রামছাগলই বলা যেত। কিন্তু মুসলমান হয়ে জন্মেছি বলে আটকে গেলাম। রাম নিষিদ্ধ বা হারাম শব্দগুলোর একটি। তাই রামছাগল না বলে বড় ছাগল ব্যাবহার করা উচিৎ। কে বলেছেন? জনৈক অনেক বড় ছাগল বলেছেন -
বড় কিছু বুঝাতে অনেক শব্দের সাথে “রাম” শব্দটি যুক্ত করে বলে থাকে। যেমন: রামদা, রামছাগল ইত্যাদি। কিন্তু “রাম” শব্দটি দ্বারা মুলতঃ যবন, ম্রেচ্ছ, অস্পৃশ্য হিন্দুদের দেবতাকে বুঝানো হয়ে থাকে। তাই “রাম” শব্দটি পরিহার করে “বড়” শব্দ ব্যবহার করা উচিত। যেমন: বড় দা, বড় ছাগল ইত্যাদি।
ওখানে গিয়ে আরও শিখলাম -
১ বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড কথাটা হারাম কারণ এটা এসেছে ব্রহ্মার অণ্ড থেকে ( এ বিষয়ে শেয়াল ভায়ার অণ্ডপুরাণ কবিতাটি পড়তে পারেন)
২ মাংস না বলে গোশত বলতে হবে কারণ মাংস কথাটি এসেছে মায়ের অংশ থেকে (গো মাতার অংশ)
৩ ঝোল না বলে সুরুয়া বলতে হবে (কারণ ঠিক বুঝলাম না, কিন্তু সব ব্যাপারে প্রশ্ন তোলাও ঠিক না)
৪ লাউ না বলে কদু বলতে হবে - অনেকে কদুকে লাউ বলে থাকে। কিন্তু লাউ শব্দের খারাপ অর্থ আছে বিধায় কদুকে লাউ বলা মুসলমানদের উচিত নয়।
৫ কালিজিরা কে কালোজিরা বলতে হবে (কালির নাম থাকায়) ... ইত্যাদি ইত্যাদি
এবারের এসো নিজে করি ছাগলামি নিয়ে। কিভাবে রামছাগল থুক্কু বড় ছাগল হবেন সেই নিয়ে। আপনি যদি কচি বা মাঝারি ছাগল হয়ে থাকেন তবে পড়ে যান। জানা ও শেখার জন্য অনেক কিছুই পাবেন আমার এই লেখায়। যদি অলরেডি বড় ছাগল হয়ে থাকেন তাহলেও পড়ুন, কিভাবে আরও বড় হবেন জানার জন্য।
শুরুতেই আসুন ছাগল কাকে বলে জেনে নেই। ছাগল কথাটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হচ্ছে ছা-গোল। যেই ছা বা ছানা (সাধারণত মানুষের) সবসময় একই জায়গায় গোলগোল ঘুরে তাকে ছাগল বলে। সংজ্ঞা শুনেই বোঝা যায় বৈশিষ্ট্য কি। মাথায় ঘিলু থাকবে কিন্তু তার প্রয়োগ থাকবে না। খিড়কি থাকতে পারে ছোট একটা কিন্তু কোন দরজা জানালা থাকবে না। খোলা জানালা দিয়ে কখন কি ঢুকে যায়। এক কথায় যেই ছা একই অন্ধকূপের ভেতর সারাজীবন গোলগোল ঘুরিতে থাকে এবং সকলকে মিষ্টভাষায় অথবা বলপ্রয়োগে সেই কূপে টেনে নামানো পবিত্র দায়িত্ব মনে করে তাহাকেই ছাগল বলে। এর সাথে ধর্মের তেমন কোন সম্পর্ক না থাকলেও ধর্মান্ধতার বিশেষ সম্পর্ক আছে।
হালাল হারাম বাছাই
মৌলিক চাহিদার প্রথমটি অন্ন বলে, সেটা দিয়েই শুরু করি। অনেকের ধারণা বড় ছাগল হতে হলে শুধু ঘাস বা কাঁঠালপাতা খেতে হবে। এটা ঠিক না। তবে হালাল হারাম এর ব্যাপারগুলো খেয়াল রাখতে হবে। খাবারের ব্যাপার তো জানাই আছে। মুরগী হালাল হতে হবে, তবে সাথে একটু আধটু মদ্যপান চলতে পারে। ভ্রমণের সময় এরকমই অভিজ্ঞতা হয়েছে। জনৈক ছোট ছাগল বিমানবালার সাথে ঝগড়া লাগিয়ে দিলেন হালাল খাবার নিয়ে, একটু পরে আবার বিয়ারে হালকা চুমুক দিতে লাগলেন।
তবে বড় ছাগল হতে হলে আপনাকে আরও উপরে উঠতে হবে। খাবার ফেলে বাকি সব বস্তুতেও হারাম হালাল খুঁজতে হবে। যেমন আমাদের দেশের সকল জিলা হালাল নয়। বস্তুত বেশিরভাগই হারাম। যেমন নারায়ণগঞ্জ ( লক্ষ্মীনারায়ণ ঠাকুর এর নামানুসারে), গোপালগঞ্জ (অস্পৃশ্য হিন্দুদের নাম “গোপাল” থেকে), ঠাকুরগাঁও (ঠাকুর থেকে), নরসিংদী (নরসিংহ থেকে), ব্রাহ্মণবাড়িয়া (আবার জিগায়!), লক্ষ্মীপুর (আবারও জিগায়!), কক্সবাজার ( ম্লেচ্ছ ব্রিটিশ নৌ-ক্যাপ্টেন “হিরাম কক্স” থেকে), কিশোরগঞ্জ (ব্রজকিশোর বা নন্দকিশোর প্রামাণিকের নামানুসারে)। বিস্তারিত জানতে এইখানে লিস্টি দেখুন । তারপর আন্দোলনে নেমে পড়ুন এইগুলার হালাল নামকরণের জন্য।
হারাম অনুষ্ঠান কোন গুলো এটা নিশ্চয়ই জানা আছে। নববর্ষ, ভ্যালেন্টাইন ডে ইত্যাদি হারাম লিস্টে সবার উপরে। প্রথমটা হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি আরেকটা পশ্চিমা। চাইলে ইলিশকেও হারাম বলে ঘোষণা দিতে পারেন। মানুষ যেখানে খেতে পায়না সেইখানে তিন হাজার টাকা জোড়ায় ইলিশ কেনা ভণ্ডামি। তবে দুই লাখ টাকা দিয়ে পাড়ার সবাইকে প্রতিযোগিতায় হারিয়ে দিয়ে কেনা তাগড়া কোরবানির গরুটি হালাল বটে।
বিখ্যাত মানুষজন থেকেও বাছাই করতে হবে হালাল হারাম। রবীন্দ্রনাথ হারাম কবি, নজরুল হালাল কবি এইটা তো একটা কচি ছাগলও জানে। বড় ছাগল হতে হলে আপনাকে আরও উপরে উঠতে হবে। হারাম লেখকদের শীর্ষে রাখতে হবে জাফর ইকবাল এবং হুমায়ুন আজাদ কে। আবার কান টানলে মাথা আসে মনে করে জাফর ইকবালকে টানার সাথে সাথে হুমায়ূন আহমেদকেও ফট করে টানাটানি শুরু করে দিবেন না। হুমায়ূন আহমেদকে ঠিক হারাম লেখক ক্যাটাগরিতে ফেলা যাবেনা। তিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক চমৎকার উপন্যাস লিখেছেন, সিনেমা বানিয়েছেন এটা আপনার মনকষ্টের কারণ হতে পারে। তবে সেইসাথে এটাও খেয়াল রাখতে হবে উনি কখনোই কারো মনে খুব বেশী কষ্ট দেননি। ছোটবেলা থেকে বাংলা, হিন্দি ছবিতে দেখে এসেছি একেবারে সময়মত ঘরের বাতিটি নিভে যেতে। নায়ক - নায়িকা ব্যাপক কচলাকচলি করছে, জামাকাপড় আলুথালু, উত্তেজনা তুঙ্গে। শেষ মুহূর্তে শালার ঘরের বাতি নিভে যায় অথবা নায়ক - নায়িকা খেতার নিচে ঢুকে পড়ে। পরে বুঝেছি অশ্লীলতা এড়াতে সময়মত খেতার নিচে ঢুকে পড়াটা সভ্য মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরী। হুমায়ূন আহমেদ সবসময়ই জনমানুষের লেখক। সপরিবারে পাঠযোগ্য সকল মনের মানুষের জন্য লেখা মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাসে তাই কোন শিশুর ধর্ষণের কথা আসতে পারেনা। পিতার সামনে কন্যার স্তন ছিঁড়ে নেয়ার কথা আসতে পারেনা। পাড়ার হুজুরের মুক্তি জবাই এর বর্ণনা আসতে পারেনা। ভাষা সৈনিক গোলাম আজমের কথা আসতে পারেনা। রাজাকার আলবদর আলশামস এর কথা আসার আগেই লাইট অফ বা খেতার নিচে ঢুকে যাওয়া। এতো কথা বলার অর্থ হচ্ছে, আপনাকে বড় ছাগল হতে হলে হালাল লেখকদের ভালোভাবে চিনতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লিখলেই কেউ হারাম হয়ে যায়না, বরং সুন্দর ও সুশীল-ভাবে লিখতে পারলে এরচেয়ে হালাল আর কিছুই হতে পারেনা।
যাইহোক আপনার কচি মস্তিষ্কে যেন বেশী চাপ না পড়ে তাই নিচে একটা হালাল হারাম এর ছোট লিস্টি দিয়ে দিচ্ছি। চোখ বন্ধ করে মুখস্থ করে ফেলেন
পোশাকআশাক
সবসময় গুটলীযুক্ত, গোল, কোণাবন্ধ, নিসফুস সাক্ব ক্বমীছ পরতে হবে। মানে কি আমাকে জিজ্ঞেস করে লাভ নেই। তবে পালন করতে হবে এইটা জানি। অনেকক্ষণ মাথা চুলকে বুঝলাম ক্বমীছ মানে কামিজ। সালওয়ার কামিজের কামিজ। তারপরে বিস্তারিত পড়াশোনা করে বুঝলাম গুটলীযুক্ত, গোল, কোণাবন্ধ নিসফুস সাক্ব ক্বমীছ হচ্ছে এই - "যার গেরেবান আছে যা বন্ধ করার জন্য কাপড়ের গুটলী লাগানো হয় যা নিছফুস সাক্ব। অর্থাৎ হাঁটু ও পায়ের গিরার মধ্যবর্তী স্থান পর্যন্ত প্রলম্বিত। গোল যা কোণা ফাড়া নয়, যার আস্তিন আছে, যা অতি সহজেই মানুষের সতর ও ইজ্জত আবরু ঢাকে " । আরও জানলাম - শামায়িলুত তিরমিযীর বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘শরহুল মানাবী মিছরী’ কিতাবে উল্লেখ আছে, “ক্বমীছ সিলাইযুক্ত হবে, যার দুটি আস্তিন থাকবে। কোণা ফাড়া হবে না তথা গোল হবে।” (অনুরূপ মিরকাত শরীফ-এও আছে)।
হে হে ভেবেছিলেন বড় ছাগল হওয়া এতই সহজ? ছাগল কি আর দিগম্বর থাকে? সুতরাং বড় ছাগল হতে হলে আপনাকেও গুটলীযুক্ত, গোল, কোণাবন্ধ, নিসফুস সাক্ব ক্বমীছ" পরতে হবে। সতর্ক হতে হবে আপনার স্ত্রী এবং কন্যার পোশাকের ব্যাপারেও। বিশেষত শিশু কন্যাকে ভালো করে পুটুলিতে মুড়িয়ে রাখতে হবে। কাপড়ের বদলে এলুমিনিয়াম ফয়েলেও মুড়িয়ে রাখতে পারেন। সেইসাথে একটা ছবি তুলে ফেসবুকে তুলে দিতে পারেন, এই ছোট্ট বাবুটির জন্য কয়টি লাইক বলে। যেমন এই ছবিটি দেখা যাচ্ছে অহরহ আজকাল।
এসো নিজে করি সিরিজ যেহেতু তাই ভাবলাম কিছু কাজ নিজে করে দেখাই এবারো। বলেন তো দেখি নিচের এই লাজুক পর্দানিশীল কিউট ছোট্ট চরম উদাস বাবুটির জন্য কয়টি লাইক পেতে আমি। মিনিমাম এক হাজার লাইক না পেলে কিন্তু মনে বড় কষ্ট পাবো, বুঝবো আমার কিউট চেহারা পছন্দ হয়নি আপনাদের।
টিপ পরা হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি। আজকাল ফেসবুকে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে এই ইতিহাস -
বাংলাদেশের অনেক মুসলিম মেয়ে টিপ পরতে ভালোবাসে। কিন্তূ আপনি জানেন কি,টিপ যে একটি বিশেষ ধর্মের পরিচয় ও সংস্কৃতির অংশ, শুধুমাত্র তা কিন্তূ নয়। ইসলামে টিপের একটি ইতিহাস আছে। হযরত ইব্রাহিম(আ) কে হত্যা করার জন্য নমরুদ একটি ১৮ মাইলের বিশাল অগ্নিকুণ্ড নির্মাণ করে। সেটি এত বড় ও ভয়াবহ উত্তপ্ত ছিল যে, কোন মানুষের পক্ষে ইব্রাহিমকে সেখানে নিয়ে নিক্ষেপ করা সম্ভব হল না। অবশেষে সে একটি যন্ত্র নির্মাণ করল যার সাহায্যে দূর থেকেই ইব্রাহিমকে অগ্নিকুণ্ডের ভিতরে নিক্ষেপ করা যাবে। কিন্তূ ফেরেশতারা সেটাতে ভর করে থাকায় যন্ত্রটি কাজ করছিল না। শয়তান এসে নমরুদকে বুদ্ধি দিল যে, কয়েকজন বেশ্যাকে এনে যদি যন্ত্রটিকে স্পর্শ করানো যায় তাহলে সেটা কাজ করবে। নমরুদ তাই করল এবং দেখা গেল যে সেটি কাজ করছে। নমরুদ ওই বেশ্যাদের কপালে চিহ্ন দিয়ে রাখল এই ভেবে যে, এদেরকে পরে দরকার হতে পারে। সেই থেকে কপালে টিপ পরার প্রচলন হল। কিন্তূ দুঃখ এই যে, যেসব মুসলিম নারী টিপ পরে, তারা এই ঘটনা জানেনা। জেনেও যদি কেউ পরে তাহলে সেটা তার দুর্ভাগ্য।
কি বুঝলেন? টিপ পরা হারাম। তবে টিপ দেয়া যেতে পারে, এখন থেকে চান্স পেলেই টিপ না পরে দিয়ে দিবেন। পাবলিকের প্যাঁদানি খেলে অবশ্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নহে। তবে একদিক থেকে চিন্তা করলে লেখক কিন্তু খারাপ কথা বলেননি। দেশের সকল বেশ্যাদের ধরে যদি এরকম টিপ পরিয়ে দেয়া হয় তাহলে মন্দ হয়না। দেহ পসারিণীদের কথা বলছি না, বেশ্যাদের মধ্যে দেহ বিক্রি করা বেশ্যারাই সবচেয়ে সম্মানের যোগ্য। রাজনৈতিক বেশ্যা, ধর্ম বেশ্যা, সাহিত্য বেশ্যা, বুদ্ধিজীবী বেশ্যাদের কথা বলছি। ধরে ধরে একটা করে টিপ পরিয়ে আলাদা করে রাখলে আমরা সবাই সহজে চিনতে পারতাম।
বৈজ্ঞানিক ছাগল
আমরা সাধারণত কেউ মূর্খ বা বোকা হলে তাকে ছাগল বা বলদ বলি। কিন্তু এটা ভুল। বিশেষ করে বড় ছাগল কখনোই মূর্খ নয়। বড় ছাগল হতে হলে আপনাকে জ্ঞানে বিজ্ঞানে হতে হবে উন্নত। সেইসাথে জানতে হবে মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদান। এককালে জ্ঞানার্জনের জন্য সুদূর চীনদেশে যেতে হতো। এখন ফেসবুকে লগইন করে বসে থাকলেই হবে। জ্ঞান এমনিতেই চলে আসবে।
আমি বহুদিন থেকেই বলে আসছি স্কুল কলেজ লেভেলে আলাদা করে ধর্মশিক্ষা বিষয় রাখার প্রয়োজন নেই। যেহেতু ধর্ম আর বিজ্ঞান একে অপরের সাথে লাইলি-মজনু, সিরাজ-সত্যপীর, সাহিত্য-দলছুট, ব্যাকটেরিয়া-অনার্য্য, ক্লিনটন-মনিকা, ইউনুস-হিলারি অথবা বগল-চপ এর মতো করে মিশে আছে। সুতরাং দুটোকে মিলিয়ে কিছু হাইব্রিড সাবজেক্ট ম্যাট্রিক ইন্টারে বাধ্যতামূলক করা দরকার। যেমন -
১ ইসলামী পদার্থবিজ্ঞান -
এখানে নিউটন সহ বাকিসব চোর বিজ্ঞানীদের বদলে আসল মুসলিম বিজ্ঞানীদের অবদানের কথা বলা হবে। নিউটন আইনস্টাইন সহ অনেক বড় বড় বিজ্ঞানীর অনেক বড় বড় আবিষ্কারই আসলে মৌলিক নয়। যেমন এখানে চোর নিউটনের তিন সূত্রের আসল আবিষ্কারকদের কথা বলা হয়েছে।
আমি শুধু তৃতীয় সূত্রটির কথা তুলে ধরলাম - গতির তৃতীয় সূত্রে বলা হয়েছে যে,“প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।” অথচ হিবাতুল্লাহ আবুল বারাকাত আল বাগদাদী (১০৮০-১১৬৫) মহাচোর নিউটনের ৫৫০ বছর পূর্বেই “আল মুকতাবার ফিল হিকমা” (The Considered in Wisdom) কিতাবে উল্লেখ করেন যে, “কুস্তির সময় একে অন্যের উপর বল প্রয়োগ করে (ঘুসি দেয়) । যদি দু’জনের একজন (ঘুসির ফলে) পিছু হটে যায় তার মানে এই নয় যে, দ্বিতীয় ব্যক্তির বলের (দ্বিতীয় বলটির) অস্তিত্ব নেই বরং দ্বিতীয় বল ব্যতীত প্রথম বলটি প্রভাব বিস্তার করতে পারে না ।” মুসলিম বিজ্ঞানী হিবাতুল্লাহ আবুল বারাকাত আল বাগদাদী, মানতেকের ইমাম ফখরু উদ্দীন রাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং ইবনে হাইছাম, উনাদের প্রত্যেকের বক্তব্যের দ্বারা স্পষ্টতঃ প্রমাণিত হয় যে, মহাচোর নিউটন তৃতীয় সূত্রটিও মুসলমানদের থেকে চুরি করেছে।
২ সহিহ গণিত
পারদর্শী হতে হবে গণিতেও। তাহলেই বুঝতে পারবেন এরকম ছোটখাটো অনেক গাণিতিক কুদরত আশেপাশে ছড়িয়ে আছে।
বলতে গেলে মহাভারত হয়ে যাবে। এরকম শতশত গাণিতিক কুদরতের কথা আমরা প্রতিনিয়তই কারো না কারো কাছে শুনতে পাই। বাইবেলের গাণিতিক ব্যাপারস্যাপার নিয়েও এরকম Biblical Mathematics সহ নানা বই আছে রীতিমতো।
৩ হালাল জীববিজ্ঞান
শুরু করতে হবে ডারউইন কে ইয়োগা মেরে। বিবর্তন একটা ভ্রান্ত ধারণা এটা ইতোমধ্যে ফেসবুকের পাতায় পাতায় প্রমাণিত।
বিস্তারিত এখানে দেখুন। মানুষ বাঁদর থেকে আসেনি, আদম থেকে এসেছে। জানতে আদমচরিত পড়ুন। এখানে বিশিষ্ট লেখক ও ঐতিহাসিক মুখফোড় আদমের জীবন নিয়ে ঐতিহাসিক গল্প লিখেছেন। হুমায়ূন আহমেদের "দেয়াল" এর মতো আদমচরিতেও ইতিহাসের বিন্দুমাত্র বিচ্যুতি হয়নি।
একইভাবে আরও এরকম আছে শরীয়তী রসায়ন, দারুল ভূগোল, মুনাফা অর্থনীতি (সুদ না কোনভাবেই), জিহাদি পৌরনীতি ইত্যাদি ইত্যাদি। যই হোক, আপনি অন্য ধর্মের হলে মন খারাপের কিছু নেই। আপনার জন্য Biblical Mathematics এর মতো এরকম ধর্ম-বিজ্ঞানের হাইব্রিড সাবজেক্ট আছে। যেমন বৈদিক রসায়ন, ব্রহ্ম গণিত, মেরী ফিজিক্স, এমনকি চাইলে কামসূত্র রসায়ন ও। পরে কখনো এইগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করবো।
দেশবিদেশের ছাগলেরা
দুনিয়া ছাগলময়। সকল দেশী লোক যেমন ছাগল নয়, তেমনি সকল ছাগলরাও দেশী নয়। আমার দেশের ছাগল সম্প্রদায়, ভারতের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বসে পাকিস্তানকে ভালোবেসে ফেলে। ভারতের ছাগল সম্প্রদায় রকে বসে ভারত বনধ এর তামাশা দেখে মিটিমিটি হাসে। সুযোগ মতো এসে ফোঁড়ন কেটে যায়, "বাংলাদেশিরা অকৃতজ্ঞ", "নিজেদের গরুচোর সামলাও" আগে ইত্যাদি ইত্যাদি বলে। আমেরিকার ছাগল সম্প্রদায় সকল ইস্টকেই মিডল ইস্ট ভেবে সহজ সল্যুশন দেয়, Nuke Them. আফগানে নিতান্তই খেয়ালের বশে এক ধাক্কায় ১৬ নারী শিশু হত্যাকারী বীর ছাগলের খবর পড়ে আমেরিকান ছাগল মন্তব্য করে, Bring our soldiers home. Then carpet bomb the sharthole nation in extiction. আবার অন্যদিকে আলুতে হিটলারের খবর পড়ে বগল বাজায় দেশী ছাগল এই বলে -"তিনি সর্ব কালের সেরা বীর রাষ্ট্র নায়ক ।তার উচিত ছিল শত্রু নিধন শেষ করা ।তাহলে পৃথিবী আজ অন্য রকম হত ।তোমায় সালাম হে বীর।"
মাঝেমাঝে ইয়াহু নিউজ এর নিচের মন্তব্যগুলো পড়ে মনে হয়, ইয়াহু নিউজ এ মন্তব্যকারী আর আলুর মন্তব্যকারীরা একই লোক। অথবা হয়তো দুনিয়াতে আসলে আসল ছাগলের সংখ্যাই বেশী। সেই ছাগল দেশীই হোক আর বিদেশীই হোক উপরের চামড়ার রঙ শুধু ভিন্ন, ম্যাৎকার গুলো একই রকম। এককালে বাথরুমের দেয়ালে লিখে লিখে হাত পাকিয়ে এখন ব্লগ আর পত্রিকার দেয়ালে লিখে।
আমরাদেরকে ছোটবেলা থেকে ইহুদীদের ঘৃণা করতে শিখানো হয়েছে, কিশোরবেলায় আমেরিকাকে ঘৃণা করতে শিখানো হয়েছে। (পাকিস্তানকে ঘৃণা করতে অবশ্য তেমন কেউ শিখায়ে দেয় নাই, রক্তের টানে কেউ কেউ হয়তো এমনি এমনিই শিখে গেছে)। এক ব্যাপারে দেশী ছাগল আর আমেরিকার ছাগলের ব্যাপক মিল। আমেরিকার কাছে সকল ইস্ট মিডিল ইস্ট। আমাদের কাছে পশ্চিম মানেই আমেরিকা। যে কোন জিনিসকে হালাল করার জন্য পশ্চিমা আর ইহুদী ষড়যন্ত্রের চেয়ে কার্যকরী আর কোন শব্দ নেই। আর অন্যদিকে আমেরিকার ছাগলদের জন্য যেকোনো কিছু হালাল করার জন্য ইস্ট এর টেরর প্রোটেকশন এর চেয়ে ভালো আর কিছু হয়না। একদিক থেকে আমরা নিরাপদে আছি। আমেরিকার ছাগলদের ভূগোল জ্ঞান আমাদের চেয়ে অনেক কম। আমার দেশের যে কোন একটা কচি ছাগলকে একটা বোমা দিয়া গ্লোবের মধ্যে আমেরিকারে উড়ায়ে দিতে বললে এক্কেবারে জায়গামত বোমা ফেলে পুরা আমেরিকা, কানাডা সহ উড়ায়ে দিতে পারবে। আমেরিকান ছাগলের হাতে বোমা দিয়ে বাংলাদেশ উড়াইতে বললে একবার হয়তো অস্ট্রেলিয়া উড়ায়ে দিবে, একবার জাপান উড়ায়ে দিবে। বাংলাদেশ তো দূরের কথা, আস্ত উপমহাদেশ খুঁজে পায় কিনা তাই সন্দেহ।
মসজিদে আমাদের সবারই কম বেশী জুতা চুরি যাবার অভিজ্ঞতা আছে। আমি একবার বের হয়ে আমার জুতা নাই দেখে পরে একটু ঘুরে ফিরে পছন্দমতো একটা জুতা পরে চলে এসেছিলাম। যাইহোক, এই জুতাচুরি যে সংঘবদ্ধ ইহুদী নেটওয়ার্ক এর কাজ সেটা এতদিনে জানলাম-
বেশ কয়েক বছর আগে ফেনীতে এক জুতা চোর ধরা পড়ে। দেখতে বেশ ভদ্র ও শিক্ষিত। জিজ্ঞাসা করা হলো, তোমাকে তো দেখে মনে হচ্ছে তুমি শিক্ষিত। তাহলে তুমি জুতা চুরি করো কেনো? জুতা চোর বললো, আমি এক এনজিও (NGO) তে চাকরি করি। আমার মতো আরোও অনেকে রয়েছে। আমাদের কাজ দেয়া হয়, মসজিদ, মাদরাসা ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে জুতা চুরি করতে। বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা পাই। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যুগেও ইহুদীরা এ রকম কাজ করতো। যাতে মানুষ মসজিদে, ওয়াজ মাহফিলে না যায়। মসজিদে জুতা হারিয়ে গেলে মানুষ বলবে নামায পড়তে আসলাম আল্লাহ পাক তিনি দেখলেন না। নাঊযুবিল্লাহ! ইহুদীরা চায়- মুসলমানগণ আল্লাহ পাক উনাকে দোষ দিয়ে কাফির হয়ে যাক। নাঊযুবিল্লাহ!
যাইহোক, মোদ্দা কথা হচ্ছে বড় ছাগল হতে গেলে আপনাকে এইসব বিদেশী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ওয়াকিবহাল ও সদা সচেতন থাকতে হবে।
সেইসাথে বড় ছাগল হতে হলে আপনাকে ব্রেক মারা বন্ধ করতে হবে। মানে সহজ। প্রচলিত কৌতুক দিয়ে বুঝিয়ে বলি। ছাত্রকে একই বস্তু কিন্তু স্থানভেদে নাম ভিন্ন হয় এমন একটি জিনিসের উদাহরণ দিতে বলা হয়েছে। ফটকা ছাত্র বলে, মাথার উপর থাকলে চুল, চোখের উপর ভুরু, ঠোঁটের উপর গোঁফ, চিবুকে দাড়ি। এই পর্যন্ত আসা মাত্র শিক্ষক চেঁচিয়ে উঠেছে, ওরে থাম থাম, ব্রেক মার, আর নিচে নামিসনে। সুতরাং বড় ছাগল হতে গেলে আপনাকে এইরকম ব্রেক না মেরে নিচে নামতে হবে। সীমান্তে ভারতের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে করতে একসময় পাকিস্তানকে ভালোবেসে ফেলতে হবে। আমেরিকার পুঁজিবাদকে কে ঘৃণা করতে করতে একসময় হিটলারকে ভালোবেসে ফেলতে হবে। বুশ কে অপছন্দ করতে করতে লাদেনের প্রেমে পড়ে যেতে হবে। ইসরাইলের হারামিপনা দেখতে দেখতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদী গণহত্যায় বগল বাজাতে হবে। দুই নেত্রীর কাণ্ডে অসহ্য হয়ে এরশাদ কে ভালবেসে ফেলতে হবে। ছাত্রলীগের হারামিপনার প্রতিবাদ করতে সৎ লোকের শাসন চাই বলে জামাতের পতাকাতলে চলে যেতে হবে। অনেক বলদরা আপনাকে বলতে পারে, শত্রুর শত্রু সবসময় বন্ধু হয়না, অনেক সময় আরও বড় শত্রু হয়। কান দিবেন না। একেবারে কোন বেরেক না মেরে এগিয়ে চলুন।
ছাগল যখন বাঘ
বড় ছাগল হতে হলে নিয়মিত তারেক মনওয়ার এর ওয়াজ শুনতে হবে।
মন উদাস হলেই আমি শুনি। ব্যাটা বিশাল জ্ঞানের কথা বলেছে - শক্তিশালী বাঘ বনে লুকায়ে থাকে, লোকালয়ে আসলে মানুষ পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারে। নিরীহ ছাগল মাথা উঁচু করে লোকালয়ে থাকে। সবাই জানে তার মালিক আছে। কেউ তার ক্ষতি করার আগে দুইবার ভাববে।
সুতরাং অস্তিত্বের কারণে বাঘ না হয়ে ছাগল হওয়াই উত্তম। তবে ছাগল হয়েছেন বলে মন খারাপের কিছু নেই। সঠিক সময় ও সুযোগ মত হয়ে উঠুন বাঘ। ঠিক যেমন করে বাঘ হয়েছিলেন কিছুদিন আগে সাতক্ষীরায় । কোন বেচাল দেখলেই উচ্চ কণ্ঠে সবাইকে ডাক দিন, ধর্ম অবমাননাকারীদের বিচারের জন্য , ঠিক এমন করে ।
আমাদের এই লোকে লোকারণ্য ঢাকা শহরেই কিছুদিন আগে কিছু বীর তরুণ পথচলতি এক তরুণীর পাজামা টেনে নামিয়ে দিয়েছে সবার সামনেই। চিৎকার আর কান্নায় কেউ তেমন এগিয়ে আসেনি। না আসারই কথা। মেয়েটি তো কোন প্রেরিত মানুষ ছিলোনা। সুতরাং নিশ্চিন্তে যার খুশী তার পাজামা ধরে টানুন। কেউ কিছু বলবে না। শুধু ধর্ম বা কোন প্রেরিত পুরুষ এর পাজামায় কেউ টান দিলে গর্জে উঠুন, চোখের নিমিষে দেখবেন আপনার পাশে শতসহস্র প্রতিবাদী মানুষ। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে চোখের নিমিষে তৈরি করে ফেলবে আরেকটি সাতক্ষীরা।
শেষকথা
আমার বাবার একটাই ভাই ছিল। বাবা ও বড় চাচা দুজনেই মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন। বাবা এসএসসি এর পর বাংলা মাধ্যমে চলে আসেন, সেইসাথে গ্রাম থেকে মফস্বল শহরে। তারপর ঢাকায়। চাচার মৃত্যু হয় আমার জন্মের আগে। তিন চাচাতভাইয়ের একজন আমাদের সাথে বড় হলেও অন্য দুজন রয়ে যায় গ্রামেই। তাদের পড়াশোনার শুরু আর শেষ মাদ্রাসাতেই। তাদের পুত্রকন্যাদেরও তাই। কালক্রমে একজন হয়ে যায় ছোটখাটো পীর। আশেপাশের আরও কয়েক গ্রাম থেকে তার কাছে পানিপড়া নিতে আসে লোকজন এখনো। জোর করেও তাঁকে ঢাকায় এনে রাখা যায় না। ঢাকার রাস্তায় শুধু পাপ, চোখ খুললেই শয়তানের বাক্স টেলিভিশন। একবার আব্বার শরীর খারাপ শুনে তাবিজ দিতে ঢাকা আসলেন। আব্বা আরবি ভালোই জানেন। তাবিজ খুঁজে তাকে যে আয়াত লেখা আছে তার মানে জানতে চাইলেন। তিনি উত্তর দিতে ব্যর্থ হলে আব্বা শুধু ঠাণ্ডা গলায় বললেন, এইসব ভণ্ডামি আমার সামনে করলে চড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিবো। আমি মাঝেমাঝে ভাবি আমি যদি আজকে আব্বার ঘরে না জন্মে চাচার ঘরে জন্মাতাম তবে এখন কোথায় থাকতাম, কি করতাম? মনওয়ার হারামজাদার ওয়াজ শুনে চোখের পানিতে বুক ভাসাতাম, নাকি নিজেই আরেকজন মনওয়ার হতাম।
আমাদের দেশে দুটি পথ সুস্পষ্ট ভাবে ভাগ হয়ে যাচ্ছে। বয়স আরও কম ছিল যখন তখন স্বপ্ন দেখতাম পথ দুটি একদিন মিলে যাবে। এখন বুঝি সেটা সম্ভব না এই জনমে অন্তত। লেদার রেক্লাইনার এ হেলান দিয়ে এসির বাতাসে বসে আইপ্যাড এর জানালা দিয়ে তাকিয়ে দিনকে দিন বরং পথ দুটির আলাদা হয়ে যাওয়া দেখি। ভাবি আমার কি আসে যায়। আমি জনপ্রিয় ব্লগার। এই পোস্ট দেয়া মাত্র কমেন্টের সংখ্যা শত ছাড়িয়ে যাবে, লাইক এর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যাবে। আমি কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে চমৎকার লিখেছেন, চরম লেখা এই জাতীয় মন্তব্য পড়তে পড়তে আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবো। দেশের প্রতি আমার দায়িত্ব পালন এখানেই শেষ। আর পৃথিবীর অন্য কোনায় বসে মনওয়ার এর ওয়াজ শুনে হাজার হাজার বড় বড় ছাগল তৈরি হবে প্রতিদিন। লক্ষ লক্ষ ছাগল কেঁদে বুক ভাসাবে ধর্ম অবমাননার জন্য, লক্ষ শান দেবে তরবারিতে সঠিক সময় ও সুযোগের অপেক্ষায়। যার মধ্যে হয়তো আমার ফেলে আসা চাচাতো ভাই আর তার সন্তানেরাও আছে।
[ ১ অকুতোভয় বিপ্লবী আর তার বন্ধু কিঙ্কু কে ধন্যবাদ "এই ছোট্ট বাবুটির জন্য কয়টি লাইক" এর আইডিয়ার জন্য। সেইসাথে অভিমানী অপছন্দনীয়কে কষে মাইনাস, সবুজ বাংলার এক গাদা লিঙ্ক সরবরাহ করে আমার সর্বনাশ করার জন্য। সচল ফেলে এখন দিনরাত আমি ওখানেই পড়ে থাকি নেকীর আশায়।
২ লেখাতে যেই অংশ গুলো অন্যের লেখা থেকে তুলে আনা, সেখানের বানানগুলো ঠিক করা হয়নি।]
মন্তব্য
জি, পড়েছি। এজন্যই মনেহয়েছে ভাল কোন মউলানার সাথে আলোচনা করে লিখলে লেখাটা অন্যরকম হোত। আমার জ্ঞান সীমিত। আমি এ নিয়ে কোন তর্কে যেতে চাচ্ছিনা।
উদাস ভাই, ধর্ম নিয়ে যতবার তর্কে গেছি, শেষ পর্যন্ত একটা জবাবই শুনতে পেয়েছি, 'আমার জ্ঞান সীমিত', কথাটা শুনলেই এখন মেজাজ খারাপ হয়।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ঠিক বলেচেন
ঠিক বলেছেন
প্রশ্ন-
চরম উদাসদা, মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে জানা আছে কারো সঠিকভাবে?
এই শিক্ষাব্যবস্থা কি সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থার মতই নাকি শুধু ধর্মীয় শিক্ষা ?
যারা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে তাদের কর্মক্ষেত্র কি হবে ভবিষ্যতে?
যদি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা গতানুগতিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকে আলাদা হয়ে শুধু ধর্মীয় শিক্ষাই পেয়ে থাকে তাহলে তো তাদের মানসিকতার সাথে বাকিদের মানসিকতার পার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক? সমাজে এই ধরনের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু?
আমি সেইন্টমার্টিন দ্বীপে গিয়েও দেখলাম, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের থেকে মাদ্রাসা বেশি এবং তাদের অবস্থাও সরকারী বিদ্যালয়ের থেকে বহুগুনে ভালো !!!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
মাদ্রাসা শিক্ষা প্রধানত দুই ধরণের। আলিয়া মাদ্রাসা ও এবতেদায়ী মাদ্রাসায়।আলিয়া মাদ্রাসায় বাংলা আর ইংরেজি ২০০ নম্বর কম পড়ানো হয় সাধারণ বাংলা শিক্ষা মাধ্যম থেকে। আলিয়া মাদ্রাসায় যারা পড়ে তারা চাইলে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রথাগত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে পারে। সাধারণত জামায়াতী ইসলামীর লোকজন এই সব মাদ্রাসায় বেশি পাবেন। কারণ জামায়াতীরা এসব বৈষয়িক ব্যাপারে খুবই সচেতন। এই জন্য দেখবেন জামাতের অনেকেই তথাকথিত উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত। ওরা বুঝে গেছে দুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে। যখন যেটা দরকার হয় আর কি। এ কারণে জামায়াতের এরা (বিশেষ করে নব্য জামায়াত) দেখবেন কথার মাঝখানে ইংরেজি বুলি ছাড়ে যাতে মানুষ জন ইম্প্রেসড হয়। এরা বেশিরভাগ হয় বড় ভণ্ড
আর এবতেদায়ী অথবা কওমী মাদ্রাসা হল ধর্মান্ধ পশু তৈরি করার পাঠাগার। এরাই শেষ পর্যন্ত তথাকথিত জেহাদ , উগ্রতার ধারক বাহক হয়। বাংলাদেশে এগুলি তৈরির পিছনে তাবলীগ জামাত, চরমোনাই পীর এদের অবদান উল্লেখযোগ্য। আর এই মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত অংশ টুকুই অনুতপাদনশীল জনগোষ্ঠিতে রুপান্তরিত হয়। এবতেদায়ী মাদ্রাসায় শুধু কুরআন হাফেয বানানো হয় আর দেওবন্ধী কিতাব পড়ানো হয়। এদের বেশিরভাগ হয় ধর্মোন্মাদ।
অসংখ্য ধন্যবাদ, বিস্তারিত এতোটা জানা ছিলোনা।
একই ভাবে আমার মনে হয়, শুধু মাদ্রাসাই নয়, যেকোনো প্রতিষ্ঠান যদি শুধুমাত্র ধর্মশিক্ষাই দিয়ে থাকে তাহলে সেখানকার ছাত্ররা ধর্মান্ধ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আর এই অংশটি যেকোনো দেশের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার সাথে কখনই মিলতে পারেনা| পৃথিবীতে কি হচ্ছে তা না জেনে মোটামুটি জীবনের প্রাথমিক ও সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১০/১২ টি বছর যখন এরা অন্ধকারে থাকে তখন এদের কাছ থেকে উন্মাদনা ও উগ্র মানসিকতা ছাড়া বেশি কিছু আশা করা যায়না|
আপনাকে আবারও ধন্যবাদ।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
এই লেখাটা পড়ে হাসি পায় নি, আসলে চারপাশে ছাগল দেখে দেখে এত ক্লান্ত যে এসব নিয়ে হাসার মত অবস্থাও নাই এখন। খুবি অবাক হলাম এই পোস্টেও তর্ক বিতর্ক দেখে।
ইদানিং আধুনিক সভ্য ছেলেরা একটা নতুন স্মার্ট বেশ ধারন করেছেন ,তা হল সরাসরি হিজাবের পক্ষে কথা না বলে , বলেন মেয়েরা স্বইচ্ছায় হিজাব পরলে তাদের কোন আপত্তি নেই। এ কথাতে আসলে দুকূলই রক্ষা হয়। তাই এই পন্থা অনেককেই মানতে দেখি।
কিন্তু সমস্যা হল স্বইচ্ছা শব্দটা। স্বইচ্ছা মানে কি? নিজের ইচ্ছে। এইতো? কিন্তু আমার ইচ্ছে হওয়ার পিছনেও আমার মানসিকতার ছাপ থাকবে, আর আমার মানসিকতা তৈরি হবে আমার পরিবারের শিক্ষা , চারপাশের পরিবেশ, স্কুল কলেজের শিক্ষা সব কিছু মিলিয়ে। আমার জিনের ভিতর সঞ্চিত মানসিকতারও একটা ভুমিকা থাকবে সেখানে।তাই আমার ইচ্ছে শুধু আমার ইচ্ছে না,সেটা আমার কয়েক পুরুষের সঞ্চিত ভাবধারার , মূল্যবোধেরও একটা বহিঃপ্রকাশ । উধাহ্রন হিসেবে যদি আমাকেই ধরি,বোরখার ব্যাপারে আমার নিজের ইচ্ছে কি শুধু আমার ইচ্ছে? আমার বাবা যদি আমাকে ছোটবেলাতে বোরখা পরার কনসেপ্ট টাই যে আসলে মেয়েদের অপমানের একটা কনসেপ্ট এটা না বুঝিয়ে বোরখা পরার উপকারিতা বুঝাত, আমার মা বোরখা পরত, আমার চাচারা কেউ বোরখার উপকারিতা নিয়ে উঠতে বসতে লেকচার দিত, এবং বড় হয়ে যদি আমি একেবারেই নিজের আগ্রহে বোরখা নিতাম , সেখানেও কি আমার প্রিয় মানুষগুলোর মানসিকতার ছাপ থাকত না? তাহলে মেয়েরা স্বইচ্ছায় বোরখা পরে এই কথার মানে কি? পরিবারের বাইরে অন্য কাউকে দেখেও মোটিভেটেড হয়ে সে পরতে পারে। কিন্তু যাকে দেখে মোটিভেটেড হল সে কেন পরেছিল? মূল খুঁজে বের করলে ত সেই একই কথা। বোরখা পরতে মেয়েদের বাধ্য করা হয়েছিল ছেলেদের লোলুপ দৃষ্টি থেকে তাকে বাঁচাতে, কারন ছেলেদের লোলুপ দৃষ্টি তো আর অন্ধ করে দেয়া যায় না! তাই এক্ষেত্রে স্বইচ্ছা শব্দটাতে আমার প্রবল আপত্তি। এবং যারা এসব বলে তাদের চেয়ে যারা সরাসরি বোরখার পক্ষে কথা বলে তাদেরকে আমার ভালো মনে হয়,অন্তত তাদেরকে চেনাটা সহজ তাই । দুমুখো সাপ বড় ভয়ানক জিনিষ। এরা ছোবল যে কোন দিক থেকেই দিতে পারে সুবিধামত।
আমি শুধু ব্লগে ব্লগে ঘুরে বেড়াই। লিখি টিখি না। মাঝে মাঝে লিখার ইচ্ছা হলেও পারিনা। এই লেখার কিছু কিছু অংশ পড়ে মনে হল আমার নিজের মনের কথা বলা হয়ে গেছে
মন থেকেই লিখেছি
আবারও কইতাছি কইলাম ... এই লেখা বুরকা/হিজাব নিয়া না । খবর্দার কইলাম আর কেউ যদি বুরকা নিয়া কান্নাকাটি করেন ...
আই এম কিন্তু ওয়াচিং ইয়ু গাইজ অ্যান্ড গার্লস কইলাম
ভুলে করে ফেলেছি আমি তমসম বেগমের কথা বলে এই কথায় যে তমসম বেগমের ভাই ব্রাদাররা ছুটে আসবে আমি বুঝি না চরম ভাইয়া
হ, বুরকার বারুদটা আপনেই ফাটাইছেন । তসমস বেগমের চ্যালারা এখন সবাইরে কচমচ করে খায়া ফেলবে।
ছাগলের গুষ্টির কথায় বুঝা যায় (১) 'ইহুদি/নাসারা রা পালন করে' এইটা হল যেকোন কিছুর হারাম হইবার কেন্দ্রীয় ক্রাইটেরিউম, আর (২) 'মোহাম্মদ পালন করেছিল/বলেছিল বলে সাদাচোরায় দেখেছে/শুনেছে বলে কালাচোরায় বলেছে' হইল হালাল/মাকরুহ হইবার কেন্দ্রীয় ক্রাইটেরিউম।
(১) নম্বরের ক্ষেত্রে আমার কোয়েশ্চান হইল, যদি ইহুদি নাসারার দলও পরদাপুশিদা করে, তাহইলে সেইটাও কি হারাম কি না। ইহুদিদের 'ছিনুত'
অথবা বিবিধ খ্রিষ্ঠান সম্প্রদায় অথবা দক্ষিন এশিয়ার কিছু ক্ষুদ্রজাতিগোষ্ঠির মধ্য়ে মেয়েদের ঢেকে রাখবার প্রবণতা আছে। কাফেরেরা ঘন্টা বাজাইলে আমাদের জন্য় ঘন্টা হারাম। কাফেরেরা ভ্য়ালেন্টাইন্স ডে করলে আমাদের জন্য় সেইটা হারাম। নারায়্নগন্জ কাফেরি নাম, তাই হারাম। তাইলে কাফেরেরা পরদা করলে মোমিনাদের জন্য় পরদা হালাল কেন?
(২) ইসলামি (আসলে আব্বাসি) পরদাপুশিদার যেসব বিবরন হাদিছে আছে, সেগুলো যে আব্বাসি নও-ছাগলেরা বাইজান্টাইন ক্য়ানোন আইন আর ব্য়াবিলোনিয়ার তালমুদ থেইকা ডাইরেক কোটেশান মাইরা দিয়া তার আগে পিছে সাদা চোরা কালাচোরা নাম ঢুকাইছে। গুগলাইলে এইসবের গাদা গাদা ফিরিস্তি পাওয়া যায়। ছাগলের গুষ্টি এইগুলা চোখে দেখেনা।
****
অফটপিকঃ অনেক সাধনার পরে বাসা থেইকা ১২০ কিলোমিটার দুরে একটা ছাগলের খামারের খোজ পাইছি। ল্য়াম্বের গোস্তে বিরিয়ানি আর মুখে রোচে না। ১০ কেজি সাইজের নধর ছাগলের রেজালার যে কি সোয়াদ রে ভাই, কি আর বলবো।
আলহামদুলিল্লাহ পড়ে অনেক মজা পাইছি, আপনাকে অনেক অনেক শুক্রিয়া।
তয় আপনি যা শুরু করছেন। অখনও সময় আছে তারাতারি তওবা কইরা খারাপ হইয়া জান। নইলে কিন্তু নরকে আপনার জায়গা হইবনা (বেহেস্ত নিশ্চিত)।
কথাবার্তায় আবার দেশ নিয়া টানাটানি কেন বাপু।
দেশ নিয়াও তো টানতে হয় রে ভাই। ছাগল কি আর শুধু এক পথেই হওয়া যায়?
ধুউউউররর
কমেন্ট পড়তে পড়তে মাতামুতা আউলাইয়া গেছে।।।
জাউকজ্ঞা---
লিংগুলায় ঢুকিবা চাহাতাছিনা--- রামচাগল থুক্কু বঢ়ীয়া চাগল হইতাম চাহি না---
বঢ়ীয়া চাগলের হালাইলা লিস্টত আফনে নাই---
কড়িকাঠুরে
ভাইয়া নতুন পর্ব দিচ্ছেন না এখনো!
লেখালেখি বন্ধ করে দিছি, পাঠক হয়ে গেছি।
আমি বারকয়েক বলেছিলাম যে উদাসদার হিউমার আমার কাছে অত রিফাইনড মনে হয় না, পপুলিস্ট লাগে। তবে এইটার শেষকথায় এসে একেবারে প্রোফাউন্ড-এ চলে গেছেন। এইরকম বেশি লেখেন গো দাদা।
োরে ভালো লাগলো
আপনি অনেক বড় মাপের টেলেন্ট। সত্যের জয় হোক
দেখতে পাচ্ছি উর্বর বাংলাদেশে ফলন শুরু হল। সত্যের জয় হউক।
নতুন মন্তব্য করুন