রাত্রি এক স্নিগ্ধ নদীর মত, ভোরের মোহনার দিকে বইছে চুপি চুপি। রাত্রি সেই প্রিয়তম মুখ, যা আমি কোনোদিন দেখিনি স্পষ্ট করে, স্বপ্নের ভিতরে আস্বচ্ছ নীলচে কুয়াশায় যে মুখের আদল দেখি শুধু। তার আকুল চোখ দু'টি দেখতে পাই, কিন্তু মুখের বাকী অংশ আচ্ছন্ন হয়ে থাকে স্বপ্ন-কুহেলিতে।
বিস্মৃত এক সুবর্ণবেলাভূমি, নিরন্তর নীল সমুদ্র আছড়ে পড়ে যার বুকে, যেখান থেকে কেউ ফিরে আসে নি কোনোদিন-সেই উপকথার তীরভূমির মত এই রাত, দিনের রহস্যময়ী দিদি।
আস্তে আস্তে ওর কোলে মাথা রাখি। চোখ মেলে দেখি আকাশে ফুটে উঠছে হাজার হাজার সহস্রদল পদ্ম।
পথেরা পথের মত থেকে যায়
নদীও নদীর মত উদাসীন বয়ে চলে-
অন্তর্জলিশয়ানে যে পড়ে থাকে
হাওয়া তার কাছে নিয়ে আসে
সুদূরের তরুক্ষীরগন্ধ।
মৃত্যুনীল চোখের পাতায়
শুক্ল রাত্রির জ্যোৎস্না ছুঁয়ে যায়,
তারারা ঝমঝম করে বাজে কানে-
সত্যিই ওপারের টান বড়ো গভীর।
ক্লান্ত প্রহরেরা ঘুম-ঘুম
ঘুমের ভিতর স্বপ্নেরা ছড়িয়ে যায়
অলীক পাখিদের নরম পালকের মতন,
ঘুম তো মৃত্যুর ছোটোবোন।
তার ভিতরকুঠুরিতে স্বপ্ন-
দিদির ভিতরকুঠুরিতে কি আরো উজল স্বপ্নেরা?
কেউ জানে না,কেউ দেখে আসেনি তো!
কোথায় কে যেন কাঁদে?
ছড়ানো ছেটানো টুকরো টুকরো বিলাপ,
একসাথে গাঁথা হলে প্রগাঢ় কান্না-
তবু শোনা যায় না
শ্রুতিতে অনন্ত অন্তর্জলি।
পথেরা পথের মত থেকে যায়
নদীও নদীর মত উদাসীন বয়ে চলে-----
মন্তব্য
"পথেরা পথের মত থেকে যায়
নদীও নদীর মত উদাসীন বয়ে চলে-----"
কবি কবির মত রচনা করে যান
(তিনিও কি উদাসীন? কে জানে!)
আমরা সে' কবিতায় ভেসে যাই
উদাসীন, নির্মম চোরা কোন টানে!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
অনেক অনেক ধন্যবাদ এক লহমা।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
"দিনের রহস্যময়ী দিদি।"
রীতু
হ্যাঁ
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
দুই/তিন বার পড়লাম। বোঝার চেষ্টা করলাম এখানে কি বলা হচ্ছে? রাত্রি, ঘুম, এবং মৃত্যু? এই তিনটি শব্দের একে অপরের সাথে অনেক মিল আছে। আমার বাংলা জ্ঞান খুব নড়বরে। "অন্তর্জলিশয়ানে যে পড়ে থাকে" মানে কি?
সোহেল লেহস
ঠিক। রাত্রি, ঘুম আর মৃত্যু। আর এক অমোঘ টান, রহস্যের দিকে।
অন্তর্জলি একটা প্রাচীন প্রথা। বৃদ্ধ, জরাজীর্ণ, মৃত্যু-সন্নিকট(চিকিৎসায় কোনো ফল হবে না এমন অবস্থায় ) মানুষকে ঘরের ভিতরে রাখা হতো না, কোনো পবিত্র নদীর তীরে খোলা জায়গায় শেষ সময়টা শুইয়ে রাখা হতো, দিনের বেলা সামিয়ানা দেওয়া হতো মাথার উপরে আর রাতে খোলা আকাশ। পরিজনেরাও কেউ কেউ কাছে থাকতেন মৃত্যু পর্যন্ত। অনেকসময় প্রার্থনাসঙ্গীতেরও ব্যবস্থা থাকতো। এই প্রথাকে বলতো অন্তর্জলি।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন কিছু শিখলাম। ধন্যবাদ তুলিরেখা!
সোহেল লেহস
বুঝি নাইতো কি হইছে?
পড়তে খুব ভালো লাগছে।
জিও দিদি।
অনেক শুভকামনা।
---------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
অনেক ধন্যবাদ ভাই।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
একজন আমাকে বলেছে ওখানে নাকি সবকিছু নীল আর শীতল। আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করিনি।
__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে
আমি আরেকজনের কাছে শুনেছিলাম সেখানে শীত বা গরমের কোনো চেতনা নেই। এক অপূর্ব আলো সেখানে, যে আলো বর্ণনা করা যায় না।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন