দেশবিদেশের উপকথা-কিউপিড ও সাইকি(৪) ( গ্রেকো-রোমান)

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: সোম, ১৫/০৭/২০১৩ - ৪:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এরপর তৃতীয়দিন। সকালবেলা ভেনাস এসে সাইকির হাত ধরে টেনে নিয়ে যান প্রাসাদের সামনে। প্রাসাদের সম্মুখ দিয়ে পথ চলে গেছে পাহাড়ের দিকে। দূরে পাহাড়ের নীল চূড়া।

সাইকির হাতে একটা শূন্য ঘট ধরিয়ে দিয়ে দেবী বলেন, "ঐ যে পাহাড়চূড়া, ঐখানে স্টিক্স নদীর উৎস। ঐ উৎসের কাছ থেকে জল ভরে আনবি এই ঘটে। যা, রওনা হ। ফিরতে হবে সন্ধ্যার আগেই, মনে রাখিস।"

ঘট কাঁখে নিয়ে সাইকি চলে, পথ এসে থামে পাহাড়ের পায়ের কাছে, এরপরে বন্ধুর শৈলপথ। যত যায় সাইকি, পথ তত কঠিন আর পিচ্ছিল হয়। খাড়া চড়াই, আর এগোতে পারে না সাইকি।

চেয়ে দ্যাখে সামনে কিছুদূরে আকাশের গায়ে আঁকা যেন সেই চূড়া, সেখান থেকে ঝরঝর করে পড়ছে সেই সাংঘাতিক নদী, স্টিক্স। ঐ নদী শপথের নদী, ঐ নদীকে সাক্ষী রেখে দেবতারা শপথ নেন। কিন্তু সাইকি ওর উৎসের কাছে যায় কীকরে? ওখানে কোনো মানুষ যেতে পারে না, এমন খাড়া চড়াই, একেবারে দেয়ালের মতন খাড়া। একমাত্র ডানা লাগিয়ে উড়ে যাওয়া ছাড়া আর পথ নেই ওখানে যাবার।

ঘট মাটিতে রেখে সাইকি বসে পড়ে পাশে। আর হলো না বুঝি। ওখানে কী করে যাবে সে? এদিকে শূন্য ঘট নিয়ে ফিরে যাওয়া তো আরো বেশি অসম্ভব!

হঠাৎ কীসের ছায়া পড়ে সাইকির উপরে, সে মুখ তুলে দ্যাখে বিরাট এক ঈগল, দুই বিশাল ডানা ছড়িয়ে ভাসছে সাইকির মাথার উপরে। সে ওখান থেকে আরো নেমে বলে "সাইকি, ঘট দাও, জল এনে দিই।"

সাইকি ঘট তুলে উঠে দাঁড়ায়, বাড়িয়ে দেয় ঈগলের দিকে। ঈগল খপ করে মস্ত চঞ্চুতে ঘটের কানা ধরে শাঁ শাঁ করে উড়ে যায় স্টিক্সের উৎসের দিকে। সেখান থেকে ঘট ভরে জল নিয়ে ফিরতে তার একদন্ডও লাগে না।

ভরা ঘট সাইকিকে দিয়ে সে একটা পাক খেয়ে উড়ে যায় দূরে আর সাইকি তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বন্ধুর শৈলপথে ফিরে চলে ভেনাসের প্রাসাদের দিকে।

বিকেলের মধ্যেই ঐ সাংঘাতিক স্টিক্সের কাছ থেকে ভরা ঘট নিয়ে সাইকিকে ফিরতে দেখে ভেনাস খুবই অবাক। এই মেয়েটা বারে বারে অসাধ্যসাধন করছে কী করে? নির্ঘাৎ কিছু রহস্য আছে ভিতরে।

সাইকিকে সেদিনের পারিশ্রমিক রুটি আর জল দিয়ে ভেনাস মনে মনে ভাবতে ভাবতে যান পরের কাজটি এমন দেবেন যাতে বাছাকে আর কাজ সমাপ্ত করে বহাল তবিয়তে ফিরতে না হয়।

ক্লান্ত সাইকি খিদেতেষ্টা মিটিয়ে খড়ের বিছানায় গড়িয়ে পড়ে ঘুমোবার জন্য। মনে মনে একটা উদ্বেগ থাকে পরের দিন কী কাজ না জানি দেবী দ্যান, সেই ভেবে, কিন্তু ক্লান্তি এতটাই যে সে জেগে থাকতে পারে না, খানিকক্ষণের মধ্যের গভীর নিদ্রায় তলিয়ে যায়।

চতুর্থদিন দেবী ভেনাস এক মোক্ষম কাজ দিলেন। সকালে এসে সাইকিকে একটা কারুকার্যকরা বাক্স দিয়ে বললেন, "এই বাক্সে করে তোকে আনতে হবে পার্সিফনীর রূপটান। পার্সিফনীকে জানিস তো? সে থাকে পাতালে, সে মৃত্যুলোকের রাণী, মৃত্যুলোকের রাজা প্লুটোর বামে বসে সেই রাজ্য শাসন করে সে। ওর কাছে আমার নাম করে বললেই ও এই বাক্সে রূপটান ভরে দেবে। যা, রওনা হ। বিকেল-বিকেল ফিরতে হবে, মনে থাকে যেন। উফ, রোগী-সেবার পরিশ্রমে অঙ্গ আমার কালি হয়ে গেল, ঐ রূপটান ছাড়া কিছুতেই আর চলবে না।" এই বলে চঞ্চল পায়ে প্রস্থান করেন দেবী।

এইবার সত্যি সত্যি ঘোর সংকটে পড়ে যায় সাইকি। কোথায় পাতালের পথ? সেখানে সে যাবেই বা কী করে জীবিত মানুষ হয়ে? বাক্স নিয়ে চিন্তিত মুখে পথ চলতে থাকে সাইকি। সে ভাবে, তিনবার বিপদ থেকে উদ্ধার পেয়েছি, কঠিন কঠিন কাজগুলো করে দিতে পেরেছি নানা অপ্রত্যাশিত সাহায্য পেয়ে। কিন্তু এইবার?

চলতে চলতে ভাবতে ভাবতে সে হাঁটতে থাকে। কেজানে কতক্ষণ হেঁটেছে, ভেনাসের প্রাসাদ ছাড়িয়ে সে চলে দূরে আর দূরে। সামনে সব অজানা। কোন পথে গেলে পাওয়া যায় পাতালে পৌঁছবার হদিশ?

চলতে চলতে সে এসে পড়ে এক বিরাট প্রান্তরের কাছে, ঐ প্রান্তরের অন্যপারে দেখা যায় একটা রুক্ষ পাহাড়ের আভাস। এইখানে এসে সাইকি ক্লান্ত হয়ে একটু দাঁড়ায়, খুব রোদ উঠেছে, বেলা এখন কত কেজানে! সে ছায়া খোঁজে। কাছাকাছি বড় গাছ নেই, সব ধু ধু করছে। কিন্তু পথের খুব কাছেই একটা পাথুরে স্তম্ভ, তারই ছায়ায় বসে ক্লান্ত সাইকি। চুপ করে বসে হাঁটুতে মুখ রেখে দূরের দিকে তাকিয়ে থাকে। ভাবে আর ভাবে। তার সমস্যার কি কোনো সমাধান নেই?

হঠাৎ শোনে কে যেন কথা বলে, অদ্ভুত গম্ভীর অথচ সুরেলা একটা গলা বলছে, "সাইকি, শোনো, আমি যে কথা বলি মন দিয়ে শোনো।"

সাইকি উৎকর্ণ হয়, শোনে সেই অদৃশ্য কন্ঠ বলছে," এই যে বিরাট মাঠ, এই মাঠ পেরোলে পাহাড়, ঐ পাহাড়ের পায়ের কাছে একটা অন্ধকার গুহামুখ, লতাপাতায় আচ্ছন্ন। সে গুহামুখ দিয়ে ঢুকে পড়লেই দেখবে লম্বা পথ চলে গেছে অন্ধকারে। সে পথ দিয়ে গেলে পৌঁছবে পাতালের নদীর কাছে। ঐ নদীর ঘাটে নৌকা নিয়ে আসে খেয়ামাঝি চ্যারণ। ওকে পারানি কড়ি দিলেই ও নৌকা করে নদী পার করে দেবে তোমায়। সেই ঘাটে নেমে দেখবে সো ও ও জা রাস্তা চলে গেছে, সেই রাস্তা শেষ হয়েছে প্লুটোর প্রাসাদে। ফটকে একটা ভয়ংকর তিনমাথা কুকুর পাহারা দেয়, তার নাম সার্বেরাস। কিন্তু তুমি ভয় পেয়ো না, ওকে তিন টুকরো মাংস দিলেই ও পথ ছেড়ে দেবে। তুমি সোজা ঢুকে পড়ে দরবারে চলে যাবে। সেখানে রাজা প্লুটো আর রাণী পার্সিফণী বসে আছেন সিংহাসনে। তুমি সেখানে তোমার আর্জি জানালেই মনোমত জিনিসটি পেয়ে যাবে। বুঝতে পারলে যা বললাম?"

সাইকি বলে, "হ্যাঁ বুঝতে পেরেছি। কিন্তু ঐ পারানি কড়ি, মাংসের টুকরো আর আঁধার পথে চলার জন্য আলো আমি কোথায় পাবো?"

সেই অদৃশ্য কন্ঠ বলে, "তুমি ঘুরে স্তম্ভের পিছনদিকে যাও, সেখানে দেখবে স্তম্ভের গায়ে একটা ছোটো দরজা। ঠেললে খুলে যাবে। ভিতরে তোমার যা যা জিনিস দরকার সব পাবে। ঠিক আছে?"

সাইকি এতক্ষণ প্রায় দম বন্ধ করে শুনছিল। এখন শ্বাস ফেলে শান্ত হয়ে বললো, "আপনি যেই হোন, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। "

আর দেরি করে না সাইকি, উঠে চলে যায় স্তম্ভের পিছনে। সেখানে সত্যিই দরজা ছিল, ঠেলতেই খুলে গেল। ভিতরে ছোটো কুঠুরিতে যা যা দরকার সব পেয়ে গেল সাইকি।

তার পরে আর কী? সেই অদৃশ্য কন্ঠ যা যা বলেছিল, সেই সেই মতন সব করে অনায়াসে পার্সিফণীর কাছে পৌঁছে গেল সাইকি।

পার্সিফণী তাকে খুবই আদর-আপ্যায়ণ করলো, হাজার হোক সে নিজেও একদিন পৃথিবীর মেয়ে ছিল, হেসে খেলে ঘুরে বেড়াতো সাথীদের সাথে, গান গাইতো, ফুল তুলে মালা গাঁথতো। তারপরে প্লুটো একদিন হরণ করে নিয়ে এলেন পাতালে। সে অনেক কথা। সেই থেকেই তো পার্সিফণী পাতালে প্লুটোর কাছে থাকেন চারমাস আর বাকী আটমাস থাকেন পৃথিবীতে তার মায়ের কাছে।

সাইকির সব কথা দেবী পার্সিফণী জানতেন আর তাঁর সহানুভূতিও ছিল মেয়েটির উপরে। ভেনাসের বাক্সে রূপটান ভরে দিয়ে তিনি কপালে চুম্বন দিয়ে সাইকিকে বিদায় জানালেন। মনে মনে আশীর্বাদ করলেন, "বিজয়িনী হও।"

ফেরার পথে আর অমন দীর্ঘ প্যাঁচালো পথে সাইকিকে আসতে হলো না, পার্সিফণীর সহায়তায় সে কয়েক মুহূর্তে পৌঁছে গেল উপরের দুনিয়ায়। সেই স্তম্ভের কাছে।

তখন মোটে দুপুরবেলা। বাহ, দেবী বলেছেন বিকেল-বিকেল ফিরতে, এত তাড়াতাড়ি ফিরছি দেখলে নিশ্চয় অবাক হবেন- এইসব ভাবতে ভাবতে বাক্সো নিয়ে ভেনাসের প্রাসাদের দিকে চলে সাইকি।

চলতে চলতে তার কৌতূহল হয় বাক্সের ভিতর কী রূপটান আছে সেটা দেখার। একটুখানি যদি সে নিজেই ব্যবহার করে, তাহলে কেমন হয়?

"কিউপিড যদি হঠাৎ এসে পড়ে? এই এতদিনের পরিশ্রমে উদ্বেগে অশান্তিতে চেহারাখান না জানি কী কালিঝুলিমার্কা হয়ে গেছে আমার! সে এসে এইরকম যদি দ্যাখে তবে তো কেলেঙ্কারী। তারচেয়ে একটুখানি খুলে দেখিই না কী আছে।"

ভেনাসের প্রাসাদের বেশ কাছাকাছিই তখন সাইকি, একটা ছোটো সরোবর ঘিরে সবুজ গাছপালার এক স্নিগ্ধ কুঞ্জ দেখে সেখানে গিয়ে দাঁড়ায় সে। তারপরে গাছের ছায়ায় বসে বাক্সটা খোলে। কিন্তু কিচ্ছু নেই, ভিতরে একদম কিচ্ছু নেই! কিছু বুঝতে না বুঝতেই গভীর ঘুম নেমে আসে তার চোখে। পাতালের রহস্যময়ী দেবীর রূপ-যাদু তাকে নিটোল নিশ্ছিদ্র সুগভীর নিদ্রায় তলিয়ে দেয়।

এদিকে ভেনাসের প্রাসাদের একটি কক্ষে ছিল কিউপিড, তার কাঁধের পোড়া প্রায় সেরে গেছিল, কিন্তু ভেনাস তবু তাঁকে বাইরে যেতে দিতেন না। বলতেন পূর্ণ বিশ্রাম দরকার। সেদিনও তিনি ভালো করে দরজা বন্ধ করে তালা দিয়ে গেছিলেন।

কিন্তু কিউপিড তখন সাইকিকে দেখার জন্য অস্থির। ভালোবাসার দেবতাকে কি আর দরজা বন্ধ করে আটকানো যায়? কিউপিড জানালা খুলে উড়ে বেরিয়ে এলো বাইরে।

মনোসংযোগ করে জানলো সাইকি কোথায় আছে। শোঁ করে উড়ে এসে সাইকিকে নিদ্রামগ্ন দেখে সব বুঝতে পারলো সে। সাইকির দুই চোখে হাত বুলিয়ে যাদু তুলে নিয়ে বাক্সে ঢুকিয়ে দিলো। তারপরে বাক্স এঁটে বন্ধ করলো।

সাইকি তখন জেগে উঠেছে যেন বহুকালের নিদ্রা থেকে। জেগে উঠেই দ্যাখে সামনে কিউপিড। সে তাকে দুইহাতে জড়িয়ে ধরে হেসে কেঁদে অস্থির হয়ে গেল।

কিউপিড বললো, "তোমার কিন্তু এই বাক্সো খোলা উচিত হয় নি। মহা মুশকিল হয়ে যেত আরেকটু হলে। যাও এখন এই বাক্সো নিয়ে মাকে গিয়ে দাও। আমি আমাদের রাজার কাছে যাচ্ছি তোমার একটা হিল্লে করতে। কথা দিচ্ছি তোমার আর কোনো কষ্ট পেতে হবে না।"

সাইকিকে চুমো খেয়ে শাঁ করে কিউপিড উড়ে চলে গেল দেবরাজের প্রাসাদের দিকে। সেখানে তাঁকে সব বলে সাইকির জন্য একটা ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করলো। ভালোবাসার দেবতার কথা কোনো দেবতাই অগ্রাহ্য করতে পারেন না, দেবরাজও পারলেন না। কিউপিডের অনুরোধেই সাইকিকে দেবমর্যাদা দেওয়ার কথা স্থির হলো।

তারপরে শুভদিনে শুভক্ষণে কিউপিড আর সাইকির শুভ-বিবাহ হয়ে গেল সব নিয়ম মেনে কারণ আগেরবারে বিবাহটা কেমন যেন রহস্যময় ছিল আর সবকিছু ঠিকঠাক হয় নি। বিবাহের পরেই সাইকিকে অমৃতপান করিয়ে দেবীত্বে উত্তীর্ণ করা হলো। ভেনাসও এইবারে কোনো আপত্তি আর করেন নি, কারণ সাইকি সব কঠিন পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছিল।

অনেক কঠিন পরীক্ষার শেষে আত্মা(সাইকি) ও ভালোবাসার(কিউপিড) মিলন হলো। চিরকালের জন্য তারা অবিচ্ছেদ্য হয়ে রইলো।

ব্যস, গল্প শেষ। হাসি

(সমাপ্ত)

এখানে তৃতীয় পর্ব

এখানে দ্বিতীয় পর্ব

এখানে প্রথম পর্ব


মন্তব্য

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হাততালি থুক্কু, শেষ লাইনের জন্য ওঁয়া ওঁয়া

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তুলিরেখা এর ছবি

আহা কান্দো কেন? এমুন আরো কত গল্প আছে ! সেসব তো রইল এখনো। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

দেঁতো হাসি পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

এরপর কোন দেশের কাহিনী?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তুলিরেখা এর ছবি

আহা দেশের অভাব কী? চীন জাপান কম্বোডিয়া বলিভিয়া পেরু চিলি আফ্রিকার এমুড়ো থেকে ওমুড়ো নানা দেশ, নিউজিল্যান্ড সাইবেরিয়া ইউরোপের নানা দেশ --- উফফ কত জায়গায় কত কাহিনি ! হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

বা: খুব ভাল লাগল। খুব সুন্দর সমাপ্তি টানা হয়েছে।
- একলহমা

তুলিরেখা এর ছবি

হ্যাঁ, গ্রীক উপকথায় মিলনান্তক কাহিনী আর বিয়োগান্তক কাহিনী দুইরকমই দেখা যায়। এই গল্পটা মিলনান্তক। এর পরে কখনো যদি পার্সিফোনি আর তার মা দিমিত্রার কাহিনী লিখি, দেখবেন সেই উপকথা কেমন যেন খানিকটা মিলনান্তক আর খানিকটা বিয়োগান্তক, আবার হেডিজ/প্লুটোর দিক থেকে দেখলে অন্যরকম। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সত্যপীর এর ছবি

এরম গেঞ্জাইম্যা শাশুড়ি নিয়া সাইকি সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগল, সত্যি? ভেনাস আর কোন ঝামিলা টামিলা করে নাই?

চিন্তিত

..................................................................
#Banshibir.

তুলিরেখা এর ছবি

আলাদা আলাদা প্রাসাদে রইলো তো! এক সাতমহলা প্রাসাদে সাইকি কিউপিডের সংসার আর ভেনাসের থাকা আরেক সাতমহলা প্রাসাদে। পালাপার্বনে দেখাসাক্ষাত হতো। তখন তো মিঠা মিঠা কথা, "ছোনাটা ম্মু " বলে আদর এইসব করতে হতো ভেনাসকে, শাশুড়ি-মা না? পালাপার্বনে তো চারিদিকে আত্মীয়স্বজন ! হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সত্যপীর এর ছবি

সাতমহলা প্রাসাদে লিফট বা এস্কেলেটর আসে? সাততলায় হাইটা উঠত না উড়তেটুড়তে পারে এরা? আমাগো ভারতীয় কিছু নবাব রাজামহারাজা চাকরের ঘাড়ে চইড়া উপরতলায় উঠত শুঞ্ছি খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

তুলিরেখা এর ছবি

সাতমহলা তো, সাততলা না। হাসি
তবে সাততলা প্রাসাদ হলে ওঠানামা একটু পরিশ্রমের কাজই বটে, মানুষের পক্ষে। ঐ যে রাজা নেবুকাডনেজার( আমার এক পিসিমা কইতেন রাজা নেবু কাঁদে হাসি ), যার বিরাট বহুতলা প্রাসাদের ছাদে ছাদে আশ্চর্য বাগান, শূন্যোদ্যান, সেই ভদ্রলোকের অবস্থাটা একবার চিন্তা করেন। পাতলা ফুরফুরা রাণী দৌড় দিয়া দিয়া উপরের উপরের বাগানে বাগানে চইলা যায়, আর ইনি কোমর আর হাঁটুর ব্যথা অস্বীকার কইরা পিছে পিছে দৌড়ান। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সাকিন উল আলম ইভান  এর ছবি

আহা ,অবশেষে এই ঐতিহাসিক গল্প তাহলে শেষ হইলো ।

হ্যাপ্পি এন্ডিং দেইক্ষা আরো কয়েটা পিলাচ গুরু গুরু

তবে যাই হোক, পাতালের দেবতার নাম আপু হেইডিস না ? আমি আবার এইসব বেশ কিছু পড়সিলাম ।

সামনে এরকম আরো গল্প পড়তে চাই ।

তুলিরেখা এর ছবি

আসলে দেবতাদের গ্রীক নামগুলো পরে রোমান নাম হয়ে হয়ে বদলে গেছে। গ্রীক নাম জিউস রোমান নাম হয়েছে জুপিটার, গ্রীক নাম হেডিজ রোমান নাম হয়েছে প্লুটো, ভেনাস ও তো রোমান নাম, গ্রীক নাম ছিল আফ্রোদিতি। আগের এক পর্বে কমেন্টে একটা লিংক দিয়েছিলাম এই নিয়ে।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

মন মাঝি এর ছবি

ঠিক, যেমন বিখ্যাত 'হার্কিউলিস' আসলে মূল গ্রীক 'হেরাক্লেস'-এর রোমান নকল। শুনতে কেমন লাগে না?

****************************************

তুলিরেখা এর ছবি

ওরা নামগুলোকে কেন যে নতুন দিল কেজানে! দেবদেবীদের পরিচয় মনোভাব চেহারা চরিত্র সব কিন্তু একই, একদম আগের গ্রীক ওরিজিনাল দেবদেবীদের মতন, নামগুলো নতুন দিয়েছে শুধু। চিন্তিত

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগল

- মুকুল চৌঃ

তুলিরেখা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মুকুল। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

কোন ফাঁকে গল্প দিলেন টের পেলাম না ওঁয়া ওঁয়া । দেরিতে হলেও পড়লাম হাততালি । তাড়াতাড়ি আরও গল্প দেন পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম । আপনার গল্প আমার মেয়ে শুনলে খুব মজা পায়
ইসরাত

তুলিরেখা এর ছবি

হ্যাঁ ইসরাত, কিছুদিন পরেই আবার নতুন উপকথা দেবার ইচ্ছে আছে। হাসি
এখন ভালো উপকথা খুঁজছি।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

আয়নামতি এর ছবি

যাক অবশেষে সাইকি মেয়েটার দুঃখ ঘুচলো হাসি
সুন্দর সমাপ্তির জন্য উত্তম জাঝা!

তুলিরেখা এর ছবি

অবশেষে সাইকি তার কিউপিডরে পাইল। তারপরে সব ঝামেলা মিটলে সবাই বিদা্য হইলে সাইকি তারে থামে বাইন্ধা কইল, "কী, এইবার? আমারে এত যে নাকানিচুবানি খাওয়াইলি, এইবারে ফিরাইয়া দেই কিছু? " চোখ টিপি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।