শীতের দুপুরজাগা কমলা রঙের রোদ্দুরের মধ্যে মিশে থাকা প্রিয় শব্দমালা, "হরেএএএক মাল পাঁচসিকা"র ফেরিওয়ালা, শিল-খোটাও ওয়ালা, টিন আর লোহা ওয়ালা। আরও ছিলো কাগজকুড়ানি মেয়ে, নিঃশব্দ, ছেঁড়াখোঁড়া রঙ জ্বলে যাওয়া ফ্রক পরা, রুখু চুল লালচেবাদামী হয়ে গেছে রোদে রোদে। কোথায় তারা আজকে?
আর ছিলো এক উলের ডিজাইনের মতন তোবড়ানো গালওয়ালা সাদা থান পরা বুড়ি, মাথার চুল একেবারে ফিনফিনে সাদা হয়ে গেছে। আম কি কাঁঠাল কি সজনেগাছের ছায়ায় মাদুর পেতে শুয়ে মাথা ছায়ায় রেখে রোদে গা রেখে মস্ত চোখ মেলা ছোট্টো নাতনিকে গল্প শোনাতো। শীতের রোদ পোহানো ও হলো, দুপুরও কেটে গেল গল্পে গল্পে। সাতভাই আর তাদের এক বোন টুয়াইয়ের গল্প। সাতভাই বাণিজ্যে যায়, টুয়াই কী করে? তাই তো, টুয়াই কী করলো তারপরে?
হারিয়ে গেছে সেসব গল্পদুপুরের আলোছায়া আর ফেরিওয়ালার ম্যাজিকঝুড়ি। সেই ঝুড়ির ঢাকনা সরালেই বেরিয়ে আসতো টিপ, চুরি, মালা, পুতুল, খেলনা কত কী ! আজ সেই সব কোথায়? সেই সব টিয়াসবুজ দরজায় বাঁকা হয়ে পড়া সকালরোদ্দুরের ফালি, যে রোদ দেখলেই মনে হতো ছুটি, ছুটি, আজ ছুটি। মনে পড়ছে ছলছলে একটা নদী, নৌকার মধ্যে কত লোক, ওরা সবাই নদী পার হয়ে ওপারে যাচ্ছে।
সব গুলিয়ে যাচ্ছে অদীনার, সব। টেবিল জুড়ে রোল খুলে বিছিয়ে রাখা ম্যাপ, তার দাগগুলোর উপরে হাত বোলায় অদীনা, হাতে তো কই আলাদা লাগে না কিছু! দাগও লাগে না। কোথায় এত কাঁটা? চিনচিন করে ওঠে ওর আঙুলের ডগা, অনেকদিন আগে সেলাই করতে করতে সূচ ফুটে গেছিলো, একবিন্দু লাল চুনির মতন ফুটে উঠেছিলো রক্ত।
ক্লান্ত লাগে অদীনার, এত বড় দিনটার এত এত ঘন্টা একলা থাকতে হয় তাকে, হিন্দোল ফিরবে সেই সন্ধ্যের পরে, সাতটা কি আটটায়। একলা এত বড় বাড়িতে কী করবে এতক্ষণ অদীনা? হিন্দোলের অসমাপ্ত সোয়েটারটা বুনতে বুনতে ঘুমিয়ে পড়ে সে। স্বপ্নে দ্যাখে জল আর জল, কূলকিনারাহারা জলরাশি, নীল, নিতল। সে কিনারা চায়, সে মাটি চায়, সে চায় ঘরবসত, ঘর ঘিরে বাগান, সেই বাগানে নিজের হাতে যত্নে ফুলের আর ফলের গাছ লাগাতে চায় সে।
বাতাসের পাতলা স্তর সরাতে সরাতে
বেরিয়ে পড়ে জল আর জল,
নিচে, তারও অনেক নিচে মাটি।
আকাশের ময়দানে নীল তুলো ফুঁড়ে
সোনালি স্বপ্ন ঘষা দূরে-
হোমা পাখি ছানাদের পা হাঁটি-হাঁটি।
মেঘ তুলো জল হাওয়া পার হতে হতে
ম্যাজিকের দেশ জুড়ে রাত
রূপশালী ধান আর কুশ কুটিকাটি।
মন্তব্য
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
মন খারাপ করে দিলাম নাকি আপনার?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
মন খারাপ ঠিক নয় দিদি, নস্টালজিক!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
নস্টালজিয়া অনেক সময় সময়ভ্রমণের আশীর্বাদ নিয়ে আসে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হুম্ম... ভালো বলেছেন
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
"সে কিনারা চায়, সে মাটি চায়, সে চায় ঘরবসত, ঘর ঘিরে বাগান, সেই বাগানে নিজের হাতে যত্নে ফুলের আর ফলের গাছ লাগাতে চায় সে।" কেমন অদ্ভুত কিছু ভালোলাগা লাইন কিছু বিষাদের সাথে মিলে একাকার হয়ে গেছে আপনার লিখায়।
আসলে মনে হয় কিছু কিছু মৌলিক জায়গায় মানুষের বিষাদ ও আনন্দগুলোর মিল থাকে। তাই নয়?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
মন খারাপের বাতাস উড়ে এমন লেখা পড়ে
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
মনখারাপ করে দিলাম?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আমিও লেখাটির উপরে চোখ বুলালাম। নানা ভাবে বুলানোর মতো করে বুলানো, দেখার মতো করে ছুঁয়ে ছুঁয়ে চলে যাওয়া কিংবা আলগোছে এক পলকা দীর্ঘশ্বাসের সাথে একটুকরো মেঘের উলউলে সাদা রং মাখিয়ে তাদের আকাশের ঠিকানায় চিঠির খামে ভরে তুলে রাখা।
উঠে এলো সেই সব দুপুর আমারো ঘন নির্জন দুপুরের পুকুরে নিস্তরঙ্গ জলের রেখায়। টুপ করে কাঁঠাল পাতা পরেছিলো কোন এক ক্ষণে। বাতাসের পানসি সেই পাল আর গুন টানার জন্য তাতে তুতে ঘর বেঁধে ছিলো এক চিমটে মাকড়শা। চোখের মাঝে পড়েনা এমন কম্পনেও তার কি দিশেহারা জীবন মরন পরীক্ষা চলছিলো। কঞ্চির আগায় আম চুরির যে তারের ফাঁদ থাকে সেইটা কোন মতে ছাড়িয়ে এগিয়ে ধরেছিলাম কাঁঠাল পাতাটিকে পাড়ে তুলে আনতে।
মনে পড়ে যায় সেই দিন গুলো।
কোন সুদূরের পাড় থেকে যে কোন সুদূরের পাড়ে যাবার এই অন্তরযাত্রা তার তো কোন ম্যাপ নেই তাই "সে কিনারা চায়, সে মাটি চায়, সে চায় ঘরবসত, ঘর ঘিরে বাগান, সেই বাগানে নিজের হাতে যত্নে ফুলের আর ফলের গাছ লাগাতে চায় সে।"
শুভ কামনা।
এমন লেখা দেখলে লেখককে কেবল হিংসা করতে মন চায়
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মায়ার নেশা কাটাতেই এ তীব্র অস্থিরতা
তবু, মায়ার পাহাড়েই আমার নিত্য বসবাস।
কী আর বলি, অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
লাফাং
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
প্রখর রোদ্দুর, আপনার কমেন্ট নিজেই কবিতার মতন।
কিন্তু আমচুরির কথা মনে পড়িয়ে দিলেন দেখি! আহা, এখন তো দেশে কাঁচা আমের সময়! মনে পড়ে গেল আমের চাটনি, চুরি করা কাঁচাআম আর মরিচলবণতেল মাখা, ইশ, এখন পাই কই! চুরির আমের সোয়াদ কখনো এমনি আমের মতন হয় না, অনেক বেশি হয়। ওর মধ্যে আদম-হবার খাওয়া সেই নিষিদ্ধ ফলের সোয়াদ থাকে (ফলটা কী ছিলো? আপেল? ), একেবারে যাকে বলে উফ, নিষিদ্ধ স্বর্গীয় ব্যাপার।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
প্রখর রোদ্দুর, আপনার কমেন্টের জবাব দিয়েছিলাম, লাফাং হয়ে একেবারে নিচের দিকে চলে গেছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
লাফাং
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন