এক দেশে ছিলো এক যাদুকরী। সে নানা যাদু তো জানতোই, আর জানতো নানা বনৌষধির গুণাগুণ। সেই সব বুনো লতাপাতা থেকে সে নানারকম ওষুধবিষুধ তৈরী করতে পারতো।
যাদুকরীর ছিলো একটি ছেলে, সে ছেলে দেখতে বিশেষ ভালো না, বুদ্ধিও তার বেশি নেই। লোকে তাকে ঠাট্টা করে, ভোদাই বলে ডাকে। যাদুকরীর তাই মনে ভারী দুঃখ। সে ভাবলো চেহারা তো বদলানো যাবে না, কিন্তু সে যদি এক আশ্চর্য যাদু-সরবত তৈরী করে ছেলেকে খাওয়ায়, ছেলে হয়ে যাবে খুব জ্ঞানী এক কবি, তার গভীর জ্ঞানের কথা আর আশ্চর্য সুন্দর কবিতাটবিতা শুনে লোকে মুগ্ধ হয়ে যাবে, ভক্ত বনে যাবে, তার চেহারার কথা আর কারুর মনেই থাকবে না।
যা ভাবা সেই কাজ, এক মস্ত পাতিলে লতাপাতা সিদ্ধ করতে বসালো যাদুকরী, একটি গোটা বছর ধরে জ্বাল দিতে হবে, প্রত্যেক মাসে মাসে বিশেষ বিশেষ তিথিতে নতুন নতুন টাটকা টাটকা বনৌষধি শুদ্ধাচারে নানা নিয়ম মেনে তুলে তুলে এনে যোগ করতে হবে, তবে শেষ পর্যন্ত তৈরী হবে মাত্র তিন ফোঁটা জ্ঞান ও প্রেরণার যাদু মহৌষধ। সোজা কথা নয়। সেই তিন বিন্দু পান করলেই ছেলে তার অমর কবি হবে।
এই কাজ একা করা তো সম্ভব না, তাই উনানে কাঠের যোগান দিতে যাদুকরী বহাল করলো এক অন্ধ বৃদ্ধকে আর পাতিলের জ্বাল হতে থাকা রস হাতা দিয়ে নাড়াবার কাজে বহাল করলো এক অনাথ বালককে, নাম তার গিহন।
দিনের পর দিন মাসের পর মাস কাজ চলে, এইভাবে বছরের শেষদিনটা এসে যায় একদিন। শেষ পর্যায়ের লতাপাতা এনে যোগ করে চোখ বুজে মন্তর পড়ছে যাদুকরী, এমন সময় তিনফোঁটা গরম রস ছিটকে এসে পড়লো রস জ্বাল দিতে থাকা গিহনের হাতের আঙুলে, উঃ জ্বলে গেল যেন। সে কিছু না ভেবেই যন্ত্রণা কমানোর জন্য মুখে পুরে দিলো আঙুল। ব্যস, যেই না সেই তিনফোঁটা পেটে যাওয়া, অমনি গিহন আর আগের গিহন রইলো না, তার জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত হলো। সে চারিপাশে যা শুনতে পায় নি তা শুনতে পেলো, যা দেখতে পায় নি তা দেখতে পেলো। সে শুনলো গাছে গাছে পাখিরা কথা কইছে, সে শুনতে পেলো বাতাস গান করতে করতে উড়ে চলেছে, সে দেখতে পেলো কী ছিলো আর কী হয়েছে আর কী হবে।
তারপরেই তীব্র ভয়ে অস্থির হয়ে গিহন পালালো, পিছনে সে শুনতে পেলো চুরচুর হয়ে ভেঙে পড়ছে যাদুসরবতের পাতিল আর উনান, যাদুকরী তাকে ধরবার জন্য ছুটে এলো। গিহন নিজেকে বদলে ফেললো এক খরগোসে, দ্রুত ছুটলো। পিছনে নেকড়ে হয়ে ধেয়ে এলো যাদুকরী। সামনে এক বিরাট সরোবর এবার, গিহন খরগোস থেকে হয়ে গেলো মাছ, জলে লাফিয়ে পড়লো। যাদুকরী এক উদবেড়ালের রূপ ধরে জলে লাফিয়ে পড়ে তাড়া করলো তাকে। গিহন তখন কবুতর হয়ে উড়ে গেল আকাশে, যাদুকরী বাজপাখি হয়ে তাড়া করলো তাকে। দু'জনে উড়ছে গ্রামের উপর দিয়ে, একজায়গায় গিহন দেখলো একরাশি গম স্তূপাকারে রাখা, সে একদানা গম হয়ে সেই স্তূপে মিশে গেলো। কিন্তু যাদুকরীর নজর এড়াতে পারে নি, যাদুকরী একটা কালো মুরগীর রূপ ধরে সেই গমদানা গিলে ফেললো।
নয়মাস ধরে যাদুকরী তাকে বইলো নিজের শরীরে, তারপরে গিহন ভূমিষ্ঠ হলো এক ফুটফুটে সুন্দর ছেলে হয়ে। যাদুকরী প্রথমে ভেবেছিলো ওকে মেরে ফেলে মাটি চাপা দেবে, কিন্তু এমন ফুটফুটে সুন্দর ছেলে দেখে মায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে হত্যা করতে পারলো না ওকে, এক ঝুড়িতে করে ভাসিয়ে দিলো নদীর জলে।
(পরবর্তী পর্বে বাকীটুকু)
মন্তব্য
গিহনের আরো বেটার উপস্থিত বুদ্ধি খাটানো উচিত ছিল, একদানা গম না হয়ে বরই এর কাঁটা-টাটার ক্যামোফ্লাজ নিলে ঐরকম কপাৎ করে তাকে গিলা যেত না
পরের পর্বের অপেক্ষায়।
..................................................................
#Banshibir.
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আরে হয়তো গিহন জেনেবুঝেই গম সেজেছিলো, কারণ গিললেই তো আর উগরাতে পারবে না। নিশ্চিন্ত। ওর শত্রু হয়ে থাকলে ক'দিন ওভাবে পালিয়ে পালিয়ে বাঁচবে? কিন্তু পুত্র হয়ে জন্মালে একটা সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে মায়ের মায়া পড়ে যাবার।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ভাল লাগা শুরু করার আগেই গল্প থেমে গেল।
রূপকথা জাতীয় লেখাগুলো এক নিশ্বাসে পড়ে ফেলতে হয়, ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়লে আমেজটা থাকে না।
পরের পর্ব শীঘ্রই আসিতেছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ইস, এরপর কি হল??? । পরের পর্ব শিগগির চাই।
আর দিদি আমি কিন্তু সাংগ্রিলার আশা এখনো ছাড়িনি বলে রাখলাম কিন্তু।
ডাকঘর | ছবিঘর
না রে ভাই তাপস, সাংগ্রিলা এই বছরে আর হইবে না।
তবে এই গল্পের পরের পর্ব শীঘ্রই আসছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কবে বাকিটুকু দিবেন সেটাও বলে যান!! অপেক্ষা করছি। ভালো লাগছিল পড়তে অনেক।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
আসছে, শীঘ্রই আসছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তারপর?? তারপর কী হলো?!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আরে তারপরেই তো আসল গঠনা!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এতটুকু দিলেন!!!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আসছে, আসছে, বাকীটুকু আসছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আপনার এই উপকথার অনুবাদগুলো পড়তে দারুণ লাগে। এই গল্পটা পরিচিত মনে হচ্ছে কেন জানি। পরের পর্বের প্রতীক্ষায়।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
ওয়েলসের এই উপকথা মনে হয় নানা ভার্সনে নানা দেশে আছে। তাই পরিচিত লাগতে পারে।
পরের পর্ব আসছে শীঘ্র।:-)
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ। শীঘ্রই পাবেন পরের পর্ব।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এত ছোটু কেনু তুলিদি? তারপরে আবার পরের পর্বের জন্য চুম্বক অংশটা রেখে দিছেন ।
বন্দনা, কতদিন পরে! ভালো আছো?
পরের পর্ব শীঘ্রই আসছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আমি ভালো দিদি, আর কতদিন পরে কি , আমিতো রোজি সচলে আসি,মন্তব্য ও করী। আপনি নিজেই তো পোস্ট দিয়ে উধাও, আর খুঁজে পাইনা।
বন্দনা, আমিও ঘুরে যাই রোজ না হলেও প্রায়ই। সেই পুরানো নাতিনাতনিগুলোকে আর তেমন দেখি না, তাই উপকথাও আসে না।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ঠিক বলেছো তুলিদি, অনেকদিন হয় আগের মত নাতিনাতনিগুলা মিলে আর জমজমাটা সেরম আড্ডা হয়না ।
আমিও নাতিনাতনিগুলিরে না দেইখা আর আসতে বিশেষ উৎসাহ পাই না।
সত্যি সেই সব দিন কেমন ছিলো, জমজমাট আড্ডা আর খাওয়াদাওয়ার গল্প।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ছোটবেলা থেকে রুপকথা আমার ভীষণ প্রিয় । দারুণ লাগলো । পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ।
পরের পর্ব শীঘ্রই আসছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
শুরুর আগেই শেষ পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম
নানা রূপ পালটে একজন আরেকজনকে ধাওয়া করার অংশটা স্থানীয় একটা উপকথাতেও পড়েছিলাম। সেই গল্পের মুণ্ডু আর লেজের কথা মনে পড়ছেনা তাই পুরোটা বলতে পারলাম না।
অটঃ একশ' থেকে কতো গেল? ঠাক্মা কিন্তু আর মাসখানেক হস্তিনাপুরে আছেন। এর মধ্যে একশ' না হলে আমি কিন্তু আর তাঁকে আটকাতে পারবো না। তিনি দণ্ডকারণ্যে চলে গেলে তখন তাঁকে চেপে ধরার দায়িত্ব কিন্তু আপনার।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আরে পান্ডবদা, ঠাকুমা দন্ডকারণ্যে গেলে অসুবিধা নাই, নৈমিষারণ্যে গেলেই মুশকিল। সেই নিরামিষ জঙ্গলে সবই নিরামিষ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
খেলুম না!! এতটুকু দিলে ক্যাম্নে কি?
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
পরের পর্ব শীঘ্রই আসছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কান্দেন ক্যানো?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নাআআআআআআ।।। আমি একনি সুনবঅঅঅঅঅঅ।
কাইন্দো না নাতি, এই তো আইলাম বইলা।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
গপ্প আদ্দেক বয়ে! বাকিটা শুনবঅঅঅঅঅ!!!!
==========================
আবার তোরা মানুষ হ!
আরে বাকীটা তো আসবেই।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
জলদি বাকিটা
আসছে, সে আসছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আহা, কদ্দিন করে রূপকথা দিলে!
কী করি? তোমরা কেউ আসো না। আশা, আয়না, ছন্দ, তুমি- তোমরা সবাই আমার ব্লগে আসা ছেড়ে দিলে, তখন থেকে উপকথারাও আর আসে না আমার হাতে। এমনকি ইস্কুলবেলাও আসে না।
তোমরা আবার আসতে থাকলে হয়তো ওরাও আসবে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এঁ... আমি তো ছিলুমই না অনেক দিন... ওই ছোঁড়া তো কৌপীন পরে বরফের দেশে গিয়ে পাকাপাকি তপস্যা করতে লেগেছে... বায়নামতিও স্থায়ীভাবে হাপিস... আর ঠাম্মিরও এখন দেখি সবেতেই বৈরাগ্য রোগ হয়েছে... কই যাই!
বুঝেছি, তোমরা সবাই বয়কট করেছ।
নইলে বায়না, কৌপীনধারী, বিরাগিনী ঠাম্মি সবাই আসতো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বেশি দেরি কইরেন না দিদি।
না না, দেরি হবে না, প্রায় হয়ে এসেছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পরের পর্ব আসুক শীঘ্র। অপেক্ষায় রইলাম।
পরের পর্ব দিয়ে দিয়েছি।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন