আগের পর্ব এখানে
কয়েকদিন পরেই শুরু হয়ে যায় সাজো সাজো রব। বরণ ও তার বন্ধুদের নির্দেশমতন নৌ-কারিগরেরা তৈরী করতে থাকেন মস্ত মস্ত তিনটি নৌকা।
বরণ তার সমস্ত সঞ্চিত অর্থ এই কাজে লাগিয়েছে। ওর বন্ধু্রা আর গ্রামের অন্য লোকেরাও কিছু কিছু অর্থসাহায্য করেছে। নিজেদের নিয়মিত কাজের আগে পরে মহা উৎসাহে বরণ ও তার বন্ধুরা তদারক করে সেই কাজের। কেমন করে জানি ওদের এই আগ্রহ সমস্ত গ্রামের মধ্যে সঞ্চারিত হয়ে পড়েছে, সকলে ওদের উৎসাহ দেন।
একদিন সব ঠিকঠাক মতন তৈরী শেষ হলো, রসদও সব জমা করা হলো নৌকায় নৌকায়। তারপর সুন্দর এক সকালে তিন নৌকা ভরে রওনা হলো বরণের দল, এক এক নায়ে ছিলো নয়জনা করে লোক। দেখতে দেখতে কিনারঘেঁষা ধূসর সমুদ্র ছেড়ে খোলা নীল সমুদ্রে পড়লো নৌকাগুলো, মুক্ত সমুদ্রের ঢেউ তাদের নাও তিনটেকে মোচার খোলার মতন নাচাতে শুরু করলো। এদের মনে আনন্দ আর উৎসাহ আরো যেন বেড়ে ওঠে, যেন এতদিনের ঘরে পোষা জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে তারা এতদিনে সত্যিকারের দিগন্তপ্রেমী জীবনের ডানা মেলতে পেরেছে।
তারপরে কভু উঠিয়াছে মেঘ কখনো রবি
কখনো ক্ষুব্ধ সাগর কখনো শান্ত ছবি
বেলা বহে যায়
পালে লাগে বায়
সোনার তরণী কোথা ভেসে যায়
পশ্চিমে হেরি ডুবিছে তপন গগণকোণে
কী আছে সেথায়, চলেছি কীসের অন্বেষণে?
দিনের পরে দিন যায়, রাতের পরে রাত যায়। নৌকা তিনটে চলে আর চলে। চল রে চল চল রে চল---ঢেউগুলো যেন ওদের সাথে খেলা করতে করতে বলে, কল্পনাপ্রবণ কেউ কেউ দেখতে পায় তাদের বহরের সামনে সামনে সাত ঘোড়ার নীল রথে চড়ে চলেছেন তাদের সাগরদেবতা।
একদিন সকালে দিগন্তে দেখা দিলো একটা দ্বীপের আভাস। সামনের নৌকার দিশারু প্রথম দেখেছে, সে সবাইকে জানিয়ে দিলো হেঁকে ডেকে। সকলের মনে খুব আনন্দ। নতুন দেশ, নতুন দেশ---আগে যা কেউ তারা দেখেনি, তা কিছুক্ষণ পরেই আরো কাছিয়ে আসবে, সেখানে অপেক্ষা করে আছে না জানি কী বিস্ময়!
দ্বীপ কাছিয়ে এলো নৌকাগুলো আরো এগোলেই। ঐ তো দেখা যাচ্ছে নীল পাহাড়, আরো এগোলে গাছপালা স্পষ্ট বোঝা যেতে লাগলো। সাগরবেলায় ছোট্টো ছোট্টো বিন্দুর মতন মানুষ দেখা গেল। উৎসাহে নৌকার তরুণেরা অধীর হয়ে উঠলো ।
কাছে গিয়ে দেখা গেলো সেই দ্বীপ এক মজার দ্বীপ, সেখানে সবাই হাসছে, কেউ হো হো করে হাসছে, কেউ হি হি করে হাসছে, কেউ হাসতে হাসতে কুটিপাটি হয়ে একেবারে গড়াগড়ি খাচ্ছে। সে কী রে! এ আবার কেমন কান্ড? এমন কী মজা সেখানে ঘটে চলেছে সবসময় যে কেউই একমুহূর্ত না হেসে থাকতে পারছে না?
বরণ তার বন্ধু ইমনকে বললো, "ইমন, ছোটো ডিঙিটা নিয়ে দেখে আয় তো ওখানে কী হচ্ছে? কেন সব লোকে ওভাবে হাসতে হাসতে সারা হচ্ছে? "
ইমন ডিঙি নিয়ে দ্বীপে ভেড়ালো, কিন্তু সেখানকার মাটিতে পা রাখা মাত্র সেও হাসতে হাসতে কুটিপাটি হয়ে যেতে লাগলো। নৌকা থেকে চিৎকার করে বরণরা জানতে চায় কী হোলো, কিন্তু ইমন কিছু বলতে পারে না, খালি হাসে আর হাসে। তারা তো শুনে থ, কী করবে বুঝে উঠতে পারে না। আকারে ইঙ্গিতে ইমন বুঝিয়ে দিলো বরণরা যেন নিজের পথে চলতে থাকে, সে হাসির দ্বীপে কিছুকাল থেকে যেতে চায়।
বরণরা ইমনকে নায়ে ফিরে আসতে বললো, কিন্তু ইমন তখন সেই হাসির দ্বীপের মায়া কাটিয়ে কিছুতেই আসতে রাজি না, কিছুদিন সে সেখানে থাকবেই থাকবে।এদিকে সে যেভাবে হাসছে তাতে অন্যরাও ভরসা করে সেইখানে নামতে সাহস করলো না।
নৌকা তিনটে আবার চলে চলে চলে, দিনের পর দিন। আবার একদিন বিকালে দিগন্তে দেখা দিলো নতুন দ্বীপের আভাস। সেদিকে নাও বেয়ে চললো তারা। কাছিয়ে এলে দেখা গেল সে এক আশ্চর্য সুন্দর দ্বীপ, পত্রে পুষ্পে ফলে একেবারে সুশোভিত, এক শ্যামল গিরিমালা একেবারে সমুদ্রে এসে ঝুঁকে পড়ে মুখ দেখছে। সেই পাহাড়ের গায়ে ঝর্ণা, সেই ঝরণায় জল আনতে যাচ্ছে দুই সুন্দরী তরুণী, ঝুমঝুম করে বাজছে তাদের পায়ের নূপুর। আর চার পাঁচজন আরো সুন্দরী তরুণী জল নিয়ে ফিরছে, তাদের পায়েও ঝুমঝুম করছে নূপুর। বরণরা তো সবাই একেবারে অধীর হয়ে উঠলো সেখানে নামবার জন্য।
"দিন শেষ হয়ে এলো আঁধারিল ধরণী
আর বেয়ে কাজ নাই তরণী
হ্যাঁগো এ কাদের দেশে অতিথি নামিনু এসে
তাহারে শুধানু হেসে যেমনি
অমনি কথা না বলি ভরা ঘট ছলছলি
নতমুখে গেল চলি তরুণী-
এ ঘাটে বাঁধিব মোর তরণী।"
এখানে অবশ্য কবিতার মতন কিছুই হয় নি, এই মেয়েরা ছিলো সতেজ, বুদ্ধিমতী ও চটপটে। বরণদের সবাইকে তারা দ্বীপে স্বাগত জানালো। নৌকা ভিড়িয়ে সবাই নামলো সেখানে। মেয়েরা তাদের নিয়ে গেলো দ্বীপের রাণীর কাছে।
রাণী এক অপূর্ব সুন্দরী মহিলা, শক্তি আর বুদ্ধিতে ঝলমল করছেন। পাথরের সিংহাসন ছেড়ে নেমে তিনি বরণ ও তার সঙ্গীসাথীদের এই দ্বীপে বরণ করে নিলেন। আস্তে আস্তে এই নতুন অতিথিরা জানতে পারলো এই দ্বীপে কোনো পুরুষমানুষ নেই, এটি নারীদের দ্বীপ, এখানে তারাই প্রথম পুরুষমানুষ।
তারপরে দিনের পরে দিন যায়, পরম সুখে সময় কাটে বরণদের। এইভাবে নিরবচ্ছিন্ন সুখে কয়েক বছর পার হয়ে যাবার পরে একদিন বরণের কেন জানি মনকেমন করে উঠলো, ফেলা আসা জন্মভূমির জন্য। এ কথা নিজের কয়েকজন বন্ধুকে জানাবার পরে তারাও উতলা হয়ে উঠলো। সবচেয়ে বেশি ছটফট করে উঠলো হারণ।
ক্রমে ক্রমে এ কথা রাণীর কর্ণ গোচর হলো, রাণী বুঝলো এখানে আর বেশিদিন আটকে থাকলে এই তরুণরা মনের দুঃখে মরে যাবে বা আত্মহত্যা করবে। তাই সে ওদের বললো, "ঠিক আছে, তোমাদের আর আটকাবো না, কিন্তু তোমরা বাড়ি ফিরো না, তোমরা তোমাদের অভিযান চালিয়ে যেও। "
তিন নৌকা রসদে বোঝাই করে তারা নৌকা ছেড়ে দিলো, বাড়ির জন্য তখন তাদের মন ভয়ানক উচাটন।
ফেরার পথে সেই হাসির দ্বীপের পাশ দিয়ে যাবার সময় বরণ সামনের নৌকা থেকে জোরে হাঁক দিলো, "ইম-ন ইমন রে- এ, শুনতে পাস? আমি বরণ। আমরা ঘরে ফিরছি ই ই "।
ইমন শুনতে পেয়ে দৌড়ে এলো সাগরবেলায়, সেখানে তার ডিঙি ছিলো, সেই ডিঙি বেয়ে সে এসে নায়ে উঠলো। কিন্তু দ্বীপে নেমে কেন সে হাসছিলো সেকথা একেবারেই কিছু মনে ছিলো না তার। সবাই তাকে যতই জিগায় ততই সে বলে "হাসছিলাম নাকি? কই, আমার তো কিছু মনে নাই! "
দিনের পর দিন নাও বেয়ে তারা নিজের দেশের কূলের কাছে এসে পড়ে একদিন, ভিড়ানোর আগে তারা দেখে কত কৌতূহলী লোক এসেছে তাদের দেখতে, তাদের কাউকে তারা কেউ চিনতে পারে না। ঐ লোকেরাও আবার এদের কাউকে চেনে না।
সামনের নৌকা থেকে বরণ বারে বারে বলে, " আমি বরণ, সুবলের ছেলে, তোমরা কেউ আমায় চেনো না?"
জমা হওয়া লোকেদের মধ্যে একজন খুব বৃদ্ধ লোক বলে, "আমার মনে আছে সুবলের ছেলে বরণের গল্প, আমার ঠাকুরদাদা বলেছিলো। সেই বরণ তার বন্ধুদের নিয়ে সাগরে গেছিলো তিন নৌকা নিয়ে, সে যে দুইশো বছর আগের কথা!"
দুইশো বছর ! বরণের শিরদাঁড়া শিরশির করে, সে দুর্বল গলায় বলে, " না, না, আমরা তো এই মাত্র কয়েক বছর আগে বেরিয়েছিলাম।"
হারণ, যে কিনা সবচেয়ে ছটফট করছিলো ঘরের জন্য, সে আর সইতে পারলো না, নৌকা থেকে লাফ দিয়ে পড়লো সমুদ্রে। সাঁতার কেটে পাড়ে উঠলো। কিন্তু উঠতে না উঠতেই, কয়েক মুহূর্তের মধ্যে জরাজীর্ণ বৃদ্ধ হয়ে সেই তরুণ মারা গেল, তার মৃতদেহটা এমন শুকনো পাথুরে হয়ে গেল যে দেখে মনে হতে লাগলো যেন সে বহু বহু বছর আগে মারা গেছে। অভিযানকারীদের কাছে সময়ের গতি আর এই ভূমির মানুষের কাছে সময়ের গতি ভিন্ন ভিন্ন ছিলো।
বরণদের আর নৌকা ভিড়ানো হলো না, তারা নাও তিনটের মুখ আবার ফিরিয়ে দিলো খোলা সাগরের দিকে, আবার তারা চললো দাঁড় বেয়ে পাল উড়িয়ে। আজও বুঝি তারা অমনি করেই ভেসে চলেছে সাগর থেকে সাগরে, কূলকিনারাহারা নীল সমুদ্রে। অশেষ অভিযানে।
"বলো দেখি মোরে শুধাই তোমারে অপরিচিতা
ঐ যেথা জ্বলে সন্ধ্যার কূলে দিনের চিতা
ঝলিতেছে জল তরল অনল
গলিয়া পড়িছে অম্বরতল
দিকবধূ যেন আঁখি ছলছল অশ্রুনীরে।
আছে কি সেথায় আলয় তোমার
ঊর্মিমুখর সাগরের পার
মেঘচুম্বিত অস্তগিরির চরণমূলে? "
(সমাপ্ত)
মন্তব্য
পড়তে দারুণ লাগলো, সহজ এবং প্রাঞ্জল। সেবা প্রকাশনীর মত অদ্ভুত অনুবাদ মনে হয়নি।
আপনার মন্তব্যের প্রথম অংশের সাথে একমত। কিন্তু পরের অংশের সাথে একমত নই। সেবার অনুবাদের মান মনে হয় ততটা অদ্ভূত নয় যতটা আপনি ভাবছেন। যাই হোক, আপনার অনুভূতি প্রকাশ করলেন, আমিও আমার অনুভূতি প্রকাশ করলাম।
সেবা প্রকাশনীর অনুবাদ অদ্ভুত ? !!! আমার তো মনে হয় বাংলাদেশে সুন্দর অনুবাদের কাজটা সেবা-ই সবার থেকে ভালো পারে।
আপনাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
আমি চেষ্টা করি যতটা সম্ভব সোজাসরল করে গল্পটা বলতে, মূল কাহিনিভাগ ঠিক রেখে বাকীটুকু নিজের মতন করে বলতে, তাই এটাকে ঠিকঠাক অনুবাদ নাও বলা যায়, ছায়ানুবাদ হতে পারে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সেবার অনুবাদ অদ্ভুত মনে হওয়ার কারণ কি? দয়া করে একটু ব্যাখ্যা করবেন?
সেবার কিছ সরাসরি অনুদিত বই ছাড়া প্রায় সবই বিদেশী ছায়ায় লেখা! অথচ বইগুলো পড়লে মনেই হয় না বাইরের দেশের কেউ লিখেছে! এমনি সুন্দরভাবে বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য সাজানো হয় সেগুলো! আর অনুবাদ তো সার্থকতা পায় এভাবেই! তাছাড়া, সরাসরি অনুবাদগুলোও যথেষ্টই ভাল! অদৃশ্য মানব, গড ফাদার তো এক কথায় অসাধারণ!
সহমত।
দারুন একটা লিখা তুলিদি। সকাল সকাল পড়েই মনটা বেশ ভালো হয়ে গেলো। সাথে কবিতার লাইনগুলা আর ও সুন্দর।
বন্দনা, অনেক নাও।
কবিতার অংশগুলি সবই দাড়িবুড়ার।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নারীদের দ্বীপ ছেড়ে চলে আসাটাই ভুল হইসে, নাও আবার ঐ দ্বীপের দিক ফিরানো দরকার। চতুর্দিকে নারী আবার বয়েসও বাড়তেসে না, এতো পুরাই বেহেস্ত।
লিখা দারুন হইসে
..................................................................
#Banshibir.
এইসব নানা দেশের উপকথায় যেখানেই এই ধরনের অভিযানের গল্প আছে, সেখানেই এইরকম নারীদের দেশ, নারীদের দ্বীপ এইধরনের ব্যাপার আছে। দেখুন না স্বর্গকল্পনাতে পর্যন্ত হুরপরী আর অপ্সরাতে ভর্তি।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
দারুন লাগলো। যেতে ইচ্ছে করছে দ্বীপটাতে।
সৌরভ কবীর
রওনা দিয়া দেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সুন্দর মায়া্ময় লেখা।
যেহেতু গল্পগুলো ভিন দেশের এবং আপনি দেশের নামও উল্লেখ করছেন, আমার কেন জানি মনে হয় গল্পের চরিত্র গুলোর নাম যদি মূল গল্পের অনুসারে ভিনদেশি রাখা হয় তবে গল্পের নির্যাস আরো সুন্দর ভাবে আহরণ করা যায়।
আর অনুবাদ এবং কবিতার ব্যবহার সত্যিই মন ছুয়ে যায়।
ভালো থাকবেন।
আমি এমনিতে উপকথাগুলোতে ওদের নামই রাখতে চেষ্টা করি, কিন্তু এই গ্রেট বৃটেনের দিকের উপকথাগুলোতে নামগুলো কেমন জানি ভীষণ খটোমটো লাগলো, তাই সামান্য বদলালাম।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
দারুণ। তবে গল্পটাকে দুইখণ্ড না করে একসাথে দিলে বেশ ভালো হতো
আমারও তাই মত। নর্ডিক গল্প নিয়ে উৎসাহ থাকলে জানিয়েন---
facebook
মনে রাখবো, এরপর থেকে উপকথা দিলে পুরো গল্পই একসাথে দিতে। নর্ডিক গল্প নিয়ে খুবই উৎসাহ আছে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
দারুণ- দারুণ...
ইয়ে মানে- ঐ দ্বীপের লোকেশন টা...
আহা, সেই দ্বীপের লোকেশন লোকে জানলে কলিশন হতে থাকবে নৌকায় নৌকায়, এত লোকে রওনা হবে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
'য়ুরাশিমা তারো'র কথা মনে পড়ে গেলো। কে জানে জাপানীরা নৌকা বেয়ে আয়ারল্যান্ডে গিয়েছিলো নাকি আইরিশরা নৌকা বেয়ে জাপানে গিয়েছিলো!
'কাগুয়া-হিমে আর তাকেতোরি মনোগাতারি'র জাপানী উপকথাটির আপনারকৃত রূপান্তর পড়তে চাই। আরও পড়তে চাই 'ফিনিস্ত বাজের পালক'-এর রুশ উপকথাটির রূপান্তর। পাঠককূল আমার সাথে তাল দিলে লিস্ট আরো লম্বা করতে পারবো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হ্যাঁ, য়ুরাশিমা র গল্পটাতেও সময়ের ভিন্নগতির কথা আছে। এখানে সেই গল্পটা বলেছিলাম একবার।
আহা, সেই ঝলমলে বাজ ফিনিস্তের কথা মনে করিয়ে দিলেন! কী যে ভালো লাগতো ছোটোবেলা রুশ দেশের উপকথা বইটা পড়তে, এক বন্ধুনীর সঙ্গে একসাথে পড়তাম।
আপনার কথা মনে রাখলাম, জাপানী আর চৈনিক উপকথা দেবার চেষ্টা করবো, আপনার বলা কাহিনিটা খুঁজবো কয়েকদিন পরেই।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ভাল লেগেছে। আরও আরও লিখুন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
দারুণ!
একটা কথা তুলি'দি, উপকথাগুলি পর্বে ভাগ না করে ইয়াব্বর হলেও একটা পর্বে দিয়েন। ভালো হবে তাহলে।
ডাকঘর | ছবিঘর
এরপর থেকে চেষ্টা করবো, পর্ব ভাগ না করে পুরো পুরো গল্পই দিতে।
পড়ার জন্য
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
দারুণ লাগল।
খুব ছোটবেলায় পড়া অরণ্যদেবের একটা কমিক্সের কথা মনে পড়ে গেল।
সেখানে অরণ্যদেব একটা বড় গর্তে লাফ দিয়ে একটা স্বর্গের মত শুন্দর দেশে পৌঁছে গেছিল আর গর্ত থেকে উঠে দেখে তার পাইলট মরে গেছে, হেলিকাপ্টার ভেঙে জঙ ধরে গেছে। কয়েকশো বছর পার হয়ে গেছে বাইরের দুনিয়ায়।
আপনার এই উপকথার গল্পগুলো কী যে ভাল লাগে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।
খুব ভাল থাকবেন। শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ ভাই। সময় করতে পারলেই নতুন নতুন আরো উপকথা শোনাবো, কত দেশে যে কত গল্প, কল্পনার কী বিচিত্র আর বিপুল সম্ভার!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এমন গল্প আরও চাই। নৌকো , অভিযান , দ্বীপ সব মিলিয়ে রোমাঞ্চকর ব্যাপার স্যাপার। অনেক ভালো লেগেছে । আরও লিখুন। তবে হারনের জন্য দুঃখ হল দ্বীপ থেকে না আসলে এই বিপত্তি কি আর হত?
এমন দ্বীপে যেতে খুব মঞ্চায়। ভালো থাকুন তুলি দি।
ভাবুন তো হারণের তো তবু নিজ গ্রামে কবর হলো, সে মাটি পেলো, অন্যরা তো সাগরে সাগরেই ঘুরে চলেছে।
সেই দ্বীপে যেতে চান তো রওনা দেন ডানা মেলে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হ্যাঁ হ্যাঁ, ছোটবেলায় পড়া ওই উরাশিমা'র গল্পটার মতনই!
উরাশিমা'র গল্পে অবশ্য অভিযান কিছু ছিলো না, সাগরে ডুবে সে ড্রাগন রাজপ্রাসাদে পৌঁছানো মাত্র তাকে দেখেই ড্রাগন রাজকুমারী একেবারে যারে কয় হড়াশ করে পেরেমে পড়ে গেল।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন