নরম ফুরফুরে পালকের মতন উড়ে যায় না-পাঠানো চিঠিরা, অথবা টুকরো টুকরো হাল্কা মেঘের মতন। স্পর্শের মায়াটুকু শুধু রয়ে যায়, অকারণ বিষাদের মতন।
কত চিঠিই তো লেখা হয়েও পাঠানো হয় নি, কত চিঠি লেখাই হয় নি । শুধু স্বপ্নের ভিতরের শ্বেতপাথরের টেবিলের উপরে ভাঁজ ভাঁজ করে সাজিয়ে রাখা ওরা। সব না লেখা চিঠি, কবিতা, গল্প, না গাওয়া গানের কলি, না ফোটা ফুলেরা ---
তোকে ছেড়ে যাইনি কখনও
সবসময়েই কাছে কাছে থাকি,
একসাথেই কলাপাতায় সাজিয়ে দিই
চাট্টি গরম ভাত, এক হাতা মুসুর ডাল
একচিমটি লবণ, একটুকরো পাতিলেবু-
খেতে খেতে কত কথা হয়
হাসিকথা দুঃখকথা আনন্দকথা ব্যথাকথা
তবু তুই ভয় পাস আমি দূরে যাবো বলে?
সেই যে তোর বুকের মধ্যে লেবুপাতার গন্ধ ছিল-
আমি বলতাম তোর মধ্যে লেবুর বাগান বুঝি?
আছে সেই বাগান এখনও?
ঐ যে আমাদের সজনেগাছে থাকতো দুটি কাঠবেড়ালী?
সজনেতলায় দৌড়া-দৌড়ি খেলতো ঝিমদুপুরে?
ওরা কোথায় আজ?
ঐ যে টালির চালের ঘরে বাসা বানাতো দুই চড়াইপাখি?
আমরা ওদের নাম দিয়েছিলাম ইমন আর রূপসা?
ওরা কোথায় গেল?
আমি আজ পাহাড়ী নদীতীরে
তুই আজ দূর সমুদ্রের কিনারায়-
তবু কিন্তু কাছে কাছে থাকি আমরা।
ইমন রূপসা কাঠবেড়ালী লেবুর বাগান-
সবাই আছে আমাদের ঘিরে-
বাইরে নাই বা রইলো!
তোকে ছেড়ে যাইনি কখনও-
কাছে কাছেই আছি,
কাছে কাছেই থাকি।
চিরদিন।
মন্তব্য
একদম মিথ্যে কথা।
সে চলে গেছে বহু বহু আগে, মনেও রাখেনি।
আমি ঠিক সেই নদীটার তীরেই আছে, সে চলে গেছে দূর সমুদ্রের কিনারায়।
সজনে গাছ আর টালির চালের ঘর মুছে গেছে সেই কবে।
বুকের লেবুর বাগানে এখন ঘামের গন্ধ ছাড়া কিছু নেই।
সবুজ কলাপাতায় জুঁই ফুলের মতো ফুটে থাকা সাদা ভাতের বদলে এখন চীনেমাটির থালায় কালচে ভাত।
মসুর ডাল-লবন-পাতি লেবু সাজিয়ে দেবার কেউ নেই, জোগাড়েরও।
সাত দিনের পুরনো মাছের ঝোল ডিপ ফ্রিজ থেকে বের করে
মাইক্রোওভেনে গরম করে ভাতের পাশে ঢাললে
আর লেবুর সুবাস পাওয়া যায় না -
পঁচে যাওয়া বর্তমানের দুর্গন্ধে চারপাশ ভরে ওঠে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তবু আশায় আশায় তাকে বাঁচিয়ে রাখা, এই আরকি! লোভ, ধ্বংস আর অন্ধকার তো শেষ কথা হতে পারে না, ঐ দিগন্ত থেকে দিগন্ত পর্যন্ত লোভ লালসা আর মহাভয়ের সমুদ্র উত্তাল, কিন্তু ছোট্টো মোচার খোলার নায়ে দুলতে দুলতে চলেছে দুর্বল ভীরু একটা ক্ষুদ্র বীজ, "ভালোবাসা", । সে মরে না, সে কোথাও না কোথাও জমি পাবেই দাঁড়াবার, ফিরে আসবে মহামহীরূহ হয়ে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-ছায়াবৃত্ত
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কিছু কিছু কবিতার স্পর্শে জীবাশ্মও জীবন্ত হয়ে উঠতে পারে, দূরও নিকট হয়ে যায়, ব্যর্থতম প্রতীক্ষাও সফল হয়ে যায়, এটি সেরকম একটি কবিতা। অনেক ভালো লাগলো তুলিদি
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
অনেক ধন্যবাদ, নীড় সন্ধানী।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
অপূর্ব!!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
অনবদ্য হয়েছে শেষের চারটা লাইন!
শুভেচ্ছা
অনেক ধন্যবাদ মেঘলা মানুষ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চমৎকার তুলিদি!!!
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
ধন্যবাদ সাফিনাজ আরজু।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
চমৎকার
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
অনেক ধন্যবাদ ঈয়াসীন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
"ইমন রূপসা কাঠবেড়ালী লেবুর বাগান-
সবাই আছে আমাদের ঘিরে-
বাইরে নাই বা রইলো!"
- ঠিক বলেছ, তুলিদিদি!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ওরা সবাই আছে, আমাদের ঘিরে।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আহ্ কি মিষ্টি করে লিখেছেন, তবু কষ্টমাখা লেবুপাতার ঘ্রাণ টের পাচ্ছি!
অনবদ্য!
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
অনেক ধন্যবাদ, , লেবুপাতার ঘ্রাণ সবসময়েই কেমন কষ্টমাখা সুখের।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আমরা কাছেকাছেই থাকি, জগৎ তো বাইরে নয়, ভেতরে! কী চমত্কার আর মায়াবী লেখা !
-আনন্দময়ী মজুমদার
অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
অনেক সুন্দর।
পড়া শুরু করে মনে হচ্ছিলো যে, শেষে গিয়ে কষ্ট বুকে চেপে বসবে। কিন্তু শেষ প্যারায় এসে দম ছেড়ে দিলাম।
(আমার নয়, অন্যের লেখা)।
ভালো থেকো তুলিরেখা'দি।
অনেক শুভকামনা তোমার জন্য।
---------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
সেই যে কবিতা আছে না ? "আমরা দু'জন একটি গাঁয়ে থাকি/ সেই আমাদের একটিমাত্র সুখ", সেইরকমই "আমরা দু'জন একটি গ্রহে থাকি/ সেই আমাদের একটিমাত্র সুখ "
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন