ময়ূরকন্ঠী ভোর

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: সোম, ০২/০৬/২০১৪ - ৫:০৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শেষ বসন্তের এই দিনগুলো ঝকঝকে পরিষ্কার। বেলা অনেক বড়ো হয়ে গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটাতেও দিনের আলো। গ্রীষ্মের তপতপে দিনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ক্যালেন্ডার। গ্রীষ্মের চূড়ান্ত পর্যায়ে রাত নটায় সন্ধ্যা হবে।

মার্চের শেষ দিনটাতে সুইমিং পুলের দরজা খুলেছে, আকাশী-নীল পুকুরে এখন প্রায়ই বিকেলে গা ডুবিয়ে শীতলতা আহরণ করে ছেলেমেয়েরা। ভেতর-উঠোনের ওক গাছে ঝিরঝির হাওয়ার বুকনি লাগে আর বাইরের বড়ো লনের চারধার ঘিরে পল্লবিত তরুরাজি ওদের আপন ভাষায় গান গায় আকাশ বাতাসের সঙ্গে।

পশ্চিমের পাইনজঙ্গলের দীর্ঘ দীর্ঘ ঋজু গাছগুলির ফাঁক দিয়ে অস্তসূর্যের আলো এসে সবকিছুকে কেমন রাঙিয়ে দেয় এলানো বিকালে। কোনোদিন দেখা হয়ে যায় তাও যদি ঘরে আসা হয় রাত্রের অনেক আগে। দেখি কয়েকঘর দূরের চীনা প্রৌঢ়া ক্ষুদ্র দৌহিত্রকে বুকে নিয়ে বিকেলের বাতাস নিতে নিতে ঘুরছেন। শুধু হাসি দিয়ে আলাপ আমাদের, আমি চাইনিজ জানি না, উনি ইংরেজী জানেন না। তবু হাসি আর হাতের ইঙ্গিতে আলাপের চেষ্টার মাঝখানের ফাঁক ভরিয়ে দেয় ফুলের মতন শিশুটির আলোর মতন হাসি।

একদিন খুব ভোরবেলা ঘুম ভেঙে গেল কেন জানি। দরজা খুলে বাইরে চেয়ে মনটা কেমন করে উঠলো, পুবের দিকটা ময়ূরকন্ঠী নীল! স্নিগ্ধ ঠান্ডা বাতাসের আদর মুখে এসে লাগলো। এমনিতে সাধারনতঃ খুব ভোরে ওঠা হয় না, তৈরী হয়ে বেরোতে বেরোতে সাড়ে সাত পৌনে আট হয়ে যায়। ততক্ষণে রোদ ভালো উঠে যায়। সেদিন দ্রুত মুখহাত ধুয়ে তৈরী হয়ে নিয়ে বেরিয়ে এলাম।

হেঁটে হেঁটে আসছি, তখনো সূর্যোদয় হয় নি, আকাশ এক্কেবারে টলটলে পরিষ্কার, পুবের দিকে লাল হয়ে উঠেছে, পথ চলতে চলতেই সূর্যের টুকটুকে লাল মুখখানা দেখা গেলো। ঘনপল্লবিত সতেজ গাছগুলোর পাতায় অরুণ আলোর কী কোমল আলাপ! মনে হলো সমস্ত নিসর্গে নিঃশব্দে গান গাইছে কে যেন, সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে এক আশ্চর্য পরশ, সমস্ত ভিতরবাহির মথিত করা অবর্ণনীয় সেই স্পর্শ!

গ্রীষ্ম বললেই মনে মনে গ্রীষ্মের ছুটির দুপুর, বন্ধ জানালার ফাঁকফোকড় দিয়ে আলোছায়ার জাফরি, ঘুঘুর একলা করা ডাক, বিকেলে কালবৈশাখী এইসব ছবি ভেসে ওঠে। তার সঙ্গে আমের মিষ্টি গন্ধ, স্মৃতির নাকেজিভে মিশে আছে যেন। আমডালের ভুলে যাওয়া স্বাদ,সুস্বাদু আচার... সেইসব ছুটির বিকেলের রিহার্সাল, বেলকুঁড়িমালার মিঠে গন্ধজড়ানো সেইসব রবীন্দ্রসন্ধ্যাগুলো...

এখানে গ্রীষ্ম অনেকটাই অন্যরকম। তবুও ছুটির এক আশ্চর্য ব্যাপার আছে এখানে। এখানে গ্রীষ্ম হলো ছুটির ঋতু, দশ সপ্তাহের। কিন্তু সকলে যে ছুটি নেন, তা নয়। অনেকেই বরং এসময় নিয়মিত কাজের থেকে ছুটি নিয়ে অন্য কোনো সাময়িক কাজে যোগ দেন। ছাত্রজীবন যাদের চলছে তারা অনেকে সামার অফ নিয়ে বাইরে কোনো দোকানে বা কলে কারখানায় কাজ করে বেশ কিছু টাকা তুলে নেন এইসময়টা।

ছোটোদের স্কুলগুলোতে সাধারনত ছুটি থাকে, পুরো জুন জুলাই। অগাস্টের মাঝামাঝি ফল সীজন শুরু হলে শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়। দশ হপ্তা ছুটির ম্যাজিক দিনগুলি অনেক ছোটোদের কাছে ভারী প্রিয়।বন্ধুদের সঙ্গে হুল্লোড় করে কাটানো...

গ্রীষ্ম ফুলেরও ঋতু এখানে। সত্যি করে বলতে গেলে ফেব্রুয়ারীর শেষভাগ থেকে একদম সেই অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত বৈচিত্রময় ফুলেরা ফুটে উঠতে থাকে তাদের নির্দিষ্ট সময় অনুসারে। যত্নের বাগানে তো বটেই, পথের দুধারের পুষ্পসমারোহ দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে হয়, কখনো বুকের মধ্যে ব্যথা করে, এতটা আশ্চর্য সৌন্দর্য এত ক্ষুদ্র ফুলে এত রূপ, এদের জন্য এমন আকাশবাতাসজোড়া কোমল ঠাঁটে সুরবাঁধা আলোহাওয়ার আয়োজন তাকিয়ে দেখা যায় না।

ঐশ্বর্যময় সৌন্দর্যকে কৃত্রিম আবরণের আড়াল থেকে কখনো পাওয়া যায় না। শুধু মনের ভেতরমহলে একলা কেঁদে ওঠে কে যেন, মনে হয় কত তুচ্ছ মানুষ আমি, কী ভয়ংকর অহংকারে নিজের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছি, কী ভয়ানক মুঢ়তায় সব ধ্বংস করে চলেছি বিবেচনাহীন, কত সামান্য কিছু সুখসাচ্ছন্দ্যের জন্য স্বপ্ন-সম্ভবা এই জননীপৃথিবীকে বলি দিয়ে দিচ্ছি।

নরম হলুদ ছোটো ছোটো ফুল,বুকের কাছে গাঢ় উজল খয়েরী রঙের ফোঁটা। মাঠ ভরে ফুটেছে এইসময়। সূর্যের দিকে মুখ তুলে থাকে, সকালে পুবমুখী, দুপুরে উপরমুখ আর বিকালে পশ্চিমমুখী। এরা সূর্যমুখী না, ডেইজিও না, এরা সাধারণ ঘাসফুল।কেউ নাম বলতে পারে না, কজনকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। এদের কোমল উজ্জ্বল রূপ দেখে অভিভূত হয়ে যাই।

ম্যাগনোলিয়া বলে মস্ত মস্ত নরম সাদা ফুল হয়, মে থেকে শুরু হয়ে অগাস্ট অবধি। সাদা নৌকোর মতন পাপড়িগুলো একের পর এক খুলতে থাকে, একদম মাঝে থাকে ভারী মর্মকোষখানি, রেণুতে পূর্ণ। অপূর্ব সুন্দর কোমল সুগন্ধ এই ফুলের প্রত্যেক পাপড়িতে। ম্যাগনোলিয়া গাছও খুব সুন্দর দেখতে, বড়ো বড়ো পাতাগুলো রেশমহেন চকচকে।

একদিন এদের প্রাণের মানুষেরা ছিলো এখানে, আজ নেই, প্রতীক্ষায় চুপ করে থাকে ধৈর্য্যশীলা পৃথিবী। অথচ একেবারে যে নেই তাও নয়, অনেকসময় অপ্রত্যাশিত জায়্গা থেকে উঠে আসে প্রেমিক, দিলদারের জন্য অপেক্ষায় থাকা নার্গিসফুল আনন্দে দুলে ওঠে।

কাছেই বোটানি ডিপার্টমেন্ট, কাফেতে আসা যাওয়ার পথে পড়ে ওদের ছোট্টো বাগানখানা। একটা গ্রীনহাউসও আছে লাগোয়া। পুবের দিকে বাগান, পুবের রোদটা পুরো যাতে পায়। শীতে গ্রীনহাউসের মধ্যে টবে তোলা চারাগুলো এখন বাইরে বের করে করে বাগানে মাটিতে লাগিয়ে দিচ্ছে, কদিনে মাটি ধরে ফেলার পর থেকেই খুব খুশী দেখা যাচ্ছে চারাদের। অজস্র গার্ডেনিয়া ফুটেছে, হাল্কা সুরভি ছড়িয়ে বাতাসকে আনন্দিত করে রাখছে। গিংগোবাইলোবা গাছের সুন্দর গোল গোল দুখানা অংশসমেত পাতারা নতুন করে জেগে উঠেছে, এই গাছটির দিকে চাইলে অদ্ভুত লাগে, কত কোটি কোটি বছর আগে থেকে এ গাছ আছে দুনিয়ায়, ডাইনোসরেরা এসেছে গেছে, আরো কত প্রাণী উদ্ভিদ এসেছে গেছে, ওরা আজও আছে। একদিন ওদের বিশাল পূর্বজদের মহীরুহশরীরে গা ঘষে গেছে হয়তো টিরানোসরাস রেক্স!

সেই শ দেড়েক বছর আগের ক্রীতদাসের ঘরে জন্মানো ছেলেটি একদিন গাছপালা ফুলফলের রূপে মুগ্ধ হয়ে সাধকের মতন অগ্রসর হয়েছিলো, তার নাম ছিলো জর্জ ওয়াশিংটন কার্ভার। বাবা যুদ্ধে মৃত, মা নিখোঁজ, মৃতপ্রায় শিশুটিকে রক্ষা করেছিলো তার প্রভু ও প্রভুপত্নী। এঁদের পদবীই পরে সে ব্যবহার করেছিলো। স্কুলে কলেজে সে কালো বলে ঢুকতে পারলো না, পরে একটি অপেক্ষাকৃত উদার শিক্ষালয় তাকে গ্রহণ করলো,সে সেখান থেকে ডিগ্রি নিয়ে বেরোলো, যদিও সে ছিলো প্রায় পুরোটাই স্বশিক্ষিত।

সারাজীবন সে গবেষণা করে গেছে ফসল নিয়ে মাটি নিয়ে ফুল নিয়ে, যা কিনা একবার প্রচন্ড দুর্ভিক্ষ থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে দেশ-সে কোনোদিন যোগ্য স্বীকৃতি পায় নি, সে তার কেয়ারও করতো না। অকৃতদার মানুষটি তন্বিষ্ট সাধকের মতন প্রণতিরত উপাসকের মতন গবেষণা করে গেছেন। তিনি যেখানে কাজ করতেন, নানা বাধবিঘ্ন সত্বেও বহু উল্লেখযোগ্য কাজ করে গেছেন,সেখানে আজ তাঁর মর্মরমূর্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তাঁর ঐতিহ্য বহন করে গবেষণা চলছে যে পথ তিনি একদিন দেখিয়ে গিয়েছিলেন সেইপথে।

তাই মনে হয় হয়তো তত হতাশার কিছু নেই,হয়তো একদিন---হয়তো কয়েক শ বা কয়েক হাজার বছর পরে সেই ভালোবাসাময় মানুষেরা আবার ফিরে আসবে। মৈত্রীর সংবাদ নিয়ে সেই মৈত্রেয়রা। কত শত শত বছর ধরে সর্বংসহা পৃথিবী অপেক্ষা করেও তো কখনো ধৈর্য্য হারায় না?


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগল। চলুক।
-এ এস এম আশিকুর রহমান অমিত।

তুলিরেখা এর ছবি

থ্যাঙ্ক ইউ। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

এক লহমা এর ছবি

বাঃ! খুব সুন্দর, মন-ভালো-করে-দেওয়া ব্লগরব্লগর!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

তুলিরেখা এর ছবি

থ্যাঙ্ক ইউ। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

আহ্‌ তুলিরেখা'দি, কি সুন্দর করে সত্য কথাটা বলেছো।

কত সামান্য কিছু সুখসাচ্ছন্দ্যের জন্য স্বপ্ন-সম্ভবা এই জননীপৃথিবীকে বলি দিয়ে দিচ্ছি

আর, লেখার এই শেষ লাইনটা কেমন কাঁপুনি ধরিয়ে দিলো শরীরে।

কত শত শত বছর ধরে সর্বংসহা পৃথিবী অপেক্ষা করেও তো কখনো ধৈর্য্য হারায় না

হ্যাটস্‌ অফ্‌ তুলিরেখা'দি।
অনেক শুভকামনা তোমার জন্য।
অ-নেক ভালো থেকো।

----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

তুলিরেখা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ভাই। ভালো থাকবেন।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখার শিরোনাম দেখলেই লেখাটা পড়তে ইচ্ছে হয়। ময়ূরকণ্ঠী রাতের কথা শুনেছিলাম, ময়ূরকণ্ঠী ভোর আজ প্রথম শুনলাম।

ফাহিমা দিলশাদ

তুলিরেখা এর ছবি

পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ফাহিমা দিলশাদ।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

যেন বিভূতি ভূষণের লেখা পড়ছি !
(এর চেয়ে বেশি প্রশংসা জানি নে । হাসি )

রাজর্ষি

তুলিরেখা এর ছবি

কানজোড়া বেগুনী হয়ে গেল। লইজ্জা লাগে

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগল

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

গ্রাফিক বর্ণনা গুলো অসাধারণ। আমি শরীরের চোখে পড়ি আর মনের চোখে দেখি। অনেকদিন কিছু পড়ে এত স্পষ্ট ছবি দেখিনা। খুব প্রিয় দু’টা বই এর কথা মনে পড়ছে- আরণ্যক আর পার্থিব। দুটো লেখাই অনেক ভাবিয়েছিল আমাকে। এটাও ভাবাচ্ছে। নিশাচর জীব।

তুলিরেখা এর ছবি

আরণ্যক আমারও খুব প্রিয় বই, পার্থিবও। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

দীনহিন এর ছবি

গ্রীষ্ম বললেই মনে মনে গ্রীষ্মের ছুটির দুপুর, বন্ধ জানালার ফাঁকফোকড় দিয়ে আলোছায়ার জাফরি, ঘুঘুর একলা করা ডাক, বিকেলে কালবৈশাখী এইসব ছবি ভেসে ওঠে। তার সঙ্গে আমের মিষ্টি গন্ধ, স্মৃতির নাকেজিভে মিশে আছে যেন। আমডালের ভুলে যাওয়া স্বাদ,সুস্বাদু আচার... সেইসব ছুটির বিকেলের রিহার্সাল, বেলকুঁড়িমালার মিঠে গন্ধজড়ানো সেইসব রবীন্দ্রসন্ধ্যাগুলো...

এমন অসাধারণ গদ্যের জন্য আপনার পোস্টের আপাতত কোন বিকল্প নেই আমার কাছে!

চলুক, তুলিদি!

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

তুলিরেখা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ দীনহিন। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ঐশ্বর্যময় সৌন্দর্যকে কৃত্রিম আবরণের আড়াল থেকে কখনো পাওয়া যায় না। শুধু মনের ভেতরমহলে একলা কেঁদে ওঠে কে যেন, মনে হয় কত তুচ্ছ মানুষ আমি, কী ভয়ংকর অহংকারে নিজের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছি, কী ভয়ানক মুঢ়তায় সব ধ্বংস করে চলেছি বিবেচনাহীন, কত সামান্য কিছু সুখসাচ্ছন্দ্যের জন্য স্বপ্ন-সম্ভবা এই জননীপৃথিবীকে বলি দিয়ে দিচ্ছি।

আনন্দের সাথে পড়া হয় লেখাগুলো। এই প্যারাটার পরতে পরতে কী নিদারুণ সত্যি লুকিয়ে আছে মন খারাপ

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তুলিরেখা এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
কী আর বলবো বলুন প্রকৃতিকে তো নিত্য ধ্বংস করে চলেছি! অথচ রক্ষা না করলে বিপদ আমাদেরই।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

কোন অংশ কোট করবো? পুরো লেখাটাই দারুণ! চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

কোন অংশ কোট করবো? পুরো লেখাটাই দারুণ! চলুক

আমি, বাবুই পাখি

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ বাবুই পাখি। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখা পড়লেই মন কেমন কেমন করে উঠে। চলুক

-ছায়াবৃত্ত

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ ছায়াবৃত্ত।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব সুন্দর! এত সংবেদনশীল আর বাতাসের মত ভারহীন মিষ্টি আপনার লেখা গুলি।

-আনন্দময়ী মজুমদার

তুলিরেখা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আনন্দময়ী।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

ভিন্ন আঙ্গিকের লেখা হিসেবে ভাল হয়েছে। তবে কোন কোন স্থানে আটপৌরে ভাষা এসেছে সেগুলোর বিষয়ে সচেতন হতে পারেন। আসলে কবিরা যে ভাষায় কথা বলেন সে ভাষায় লেখেন না।
চার্বাক সুমন

তুলিরেখা এর ছবি

সুপরামর্শের জন্য অনেক ধন্যবাদ চার্বাক সুমন। ভালো থাকবেন।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নির্ঝর অলয় এর ছবি

তাই মনে হয় হয়তো তত হতাশার কিছু নেই,হয়তো একদিন---হয়তো কয়েক শ বা কয়েক হাজার বছর পরে সেই ভালোবাসাময় মানুষেরা আবার ফিরে আসবে। মৈত্রীর সংবাদ নিয়ে সেই মৈত্রেয়রা। কত শত শত বছর ধরে সর্বংসহা পৃথিবী অপেক্ষা করেও তো কখনো ধৈর্য্য হারায় না?

আপনার গদ্য আমাকে ঈর্ষান্বিত করে। এ নেহায়েত ব্লগরব্লগর নয়, নিবিড় শব্দবন্ধের স্পন্দিত কবিতা।

তুলিরেখা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ নির্ঝর অলয়। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তিথীডোর এর ছবি

বড্ড মায়ামায়া লেখা। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তুলিরেখা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।