অনেক দিন পর

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: বুধ, ৩০/০৩/২০১৬ - ৫:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনেক দিন পর । কেমন আছেন বন্ধুরা? মাঝে মাঝে আসি, পড়ে চলে যাই। লগিন আর করা হয়ে ওঠে না। লেখাও হয় না। আজ কতকাল পরে আবার মনে হল, সেই বন্ধুরা কেমন আছেন দেখে আসি। কনফুসিয়াস, স্নিগ্ধা, আশালতা, আয়নামতি, ষষ্ঠ পান্ডব, সত্যপীর, নজরুল, ধূসর গোধূলি, তারেক অণু, অনিকেত, প্রফেসর হিজবিজবিজ, এক লহমা --আরো আরো অনেকে, সবাই কেমন আছেন ?

মনে পড়ল, একসময় হঠাৎ করেই লিখতে শুরু করেছিলাম, তারপর কখন যেন আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে গেছিলাম সচলের সাথে।

খুঁজে দেখি, আঁতিপাতি করে স্মৃতির কোঠায় জমা
ইতিহাসগুলো উল্টেপাল্টে দেখতে থাকি,
দেখি খুঁজে পাই কিনা সেই
নীল মুক্তোর মতন ভোরটা,
প্রথম দেখা হবার সেই নিটোল ভোরবেলাটা।

একে একে বের হতে থাকে হাজারো গল্প-
হিমেলরাতে রাতজাগা চোখে নৈঃশব্দের পৃথিবী
আর এক অদ্ভুত জ্যোৎস্নায় সাদা পাখিদের উড়াল,
শীতের দুপুরের মাঠে দৌড় প্রতিযোগিতা,
রাস্তার ধারে ফুচকাওয়ালার ঠেলাগাড়ী,
হঠাৎ ছুটির একটা দিন, দুপুররোদে পিঠ রেখে
কমলালেবু ছাড়িয়ে খেতে খেতে গল্পেরবই পড়া ।

একটা লাল ফুটকি-ফুটকি সবুজ ফ্রক,
একটা চুমকিবসানো নীল ওড়না,
হঠাৎ কাঁটার খোঁচায় ফেঁসে যাওয়া
কিশোরীবেলার প্রিয় সেই ওড়নাটা ।
একটা গভীর কুয়ো, কপিকলে ক্যাঁচরশব্দ তুলে
দড়িবাঁধা বালতি নামে আর ওঠে ।

এইসব এত এত ছবির মধ্যে
সেই ভোরবেলাটা লুকলো কোথায়?


মন্তব্য

আয়নামতি এর ছবি

এমন প্রিয়মুখ অনেকদিন পর দেখলে এমনিতেই ভালোলাগে, তার উপর নাম ধরে ডাকছো শুনলে আনন্দ বত্রিশ হাতপায়ে নাচতে চায়! তোমার এই লেখাটা দেখে এক বন্ধুর মেসেজ পেয়ে ছুটে এলেম তুলিদি। কত্তদিন পর এলে বলো দেখি! আছো কেমন?? যাঁদের নাম করলে তাঁদের অনেকেই শীত নিদ্রায় গেছেন তো গেছেনই। তোমার মত ঘুম ভাঙলে ঠিক প্রিয় সচলায়তনে আসবেন দেখো। তুমি এতদিনে প্রচুর ভাড়ার গড়েছো নিশ্চয়ই! সেগুলো আস্তে আস্তে আমাদের পাতে তুলে দেও। আমি ভালো আছি, তুমিও অনেক ভালো থেকো দিদি হাসি

তুলিরেখা এর ছবি

তোমার লেখা কই? হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

একটা সত্য আমাদের মনে রাখতে হবে যে, পৃথিবীর কোন কিছু সব সময় এক রকমভাবে যাবে না। সব কিছুর জোয়ারভাটা আছে। দেয়াল পত্রিকা বা লিটল ম্যাগের ক্রেজ একসময় যেমন ব্লগের তোড়ে ভেসে গেছে। ব্লগ তেমন এখন সোশ্যাল মিডিয়ার চাপে পড়ে হাঁসফাঁস করছে। তাই অনেক ব্লগ বন্ধ হয়ে গেছে বা অনেক ব্লগে সাত দিনে সাতটা নতুন পোস্ট পড়ে না।

কিন্তু মানুষ কি লেখালেখি বন্ধ করে দিয়েছে? অবশ্যই না। মানুষ যেদিন থেকে লিখতে শিখেছে সেদিন থেকে আজতক সে লিখে যাচ্ছে। মানুষ যদি লেখালেখি বন্ধ না করে থাকে তাহলে সে কোন না কোন উপায়ে সেটা প্রকাশ করবে। ছাপানো বইয়ের দুনিয়া যেখানে ইবুকের আগমনে আস্তে আস্তে পিছু হঠছে, সেখানে অনলাইন মিডিয়া ছেড়ে লিখিয়েরা আবার পুরনো মাধ্যমে ফেরত যাবে না। সুতরাং বর্তমান চেহারায় হোক বা অন্য কোন চেহারায় হোক লেখালেখির অনলাইন মাধ্যমটা সহসা বন্ধ হবার নয়। তাছাড়া টেক্সট, গ্রাফিক্‌স, অডিও আর ভিডিও’র এমন সমন্বয় এর আগে মানুষ হাতে পায়নি। এই সুযোগটাকে নষ্ট করারও কোন মানে নেই।

লেখালেখি চালানোটা খুব সহজ কাজ নয়। এতে ব্যাপক ধৈর্য্য দরকার। এতে লেগে থাকতে হয়। এর জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। এই জন্য কেউ কেউ শুরুতে জেহাদী জোশ নিয়ে লিখতে নামলেও অচিরেই ধৈর্য্য হারিয়ে লেখালেখির দুনিয়া থেকে লাপাত্তা হয়ে যায়। লেখালেখি চালানোর জন্য লেখার আগে নিয়মিত পড়ার অভ্যাসটা তৈরি করতে হয়। যাদের পড়ার অভ্যাস নেই তাদের লেখালেখির ধারা অচিরে শুকিয়ে যায়। পড়া বা লেখার ধার না ধেরে যারা স্রেফ আড্ডাবাজীর উদ্দেশ্যে ব্লগে এসেছিল স্বাভাবিকভাবেই তারা দম ফুরিয়ে ট্র্যাকের বাইরে চলে গেছে। যারা পড়া বন্ধ করেননি তারা তিন দিনে একদিন ব্লগে আসলেও নতুন পোস্টগুলো পড়া হয়ে যায়। পোস্টগুলো যারা লেখেন বা ব্লগ যারা চালান তারা তো আর পাঠকদের কাছে টাকাকড়ি দাবি করেন না, তাই পোস্টটা পড়ে মন্তব্য আকারে একটু আলোচনা করলে সব পক্ষ খুশি হন, সব পক্ষ লাভবান হন। যারা লেখালেখি ছেড়ে দেননি তারা মাসে দু’মাসে একটা করে লেখা দিলেও ব্লগ নতুন লেখায় উপচে পড়বে। এই কাজগুলোর জন্য সামান্য ইচ্ছে যথেষ্ট।

লেখালেখির জন্য, অন্তত বাংলাদেশে লেখালেখির জন্য, এখনকার সময়টা খুব বৈরি। জেএমবি-আনসারুল্লাহ্‌-আইএসদের চাপাতির কোপ, আইনের রক্ষকদের হাতের ৫৭ ধারা বা অনুরূপ বিধান, ক্ষমতাবানদের চোখরাঙানী এবং সকল পক্ষের ক্রমাগত হুমকিধমকি নিরীহ কীবোর্ডবাজদের জীবন দুঃসহ করে দিয়েছে। তাই চাইলেও অনেকে আর লেখা প্রকাশ করতে পারেন না। প্রত্যেকের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি ইউনিক। তাই একজনের নিরাপত্তা প্রশ্নের সাথে অন্যজনের নিরাপত্তা প্রশ্ন তুলনীয় নয়, দুটো সামলানোর পদ্ধতি-কৌশলও এক নয়। বাংলাদেশের বাইরে যারা আপাত নিরাপদ দূরত্বে আছেন তাদের মধ্যে যারা পড়াশোনা ও লেখালেখি ছেড়ে দেননি তারা যদি সরব থাকেন তাহলে বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের বিপন্ন ভাইবোনেরা এই দমবন্ধকরা, ভীতিকর, অসহনীয় অবস্থায় একটু স্বস্তির পরশ পান।

ব্লগে আসবেন কি আসবেন না, ব্লগে লিখবেন কি লিখবেন না – পছন্দটা আপনার। শুধু এ’টুকু ভাববেন আপনার পূর্বপুরুষের সামনে ঔপনিবেশিক শক্তি বা হানাদার বাহিনীকে মোকাবেলা করার বদলে নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে গিয়ে চুপচাপ থাকার সুযোগ খোলা ছিল। কিন্তু তাঁরা নিরাপদ থাকার সে সুযোগকে অবহেলায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে অস্ত্র হাতে তুলে বিরুদ্ধ শক্তির মুখোমুখি হয়েছিলেন। অস্ত্রের চেহারা পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুযায়ী পালটায়। বন্দুক-কামান-বোমা সহসাই পালটে কলম-কীবোর্ড হয়ে যায়। পালটে যাওয়া পরিস্থিতিতে তার উপযোগী হাতিয়ার তুলে নিয়ে বিরুদ্ধ শক্তির মোকাবেলা করবেন নাকি পূর্বপুরুষের গৌরবময় নামকে মুছে ফেলবেন সেই পছন্দটাও আপনার।

তুলিরেখা এর ছবি

আপনের নাম কই ? চিন্তিত

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সত্যপীর এর ছবি

আছি চমেতকার। ছবির গপ লেইখে ফাটাইতেছি, দারা শুকোর বিবাহের আঞ্জামঘটিত ছবি নিয়া লেখুম না একটা কবুতর ফারুক নামামু ভাবতেছি। নারায়ন পণ্ডিত সজারুর ধাঁধা বইলে বিপাকে ফালাইছে। যাক আপনে আছেন কেমুন? একটা দেশিবিদেশি উপকথা কি ইস্কুলবেলার গপ ছাড়েন। ইস্কুলের গপ শেষ হয়ে গেলে কলেজবেলার গল্পে হাত দেন। বিষয়ের অভাব কী।

..................................................................
#Banshibir.

তুলিরেখা এর ছবি

পড়ি, ছবি গফ পড়ি, খুব ভালা পাই। জাহাঙ্গীরের টেলিফোন এর বিষয়টাও ভালো। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

নতুন কেউ যোগ হয়েছি। চলুক
এ্যনি মাসুদ

তুলিরেখা এর ছবি

দারুণ। খুব ভালো। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

নাম না করলেও আমি আছি। সবাই এর দলে চুপিসারে মাঝে মধ্যে উঁকি দেই। অপেক্ষায় থাকি, প্রিয় কিছু ছন্দের জন্য।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

তুলিরেখা এর ছবি

পড়েছি আগে। তোমার লেখা বড় ভালো।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইস্কুলের গপ শেষ হয়ে গেলে কলেজবেলার গল্পে হাত দেন।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তুলিরেখা এর ছবি

চিন্তিত

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

এক লহমা এর ছবি

প্রিয় তুলিদিদি,

বড় ব্যস্ততায় দিন কাটিতেছে। তদুপরি ঘাড়ের উপর যেটি আছে, দিন গড়ানোর সাথে সাথে সেটির ঢক ঢকানি যত বাড়িতেছে, কর্মক্ষমতা সেই অনুপাতে কমিতেছে। এরি মধ্যে যথাসাধ্য ঘুরিয়া যাই, সচলের পাতায় পাতায়। সচলের বাসিন্দারা এমনকি তার অধিকাংশ প্রবীণ সদস্যরাও আমার কাছে নূতন যৌবনের-ই দূত। তাই তাহাদের বেশীরভাগেরই প্রতি আমার একই সাথে প্রবল কৌতূহল, সসম্ভ্রম ভালোবাসা, আবার খানিকটা সংশয়াকুল দূরত্ব। এরই মাঝে কাহারো কাহারো সহিত সখ্যতার সম্পর্ক অনুভব করি। তেমন কেউ যখন আমার অনুপস্থিতিতে আমায় মনে করে, তখন মনের ভিতর আনন্দের ঘোর লাগে, মনে হয় অনেক পাওয়া হল। সেই সাথে কুণ্ঠাও জাগে বৈকি, আমার তরফ থেকে আরও কিছু দিতে না পারার কারণে।

একান্ত ইচ্ছা রাখি কয়েকদিনের মধ্যে আবার কোন লেখা জমা দেওয়ার জন্য। দড়িবাঁধা বালতি উঠিয়ে নামিয়ে দেখি কিছু জোটে কি না।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

তুলিরেখা এর ছবি

ঝটপট লেইখ্যা ফেলান, দিয়া দ্যান। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তুলিরেখা এর ছবি

মাঝে মাঝে আসি, দেখি, চলে যাই । কেন যে কলমে লেখা আসে না আর, কেজানে !

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তুলিরেখা এর ছবি

সেই আগের দিনগুলান মনে পড়ে । কত লেখা, কত আলাপ , কত তর্ক বিতর্ক ----

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।