বিশ্ব ঘুরতে কয়দিন লাগে? বড়জোর তিনদিন। সেইদিন কি আর আছে যে ফিলিয়াস ফগ হয়ে ভৃত্য প্যাসেপার্তুকে বগলদাবা করে বিশ্বকে চক্কর দিতে পুরা আশি দিন লাগাবেন আর ফিরে এসে সেইটা নিয়ে আবার বিতং করে বই লিখে ফেলবেন। ঢাকা থেকে এমিরেটস এ চড়ে ৪ ঘণ্টায় দুবাই চলে যান। প্লেনে বাথরুম চাপলে বা থুতু ফেলতে মন চাইলে পাকি দেশের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় প্লেনের জানালা খুলে কাজ সেরে ফেলুন চটপট।
ছোটবেলা মনে আছে ট্রেনের জানালা দিয়ে রা টা টা টা করে জল কামান দাগতে দাগতে যেতাম। অন্য কোন উপায় ছিলোনা, এতই ছোট ছিলাম তখন যে ট্রেনের বাথরুমের ফাঁক গলে নিচে পড়ে যাবার সম্ভাবনা ছিল। সে যাই হোক, বিশ্ব ভ্রমণে ফিরে আসি। দুবাইয়ে এসে এক ঘণ্টা রেস্ট নিয়ে দুইটা খেজুর আর একটা বাকলাভা খেয়ে ওইখান থেকে একটু লন্ডনের হিথ্রু হয়ে একটানে আমেরিকার হিউস্টন বা নিউইয়র্ক। লম্বা জার্নি, তবে উড়োজাহাজের ভেতরে আমিরাত এর কল্লা-ঢাকা, হাঁটু-খোলা বিমানমালা আর উড়োজাহাজের বাইরে জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখতে দেখতে দিব্যি সময় কেটে যাবে। আমার এক অসভ্য বন্ধু একবার এরকম তামাশা দেখে ক্ষেপে গিয়ে বলেছিল, হালার চুলের মধ্যে আছে কি বালডা। এরা ঠ্যাঙ খুলে মাথা ঢাকে কেন। সৌদির উপর দিয়ে যাবার সময় একটু সাবধানে থাকবেন। খবরদার প্লেনের জানালা দিয়ে কল্লা বের করে দেখার চেষ্টা করবেন না। জানেনই তো ওইখানে কল্লা পেতে দিলেই কেউ না কেউ এসে এক কোপে সেটা কেটে ফেলে। আম্রিকা এসে ঘণ্টা-খানেক বিরতি দিন, হোমল্যান্ড সিকিউরিটির লোকজন যেন উপুরজুপুরি ইয়ে করতে পারে। তারপর পশ্চাৎদেশে স্কচ টেপ মেরে হাত বুলাতে বুলাতে ক্যালিফোর্নিয়া । ওইখানে আবার হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ইতরদের ইয়োগা খেয়ে পশ্চাৎদেশ স্টেপল করে জাপান। সেইখানে এক বাটি মিসো সুপ খেয়ে গুমাণনাসাই গুমাণনাসাই বলতে বলতে হংকং, চায়না, মালায়েশিয়া কিছু একটা হয়ে আবার ঢাকা ফেরত। সব মিলায়ে বড়জোর ৪০/৫০ ঘণ্টা। তিনদিনও না, দুইদিনেই দিব্যি পুরো বিশ্বকে একবার চক্কর দিয়ে ফেলা যায়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এটাকে ঠিক ভ্রমণ বলা চলে কিনা। এ ধরনের ভ্রমণকে আমরা বলি - জালালি ভ্রমণ । জালাল নামের এক জ্ঞানী বন্ধু ছিল। সাথে আরও কিছু ইঁচড়ে পাকা পোলাপান নিয়ে কিছুদিন আগে তারা ৭ দিনের জন্য ঘুরে আসলো। কলোরাডোর রকি, অ্যারিজোয়ানার গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন থেকে শুরু করে লস এঞ্জেলস, লাসভেগাস, ইউটাহ হয়ে ওয়াইয়োমিঙ্গের ইয়েলো স্টোন ঘুরে শিকাগো মিকাগো ঘুরে আবার টেক্সাস এ ফেরত। গাড়ী থেকে একেক জায়গায় নামে। লাইট-ক্যামেরা-একশন সব আগে থেকেই ঠিক থাকে, নেমে খালি ফটাফট দুইটা করে ফটো তুলে আবার গাড়িতে উঠে দে দৌড়। জলযোগ গাড়িতে, জলবায়ু ত্যাগ রাস্তার ধারে। এই ধরনের ভ্রমণকে আমরা তাই জালালি ভ্রমণ বলি। কোন কিছু দেখা না, বরং দেখেছি এইটা অন্যকে দেখানোর জন্য ভ্রমণ। ফিরে এসেই ফেসবুকে ফটাফট ছবি আপলোড শুরু হয়ে যায়। পরে ছবি দেখে নিজেই আর চেনা যায়না এটা কোন জায়গা। আমার পছন্দ ঠিক উল্টেটা, আমি পছন্দ করি চ্যাগানো ভ্রমণ। চ্যাগানো ভ্রমণ মানে হচ্ছে, যেভাবেই হোক দর্শনীয় কোন স্থানে গিয়ে কোন দৌড়াদৌড়ি না করে সপ্তাখানেক এর মতো চ্যাগিয়ে বসে থাকা। এখন আবার চ্যাগিয়ে বসে থাকার সংজ্ঞা দিতে গেলে ম্যালা কথা বলতে হবে। উদাহরণ দেয়া যায় সহজে, আমার বন্ধু মিনহাজ যেই কাজ করতো সবসময়। একখানা লুঙ্গি পরে উদাস মনে দুনিয়াদারীকে মুড়ি খাইতে বলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কিছু না করে বসে থাকা। এই যে যেমন আমি দুই ঠ্যাঙ ছড়িয়ে ক্যাটক্যাটে নীল রঙের জুতা পরে শুয়ে আছি। সোজা সামনে তাকালেই আটলান্টিক। একটু বাঁয়ে গাড়ি, ডানে কফির কাপ। পেছনে কেবিন, সেইখানে বিছানা। মন চাইলে গাড়ীতে উঠে পরের আইল্যান্ডটা ঘুরে আসা, মন চাইলে সারাদিন বসে আটলান্টিক দেখা, মন চাইলে বিছানায় গিয়ে সমুদ্রের গর্জন শুনতে শুনতে ঘুম। ইহাকেই বলে চ্যাগানো ভ্রমণ।
জালালি আর চ্যাগানো ভ্রমণ ছাড়াও আরেকরকম ভ্রমণ আছে। তার্কাণু ভ্রমণ। ওটা কিভাবে করতে হয় সেটা ভ্রমণকারী নিজেই বলে গেছেন।
এবারের এসো নিজে করি ভ্রমণ করা নিয়ে। যারা সারা দুনিয়া তারেক অণুর মতো ঘুরে কাদা কাদা করে ফেলতে চান তদের জন্য নানা ভ্রমণ বিষয়ক নানা টিপস নিয়েই এই টিউটোরিয়াল। অনেককাল ধরেই তারে অণু কুমন্ত্রণা দিচ্ছিল, আসেন আমরা এই লেখাটা এক সাথে লিখি। কিন্তু যৌবনের উত্তেজনা সামাল দিতে না পেড়ে ছোকরার ভার্সনটা আগেই স্খলন হয়ে গেল। আর আমি শম্বুক গতিতে এক লাইন দুই লাইন করে লিখে যেতে থাকলাম। অবশেষে মনে হল এবার পাবলিককে খানিকটা ভ্রমণ বিষয়ে জ্ঞান দেয়া যায়
তারেক অণু আপনাদের দিয়েছে নানা ভ্রমণ বিষয়ক সুমন্ত্রণা, এইবার আমি দেই কিছু কুমন্ত্রণা।
ইঁচড়ে পাকা ছেলেপুলে প্রশ্ন তুলতে পারে, বড় যে How to travel like Tareq Onu লিখতে বসে গেলেন, আপনার যোগ্যতা কি? কয়টা দেশ ঘুরেছেন শুনি? নিজ দেশ বাদে ঘুরেছি সবে মাত্র পাঁচখানা দেশ, সৌদি, ভারত, কানাডা, ইংল্যান্ড আর আমেরিকা। তারপরে মনে করেন স্ত্রীর সকল কিছুতে যেহেতু স্বামীর অধিকার আছে তাই আমার স্ত্রী যে রাশিয়া, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইটালি ইত্যাদি আরও গোটা বারো দেশে যে ঘুরলো সেটাকেও আমার বলে চালিয়ে দেয়া যায়। তারপর মনে করেন আমার জীবনের প্রথম ভ্রমণ পবিত্রভূমি সৌদিতে, সেখানে হজ্জ পালন। তারেক অণু সৌদি গেছে? হজ্জ করছে? করেনাই। সুতরাং ত্যানা প্যাঁচানো বাদ দিয়ে মন দিয়ে লেখা পড়েন। খায়েশ আছে অচিরেই যাবো ইউরোপ ট্রিপে। আগামী বছর ব্রাজিলে বিশ্বকাপের রথ দেখা সাথে আরও কিছু দক্ষিণ আমেরিকার দেশে কলা বেচা, তার পরের বছর আফ্রিকা। আপাতত এই স্বল্প ভ্রমণ অভিজ্ঞতায় যা যা জ্ঞানার্জন হয়েছে তা এই প্রথম পর্বে বর্জন করে দেই। আরও ভ্রমণ শেষ হলে না হয় দ্বিতীয় পর্বে এডভান্স টিপস দিব।
কেন ও কোথায় ভ্রমণ করবেন?
জালালি ভ্রমণই হোক, চ্যাগানো ভ্রমণই হোক আর তার্কাণু ভ্রমণই হোক, ভ্রমণ করা জীবনে জরুরী। আমাদের সবার লাইফই কম বেশী sux। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে লোকজনের আহা উহু সমবেদনা শুনে ক্ষণিকের জন্য তৃপ্তি পাওয়া যায় বটে তবে আড়ালে ছিঁচকাঁদুনে অপবাদ জুটে। অনেকের লাইফ sux না হলেও pressed। লোকে শুধু চারদিক থেকে চাপ দেয়। অফিসে গেলে বস চাপ দেয়, বাসায় আসলে She-Who-Must-Not-Be-Named চাপ দেয়, স্কুল কলেজ ভার্সিটি গেলে প্রফেসর চাপ দেয়, বাবা মা চাপ দেয়, পাড়া প্রতিবেশী চাপ দেয়, আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব সবাই শুধু নানাভাবে চাপ আর চাপ দেয়। শালার লাইপ ইজ এ প্রেশার কুকার। চাপ কমানোর জন্য ভ্রমণের চেয়ে বড় দাওয়াই আর নেই। নানা ব্যস্ততায় যখন চারিদিকে আন্ধার মনে হয় তখন দুনিয়াদারীর সব কিছুকে মুড়ি খেতে বলে একটা ব্যাগ কাঁধে বেড়িয়ে পড়ার চেয়ে বড় সমাধান নেই।
ভ্রমণ মানেই যে আপনাকে সপ্তাশ্চর্যের লিস্টি ধরে পিরামিড, ব্যবিলনের ঝুলন্ত উদ্যান, আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর দেখতে গাট্টি বোঁচকা বেঁধে বের হয়ে যেতে হবে তা নয়। নামকরা অনেক জিনিসপত্র দেখার চেয়ে নাম না জানা কোন কোন পাহাড়ি উপত্যকা অনেক বেশী সুন্দর মনে হয়। আমি স্ট্যাচু অব লিবার্টি দেখে কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এইডা কিছু হইল? সবুজ রঙের এই ময়লা মূর্তি দেখার জন্য লাইন ধরে বিশ ডলার ভাড়া দিয়ে ফেরীতে উঠে বরফের মধ্যে কাঁপতে কাঁপতে আসলাম। লন্ডনে মাদাম তুসো দেখে মনে হল পঁয়ত্রিশ পাউন্ড খরচ করে লোকজনের মোমের অমিতাভ বচ্চনের বগল তলে আর ঐশ্বরিয়ার আঁচল তলে লাইন ধরে ছবি তোলা দেখতে এলাম? ঘণ্টাখানেক খুঁজেপেতে পার্কিং জোগাড় করে লাফাতে লাফাতে মায়ামি বীচে এসে মনে হয়, এই কি তবে মায়ামি বীচ? শালার বালু তো বালুই, পানিও পানি। তাইলে ইস্পিশাল হইলোটা কি? তবে কিছুকিছু বিখ্যাত জায়গা আছে যার সম্পর্কে যতই পড়া হক, যতই জানা থাকুক না কেন প্রথমবার দেখে থমকে গিয়ে বলতে হয়, একি! গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের বিশালত্ব দেখে এমন মনে হয়েছিল, মায়ামি থেকে কি-ওয়েস্ট যাবার ব্রিজ যার দুইদিকে দুই রঙের দুই রকমের সাগর (আটলান্টিক মহাসাগর আর মেক্সিকো উপসাগর) তা দেখে মনে হয়েছিল, বরফে ঢাকা রকি মাউন্টেন এর চূড়া দেখে এমন মনে হয়েছিল, এমনকি কক্সবাজারে রাতের বেলা জীবনে প্রথম সাগর দেখে এমন মনে হয়েছিল। আবার কানাডার উত্তর কোনায় ছোট্ট এক শহরে তেল খুঁজতে গিয়ে রাতের বেলা নর্দার্ন লাইট এর খানিক ছিটেফোঁটা দেখে বেশ লেগেছিল, পদ্মায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজের তলে নৌকা ভ্রমণ বেশ লেগেছিল (উপর দিয়ে ট্রেন যাবার সময় অবশ্য বিশাল টেনশনে ছিলাম), নিউ মেক্সিকোতে একবার ট্রাক চালিয়ে ধাইধাই করে এক পাহাড়ের মাথায় উঠে পরে আর নামতে না পেরে বেশ লেগেছিল, শীতলক্ষ্যায় মাঝরাতে প্রাণের বন্ধুদের সাথে ঘণ্টার পড় ঘণ্টা খোলা নৌকায় শুয়ে আড্ডা দিতে বেশ লেগেছিল। তাই মূলকথা হল, সবসময় দর্শনীয় স্থান নিয়ে অত মাথা না ঘামিয়ে দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ধরণের ভ্রমণ করুন। যখন যেভাবে যেখানেই সুযোগ পান না কেন, ব্যাগে দুইটা জামা আর একটা কলা (অন্নবস্ত্র) নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন। এরপর পথ যেখানে নিয়ে যায় সেখানেই চলে যান।
ভ্রমণে খাওয়াদাওয়া
আমি পেটুক মানুষ। সবার আগে খাওয়া দাওয়ার কথাই বলি। ভ্রমণে গিয়ে ভালো মন্দ খাওয়া অবশ্যই প্রয়োজন। সবচেয়ে ভালো হয় কোন জায়গায় গেলে সেখানকার স্থানীয় বিশেষ কিছু থাকলে সেটা চেখে দেখা। আমার জীবনের প্রথম স্মরণীয় ভ্রমণ কক্সবাজারে। মিলিটারি স্কুল থেকে দঙ্গল বেঁধে এক সপ্তাহের শিক্ষা সফরে যাওয়া। নাম শিক্ষা সফর হলেও জীবনের বড়বড় সব কুশিক্ষা ওই সফর থেকে পাওয়া। কক্সবাজারের বার্মিজ মার্কেটে গিয়ে আমাদের মনে হল, When In Rome act Like Roman. আমরা তাই দেশী খাবার বাদ দিয়ে তিন বেলা বার্মিজ খাবার খাওয়া শুরু করলাম। বার্মিজ খাবার মানে দুই আইটেম, বার্মিজ বাদাম আর আচার। ফলাফল হিসেবে পরে ফুড পয়জনিং হয়ে দুই সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয়েছিলো। তাই বেশী উৎসাহী না হয়ে খাওয়াদাওয়া একটু খেয়াল করে করাই ভালো। ইনপুটের উপর আউটপুট নির্ভর করে। গত বছর আমাদের ইয়েলোস্টোন ট্রিপের তৃতীয় দিন এমনই এক কেলেঙ্কারি হলো।
বল্টু ভাই (উসাইন বোল্ট) এর স্টার্টং নিয়ে নানা সমালোচনা শোনা যায়। ছোকরা দৌড়ায় ভালো কিন্তু স্টার্টিং একটু স্লো। আমাদের ভ্রমণের তৃতীয় দিনে আমার এক বন্ধুর স্টার্টিং দেখে থ হয়ে গেলাম। মনে হল বল্টু ভাই এর ওর কাছ থেকে শিখার মতো কিছু আছে। ঘটনা খুলে বলি। আমাদের ভ্রমণের দুই দিন যেতেই বুঝে গেলাম আমরা আসলে এখানে খেতে এসেছি, ঘুরতে নয়। আমরা প্রতিদিন সকালে তিন দফায় ব্রেকফাস্ট খাই, প্রথমে দুধ সিরিয়াল, পরে পাউরুটি কলা , আর শেষে পরোটা ডিমভাজি আলুভাজি। তারপরে গাড়িতে উঠেই সবার খিদা পায় আবার, চিপস আর হাবিজাবি চিবুতে চিবুতে পার্কের দিকে যায় সবাই। আধা ঘণ্টা পর গাড়ী কোন দর্শনীয় স্থানে থামলে প্রি-লাঞ্চ খাবার জন্য তোরজোড় শুরু হয়। এভাবে চলতে থাকে লাঞ্চ, পোস্ট লাঞ্চ, বিকেলের নাস্তা, শেষ বিকেলের নাস্তা, সন্ধ্যার নাস্তা, প্রি ডিনার, ডিনার, পোস্ট ডিনার, ঘুমানোর আগে হালকা জলখাবার ইত্যাদি ইত্যাদি। এইরকম বহুমুখী আক্রমণে পেট বাবাজীর হকচকিয়ে যাবারই কথা। আমাদের শুরুর দুইদিন গ্র্যান্ড টিটনে ঘোরার পরিকল্পনা। প্রথমদিন সব ঠিকঠাক থাকলেও দ্বিতীয় দিন লাগলো প্যাঁচ। গাড়ী চালাচ্ছি, হটাত এখন কাঁচুমাচু গলায় বলল, সামনে কোন ভিজিটর সেন্টারে একটু থামলে একটু ভালো হয়। আরও পাঁচ মিনিট পর বলল, থামলে একটু না অনেক বেশী ভালো হয়। আরও পাঁচ মিনিট পরে বলল, থামলে ভালো হয় কিনা জানেনা তবে না থামলে খুব খারাপ কিছু হতে পারে। আমি পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে পড়িমরি করে গাড়ী চালিয়ে একেবারে রেস্টরুম এর সামনে নিয়ে থামালাম। গাড়ীর লক খোলা মাত্র আমি বিদ্যুৎ বেগে তাকে বের হতে দেখলাম। এইরকম স্টার্ট বল্টু ভাই নিতে পারলে একশ মিটারের টাইমিং ৮ সেকেন্ডের নিচে নিয়ে আসতে পারার কথা।
এরপরের ঘটনা ইতিহাস। ওই একজন এর পিছনে আরও চারজন লাইন ধরল। সবাই শুধু আমায় ডেকোনা, ফেরানো যাবে না গাইতে গাইতে খালি আসে আর যায়, যায় আর আসে। আমাদের গ্রুপের প্রমিথিউস (যাকে দিয়ে ঘটনার শুরু) দাঁত মুখ খিঁচিয়ে বলে, আপনারা আগান আমি পরে আসতেছি। আমার মনে হয় ফুড পয়জনিং হইছে। আমি দাঁত কেলিয়ে বললাম, পেট নেমে গেছে? ছোটলোকের পেট খারাপ হয় আর বড়লোকের হয় ফুড পয়জনিং। ঘুরেফিরে ঘটনা একই। চেহারা দেখলেই বোঝা যায় ঘটনা কি। আমার এক বন্ধু একবার তার বোনের জন্য পাত্র দেখতে গিয়ে পাত্রের চেহারা দেখে বলেছিল, হারামজাদার পাদের মতো চেহারা। আমি সাথে সাথে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। অসভ্য কথা বলার জন্য না, সাইন্টিফিক্যালি ইনকারেক্ট কথা বলার জন্য। বললাম, একজন মানুষের চেহারাকে কিভাবে একটা বায়বীয় পদার্থের সাথে তুলনা করা সম্ভব। জ্ঞানী বন্ধু ব্যাখ্যা দিল, ওই অপকর্মটি করার পর নাকি মানুষের চেহারার মধ্যে একটা লাজুক চোর চোর ভাব আসে। আর অনেকের চেহারা বাই ডিফল্ট নাকি ওরকমই থাকে। সবসময় একটা আকাম করেছি টাইপ লাজুক চোরচোর ভাব। ওরকম চেহারাকেই নাকি বলা হয় ইয়ের মতো চেহারা। বহুকাল বন্ধুর ওই কথা বিশ্বাস করিনি। তারপর একদা কোন কুক্ষণে কার যেন কুবুদ্ধিতে গিয়ে ইংরেজি বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না অর্থাৎ Twilight দেখতে দিয়ে দেখলাম Kristen Stewart কে। পরমা সুন্দরী মহিলা, কিন্তু সকল এক্সপ্রেশনেই একটা লাজুক চোর চোর ভাব। সকলে Twilight দেখে ভালোবাসায় চোখের পানি আর নাকির পানি এক করে আর আমি হেসে গড়াগড়ি খাই আর বলি, পাইছি রে, ইয়ের মতো চেহারা কাকে বলে এতদিনে বুঝতে পারছি। যাইহোক, এতো সুন্দরের মাঝে অসুন্দরকে আর না টানি। বিস্তারিত বিবরণে না যাই। আমাদের আক্রান্ত বন্ধুরা ভ্রমণের বাকি দিনগুলো Kristen Stewart এর মতো দুঃখী দুঃখী চেহারা করে বাথরুমের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে করতেই ভ্রমণ শেষ করে ফেলল।
চিত্র - দুঃখী দুঃখী চেহারা
সুতরাং। লেসন নাম্বার ওয়ান - ভ্রমণে পেট সামলে। শুধু পেট না, শরীরের সকল কলকব্জা ঠিক রাখা ভ্রমণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে আবার কোন কোন ভ্রমণ আছে হয়তো সত্যি শুধু খাওয়ার জন্যই। আমরা একবার এমন লাসভেগাসে গেলাম শুধু খেতেই। সারা দুনিয়ার সেরা Buffet গুলোর বেশ কয়েকটি ভেগাসে। এর মধ্যে বেলাজিও ক্যাসিনোর Buffet অনেকের মতেই দুনিয়ার সেরা পাঁচটি Buffet এর একটা। প্রায় ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়িয়ে ভেতর ঢুকে আমি বত্রিশ দাঁত বের করে বললাম, একি। প্রায় গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন বা মাচুপিচু টাইপের বিস্ময়কর জিনিস। কোবে বিফ, লবস্টার, কাঁকড়ার ঠ্যাঙ থেকে শুরু করে শত রকমের ডেসার্ট, আহা, আহা, আহা ... আমি খানিক ইমোশনাল আর নস্টালজিক হয়ে যাচ্ছি। বরং লাইনে ফিরি। সুতরাং কথা হচ্ছে মাঝেমাঝে যদি খাওয়ার জন্যই ভ্রমণ হয়, তবে সেটা করতে পারেন। সমস্যার কিছু নেই। তবে সাধারণভাবে ঘুরতে বেড়িয়ে খুব বেশী খাইখাই না করাই ভালো। আপনি খাওয়াদাওয়া নিয়ে যত কম খুঁতখুঁতে হবেন তত সময় বাঁচবে, ভ্রমণের আসল কাজ ঘুরাঘুরিতে মন দিতে পারবেন। একবার ভেগাসের সব Buffet এর আনলিমিটেড খাওয়ার টিকেট পেয়ে আমি আর আমার স্ত্রী একদিনে ছয়টা Buffet মেরেছিলাম বেশ। আবার ঘুরতে গিয়ে একটা কলা আর এক পিস রুটি খেয়ে সারাদিন কাটিয়ে দেবার অভিজ্ঞতাও আছে। তাই ভ্রমণের অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করাই শ্রেয়। ভরপেট Buffet খেয়ে যেমন হাইকিং করতে রওনা দেয়া ঠিক না, তেমনি আবার লাসভেগাসে ঘুরতে এসে ডায়েটিং করাও বোকামি।
ভ্রমণসঙ্গী
যদি হয় সুজন, তেঁতুল পাতায় নজন। একথা ভ্রমণের ক্ষেত্রে বেশীরভাগ সময়েই ভুল। নয়জন লোক নিয়ে ঘুরতে যাওয়া আর কাঁধে বিশ মন আটার বস্তা নিয়ে এভারেস্ট জয় করতে যাওয়া একইরকম। যদি চ্যাগানো ভ্রমণ করতে চান তবে আকার বড় হলে বেশি সমস্যা নেই। কিন্তু জালালি বা তার্কাণু ভ্রমণ করতে হলে আকার ছোট হওয়াই কাম্য। বাঙ্গালী তিনজন লোক এক হলে চারটা সমবায় সমিতি, পাঁচটা মঞ্চ আর গোটা বিশেক ফেসবুক গ্রুপ বানিয়ে ফেলে এটা জানা কথা। সুতরাং লম্বা ভ্রমণে গেলে লোকজন সাথে যত কম হয় ভালো। আমার ব্যক্তিগত বিবেচনায় ভ্রমণের জন্য গ্রুপের আকার পাঁচ এর বেশী হলে সমস্যার শুরু। খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে বাথরুম যাওয়া পর্যন্ত প্রতি পদে ছন্দের সমস্যা। ভ্রমণে খোলস খুলে আসল মানুষের চেহারা বের হয়ে যায় এই কথা অনেক মহামনিষী বলে গেছেন। এইজন্য ভ্রমণে সঙ্গী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমার ব্যক্তিগত মত হচ্ছে ১২ ধরণের গেঞ্জাইম্যা ভ্রমণকারী আছে। এদের কাছ থেকে দূরে থাকলে ভ্রমণ আনন্দদায়ক ও কার্যকরী হবে।
দ্যা কমপ্লান গার্ল
এদের কাজ হচ্ছে পুরাপথে শুধু অভিযোগ করা। খাবারে লবণ বেশী কেন, বাস এত আস্তে চলে কেন, রাস্তায় এত জ্যাম কেন, আবহাওয়া এত গরম/ঠাণ্ডা কেন, হোটেলটা এত ময়লা কেন, হাতে পায়ে ব্যাদনা করে কেন ইত্যাদি ইত্যাদি বলে বলে বাকি সবার মাথা ধরিয়ে দিবে এরা। এরা গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দেখে বলে গর্ত এত ছোড কেন, ডিজনিল্যান্ড দেখতে গিয়ে বলে চারিদিকে এত পুলাপান কেন, রকি মাউন্টেন দেখতে গিয়ে বলে পাহাড়ে গাছ নাই কেন, নায়াগ্রা দেখে বলে পানি পড়া দেখতে এত দূরে আসলাম কেন।
দ্যা টাট্টি বালক
সবাই যখন রেডি হয়ে রওনা দিচ্ছে ঠিক তখনই এ ব্যক্তির বাথরুম চাপবে। এসব নিয়ে কিছু বলাও যায়না। বাথরুম মৌলিক অধিকার, কার কখন মুড আসে ঠিক নেই। আমার এক বন্ধু ছিল এমন। সবাই বের হব এইসময় সে বাথরুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিত। ভেতর থেকে ভেসে আসতো রবীন্দ্রসঙ্গীত। আমি একদিন ঝাড়ি দেয়ার পর বলে ঠিক যখন সে বুঝতে পারে আর বাথরুমে যাওয়া যাবেনা নেক্সট কয়েক ঘণ্টা তখনই তার মুড আসে। এরকমের টাট্টি বালকেরা সবাইকে আধা ঘণ্টা দেরি করিয়ে দিয়ে আবার গাড়ীতে উঠে আধাঘণ্টা যাবার পরেই মুতপো মুতপো বলে হৈ হল্লা লাগিয়ে দেয়।
দ্যা আউটসাইডার
এধরণের লোকের কাজ হচ্ছে সবাই ডাইনে গেলে তার বামে যাওয়া। এরা নিষ্ঠার সাথে ভ্রমণে বিরোধীদলের ভূমিকা পালন করে থাকে। সবাই ম্যাকডোনাল্ডস এ খেতে গেলে সে বলবে আমি সাবওয়ে খাব। সবাই পাহাড়ে উঠতে চাইলে এ বলে আমি নদীতে নামবো। সবাই যখন আড্ডা দিবে এ তখন ঘুমাবে আর সবাই ঘুমাতে গেলে এ টিভি দেখতে বসবে।
দ্যা লেট লতিফ
পৃথিবীতে কিছু মানুষের জন্মই হয় শেষ মুহূর্তে দৌড়ানোর জন্য। এর রেডি হতে দুই ঘণ্টা লাগবে। সকালে উঠে শ্যাম্পু করবে, তার উপর কন্ডিশনার দিয়ে আবার জেল লাগাবে। তার পর আবার আধা ঘণ্টা চিরুনি নিয়ে যুদ্ধ করবে। কি পরবে সিদ্ধান্ত নিতে না পেরে চার পাঁচ বার জামা বদল করবে। সবশেষে যখন অলমোস্ট রেডি বলে হাঁক দিবে তখন বুঝা যাবে আরও এক ঘণ্টা মিনিমাম।
দ্যা ইমোশনাল লাউ বালক
এমন ভ্রমণসঙ্গীরা কথায় কথায় গাল ফুলায়। ভ্রমণের বড় সময় চলে যায় ও লক্ষ্মী সোনা চাদের কণা বলে বলে তার রাগ ভাঙ্গাতে। ইমোশনাল লাউ বালকের শানে নজুল বলি। ছোকরা কথায় কথায় গাল ফুলায়। একবার সবজীর দোকানে গিয়ে লাউ হাতে নিয়ে রুমমেটকে কি জানি জিজ্ঞেস করলো। রুমমেট কি জানি একটা মশকরা করে ছোকরার কি জানি একটা অনুভূতিতে আঘাত দিল। রাগ করে লাউ হাতে হাটা দিল। দোকান থেকে বাসা তিন চার মাইল দূরে। গাল ফুলিয়ে লাউ হাতে পুরা পথ হেটে বাসায় চলে আসলো। এরপর থেকে কেউ রাগ করলেই আমরা তার হাতে একটা লাউ কুমড়া কিছু একটা ধরিয়ে দিয়ে বলি, যা হাঁটা দে।
দ্যা এংগ্রি বার্ড
এমন ভ্রমণসঙ্গীরা বদমেজাজি। ভ্রমণের দুইদিন যেতে না যেতেই যাত্রাপথের ধকলে তার মেজাজ ফরটি নাইন হয়ে যায়। কারণে অকারণে বাকিদের উপর চেঁচামেচি শুরু করবে। এদের রাগ দ্রুত পড়ে যায় তবে সবাই আতংকে থাকে আবার কখন ক্ষেপে যায় এই চিন্তায়।
দ্যা বস
এরা নেতা গোছের। কেউ না দিলেও সব দায় দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়। প্রতিদিন সকালে ঠেলে সবার ঘুম ভাঙ্গায়। কই যেতে হবে, কি করতে হবে, কি খেতে হবে সেই সিদ্ধান্ত নেয়। এরা আর্মি গোত্রীয়। শুরুতে এদের আন্ডারে থেকে ডিসিপ্লিন ভালোই লাগে কিন্তু কয়দিন পরেই গণতন্ত্রের জন্য পরাণ হাঁসফাঁস করে।
দ্যা মাথাধরা গার্ল
বিবাহিত লোক মাত্রই জানেন আপনি আহ্লাদ করতে গেলে আপনার স্ত্রী যদি মুখ কুঁচকে আপনাকে বলে বলে মাথা ধরেছে তার মানে ডাল ম্যায় কুচ কালা হ্যাঁয়। নিশ্চিত জানবেন সেই মাথা ধরার কারণ আপনি। ভ্রমণেও এরকম কিছু মুখ কুঁচকানো মাথাধরা গার্ল বা বয় দেখা যায়। আমরা সব বন্ধু মিলে একবার সমুদ্রে বেড়াতে গেলাম। সৈকতের পাশে বাড়ি, সেখানে রান্নাবান্নার ব্যবস্থা। দিনের বেলা ঘুরে টুরে রাতে সবাই মিলে রান্না করতাম। তখন একজনের রাতকানা রোগ হল। সারাদিন ভাল, রাত হলেই তার গা ম্যাজম্যাজ করে, মাথাব্যথা করে, মরণাপন্ন অবস্থা হয়। পরে বুঝলাম যেন কোন কামকাজ করতে না হয় সেজন্য শালা ভাব ধরেছে। সবাই মিলে রান্নাবান্না করতো আর সেই ব্যাটা মরে গেলুম করতে করতে দুই তিন থাল খেয়ে ঘুম দিত। সকালে উঠে দিব্যি চাঙ্গা। এরকম মাথাধরা রোগী কোন কারণে বিরক্ত হয়ে বা ভাব ধরে পুরো ভ্রমণ জুড়ে বাংলা পাঁচের মতো চেহারা করে বসে থাকবে।
দ্যা স্লিপিং বিউটি
শিশুদের কোলে নিয়ে একটু দোলা দিলে তারা দিব্যি ঘুমিয়ে পড়ে। কিছু কিছু বড় মানুষও আছে একটু গাড়ি, প্লেন বা নৌকা যেকোনো কিছুর একটু দুলুনিতেই ঘুমিয়ে পড়ে। এরা বিশাল এনার্জি নিয়ে ইয়াহু ঘুরতে যাচ্ছি বলে চিৎকার চেঁচামেচি করে ভ্রমণ শুরু করে। তারপর গাড়ীতে উঠেই ঘুম। ঢুলতে ঢুলতে আধা ঘুম আর আধা জাগরণে শেষ হয় এদের ভ্রমণ। আমার এক বন্ধু এমন আম্রিকার রকি, গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, আটলান্টিক, প্যাসিফিক, ডিজনি ফিজনি সব দেখে ফেলেছে ঘুমাতে ঘুমাতে। ওইগুলা দেখতে কেমন জিজ্ঞেস করলে হা করে তাকিয়ে থাকে।
দ্যা মল গার্ল
ভ্রমণে মল পরিত্যাগ করা শ্রেয়। এই মল সেই মল না। তবে আমার কাছে একই রকম মনে হয়। মল মানে শপিং মল। আমেরিকার নিউইয়র্ক এর দোকানে যা পাওয়া যায়, আলাবামার দোকানে একই জিনিস পাওয়া যায়। তারপরেও দ্যা মল গার্ল সাথে থাকলে সামনে পাওয়া গিফট শপ, শপিং মল সবখানে একবার ঢু মারতে মারতে আপনার ঘোরার আনন্দটাই মাটি করবে। এইটা দেখবে, সেইটা হাতাবে তারপরে দুই ঘণ্টা খরচ করে দুই টাকা দামের একটা ফ্রিজ ম্যাগনেট কিনে পরের দোকানে গিয়ে ঢুকবে।
দ্যা ক্যামেরাম্যান
এরা গাদা বন্দুক সাইজের ক্যামেরা নিয়ে ঘুরে। সাথে কাঁধে একটা ট্রাইপড। রাস্তায় কাক, চিল, শকুন যাই দেখুক না কেন ও "আল্লা কি বিউটি" বলে ট্রাইপড গাথা শুরু করে। বিশাল যত্ন আত্তি করে ছবি তোলার পর ছবি দেখে বোধ হয় বাঁদরের হাতে খুন্তি দেয়া কক্ষনো উচিৎ নয়।
দ্যা ডিজিটাল গাই
এরা পুরা পথে তার স্মার্ট ফোনের দিকে তাকিয়ে খুটমুট করে যাবে। গোয়িং ফর ভেকেশন ইয়াহু বলে স্ট্যাটাস মেরে তারপর প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় ঘন্টায় ঘন্টায় আপডেট দিবে, আমি এখন এইখানে। রাতে যেই হোটেলে থাকবে তার কমোড থেকে শুরু করে সব কিছুর ছবি তুলে আপলোড করে দিবে। সকালে ব্রেকফাস্ট খেয়ে তার ছবি আপলোড করবে। গন্তব্যে পৌঁছে সুন্দরবন হেয়ার আই কাম বলে ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড করে দিবে। স্মার্ট ফোনের দিকে তাকিয়ে পুরা ভ্রমণ শেষ হয়ে যাবে, চর্ম চক্ষু দিয়ে কিছু দেখা হবে না।
যাইহোক, খুব বেশি ভ্রমণসঙ্গী বাছাবাছি করতে গেলে পড়ে ঠগ বাছতে গা উজাড় হয়ে যাবে। বসে বসে জ্ঞান দিচ্ছি কিন্তু আমার নিজের মধ্যেই এসকল বদগুণের দুটি অন্তত আছে। মূলকথা হচ্ছে ভ্রমণসঙ্গীর আপনার সাথে ভালো টিউনিং হতে হবে। চমৎকার সঙ্গীর সাথে ভ্রমণ করলে রামপুরা লেককেও বৈকাল লেক মনে হবে, আর গেঞ্জাইম্যা সঙ্গী নিয়ে ঘুরতে গেলে ভেনিসকেও পচা খাল মনে হবে।
লেসন নাম্বার ওয়ান - ট্র্যাভেল লাইট। আপনার গাট্টি বোঁচকার সাথে যদি আপনার ভ্রমণসঙ্গীর ওজনও আপনাকে টানতে হয় তাহলে ওরকম সঙ্গী পরিহার করুন। এখন যদি আপনার বন্ধুরা বিবাহিত হয় আর তাদের স্ত্রীরা "ওগো আমাকে কুলে নিয়ে পাহাড়ে উঠ " টাইপ হয় তবে তাদের পরিহার করতে পারেন। কিন্তু পরস্ত্রী পরিহার করলেও নিজ স্ত্রী তো আর পরিহার সম্ভব না। তাই আপনি বিবাহিত হয়ে থাকেন আর আপনার স্ত্রী যদি উপরের বারো গুনের এক বা একাধিক থাকে তবে তাকে কিভাবে সাইজ করবেন তা জানানোর জন্য এসো নিজে করি - কিভাবে আপনার স্ত্রীকে সাইজ করবেন / How to be a Real Man লেখা শুরু করেছি। লেখা শেষ হওয়া পর্যন্ত দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করুন।
ভ্রমণ ও ক্যামেরা
দ্যা ক্যামেরাম্যান এর কথা আগেই বলেছি। তবে ছবিতোলা এযুগে ভ্রমণের একটা অত্যাবশ্যকীয় অংশ হয়ে গেছে বলে এ নিয়ে বিস্তারিত বলা প্রয়োজন। ভ্রমণে গেলেই লোকজনের ছবি কই ছবি কই বলে কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়। ছবি তোলার ব্যাপারে আমার কিছু অ্যালার্জি আছে। তারচেয়ে বেশী অ্যালার্জি গাদাবন্দুক সাইজের এসএলআর নিয়ে ঘুরাঘুরিতে। দুষ্টু লোকে অবশ্য বলে আমি ছবি তুলতে পারিনা বলেই নাকি এইসব বাহানা করি। আবার কারো কারো ধারণা আমি আসলে মারাত্মক ছবি তুলি। ছবি তোলার দায়িত্ব যেন আমাকে না নিতে হয় সেই ভয়ে ইচ্ছা করে ক্যামেরা একটু কাঁপিয়ে ফেলি, নাহয় ফোকাস উল্টাপাল্টা করে ফেলি। এসএলআর ক্যামেরার পালা আর বাচ্চা পালা সমান হ্যাপার কাজ। পিচ্চি বাচ্চাকাচ্চার দায়িত্ব আমাকে দিলে আমি কোন না কোন ভাবে একটা অঘটন ঘটিয়ে ফেলি। কোলে নেয়ার পর কোন না কোন কোনায় ঠুয়া খাইয়ে মাথায় আলু বানিয়ে দেই। একাধিক হলে মারামারি থামাতে গিয়ে নিজেই মারামারি শুরু করে দেই। বাচ্চাকাচ্চা তাও ভুলে হাত ফস্কে পরে গেলে কিছুক্ষণ ট্যাঁফোঁ করে শান্ত হয়ে যায়। এসএলআর কে ফেলে দিলে বা ঠুয়া খাওয়ালে কান্নাকাটির ধার ধারবে না। অইখানেই শেষ।
ফিল্ম ক্যামেরার যুগ ভালো ছিল। এক রোলে ছত্রিশটার বেশী ছবি তোলা যেত না, লোকজনে ভেবেচিন্তে ক্যামেরায় টিপ দিত। এখন কোথাও সদলবলে ঘুরতে গেলে গন্তব্যস্থানে পৌঁছানোর আগেই হাজার খানেক ছবি উঠে যায়। রাস্তায় কোথাও বাথরুম ব্রেক নিলেও লোকজন হুড়াহুড়ি করে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে, ছবির পর ছবি উঠতে থাকে। বাস্তবতা মেনে নিন। আপনার চেহারা দেখতে যতই ভাল হোক না কেন, কেউ আপনার দুই হাজার ছবি দেখবে না। সেই দুই হাজার থেকে যাচাই বাছাই করে অনেকে দুইশ ছবি ভ্রমণ শেষে আপলোড করে দেয় ফেসবুকে। সেটা দেখাও কম কষ্ট না। একই মানুষ একবার ডাইনে ঘাড় ঘুরায়, একবার বামে, একবার একটু কাত হয়, আরেকবার একটু ত্যাড়া হয়। কোন মানে আছে? দিন শেষে সেই আপনি তো আপনিই। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দর্শনীয় স্থান ঢাকা পড়ে যায় সামনে দাঁড়ানো ব্যক্তির চাপে। এত্ত বড় একটা মাথা তাঁর পেছনে ঝাপসা গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, অথবা দশজন লোক গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে পেছনে মায়ামি বীচের ম ও দেখা যায়না। ছবি তুলুন সমস্যা নেই, কিন্তু একটু সামলে। আপনি যদি সত্যিকারের ফটোগ্রাফার হয়ে থাকেন সমস্যা নেই, ছবি তুলতেই আপনার ভ্রমণ। কিন্তু বাকিরা একটু সামলে।
আমার স্ত্রীর আবিষ্কৃত একটা আদর্শ ছবি তোলার পোজ আছে, ত্রিভঙ্গ মুরারি পোজ। আমার মনে হয় ছবি তোলার জন্য এটা আদর্শ পোজ। নিজে চিত্র এঁকে বুঝিয়ে দিচ্ছি। ফর্মুলা হচ্ছে +১৫ ডিগ্রী -১৫ ডিগ্রী +১৫ ডিগ্রী। উলম্ব রেখা বরাবর পনের ডিগ্রী কাত হয়ে পা থেকে কোমর, তারপর কোমর থেকে গলা উল্টোদিকে ১৫ ডিগ্রী কাত, আবার মাথা সোজা দিকে ১৫ ডিগ্রী কাত। যে কোন দর্শনীয় স্থানে গিয়ে এই পোজে দাঁড়িয়ে ফটাফট দুই তিনটা ছবি তুলে ফেলুন, সাফল্য নিশ্চিত। তারপর ক্যামেরা ফেলে ভ্রমণ উপভোগ করুন।
ছবি তুলতে গিয়ে আমার এক বন্ধু সদলবলে কিভাবে মুজের ধাওয়া খেয়েছিল বলি। ওরাকলে চাকরী নিয়ে মন্টানার এক ছোট শহরে পোস্টিং। সেখান থেকে ইয়েলস্টোন মাত্র দুই ঘণ্টার পথ। বগল বাজাতে বাজাতে পাঁচ বন্ধু মিলে রওনা দিল একদিন। পথে এক জায়গায় দেখে মুজের বাচ্চা ঘোরাফেরা করছে। এ দেশে নতুন এলে রাস্তায় হরিণ দেখলে গাড়ি থামিয়ে ও আল্লা হরিণ বলে চিৎকার দিয়ে ছবি তুলতে লেগে যায়। নানা পোজে শেষে হরিণ ঢাকা পরে যায়, খালি নিজের ছবিই ওঠে। এই দেশে দীর্ঘদিন থাকলে লোকে হরিণ দেখে বরং ভয় পায়। ফট করে লাফ দিয়ে হাইওয়ের মধ্যে চলে এসে গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে ভয়ঙ্কর সব এক্সিডেন্ট ঘটিয়ে ফেলে নিরীহ হরিণ। নিজেও মরে, মাঝে মধ্যে লোকজনও মারা যায়। তো আমার বন্ধুগণও এরকম মুজের বাচ্চা দেখে ও আল্লা মুজ, ওরে কি কিউট রে, ওরে সোনা কুটু কুটু পুটু পুটু বলে মুজের বাচ্চাকে আদর করতে গেল। একজন বেশী আহ্লাদ করতে গিয়ে মুজের বাচ্চার গলা জড়িয়ে ছবি তোলার জন্য এগিয়ে গেল। ঝপের ভেতর বসে কটমট দৃষ্টিতে এদের কাণ্ডকারখানা দেখছিলেন মুজের মা। তাঁর বাচ্চাকে চুরি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভেবে এইবার দিলেন ধাওয়া। মুজের বাচ্চা আকারে ছোটোখাটো হলেও পূর্ণবয়স্ক একটা মুজ আকারে দুইটা ষাঁড়ের সমান। তার উপর আবার মাথার উপর বাহারি শিঙ। পরের ঘটনা ইতিহাস। সংক্ষেপে বন্ধু তাঁর অবস্থা বলল, মুজ তাকে নাকি প্রায় আধ মাইল ধরে ধাওয়া দিয়েছে। সে দৌড়াতে দৌড়াতে এক ঢালু বেয়ে নিচে গড়িয়েছে, উঠে আবার দৌড়িয়েছে। এরপর তাকে ফেলে মুজের মা আবার গাড়ির কাছে ফিরে এসে দেখে বাকি বন্ধুগণ গাড়ির ভেতর বসে আছে গাড়ি লোক করে। মর্কটদের দেখে আবার তাঁর মেজাজ খারাপ হল, শুরু করলো তাঁর অতিকায় শিঙ দিয়ে গাড়িকে ঢুস দেয়া। যাইহোক, সর্বশেষ ফলাফল ভ্রমণ ট্রমন চাঙ্গে উঠিয়ে ভাঙ্গা গাড়ি আর ভাঙ্গা হাত পা নিয়ে তারা ওইখান থেকেই বাড়ির পথে রওনা দেয়।
লেসন নাম্বার ওয়ান - কোন আপাত একাকী শিশু তা মানবশিশুই হক বা অন্য কোন প্রাণীর দেখলে জানবেন মা আসে পাশেই আছে।
লেসন নাম্বার টু - মায়ের সাথে সন্তান নিয়ে মামদোবাজি করবেন না। মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশির ফল শুভ হবেনা।
লেসন নাম্বার থ্রি - ভ্রমণে নিজের চোখ বেশী ক্যামেরার চোখ কম ব্যাবহার করুন।
জল স্থল আকাশ ভ্রমণ
রাস্তা দিয়েই যান, পানি দিয়েই যান আর আকাশপথেই যান যাত্রা উপভোগ করুন। জ্ঞানী লোকেরা বারবার বলতে বলতে গলায় ফেনা উঠিয়ে ফেলেছে, গন্তব্য নয় ভ্রমণের আসল মজা পথেই। আমাদের দেশ, ভারত বা ইউরোপে ভ্রমণ হলে নিজের গাড়ির চেয়ে বাস বা ট্রেনে করেই ভ্রমণ সহজ। ইউরোট্রিপ মারতে হলে schengen visa যোগাড় করে বাস/ ট্রেনের সাপ্তাহিক পাস কিনে বেড়িয়ে পড়ুন ব্যাকপ্যাক কাঁধে নিয়ে। এদের বর্ডারগুলো এমন যে ঘুরতে ঘুরতে কখন কোন দেশ থেকে কোথায় চলে এসেছেন টেরটিও পাবেন না। পকেটে পয়সা বেশী থাকলে দুই একটা ক্রুজ ট্রিপ মারতে পারেন আটলান্টিক বা প্যাসিফিকে। উড়োজাহাজ ভ্রমণ হলে সবসময় খেয়াল রাখবেন হাতে যেন অতিরিক্ত সময় থাকে। আমার নিজের উড়োজাহাজ ভ্রমণের কপাল বরাবরই খারাপ। আমি উঠলেই কোন একটা কলকব্জা বিগড়ে যাবে, নাহয় ঝড় বৃষ্টি শুরু হবে। আর নাইলে ইমিগ্রেশনে আমার আণ্ডির ভেতর বোমা বা বন্দুক লুকানো আছে ভেবে গ্যাঞ্জাম শুরু করবে। আমি বার বার আয়নাতে নিজেকে খুঁটিয়ে দেখি চেহারার ভেতর চোরচোর বা সন্ত্রাসী ভাব আছে কিনা। প্রতিবারই নিশ্চিত হই আমার অতি মাসুম চেহারা। অত্যাচারের শুরু প্রথম বার যখন আমেরিকা আসি তখন থেকে। আসার আগে লোকজন কত কত জ্ঞান দিয়ে দিলো। যেমন বিমানের বাথরুমে সাবধানে ফ্ল্যাশ করতে, এতো জোর যে টাট্টি এর সাথে নিজেও নাকি ফ্ল্যাশ হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। কোন এক মহিলাকে নাকি কমোড কেটে বের করতে হয়েছিল। সাথে একটা পানির বোতল রাখতে বলল সবসময়, খাওয়া ও ধোওয়া দুই কাজের জন্যই। কিন্তু এতো জ্ঞানের ফাঁকে আসল জ্ঞানটাই কেউ দিল না। ইমিগ্রেশন যে মাঝেমাঝে কত বড় খবিশ হতে পারে সেইটা কেউ বলে দেয়নি। আমি তাই নির্ঝঞ্ঝাটে দুবাই, লন্ডন হয়ে একটানে হিউস্টন চলে আসলাম। মনে মনে ভাবছি, আইলাম আমি আমেরিকা আইলাম। তিন ঘণ্টা বিরতি। ইমিগ্রেশন এর কাজ সেরে আবার বাক্স পেটরা পরের ফ্লাইটে উঠিয়ে আলাবামা রওনা দেয়ার জন্য যথেষ্ট সময়। লাগলো নয় ঘণ্টা। আমাকে চোরের মত যেই রুমে বসিয়ে রেখেছিল সেখানে দাড়ি ছাড়া একমাত্র আমি। একপাশে পাকিস্তানী, একপাশে ফিলিস্তিনি আর অদূরে সিরিয়ার লোক। সুতরাং আপনার নামের মধ্যে যদি মোহাম্মদ, আহমদ, বিন, ওমর , হোসেন ইত্যাদি থাকে মাঝেমাঝে আম্রিকা সহ কিছু জায়গায় একটু অতিরিক্ত সমাদর পেতে পারেন। লন্ডনের ইমিগ্রেশনও কোনরকম কম খবিশ নয়। ভিসা থাকার পরেও একবার আমাকে ঢুকতে দিতে মহা গাইগুই করলো। পরিশেষে যখন বুঝল আমি নাছোড়বান্দা তখন আমাকে দিয়ে পুলিশের পিঠ চুলকানির মতো একটু দোভাষীর কাজ করিয়ে নিলো। এখন এরা গ্লোবাল এন্ট্রি, নেক্সাস ইত্যাদি নামে নানা দেশে নানা ধরণের প্রোগ্রাম খুলেছে। পয়সা দিয়ে সেইখানের মেম্বার হলে আপনাকে অসন্ত্রাসী হিসেবে সার্টিফিকেট দিয়ে এয়ারপোর্টের ঝামেলা কমিয়ে দেবে। তারপরেও এয়ারপোর্ট ভেদে একই কাজ এক ঘণ্টাও লাগতে পারে, আবার চার-পাঁচ ঘণ্টাও লাগতে পারে। এখানে পৃথিবীর সবচেয়ে খবিশ এয়ারপোর্টগুলোর একটা তালিকা দেয়া আছে। ২০১১ এর তালিকা। আরও অনেকেই প্রতিবছর এরকম তালিকা করে থাকে, নানা অদলবদল হয় তবে নিউইয়র্ক এর JFK, লস এঞ্জেলস, লন্ডনের হিথ্রু এরা সবসময়েই চামার এয়ারপোর্টগুলোর সেরা দশে থাকে। বিকল্প থাকলে এই জাতীয় এয়ারপোর্ট গুলি এড়িয়ে চলুন। মোদ্দা কথা হচ্ছে ভাবিয়া করিও কাজ। কোথায় ল্যান্ড করতে যাচ্ছেন, কোথায় ইমিগ্রেশন হচ্ছে সেই সম্পর্কে আগে থেকে একটু খোঁজখবর করে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে রাখাই ভালো। অনেকের ভুল ধারণা যে বিদেশী পুলিশ মানেই বড় ভালো লোক, বিদেশী ইমিগ্রেশন মানে অনেক আইনকানুন জানা প্রফেশনাল লোক। এটা সবসময় ঠিক না। আমি আমেরিকা, দুবাই, ইংল্যান্ড, ইন্ডিয়া সব এয়ারপোর্টেই চরম রেসিস্ট আর আনপ্রফেশনাল লোকের দেখা পেয়েছি। এরা আপনাকে লাঠি দিয়ে পেটাবে না কিন্তু হয়তো জাত, ধর্ম বা দেশ নিয়ে এমন একটা ইঙ্গিত পূর্ণ কথা বলবে বা এমন একটা আচরণ করবে যে নিজেকে ভীষণ ছোট মনে হবে। এরকম কোন ইমিগ্রেশন বা এয়ারপোর্ট অথরিটির সম্মুখীন হলে মাথা ঠাণ্ডা রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ। তর্ক করার অপরাধে আপনাকে পসিবল থ্রেট হিসেবে দেখিয়ে বিমানে উঠতে না দেয়ার ক্ষমতা আছে এই বদমাইশদের। যেটা করতে পারেন তা হচ্ছে এদের সাথে কোন প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে এদের নাম পদবী টুকে নিয়ে আসে পারেন। পরে ভ্রমণ শেষ করে এদের ডিপার্টমেন্টে 'ইমেইল বা ফোন করে আপনার অভিযোগ জানিয়ে দিন।
লেসন নাম্বার ওয়ান - যে পথেই ভ্রমণ করুন না কেন পথকে ভালবাসুন, পথ উপভোগ করুন।
লেসন নাম্বার টু - ভ্রমণে নানা ধরণের মানুষ দেখতে পাবেন। মানুষ দুনিয়ার সবচাইতে রেসিস্ট প্রাণী। খালি ভাগাভাগি করে। প্রথমে নিজেদের ভাগ করে, সাদা কালো হলুদ বাদামি থেকে শুরু করে হিন্দু মুসলমান হয়ে শিয়া সুন্নি ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয়। এরপরে ধরে বানরদেরও ভাগ করে দেয়, এইটা শিম্পাঞ্জী, এইটা ওরাং ওটাং ... হরিণদের ভাগ করে এইটা এল্ক, এইটা মুজ, এইটা বলগা ইত্যাদি ...এমনকি কলা পাইলেও ধরে ভাগ করে দেয় এইটা সাগর, এইটা সবরি, এইটা চম্পা বলে। আবার একই সাথে মানুষ দুনিয়ার সবচেয়ে মায়াদারি প্রাণীও। ঘুরতে ঘুরতে আচমকা যেমন কাছের মানুষের কুৎসিত চেহারা দেখতে পারেন, তেমনি আবার অচেনা অজানা কোন মানুষের প্রবল ভালবাসাও পেয়ে যেতে পারেন।
লেসন নাম্বার থ্রি - বেশ কিছু দেশের (বিশেষত আম্রিকার) ইমিগ্রেশন বড়ই খচ্চর। মাথা ঠাণ্ডা রাখুন, হাতে সময় রাখুন।
ভ্রমণের টেকাটুকা
ভ্রমণ করতে দুইটা জিনিস লাগে এনার্জি আর টেকাটুকা। এনার্জির জন্য না হয় দুই প্যাকেট এনার্জি বিস্কুট শার্কে চুবায়ে খেয়ে নিলেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে টেকাটুকা পাবেন কো ? ভ্রমণ করতে টাকা লাগে, সেই টাকা পাবেন কই। দার্শনিক মার্কা কথা বলি একখানা আগে। জ্ঞানী লোকেরা বলে গেছেন - No one is 'too busy' in this world. It's all about priorities । আপনার বন্ধু, প্রেমিক বা যেকোনো পরিচিত মানুষের সাথে যদি আপনি কিছু সময় ব্যয় করতে চান কিন্তু তার ব্যস্ততার কারণে যদি সেটা প্রায় কখনোই না হয়ে থাকে তখন বুঝবেন - ডাল ম্যায় কুচ কালা হ্যাঁয়। সবাই ব্যস্ত এই দুনিয়ায় কিন্তু কে কি নিয়ে ব্যস্ত সেটাই বড় কথা। একই কথা সামান্য হলেও টেকাটুকার ব্যাপারে বলা যায়। জোটে যদি মোটে একটি পয়সা খাদ্য কিনিও ক্ষুধার লাগি, দুটি জোটে যদি তবে একটিতে ফুল কিনে নিও হে অনুরাগী। দিন বদলে গেছে। ফুলের মধ্যে এখন আর গন্ধ নাই, আছে খালি কেমিক্যাল। তাই শুধুশুধু ফুল কিনে সেকেন্ড পয়সা ব্যয় না করে সেই দ্বিতীয় পয়সা ভ্রমণে ব্যয় করুন। ঘুরতে হলে তারেক অণুর মতো চোরাই পয়সা (!) বা সুপারম্যান এনার্জির দরকার নেই। দরকার ওরকম একটি মন, দরকার আগ্রহ, ইচ্ছা। টেকাটুকা সবারই আছে, কারো কম কারো বেশী। আপনার সেই টেকাটুকা দিয়ে ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য একটা ফ্ল্যাট কিনবেন, নাকি আরামের জন্য একটা গাড়ি কিনবেন, নাকি সবকিছুর মায়রে বাপ বলে বের হবার সুযোগ পেলেই কাঁধে একটা হ্যাভারস্যাক ঝুলিয়ে বের হয়ে পড়বেন সেটা আপনার সিদ্ধান্ত। ইউরোপের অনেক যাযাবর পার্টি ব্যাকপ্যাকার ট্যুর মারে। কাঁধে একটা হ্যাভারস্যাকে শুধুমাত্র অতিপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ঝুলিয়ে ফি আমানিল্লাহ বলে বেরিয়ে পড়ে। ট্রেন, বাস, পায়ে হাঁটা যখন যেটা সহজ হয় সেটা করে। রাতে চিত কাইত হোটেল টাইপের হোস্টেলে কোনমতে রাত কাটিয়ে পরদিন আবার পথে। অনেক সময় ট্রেন বা বাসেই রাতের ঘুম সেরে নেয়া। আপনার যদি খাওয়ার জন্য তিন বেলা লাক্সারি ফুড, ধোয়ার জন্য নরম টিস্যু পেপার আর ঘুমানর জন্য মেমরি ফোম আর এয়ারকন্ডিশন লাগে তবে আপনার ঘোরাঘুরি একটু খরচের ব্যাপার হবে অবশ্যই। আর আপনি যদি একটা জিনস পড়ে দুই সপ্তাহ কাটিয়ে দিতে পারেন, প্রয়োজনে কলারুটি খেয়ে দিন পার করে দিতে পারেন, ষ্টেশনের বেঞ্চে হ্যাভারস্যাকে মাথা রেখে দিব্যি কয়েকঘন্টা ঘুমিয়ে নিতে পারেন, ট্রাক ড্রাইভারের সাথে খাতির করে ট্রাকের পেছনে বসে দিব্যি এক সহজ থেকে অন্য শহরে চলে যেতে পারেন তবে আপনার জন্য ভ্রমণ খুব বেশী খরচের না। তারপরেও আমাদের ছকে বাঁধা নুন আনতে পান্তা ফুরানো আটপৌরে মধ্যবিত্ত জীবনে ভ্রমণের সময় সুযোগ সবসময় হয়তো হয়না। কিন্তু যখন হয় তখন যেন সামনে পরীক্ষা, শরীর ম্যাজম্যাজ করে, এতগুলা সঞ্চয়ের টাকা বের হয়ে যাবে, এই সিজনে গরম বেশী, আফিসের বস রাগ করতে পারে ইত্যাদি নানা অজুহাত দিয়ে তাকে দূরে ঠেলে দিবেন না। আমার এরকম অনেক বন্ধুবান্ধবকে দেখেছি। সারাবছর কান্নাকাটি করবে কোথাও যাওয়া হলোনা বলে, জীবনে কিছুই দেখে হলোনা বলে। কিন্তু যখন খানিকটা সময় সুযোগ আসবে তখন কোন একটা অজুহাতে পিছিয়ে যাবে।
লেসন নাম্বার ওয়ান - ফুল কিনে পয়সা নষ্ট করবেন না।
লেসন নাম্বার টু - ভ্রমণ করার টেকা নাই এই বলে আফসোস করার আগে আরেকবার ভেবে দেখুন কথাটা সত্যি কিনা।
পদ্ম-পুকুর
সব মানুষেরই একটা পদ্ম-পুকুর থাকে। সিটিজেন কেনের যেমন Rosebud , আমাদের হয়তো পদ্ম-পুকুর। আমার পদ্ম-পুকুরের গল্পটা বলি। ক্লাস টু তে পড়ি তখন। এক বন্ধু খবর আনল স্কুল থেকে মাইল খানেক দূরে একটা দারুণ জায়গা আছে। একটা বিশাল পুকুর , নাম পদ্ম-পুকুর। ঢাকা শহরের মাঝখানে বিশাল পদ্ম-পুকুর থাকবে এটা হজম করা কষ্ট, কিন্তু সেই বয়সে আমাদের সবই হজম হত। একদিন বিকেলে বাসাবো মাঠে খেলতে যাবার নাম করে শুরু হল আমাদের চার পাঁচজনের পদ্ম-পুকুর অ্যাডভেঞ্চার। বাসাবো মাদারটেক পার হয়ে আমরা হেঁটেই যাচ্ছি, হেঁটেই যাচ্ছি। দেড় ঘণ্টা হাটার পরেও ক্লান্তি নেই। অবশেষে একসময় মিলল আমাদের পদ্ম-পুকুর। ততক্ষণে বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা। বাসায় ফেরার পর বিস্তর উত্তম মাধ্যম নিশ্চিত সুতরাং ওই নিয়ে আর মাথা ঘামাচ্ছিলাম না আমরা। মনে হল আমরা ঢাকা ছাড়িয়ে কোন গ্রামে চলে এসেছি। বেশ কিছু ধানক্ষেতও দেখা গেল আশে পাশে। কিছু গাছপালা, অল্প বাড়িঘর একটা ছোট খাল আর মাঝখানে ফুটবল মাঠের সমান আকারের বেশ গভীর এক গর্ত। ওইটাই পদ্ম-পুকুর। গর্তের ভেতরে কোন পানি নেই, খটখটে শুকনা। আমরা ঢাল বেয়ে হৈহৈ করে সেই শুকনা পুকুরে নামলাম। পুকুরের একেবারে মাঝে গিয়ে চারপাশে তাকিয়ে ঠিক কি দেখেছিলাম মনে নেই। চারপাশে কিছু গাছপালা, দূরে ধানক্ষেত, ঘর ফেরা পাখির কিচিরমিচির। তাই দেখে মনে হল অতিপ্রাকৃত কোন দৃশ্য দেখছি। কিন্তু সেটাও কোন বড় ব্যাপার না। পদ্ম-পুকুরের কথা মনে আছে এর যাবার পথের কারণেই। যেতে যেতে আমাদের দুই বন্ধুর মধ্যে মারামারি লেগে গেল। কিছুক্ষণ খামচাখামচি করে এই দুজনেই আবার একটু পরে ভাগ করে ইগলু ললি খেতে লাগলো। একজনের স্যান্ডেল খুলে ড্রেনে পড়ে গেল। আমরা প্রথমে খুব একচোট হেসে পরে একেকজন একেকটা গাছের ডাল নিয়ে খুচিয়ে সেটা উদ্ধারে নামলাম। পথে একটা টিনের বাড়ি দেখে অকারণেই কিছুক্ষণ ঢিল ছুড়ে ধাওয়া খেলাম।
বহুকাল চলে গেছে এরপর। আমার স্কুলজীবনের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুটির চেহারা ঠিক মনে নেই, প্রথম প্রেমিকাকে কখনও রাস্তায় দেখলে চিনতে পারবো কিনা সন্দেহ আছে, অকালে হারিয়ে যাওয়া আমার এক ছোট বোনের চেহারা মনে করতে পারিনা মাঝে মাঝেই, অনেক ভিড় ঠেলে দেখা কাবা শরীফের হাজরে আসওয়াদ দেখতে কেমন ছিল মনে নেই, নিজের প্রথম লেখা গল্পের নাম ভুলে গেছি। তবে পদ্ম-পুকুর মনে আছে বেশ। আমার কাছে তাই ভ্রমণ মানে পদ্ম-পুকুর। আমার কাছে তাই ভ্রমণ মানে পথ, গন্তব্য না। কোন ভ্রমণের প্ল্যান শুরু করা মাত্রই আমার মাথায় তাই গান বাজা শুরু হয়, পদ্ম পুকুরে যাই, পদ্ম পুকুরে যাই। ঘুরেফিরে চলে আসার পরেও সেই গান থামে না, বুকের এক কোনে গুনগুন করে বাজতে থাকে। কক্সবাজারেই যাই, মায়ামি বিচেই যাই, মধুপুরের জঙ্গলেই বনভোজন করি আর রকি মাউন্টেন এর মাথায় বসে বারবিকিউ করি না কেন সবই আমার কাছে তাই পদ্ম-পুকুর।
How to Travel Like Tareq Onu
স্বল্প সময়ের জন্য দেশে গিয়ে তারেক অণুর সাথে দেখা। আমি তিন সপ্তাহের প্রায় পুরো সময় যখন ঢাকায় বসে কাটিয়েছি তখন এই বান্দা একবার দেশে টেকনাফ যায় তো আরেকবার তেতুলিয়া যায়। ফোন করে বলে, চলেন অমুক চরে যাই, চলেন তমুক রাজবাড়ী দেখে আসি। আমি হয়তো বলি, আজকে আত্মীয়ের বাসায় দাওয়াত, কালকে হরতাল, পরশু বউকে নিয়ে মার্কেটিং এ যেতে হবে। বেশীরভাগ লোকজনই আমার মতই অলস, আমার মতই অজুহাত খুঁজে। ভরসা একটাই আমাদের জন্য তারেক অণু আছে। ঘুরুক ব্যাটা, ঘুরে ঘুরে দুনিয়া কাদাকাদা করুক আমরা কম্পিউটার মনিটরের দিকে তাকিয়ে সেই কাদার ছাপ দেখে না হয় দীর্ঘশ্বাস ফেলি। বুঝতেই পারছেন, এতক্ষণ আমার এই লেখা পড়ে হুদাই সময় নষ্ট করেছেন। Travel Like Tareq Onu সম্ভব না। আমাদের সবার মধ্যেই একটা তারেক অণু আছে। দুনিয়াদারীর মায়রে বাপ বলে যতদিন না সেই ভেতরের তারেক অণুকে বের করে আনতে না পারছি ততদিন না হয় এই বাইরের তারেক অণুর পিছে পিছে আমরা ঘুরতে থাকি।
সময় ও সুযোগ পেলে এই বান্দাকে পিস পিস করে আফ্রিকার মানুষখেকোদের হাতে তেলমশলা সহ তুলে দিব। কিন্তু আপাতত আর সকলের মতই দীর্ঘশ্বাস ফেলে এই বান্দার জন্য একটু বিজ্ঞাপন করে এইখানেই লেখা শেষ করি। শ-দুয়েক ভ্রমণ ব্লগ লিখে এই বান্দা আমাদের দুনিয়ার আগারে পাগারে ঘুরিয়ে এনেছেন। এখন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের বাংলাদেশী প্রতিনিধি হয়ে যেন আমাদের জীবন ঈর্ষায় আরও ভাজাভাজা করতে পারে সেই সুযোগ একে দিন। বিস্তারিত এখানে পাবেন -তারেক অণুকে ভোট দিন আর এখানে - অণু কে কেন ভোট দিতে চাই
লেসন নাম্বার লাস্ট - তার্কাণু অদ্ভুদ !
মন্তব্য
facebook
ইটায় পেজগি লাগায় দিলাম
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বরাবরের মতোই দুর্ধর্ষ! রসিকতা করে লিখলেও, নির্মম কিছু সত্য কথা লিখেছেন। ভ্রমণসঙ্গীদের মেজাজ মর্জি একটা বিরাট বড় ইস্যু, নিজের জীবন থেকে নেওয়া একদম। একই মেজাজের না হলে ঘুরতে যাওয়াটা আসলে বিরাট গ্যাঞ্জাম, পদে পদে ভুল বোঝাবুঝি।
আর অণু তারেকের অবৈধ অর্থের উৎস উল্লেখ করার জন্য ধন্যবাদ। অনেক দিন ধরেই সন্দেহ করতেছি যে উনি সম্ভবত স্মাগলার
অলমিতি বিস্তারেণ
এইটা আমিও সন্দো করসিলাম। তাই টেকাটুকা পাওয়ার আশায় তার ভুট চাইলাম
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
চরম উদাস কর বিভাগের কাছে মনে হয় ধরা খাইছে আগে ! হে সবাত্তে বেশী বোজে!
facebook
লেখায় পাঁচ তারা দাগালাম অণু ভাইয়ার জন্য লেখা বলে।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
অণু ভাইয়া কি চামচি
হুহ
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
হৈ পাগলি, চউ দা আসলে জেলাস
facebook
চউ একটা বদ লুক।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
১২রকম লোকের পোস্টার অবধি পড়েই হাসতে হাসতে মারা গেছি। রেজারেক্ট হয়ে নি তারপর বাকিটা পড়ব।
"বাঁদরের হাতে খুন্তি দেয়া কক্ষনো উচিৎ হয়।" - নয় হবে?
অণুদা কিন্তু পাক্কা দা ক্যামেরামান টাইপ, সে সবকিছু দেখেই যে শুধু ও আল্লা বলে ছবি তোলে তাই না তারপর বাকিদের বলে সেটার পাশে তার একটা ছবিও তুলে দিতে।
দা ক্যামেরামান
এক কথায় অসাধারণ, তার্কাণু (তারকা অণু) না হয়ে উপগ্রহানু হইলেও সমস্যা নাই। উনার অবৈধ টাকা পয়সার কথা উত্থাপনে সহমত
-গেঁয়ো ভূত
হ
পড়ার প্রিপারেশন নিচ্ছি।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
আইচ্ছা
ভোট দিয়া আসি
হ ভুট দেন
ত্রিভঙ্গ মুরারি পোজে হাঁটতাম বলে জীবনে আব্বুর বকা খেয়ে অনেক কষ্টে স্বাভাবিক ভংগী প্রায় আয়ত্ত্বে আনলাম
লেখা চরম উদাসীয়।
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
লেখা অতিশয় সুখাদ্য হয়েছে। আমি আপনার এসো নিজে করি সিরিজের ফ্যান। ঘোরাঘুরি আমারো প্রিয়, i had my fair share, কিছু নিজের একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ডের কল্যাণে, কিছু না-বেড়াইলে-ভাল্লাগেনা-সংক্রান্ত চুলকানির কল্যাণে।
ভ্রমণসঙ্গী ভালো না হলে যাইইনা, খামোখা ভুয়া স্মৃতি তৈরি করে কি লাভ? প্রয়োজনে একাই ঘুরে আসি। যেমন দার্জিলিং ভ্রমণে গিয়ে চারদিন একাই ঘোরাঘুরি করেছি, রাস্তায় বন্ধু বানিয়ে নিয়েছি।
আমেরিকাতে আসার ছয় মাসের মধ্যে দশটা স্টেট ঘুরে ফেলেছি। এসিস্ট্যান্টশিপের টাকায় এর চেয়ে বেশি সম্ভব হয়ে উঠছে না। আরো বেশি টাকাপয়সা থাকলে ভালো হতো, ইচ্ছেমতো দাপিয়ে বেড়াতাম। এখনো ওয়েস্ট কোস্ট ট্রিপ মারা হলোনা। কোনো এক দিন দিবো দৌড়
ভালো থাকবেন।
আম্রিকায় ফ্রি ঘুরার দুইটা উপায় হচ্ছে ভার্সিটি/প্রফেসরের পয়সায় কনফারেন্সে যাওয়া আর চাকরীর ইন্টার্ভিউ দেয়া। কনফারেন্সের উছিলায় আমি ফ্লোরিডা, ভেগাস, ক্যালিফোর্নিয়া ঘুরে আসছি। আর ইন্টার্ভিউ এর উছিলায় অন্তত গোটা বারো ফ্রি ট্রিপ আরও।
রাস্তায় বন্ধু বানাতে পারলে কিন্তু দারুণ ব্যাপার। তারকাণুর এই ক্ষমতা আছে। যেইখানে যায় বন্ধু বানায়ে ফেলে। আমার অবস্থা উল্টা, শত্রু বানাতে পারি সহজে
কনফারেন্সের সুবাদে আমিও মিসিসিপি, এলাবামা থেকে ঘুরে এসেছি। সামনে সাউথ ক্যারোলাইনা তে যাবো। চাকরির ইন্টারভিউ শুরু হইতে হইতে ব্যাপক দেরি, মাত্র করতেসি মাস্টার্স, এরপরে পিএইচডি'র শেষের দিকে ইন্টারভিউ
ভেগাসে কনফারেন্স, আর কি লাগে জীবনে !!
এরা বড় বড় কনফারেন্স অনেকগুলাই ভেগাসে করে। সব ব্যাটা ধান্দাবাজ, রথ দেখা কলা বেচা দুইটাই চলে।
পুরাই কম্প্রিহেন্সিভ গাইড। তবে, সমস্যা হল আপনি এত বেশি স্যাটায়ার রম্য লিখেছেন, যে আপনার সুপরামর্শ(!) গুলোও সত্য কিনা সন্দেহ হয়।
ত্রিভঙ্গ মুরারী পোজের ছবি দেখতে চাই।
আর, আপনি যে হাজী মানুষ, সেটাও জানা ছিল না।
নামের আগে আলহাজ্ব লাগিয়ে ইলেকশনও করতে পারবেন একসময়
আমাকে কখনও দেখছেন মিথ্যা কথা বলতে বা ফাতরামি করতে ??
কোন দিন না ! কার ঘাড়ে কয়টা মাথা!
facebook
কথা ঠিক, অণুদি'র(ঝুটিওয়ালা ফটুক দেখে দিদি বলে ডাকতে ইচ্ছে হলু এখন যদি অণু কয়, দিদি 'বলে ডাকো যদি দেবো গলা টিপে' তাইলে কিন্তু ভুট দিবো না ) টাকার উৎস নিয়ে সব্বার বিস্তর ভাবনা ছিল, আপনি সব ফকফকা করে দিলেন! হাজ্বী মানুষ হয়ে কেম্নে প্লেনের জানালা দিয়ে কম্মোকাবার করা যায় বুদ্ধি দিলেন যে বড়! আপ্নের হজ্জ্ব কিন্তু হালকা হয়ে গেলু বাস্তবে আপনি ঠিক কতটা মজারু মানুষ সেটা জানবার খুব ইচ্ছা ভাইয়া দারুণ মজারু/শিক্ষনীয় লেখাটার জন্য অনেক ধন্যবাদ। অণু'র জন্য শুভকামনা থাকলো।
ঝুটিওয়ালা অণুদি
অণুদি
উদাসদাও অদ্ভুদ!
হ
খুব ভালো লেগেছে ! লেখার ভঙ্গি ঈর্ষনীয় ।
আপনার সব লেখাই কেন জানি অফিস এ বইসা পড়ি আর হাসি, কেম্নে লেখেন ভাই এইসব? 'ঘুরতে হলে তারেক অণুর মতো চোরাই পয়সা (!) বা সুপারম্যান এনার্জির দরকার নেই।' আমি আগেই বুজতে পারছিলাম যে অনু মিয়া স্মাগলার নাইলে এত টাকা পায় কেম্নে!
Kristen Stewart- এই মেয়েটা সুন্দরী হয়তো হতে পারে, বাট আমার কাছেও ওকে ,,,,দের মতোই মনে হয়।
বাংলায় প্রথম ভ্রমন বাইবেল; বাইবেলই বললাম, অন্যটা বলার সাহস পেলাম না!!
ইনফ্যাক্ট আস্ত একটা বই লিখতেছি ভ্রমণ বিষয়ে। কিভাবে লেখালেখি করবেন, কিভাবে গবেষণা করবেন আর কিভাবে ভ্রমণ করবেন এই তিনটা বিষয়ে এত কিছু জ্ঞান দেয়ার আছে যে এক লেখায় পোষাবে না। আমি তাই এই তিনটা এসো নিজে করি নিয়ে তিনখানা বই লেখা শুরু করেছি।
লেখায় ১০০ তারা দাগানোর কোন বন্দবস্ত থাকলে দাগিয়ে দিতাম। আফসোস, সেই ব্যবস্থা নাই। আপনি ভাই, একটা অভিশাপ। আজকে পোলাপানরে টিউটোরিয়াল ক্লাসে প্রব্লেম শিট ধরায়ে দিয়ে আমি আপ্নার লেখা পড়ে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি। পোলাপান তো ভাব্সে এই TA অদ্ভূদ। কেন্ ভাই দিনে দিনে পোষ্ট করেন? যাই হোক, অণুদার স্মাগলারগিরি প্রকাশ হয়েছে এই আনন্দে উল্লাস
-নিশিতা
তোরে পাইয়া লয় বদ কুতাকার
facebook
একে তো টেকাটুকা ছাড়া ভুট দিলাম তার উপর আবার হুমকি ! নাহ্, পিথিমীতে নাই ইন্চাপ। - নিশিতা
লুঙ্গী আদায় করেন। এই ব্যাটা ভোট প্রতি একটা করে লুঙ্গী দিচ্ছে।
চিত্র - তারেক অণুকে ভুট দিয়ে লুঙ্গী পেলেন শাকিব খান
"গতরাতে খেয়েছিনু আধখানা চাপ" শীর্ষক কাব্যধর্মী ছিনেমার কেন্দ্রীয় অণুচরিত্রে তাইলে ছাকিপ খান অভিনয় কর্তাছে... !!! শুটিং শুরু হইল কবে???
চউদা, ভ্রমণ সঙ্গীর ক্লাসিফিকেশন টা দারুন!!!!
"আমার কাছে তাই ভ্রমণ মানে পথ, গন্তব্য না"
অ-নে-ক বছর আগে প্রথমবার চিম্বুক ঘুরে আসার পর অনেকেই জানতে চায় চূড়ায় উঠে কি দেখলাম? বলি, মেঘ ছাড়া কিছু দেখিনি, যা দেখার পুরোটা পথ জুড়ে দেখেছি।
আমি 'বাংলাদেশ' মার্কায় ইবনে বতুতা (জুনিওর) কে ভোট দিয়েছি।
অনেক সময় তাই হয়, মূল জায়গা দেখে হতাশ হতে হয়। কিন্তু পথটাই দারুণ লাগে।
ভাইসব, বোইন সব, এই ছেলেরে আমি চিনি, এর অনেক গোপন খবর জানি। এই ছেলে আমারে একখান এসএলআর ক্যামেরা দিছি, এখন ক্যামেরা নিয়া ঘুরি আর ভাবি এই ছেলেকে ষড়যন্ত্র কইরা আমারে বিশেষ টাইপের ভ্রমণকারী বানাইলো!
(চরম চরম চরম চরম...........................)
তারেকানুর অর্থ সোর্স নিয়ে মশকারীটা ধরতে পারলাম না...........................সরি!
মশকারী কই করলাম
তাইলে কুটি ট্যাকার কুশ্চেন এইটাই... সম্মানীত টারেক(ফরেন উচ্চারনে) অনু ভাইয়ের টেকাটুকার আসল রহস্য কি? পার্টনার হইতে মুঞ্চায়!!
ভ্রমণে ন্যাচারাল কল আসলেই একটা সমস্যা। একবার ঈদের সময় ট্রেইনের টিকিট না পায়া পুলিশের হাতে কিছু ধরায়া দিতে তারা তাদের রেস্ট এরিয়াতে আমারে আর আমার ৩ বন্ধুরে বসার জায়গা কইরা দ্যায়। মাঝে টহল দিতে যখন গেলো তখন দরজা লক কইরা গেলোগা। এর মইদ্দে আমাদের একজন মুতপো মুতপো বইলা চিল্লাফাল্লা শুরু করলো। তার দেখাদেখি বাকি সবতেরও চাইপা উঠলো। উপায় না দেইখা ট্রাইনের জানালা দিয়া মেশিনগান ছুটায়া দিলাম। তার খানিক পরেই পুরা ট্রেইন আন্ধার হয়া গেলো। বিষয় কি?? পরে শুনলাম...... মানে টের পাইলাম... আমাদের পাশেই ছিলো জেনারেটর রুম। মদীয় ত্যাগকৃত জল বাতাসে ভর করিয়া চিপাচাপা দিয়া কিভাবে য্যান জেনারেটরে ঢুকিয়া গিয়াছে। এবং এই অপমান সহিতে না পারিয়া পুরা জেনারেটর "আর ফাইরতেসিনা"(থ্যাংক্স টু তাসনীম ভাই) বলিয়া দেহত্যাগ করিয়াছে। সেই জেনারেটর পরে ফেনী গিয়া বদলাইতে হইসে...আর আমরা...ফেনী স্টেশনের পাশেই বাসা...আমগোরে পাইবো কে??
facebook
কাইত হয়া হুইত্যা মাটি থাপড়াথাপড়ি কইরা কূনো লাভ নাই। ট্যাটুকার হদিস দিলে ভুট দিমু, নো চুদুরবুদুর
***বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আমি চুদুরবুদুর শব্দের বুৎপত্তিগত প্রতিষ্ঠানের ছাত্র......এবং ঘটনার সাক্ষীও বটে। এইটার মানে, আমার থিকা কেই বা ভাল জানে?
লুঙ্গী আদায় করেন।
মাঝখান থেকে শেষের দিকটা বরাবরের মতন দারুন লিখেছেন। কিন্তু শুরুর দিকটা কেমন যেন চরম হয়নি। ঠিক বুঝলাম না, কেন এমন হল?
মনে হয় শুরু দিকে সৌদি আর পাকি দেশ নিয়ে মশকরা করছি বলে অভিশাপ লাগছে
মুহাহাহাহা ( আনন্দের হাসি, ইমিগ্রেশনের গল্প শুনে ) । আমাকে হিউস্টন পোর্টালে একটাই প্রশ্ন করছে। বুড়া অফিসার পাসপোর্টে চোখ বুলায় চোখ টিপি দিয়ে বলে, তুমি এতো সুন্দর, এখনো সিঙ্গেল কেনো? দুই তিন মিনিটে এন্ট্রির কাজ শেষ।
সারাজীবন মহিলা হিসাবে যত দূর্ভোগ পোহাইছি আমেরিকার এয়ারপোর্টে সেই বেদনা কিছুটা কমছে। আমার নামে কিন্তু মুসলিম টাইটেল।
তবে এদের ডাটাবেসের কারো সাথে আপনার নাম মিলছে বলে বোধহয় এই ঝামেলায় পড়ছেন। নাম যত বাংলা আরবী মিশানো হবে তত কম ঝামেলা। বাংলা হইলে আরো ভালো।
যেমন তারেক অনু হইলে ধরার সম্ভবনা খুবি কম। আমার এক দাড়িওয়ালা কাজিন আছে ( নাফিসের মত দাড়ি না, সুন্নতী দাড়ি)। তাকে ধরে নাই, আর ডিজুস টাইপগুলার স্যুটকেস খুলে টুলে খারাপ অবস্থা। পরে আমরা হাইপোথিসিস বের করলাম যে নামের জন্যই এ অবস্থা।
শালার দুনিয়া, ইন্সাপ নাই।
আমি নানা সিকিউরিটি চেকিং এ ত্যক্ত বিরক্ত হয়ে সিদ্ধান্ত নিছিলাম টাওয়েল পড়ে ট্র্যাভেল করবো। কোথাও চেক করতে চাইলে টাওয়েল খুলে হাতে দিয়ে বলবো, চেক কর।
ভিরমি খাবে যে
facebook
কী বলবো? বলার ভাষা নেই।
জীবনে দুইটা শখ থেকে গেলো - তার্কানুর মত ভ্রমন আর চৌ(চউ)দার মত লেখন।
তার্কানুর মত ভ্রমন না হয় আপনি লিখে দিলেন - চৌদার মত লিখন /how to write like Chorom Udas কে লিখবে?
আপ্নে লিখে ফেলেন
how to write like Chorom Udas এর tutorial--
1. প্রথমে পাম টাম দিয়া ভাইজানের সাথে খাতির করেন।
2. তারপর চামে চিকনে ভাই এর ল্যাপ্টপ খানা মেরে দিন।
3. Password খানা হ্যাক করে লেখাগুলো সরিয়ে ফেলুন।
4. সেগুলো নিজের নামে আপলোড করুন!!!
এই হইল একমাত্র টেকনিক!! তা ছাড়া সম্ভব না!!! ভাই একটা অদ্ভুদ!!!
অটঃ হিজিবিজবিজ ভাই, 'চৌদা' লেখার সময় সাবধানে লেইখেন-'ঔ' কার দিতে গিয়া আবার ভুলে কখনো 'ও' কার লিখেন না!!! তাইলে পুরা কেলেঙ্কারী হয়া যাবে!!!
-------------------------
সুবোধ অবোধ
-----------------------------
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কেন এত বোকা হয়?!!
facebook
সচলে নামের বিবর্তন নিয়া জাতি কিন্তু সেইরাম টেনশনে আছে ।
এই যেমন ধরেন ,
তারেক অণু > তারেকাণু > তার্কাণু > অণুদি > ... ?
চরম উদাস > চ. উ. দা > চউদা > চৌদা > ... ?
সুজন চৌধুরী > সুজন দা > সুজন্দা > সুচৌদা > ... ?
কৌস্তুভ > কৌস্তুভ দা > কচুদা ( চরম উদাস প্রসূত কনে দেখা আলো দ্রষ্টব্য) > ... ?
...............................................................
...............................................................
................................. ইত্যাদি , ইত্যাদি
নামের এই বিবর্তনের ধারা কি কোন ধরণের সূত্র মেনে চলে ? কিউরিয়াস মাইন্ডের জানতে মুঞ্ছায়
লেখাটা উপাদেয়।
ঠ্যাং খোলা থাকার কারণ সম্ভবত আমীররা স্যাডিস্ট বলে, মুখ-টুখ চেপে---!
চ্যাগানো ভ্রমণকেই আসল ভ্রমণ বলে মনে করি।
এবার একটা সমস্যার কথায় আসি। বাংলাদেশে সাধারণত হপ্তায় দুটো উইকেন্ড এবং বছরে ২০ দিন ক্যাজুয়াল লিভ, ১১ দিনে ১টা আর্নড লিভ। এটা অবশ্য বোধহয় সারা দুনিয়াতেই এরকম। কোন দুর্ভাগা হাসপাতালে চাকরী করলে তার সপ্তাহে ৬ দিন কাজ। ছুটিছাটা নির্ভর করে কর্তার মেজাজ ও সহকর্মীর সংখ্যার ওপর। মুখপোড়া যদি ডাক্তার হয় তবে তাঁর ওয়র্কিং আ'র এর কোন লিমিট থাকে না এবং এই অসুস্থ পর্যায়ের বেশি ওয়র্কিং আর বাংলাদেশের বাইরে কোথাও আছে বলে জানা নেই। উদাহরণস্বরূপ বাংলাদেশে সার্জারীর একজন রেজিস্ট্রারের সাপ্তাহিক কর্মঘণ্টা কম করে ৭০-৮০ ঘণ্টা, ইন্টার্নদের ৭২ ঘণ্টার লিমিট থাকলেও গায়ের জোরে সেটাকে কোন কোন মেডিকেল কলেজে ১০০ ঘণ্টা ক্রস করানো হয়! বেতন ইন্টার্নদের মাসে ১০হাজার, রেজিস্ট্রারের ১৭ হাজারের মত,(সায়েবদের কুকুরের ক'টা ঠ্যাং এর সমান?) এভাবে যাদের কাজ করতে হয়, তাদের আসলে যে কোন ভালো কাজের মনন ও মেজাজ নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থায় রিফ্রেশমেন্টের জন্য প্রায়ই ওষুধ কোম্পানীর ওপর ভর করে অথবা পুওর ফান্ড ভেঙে যাওয়া হয় বিনি খরচের ঝটিকা ভ্রমণে! ২-৪দিন মেয়াদের! ইন্টার্ন থাকাকালীন দারিদ্র্যের দরুণ এমন একটি গুষ্ঠিশুদ্ধ বিনি পয়সার ভ্রমণে গিয়ে শেষে নাক-কান মলেছি! প্রায় ৭০-৮০ জনের গ্রুপ! সে এক প্যান্ডেমোনিয়াম! কাজেই ভ্রমণের লোকসংখ্যা কম হলেই ভালো, সেই সঙ্গে চাই অবসর। হরতালগুলো তো অকেজো। ভ্রমণের কালচারটাই নেই বলে ছুটি চাইলেই কর্তারা রাগ করেন। প্রমোশনের সুযোগ যায় কমে!
টাকাই ভ্রমণের একমাত্র শর্ত নয়, আগে চাই মন। আমার চেনা বহু কোটিপতি আছেন, যাদের কেউ কেউ আবার আমার শিক্ষক ও কলিগ সপ্তাহান্তে বাসভ্রমণ করে উপজেলা ও গ্রামে চেম্বার করতে যান! সারা সপ্তাহ শহরে কামিয়ে উইকেন্ডে একটু টাকাতে মাটির ঘ্রাণ- অহো! কী অনাবিল জীবন।
চরম উদাস ভাইকে স্যালুট অসামান্য লেখাটার জন্য।
এডাই একশ কথার এক কথা।
প্রফেশনাল লাইফে টাকার চেয়েও বড় সমস্যা ছুটিছাটা পাওয়া। তবে সবই আসলে মনের উপর। বহুত লোকজনকে দেখছি বিজি ফর নাথিং টাইপের। চাইলে অনেক কিছুই ম্যানেজ করা যায়।
'পদ্ম-পুকুর' নয় শুধু আরো অনেক কিছু আছে উদ্ধৃতি দেয়ার মত -
(কয়েকটা কপি পেস্ট করে মুছে দিলাম, পোস্ট এর প্রায় সমান সমান মন্তব্য দেখতে ভাল লাগবেনা)
বারো রকম সঙ্গীর ছবি, লেখা - মারাত্মক!!!
ক্যামেরা আর খাবার নিয়েও প্রচন্ড রকম সহমত!!!!
( কিভাবে আপনার স্ত্রীকে সাইজ করবেন / How to be a Real Man - এর অপেক্ষায় আছি চরম ভাবে)
আমার মধ্যে যে অণু আছে সে কিছুটা ঘুরতে পারলেও তারেকাণুর মত লেখতে যে পারবেনা তা নিশ্চিত।
আসল কথা কন, লিখতে ঠিকই পারবেন কিন্তু টাইপ করবেন না!
আহেন স্যাম দা, আমার লেখা আপনার নামে প্রকাশ হউক, আর আপনের ব্যানার আমার নামে
facebook
সেটাই। লেখতে ফারিনা বলে কান্নাকাটি করে অলস লোকে ।তবে আপনার মতো শিল্পীর হাত থাকলে লেখার চেয়েও বড় কাজ করা যায়, যেটা করে যাচ্ছেন আপনি। আমার প্রথম বইয়ের প্রচ্ছদ আর ডিজাইন করে দিবেন, ডিল মনে আছে তো??
চরম হয়েছে
বারো ক্যাটেগরির কয়েকটা কমন পড়লো। তাই ভালো ভ্রমণকারী হয়তো হওয়া হবে না! তবে লেখা চরম ভালো হৈছে।
বারো ক্যাটেগরির কয়েকটা আমারও কমন। নিজে খারাপ বলে লোকেদের জ্ঞান দেয়া যাবে না এমন তো কথা নাই, তাই জ্ঞান দেই
আমার কাছে ভ্রমণ শব্দটার মানে আবুল হাসান। 'এ ভ্রমণ আর কিছু নয়, কেবল তোমার কাছে যাওয়া...'
লেখা বরাবরের মতোই অতীব স্বাদু।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
চিন্তা করে দেখলাম আমি নিজেই 'দ্যা অভিমানী' গ্যাঞ্জাইম্যা ভ্রমণকারী ! সেক্ষেত্রে তো আমার কোন চিন্তা নাই, অন্যেরা ঠ্যালা সামলাক !
লেসনগুলো অমায়িক হয়েছে !
'দ্যা অভিমানী' ।আপনের নাম বদল করে দ্যা অভিমানী পণ্ডিত রাখেন
নাম বদলানোর কথা বললেন কেনু ? আজ রাতে খামু না !
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হাসতিছেন ক্যা ? এহ্ ! আমার বুঝি অভিমান হয় না ?
আপনার মান ভাঙ্গাতে আপনাকে লাউ দিলাম
হায় হায় ! এখন আমার লাউয়ের পিছে লাগা বৈরাগী সামলাবে কে ?
খাওয়া-দাওয়া নিয়ে যা বলেছেন,চরম সত্য।বেশি খেলেই বিপদ-যত ভালো খাবারই হোক।পাহাড়ের তাজা ফল স্বাস্থ্যকর মনে করে এক ভ্রমণসঙ্গী বান্দরবান শহর থেকেই একের পর এক ফল খাওয়া শুরু করেছিলো,পেঁপে,কলা আরো কি কি যেন।ফলাফল হয়েছিলো খুব খারাপ।হাজার হোক ঢাকার বিশুদ্ধ খাবার খাওয়া পেট- পিক ৬৯ এ আমরা যখন মুগ্ধ হয়ে পার্বত্য সৌন্দর্য গিলছি তখন ফলগুলো উনার গলা দিয়ে রিটার্ন টিকেট কেটে বের হয়ে এলো।জিপ ও জিপের যাত্রীরা শহীদ।
আমি একবার ফ্লোরিডার কম্লা খেতে খেতে শ-দুয়েক কমলা খাবার পর কি হয়েছিল -- সেই কথা থাক না গুপন
না না, বলেন, আমরা শুনি এবং বিমলানন্দ উপভোগ করি!
facebook
কমলা খাওয়ার পরে কী হয়েছিল ? "না না না, রবে না গোপনে / গোপন কথাটি রবে না গোপনে !"
"মরি এ কী তোর দুস্তর লজ্জা ?!" বলেন বলেন ! পাবলিক ডিমান্ড !
এসো নিজে করি সিরিজটাই চরম!!
"পথে পথেই পৌছে যাচ্ছি ভোর
পথে পথেই পেরিয়ে আসছি রাত
পথেই হারিয়ে ফেলছি কত না মুখ
তোমার সঙ্গে পথেই সাক্ষাত"
--------------------
সুবোধ অবোধ
----------------------
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কেন এত বোকা হয়?!!
জীবনে বহু কিসিমের ভোটের ক্যানভাস শুনেছি, এইটা বেষ্ট! তার্কাণুরে ভোট না দেওয়ার আর কোন উপায় থাকলো না।
হ, কপালের ফেরে পড়ে এখন শত্রুর জন্য ভোট ভিক্ষা করি
ভাই আপনার লিখা পড়ে *** চেহারার একজনরে দেইখা তার চেহারা নিয়া কমেন্ট করছি। কারণ সে ওতিরিক্ত বেয়াদপ ছিল। লিখা পইড়া মজা পাইছি। আর খুব-ই ইনফরমেটিভ লিখা!
---------------------
আমার ফ্লিকার
মারাত্মক।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
থিঙ্কু
বহুকাল চলে গেছে এরপর। আমার স্কুলজীবনের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুটির চেহারা ঠিক মনে নেই, প্রথম প্রেমিকাকে কখনও রাস্তায় দেখলে চিনতে পারবো কিনা সন্দেহ আছে, অকালে হারিয়ে যাওয়া আমার এক ছোট বোনের চেহারা মনে করতে পারিনা মাঝে মাঝেই, অনেক ভিড় ঠেলে দেখা কাবা শরীফের হাজরে আসওয়াদ দেখতে কেমন ছিল মনে নেই, নিজের প্রথম লেখা গল্পের নাম ভুলে গেছি। তবে পদ্ম-পুকুর মনে আছে বেশ। আমার কাছে তাই ভ্রমণ মানে পদ্ম-পুকুর। আমার কাছে তাই ভ্রমণ মানে পথ, গন্তব্য না। কোন ভ্রমণের প্ল্যান শুরু করা মাত্রই আমার মাথায় তাই গান বাজা শুরু হয়, পদ্ম পুকুরে যাই, পদ্ম পুকুরে যাই। ঘুরেফিরে চলে আসার পরেও সেই গান থামে না, বুকের এক কোনে গুনগুন করে বাজতে থাকে। কক্সবাজারেই যাই, মায়ামি বিচেই যাই, মধুপুরের জঙ্গলেই বনভোজন করি আর রকি মাউন্টেন এর মাথায় বসে বারবিকিউ করি না কেন সবই আমার কাছে তাই পদ্ম-পুকুর। এইরকম ভাবে যেদিন লিখতে পারব, সেদিন বুঝব লিখতে পারি।
facebook
সহমত....
----------------------
সুবোধ অবোধ
------------------------
শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি কেন এত বোকা হয়?!!
বিনয় কইচ্চেন???
উনি আবার একটু বিনয়ী মজুমদার !
আবার জিগায়
কালকে রাতে এই লেখা পড়েছি, আজকে সকালেই একটা মাটির ব্যাংক নিয়া আসলাম।
লেখা চ্রম হইছে । তারেক অণু আমার শহরের লোক, উনার টেকাটুকার ব্যাপারে আমারও চ্রম সন্দেহ আছে
-রিয়াসাদ তাশা
মাটির ব্যাংক কি টেকাটুকা জমানোর জন্য ?
আবার জিগায়
ভাইজান আপনি কি মতিবেদক ? লেখাতে উত্তম ঝাঁঝাঁ !
নাহ, মতিবেদক হইতে পারলে তো জীবন ধন্য হইত।
হাজী মাঠে নেমে পড়েছে ভোট চেয়ে অনু না জিতে যাবে কোথায়? তোমার লেখা পড়ে হা হা করে হেসে মন ভাল হয়ে যায় আর সে ভাল লাগা থাকেও অনেক সময় ধরে।
ভ্রমনের ব্যপারে আমি স্বার্থপর, স্বামী ছাড়া আর কারো সাথে ভ্রমন করতে তেমন পছন্দ করিনা। নানামুনীর নানামতে অনেক কিছুই ঠিক মতো হয় না। আমার ভ্রমন গন্তব্য নয় পথ, কথাটা খুব সত্যি।
জাতি ফ্লোরিডার কমলার পরিনতি জানতে ইচ্ছুক।
কিছু কথা থাক না গুপন
আপনি মিয়া আসলেই অদ্ভুদ। অণু অদ্ভুত স্কয়ার। আর এই লেখা অদ্ভুদ কিউব...
ডাকঘর | ছবিঘর
জালালি ভ্রমণ একদিকে দিয়ে ভালো, গাড়িতে বসেই অনেককিছু দেখা যায় যদি আপনাকে চালাইতে না হয়। এবং যেহেতু আমার ডিফল্ট ভ্রমণসঙ্গী হচ্ছে ক্যামেরা ম্যান ক্যাটেগরির তাকে ড্রাইভিং সীটে বসায় দিলে ক্যামেরার যন্ত্রণা থেকেও রেহাই পাওয়া যায়। সে ঘাড় শক্ত করে গাড়ি চালায় আর আমি ড্যাশবোর্ডে পা তুলে দিয়ে চ্যাগানো ভ্রমণ করি। গত লং উইকেন্ডেও একটা আপ ডাউন টোটাল ২৮ ঘন্টার লং ড্রাইভ দিছি
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
মাঝেমাঝে শুধু রোডট্রিপ বেশ লাগে। আমরা Fall Color দেখতে মাঝেমধ্যে রোডট্রিপ মারি সিনিক রাস্তায়।
জিপিএস ভালু জিনিষ, এর ভরসায় রাস্তা ছেড়ে ছোট ছোট শহরতলীর মধ্যে দিয়ে হারিয়ে যাওয়া যায়, আবার ঠিক ঠিক বাড়িতে পৌছায় দিবে, সমিস্যা নাই। আহা ফল কালারস। আগে স্মোকি মাউন্টেইনের ছায়াতে থাকতাম, যখন তখন যাওয়া হইত। প্রশান্তের তীরে এসে পড়ায় গত দুই বচ্ছর মিস করছি। লেক ট্যাহো না বেড়ায় থাকলে একবার পদধূলি দিয়ে যান।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
তার্কানুর টাকা পয়সার হদিস নিয়ে এত ঘাটাঘাটি করার কি দরকার । হোয়াট ইজ দিশ ?? কিছু কথা থাকুক গুপন ।
facebook
ও: আপনার লেখা পুরোটা পড়তে পারাই একটা বিরাট ব্যাপার। মাঝারাস্তায় হাসতে হাসতে কেলেঙ্কারি কেস।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
নগদে মাইনাস। "ক্যা-কা" (ক্যাটরিনা কাইফ) এর পর আমার ২য় "ক্যা"-ক্রাশ "ক্যা-স্টিইউ" এর চেহারাকে "ইয়ে"র সাথে তুলনা করে আপ্নে আমার "ক্যা"ণুভুতিতে আঘাত দিয়েছেন।
তারপরও অনেক কষ্ট করে আমার "ক্যা"ণুভুতিকে তার্কাণুর সাথে ভুতিতে পাঠিয়ে আপনার লেখাটা পড়ে শেষ করলাম।
দুইটা প্রশ্ন ছিল:
#১ - চ্যাগানো ভ্রমণ করতে হলে কি নীল জুতার (আর সাথে সাদা মৌজা) আবশ্যক?
#২ - ত্রিভঙ্গ মুরারি পোজ কি আমার মতন "মেদ ভুড়ি কি করি" টাইপ পাবলিকদের জন্য আদর্শ? তা না হলে তাড়াতাড়ি আরেকটা পোজের ডিটেইলস লিখেন।
আপনার এই দুই ক্যা কে পছন্দ??
চ্যাগানো ভ্রমণে কোন কিছুই আবশ্যক না। মন চাইলে জুতা, মন চাইলে খালি পা।
পুরো লেখাটাই চ্রম! হতেই হবে! হাজার হোক চ্রম উদাস ভাইয়ের লেখা! কিন্তু সবচেয়ে ফাটাফাটি হয়েছে-
হাসতে হাসতে মরে গেলাম! ক্রিস্টেন এর চেহারার জটিল উদাহরণ!
বটতলার উকিল।
আপনার লেখা পড়লে আর তার্কাণুর ঘোরাঘুরি দেখলে 'কিভাবে পারো?' ছাড়া আর কিছু মাথায় আসে না।
ভ্রমণসঙ্গীর ক্লাসিফিকেশন আর সবার কমেন্ট পড়ে মনে হলো আমি আসলে খুবই ভালো সঙ্গী নিয়ে ভ্রমণ করছি। ৯-১০জনকে নিয়েও এক সপ্তাহের মত ঘুরে বেড়াইছি। তেমন কোন ঝামেলা ছাড়াই। ছোটখাটো কিছু টাট্টি বয়, লেট লতিফ, স্লিপিং বিউটি আর এংগ্রি বার্ড (আমি নিজে) আমাদের সাথেও ছিল তবে এসব কখনই প্রকট আকার ধারণ করে নাই! তবে লেখা পড়ে সাবধান হয়ে গেলাম, এসব খেয়াল রাখবো এখন থেকে!
আর অণুদার টাকার উৎস ফাঁস করে দেয়ায় পোস্টের মাহাত্ম্য আরো বেড়ে গেছে। অনেকে এই লেখা পড়ার পর একটা শান্তির ঘুম দিতে পারবে!
থিঙ্কু থিঙ্কু।
৯-১০ জন নিয়ে যদি নির্বিবাদী ভ্রমণ করে থাকেন তাহলে আপনার ভ্রমণ সঙ্গীরা আসলেই বেশ ভাল।
হাসতে হাসতে মরে গেলাম
ভাইরে আপনের লিখা পইড়া তো মহা মুস্কিল হইসে। চারদিকে শুধু * চেহারার লোকজন দেখি। আর একটা গান আছে না,,,,, মেরে সামনে আলি খিড়কীমে এক *দ-সা চেহরা রেহতি হ্যায়!
চরম উদাস ভাই এর মাথা আর তারেকাণু ভাইয়ের ঠ্যাং দুইটা বাংলাদেশের ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ঘুষনা দেয়া হউক।।।। এই সম্পদগুলা নিয়া কুনো চুদুরবুদুল চৈলত ন
চউদা আর তারেকাণু আপনেরা দুইজনেই অদ্ভুদ।।।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
একলা ভ্রমণই ভালো তাইলে!
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে ...
ভাইরে, কি যে খেদমতের কাম আপনার লেখালেখি পড়া! ছাড়াও যায় না, আবার চালাইয়া যাওন ও এক মহা ছিদ্দতের ব্যাপার! চরম ভালো লেখা আর তেমনি চরম বাহারী মন্তব্যের সারি। দুই সিটিং-এ গল্প শেষ করলাম, কিন্তু মন্তব্যের আড্ডাবাজী চলছে তো চলছেই! আর সেইগুলি তো আরোই তোফা! ফলে নিজের খুশী জানাতে, জানাতে দেড়শো মন্তব্য পার হয়ে গ্যলো!!!!!!
(আইজকাল আর খুন্তি হাতে তুলি না!)
- একলহমা
হ লেখা বেশি বড়
কষ্ট পাইলাম ! খুব কাজের লেখা, তয় আমার এই ভ্রমণ-মাধ্যমে কোনো কাজে লাগলো না অণুর জন্য আরেকটু ঈর্ষা বাড়ানো ছাড়া ! হা হা হা !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
কাজে লাগবে না কেন রণদা। ঝোলা কান্ধে আজকেই বেড়িয়ে পড়েন। ডরাইলেই ডর।
যতোই ফুসলান, আমারে ভাদাইম্যা বানাইতে পারবেন না হুমম !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
অভিশপ্তদের অভিশাপ দেওয়ার অধিকার দিল কিডা? "কে কিভাবে কখন কেমন" কিছু কথা থাকনা গুপন। সৌদির কথা বলেন, মাথাব্যাথা নাই মাগার দুই একটা নাম কি মুখে না আনলেই না? জন্মসূত্রে এলারজি পাইসিরে ভাই।
যাই হোক, প্রথম ৩-৪ টা প্যারা আবারও পড়লাম। নাহ আগের মত ঝাঁঝালো না। বাদ দেন। তেলাপোকাও একটা পাখি আর আমিও একটা মানুষ।
'কিভাবে আপনার স্ত্রীকে সাইজ করবেন / How to be a Real Man'
বুঝলাম, দুইন্যাতে ইঞ্ছাপ নাই। স্টেপ ওয়ান নিয়ে না লিখে আপনে এক ফালে স্টেপ টু'তে গিয়া শুরু করতে চান!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
স্টেপ ওয়ান কি? কি ভাবে ইস্তিরি যোগাড় করবেন??
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
আপনি সব লিখা পড়তে চাই
লেখা প্রতি কিছু টেকাটুকা দেন তারপরে বলতেছি আমার সব লেখা কুন গুপন জায়গায় রাখা আছে।
মহামতি রাহুল সাংকৃত্যায়ন তাঁর 'ভবঘুরে শাস্ত্র' বইতে বলেছেন ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনে বাবার পকেট থেকে টেকাটুকা চুরি করাও জায়েজ। আমি সেই পথে প্রতিবারই ৫০% পর্যন্ত আগাইছি। মানে টেকাটুকা চুরি পর্যন্ত করছি, ভ্রমণ পর্যন্ত আর যাওয়া হয় নাই
স্কুলে থাকতে আমি ছিলাম হাঁটাবাবা। যেদিকে দুচোখ যেতো একলা একলা হাঁটতাম। যাইত্যাছি যাইত্যাছি কই যাইত্যাছি জানি না। তো একদিন ইঁট কাঠের নগরীতে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ বিশাল এক বাড়ির ভিতরে দেখি একটা পুকুর। বাড়ির গেট খোলা। আমি ঢুকে পড়লাম। কেউ কিছু কয় না। পুকুরের চারপাশে গাছ, একপাশে বাড়ি, বাড়িটা নির্জন। আমি সেই পুকুরের ঘাটে বসে থাকলাম অনেকক্ষণ, কেউ কিছু কয় না। তারপর থেকে অনেক বিকেল আমি সেন্ট্রাল রোডের সেই বাড়িতে সেই পুকুরের ঘাটে বসে কাটিয়েছি। তারপর কবে থেকে যেন যাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো।
তার বহু বছর পরে একদিন মাঝরাতে সেন্ট্রাল রোডে একজনের ফ্ল্যাটে যাচ্ছি, দেখি সেই পুকুরটি যেখানে ছিলো, সেখানে গড়ে উঠেছে এই ফ্ল্যাটটি... সেদিন খুব মন খারাপ হয়েছিলো।
ভ্রমণ বলতে আমি চ্যাগানো ভ্রমণবিদ। কোথাও যাওয়া মানে কটা দিন আরাম করে শুয়ে বসে আলসেমি করা।
কোনো জায়গা দেখতে হলে ঘরে এসি ছেড়ে সোফায় বসে মুড়ি চানাচুর খেতে খেতে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি চ্যানেল দেখলেই হয়। এতো কষ্ট করার দরকার কী?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হাহহহাহহহাহহাহ
আপনার লেখাটির বিষয়ে আর নতুন কিছু বলার মতো স্টক নাই। তবে কথা একটাই, 'যাত্রাটাই মূখ্য গন্তব্য নয়।'
আপনি মিয়া মহা বদলোক!! এর আগে একবার আলুর চপের পুটু মারছিলেন, মেলা দিন আলুর চপ খাইতে কেমুন কেমুন লাগছে। এইবার Kristen Stewart এর কম্ম কাবার করলেন। কাল রাতে মেলা আয়োজন করে স্নো-হোইট দেখতে বসে খালি বার বার মনে হচ্ছিল আহারে এত সুন্দর মহিলা, কিন্তু পাের (লাজুক, চোর চোর) মত চেহারা, ফুসসসস
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
বাংলা ভাষার উত্তরাধুনিক বানান অভিধাণ লেখার জন্য ব্যপক শব্দভাণ্ডার এই পোস্টেই পাওয়া যাবে।
আর ভ্রমণ লেখা লা-জবাব!
দেখলাম যে আমি কিছুটা স্লিপিং বিউটি, ঘুম থকে উঠলে কিছুটা বস, পেটে খাবার টাবার না পড়লে অ্যাঙ্গরি বার্ড আর সবসময় দা ক্যামেরা ম্যান
তবে আরেকটা ভাগ আছে। এরা ভ্রমণের আগে কোনও প্ল্যান করবে না, কিন্তু একবার জার্নি শুরু হলে এটা করব না কেন, ওখানে যাব না কেন বলতে বলতে মাথা ধরায় দেয়। এদের কি নাম দেয়া যায় ভাবছি !
এরা মনে হয় ... দ্যা আবদার পাট্টি
ভ্রমণসঙ্গীর ব্যাপারে বলব, আরও এক ক্যাটাগরি আছে। মানে আমার ফ্রেন্ড সার্কেলে, এরা গ্র্যান্ড ক্যানিওন হোক আর নায়াগ্রা ফলস হোক, গিয়া ২৯ খেলতে বসবে। সেইন্ট মার্টিনে এক দিন (দিনের বেলা) হোটেলে কার্ড খেলে পার করছে
ভাগ্য ভালো, সাথে আরও চারজন ছিল, তিন জন মিলে মোটামুটি পুরা দ্বীপ চক্কর দিয়ে আসতে পেরেছিলাম। বড় টিম নিয়ে যাওয়ায় রক্ষা আর কি।
হ, এরকম বেদ্দপ বন্ধু আমারও আছে। ঘুরতে এসে কার্ড খেলে রাত পার করে দিনের বেলা ঘুমায়
facebook
আফসোস হচ্ছে, এই লেখা আরও আগে কেন পড়লাম না। এক কথায় যদি বলি - অসাধারন। অন্য কথায় যদি বলি, প্রথমে এইটাকে একটা ভ্রমন রংগ মনে হইলেও, পরে ভ্রমন স্মৃতিকথা-বা-বুকের ভিতরের কথা এবং শেষে কেবল ঈর্ষা আর ভালবাসা ।।। অনেক অনেক লাইন ফ্রেমে বাঁধাই করে রাখার মতো , তাই আর আলাদা করে উল্লেখ করা হল না; কিন্তু আর সবার মতো ভিতরের তারেকানু মনটাকে টেনেহিচড়ে কোন একদিন বের করতে পারব সেই সু-আশায় রইলাম। আরেকবার ধন্যবাদ আপনার অসাধারন লেখাটির জন্য।
হ, চান্স পাইলে আমিও মনের তারকাণু বের করে বনের উদ্দেশ্যে রওনা দেই।
নতুন মন্তব্য করুন