• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

ইস্কুলবেলার গল্প(১৮)

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: সোম, ২১/১১/২০১১ - ৫:১৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মাঠের মধ্যে চৌকোনা একটা বড় জায়গায় খানিকটা মাটি তুলে ফেলে সাদা বালি দিয়ে ভরাট করা, সেই বালিটুকুর একটু আগে চুন দিয়ে একটা সাদা মোটা দাগ দিলেন সুচরিতাদি, উনি ছিলেন আমাদের স্পোর্টসের দিদিমণি। বললেন, ঐ দূর থেকে দৌড়ে এসে এই দাগের আগে থেকে লাফ দিয়ে উঠে উড়ে গিয়ে পড়তে হবে ঐ বালিতে।

তখন আমরা ক্লাস সেভেনে, যারা যারা ট্রায়াল দিতে ইচ্ছুক, চলে গেলাম দূরে। তারপরে একে একে দৌড়ে দৌড়ে এসে লাফ দিয়ে পড়ছে মেয়েরা, সুচরিতাদি আর আরো দু'জন দিদিমণি কে কতটা লাফালো মেপে দেখে দেখে নির্বাচন করছেন ফাইনালের জন্য। এর মধ্যে অনেকটা সময় চলে গেছে বলে দিদিমণিরা তাড়া দিতে থাকায় আমরা করলাম কেলেঙ্কারি, দুর্গা বেশ ভালো লাফিয়েছিলো, কিন্তু ও ওঠার আগেই আমি গিয়ে লাফিয়ে পড়েছি প্রায় ওর ঘাড়েই বলা যায়, আর দেখতে না দেখতে আমার ঘাড়ে এসে লাফিয়ে পড়েছে সুশোভনা ! তিনজনকেই অবশ্য সিলেক্ট করলেন সুচরিতাদি। আর আমাদের তিনজনকে কী বকুনি, এভাবে ঘাড়ে ঘাড়ে লাফানোর জন্য!

তখন শীতকালে হতো স্কুল-স্পোর্টস। জানুয়ারী ফেব্রুয়ারীর মধ্যেই করে ফেলতে চেষ্টা করতেন দিদিমণিরা, কারণ তার পরেই চড়া হয়ে উঠতো রোদ। ঐ সুবাদে কয়েকদিন বেশ খোলা মাঠে অন্যরকম দিন কাটতো আমাদের। ট্রায়ালের দিনগুলোতে সার বেঁধে সবাই সেই বড়মাঠের দিকে যাওয়া, সেখানে ১০০ মিটার, ২০০ মিটার দৌড় বা সাইকেল রেস বা হাই জাম্প লং জাম্পের ট্রায়াল আর যারা যারা সিলেক্টেড হলো তাদের নাম তুলে নিতেন সুচরিতাদি তাঁর বড় খাতায়।

ওসব দিনগুলো বেশ মজার, শুরুর একটা ক্লাস হয়েই দিদিমণিদের সঙ্গে মাঠে যাওয়া, বেশ কয়েকঘন্টা খোলা আকাশের নিচে ঝকমকে শীতের রোদে মাঠে কাটতো। বেশ চনচনে ফূর্তির দিন। ভূগোলের ক্লাসে দাঁড় করিয়ে দিদিমণি কোথাকার কোন গ্রেট বেরিয়ার রীফের প্রশ্ন ধরছেন না, ইতিহাসের ক্লাসে কোথায় কোন বিম্বিসার অজাতশত্রু চন্দ্রগুপ্ত বখতিয়ার খিলজী বাবর আকবর কে কী করেছিলেন বলতে হচ্ছে না, বেশ খোলামাঠে দৌড়োদৌড়ি আর সুযোগ পেলে মাঠের পাশের দিকে গিয়ে ফুচকাওয়ালার কাছ থেকে ফুচকা খাওয়া হচ্ছে। এমনিতে ফুচকা আলুকাবলিওয়ালারা স্কুলের সামনের রাস্তায় ফুচকা-আলুকাবলি নিয়ে দাঁড়াতো, কিন্তু ট্রায়ালের দিনগুলোতে ওরাও মাঠের পাশে।

কাছের বয়েজ স্কুলের বেশ কিছু ছেলে কেমন করে জানি ক্লাস কেটে মাঠে এসে আমাদের ট্রায়ালগুলো দেখতো। তা দ্যাখ বাপু, দিদিমণিরাও কিছু বলতেন না। এমনিতে ফাইনাল তো রবিবারে হয়, সেদিন তো জনসাধারণ সকলেই দেখতে আসতে পারে, ক্লাস পালানোরও কোনো দরকার হয় না। কিন্তু ওরা ট্রায়াল ও ছাড়তে রাজি না, সেসব দিনেও দেখতে আসতো।

তারপর এক রবিবারে ফাইনাল, সেই বড়মাঠেই। সকাল থেকে সেদিন হৈ চৈ, মাঠের একপাশে প্যান্ডেল, প্যান্ডেলের উপরে লাল নীল কাগজের টুকরোর সাজ, শীতের হাওয়ায় পতপত করে উড়ছে, সেখানে দিদিমণিরা সব মাড় দিয়ে ইস্ত্রী করা ফরমাল পোশাকে, ওঁদের পোশাক ছিলো লালপাড় সাদা শাড়ী। কারুর কারুর কাঁধে ভাঁজ করা শাল। প্যান্ডেলে মাইক-টাইকের ব্যবস্থাও থাকতো। ইভেন্ট ঘোষণা, নামঘোষণার ব্যাপার ছিলো তো! তারপরে বিজয়ীরা ভিকটরি স্ট্যান্ডে উঠলে জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর ব্যাপারও ও ছিলো।

সকালসকাল মার্চ পাস্ট, তারপরে প্রতিযোগীরা লাইন করে এসে ব্যাজ লাগিয়ে নিতো বাঁ-কাঁধের সামনের দিকে। কারণ দুপুরের প্যাকেট লা‌ঞ্চ তো কেবল অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীরাই পাবে, সেটা নেবার সময় ব্যাজটা থাকতে হবে। একে একে স্পোর্টস ইভেন্টগুলো হতে থাকতো, আর প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় এই বিজয়ীদের নাম ঘোষণা। ওরা তিনজনে দাঁড়াতো ভিকটরি স্ট্যান্ডে, আর মাইকে তখন গান বাজতো, জাতীয় সংগীত।

তখন ফটোর এত চল ছিলো না, প্রি-ডিজিটাল যুগ, ফটো তখন অনেক হ্যাপা হাঙ্গামার ব্যাপার। আহা কত বন্ধুদের ঘামে ভেজা ক্লান্ত কিন্তু পরিতৃপ্ত বিজয়োল্লাসভরা মুখ মহাকালের গর্ভে হারিয়ে গেল, ফটোতে বাঁধা রইলো না। আমাদের ছোটো সেই গাঁ-মফস্বলে সেই সামান্য স্পোর্টসই তো যেন টিভিতে দেখা অলিম্পিকের স্বপ্নরাজ্য। আসল জিনিস তো আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে, কিন্তু যা পাওয়া যায় তাই না কম কী? আর সেই কৈশোরকালের স্পিরিট, সেই তো সমস্ত বাস্তবতাকে পার হয়ে স্বপ্ন দেখতে শক্তি দেয়, তাই না?

স্কুল স্পোর্টসের কথা মনে পড়লেই মনে পড়ে হাসিকে। প্রাণবন্ত সতেজ কিশোরী ছিলো হাসি, খুব ভালো দৌড়তো ও। ১০০ মিটার, ২০০ মিটার দৌড়ে ওর ফার্স্ট প্রাইজ নিশ্চিত ছিলো। সারাবছর ক্লাসের এক কোণে চুপচাপ বসে থাকতো যে মেয়ে, অঙ্কের ব্যাপারে যে খুব ভয়ে ভয়ে থাকতো, পড়ার যেকোনো বিষয়ই যার কাছে ভীতিকর ছিলো, তার ঝকঝকে উজ্জ্বলতা ফেটে পড়তো এই স্পোর্টসের দিনগুলোতে। স্কুল স্পোর্টসের বাইরেও সিরিয়াসলি খেলাধূলা করতো হাসি, জেলাস্তরের প্রতিনিধিত্ব করতে শুনেছি নানা প্রতিযোগিতায় যেত। কিন্তু নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের এই মেয়েটি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারলো না, ক্লাস এইটেই পড়াটড়া ছাড়িয়ে ওর বাড়ীর লোক ওর বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেললো। তারপরে খেলাধূলার কথা ভাবা তো স্বপ্নেরও অগোচর। অথচ এইসব মেয়ে সুযোগ পেলে হয়তো একদিন অলিম্পিক অবধি পৌঁছতে পারতো।

আজ ফিরে দেখলে তাই বারে বারে আমাদের ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ইচ্ছে হয়, এই যে খেলায় ভালো মেয়েটি, ওকে খেলার জন্যই তো আলাদা করে সুযোগ করে দিয়ে রাজ্যস্তরে নির্বাচিত হবার ব্যবস্থা করতে পারতো স্কুল লেভেল থেকেই, যদি স্পোর্টস ব্যাপারটা শুধু কয়েকদিনের আনুষ্ঠানিকতা না হয়ে সারাবছরের ব্যাপার হতো। কিংবা যদি সাধারণ স্কুল থেকে খেলায় ভালো এইসব মেয়েদের বেছে নিয়ে স্পোর্টস স্কুলে ঢোকানোর ব্যবস্থা থাকতো। সেরকম স্কুলই বা কোথায় ছিলো তেমন? "কোনি" সিনেমাটা যতবার দেখি ততবার মনে পড়ে হাসিকে। দেখি খাঁ খাঁ ধূ ধূ অলিম্পিক রেকর্ড আমাদের, আর মনে পড়ে হাসিকে, শুকনো মুখে স্কুল ছেড়ে খেলাধূলো ছেড়ে ঘোমটা মাথায় সংসারে ঢুকে পড়ছে চোদ্দো পনেরো বছর বয়সে। হয়তো এরকম হবার ছিলো না। বাস্তববাদীরা ধমক দিয়ে বলে, আরে আগে তো পড়াশুনো, যাতে একটা চাকরিবাকরি জোটে, থাকা খাওয়ার সুসার হয়, তারপরে না খেলা! ওসব লাটসাহেবী কি আমাদের চলে!

তারপরে তো আমাদের খেলাধূলাও বন্ধই হয়ে গেল প্রায়, নাইনে টেনে স্কুল স্পোর্টসেও অংশ নেওয়া বিলাসিতা, তখন তো মাধ্যমিকের রেস শুরু হয়ে গেছে কিনা! এখন ফিরে দেখলে সেই সিক্স সেভেন এইটের সেই সব ক্লান্ত পরিতৃপ্ত রবিবারের বিকেল মনে পড়ে, স্পোর্টস ফাইনালের শেষের দিক, গো অ্যাজ ইউ লাইক হচ্ছে, নানারাকম সেজে গেছে প্রতিযোগীরা, কেউ পা হারিয়ে ফেলা সৈনিক, কেউ পাগল ভিখারি, কেউ মেলার যাদুকর। শেষ মুহূর্তের আনন্দ। চেনা মানুষেরা কেমন অচেনা হয়ে গেছে! সেই ইভেন্টের বিচার হয়ে গেলেই ফাইনাল শেষ সেই বছরের মতন। তারপরে সারাদিনের সব ইভেন্টের প্রাইজ দেওয়া হচ্ছে, পরদিন ছুটি ঘোষণা হয়ে গেছে। কেমন আশ্চর্য একটা শীতের বিকেল, খোলা আকাশের নিচে একটি দিনের কার্নিভাল যেন আমাদের। সেই তখন, যখন আমরা জীবন্ত ছিলাম!

(হয়তো চলবে)


মন্তব্য

তারেক অণু এর ছবি

(জাঝা) আজ সবাই এমন মন হু হু করা পোস্ট দিচ্ছে কেন !

তুলিরেখা এর ছবি

আপনি এইখানে কমেন্ট দিবার কালে আমি আপনারটায় দিচ্ছিলাম। সাইমালটেনিয়াস! :-) তবু দ্যাখেন লোকে টেলিপ্যাথি এনট্যাংগলমেন্ট এইসব মানতে চায় না। :-)

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ওডিন এর ছবি

সেই তখন, যখন আমরা জীবন্ত ছিলাম

এইখানে এসে বুকটা একেবারে ধ্বক করে উঠলো :(

তুলিরেখা এর ছবি

ওডিন, একদিক দিয়ে কথাটা তো সত্যিই, তখন অফুরাণ বিস্ময়ের কৈশোর, সেই যে গানে ছিলো , তখন হাতে ছিলো শুধু সতেজ আশা, হারাবার কিছু ছিলো না, সামনে ছিলো প্রসারিত দীর্ঘ সময়, পথের বাঁকে বাঁকে কত বিস্ময়।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

স্কুলগুলোতে এখন আর মাঠ থাকেনা। আমাদের সন্তানেরা জানতেও পারলোনা অ্যানুয়াল স্পোর্টসের আর তার প্রাকটিসের আনন্দ কী জিনিস।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তুলিরেখা এর ছবি

ও:, আমাদের ওখানে তো এখন শুনেছি খুপরির মধ্যে স্কুল! কোনো বহুতলের তিন কি চারতলায় গোটা কয় ঘর আর আনুষঙ্গিক নিয়ে বাচ্চাদের স্কুল, একবার ভাবুন অবস্থা! সব ইনডোর! ফ্ল্যাটের খাঁচা থেকে বেরিয়ে এরা এসে চার পাঁচ ছয় বছরের বাচ্চাগুলো ঢোকে স্কুলের খাঁচায়, এদিকে খোলা আকাশের নিচে গাছপালার ছায়ায় খেলার বয়স ওদের। :-(

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তাপস শর্মা এর ছবি

আহা... :) । কত কিছু মনে করিয়ে দিলেন

তুলিরেখা এর ছবি

দিলাম বুঝি? :-)

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

দীপ্ত এর ছবি

লেখাটা পড়ে শীতের বিকেলটা যেন দেখতে পেলাম মনে, নামহীন একটা বিষাদের অনুভুতি বোধ করলাম।

তুলিরেখা এর ছবি

সেইসব সকালবিকেলদুপুর, আহা আর কখনো ফিরবে না! জীবন এইজন্যেই মনে হয় এত মধুর, কোথাও এই যে "একবার পায় তারে, পায় না তো আর" ব্যাপারগুলো রয়ে যায়! :-)

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

আশালতা এর ছবি

ইশ একদম শেষ লাইনটার পেটেন্ট নিয়ে রাখা উচিত ছিল, আমি প্রায়ই বলি তো, তবে বহুবচন না ধরে একবচনে বলি ! :)

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তুলিরেখা এর ছবি

কথাটা যে কত সত্যি প্রতিটা মানুষই টের পাই, হাত যত ভরে ওঠে বস্তুতে, প্রাণের ভিতর ততই ফাঁকা হয়ে আসতে থাকে। লেখক পরশুরাম একে বলতেন, কনজারভেশন অব ভার্চু। :-)

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

কল্যাণF এর ছবি

(Y)

তুলিরেখা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ কল্যাণ। দেরি হয়ে গেল, মাফ করবেন, আসলে তখন হয়তো চোখে পড়ে নি আপনার মন্তব্য, অন্যদিকে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। তাই দেরি হয়ে গেল।
ভালো থাকবেন।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আমার মেয়েটি পড়তো উত্তরার মাইলষ্টোনে। ছয়তলা আবাসিক বাড়ি ভাড়া নিয়ে স্কুল করেছে। মাঠ বলতে বাড়ির বেসমেন্টের পার্কিং স্পেস। সেখানেই তাদের খেলাধুলো, ছুটাছুটি। স্কুল বদলি করে যখন শহীদ আনোয়ারে নিলাম তখন স্কুলের সামনেটায় বিশাল সবুজ মাঠ দেখে ওর মনটা যেন খুশীতে নেচে উঠলো। ওকে বললাম "টিফিনের বিরতিতে মন ভরে বন্ধুদের সাথে ছুটাছুটি করিস মা"। মেয়ের আমার কি যে খুশী!

আপনার লেখা পড়ে বছরের শেষটায় কলেজের স্পোর্টস ও আন্তঃ হাউস ক্রিকেট প্রতিযোগিতার মুখর দিনগুলির কথা মনে পড়লো। আহা, কি মধুর ছিল সেই দিনগুলি!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তুলিরেখা এর ছবি

বাচ্চাদের স্কুলে একটা মাঠ না থাকলে হয়? বাচ্চারা খেলতেই যদি না পারলো তবে তো শিক্ষার অর্ধেকই হলো না! ও:, প্রাইমারিতে মনে পড়ে স্লিপ কাটা, দোলনা চড়া, দৌড়ানো, কাকজোড়া, জেলেমাছ, কুমীরডাঙা সবরকম খেলার ব্যবস্থাই ছিলো। :-)

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

শিশিরকণা এর ছবি

সারা বছরে শুয়ে বসে কাটানোর পর স্পোর্টসের কয়দিন তুমুল লাফ ঝাঁপ করে গিরায় গিরায় ব্যাথা আর মাসল পুলের কথা মনে পড়ে গেল।
আমাদের স্কুলে প্রত্যেক ক্লাস থেকে মিউজিকের তালে তালে ডিসপ্লে র প্রতিযোগিতা হত। সেরা ডিসপ্লে হওয়ার জন্য ক্রিয়েটিভিটি আর ডিসিপ্লিনের কি দারুন প্রতিযোগিতা হত।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

তুলিরেখা এর ছবি

হ, ঠিকই কইলা। সারা বছর কিছু না, কয়েকদিন তুমুল লাফঝাঁপদৌড়। :-)
পিটি ক্লাস হতো অবশ্য আমাদের, কিন্তু সেসব ইনডোর! :-(

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

:( :(

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

তুলিরেখা এর ছবি

দুঃখী মুখ কেন রিশাদ ময়ূখ ? :-?

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

উচ্ছলা এর ছবি

স্কুল-স্পোর্টসের ১০০ মিটার দৌড়ের ট্রায়ালে বরাবরই উষ্টা খেয়ে হাঁটু ছিলে রক্ত বেরুত। জানতাম পড়ে যাব, রক্তাক্ত হব, তবুও দৌড়াতাম।
আহারে আমার দুরন্ত, বেহিসেবী শৈশব ...

লেখাটায় A+ :)

তুলিরেখা এর ছবি

আরে উচ্ছলা, ছোটোবেলা তো আমার ছড়া হাঁটু না সারতে সারতেই আবার ছড়তো, একেবারে কনস্ট্যান্ট ছড়ে থাকতো বলা যায়। :-) তখন যে আমাদের পাড়া একেবারে খোলামেলা, চারিদিকে মাঠ, বিকাল হলেই খেলা! সে হয়তো কাশি হয়েছে, বা অল্প জ্বর হয়েছে কিংবা অন্য কিছু, তাও খেলা ছাড়তে রাজি না। তখন প্রাইমারি স্কুল, তাড়াতাড়ি ছুটি হতো, সাড়ে তিনটেয়, বাড়ি এসে কোনোরকমে মুখ হাত ধুয়ে চেঞ্জ করে কিছু খেয়েই দৌড়ে মাঠে। একেবারে অন্ধকার হওয়া অবধি খেলা, বেশ বড় দল ছিলো পাড়াতুতো বন্ধুদের, কাকজোড়া জেলেমাছ চু-কিতকিত বুড়ীবসন্তী নামপাতাপাতি এমনকি মাঝে মাঝে ক্রিকেট পর্যন্ত, পিচ তো ছিলো না তাতে কি, তিনচারটে ইঁট পরপর বসিয়ে উইকেট, ব্যাট নিয়ে একজন তার সামনে, খানিকটা দূর থেকে ছুটে এসে একজন বল করলো, ব্যাট দিয়ে ঠুকে দিয়েই ব্যাটসম্যান দৌড় দিলো ওপাশে চটি দিয়ে করা সীমানা ছুঁয়ে এক রান নিতে, হয়তো মাঝখানেই বল ছুঁড়ে ইঁটের উইকেটে লাগিয়ে দিলো ফিলডার, আউট। :-) আমরা তখন ছোটো বলে বড় দাদারা দিদিরা কেবল ফিলডিং করতে দিতো, একদিন কপালে শিকে ছিঁড়লো। সেদিন ব্যাট করেছিলাম, আর চার রান করেছিলাম। বলটাকে ঠুকে দিয়ে ঝোপে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। :-)

আরো কত রকমের খেলা যে ছিলো! সেই ছোটাছুটিতেই হাঁটু ছড়ে ছড়ে ছড়াক্কার! :-)

তোমার এই কমেন্টে কত কিছু মনে পড়ে গেলো, সেসব স্কুলের কিছু না বলে ইস্কুলবেলাতে লিখতেও পারবো না।

ভালো থেকো।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।