এই উপকথা আফ্রিকার সোয়াজিল্যান্ডের। আশ্চর্যভাবে আমাদের দেশের উপকথার সাথে কোথায় যেন মিল আছে। বাঙালী নামধাম দিয়ে গল্পটা বলতে চেষ্টা করলাম। আজকে দ্বিতীয়ার্ধ।আগের অংশ এখানে
২। তারপরে দিন যায় দিনের নিয়মে। রাখাল আর মেঘবতীর জীবন চলে আগের মতনই। এখন ইঁদুর আর কাঠঠোকরা তাদের কাছেই থাকে, ব্যর্থমনোরথ গুপ্তচরেরা বিদায় নিয়েছে।
একদিন হাট থেকে ফিরে রাখাল দ্যাখে মেঘবতী চুল বাঁধে নি, সাজে নি, উঠানের একপাশে সজিনা গাছে হেলান দিয়ে চেয়ে আছে পশ্চিম দিগন্তে যেখানে আবীরলাল সূর্যাস্ত হচ্ছে। কাছে গিয়ে রাখাল দ্যাখে মেঘবতীর চোখ ছাপিয়ে ঝরে পড়ছে অশ্রু।
উদ্বিঘ্ন রাখাল জানতে চায়, "কী হয়েছে মেঘবতী? "
আঁচল তুলে চোখ মুছতে মুছতে মেঘবতী বলে, "কিছু না। কেবল দেশের কথা মনে পড়ছে খুব। কতদিন দেখি না আপনজনেদের। "
রাখালের বুক মুচড়ে ওঠে, মেঘবতী চলে যেতে চায়? সে এখানে একা কীভাবে থাকবে? তবু সে ভাবে, যাকে ভালোবাসি তাকে কি কষ্ট দিয়ে আটকে রাখা যায়? যাক, ওর যদি চলে যেতে ইচ্ছে হয়, চলে যাক।
লুকিয়ে রাখা পালকটা এনে রাখাল মেঘবতীর হাতে তুলে দিয়ে বলে, " যাও মেঘবতী, তোমার দেশে চলে যাও। আর তোমাকে আটকাবো না। আমি এখানে একা একা বাকি জীবনটা তোমার কথা ভেবে ঠিক কাটিয়ে দিতে পারবো।"
মেঘবতী চোখের জলের ভিতর দিয়ে হেসে বলে, " আমার সঙ্গে তুমি যাবে না? আমি একা যাবো নাকি? শুধু তাই না, আমাদের দুই বন্ধু, কাঠঠোকরা আর ইঁদুরও যাবে আমাদের সাথে। "
তারপরে তাই হলো। মেঘবতী সেই যাদুপালকে মন্তর পড়তেই শো শো শো শো করে সেই ছোট্টো পালক লম্বা হতে থাকলো আর লম্বা হতে থাকলো। এক বিশাল মইয়ের মতন আর উপরের মাথা ঠেকলো গিয়ে মেঘের দেশে। মেঘবতী, রাখাল কাঠঠোকরা আর ইঁদুর সেই মই বেয়ে গিয়ে হাজির হলো এক মেঘসুড়ঙ্গের সামনে। সেখানে গিয়ে সবাই উঠলে মেঘবতী সেই যাদুপালক আবার ছোটো করে নিয়ে নিজের মাথার চুলে গুঁজে নিলো। সেই পালক একটি বাতির মতন আলো দিতে থাকলো যখন তারা সুড়ঙ্গে ঢুকলো।
তারপরে তারা চারজনে মেঘসুড়ঙ্গের ভিতর দিয়ে চলতে চলতে গিয়ে পৌঁছালো একটা বিরাট গোল পাথরের দরজার সামনে। দরজা একেবারে শক্ত হয়ে আটকানো, একটু ফাঁকফোকড় কোথাও নেই। এইবার? এই দরজা খোলা যাবে কী করে?
মেঘবতী বলে দরজা খোলার গোপণ মন্ত্র সেও জানে না, জানে কেবল তার এক সখী, এখন উপায়? মেঘবতী হতাশ হয়ে বসে পড়ে, বলে, "ভেবেছিলাম দরজা খোলা পাবো। এখন আর বুঝি নিজের দেশে ঢোকা আমার হোলো না। কত আশা করে এসেছিলাম।"
কাঠঠোকরা বলে, "মেঘবতী, এত হতাশ হয়ো না এখনি। একটা চেষ্টা করতে দাও আমাদের। আমি গাছে ঠুকরে ঠুকরে জীবন পার করি, আমি বরং এখানে ঠুকরে ঠুকরে পরীক্ষা করে দেখি কোথাও কোনো সমাধানসূত্র পাওয়া যায় কিনা। "
কাঠঠোকরা গিয়ে বসলো পাথরের দেয়াল আর গোল দরজার সংযোগস্থলের রেখায়। একেবারে নিখুঁত এঁটে আছে। কাঠঠোকরা "ঠক ঠক ঠক ঠক" করে ঠোঁট দিয়ে ঠোক্কর মেরে মেরে দেখতে থাকে প্রতিটা জায়গা। একজায়গায় এসে সে থেমে যায়, বলে, এইখানে ফাঁপা, শব্দ শুনে বুঝতে পারছি। সেখানে ভালো করে খুঁজে দেখা গেল একটা ক্ষুদ্র আংটা, একেবারে পাথরের সঙ্গে মিলে আছে, বর্ণও একেবারেই পাথরের বর্ণ।
সকলে মিলে হেঁইও হো হেঁইও হো করে আংটা ধরে টান দিতে গুর গুর গুরররম করে গোল দরজা খুলে গেলো। দরজার ওপাশে সে এক আশ্চর্য সুন্দর জগত, সবুজ মাঠে গবাদিপশু চরে বেড়াচ্ছে, এদিকে ওদিকে ছায়ামেলা মস্ত মস্ত গাছ, তারপরে একটা সুন্দর গ্রাম, একদিকে এক নদী, স্রোতের টানে ফেনিয়ে ফেনিয়ে বয়ে চলেছে। দূরে আকাশের গায়ে দেখা যায় নীল পাহাড়ের আভাস।
মেঘবতী প্রথমে দরজা পার হয়ে ঢুকলো, তারপরে পিছন ফিরে মাথা ঝুঁকিয়ে বললো, "স্বাগত। তোমরা এসো। এই আমার দেশ। আমার দেশে এসো তোমরা। "
রাখাল, কাঠঠোকরা আর ইঁদুর মহানন্দে ঢুকে পড়লো। চারজনে মিলে তারা চলতে থাকে গাঁয়ের দিকে। একে একে মেঘবতীর চেনা লোকেদের সঙ্গে দেখা হতে থাকে। তারা তো অবাক, খুশিও। কতকাল পরে আবার তাদের রাজকুমারী দেশে ফিরলো !
খবর ছড়িয়ে পড়ে আগুনের মত। রাজা তো তার লোক লশকর নিয়ে আসেন। রাণীও আসেন। প্রথমে তো কন্যার সঙ্গে পিতামাতার আবেগ থরথর পুনর্মিলন। তারপরে রাজা জিগ্গেস করেন রাখালকে দেখিয়ে , "তোর সাথে এই ছেলে কে?"
মেঘবতী বলে, "ও আমার পৃথিবীর বন্ধু। ওর নাম রাখাল। ও খুব ভালো ছেলে। বাবা, ওকে আমি ভালোবাসি। আমার সঙ্গে ওর বিয়ে দাও।"
মেঘরাজ তো হতভম্ব, চুপ করে ভাবতে লাগলেন, "বলে কী এই মেয়ে? বংশমর্যাদা ভুলে গেলো নাকি সে একেবারেই? এইরকম অসম্ভব ব্যাপার কখনো হয় নাকি? মেঘের দেশের মেয়ে ধুলামাখা মাটির মানুষকে বিয়ে করতে পারে নাকি? মেয়ে একেবারেই বালিকা, অবুঝ, এখন ভুজুং ভাজাং দিয়ে রাখি, পরে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা হবে।"
মুখে বললেন, "হবে হবে, সব হবে। এখন তোরা এতদূর থেকে এসেছিস, ক্লান্ত। আগে বিশ্রাম ঘরে চল, খেয়েদেয়ে বিশ্রাম নিয়ে তোর বন্ধুকে ঘুরে ঘেরে দেখাবি সব। চল।"
বিশ্রামঘরে সবকিছুর ভালো ব্যবস্থা ছিলো। মুখ হাত ধুয়ে নিয়ে কিছু খেয়েদেয়ে তারা ঘুরতে বেরোলো। নতুন দেশটি রাখালকে মুগ্ধ করেছে, কাঠঠোকরা আর ইঁদুরেরও খুব ভালো লেগেছে, আর মেঘবতী নিজের দেশে ফিরে আসার আনন্দে মাতোয়ারা।
পরদিন রাখালের সম্মানে এক বিরাট ভোজের আয়োজন করলেন মহারাজ। পাকশালায় ভালো ভালো সব রান্না হচ্ছে আর ইঁদুর সুখাদ্যের ঘ্রাণে সেখানে গিয়ে উপস্থিত। ইঁদুর ছোট্টো জীব, তাকে কেউ লক্ষ্য করে না, সে এ কোণ ও কোণ ঘোরে বেড়ায়। হঠাৎ শোনে রাজা পরিবেশকে কী যেন বলছেন চুপিচুপি। ইঁদুর খুব কাছের কোণে গিয়ে চুপ করে বসে ভালো করে শোনার জন্য। শোনে রাজা পরিবেশককে বলছেন রাখালের খাবারে বিষ মেশাতে।
ইঁদুর দৌড়ে গিয়ে রাখালকে সাবধান করে দেয়। সেই ভোজের আসরে রাখাল কিচ্ছুটি খায় না, খাবার ভান করে শুধু। তাই তার কোনো ক্ষতি হলো না। রাজা তো রেগে লাল, নিশ্চয় ব্যাটা আগে থেকে জানতে পেরে সাবধান হয়েছিলো। এইবারে সব ব্যবস্থা গোপণে করবেন বলে ঠিক করলেন রাজা। রক্ষা তোমার নেই হে পৃথিবীর মানুষ।
পরদিন রাজা তার প্রধান যাদুকরকে নিয়ে বাগানের একটা গাছের তলায় বসে গোপণে পরামর্শ করলেন। বললেন পরদিন তিনি রাখালকে দূত হিসাবে পাঠাবেন পাশের রাজ্যে। সে যখন দুই রাজ্যের মধ্যবর্তী বিশাল প্রান্তরের মাঝখানে পৌঁছাবে, যেখানে কিনা আশেপাশে কোনো আশ্রয় নেই, ঠিক তখনই যাদুকর যেন এক মারাত্মক শিলাবৃষ্টির ব্যবস্থা করে। খুব বড়ো বড়ো শিলা যেন পড়ে, শিলার পরে শিলার আঘাতে তাহলে রাখাল অক্কা পাবে। যাদুকর তো খুব খুশি, বলে, "যে আজ্ঞা মহারাজ।"
এদিকে সেই গাছের ডালে পাতার আড়ালে বসে ছিলো কাঠঠোকরা, সে সব শুনে রাখলো। সে নিজেও নানা যাদু জানতো।
পরদিন রাখালকে ডেকে রাজা বললেন, " শোনো হে পৃথিবীর মানুষ, তুমি আমার মেয়ের বন্ধু, খুবই ভালো কথা। আমার মেয়ে তোমাকে বিবাহ করতে চায়, সেও খুব ভালো কথা। কিন্তু আমার মেয়েকে বিবাহ করলে তোমার তো এখানেই থাকতে হবে, তাই আস্তে আস্তে এখানকার সব কায়দাকানুন, রাস্তাঘাট, লোকজন কে কেমন-- সব জেনেশুনে নেওয়া ভালো নয় কী? এখন তোমাকে একটা কাজ দিতে চাই, তুমি করবে?"
রাখাল মাথা নুইয়ে রাজাকে সম্মান দেখিয়ে বলে, "আপনার আদেশ পেলে আমার যথাসাধ্য আমি করবো মহারাজ।"
রাজা বলেন, " খুব ভালো কথা। আমার পাশের রাজ্যে এক বার্তা পাঠাতে চাই, আমি চাই তুমি সেই বার্তা নিয়ে যাও দূত হয়ে। এইখান থেকে বার হয়ে পশ্চিমে যেতে হবে, একটা ছোটো নদী পার হতে হবে, সেতু আছে। তারপরেই পশ্চিমের বিরাট প্রান্তর, তা পার হলেই পাশের রাজ্যের রাজধানী। কী, পারবে যেতে?"
রাখাল বলে, "অবশ্যই পারবো মহারাজ। কখন যেতে হবে? "
রাজা সীলমোহর করা বার্তা রাখালের হাতে দিয়ে বলেন, "এখনই যেতে হবে।"
"এখনই? " রাখাল একটু অবাক হয়, কিন্তু আপত্তি করে না। রওনা হয়।
পশ্চিমের বিরাট প্রান্তরে পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই দিক দিগন্ত আচ্ছন্ন করে ছুটে আসে ভয়ানক ঝড়, শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। এই এত বড় বড় শিল ঠল্লর ঠল্লর করে আছড়ে পড়ছে, একটা মাথায় লাগলে আর দেখতে হবে না। দু'হাতে মাথা চেপে ধরে মাটিতে শুয়ে পড়লো রাখাল, ভাবলো আজই সে শেষ, মেঘবতীর সঙ্গে দেখা বুঝি আর হোলো না।
কিন্তু কই, গায়ে মাথায় তো পড়ে না শিল! চারিদিকে শিলের স্তূপ জমে গেছে, কিন্তু রাখালের গায়ে পড়ে না তো! কী ব্যাপার? তার উপরে ডানা মেলে বাতাসে ভেসে আছে কাঠঠোকরা, মন্ত্রবলে বড় করে নিয়েছে ডানা, সেই যাদুডানা ছাতার মতন মেলে সে রক্ষা করছে বন্ধুকে।
ঝড় থামলে সে নেমে এসে সব কথা বললো রাখালকে, কীভাবে ষড়যন্ত্রের কথা সে জানতে পেরেছিলো, কীভাবে তা থেকে রাখালকে রক্ষার ছক কষলো-সব। রাখাল তাকে অনেক ধন্যবাদ দিলো, অনেক কৃতজ্ঞতা জানালো। তারপরে সে আর কাঠঠোকরা চললো পাশের রাজ্যে। সেখানে দৌত্যকার্য সেরে নির্বিঘ্নে ফিরে এলো দু'জনে।
মেঘরাজের রাগ আরো বাড়লো। বারে বারে এভাবে সব চক্রান্ত বিফল করে বেঁচে ফিরছে কী করে পৃথিবীর ছেলেটা? এইবারে এমন ব্যবস্থা করতে হবে-
পরদিন রাজা আবার তার প্রধান যাদুকরকে তলব করলেন। তারপরে তাকে নিয়ে চলে গেলেন বাগান টাগান ছাড়িয়ে জগলের মধ্যে। সেখানে একটা গাছের তলায় বসে গোপণে পরামর্শ শুরু করলেন।
রাজা বললেন, "হে যাদুকর, কী করা যায়? শিলাবৃষ্টিতেও তো কিছু হোলো না ব্যাটার।"
যাদুকর বললেন, "শুনুন মহারাজ, হবু জামাতার সম্মানে জঙ্গলে একটা বিরাট শিকার অভিযানের আয়োজন করুন। রাজ্যের যত ভালো ভালো তরুণ শিকারীকে আমন্ত্রণ করুন। শিকারীদের পুরোভাগে থাকবে পৃথিবীর ঐ ছেলে। শিকারীদের মধ্যে মিশে থাকবে আপনার বাছাই করা আততায়ীরা। জঙ্গলের মধ্যে চারিদিকে তীর বর্শা ছোঁড়া চলবে, তার মধ্যে কার তীর কার বর্শা ওর গায়ে লেগে ওকে পেড়ে ফেলেছে, কে বলতে পারবে মহারাজ?"
মহারাজ তো একেবারে লাফিয়ে উঠলেন, "আহা, কী পরিকল্পনা! সফল যদি হয়, তবে হে যাদুকর আপনার মাহিনা বাড়িয়ে দেওয়া হবে পরের মাস থেকেই। "
এদিকে এবারেও গাছের উপরে সেই সদাসতর্ক কাঠঠোকরা। সব সে শুনে নিয়েছে আড়ি পেতে। আর শোনা শেষ হতেই শাঁ শাঁ করে উড়তে উড়তে সোজা যাদুকরের কর্মশালায় চলে এসেছে। যাদুকরেরই মালমশলা দিয়ে সে রাখালের জন্য বানিয়ে নিয়েছে এক যাদুবর্ম। পালকের মতন হালকা একটুকরো কাপড়, রাখালের পিরানের নিচে পরিয়ে দিয়ে তাকে সব বুঝিয়ে দেবে সে শিকারের দিন।
দেখতে দেখতে শিকার অভিযানের দিন এসে যায়। কাঠঠোকরা রাখালকে সব বুঝিয়ে দিয়ে বর্মটা পরিয়ে দিলো পোশাকের ভিতরে। এরপরে তো বনের মধ্যে শিকারের সময় আততায়ীদের বর্শা আর তীর বারে বারে রাখালের দিকে ছুটে আসতে লাগলো কিন্তু বিঁধতে পারলো না, দূর থেকেই পথ বদলিয়ে চলে যেতে থাকলো।
সেই রাত্রে রাখাল এসে মেঘবতীকে সব বললো, তারপরে বললো, "প্রিয় মেঘবতী, তোমার বাবা আমাকে না হত্যা করা পর্যন্ত থামবেন বলে মনে হয় না। এ অবস্থায় আমার পৃথিবীতে ফিরে যাওয়াই ভালো। আজ রাতেই তোমার যাদু পালকের সিঁড়ি দিয়ে আমায় আমার গাঁয়ের কুটিরে নামিয়ে দাও। "
মেঘবতী এইসব ষড়যন্ত্রের কথা শুনে একেবারে হতভম্ব হয়ে গেছিলো। সে বললো, "এখানে আমিও তাহলে আর থাকবো না। চলো, তুমি আমি ইঁদুর কাঠঠোকরা এই চারজনেই ফিরে যাই।"
যা বলা সেই কাজ। সেই রাতেই তারা এসে সেই মেঘসুড়ঙ্গের কাছে হাজির। সেখান থেকে যাদুপালকের সিঁড়ি দিয়ে আবার তারা নেমে এলো রাখালের কুটিরে।
কাঠঠোকরা বললো, " রাখাল, জানো, ঐ যাদুকরের কর্মশালায় যখন কাজ করছিলাম তখন ভালো কাজ করেছি বলে যাদুর দেবতা আমাকে দুটো বর দিয়েছেন। "
রাখাল বলে, "কী বর?"
কাঠঠোকরা বলে, "একটা বর হলো, আমার প্রিয় কেউ যদি কোনো ইচ্ছা করে, তবে আমি সে ইচ্ছা পূরণ করতে পারবো। আর আরেকটা বর হোলো, আমার নিজের করা একটা ইচ্ছাও পূর্ণ হবে। রাখাল, এখন বলো তো তোমার কোনো সাধ আছে কিনা। "
রাখাল বলে, "আমার সাধ, তুমি আর ইঁদুর দু'জনেই মানুষ হয়ে যাও, আমাদের বন্ধু হয়ে আমাদের সাথে থাকো।"
ব্যস, কাঠঠোকরা আর ইঁদুর দুজনেই মানুষ হয়ে গেলো কয়েক মুহূর্তে।
এবারে মানুষ হয়ে যাওয়া কাঠঠোকরা বলে, "আমার সাধ তুমি হও এখানের রাজা, মেঘবতী হোক রাণী, আর তোমাদের সোনার রাজ্যে কোনো দুঃখ না থাক। "
বলতে না বলতেই কুটির মিলিয়ে গিয়ে সেখানে দেখা দিলো সুন্দর অট্টালিকা, কোথা থেকে সারে সারে সুন্দর সুন্দর যুবক যুবতী এসে রাখাল আর মেঘবতীকে রাজা ও রানী বলে বরণ করলো। তারা সবাই তার প্রজা।
তারপরে সকলে সুখেশান্তিতে কালাতিপাত করতে থাকলো। আমার কথাটি ফুরালো।
মন্তব্য
সুন্দর! সুন্দর। অতীব সুন্দর।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
রুশ দেশের উপকথা নামে একটা বইয়ে এই রকম একটা গপ্পো পড়েছিলাম। 'রাজপুত্র ইভান আর রাজকুমারী ভাসিলিসা' নাম ছিলো বোধ হয়।
চলুক
এত ভুট্টাখই খাইয়েন না।
আরে যাদুকরী ভাসিলিসার কাহিনি তো বিখ্যাত গল্প।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পড়ছি।
[ তবে সাংগ্রিলা'র জন্য বায়না আছে ]
ডাকঘর | ছবিঘর
সাংগ্রিলা পলাতক।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
যাক, শেষ পর্যন্ত সব কিছুই ভালয় ভালয় মিটল।
ঠিক।
সোয়াজিল্যান্ডের এই উপকথায় বেশ বড় অ্যাডভেঞ্চারের মতন ব্যাপার, বাকী আফ্রিকান উপকথাগুলোতে এরকম খুব একটা পাই নি, সেসবে বরং বেশ ঝটাপট সব হয়ে যায়।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
facebook
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কি মিষ্টি একটা গল্প!
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
গল্পটা সত্যিই মিষ্টি, এসব উপকথা শত শত বছরেও পুরানো হয় না। কী অবলীলায় ফ্যান্টাসিগুলো এসেছে, দেখেছেন? কে বলে পুরানো যুগের লোকের কল্পবিজ্ঞানকাহিনি বানানোর সামর্থ্য ছিলো না? এখানে কোনো কোনো জায়গা তো রীতিমতন কল্পবিজ্ঞানের মতন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কাহিনিতে গলদ আছে। মেঘবতী আর রাখাল যে বিবাহপূর্ব বেলেল্লাপনা করলো, সেজন্য দোররা মারা হবে না?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
রাখালের জায়গায় ধূগো বসাইলেই দোররা মারার কাজ শুরু হপে।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
বিবাহপূর্ব বেলেল্লার প্রমাণ কী? কোনো প্রমাণ নাই।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কতদিন পর তুলিরেখার লেখা ! আহা !
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আশালতা।
সেই বালক দুইটারে আর দেখি না, খইমুড়িও আর বিলানো হয় না।
অরা কেমুন আছে, জানো?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ভারি ভালো লাগল।
নতুন মন্তব্য করুন