সাহিত্যিক -০৩

চরম উদাস এর ছবি
লিখেছেন চরম উদাস (তারিখ: মঙ্গল, ১৫/১১/২০১১ - ১২:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আনু

রূপকথা

তারা ছিল তিন রাজ্যের যমজ কুমার,
প্রথম রাজ্যের যমজ কুমার আনন্দ ও দুঃখ,
দ্বিতীয় রাজ্যের যমজ কুমার রাগ ও অভিমান,
তৃতীয় রাজ্যের যমজ কুমার বুদ্ধিমান আর বোকা।
একদিন তারা সবাই শুনল ঢেঁড়া পিটিয়ে ঘোষণা হচ্ছে
সুন্দর রাজ্যের রাজকন্যা ভালোবাসা স্বয়ংবরা হবে
ছয় কুমার প্রস্তুত হল রাজকন্যার স্বয়ংবর সভায় যাবার জন্য।

আনন্দ ভাবল, রাজকন্যা ভালোবাসাকে জয় করে তার জীবন আনন্দে ভরে দেব
দুঃখ ভাবল, দুঃখী রাজকন্যার সব দুঃখ দুজনে ভাগ করে নেব
রাগ ভাবল, দরকার হলে অন্য সব প্রতিদ্বন্দ্বীকে টেনে ছিঁড়ে ফেলব
অভিমান ভাবল, প্রয়োজনে ভালোবাসার জন্য সারাজীবন কুমার রব
বুদ্ধিমান ভাবল, আমার সমস্ত বুদ্ধির জোরে আমিই শুধু তার হব
বোকা কিছু ভাবল না কারণ সে ভাবতে শিখেনি ।

রাজকন্যার সামনে গিয়ে ছয় কুমার তাকে উপহার দিলো
আনন্দ একরাশ লাল গোলাপ দিলো
দুঃখ দিলো দুই ফোটা অশ্রুর তৈরি দুটো নীল মুক্তো
রাগ দিলো টকটকে লাল এক ব্যাগ রক্ত
অভিমান বলল, কেন তুমি সবার কাছ থেকে উপহার নেবে
বুদ্ধিমান বললও, সে রাজকন্যার জন্য নিজের জীবন দেবে
বোকা কিছু দিতেও পারলোনা, বলতেও পারলোনা শুধু বোকার মতো একটু হাসল ।

ছয় কুমার রাজকন্যাকে তাদের ক্ষমতার কথা বললও
আনন্দ বলে, আমি তোমার সারা জীবন আনন্দে ভরিয়ে দিতে পারি
দুঃখ বলে, আমি তোমার সমস্ত দুঃখ নিজের করে নিতে পারি
রাগ বলে, আমি তোমার অপছন্দের লোকদের শাস্তি দিতে পারি
অভিমান বলে, আমি তোমাকে না পেলে অভিমানে আত্মহত্যা করতে পারি
বুদ্ধিমান বলে, আমি তোমাকে সাফল্যের চরম শিখরে নিয়ে যেতে পারি
বোকা অনেকক্ষণ মাথা চুলকে অনেক ভেবেও বের করতে পারলোনা সে কি পারে।

সুন্দরী রাজকন্যা ভালোবাসা এবার তার লাজুক মুখ তুলে মিষ্টি হাসল,
প্রথমেই রাগ আর বুদ্ধিমানকে বলল,
তোমরা যেতে পারো, ভালোবাসার জন্য তোমাদের প্রয়োজন নেই
তারপর আনন্দ আর দুঃখকে বলল,
তোমরাই তো আমার শ্রেষ্ঠ বন্ধু
ভালোবাসাকে ফিরে ফিরে তোমাদের কাছেই যেতে হবে
অভিমানকে বলল,
তুমি আমার জন্মান্তরের সাথী
তুমি না থাকলে তো ভালোবাসার জন্মই হতো না
সবশেষে বেকুব এর গলায় মালা পরিয়ে দিয়ে বললও,
নাহ্‌ কিছুই বললও না শুধু মিষ্টি করে একটু হাসল ।

- এটা কবিতা হয়নি।
রাজীব নির্লিপ্ত গলায় বলল। আমি একটু হতাশ হলাম।
- কেন হয়নি কেন? সমস্যাটা কোথায়?
- কেমন জানি গদ্য গদ্য হয়ে গেছে, মনে হয় একটা গল্পকে জোর করে ধরে কবিতা বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কোন ছন্দ নেই, তাল-লয় নেই। বিশেষ্য- বিশেষণে সমস্যা আছে। আনন্দ-দুঃখ, রাগ-অভিমানের সাথে বুদ্ধিমান-বোকা মিলেনি।
- আধুনিক কবিতা এমনই হয়। ছন্দ খুঁজলে তুই ছড়া পড়, কবিতা পড়ার দরকার নেই।

আমার একটু রাগ হয় কিন্তু বুঝতে পারি আসলেই এটা কবিতা হয়নি। উদাস থাকলে এই কবিতা নিয়ে আর কড়া কথাবার্তা বলতো। রাজীব আমার কবিতার রহস্যটা ধরে ফেলেছে। আসলে আমি একটা গল্পই লিখতে চেয়েছিলাম কিন্তু কিভাবে যেন সেটা কবিতার মতো হয়ে গেলো। নাকি আমি আসলে একটা কবিতা লিখতে চেয়েছি যেটা গল্পের মতো হয়ে গেলো।

- এই কবিতা আজ থেকে দশ বছর আগে লেখা। অনেকদিন পর পুরানো খাতা ঘাটতে গিয়ে এটা পেলাম। এটাই আমার শেষ লেখা। গত দশ বছরে আমার আর একটা লাইনও লেখা হয়নি।

- কিছু লিখিস নাই সেটা ঠিক না। আমি পর্ণাকে লিখা তোর কিছু মেইল আমি পড়েছি। তোর লেখার হাত চমৎকার।

- আরে ধুর, ওইগুলাকে কি লেখা বলে নাকি। ভালো, কথা তুই কিভাবে আমার মেইল পড়লি?

রাজীব কিছু না বলে হাসে। যথারীতি ওর ভাব সাগরে ডুবে যায় কিছুক্ষণের জন্য। অনেকক্ষণ পর প্রায় অনুচ্চারিত স্বরে বলে,

- আনু তুই মেয়েটাকে ভুলে যা।

আমি কোন উত্তর দেই না। রাজীব আবার বলে,

- আনু, ভালোবাসা নিয়ে একটা লেখা লিখেছি। এখনও শেষ হয়নি, দেখবি?
- দেখা

ভালোবাসা
ভাবার মতো এত বিষয় থাকতে আজকে হটাত করে আমার ভাবনা জুড়ে এত কমন এবং এত বহুল আলোচিত একটা বিষয় কেন আসলো? কতজনে যে কত অদ্ভুতভাবে এর সংজ্ঞা দেয়ার চেষ্টা করেছে তার হিসেব নেই। আমি আসলে ভাবছিলাম ভালোবাসা পুরনো হয়ে যায় কেন? শেষ হয়ে যায় কেন? যতক্ষণ ভালবাসার মধ্যে রহস্যটুকু আছে ততক্ষণই এটা থাকে কেন? পাশ্চাত্যে তো এটা অতিদ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। Making Love কথাটা ওরা বিছানায় যাওয়া অর্থে বোঝায়, ওদের ডিকশনারিতে অভিমান বলে কোন শব্দ নেই। অভিমান ছাড়া কখনও ভালোবাসা হয় নাকি? কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি আর অনেকটুকু রহস্য ছাড়া ভালোবাসা হয় নাকি? সেটা ফুরিয়ে যাবার পরও সম্পর্ক থাকে কিন্তু তখন আর সেটা ভালোবাসা থাকেনা, সেটাকে বলে understanding, মেনে নেয়া, পারস্পরিক সমঝোতা।
সিলেটে মাধবকুণ্ডে বেড়াতে গিয়ে দেখামাত্রই ছোট্ট ঝর্ণাটাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। পাহাড়ের উপরে উঠা নিষেধ ছিল কিন্তু সেটা অগ্রাহ্য করে ঝর্ণার উৎস দেখতে গেলাম। দেখার পর মনে হল এ আমি কি ভুল করলাম! সিলেটের অসংখ্য ছোট ছোট ছড়ার মতোই এর উৎসও ছোট্ট একটা অতি সাধারণ নালা। ঝর্ণার রহস্যটুকু জেনে ফেলার পর লজ্জায় আর এর দিকে তাকাতে পারিনি। খালি মনে হচ্ছিল , এই? এই তবে ঝর্না? মানুষের ক্ষেত্রেও কি এমন হয়? ভালোবাসার মানুষটির সাথে একান্তে মিলিত হবার পর তার সম্পূর্ণ রহস্য জেনে ফেলার পর তাকেও কি এমন সাধারণ মনে হয়? তারও কি চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হয়. এই তবে! এই! এর জন্যই এতকিছু! আমার প্রথম সমুদ্র দেখার অভিজ্ঞতাটুকু খুব ভালো মনে আছে। অনেক বন্ধু মিলে একসাথে রওনা দিয়েছিলাম। ক্লান্তিকর ভ্রমণ শেষে কক্সবাজার যখন পৌঁছলাম তখন অনেক রাত। কোনমতে হোটেলে মালপত্র রেখে সবাই একসাথে ছুট দিলাম, কে আগে সৈকতে পৌছাতে পারে। আমি একটা উঁচু জায়গা দৌড়ে পার হতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেলাম। উঠে দাড়াতেই দেখি সামনে সমুদ্র তার বিশাল বাহু বাড়িয়ে গর্জন করে ডাকছে আমাকে। সে যে কেমন এক অনুভূতি সেটা বলে বোঝানো সম্ভব না। কতকিছুই ভেবে রেখেছিলাম সমুদ্র সম্পর্কে কিন্তু কোনটার সাথেই সে মিলল না। আমার সব কল্পনার চেয়ে অনেক বেশী সুন্দর ছিল আমার প্রথম দেখা সমুদ্র। কিন্তু পরদিন দিনের বেলায় একে আর অতো ভাল লাগল না ।

- কি হল থামলি কেন? ভালোই তো লাগছিল।
- এই পর্যন্তই লিখেছি, লেখা শেষ করতে পারিনি।
- ও ভাল কথা, তুই নাকি মাস্টার্স করবি না, পড়াশুনা নাকি আর করবি না।
- কে বলল?
- আঙ্কেল বলেছে। সেদিন তোর বাসায় ফোন করেছিলাম, তুই ছিলিনা, আঙ্কেল আধা ঘণ্টা ধরে আমার কাছে তার দুঃখের কাহিনী বর্ণনা করেছে। তুই নাকি তাকে কি সব উল্টাপাল্টা কথা বলেছিস।
- উল্টাপাল্টা তো কিছু বলিনি, যা আমার কাছে সত্যি মনে হয়েছে তাই বলেছি। আমি আজকাল যতোই ভাবছি আমার সব ভাবনা এক জায়গায় এসে থেমে যাচ্ছে। সেই মৌলিক প্রশ্নে এসে আমার সবকিছু আটকে যাচ্ছে, what men live by? মানুষ কি নিয়ে বাঁচে, কি জন্য বাঁচে? অনেক মানুষের মনেই সারা জীবনে একবারও এই প্রশ্ন জাগে না। আর সবচেয়ে বেশী জাগে মনে হয় লেখকদের মনে আর সারাজীবন ধরে তারা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে ফেরে। আমিও তো ভেবে কোন কূলকিনারা পাচ্ছিনা। হয়তো আমার জ্ঞান অনেক কম, হয়তো আমাকে আরও অনেক কিছু জানতে হবে বুঝতে হবে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবার জন্য।
- তো কর না, আরও জ্ঞানার্জন কর। এটাই তো বেঁচে থাকার একটা উদ্দেশ্য হতে পারে, জ্ঞানার্জন। তোর রেজাল্ট ভাল, মাস্টার্স কর, তারপর পি.এইচ.ডি কর।
- ধুর, এভাবে হয়না রে! আমি জানি আমি চেষ্টা করলে মাস্টার্স এ ভাল করতে পারব, তারপর পি.এইচ.ডি. করব। গণ্ডায় গণ্ডায় পেপার পাবলিশ হবে। এখানে ওখানে সেমিনার করে বেড়াব। সব ফাঁকিবাজি রে! এভাবে জ্ঞানার্জন হয়না, বই পড়ে সত্যিকারের জ্ঞানার্জন হয়না।
- এ তো দেখি উল্টা কথা বললি, বই পড়ে জ্ঞানার্জন হয়না তো কিভাবে হয়?
- সব জ্ঞানের মূল উৎপত্তি দর্শন থেকে, ভাবনা থেকে, উপলব্ধি থেকে। আজকাল তো লোকজন ভাবতে ভুলে গেছে। যত উদ্ভট উদ্ভট ভাবনা থেকেই তো মৌলিক জ্ঞানের উৎপত্তি।
- ও তাই তুই আর পড়াশোনা করবি না, বসে বসে ভাববি।
- পড়ব না তা তো নয়, ভাবনার খোরাকের জন্য অবশ্যই পড়াশোনার দরকার আছে। তবে এরকম প্রথাগত পড়াশোনা আর না।
- তা তোর এই সিদ্ধান্তের কথা শুনে তোর ফাদার কি বললেন?
- ভয়াবহ কথা বলেছে। প্রথমে কিছুক্ষণ বকাঝকা করার পর বলেছে, তোর পছন্দের কোন মেয়ে থাকলে বলে ফেল বাপ, আমি কোন বাধা দেবনা, শুধু শুধু ঝামেলা করিস না। চিন্তা কর কি স্থূল চিন্তাভাবনা!

আমি রাজীবের কথা শুনে হাসতে থাকি।

- আনু, স্যরের লেখার কি করলি?

আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলি,

- ইচ্ছা করে নারে, একদমই লিখতে ইচ্ছা করে না।

রাজীব

: জানেন, আমার না অনেক কষ্ট।

কষ্ট, কষ্ট কথাটা আমার মনের মধ্যে গেঁথে গেল। কোথায় জানি কষ্টের কথা শুনেছি প্রাণপণে মনে করার চেষ্টা করলাম। ওইদিকে মেয়েটা তখনও বলে চলছে,

: আমাকে বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় অনেক আনন্দে আছি আমি। সবসময় হাসিখুশি থাকি তো তাই আমার ভেতরটা কেউ দেখতে পায়না। ওকি আপনি আমার কথা শুনছেন তো? নাকি আমার কথা বিশ্বাস করতে পারছেন না।

বিশ্বাস, বিশ্বাস এবার এই কথাটা আমার মনে গেঁথে গেল। আর তখনই কষ্টের ব্যাপারটা মনে পড়ল। বাহ্‌ বেশ মজা তো, কষ্ট নিয়ে ভাবলাম তখন কষ্টের কথাটা কিছুতেই মনে পড়ল না আর বিশ্বাস নিয়ে ভাবতে বসে কষ্টের কথা মনে পড়ে গেল। সেদিন সকালে ব্যান্ডের গান শুনছিলাম, সেখানে কে যেন কষ্ট কষ্ট বলে কাঁদছিল। ব্যান্ডের গায়কদের মনে অনেক কষ্ট। আমি আবার যেন ব্যাপারটা ভুলে না যাই তাই দ্রুত মেয়েটিকে বলে ফেললাম,

- ব্যান্ডের গায়কদেরও অনেক কষ্ট।

আমার কথা শুনে মেয়েটি একটু থমকাল। ও বোধহয় তখন ওর কষ্টের কারণটা বলছিল। আমি কথাটা মিস করেছি শুধু শেষ শব্দটা ধরতে পেরেছিলাম, ভালোবাসা। কি যে মুশকিল মেয়েরা এত দ্রুত এক কথা থেকে আরেক কথায় চলে যায় যে আমি তাল রাখতে পারিনা। একবার কষ্ট, আর একবার বিশ্বাস আবার পরক্ষণেই ভালোবাসা। আচ্ছা এই তিনটা শব্দ একসাথে জুড়ে কোন কথা তৈরি করা যায়না? ভালোবাসাকে বিশ্বাস করা ঠিক না ভালোবাসায় অনেক কষ্ট এরকম কিছুই কি বলছিল মেয়েটা। ভালোবাসা নিয়েও কি একটা কথাও যেন আমার মনে পড়ি পড়ি করে পড়ছে না।

- ধ্যাত আপনি আমার একটা কথাও শুনছেন না, এত কি ভাবেন বলুন তো।

মনে পড়েছে, মনে পরেছে। গতরাতেই তো বন্ধুত্ব আর ভালোবাসা নিয়ে লিখেছিলাম আমি। যেন আবার ভুলে না যাই তাই হড়বড় করে মেয়েটিকে বলে ফেললাম

: ভালোবাসা গড়ে ওঠে আকর্ষণ এর উপর ভিত্তি করে আর বন্ধুত্ব এর ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস।

মেয়েটি ততক্ষণে তার কষ্টের কথা শেষ করে কি একটা আনন্দের কথা বলে খুব হাসছিল। আমার কথা শুনে আবারও একবার থমকাল। নাহ্‌ কেন যে আমি তাল রাখতে পারিনা। সবাই এত দ্রুত এগিয়ে যায় আর আমি এক জায়গাতেই বসে থাকি।

- আপনার নামটা আপনার বন্ধুর নামে হলে ভালো হতো, আপনার মত উদাস লোক আমি জীবনেও দেখিনি।

এই সর্বনাশ, নাম। তাইতো মেয়েটি যে কে এবং নামটা কি এটাই তো বুঝতে পারছিনা। আজ ছুটির দিন তাই সকাল সকাল উঠে ভাবছিলাম আজকে কি নিয়ে লিখা যায়। হটাত ড্রয়িংরুমে ঢুকে মেয়েটিকে পেলাম তারপর প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে গল্প চলছে। এতক্ষণ অবশ্য মেয়েটি কে বা নাম কি এই চিন্তা মাথাতেও আসেনি। আসলে মেয়েটি এত দ্রুত এতসব কথা বলে যাচ্ছে যে সেটার সাথে তাল রাখতেই অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।

- কি আজকে এত চুপ মেরে গেলেন যে? সেদিন তো বিয়েবাড়িতে খুব স্মার্টনেস দেখিয়েছিলেন।

মনে পরেছে , মনে পরেছে। মেয়েটির সাথে এক বিয়েবাড়িতে পরিচয় হয়েছিলো। মেয়েটি বোধহয় আমার এক মামাতো বোনের বান্ধবী। আমার ছোটবোনের সাথেও পরিচয় আছে আর সেই সূত্রেই হয়তো বাসায় এসেছে। ওইদিন আমার সাথে আনুও ছিল। আনু আমার পরিচয় দিয়েছিলো বিশিষ্ট লেখক বলে। মেয়েটি বোধহয় বেশ বইটই পড়ে, পছন্দের প্রসঙ্গ পেয়ে সেদিন অনেক কথা বলেছিলাম। কিন্তু এতকিছু একসাথে এত কিছু মনে পরলেও নামটা মনে পরল না।

- আমার নামটা আপনার মনে আছে তো? এত সুন্দর ফুলের নাম তো ভুলে যাবার কথা না।

সর্বনাশ, যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যে হয়। আমি প্রাণপণ মনে করার চেষ্টা করলাম। ফুলের নামে নাম। গোলাপ, বকুল, কদম, করবী, গাদা, রজনীগন্ধা, চন্দ্রমল্লিকা।

- কি ভুলে গেছেন তাইনা?
আমার চেষ্টা চলছে। দোপাটি, শাপলা, পদ্ম, কচুরি, ঝিঙেফুল, চাপা, চম্পা। মনে পড়েছে, মনে পড়েছে। আমি বিজয়ীর ভঙ্গিতে হাসলাম

- চম্পা।
- হয়নি, তবে বেশ কাছাকাছি গিয়েছিলেন। আমি বেলী। আমি আজকে চলি, শম্পাকে বলবেন আমি ওর রুম থেকে দুটো বই নিয়ে গেছি।

শম্পা আমার ছোটবোন। তারমানে মেয়েটি আমার কাছে আসেনি এসেছে আমার ছোটবোনের কাছে। নাহ্‌, আমার অনেক উন্নতি হচ্ছে। আজকাল মোটামুটি বেশ তাড়াতাড়িই মনে পড়ে যায়। আজকে মেয়েটির নামটা মনে করতে পারলে একবারে নিজেকে লেটার মার্ক দিয়ে দিতাম। আমি বসে বসে এবার নিজের ভাবনাগুলো গোছানোর চেষ্টা করলাম। আমি কি সত্যি সত্যিই লেখক হয়ে যাচ্ছি? আমার কেন যেন মনে হয় লেখকদের জীবনটা একটু অন্যরকম হয়। অনুভূতি নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে তাদের অনুভূতি প্রখর হয়ে যায়। জগতের যে সূক্ষ্ম ব্যাপারগুলো অন্যের চোখ এড়িয়ে যায় তারা সেগুলোকে নিয়েই নাড়াচাড়া করেন। কিন্তু সূক্ষ্ম ব্যাপারগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে প্রতিদিনের স্থূল ব্যাপারগুলোর সাথে আর তাল রাখতে পারেন না। আমি লিখতে বসে গেলাম।

লেখকের জীবন
পৃথিবীতে এমন কি কোন লেখক আছে যে সুখী। আমার কেন যেন মনে হয় কোন লেখকের পক্ষেই বোধহয় সুখী হওয়া সম্ভব নয়। লেখকদের বোধশক্তি তীব্র হয়, তারা সবাই জীবনকে খুব গভীর ভাবে দেখতে চায় অনুভব করতে চায়। আর জীবনকে খুব গভীরভাবে যারা দেখে তাদের পক্ষে জীবনে সুখী হওয়া সম্ভব না ঠিক যেমন করে বুদ্ধিমান লোকের পক্ষে প্রেমে পড়া সম্ভব না। প্রায় সব লেখকই খুব মন দিয়ে অন্যের জীবনকে দেখে, অন্যের অনুভূতিগুলো খুব গভীরভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করে কিন' সে যেরকম গভীরভাবে অন্যের জীবনের দিকে তাকায় তার নিজের জীবনের দিকে তাকানোর মত এমন কাউকে কি খুঁজে পায়? যে মানুষ অন্যকে যত গভীরভাবে উপলব্ধি করে সে স্বভাবতই চায় তাকেও কেউ একজন এরকম গভীরভাবে উপলব্ধি করুক। আর সেটা প্রায় কোন সময়েই হয়ে ওঠে না বলে দেখা যায় অধিকাংশ লেখকের জীবনই নিঃসঙ্গ। লেখক মাত্রই নিঃসঙ্গ অথবা কে জানে নিঃসঙ্গ না হলে হয়তো লেখকই হওয়া যায় না।
জীবন নিয়ে যারা খুব বেশী চিন্তা করে, জীবনের খুব বেশী গভীরে যেতে চায় তাদের সামনে হয়তো মরণ ছাড়া আর কোন পথ খোলা থাকেনা। আমি মাত্র সেইদিন জানলাম হেমিংওয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন, জেনে ভীষণভাবে চমকে উঠলাম। যেই লোক পৃথিবীর মানুষকে সকল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে বেঁচে থাকার জন্য মূলমন্ত্র দিলেন, A man can be destroyed but not defeated আর সেই একই মানুষ শেষ পর্যন্ত আত্মহননের পথ বেছে নিলেন। তার মানে আত্মহত্যা কি পরাজয় নয়? অনেক মানুষই এমনি করে বারবার আত্মহত্যার রোমান্টিক চিন্তা করে। ধুঁকে ধুকে স্বাভাবিক নিয়মে নিভে যাওয়ার চাইতে নাকি সশব্দে সাড়া জাগিয়ে নিভে যাওয়া ভাল। কিন্তু এখানেও যে একটা লোক দেখানোর ব্যাপার রয়েছে। সারাটা জীবন আমরা কাটিয়ে দেই আমাকে দেখ আমাকে দেখ বলে। কেউ নিজের টাকা দেখায়, কেউ নিজের মেধা দেখায়, কেউ নিজের রূপ দেখায়, কেউ বা নিজের মহানুভবতা দেখায়। আর যখন দেখানোর কিছু থাকেনা অথবা দেখার মত কারো অবসর থাকেনা তখনই অভিমানে মানুষ আত্মহননের পথ বেছে নেয়, জীবিত থেকে নিজেকে দেখাতে ব্যর্থ হয়ে মরণের মাধ্যমে নিজেকে দেখায়। ব্যতিক্রম আছে, শুধুমাত্র নিজেকে দেখাতে ব্যর্থ, জীবন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে সবাই এ পথ বেছে নেয় না। জীবনানন্দ দাস এর কবিতার মতো কেউ কেউ হয়তো কোন দুঃখ ছাড়াই আত্মহত্যা করে বসে। এই অকারণ কষ্ট বিহীন গভীর দুঃখের স্বরূপ কি লেখকরা জানে? আর জানে বলেই কি হঠাৎ হঠাৎ গভীর রাতে তাদের মনে এক অজানা হাহাকার এর সৃষ্টি হয়, সম্মোহিতের মত তারা এগিয়ে যায় চরম পরিণতির দিকে?
গতরাতে আমার এমন ভয়াবহ এক অনুভূতি তৈরি হয়েছিলো। মধ্যরাতে ছাদে উঠে উথালপাথাল হাওয়ার মধ্যে অনেকক্ষণ দাড়িয়ে থেকে হঠাৎ মনে হল দেই পাঁচতলার ছাদ থেকে এক লাফ। অদ্ভুত এক বিভ্রমের মধ্যে পড়ে পায়ে পায়ে হেটে গিয়ে ছাদের কার্নিশে গিয়ে দাড়িয়ে অনেকক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কি ভয়াবহ ব্যাপার আমি কি লেখক হয়ে যাচ্ছি নাকি?

উদাস

শরীফ আবৃত্তি করে,

রৌশন সুরাজ সে হোতা হ্যাঁয়, সিতারোসে নেহি
মোহাব্বত এক সে হোতা হ্যাঁয়, হাজারো সে নেহি

আমি বলি, বাংলা লেখা ছেড়ে এখন উর্দুতে পদ্য লেখা শুরু করেছিস নাকি?
- পদ্য না শায়েরী। আর এটা আমার লিখা না, আমি অনুবাদ করেছি
-কি অনুবাদ করলি?
- বলে গেছে পাখি বালক, যত বড় নক্ষত্রেরাই হোক
শুধু সূর্যের উত্তাপেই পুড়ে আমার পালক

-সাবাস, ভালো হইছে।
উৎসাহ পেয়ে শরীফ আবার পোঁ ধরে,
- If you love someone, Set her free. If she comes back, she's yours. If she doesn't, she never was.
- এটারও বাংলা করে ফেললি?
- বলে গেছে পাখি বালক, দাও ছেড়ে ভালোবাসার পালক
আসলে ফিরে তোমারই হোক, না ফিরলে ভিজিওনা দুচোখ
- দুর্ধর্ষ। কিন্তু পাখি বালক টা কে?
লাজুক গলায় শরীফ বলে,
- আমার ছদ্মনাম।
- ত্রিশ বছরের ধামরা পোলা হয়া বালক হইলি লজ্জা লাগে না? কি নাম বললি পাকি বালক?
- পাকি না পাখি।
- নিজেকে তোর পাখি মনে হয়? আয়নার সামনে দাঁড়ায়ে দেখে আয় একটা পাখির সাইজ এইরকম হইতে পারে কিনা। উট পাখিও তো তোরে দেখলে লজ্জায় বালিতে মুখ লুকাবে।
গর্দভটা কিছু না বলে খালি হে হে করে হাসে।
আরও গোটাকয়েক পদ্য এবং শের শায়েরী শুনিয়ে ফোন রাখল। হাজার মাইল দূরে বসে আছে। নাইলে শালাকে পাকড়ে ধরে আবার কিছু সভ্যতার বর্ধন করতাম। সকাল থেকে মেজাজ খারাপ হয়ে আছে। ঘুম থেকে উঠেই সুপারভাইজারের মেইল পেয়েছি। টেলিগ্রামের মতো করে লেখা, স্টপ বাই মাই অফিস। আগে কোন প্লিজ ও লেখা নাই দেখে বুঝলাম ঘটনা খারাপ। তার অফিসে গিয়ে দেখি ড মালিক বের হচ্ছে। সেটা দেখে বুঝলাম ঘটনা বেশ খারাপ। শালা নিশ্চয়ই আবার প্যানপ্যান করে বিচার দিয়েছে। আমি মালিককে দেখে অবশ্য পূর্ণ আদবের সাথে আসসালামালাইকুম ডক্টর বলে সালাম দিলাম ৩২ দাঁত বের করে। ব্যাটা গান্ধারী বা সাইক্লপ হলে অগ্নি দৃষ্টিতে আমি ভস্ম হয়ে যেতাম, মেডুসা হলে পাথর হয়ে যেতাম। সে কোনটাই না বলে আমি গুনগুন করে ইয়া হাবিবি গাইতে গাইতে তাকে নিশ্চিন্ত মনে পাশ কাটালাম।

রুমে ঢুকার পর সুপারভাইজার বলল,
-ক্লোজ দ্যা ডোর প্লিজ।
দরজা বন্ধ করতে বলে কেন? বদ মতলব আছে নাকি কোন? দরজা বন্ধ করেই মনে হল, বাঁচাও বাঁচাও, হেল্প হেল্প করে চিল্লানো শুরু করি। এই দেশে একবার প্রফেসররা একবার টেনিউর হয়ে গেলে তাদের চাকরি যাবার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। একমাত্র সেক্সচুয়াল হ্যারেসমেন্ট এর কেসে ফেললে কিছু করা সম্ভব। তবে আমার সুপারভাইজার লোক খারাপ না। ফেললে বরং মালিককে এরকম বিপদে ফেলা যায়। মিডল ইষ্টের লোকেরা এমনিতেই জানি একটু কেমন কেমন হয়। কেউ অবিশ্বাস করবে না। এইখানে প্রথমবার এক সৌদি ব্যাটার সাথে পরিচয় হবার পর দেখি "ব্রাদার" বলে চকাম করে গালে একা চুমা দিয়ে দিলো। তাও আবার শুকনা চুমা না, ঠোঁট ভিজায়ে ভিজা চুমা। পরে দেখি এরা সব এই কাণ্ডই করে। কোলাকুলি করে একটা আরেকটারে চকাম চকাম করে চুমা দেয়। প্রথম প্রথম এখানের মসজিদে জুম্মার নামাজ শেষ করেই আমি পড়িমরি করে দৌড় দিতাম। কখন কে ধরে চুমু দেয়ার চেষ্টা করে। পরে অবশ্য অনেক স্মার্ট হয়েছি। আরেকদিন ওই সৌদি ব্যাটাকে ঠোঁট বাগিয়ে আসার পর বলেছিলাম, উই বেঙ্গলিস কিস অনলি লিপ টু লিপ। নো চিক। অনলি লিপ টুঁ লিপ। ব্যাটা আমার কথা বিশ্বাস করে ভয় পেয়ে কেটে পড়েছিল। পরে সে মনে হয় এই কথা সবাইকে ছড়িয়েছিল। কারণ এরপর থেকে কেউ আর আমাকে চুমু খেতে এগিয়ে আসে না। সুপারভাইজার বাঙ্গালী বলে একদিন কে যেন এসে আমার সুপারভাইজারকেও জিজ্ঞেস করেছিলো ঘটনা সত্যি কিনা। আমরা আসলেই ওই কাজ করি কিনা। সুপারভাইজার আমাকে ডেকে অনেক ঝেড়েছিল, দেশের ইজ্জত ডুবাচ্ছি এই বলে। আজকেও সুপারভাইজার একই রকম ঝাড়ি দিলো। বেচারার ঝাড়ির স্টক মনে হয় শেষ। সেই একই রুটিন কথা বার্তা। আমি দেশের নাম ডুবাচ্ছি, এর পরের সেমিস্টার থেকে আমাকে আর ফান্ড দিবেনা ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি হাসিমুখে ঝাড়ি হজম করে বের হলাম। ল্যাবে একগাদা কাজ জমা হয়ে আছে। আমি শরীফের বঙ্গানুবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে ক্যাটি প্যারীর baby, you're a firework এর বাংলা করে পোলা তো নয় সে তো আগুনের গোলা রে গাইতে গাইতে ল্যাবের দিকে হাঁটা দিলাম।

ল্যাবে এসে শিরীন বানু নামের ওয়ার্ড ডকুমেন্টটা খুলি। একটা মাত্র লাইন জ্বলজ্বল করছে।
শিরীন বানুর জন্ম ১৮ই মে, ১৯৪৮, মঙ্গলবার, ভোর ৪ টা।
ব্যাস, এই শেষ। আগে পিছে আর কিছু নেই। এক সপ্তাহে আমি এই এক লাইন লিখেছি। দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমি ফাইল বন্ধ করি। আমাকে দিয়ে এই লেখা হবে না। আমার পক্ষে সিরিয়াস কিছু লিখা সম্ভব না। আমি জগাখিচুড়ি নামের ফাইল খুলি। হাবিজাবি লিখে যাই। তড়তড় করে আমার লেখা এগিয়ে যায়,

জগাখিচুড়ি

ছোটবেলা একবার ট্রেনের জানালার ফাঁকে মাথা আটকে গিয়েছিলো। ঢাকায় আসার পথে কোন এক ষ্টেশনে যাত্রা বিরতি। তখনকার ট্রেনের জানালায় আড়াআড়ি দুটো লোহার শিক দেয়া থাকতো। সেই দুই শিকের ফাঁকা দিয়ে মাথা বের করে একটু প্রকৃতি দেখার চেষ্টা করছিলাম হয়তো। একটু পরে আবিষ্কার করলাম মাথা আর ভেতরে ঢুকাতে পারিনা। জানার সেই ফাঁকের তুলনায় সেই বয়সে আমার মাথার আকার নিশ্চয়ই এমন একটা অপটিমাম পর্যায়ে ছিল যে নির্দিষ্ট একটা কোণ করে মাথা ঢুকালে সেটা ঢুকবে। কিন্তু মাথা বিভিন্ন কোণে ঘুরিয়ে দেখা গেলো সেটা আর বের করা যাচ্ছে না। রহস্যময় ব্যাপার। আমি জন্ম থেকেই মাথা মোটা হতে পারি কিন্তু এমনতো আর না যে শিক দিয়ে মাথা ঢুকানোর পড়ে মাথা মোটা হয়ে গেছে। নিজে কিছুক্ষণ চেষ্টা করার পর হাল ছেড়ে দিয়ে পরিবার পরিজনের দিকে সাহায্যের আশায় তাকালাম। কাতর স্বরে বললাম, আম্মা আটকায়ে গেছি। সেই সাথে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলাম, সাইন্টিফিকালি এমন হবার কথা না। আম্মা সাইন্সের ধারে কাছে না গিয়ে আমাকে বেদম পিটানো শুরু করলো। অন্যসময় হলে চুলের মুঠি ধরে গালে কয়েক ঘা দিতো। এখন কল্লা জানালার বাইরে থাকার কারণে সেইটার নাগাল না পেয়ে আমার অসহায় নিতম্বের উপর চড় চাপড় পরতে লাগলো। আমার এইরকম কল্লা আটকে যাওয়া দেখে ট্রেনের লোকেরা বিভিন্ন বুদ্ধি দিতে লাগলো। একজন বলল, পা ধরে আমাকে অনবরত ঘুরাতে থাকতে। একসময় বের হয়ে আসবো। আরেকজন অতি জ্ঞানী বলল, অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ ঘুরাতে। যে কোন কিছুই নাকি অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ ঘুরালে খুলে আসে। আমি আতঙ্কিত হয়ে বললাম, আমি কি স্ক্রু নাকি যে ঘুরায়ে ঘুরায়ে খুলবেন। আরেকজন বলল, আমাকে ভেতর থেকে ঠেলে বাইরে বের করে দিতে। তারপর আমার নাদুসনুদুস আকার দেখে যোগ করলো, আমাকে দিগম্বর করে সারা গায়ে সরিষার তেল মেখে তারপর ঠ্যালা দিতে। তাইলেই নাকি ফুড়ুত করে আমি জানালা গলে বেরিয়ে পরবো। ইজ্জত হারানোর ভয়েই মনে হয় আমার মাথা আপনা আপনি ছোট হয়ে গেলো এবং আমি নিজ থেকেই বের করে আনতে পারলাম। সেইদিনের ঘটনায় তিনটা মূল্যবান জিনিস শিখেছিলাম। প্রথমত, যে কোন কিছুতে মাথা গলানোর আগে জেনে নেয়া উচিৎ মাথা বের করা যাবে কিনা। যেইটা আমি সেই ছোট বয়সে শিখে গেলেও আমেরিকা এখনো শিখতে পারেনি। দ্বিতীয়ত, আমাদের দেশের লোকেরা অনেক জ্ঞানী। আর তৃতীয়ত, কপাল ভালো আমি এই দেশে জন্মেছি, সৌদিতে না। সৌদিতে নাকি কল্লা পেতে দিলেই কেউ না কেউ এসে এক কোপে সেটা কেটে ফেলে। সেই সাথে সান্ত্বনাও দেয়, একটুও ব্যথা পাবেনা বলে।


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

মন্টা উদাস হয়ে গেলো। নেন একটা ইসলামী প্রেমের হালাল গান শোনেন।

মমিন তুমায় দাঁড়িয়ে করে সালাম by royesoye

চরম উদাস এর ছবি

মুখবুক থেকে শুনেছি কালকেই। জটিল গান দেঁতো হাসি

মন মাঝি এর ছবি

মমিন কি না দাঁড়িয়ে সালাম দিতে পারে না?

****************************************

বন্দনা এর ছবি

হিমুদা বাকী গানগুলা ও শুনে ফেল্লাম।।তার মাঝে বেশি ভালো লেগেছে হে হৃদয়, তুমি চলেছো কোথায় আর কে তুমি। আপ্নের গানের গলাতো ব্যাপক সুন্দর।

শামীমা রিমা এর ছবি

চলুক

চরম উদাস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

শমশের এর ছবি

হাততালি

চরম উদাস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

তাপস শর্মা এর ছবি

উদাস ভাইজান সত্যিই উদাস হয়ে গেলাম। ভীষণ ভাবে মনে দাগ কাটে। লেখার প্রশংসা আর নাই বা করলাম। শুধু ... হাসি

পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করব। আনু, উদাস কিংবা রাজীবদের খুব কাছের লোক মনে হয়

চরম উদাস এর ছবি

ধন্যবাদ তাপসদা। একটু সময় নিয়ে পর্ব দিচ্ছি। কিন্তু প্রতি পর্বের আকার বেশ বড়, ফাঁকি দিচ্ছি না খাইছে

তাপস শর্মা এর ছবি

না। সত্যিই ফাঁকি হচ্ছে না। ফাঁকি দিলে মাইর খাইবেন। খাইছে

রু (অতিথি) এর ছবি

খুব ভাল লাগলো। আমাদের বারান্দার গ্রীলে একটু ফাঁক ছিল, আমারো একবার মাথা আটকায় গেলো। যখন বের করতে পারলাম, মজা পেয়ে গেলাম, মাঝে মধ্যে গলা আটকায় দাঁড়ায় থাকতাম। এইবারটা বের করতে পারবো তো, যদি না পারি, এরকম পারবো কি পারবো না ভয় পেতে বেশ মজা লাগে।

রাজীবের ভালবাসা নিয়ে লেখাটা কিন্তু দারুণ লেগেছে। মাঝে মধ্যে মন যখন একটু নরম মত হয়ে আসে, তখন মনে হয় কাউকে ভালবেসে দেখি। ভিতরে ভিতরে আমি তার উপর নির্ভরশীল থাকব, কিন্তু উপর দিয়ে ভাব দেখাব আমাকে ছাড়া তার কোন গতি নাই।

চরম উদাস এর ছবি

ধন্যবাদ রু।
ভালবাসা বড় মন্দ জিনিস। উকি দিয়ে ঠিক দেখা যায়না। বড়ই পিচ্ছিল ঘাট, ওরকম দেখি না কি হয় ভেবে উকি দিতে গিয়ে দুনিয়ার কত তালেবর লোক আছাড় খেয়ে লেজে গোবরে করলো খাইছে

তিথীডোর এর ছবি

মাঝে মধ্যে মন যখন একটু নরম মত হয়ে আসে, তখন মনে হয় কাউকে ভালবেসে দেখি। ভিতরে ভিতরে আমি তার উপর নির্ভরশীল থাকব, কিন্তু উপর দিয়ে ভাব দেখাব আমাকে ছাড়া তার কোন গতি নাই।

এখনো সময় আছে, এইরাম বেদাতী চিন্তাভাবনা বাদ দিন।
ভালুবাসা ভালু না। আছাড় খেয়ে লেজে গোবরে করলে তখন বুঝবেন ঠেলা! চোখ টিপি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

রোকসানা রশীদ এর ছবি

সিরিজটার জন্য অপেক্ষা করে থাকি!!
কিছু কিছু জায়গা অন্যরকম ভালো লাগলো... যেমন- ভালোবাসা আর লেখক বিষয়ক ভাবনাগুলা... রূপকথার বিন্যাসটা ইউনিক!
উদাসের ফান বরাবরের মতো সুঁচালো উইটি...
কিন্তু এই পর্বে সিরিয়াস চিন্তাভাবনা গুলাই বেশি ভাবাইলো!! হাততালি

চরম উদাস এর ছবি

ধন্যবাদ রোকসানা রশীদ।
রূপকথা বাল্যকালের কবিতা, লেখার সময় আনু বেচারা ইস্কুলে পড়ত।
এই পর্বে মনে হয় জ্ঞানী জ্ঞানী কথা বেশী হয়ে গেছে ইয়ে, মানে...

নিটোল এর ছবি

সিরিজটা দারুণ হচ্ছে। বই বাইর করবেন কবে??

_________________
[খোমাখাতা]

চরম উদাস এর ছবি

ধন্যবাদ নিটোল। বই হয়তো বের করবো কিন্তু বই ক্যামনে বের করে জানিনাতো ইয়ে, মানে... ??

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হুম বই বাইর করেন

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

উচ্ছলা এর ছবি

মাশাল্লাহ্!
মানুষে এত প্রাণবন্ত লেখে কি করে? হাসি মূল্যবান, প্রতিভাবান হাতদুইটা সোনা দিয়া বাঁধিয়ে রাখুন, জনাব হাসি

তাপস শর্মা এর ছবি

দেঁতো হাসি

মূল্যবান, প্রতিভাবান হাতদুইটা সোনা দিয়া বাঁধিয়ে রাখুন, জনাব

চরম উদাস এর ছবি

ধন্যবাদ। তাও ভালো খালি হাত বাঁধানতেই সীমাবদ্ধ আছে। খুশ হয়ে তাজমহলের কর্মীর মতো হাত কেটে দিলে বিপদে পড়তাম।

তাপস শর্মা এর ছবি

দেঁতো হাসি

দ্রোহী এর ছবি

ডরান ক্যান? 'সোনা' দিয়ে বান্ধাইতে বলছে, অন্য কিছু না। চোখ টিপি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চরম চরম, উদাস ভাই আপনি তো পুরা firework। এই পর্বটা ইউনিক হইছে, হাসি তামসা বাদ দিয়া সিরিয়াস লাইনে গেলেন দেহি।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

চরম উদাস এর ছবি

বেশী সিরিকাস হয়ে গেলো নাকি ইয়ে, মানে... ? ব্যাপারনা, কয়দিনের মধ্যে আবার একটা "কনে দেখা আলো" টাইপ গল্প দিয়ে লাইনে চলে আসবো খাইছে

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

নাহ সিরিকাস ঠিকাছে, যে শিব গড়তে পারে সে বাঁদরও গড়তে পারে, এবং ভালই পারে দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সাফি এর ছবি

আপনে এতদিন কৈ ছিলেন বস? এমন লেখেন ক্যামতে?

চরম উদাস এর ছবি

অফিসের কাজে অনেক ব্যস্ত ছিলাম কয়দিন। আর অনেক বড় বড় করে পর্ব দেই তো। এজন্য পাঠকদের একটু রেস্ট দেয়ার জন্য সময় নিয়ে পর্ব গুলা দিচ্ছি। নাইলে তো লোকজন দম আটকায়ে পড়া বন্ধ করে দিবে।

বাপ্পী হায়াত () এর ছবি

চোখ বন্ধ করে আনু আর রাজীব কে বাদ দিয়ে খালি উদাস মিয়ারেই পড়লাম
(সিরিকাস জিনিষপত্র আর ভাল লাগেনা)
পোষ্টে দিলাম ১ কেজি হইলদ্যা ধইন্যাপাতা

কনে দেখা আলোর ২‌য় পর্ব কো?

(অট: শুধু লিন্কডইনেই এ্যাড করলেন? এত্তো কাহিনী করে আপনারে খুঁজে বের করলাম... ইয়ে, মানে... )

চরম উদাস এর ছবি

আগে বাকিটুকু পরে শেষ করেন। তারপর অন্য আলাপ। ফাঁকিবাজি চলবেনা। খাইছে

ফাহিম হাসান এর ছবি

আপনার লেখার মধ্যে দিয়েই তিন চরিত্রকে জানতে পারছি - কিছু সনাক্তকরণ চিহ্ন থাকলে চরিত্রগুলোর মাঝে পার্থক্য সহজেই চোখে পড়ত, সিঙ্গেল পোস্ট হলে এইটা বলতাম না - কিন্তু কিস্তিতে উপন্যাস বলে এই পরামর্শটা দিলাম।

প্রথম শেরটার অনুবাদ অসাধারণ হয়েছে। আর সিরিয়াস কথা, একটু দুঃখের নুন থাকলে লেখা আরো জমে - তাই এই পর্বে লেখা খানিকটা ঝুলে গেলেও মনের উপর ছাপ ফেলছে বেশি।

চরম উদাস এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মূল্যবান ফিডব্যাক এর জন্য।
উপন্যাসটা আসলে কিস্তিতে হলেও আগে মোটামুটি কাঠামো দাড় করিয়ে তারপর লিখছি। আসলে ৮০% লেখা হয়ে আছে, তবে অনেক অদল বদল করছি।

shafi.m এর ছবি

পড়তে উদাসের পর্বটা মজার, কিন্তু আমার নিজেকে রাজিবের মত ভাবতে ইচ্ছে হয়। তবে আমি প্রায় অনু, আমার দীর্ঘশ্বাস অনেক, হতাশ নই অবশ্য দেঁতো হাসি প্রথম আলো (সুনিল) সাইজের (প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড) বই পাইলেও এই তিন্রে নিয়ে পড়তে সময় লাগ্বে না দেঁতো হাসি

শাফি।

চরম উদাস এর ছবি

ধন্যবাদ সাফি। চাইলে তিনজনকেই মজার বানিয়ে দেয়া যায়, তাইলে হয়তো পাঠকের পড়তে আরাম হবে। কিন্তু লেখার উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে না। আশা করি তিনজনের ক্ষেত্রে পাঠক তিন রকম স্বাদ পাবে।

অতিথিঃ অতীত এর ছবি

হাততালি হাততালি হাততালি

আপনার ক্রমাগত চরম ভক্ত হয়ে যাচ্ছি। গুরু গুরু

-অতীত

চরম উদাস এর ছবি

তা ভালো গরম ভক্ত না খাইছে

শাব্দিক এর ছবি

জগাখিচুড়ি টাই 'দি বেস্ট'

স্বাধীন এর ছবি

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

চরম উদাস এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ স্বাধীন ভাই।

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

এতদিন পরে . .. ............ ! ভাল লেগেছে। চলুক

চরম উদাস এর ছবি

একটু দেরি হয়ে গেলো। ব্যস্ত ছিলাম অনেক আসলে।

দ্রোহী এর ছবি

পর্বগুলোর মাঝে গ্যাপটা আরেকটু "ছোডো" করেন মিয়া।

চরম উদাস এর ছবি

কিছুদিন শহরের বাইরে ছিলাম অফিসের কাজে। নর্থ ডাকোটা, আর সাউথ টেক্সাস এর তেলের খনিতে ঘুরে ঘুরে রিসার্চ করতে হচ্ছে। সেন্সর টেন্সর বসায়ে সব হাবিজাবি সাইসমিক, ইলেকট্রিক সিগন্যাল মাপতে মাপতে আমি শেষ। অচিরেই পরামর্শের জন্য আপনার সাথে মনে হয় যোগাযোগ করতে হবে।
ব্যস্ততা কমলে চেষ্টা করবো পরের পর্ব দ্রুত দিতে।

বন্দনা এর ছবি

এই পর্বটা বেশ পাঁচমিশালী হয়েছে। স্বভাবতই উদাসের অংশুটুকু বেশি ভালো লেগেছে।

চরম উদাস এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বন্দনা।

সোহেল এর ছবি

কবিতার ছন্দ বুঝিনা, তবে অসাধারন লাগলো।

চরম উদাস এর ছবি

আমিও ছন্দ বুঝিনা। এইজন্যই লিখতে পারছি। ছন্দ জ্ঞান থাকলে লেখার সাহস হতো না খাইছে

ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

সুন্দর হইতেছে চক্ষু খুইল্যা গুট্টি খেলুম, গুট্টি...

চরম উদাস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সেইদিনের ঘটনায় তিনটা মূল্যবান জিনিস শিখেছিলাম। প্রথমত, যে কোন কিছুতে মাথা গলানোর আগে জেনে নেয়া উচিৎ মাথা বের করা যাবে কিনা। যেইটা আমি সেই ছোট বয়সে শিখে গেলেও আমেরিকা এখনো শিখতে পারেনি। দ্বিতীয়ত, আমাদের দেশের লোকেরা অনেক জ্ঞানী। আর তৃতীয়ত, কপাল ভালো আমি এই দেশে জন্মেছি, সৌদিতে না। সৌদিতে নাকি কল্লা পেতে দিলেই কেউ না কেউ এসে এক কোপে সেটা কেটে ফেলে। সেই সাথে সান্ত্বনাও দেয়, একটুও ব্যথা পাবেনা বলে।

এট্টুক বান্ধায়া রাখার মতো হইছে

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

চরম উদাস এর ছবি

আচ্ছা, আজকেই বান্ধায়ে রাখুম খাইছে

ধ্রুবনীল এর ছবি

চলুক!
'জগাখিচুড়ি' বরাবরের মতো দারুণ হয়েছে। আর পাখি/পাকি বালকের অংশটুকু পড়ে জোড়ে হেসে দিয়েছি। হাততালি

চরম উদাস এর ছবি

খালি কি শেষ অনশই পড়লেন? ইয়ে, মানে...

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

খুব ভালো লাগলো!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

চরম উদাস এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ কবি

পদ্মজা এর ছবি

হুমমম ...
জগাখিচুড়িই ভালো। অভিমানের গভীরতা বোঝে কয়জনা? অভিমানকে তাই ঠেলে দেই গভীরে, হাসিটাই থাকুক সবার সামনে।
অপেক্ষায় রইলাম। পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

চরম উদাস এর ছবি

ধন্যবাদ পড়ার জন্য। চেষ্টা করবো পরের পর্বের জন্য বেশী অপেক্ষা যেন করতে না হয়, এক মাসের মধ্যেই দিয়ে দিবো

তানিম এহসান এর ছবি

চমৎকার এগুচ্ছে প্রবাহ, গভীরতা বাড়ছে ক্রমশ, সেইসাথে বাড়ছে ব্যপ্তি। সাথে আছি হাসি

চরম উদাস এর ছবি

আরে, তানিম ভাই। অনেকদিন আপনার খোঁজ the search নাই। ঈদ পালনে ব্যস্ত ছিলেন মনে হয়।

নূপুরকান্তি এর ছবি

অসাধারণ লেখা।উপভোগ করছি প্রতিটি পর্ব।
ঈর্ষণীয় আপনার লেখার হাত।

চরম উদাস এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ নূপুরকান্তি। লোকজন খালি আমার হাতের দিকে নজর দেয় ইয়ে, মানে...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

রাগ-অনুরাগ বেশি মানাতো মনে হয়েছে। গল্পের বাকি অংশের সাথে কোন সম্পৃক্ততা নেই, জাস্ট মনে হয়েছিলো, তাই বললাম।

রাজীবের লেখা পড়তে গিয়ে একটা হাই তুলে স্কিপ করেছি, তবে জ্বরজারি চলতেছে, গভীর কোনকিছুই মাথায় ঢুকে না আপাতত, (এই জন্যেই দ্রোহী'দার ভুমিকম্প সিরিজের লাস্ট দুই পার্ট তুলে রেখেছি, পরে পড়বো বলে)।

ভালো কথা, কথায় যেন 'পড়েছিলো' না লিখে 'পরেছিলো' লিখেছেন মনে হলো... পোশাক-আশাক 'পরা' মানে 'পরিধান' করা ছাড়া যতদূর মনে পড়ছে আর সব পড়াই 'পড়া'। (বানান নিয়ে আর গিয়াঞ্জাম করলে মাইরধোর দিবেন মনে হয়, থাক কাজেই)।

বরাবরের মতই 'উদাস' আমার মন জয় করে নিচ্ছে। এই উপন্যাসের হিরো উদাস, তাই না? (কোলন মিটিমিটি হাসি)
উদাসের গল্প শুরু হবার পর থেকেই হাসছিলাম, কিন্তু 'জগাখিচুড়ি' পড়ে সেটা মিটিমিটি থেকে হাহাহাহা হয়ে গেল। দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

চরম উদাস এর ছবি

যাযাদি ( দেঁতো হাসি ), অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য। কিন্তু লেখা পড়ে হাই তুললেন ওঁয়া ওঁয়া
রাগ-অনুরাগ আসলেই সুন্দর শোনায় বেশি। বদলে দেব হয়তো।
পরেছিলো - পড়েছিলো এর কেলো ঠিক করে দিয়েছি। বানান চিপায় চুপায় অনেক ভুল আছে। এই অভ্রের যুগে বানান বেশী ভুল হয়া মানায় না। ধরা পরলেই (আই মিন পড়লেই লইজ্জা লাগে ) কান ধরে ঠিক করিয়ে দেবেন।
উদাস নায়ক না। উদাস আসলে ভিলেন (অ্যান্টি হিরু)। শেষ সিনে বোঝা যাবে। বিশাল মাইরপিট আছে শেষে। আনুর নায়িকাকে পাওয়ার জন্য উদাস অনেক কিছু করবে। শেষ সিনে নায়িকাকে আনুর হাতে তুলে দিয়ে আত্মহত্যা করবে দেঁতো হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

যাহ! গল্পের পুরাটাই বলে দিলেন? পুরাই দেখি শরৎবাবুর মেলোড্রামা... অ্যাঁ ইয়ে, আমি কিনা সিনেমা গল্পের ভিলেনদেরকে বরাবরই একটু বেশি ভালো পাই। দেঁতো হাসি কিন্তু 'যায়যায়দিন' দেখে নেত্র কোণায় বান এলো। মন খারাপ

[অটঃ অভ্রের নতুন ভার্শনের সাথেই অভ্রের স্পেল চেকার আছে। বেশ কাজের, আমি এমএস ওয়ার্ডে ঐটা একবার চালিয়ে নেই পোস্টের আগে। তবে 'পরা' আর 'পড়া'র মাঝের পার্থক্য ধরতে অত সহায়ক হবে না হয়তো।]

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

দ্যা রিডার এর ছবি

পড়তে দেরী হল ... কিন্তু ভাল লাগতে দেরী হয় নি । হাসি চলুক

চরম উদাস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

তারেক অণু এর ছবি
চরম উদাস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মুন  এর ছবি

হাসতে হাসতে শেষ .......৬৪ টা দন্ত বিকসিত করে হাসতে পারলে ভালো হতো...... গড়াগড়ি দিয়া হাসি দেঁতো হাসি
চলুক

চরম উদাস এর ছবি

ধন্যবাদ মুন

সপ্তর্ষি এর ছবি

পইড়া উদাস হইয়া গেলাম।আন্নের লেখা খুব ভালো পাই হাসি

চরম উদাস এর ছবি

ধন্যবাদ। উদাস থাকুন উদাস রাখুন খাইছে

যুমার এর ছবি

দেঁতো হাসি

চরম উদাস এর ছবি

দেঁতো হাসি

দিঘ্রাংচু এর ছবি

আপনার ছেড়ে যাওয়া হাঁটু স্কুলে আমিও পড়তাম, এরপর বিদেশী একটি ভাষার সাহিত্যের উপর দেশের স্বনামধন্য একটা বিদ্যাপীঠের স্নাতকতোত্তীর্ণের সনদপত্রটাও বাগিয়েছি। লেখালেখিটাই রুটি রুজি, কিন্তু আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে লেখালেখি বাদ দিয়ে কারওয়ান বাজারে ঝাঁকা মাথায় ঘুরি! এত ভাল লেখেন কেন? পুনর্মিলনীতে এসে কিছুটা পদধূলি দিয়া যান।

চরম উদাস এর ছবি

ধন্যবাদ দিঘ্রাংচু। দেশের বাইরে আছি, নাহলে অবশ্যই যেতাম। চতুর্দশ ব্যাচের অনেকেই যাবে।
কারওয়ান বাজারে ঝাঁকা মাথায় ঘুরার দায়িত্ব বরং আমাকে দিয়ে আপনি বরং এখানে কিছু লিখেন। লেখালেখিটাই যদি আপনার রুটি রুজি হয় তাহলে সচল পাঠকদের কেন বঞ্চিত করছেন আপনার লেখা পাঠ থেকে।

কল্যাণ এর ছবি

ওই মিয়া, কয়দিন ইট্টু টাইম্লি ঘুরান দিতে পারি নাই আর সেই ফাঁকে আপনি উধাও হইছেন। পোস্ট দিছেন ১৫ নভেম্বর, আর আজকা কয় তারিখ সেই খিয়াল আছে? মাথা গলানর আগে মনে ছিল না যে মাথা বাইর করতে দিমু না? এই বার বছর শেষ হওয়ার আগে আগে দুই পর্ব একলগে ছাড়েন কইলাম।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নীহার এর ছবি

ফেরা কই?

নীহার এর ছবি

চলুক

চরম উদাস এর ছবি

ও কি ! মাঝখানে যে আরও তিনটা লেখা দিলাম ডেথ ইজ বিউটিফুল, লাইফ সাক্স আর কোমল সাহিত্য মেশিন সেইগুলা চক্ষে দেখলেন না?? অ্যাঁ

কল্যাণ এর ছবি

ওই সব ছাড়েন, সাহিত্যিক কই????? পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

কল্যাণ এর ছবি

সাহিত্যিক কোতি? কোতি? কোতি?????? রেগে টং

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

চরম উদাস এর ছবি

ইয়ে, মানে...

মৃত্যুময় ঈষৎ(অফ্লাইন) এর ছবি

সময়ের ফাক পেয়ে এই পর্বও পড়ে ফেললাম!!! অসাধারণ লাগলো দাদা চলুক !!! আপনার প্রতিভা প্রসারিত হোক, সাহিত্যিক বাংলা সাহিত্য সমৃদ্ধ করুক এই শুভ কামনা সব সময়!!!

প্রায় দু'মাস হয়ে গেল ০৪ পর্ব পাচ্ছি না!! মাথায় রাইখেন কিন্তু বস!!! দেঁতো হাসি

চরম উদাস এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
ফেব্রুয়ারি এর প্রথম সপ্তাহ থেকে পরের পর্ব ছাড়বো। ঘষামাজা করছি আর গুছিয়ে নিচ্ছি যেন আবার এতো বড় গ্যাপ না পড়ে।

কল্যাণ এর ছবি

কয়টা ফেব্রুয়ারি গেলো সেই খেয়াল আছে? রেগে টং

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

চরম উদাস এর ছবি

ধুর মিয়া, এইসব পুরান পোস্ট টাইন্না তুইল্লা ভেজাল করতেছেন কেন? ইয়ে, মানে...
ফেব্রুয়ারি মাস বসাইছি, সন তো বসাই নাই। কুনু এক ফেব্রুয়ারিতেই পাবেন আলবৎ।

কল্যাণ এর ছবি

ধানাইপানাই ছাড়েন, লাইনে আসেন।

উপরে আপনার ২৫শে জানুয়ারি ২০১২ এর মন্তব্য:

ফেব্রুয়ারি এর প্রথম সপ্তাহ থেকে পরের পর্ব ছাড়বো। ঘষামাজা করছি আর গুছিয়ে নিচ্ছি যেন আবার এতো বড় গ্যাপ না পড়ে।

ইম্পলাই করে ২০১২এর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ।

এত ঘষামাজা আর আমাদের সহ্য হচ্ছে না। তাছাড়া বেশি ভালা ভালা না। এই শনিবারে একবার রিভাইজ দিয়ে বেশ বড় করে একখান পোস্ট ছাড়েন দেখি চরম দাদা।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অতিথি লেখক এর ছবি

কিচ্ছু বলার নেই, কিচ্ছু বলার জায়গা রাখেননি আপনি।
খুব ভালো।

--------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।