যবাদ,রেলস্মৃতি আর সমুদ্দুরের হাওয়ামাখা এই লেখাটার জন্য।
একটা আবদার,
কোন একদিন..মেঘছোঁয়া পাহাড়চুড়ায় সূর্যাস্ত বা বৃষ্টি দেখতে খুব ইচ্ছে করে..আপনার লেখনীতে..
লিখবেন তো,তুলি'দি..?
ভাল থাকুন,অনেক ভাল..সবসময়।।
***শেষ চার লাইন ধার নিলাম।খোমাখাতায় বৃত্তান্তে দিব।আশা করি,কিছু মনে করবেন না!তি আর সমুদ্দুরের হওয়মখ এই লেখটর জন্য।
একট আবদর,
কোন একদিন..মেঘছোঁয় পহড়চুড়য় সূর্যস্ত ব বৃষ্টি দেখতে খুব ইচ্ছে করে..আপনর লেখনীতে..
লিখবেন তো,তুলি'দি..?
ভল থকুন,অনেক ভল..সবসময়।।
***শেষ চর লইন ধর নিলম।খোমখতয় বৃত্তন্তে দিব।আশ করি,কিছু মনে করবেন ন!
না না কিছু মনে করবো কেন? শেষ চার লাইন আপনার ভালো লেগে থাকলে আর সেটা ধার নিতে চাইলে খুবই আনন্দের কথা।
মেঘছোঁয়া পাহাড়চূড়ায় সূর্যাস্তের রঙমাখা বৃষ্টি? আহা, তেমন স্বপ্ন-স্বপ্ন ব্যাপারে যদি সত্যিই কখনো গিয়ে পড়ি, অবশ্যই লিখবো সেকথা।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পাহাড়-সমুদ্র দুইটাই ভালো পাই। আপনার লেখাটাও ভালো পেলাম। চাঁদের ছায়া, কামরায় কামরায় ভরা ঘুম - বেশ কাব্যিক বর্ণনা! মিষ্টি যেন (গুড়)
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
পুরী, দীঘা,হাওড়া স্টেশন এই জায়গাগুলোর কথা অনেকবার অনেক ভারতীয় লেখকের বইয়ে পড়ছি। আর ও একবার আপনার লিখায় জায়গাগুলো খুজে পেয়ে দারুন লাগলো। শেষের কয়েক লাইন ও অনেক ভালো লাগলো। আপনার লিখায় কি যেন একটা মাদকতা আছে তুলিদি।
ধন্যবাদ বন্দনা।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সুন্দর বর্ণনা তুলিপু, খালি কয়টা পিক হৈলে আরও জমতো।
আমি একবার পুনে গিয়েছিলাম সেই ২০০৬ সালে, এস সপ্তাহ ছিলামও। খুলনা টু কোলকাতা বাই কার; কোলকাতা টু মুম্বই বাই প্লেন; মুম্বই টু পুনে বাই বাস। একই পদ্ধতিতে ফেরা। নদীর পাড়ে 'মানস' বারের ড্যান্স ফ্লোর প্রায় ভাসিয়েই দিয়েছিলাম। ভাগ্যিস এক দৌড়ে টয়লেট পর্যন্ত যেতে পেরেছিলাম। গোয়ানিজ বান্ধবী মেরী মেন্ডেজের সাথে উদ্দাম নাচ আর আমাদের অবস্থা দেখে ফ্লোরের পাশে বসে থাকা তৃণভোজী বান্ধবী হেমাঙ্গিনী ব্রক্ষ্মভট্টের মুচকি হাসি। সে এক জটিল অবস্থা, কি আর কমু!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ওরে বাবা! আপনে তো কামাল করছেন! একদিকে মেরী একদিকে হেমাঙ্গিনীরে লইয়া সারারাইত নাচছেন!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
যে নাচ মেরী আমারে নাচাইছিলো সেই রাতে! উফ আর মনে করতে চাইনা। পরে একসাথে বাসে পুনে থেকে মুম্বই আসার পথে আরেকবার নাচাইছিলো। হেমাঙ্গিনী অবশ্য নিষ্ঠাবতী ব্রাক্ষণ, নিজে নাচে না, কিন্তু চাঞ্ছ পেলে অবশ্য নাচাতে ছাড়ে না।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
বাহ!
ঠিক! ঠিক!
আর আমারো ঐ টানেলের ব্যাপারটা মিল আছে, লিখেছিলাম সিলেট বেড়াবার একটা ব্লগে।
কুম্ভ-এর মেলা নিয়ে জানতে চাইইইই!
আর ট্রেইনের ছাদে চড়ার একটা সুপ্ত ইচ্ছা আমারো আছে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আরে এ যা অবস্থা দেখতাছি, এ দেখি পরের কুম্ভমেলায় আমার যাইতেই হইবো।
পূর্ণ কি কপালে জুটবে আর? শেষে দেখা যাবে অর্ধকুম্ভ অবস্থা! "সই, জুটিলো শেষে আধেক কলসী, দড়িই বা কোথা পাই" বলে গান গাইতে হবে!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আহা, সবুজ রঙের ট্রেনে করে কখন পৌঁছুবো আমি মহুয়ামিলন ষ্টেশনে!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
যাবেন, পৌঁছে যাবেন ঠিকই, আহা কী সুন্দর নাম মহুয়ামিলন!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
গিয়ে তো দেখেন দিদি, বলা যায় না পুরোটাই পাওয়া হতে পারে....আর আধেক কলসি পেলে আমরা আছিনা? গোটা কলসি জোগাড় করা কোন ব্যাপারই না। তবে এ্যালুমিনিয়ামের, ওতে হবে তো? এতগুলো মুখ চেয়ে এবার কুম্ভমেলায় রওয়ানা দেয়াটা জরুরী কিন্তু
আর কও ক্যানো! এ পূর্ণকুম্ভ আবার গঙ্গাসাগরের কি অমরনাথ যাত্রার মতন প্রতি বছর তো হয় না। ১২ বছর পর পর। আর আছে মহাকুম্ভ, ১৪৪ বছর পর পর। সে সুযোগ ফসকে গেছে, ২০০১ সালে হয়ে গেছে। পরজন্মে কচি মেয়েটি হয়ে বেণী দুলিয়ে যাবো সেই মহাকুম্ভে, ২১৪৫ সালে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন