এক ছিলো সাগরঘেরা দেশ, উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম যেদিকেই যে যাক না কেন পথ শেষ হয় নীল সমুদ্রের তীরে। দেশটা একটা বিরাট দ্বীপ।
সেই দেশে এক ছেলে ছিলো, লোকে তাকে ডাকতো বরণ বলে, তার বাবামা প্রয়াত, ভাইবোনেরাও সব নিজের নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। নিজের বাসায় একাই থাকতো বরণ, কাজকর্ম করতো সারাদিন, বিকাল থেকে সন্ধ্যে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দিতো, তারপরে পানভোজনশালা থেকে খেয়ে দেয়ে বাড়ী ফিরে ঘুমাতো।
একদিন বরণ আড্ডাখানা থেকে একটু তাড়াতাড়িই বেরিয়ে ভোজনশালার দিকে যাচ্ছে, পথের উপরে দেখলো পড়ে আছে সবুজ পাতাওয়ালা একটা বড় ডাল, সেই ডালের ডগায় গোছা গোছা ফুল, আশ্চর্য সুগন্ধ সেই ফুলে। বরণ সেই ফুলাপাতাওয়ালা ডালটা হাতে তুলে নিয়ে ভাবলো, এ কোন গাছের ডাল? এখানে এলো ই বা কী করে?
সেটা হাতে নিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে হাঁটতে হাঁটতে সে এসে পড়লো সমুদ্রের তীরে, সেদিকটা পশ্চিম, নীল সমুদ্রের পশ্চিমদিকটা সূর্যাস্তের লাল আলোয় টলটল করছে। বরণ সাগরতীরের বালির উপরে বসে পড়লো, হাতের ডালের ফুলগুলো থেকে মনকেমন করা নেশা নেশা গন্ধ তার মনকে অবশ করে আনছিলো। তার মনে হলো কতদিন সে এই দ্বীপটিতে পড়ে আছে, কেন সে নৌকা নিয়ে নীল সমুদ্রের উপর দিয়ে যায় না দূর থেকে আরো দূরে? কী আছে ঐ দিগন্তের ওপারে? কিন্তু, কোথায় পাবে অত বড় নৌকা? লোকজনই বা পাবে কোথায় যারা সঙ্গে যেতে রাজী হবে? এই চেনা মাটিকে ছেড়ে অজানায় পাড়ি দেওয়া কি উচিত হবে?
সন্ধ্যা ঘন হয়ে আসছে তখন, আকাশে তারা ফুটছে। বরণ শুনতে পেলো কে যেন গান গাইছে! অদ্ভুত অচেনা সুর, কিন্তু কী অপূর্ব সেই সুর! বরণ উঠে দাঁড়িয়ে দেখলো একটি মেয়ে গান গাইতে গাইতে এগিয়ে আসছে। কাছে এসে মেয়েটা হেসে বলো, "তুমি বরণ না? সুবলের ছেলে?"
বরণ অবাক হয়ে গেছে, মেয়েটাকে সে আগে কোনোদিন দেখেছে বলে মনে করতে পারলো না। সে বললো "হ্যাঁ, আমি বরণ, সুবলের ছেলে।"
মেয়েটা বললো, " শোনো বরণ, তুমি এই চুপচাপ বসে বসে নিত্যকর্ম করা জীবন ছেড়ে সমুদ্রে পাড়ি দাও তোমার তরুণ বন্ধুদের নিয়ে। কত নতুন নতুন দেশ আছে সেখানে। সাগর যে তোমায় ডাকে, তুমি শুনতে পাও না? ঐ দূর দিগন্তের ওপারে কী আছে তুমি দেখতে চাও না? "
মন্ত্রমুগ্ধের মতন বরণ বলে, " হ্যাঁ, আমি শুনতে পাই, স্বপ্নের মধ্যে কতবার আমায় ডাক দিয়ে গেছে কে যেন, কিন্তু জেগে উঠে তাকে দেখি না। কে ডাকে আমায়? সমুদ্র ডাকে?"
মেয়েটি বলে, " হ্যাঁ বরণ, তুমি কালই উদ্যোগে লেগে যাও। তিনটে বড় বড় নৌকা নিয়ে রওনা হও তোমরা সবাই। তোমাদের জন্য কত বিস্ময় যে অপেক্ষা করে আছে!"
বরণ চুপ করে চেয়ে থাকে, ওর হাত থেকে সেই অজানা গাছের ফুলপাতাসমেত ডালটি নিজের হাতে নিয়ে রহস্যময়ী মেয়েটি সমুদ্রের দিকে চলে যায়, অবাক হয়ে বালির উপরে আবার বসে পড়ে বরণ। তার চোখের সামনে থেকে সব মিলিয়ে গিয়ে ফুটে ওঠে গভীর নীল সমুদ্র, যেদিকে সে তাকায় শুধু জল আর জল, কোথাও কোনো ডাঙা নেই, তার তরীটি ঢেউয়ে ঢেউয়ে দুলছে।
"যখন প্রথম ডেকেছিলে তুমি কে যাবে সাথে
চাহিনু বারেক তোমার নয়নে নবীন প্রাতে
দেখালে সমুখে প্রসারিয়া কর
পশ্চিমপানে অসীম সাগর
চঞ্চল আলো আশার মতন কাঁপিছে জলে।"
কিছুক্ষণ পরে সম্বিত ফিরে পেয়ে চোখ কচলে বরণ দেখলো মেয়েটা কোথাও নেই, যেন মিলিয়ে গেছে। সে উঠে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক চেয়ে চেয়ে খুঁজলো, এত অল্প সময়ের মধ্যে কোথায় যাবে মেয়েটা? কিন্তু কোথাও নেই সেই মেয়ে।
বরণ বাড়ী ফেরার পথ ধরলো, মনে মনে হয়তো সে এরকম কোনো গান গাইছিলো, "কে তুমি আমারে ডাকো, অলখে লুকায়ে থাকো/ আমি ফিরে ফিরে চাই/ দেখিতে না পাই।"
পরদিন থেকে বরণ একেবারে বদলে গেলো। বন্ধুদের আড্ডায় সে বললো এই অলস ঘরবন্দী জীবন তার আর ভালো লাগে না, সে সমুদ্র অভিযানে যেতে চা্য। বন্ধুরা শুনে অনেকে বিশেষ করে তরুণরা যাদের কিনা তখনো বিবাহ হয়নি, সংসার নেই, তারা লাফিয়ে উঠলো, তারাও যেতে চায়।
(আগামী পর্বে বাকীটুকু )
মন্তব্য
আপনার অনুবাদ তুলি আপা? মারাত্মক হইসে.
এরম কিপটামি করে গল্প ছাড়েন ক্যান আপনার দিলে কি রহম নাই?
..................................................................
#Banshibir.
আমাদের তুলিদি সোনার কলমে লেখেন কিনা, যা-ই লেখেন সোনারঙা হয়ে যায়।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
আরে না না, ছি ছি, এ কবিতা আমার অনুবাদ না।(বেগুনি হয়ে গেলাম একেবারে )
এ দাড়িবুড়ার একটা কবিতা থেকে কোটেশন। গপ্পে কবিতা টবিতা ছিলো না, তবে কিনা আমরা বাঙালি মানুষ, একটু কবিতা টবিতা না হলে কি চলে?
পরের পর্বে কিনা অভিযান শুরু হয়ে যাবে, তাই একটু পজ দিলাম আরকি।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ইশ দৌড়ে এসেও ফার্স্ট হতে পেলাম না। তাতে কি ! জমিয়ে বসলাম। এইবার একটু খানাদানা ছাড়ো দেখি। অনেকদিন তোমার হাতে খাইনা।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
একখুরি আমের চাটনি আর চারটে গরম সিঙারা নাও। আমিও এখন তাই দিয়ে বৈকালিক আহার সারছি।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
অ্যাঁ, আমার জন্য?
বেশ বেশ পরের পর্ব আসুক তাড়াতাড়ি তুলিদি।
এই তো ক'দিন পরেই পরের পর্ব আসবে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধুস। তারপর কী হলো?
যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...
তারপরে? আরে তারপরেই তো---
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হায়!!!হায়!! বাকিটা কখন পরব???
বাকীটা আসবে ক'দিন পরেই।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এইটা মনে হয় উপনিবেশবাদী রূপকথা?
০২
দারুণ
আইরিশ উপকথাটার শুরুতে উপনিবেশ উপনিবেশ মনে হয় বটে কিন্তু আসলে দেখা যাবে অন্যরকম।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধুউউউউউউর্... এরপর কী হইলো...
আসবে, আসবে, সব কথাই আসবে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
অর্ধেক ছাড়লেন?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ধৈর্য্য ধরুন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
দারুন, দারুন, দারুন।
এরপর...... অভিজান শুরু হয়ে গেলো? পরের পর্ব তাত্তারি।
ডাকঘর | ছবিঘর
পরের পর্ব এই আসলো বলে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আবারও আধখানা চন্দ্র?
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
আহা, আধখানা চন্দ্রের টেস্ট কেমুন তাতো কইলেন না?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
তারপর ?
আশা করছি পরের পর্ব দিতে পারবো কয়দিনের মধ্যেই।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সৌরভ কবীর
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বাহ বাহ, আবার উঠেপড়ে রূপকথা দিতে লেগেছ দেখছি, বহুত বড়িয়া!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন