ক্লাস থ্রীতে শুরু হলো "হাতের কাজ" বলে একটা বিষয়ের ক্লাস। নানারকম কান্ড করতে হতো সেখানে, নারকেল দড়ি দিয়ে পাপোষ বানাতে হতো, রুমালে ফুল-লতা-পাতার সূচীকর্ম করতে হতো, রঙীন কাগজ বিশেষভাবে কুচি দিয়ে দিয়ে বাহারী মালা বানাতে হতো, মাটির আপেল কলা কমলালেবু আম--এইসব বানাতে হতো, সেগুলোর উপরে আবার রঙও লাগাতে হতো। কমলালেবুতে কমলা রঙ, সরলসোজা খানিকটা। কিন্তু সিঁদুরে আমে ঘন সবুজ আর বোঁটার কাছে লালের ছোঁয়া-এটা বেশ একটু জটিলরকম। আপেলে দিতে হতো কালচে লাল(তখন আমরা সবুজ আপেল বা হলুদ আপেলের নামও শুনি নি, দেখা তো দূরের কথা), পাকা কলায় হলুদ আর কাঁচকলায় সবুজ।
উলের কাজও করতে হতো, দুই কাঁটার সোজাসরল কাজ, ঘর তোলা আর উল্টো সোজা বুনতে পারলেই হতো, দুই ঘর সোজা দুই ঘর উল্টো এই প্যাটার্নে বুনে যেতে হতো, বেশ লম্বা হয়ে মাফলার হয়ে গেলেই ঘর মেরে দিতে হতো। এই মাফলারের দুই প্রান্তে ঝুলুর ঝুলুর উলের গুছি বেঁধে বেঁধে জিনিসটার মধ্যে একটা স্পেশাল এফেক্ট দেওয়া হতো।
এ ছাড়াও অন্যরকম কাজও করতে হতো, একবার মাটির ছোট্টো কুটির বানাতে হয়েছিলো, ঘরের চৌচালাটা পিচবোর্ড দিয়ে বানিয়ে ব্রাউন পেপার দিয়ে মুড়ে একটা বেশ খড়ের চালের এফেক্ট আনতে হয়েছিল। সেই কুটিরে ছিলো ছোট্টো দরজা আর ছোটো ছোটো দুই জানালা। দরজার ঠিক সামনে মাটিতে আল্পনা, সেটা করা হয়েছিলো সাদা কাগজ নকশা করে কেটে তারপরে আঠা দিয়ে মাটির উপরে জুড়ে। চালের উপরে সবুজ কাগজ দিয়ে বানানো হয়েছিলো লাউগাছ।
এই হাতের কাজের ক্লাস ছিলো একটা হুল্লোড়বিশেষ, দিদিমণি কেউ এই ক্লাসে বেশীরভাগ দিনই থাকতেন না, সবাই ছোটো ছোটো দলে ভাগ হয়ে উচ্চগ্রামে গল্প করতো। কে আর বসে বসে সেলাই করে কিংবা নারকোল দড়ি দিয়ে পাপোষ বানায় ক্লাসে? বিশেষ করে শিক্ষিকা যখন শেখাচ্ছেন না? আর, এসব সূক্ষ্ম জিনিস ক্লাসে বসে ঠিক হয়ও না, এগুলো তো বিরাট খোলা মেঝেতে বসে জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে করতে হয়, তাই না? মাঝে মাঝে বিনা নোটিশে বাঘের মতন হুংকার দিয়ে ঢুকে পড়তেন "হাতের কাজ" এর দিদিমণি, "এত গন্ডগোল কীসের? কই, দেখি কী হাতের কাজ করছো তোমরা?" বাঘের মতন গলায় জিজ্ঞেস করতেন। তখন সবাই চুপ, পিন পড়লে শোনা যায়। এমন সময় ঢং ঢং ঢং, ছুটির ঘন্টা। আর আমাদের পায় কে? ঐ ক্লাসটাই শেষ ক্লাস কিনা!
এই "হাতের কাজ" এর কোনো পরীক্ষা হতো না, শুধু কাজগুলো জমা দিতে হতো নির্দিষ্ট সময়ে। বেশীরভাগ ছেলেমেয়েই এসব কারু না কারুকে দিয়ে করিয়ে আনতো, শুনেছিলাম সামান্য কিছু পারিশ্রমিকের বিনিময়ে এসব করে দেবার মতন "প্রফেশনাল" লোকেরাও নাকি আছেন। তবে অনেকেই কিছু কিছু জিনিস নিজের আগ্রহে শিখতো, যেমন উলবোনা বা মাটির জিনিস বানানো--যা পরবর্তীকালে মাধ্যমিক পর্যায়ে খুব কাজে লেগেছিলো।
সেকালে মা-কাকীমারা উলবোনা নিয়ে কেন যেন খুব উৎসাহী ছিলেন। নানা জায়গা থেকে উলের নানা বিচিত্র ডিজাইন তুলে আনতেন, তারপর সেইসব ডিজাইন লাগিয়ে ফুলহাতা গলাবন্ধ সোয়েটার, ভি গলা হাতকাটা সোয়েটার, ভেস্ট, জাম্পার, জ্যাকেট এসব বুনতেন। বিকালের দিকে মাঠে আমরা যখন খেলতাম, মাঠের একধারে পাড়ার কাকীমাদের উলবোনার আসর বসতো, খোলা হাওয়ায় বসাও হলো, আবার উলবোনাও হলো। উলবোনা জিনিসটার মধ্যে এমন একটা আকর্ষণ ছিলো যে আমরা খুব ছোটোবেলাতেই নারকোল শলা নিয়ে উলের কাটা বানিয়ে সামান্য কিছু ফেলে দেওয়া উল নিয়ে ঘর তুলতে শিখতাম, কী করে সোজা বোনে কী করে উল্টো বোনে সেসব শিখতাম, তাই উলের কাজে আমাদের অনেকেরই সেরকম অসুবিধা হয় নি। মাঝে মাঝে ঘর পড়ে গেলে মুশকিল হতো, হয়তো খেয়াল না করে পরের পর বুনে গেছি অনেকবার, তারপরে ধরা পড়লো নিচে ঘর পড়ে গেছিলো, ওখানে ডেঞ্জারাস এক গ্যাপ ব্ল্যাক হোলের মতন রয়ে গেছে, যেটা থাকলে পুরো বোনাটাই বৃথা। সব খুলে যাবে। তখন হড়াশ করে কাঁটা খুলে ফেলে হড়হড় করে সবটা বোনা খুলে ফেলতে হতো ঐ পড়ে যাওয়া ঘর অবধি, তারপরে আবার নতুন করে বুনতে হতো। পরে, অনেক পরে বড় হয়ে শিখেছিলাম কী করে পড়ে যাওয়া ঘরও সামাল দেওয়া যায় উপরের বোনা সব না খুলে ফেলেও, কিন্তু সেসব অনেক পরের কথা।
প্রাইমারি স্কুলে যে সরলসোজা উল্টোসোজা উলবোনা শেখার শুরু সেটা মাধ্যমিক স্তরে অনেক বেড়ে গেছিলো, তখন নানা ধরনের ডিজাইন ও বুনতে হতো। ক্লাস সেভেনে লজেন্স প্যাটার্নের এক থ্রী কোয়ার্টার হাতা জ্যাকেট বুনতে হয়েছিলো। লজেন্স প্যাটার্ণ আমার দেওয়া নাম, কিন্তু জিনিসটা একেবারে সেই সেকালের লজেন্স মোড়ানো থাকতো যেই কায়্দায় সেরকম দেখতে। পরপর সারি সারি লজেন্স। প্রতিটা লজেন্সের উপরের আর নীচে ঐ লম্বা লম্বা তিন স্ট্রিং এদিকে আর তিনস্ট্রিং ওদিকে কীকরে যে ক্রস করবে সেটা শেখার আগে ভারী রহস্যময় লাগতো, শেখার পরে বড়ই আনন্দ হয়েছিলো। গণিতজ্ঞ দেখলে বলতেন তৃতীয় মাত্রার ব্যবহার।
যাইহোক যেজন্য এই "হাতের কাজ" ক্লাসটার কথা এত সাতকাহন করে বলা, সেটা হলো "সংগ্রহ পুস্তিকা"। ক্লাস ফোরে হাতের কাজ এর ক্লাসে একেবারে শুরুতেই আমাদের বলে দেওয়া হলো যে আমাদের প্রত্যেকের নিজের নিজের সারা বছর ধরে অন্যান্য রেগুলার হাতের কাজ এর পাশাপাশি একটি "সংগ্রহ পুস্তিকা" বানাতে হবে। একটি মোটাসোটা খাতায় একেকপাতায় পাখির পালক, নানা গাছের পাতা, খবরের কাগজ বা ম্যাগাজিন থেকে পাওয়া আশ্চর্য কোনো কিছুর ছবি---এইসব আটকাতে হবে। বাঁদিকের পাতায় থাকবে জিনিসটা আর ডানদিকের সাদা পাতায় জিনিসটা সম্পর্কে লিখতে হবে, জিনিসটা কী, কোথায় পাওয়া গেল, এর গুরুত্বই বা কী, কোনো কাজে লাগে কিনা এইসব। ছোটোখাটো একটা পরিচয় আরকী। পরে, অনেক পরে জেনেছিলাম স্যাম্পল ওভাবে আটকায় আর পাশে সংক্ষিপ্ত পরিচয়ও ওভাবে দেয়। কিন্তু ক্লাস ফোরে ওসব জানতাম না। তখন ওটা ছিল ভারী অদ্ভুত আর অন্যরকম এক "হাতের কাজ" এর অ্যাসাইনমেন্ট যা কিনা সারাবছর চলবে, শেষে বার্ষিক পরীক্ষার আগে ওটা জমা দিতে হবে "হাতের কাজ" এর দিদিমণিকে।
বক, কাক, পায়রা, টিয়া, শালিক, ময়ূর--- এসব পাখির পালক তো সহজেই পেলাম, ময়ূরের পালক একটা শো-পীস থেকে পেয়েছিলাম, কিন্তু নীলকন্ঠ ইষ্টিকুটুম মৌটুসী বউকথাকও হরিয়াল মুনিয়া এদের পালক তো আর পাই না! এইসব পাখি এমনিতেই কালেভদ্রে দেখা যেত, তো আবার তার পালক! শেষে মুর্গীর পালক নীল হলুদ লাল এইসব নানা রঙে ডুবিয়ে নীলকন্ঠ ইত্যাদির বলে চালিয়ে দেবার একটা প্ল্যান করেছিলাম, কিন্তু শেষে আর করা হয় নি। গাছের পাতার সেকশনটা ভালোই উতরে গেল, আম জাম কাঁঠাল স্বরূপা আমলকী সজনে শিউলি রিঠা টগর বকুল দোপাটি গোলাপ জবা নয়নতারা কাঞ্চন তুলসী এইসব গাছের পাতা বেশ সুবিধাজনক সাইজের আর বিচিত্র আকারের বলে খাতার পাতায় বেশ ভালো করে ধরেও গেল আর বেশীরভাগ গাছই ছিলো বাড়ীর চারিপাশেই।
এসব তো বেশ চলছিল, হঠাৎ মনে হলো আরে একটা স্পেশাল সেকশন করলে কেমন হয়? অদ্ভুত প্রাণীদের সেকশন? তখন আবার চারিদিকে বেশ একটা আলোড়ন পড়েছে লকলেসের দৈত্য নেসি নিয়ে। তো, তাই করলাম, অদ্ভুত প্রাণীদের সেই সেকশনে কাগজে বেরোনো লকলেসের দৈত্যের লম্বা গলা ছবিটা দিলাম।(এখন সবাই জানেন যে ওটা ফেক ছবি ছিলো, যারা দাবীটা করেছিলো তারাই ওটা কায়দা করে বানিয়েছিলো )। যাইহোক সংগ্রহ পুস্তিকা জমা পড়ার পরে ঐ লকনেসের নেসি নিয়ে কী কেলেংকারি হয়েছিলো সেকথা পরে কখনো বলবো।
(চলমান)
মন্তব্য
উল বোনা, ক্রুশ কাঁটার কাজ, হাতে সেলাইয়ের বিভিন্ন ডিজাইন - এই কাজগুলো বাংলাদেশ থেকে মোটামুটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এই বিলুপ্তিটা ভালো কি মন্দ সেই তর্কে যাবো না, তবে অবধারিত ছিল। বুটিক শপ আর এনজিওদের দোকানগুলো লোকশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে পারবে এমন ভাবাটা দুরাশা। ফরমায়েসি কাজে দক্ষতার প্রদর্শনী হয়, শিল্প হয় না।
আজ্ঞে, কেবল 'হাতের কাজ' আর 'সংগ্রহ পুস্তিকা' ছিল? রান্নার ব্যাপারটা ছিল না? না কি সেটা আরও উঁচু ক্লাসের ব্যাপার?
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ঠিক। এখন আর সোয়েটার বুনতে কাউকে দেখিনা একেবারেই, অথচ হাতে বোনা সোয়েটারগুলোর মধ্যে বহু বৈচিত্র আর সৃষ্টিশীলতা ছিলো। চটের চৌকো জমিনের উপরে নানা রঙের উল কারপেটের সূচ দিয়ে গুণচিহ্নের মতন করে ফোড় দিয়ে দিয়ে বানানো আসন যেগুলো কিনা আমাদের ক্লাস সিক্সে সেভেনে করতে হতো, সেগুলো ও লুপ্ত হয়ে গেল, অথচ ওগুলো রীতিমতন ফাইবার আর্টের মধ্যে পড়তো। পুরানো আমলের রেশমী ও সুতির সুতোর ফোড়ে বানানো আসন দেখেছি, একেকটা দেখলে চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। একটাতে দেখছিলাম পেখমতোলা এক ময়ূর আর তাকে ঘিরে গোটা কুঞ্জবন কী অদ্ভুত দক্ষতায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দিদিমার কাছে দেখেছিলাম রুমালে ভরাট সেলাইয়ের কাজ, সেও আরেক বিস্ময়। অথচ এইগুলো যারা করতেন তারা কিন্তু বিশেষ প্রশিক্ষণ নেওয়া মানুষ ছিলেন না, সাধারণ ঘর সংসার করা মহিলাই,তাদের সূক্ষ্ম শিল্পগুলো দেখে অবাক মানতে হয়। সব লুপ্ত হয়ে গেল।
আমাদের রান্নার ব্যাপারটা করতে হয় নি, সেকেন্ডারি লেভেলে প্রচুর হস্তশিল্প করতে হয়েছে, কিন্তু রান্না ছিলো না কোর্সে। ওটা করতে হতো যারা "হোম সায়েন্স" নিয়েছিলো ঐচ্ছিক বিষয় হিসাবে, তাদের।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হ
এতো তবু সওয়া যায় মণিরত্নম, পুরানো ভালো ভালো শিল্পপর্যায়ের রান্নাবান্না লুপ্ত হয়ে গেল! পাটিসাপ্টা, পুলি আর চিতই পিঠা বিলুপ্তপ্রায়, মালপোয়া, কুচো নিমকি(যেগুলো বাড়ীতে বানানো হতো, রম্বস শেপের চেহারা) আর ও প্রায় তাই, নারকেলের জিরা বলে একরকম মিষ্টি খাবার বিজয়ার সময় দিতো, সেগুলো পুরোপুরি লোপ পেয়েছে। কেউ এখন এসব বানায় না, পিজজা পাস্তা ম্যাগি বার্গার খাইয়ে দেয় বাচ্চাদের। অথচ পিঠা মালপোয়া নারকেল নাড়ু এসব খাবার খেতে মন্দ না, তাছাড়া এগুলো ছিলো রীতিমতন শিল্প।
ঐ আলাদা পার্ক করে বুনো গাছগাছালি রক্ষার মতন এসব খাবার রক্ষা করা দরকার বিশেষ বিশেষ মেলাটেলা করে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পড়ছি। চলুক।
আপনার 'ইস্কুলবেলার গল্প' পড়ছি আর নিজের স্কুলবেলার কথা টুকরো টুকরো মনে পড়ছে। সে কবেকার কথা !
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ছোটবেলা এম্নিতেই অনেক জিনিস সংগ্রহ কর্তাম, ডাকটিকিট, মুদ্রা এসব হাবিজাবি। বড় বেলা সেগুলো উধাও। স্কাউট হিসেবে প্রেসিডেন্ট এওয়ার্ড পাবার কথা উঠলো তখন একটা কিছু সংগ্রহ দেখানো লাগবে, কী করি? আবার ডাক টিকিট সংগ্রহ কার্বো কে? চলে গেলাম চিড়িয়াখানা, পাখির পালক সংগ্রহ হয়ে গেল কয়েক মিনিটে। তারপর বোটানিক্যল গার্ডেন গিয়ে গাছের পাতা সংগ্রহ হয়ে গেলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বুদ্ধিমান, আপনি বুদ্ধিমান। চিড়িয়াখানা আর বোটানিকাল গার্ডেন থেকে সব সংগ্রহ করে ফেললেন।
আমাদের পাড়াগাঁয়ে তো চিড়িয়াখানা আর বোটানিকাল গার্ডেন ছিল না, ওগুলো ছিলো বড় শহরে। বার্ষিক পরীক্ষা তখন হতো ডিসেম্বরে, তারপরে প্রায় মাসখানেক ছুটি, সেই ছুটিতে শীতের রোদ্দুরে টিফিনবাক্সে লুচি আলুরদম আর ঝোলায় পাউরুটি ডিমসেদ্ধ কলা আর কমলালেবু নিয়ে বড়দের সাথে বড় শহরের চিড়িয়াখানা আর বোটানিকাল গার্ডেনে ঘোরা, তবে বোটানিকাল গার্ডেনটা একটু দূরে নদীর অন্য পাড়ে হওয়ায় সব বার ঘোরা হতো না, সাধারণত চিড়িয়াখানা আর যাদুঘর থাকতো ঘোরার জায়গার তালিকায়।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আরেকটা প্রিয় সিরিজ - চলুক।
অনেক ধন্যবাদ স্যাম।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
পড়ছি আপু, চলুক।
হাতের কাজ আমরাও স্কুলে শিখেছিলাম, সেই কবেকার কথা। আজ আর কিছু মনে নাই। ছোটতে ডাকটিকিট আর মুদ্রা জমানো হত। পাখির পালক কখনও জমাইনি, গাছের পাতাও না। আপনার লেখা পড়ে সেই স্কুলদিনগুলোতে চলে গেছিলাম।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
ধন্যবাদ সফিনাজ আরজু।
ডাকটিকিট আর মুদ্রা জমানো তো বেশ বনেদী সংগ্রাহকদের ব্যাপার, রীতিমতন ফর্মাল নামও আছে এই সংগ্রাহকদের।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সেলাই ফোড়াইয়ের কিছুই জানি না তবে, এর মধ্যে যেটি শেখার অনেক ইচ্ছে ছিল তা হচ্ছে উলে বোনা সোয়োটার বা উল দিয়ে যা কিছু শেখা যায়। কিন্তু আনাড়ী হওয়ার কারনে তাও শেখা উঠেনি। ছোট বেলায় মা’কে দেখেছি উল দিয়ে সোয়েটার বানাতে, এর মধ্যে একটি ভি গলার হাতা কাটা সোয়েটার তো আমার ছোট তিন বোন পর্যায়ক্রমে পড়েছে! মুদ্রা জমানোর একটা শখ আমার ছিল (হয়তো এখনো আছে!), খুজে দেখলে দেখা যাবে এখনো অনেক দেশের অনেক মুদ্রা আমার সংগ্রহে আছে কিন্তু তা আর ছোটবেলার মতো করে যক্ষের ধনের মতো আগলে রাখার অবস্থায় নেই, হয়তো কোন ড্রয়ারের একটি কোনে জায়গা দখল করে পড়ে আছে।
লেখা ভালো লেগেছে!
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা
উলবোনা খুব সোজা, শুরু করে দিন।
মুদ্রা জমানো বেশ জমকালো ব্যাপার।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এই হাতের কাজ বাসায় আমার আপা মা এনাদের করতে দেখেছি। আপনার লেখায় আজ পড়লাম।আমার মা আমাকে উলের টুপি আর সুতার গেঞ্জি বানিয়ে দিয়েছে অনেক। আমার আপার স্কুলে এইসব হাতের কাজ করানো হত। তখন ওকে দেখেছি।
অনেক দিন পর আবার মনে পড়ে গেল সেইসব দিন। আপনার এই স্কুল্বেলার গল্প স্কুল দিনের কথা মনে করিয়ে দেয়। চলুক
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাদের স্কুলে "হাতের কাজ" কিছু থাকতো না? থার্মোকলের বাক্সো বানানো, শোলা দিয়ে নানা রকম নকশা বানানো, ক্যালেন্ডার বানানো, সাবান বানানো বা কম্পোস্ট সার বানানো -এইধরণের? আমার ভাইকে দেখেছি স্কুলে এসব "হাতের কাজ" করতে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সেলাই বা কোন হাতের কাজ কখনও শেখার সুযোগ হয়নি । তখন ইচছা হয়নি ,কিনতু এখন মাঝে মাঝে মনে হয় সেলাইটা শিখলে ভাল হত । তবে রাননা এবং বাগান করায় শখ আছে কিছুটা
লেখা ভাল লাগল ।
আপনাকে ধন্যবাদ ।
আপনার রান্নাবান্না আর বাগান করার কথা শুনতে আগ্রহী হয়ে রইলাম। দুটোই আমারও শখ, প্রথমটা খানিকটা মিটলেও দ্বিতীয়টা এখনো মেটার সুযোগ হয় নি। দেখা যাক ভবিষ্যতে কী হয়। প্রাণী পোষার বা পাখি পোষার কোনো ইচ্ছা কোনোদিন ছিল না, নেই, হবে না, কেমন যেন বন্দী করে রাখা হয় বলে মনে হয়। কিন্তু বাগান করাকে আমার গাছপালা পোষার মতন মনে হয়, বন্দী না করেই যাদের খোলা রেখেই যত্ন করা যায়, ভালোবাসা যায়। তাই গাছপালাদেরই পোষ্য নিতে চাই ভবিষ্যতে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হিহিহি, হাতের কাজ আমিও ছোটবেলায় খুব উৎসাহ নিয়ে করতাম, এখনো সুযোগ পেলে করিনা এমন না
তেমন তেমন "হাতের কাজ" দেখাতে পারায় শীর্ষেন্দুর গল্পে একজন শিল্পী উপাধি পেয়েছিলেন "সভাচোর"।
জমিদারমশাইয়ের পান, জমিদার তখন পানটা মুখে পুরেছেন মাত্র, নবচোর এমন হাতসাফাই করে নিল, যে তিনি বুঝতেই পারলেন না কী হইতে কী হইয়া গেল! তারপরই তিনি নবকে সভাচোর উপাধি দেন।
সভাকবি সভাপন্ডিত হতে পারে আর সভাচোর হলেই বুঝি দোষ?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
স্কুলে কী শিখেছিলাম মনে নেই একদম। তবে আমি কলেজ শেষ করা অবধি কেনা জামা পরতে পারিনি বলে আক্ষেপ ছিলো। তখন অবশ্য জানতাম না এটা আসলে সৌভাগ্য ছিলো। মা, জেঠিমা দুজনেই হাতের কাজে নেশাগ্রস্থ ছিলেন। শাড়ীতে ফুল তোলা, প্রতি বছর উলের চাদর, সোয়েটার এগুলো বানানো তো ছিলই, আমাদের সব ফ্রক-কামিজ সব এঁরা হাতেই বানাতেন।
আমি নিজে তেমন কিছু তখন শিখিটিখিনি- (সেলাই এত দেখার ফলে মনে হয় অভ্যাস বশে জানি)-কিন্তু কন্যার জন্মের আগে কীভাবে কীভাবে যেন ওর জন্যে একটা সোয়েটার, একটা টুপি আর এক জোড়া মোজা বানিয়ে ফেললাম। তারপরে আবার উল বোনা সহজেই ভুলে গেলাম! ভাবতে গেলে অদ্ভুত লাগে!
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
আসলে এসব জিনিস স্মৃতির ভিতরে লুকানো থাকে, কাজের সময় তুলে এনে কাজ সারা হয়ে গেলেই আবার অনভ্যাসে ভুলে যাওয়া।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
বহুকাল ইস্কুলবেলা লেখা হয় না, ভাবছি আবার শুরু করলে কেমন হয়?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এটা নিয়ে ভাবাভাবির কী আছে? এই শুক্কুরবারের মধ্যেই নতুন একটা পর্ব নামিয়ে দেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মনের মধ্যে হিজিবিজি অন্ধকার, ইস্কুলবেলার কথা কলমে আসে না।
তবু চেষ্টা করবো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন