এইসব চৈত্রদিনে সেই বাড়িটা মনে পড়ে। ছোট্টো একটা বাড়ি, চারপাশে একটু উঠান আর ফলফলারির গাছ। বেড়ালতার বেড়া দেওয়া সীমানা। তার পরেই বিরাট এক আদিগন্ত ধানক্ষেত। আর একটা শিমূলগাছ, বাড়ীর লাগোয়া দক্ষিণের একটুখানি ফাঁকা জমিতে। ওটা ধানক্ষেতের পাশেই। আশ্চর্য গাছ এই শিমূল, শীতে পাতাটাতা সব ঝরে ন্যাড়া ডালপালা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, শীতের শেষে হঠাত করে ভরে যায় কুঁড়িতে,সেই কুঁড়ি ফুটে টকটকে লাল ফুলের মেলা বসে যায় বসন্তে, একটাও পাতা নেই,শুধু ফুল আর ফুল! তারপরে ফুল থেকে ফল হতে থাকে আর সবুজ পাতায় ঢেকে যেতে থাকে গাছটা, সেই সবুজের কী মিহিন কোমল রঙ!
গ্রীষ্মে ঘন সবুজ হয়ে যেত ওর পাতারা, গাছের নীচে ঘন স্নিগ্ধ ছায়া পড়তো। শিমূলের পুরো চেহারাটাই অতি সুন্দর, পাতা যখন থাকতো না, তখনো তার গঠন অতি সুন্দর। পাতা থাকলে আরেক রূপ, ফুলেভরা অবস্থায় আরেক রূপ, সকালে তাকে একরকম লাগতো আর বিকালে আরেক রকম। সন্ধ্যায় সে বিরাগী সন্ন্যাসীর মতন দাঁড়িয়ে থাকতো পশ্চিমের রক্তলাল আকাশের পশ্চাদপটের উপরে, সন্ন্যাসী-রাজার মতন! কোথায় আজ সে? নেই আর। কেউ থাকে না, সবাই কেবলই চলে যায়।
বুকের ভিতর সূর্যদীঘল বাড়ি
চিলেকোঠায় আকাশউড়াল ঘর,
নীল শাড়িটা উড়ছে বাতাস লেগে
চোখের মধ্যে পড়লো কুটো খড় ?
জলের কাছে ঝুঁকে পড়েই দেখি
স্বপ্ন বলে আরেক মাটির কালি-
ওর দু'চোখের বিষাদকাঠি এসে
তীক্ষ্ণ ছুঁলো আমার চোখের বালি।
বালির উপর সাপবাতাসি খেলা
খেলার শেষে অঙ্ক-পাথর ঘর
ঘরের ভিতর মন্ত্র-আগুন জ্বলে
সেই আগুনে পুড়িয়ে ফেলি জ্বর।
জ্বর-ফুরানো উচ্ছেতেতো জিভে
আলতো ছোঁয়াই ঝাঁঝমেশানো হাসি
চৌখুপীরাও হাসছে লালেনীলে
সন্ধ্যাতারায় বাজছে অবাক-বাঁশি।
মন্তব্য
আবু ইসহাক নাড়িয়ে দিয়েছিল এক ঝটকায় তাঁর ''সূর্যদীঘল বাড়ি'' দিয়ে।
আপনার কথা-কবিতাও ছুঁয়ে গেলো দিদি। 'সন্ধ্যাতারায় বাজছে অবাক-বাঁশি' এক অবাক করা বিস্ময় নিয়ে বেজেই যায় অহরহ।
ডাকঘর | ছবিঘর
ধন্যবাদ তাপস।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তালিয়া
ধইনবাদ।
কিন্তু আপনার সেই কবিতা ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির কেসটার কী হোলো?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কবিতার দুকান রেগেমেগে বন্ধই করে দিছি। একের পর এক লোক এসে খালি বখরা চায়।
বখরা দিয়া দেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সুন্দর কবিতা!
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
খুব ভালো লাগলো।
আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
শান্ত সুন্দর মেঘ-ছায়াবৃত শুনশান দারুণ এক লেখা। হু হু করে ওঠে ভেতরটা।
মেঘ রৌদ্র বৃষ্টি।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনার লেখাটা পড়ে আমাদের পুরোনো বাড়িতে ফিরে গেলাম যেন। সামনের এক চিলতে বাগানে ঘন গাছপালার ভীড়ে টুকরো টুকরো রোদের আলপনা। চৈত্রের ধুলো ওড়া নির্জন দুপুরে হু হু বাতাসে বুকের ভেতর ছলকে ওঠা মায়া। লেখাটায় সেই মায়ার গাঁথুনি খুজে পেলাম।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
চৈত্রবনের হাওয়া বড় মায়ার টানে জড়ায়। মাটিতে পাতার ছায়াজাল আঁকা রোদ আর সেই ছায়া দুলিয়ে যায় হাওয়ার ঘুর্ণী আর দুপুরের ঘুঘুদের সেই ঘুমেলা ডাক- কী এক ম্যাজিক ছিলো সব মিলিয়ে। যেন আরেক পৃথিবী।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
লেখাটা পড়ে হ্যাঁচকা টানে নিজের সেই শিশুবেলার হেটে হেটে নতুন কোন গাছ গাছালির বাড়ী দেখে আবিস্কারের আনন্দ নিয়ে দিন গুলোর কথা মনে পড়ে গেলো।
কবিতা বড্ড মায়াবী এক দিগন্ত।
আহা, সেই সব মায়াবী দিন গুলো! আমাদের পৃথিবী তখন তরুণী ছিলো। আসলে আমাদের চোখ ছিলো নতুন, মন ছিলো নতুন, সব কিছু কত যাদুময় ছিলো!
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
খুব ভাল্লাগছে
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ধন্যবাদ ত্রিমাত্রিক কবি।
আমি এখন পর্যন্ত যত কবি দেখেছি সব দ্বিমাত্রিক, সবাই টু-ডি পাতার উপরে শব্দ লিখে লিখে কবিতা বানান। আপনিই প্রথম থ্রী-ডি কবি।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
খুব ভালো লাগল দিদি, আগের দিনগুলোতে ফিরে গেলাম মনে হল !
ধন্যবাদ এবিএম।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আমার কেমন যেন লজ্জা লজ্জা লাগছে।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
আরে কও কী?
তুমি তো সু পা শি।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
দিলেন তো মনে করিয়ে আমাদের বাড়ির শিমুল গাছটার কথা!
কবিতাটা অনেক সুন্দর---
ধন্যবাদ পথিক পরাণ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন