এই ঘর, ওই ঘর, বাগান, উঠান, কুয়াতলার নিম হাওয়া, পুকুরঘাটের নারিকেলছায়ায় কয়েক দন্ড, এইসব ঘোরাঘুরিতেই বেলা কেটে যায়। ব্যস্ত সকাল গড়িয়ে কখন দুপুরে মিশে যায়, ঘুঘুর ডাকে নির্জন হয়ে আসে। কাজের মাঝে তখন একটুখানি বিশ্রামের নিভৃতি।
তখনই দূর মাঠের ওপার থেকে কী একটা সুর আসে, তিরি-লিরি বাঁশি বাজে কোথায় দূরে, ঐ নীল পাহাড়গুলোর ঐধারে বুঝি। তখন মনে পড়ে তোকে, মনে পড়ে তোর বাঁশির সুর। কতকাল আগের ভুলজন্মের বাঁশি। কোথায় আমার ঘোর বাস্তব ঘরগেরস্থির ঊনকোটি চৌষট্টি কাজ অকাজের আঁটোসাঁটো কড়াপাকের ভিতরেও রয়ে গিয়েছিস তুই। রয়ে গিয়েছে তোর বাঁশির করুণ মধুর ডাক। সে ডাক আজও অফুরান ভেসে আসছে সেই অনন্ত যমুনার পার থেকে।
একদিন নিশ্চয় সেখানে উড়ে যাবার ডানা দুটো ফুটে উঠবে আমার পিঠের উপরে।
রঙীন পাতার উৎসবে
তোর নিমন্ত্রণ ছিল জানি
আমিও পেয়েছিলাম নিমন্ত্রণের চিঠি-
সোনাইল পুবাইল মেঘের ডানায়।
কোটি কোটি লাল কমলা সোনালি বাদামী খয়েরী
ঝরাপাতা কার্পেটের মতন ঢেকে রেখেছিল মাটি-
গাছগুলো এত রঙীন, যেন দ্বিতীয় বসন্ত!
পাহাড়ের ঢালে হ্রদ,
তারই তীরে সারি সারি তাঁবু পড়েছে-
ঐখানেই উৎসব, সারা রাত চলবে
নাচগান খানাপিনা ও আরো নানারকম আনন্দ।
চূড়া থেকে গন্তব্য দেখে নিয়ে নামতে শুরু করলাম,
কিন্তু রঙীন জঙ্গলে পথ হারিয়ে গেল আমার।
তুই ঠিকমত পৌঁছেছিলি উৎসবে?
সেই রাতে, পথ হারিয়ে একলা জঙ্গলে বসে
চুপ করে চেয়ে দেখছিলাম
আঁকাবাঁকা রিক্ত ডালগুলো মুখের উপরে নিয়ে
চুপ করে ভেসে আছে গোল রুপোলী চাঁদ।
পূর্ণিমার রাত্রি ছিল সেটা।
আমার আর ঘরে ফিরতে ইচ্ছা হয়নি,
ঐ রঙীন পাতাগুলোর মত
আমারও নিরুদ্দেশে যেতে ইচ্ছা হলো।
উৎসব শেষে তুই কি ফিরেছিলি ঘরে?
নাকি তুইও নিরুদ্দেশে গেলি নীলাভ রোদ্দুরের দেশে?
কোনোদিন আবার হয়তো কোনো নতুন জঙ্গলে
বসন্তের নবমুকুল ঘ্রাণে আকুল বাতাসের মধ্যে
দেখা হয়ে যাবে আমাদের।
*******
মন্তব্য
বুকের ভেতররটা অজান্তেই টনটন করে উঠল
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
অনেক অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য আর কমেন্টের জন্য।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কেশাগ্র স্পর্শ করে মাথার ওপর দিয়ে চলে গেল। আমি কবিতা বেলায় এত অবুঝ কেন! অবশ্য নিউরনকে পাশ কাটিয়ে অলিন্দের মধ্যে বাতাসের ঝাপটাটা খারাপ লাগল না।
(ক্লান্ত কালবৈশাখি)
অলিন্দের মধ্যে বাতাসের ঝাপ্টা ? আর নিলয়ে ?
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আগে পড়িনি। বেশ তো।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
অনেক ধন্যবাদ সুলতানা সাদিয়া।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নতুন মন্তব্য করুন