ভোর হয়ে আসে পুবের দিগন্তে। একটা অতি হাল্কা সাদা আলোর চাদর এসে পড়ে মাটিতে, সেই ক্ষীণ নীহারশুভ্র আলোয় ঢেকে যায় নক্ষত্রমালা, হারিয়ে যায় সেই টলটলে নিবিড় রাত্রিনীল যার মধ্যে মণিকণার মতন টলমল দুলছিলো নক্ষত্রেরা, নীহারিকাসমূহ ছড়িয়ে ছিলো শুভ্র উর্ণাতন্তুর মতন! এখন শুধু দেখা যাচ্ছে দুই একটা অতি উজ্জ্বল তারা আর গ্রহেরা। ওরা দপদপ করে জ্বলছে আকাশে, দক্ষিণে এলানো একটা কাল্পনিক রেখার কাছাকাছি, একটু উপরে বা নীচে, খুব দূরে নয়।
পুব আকাশে গোলাপী রঙ জেগে উঠলো এইবার। ঊষা। সূর্য উঠতে দেরি নেই আর। সব তারা মিলিয়ে গেছে, গ্রহেরাও যায় যায়। শিশিরভেজা একটা টলোটলো সময়। কোথা থেকে যেন ভেসে আসে আশ্চর্য সৌরভ, ভুলে যাওয়া একটা স্মৃতি এসে যেন টান দেয়। পথের পাশে ক্যাকটাসতলায় গাড়ী থামিয়ে লক করে পাশের নামাল হয়ে এলিয়ে পড়া জমিতে নেমে আসে অর্চিষ্মান। ওর মনে হচ্ছিলো আরেকটু গেলেই পাওয়া যাবে কোনো গাঁ, সেই গাঁয়ে হয়তো এখনো পাওয়া যায় আশ্চর্য পাহাড়ী গুহা, গুহার দেয়ালে ছবি, সেইসব ছবি আসলে অদ্ভুত ভাষা।
ঢেউয়ের সঙ্গে ভাব ছিলো খুব সেই সেকালে
লেবুরঙের ভোরের বেলার ঘুমভেজা চোখ
পালিয়ে যাওয়া সে কোন্ অতীত,
টগর ফুলে টুনির বাসায়,
রোদের টুকরো মেঘের উড়ান
সেই ঘরে তোর পায়ের নূপুর, চলার ধ্বনি।
এখন যে তুই অনেক দূরে
এখন যে তোর বাসা ঘিরে
অচেনা গাছ, অচেনা ফুল
মুখগুলো সব চেনা চেনা কিন্তু তবু বাধে কোথায়
এখন যে চোখের কোণে কীসের ঝলক
এখন তোর আর সময় যে নেই পরণকথার।
মন্তব্য
ভোরের শুরুর অসাধারন ছবি। মনে হল চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। অনেক দিন এত ভোরে ওঠা হয়না। আপনার লেখায় ইচ্ছেটা জেগে উঠল। খুব ভালো লাগলো।
পরণকথার অর্থ কি? জানালে খুশী হব।
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পরণকথা মানে কি?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
পরণকথা মানে হোলো লোককথা বা উপকথা বা রূপকথা।
জীবনানন্দের কবিতায় পড়েন নি? "পরণকথার গন্ধ লেগে আছে" "মোমরঙা হাঁসটিরে ডেকে নেবে পরণকথার দেশে" এইরকমের সব লাইন?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধন্যবাদ। কবিতাটা অসাধারণ হয়েছে।
কবিতার কিছুই মনে নেই, এখনতো আর পড়াও হয় না তেমন (সচলায়তন বাদে)। তবে এইটা মনে আছে স্কুলে থাকতে জীবনানন্দের কবিতার বেশ কিছু শব্দের মানে বুঝতে না পেরে একবার এক স্যারের কাছে গেছিলাম, স্যার বলেছিল গীতাঞ্জলী পড়ে তারপর যেন আসি। হেহ হে আর ওই শব্দের মানে গুলো জানা হয় নি।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
জীবনানন্দের কবিতা বুঝতে গীতাঞ্জলি? তারপরে সেটা পড়ে এলে গীতাঞ্জলির কিছু জায়গায় আটকে গেলে বলবে মেঘনাদবধ কাব্য পড়ে আসতে, তারপরে "মেঘনাদবধ" তো মারাত্মক কঠিন কঠিন শব্দওয়ালা, সেই নিয়ে আটকে গেলে বলবে যাও মূল মহাভারত পড়ে এসো, তারপরে--- এই করতে করতে কার্যকারণ পরম্পরায় বাবা আদমের আপেল খাওয়া অবধি চলে যেতে হবে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
আহা, এত হাসলে চলপে?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আরে হাসি কি আর সাধে। ঘটনাতো প্রায় ঐ রকমি। এই গীতাঞ্জলী ট্রিটমেন্টের কিছুদিন পরেই স্কুল ম্যাগাজিনে লেখা দেওয়ার জন্যে ক্লাসে ক্লাসে ঘোষণা দিয়ে গেলো। আমার কেন যেন মনে হল আমি মহাকবি, একটা মহান কবিতা আমি খুব সহজেই লিখে ফেলতে পারি। লিখতে যেয়ে দেখি ইকোনো বল পয়েন্ট ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়তেছে, তো ধ্বস্তাধস্তি দেখে বড় ভাই বুদ্ধি দিল আবার স্যারের কাছে যাইতে। এই খানে বলে রাখি ঐ শব্দের মানে জানার পদ্ধতিও বড় ভাই বাৎলাইয়া দিছিলো। তাপ্পর আর কওয়া লাগপে না লিচ্চয়
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
তুমি ব্যাটা কালিদাসের হারিয়ে যাওয়া নাতি
ডাকঘর | ছবিঘর
আহা, তখন যদি আপনার চরম উদাস মশায়ের লগে দেখা হইতো, তাইলে একটা কেন দশটা কবিতা বানাইয়া ফেলতে পারতেন, জাভা বা ম্যাটল্যাব যদি তখন নাও থাকতো, টুকরা টুকরা কাগজ আর বাটি তো ছিলো। নানারকম বৈচিত্রময় শব্দ যেমন আকাশ আঁকশি দড়ি বাঁশ বেণু বীণা আক্কেল কন্ঠ নীল মৈরেয় নিপুনিকা এইসব সব ডিকশনারি দেইখা দেইখা টুকরা টুকরা কাগজে লিখ্যা বাটিতে নিয়া, আরেকটা বাটি চাপা দিয়া ইচ্ছামতো ঝাঁকানি দিতেন। তারপরে মাটিতে ঢালতেন, ব্যস পর পর যেসব শব্দ তুলতেন, খাতায় পর পর লিখতেন, লাগসই ক্রিয়াপদ ও অব্যয় বসাইতেন, ব্যস কাফি কবিতা হইতো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বুজছি আপনার লেখালেখির রহস্য। এইখানে কঠিন তো কিছুই নাই, খালি কিছু দন্ত উতপাটনে সক্ষম শব্দ খুঁজে বের করা এই যা কাজ।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
তবে ? দন্ত উৎপাটনে সক্ষম শব্দের বিরাট এক ডিকশনারি লইয়া আপনের সেই পুরানো মাষ্টারমশাইয়ের কাছে যান।
মোপাসাঁ না কে জানি এক বিখ্যাত লেখক একবার এইরকম করেছিলেন। তিনি তখনও বিখ্যাত হন নি, পরে বিখ্যাত লেখক হন।
আপনার চান্স আছে। সিরিয়াসলি কইলাম।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কাম সারছে
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধরেছ ঠিক, তবে হারিয়ে যাওয়ার আগেই দাদুরে ওই যে মেঘ, পাহাড় টাহাড়, দূত টুত (সে অনেক দিনের কথা তো তাই নামটা ঠিক মনে পড়তেছে না) নিয়ে বেশির ভাগটা লিখে দিছিলাম। বুড়া বেটা কৃতজ্ঞতা স্বীকার তো করেই নাই, আবার চামে চামে চরম বিখ্যাত হয়ে গেলো।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
কিছু লেখার হাতে মনে হয় শাবল থাকে। পড়লেই খুড়তে শুরু করে বুকের ভিতর। কিছু লেখায় চরম কাঁদুনে গ্যাস । যতই পালান তাও হু হু করে জলের মিতালি গালের রোমে।
কিছু লেখায় থাকে সাবান ঘষা আলতো খুশি, কিছু লেখায় টুকটাক বাদামের খোসা ভাঙ্গা সময়ের বোতাম। আচ্ছা এমন হাজার লেখা আছে- আর বেশি ধরন বর্ণনায় নয় নাই যাই।
আপনার লেখা-
আছে দুটো করে ডানা। আলতো, শুভ্র, সংগোপনে পিঠের পাশে এসে কখন জুড়ে যায়। বাইরে বাতাস আছে কি নেই; থোড়াই কেয়ার। কোন অগোচরে ভাসিয়ে নিয়ে যায় ফেলে আসে সেই সব দিনে।
এখনো মনে আছে আপনার একটি লেখা পড়ে খুব ইচ্ছে জেগেছিল ফেলে আসা সেই স্কুল বেলার হাতি পাতি হাঁটার রাস্তা গুলোকে দেখে আসতে। বাস্তবে পারিনি তবে আপনার বদৌলতে কটা দিন স্মৃতির মাঝে বেস চলা ফেরা করেছি।
মন্তব্যের মাঝে উচ্ছ্বাস এর চেয়ে আর অন্যকিছু নেই।
আর উচ্ছ্বাসের বিঃদ্রঃ - এমন লেখা যেন ঘুরে ফিরে লিখুন বারবার। পাঠক হিসেবে বেস আরাম পাই সময়ের পাখায় উড়াউড়ি করে।
কমেন্ট যা দিলেন সেটাই একটা শিশির টলমল অশ্রু ঝলমল হাসি কলকল একটা লেখা হয়ে গেলো তো।
নিন,
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
খুব ভাল লাগল।
আপনার লেখাগুলোর আঘ্রাণের সাথে আপনার প্রোফাইল পিক টা কোথায় যেন মিলে-মিশে যায় বারবার।
প্রোফাইল পিকটা তো চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবী দেখার! এটা তো কেবল স্পেসে যাওয়া মানুষেরা দেখতে পায়, আমাদের তো কেবল ছবি দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। তবে কিনা, স্বপ্নে দেখতে তো বাধা নেই।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ইশ! ভোরের আলো এই দুপুরেও ছড়িয়ে দিলেন চোখের উপর !
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কবিতাটা অসাধারণ লেগেছে।
গদ্যের শেষের লাইনটাই পাঠকের সমস্ত চেতনাকে ভেঙে চুরমার করে করে দিতে যথেষ্ট।
আমার বেলায় অন্তত তাই হয়েছে।
অনেক ধন্যবাদ।
গানটার জন্য আরো ধন্যবাদ। কেমন যেন সেই নীল জ্যোৎস্নার কথা মনে পড়িয়ে দেয়, যা পৃথিবীতে নেই, আছে অন্য কোনো গ্রহে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
খুব ভাল লাগল।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ঊষালগ্ন বাস্তবে এখন আর দেখা হয়না। আপনার লেখাটার মাঝে উপলব্ধ হলো।
অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বরাবরের মতোই
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চিত্রকল্পগুলি খুবই সুন্দর।
আর
কি মিষ্টি একটা কথা। গুচ্ছ কল্পনাটাই কি কিউট - লেবুরঙের ভোর
ডাকঘর | ছবিঘর
আপনার আগে, আরো বহুকাল আগে আমার সচলে আসার আদিযুগে এই "লেবুরঙের ভোরেরবেলা" শুনে আরেকজনও খুব আপ্লুত হয়েছিলেন।
কিন্তু সত্যিই ভোরবেলাকে লেবুরঙেরই লাগে আমার, একটু বেলা হলে রূপো-রূপো হয়ে যায়, আর গরম দুপুর হলো ঝাঁঝালো মরিচ, বিকেল হলো তুলো-তুলো, সূর্যডোবার পরের সন্ধ্যা হলো কমলাগোলাপী, তারপরের সন্ধ্যা হয়ে যায় ধূপছায়ার মতন, তারপরে মেলে দেওয়া কালো কেশের মতন----
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কিছুই বলার নেই দিদি।
ডাকঘর | ছবিঘর
অনেক ধন্যবাদ তাপস।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
(গুড়)
facebook
পড়েছেন বলে অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন