জনসেবার ভূত জীবনে কখনো মাথায় চাপেনি এইরকম লোক মনে হয় কমই আছে। সমস্যা হচ্ছে ভূতগুলা বেশীদিন মাথায় থাকেনা। সবাই মাদার তেরেসা না, এমনকি কেউ কেউ ও মাদার তেরেসা না, খুবই অল্প কেউও না, একেবারে পৃথিবীর বিলিয়নকে বিলিয়ন লোকের মধ্যে হাতে গোনা দুই একজন হয়তো। বাকিরা সবাই আমার মতোই। মাঝে মাঝে বাথরুম চাপার মতো জনসেবার তীব্র বেগ চাপে। আবার দ্রুত সেটা কমেও যায়। সেরকমই ভূত আমার মধ্যেও চেপেছিল একবার। খুলে বলি।
সদ্য বিদেশ আগমন, সদ্য হাফসোল খাওয়া, এবং সদ্য টাকার বদলে মাসে মাসে ডলার হাতে পাওয়া এই তিনটির যে কোন একটিতেই মানুষ জনসেবক হয়ে যেতে পারে। আমার একবার তিনটা এক সাথেই হল। তখন সদ্য আমেরিকা এসেছি। তাই দেশপ্রেম আচমকা বেড়ে একেবারে তুঙ্গে। আসার আগে ভালো করে একখানা হাফসোল খেয়ে এসেছি। তাই তীব্র ভালবাসা রাখার কোন পাত্র খুঁজে না পেয়ে পুরো দেশকেই একেবারে ভালোবেসে ফেললাম। স্কলারশিপের যা অর্থ পেতাম সেটা পরিমাণে খুবই স্বল্প হলেও সেটাকে ৭০ দিয়ে গুন দিতে পেরে ভালো লাগতো, মনে হতো অনেক টাকা। এরই মাঝে পত্র পত্রিকায় দেশে মঙ্গার খবর শুনে মাথা আউলায়ে গেল। উত্তরবঙ্গের মানুষ কচুরিপানা খাচ্ছে, ভাত খেতে না পেয়ে কিশোরী মেয়ে অভিমানে আত্মহত্যা করছে এসব খবর শুনে দেশের প্রতি দরদ উথলে উঠলো। আবেগটুকু নিখাদ ছিল পেটে হাত দিয়ে বলতে পারি (বুকের চেয়ে ওটাই বেশী প্রিয় অঙ্গ আমার) , তবে স্থায়িত্ব বেশী ছিলনা। আমি স্বার্থপর মানুষ। এরকম আবেগ চাপলে সাধারণত কিছু অর্থ দান করে তৃপ্তির ঢেঁকুর ফেলি। কিছু টাকার বিনিময়ে মহৎ হবার যে অনুভূতিটুকু পাওয়া যায় সেটা বিবেচনা করে টাকার দুঃখ হয়না। কিন্তু সেবার তিন সদ্যের অনুরণনে আবেগখানা একটু বেশীই চেপে গেল। প্রথমে মনে হল যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করে ফেলি। মাথা ঠাণ্ডা হলে মনে পড়ল সেটা আমার জন্মের আগেই হয়ে গেছে। তখন মনে হল দেশের সব মানুষের দারিদ্র্য দূর করে ফেলবো। আর মাথা চুলকে মনে হল সেই কাজটিও ইতোমধ্যে ডক্টর ইউনুস করে ফেলেছেন। বিনিময়ে নোবেলও পেয়ে গেছেন। সবশেষে মনে হল, সব মানুষের না হলে কিছু মানুষের অন্তত কিছু একটা করার চেষ্টা করি। শুরু হল আমার জনসেবামূলক কার্যক্রম।
তখনও ফেসবুকের জন্ম হয়নি। জুকারবার্গ নিজেই বিশাল একখানা হাফসোল খেয়ে খাবি খাচ্ছে। সে দুষ্টু লোক তাই এক নারীকে ধরতে না পেরে দুনিয়ার নারী ধরার সবচেয়ে বড় জাল যাকে আমরা পরবর্তীতে ফেসবুক নামে চিনব সেটি একটু একটু করে বুনছে। আমি মহৎ লোক তাই হাফসোল খেয়ে জগতের সকল নারীর প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে মানব কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছি। ফেসবুক না থাকায় তখন ইয়াহু গ্রুপ খুলে ফেললাম। এরপর শুরু হল মানুষ ধরা। স্বভাবতই বন্ধুরা অনেকে ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেল। নতুন মুসুল্লির যেমন ঈমানের তেজে পাবলিক একটু ভয় খেয়ে যায় তেমনি নতুন সমাজসেবী অথবা দেশপ্রেমিকদেরকেও সবাই এড়িয়ে চলে।
আমাদের আম্রিকান মহল্লার এক ছোকরা একবার করে বিরাট হুজুর হয়ে গেল। দুই সপ্তাহে এক সাঈদ আনোয়ার পরিমাণে দাড়ি গজিয়ে ফেলল। আমি চোখ কপালে তুলে বললাম, তোমারে তো বেশ মাকুন্দা বলেই জানতাম, এত দ্রুত ক্যামনে কি? নতুন হুজুররা অমায়িক হয়। মান অপমান গায়ে মাখে না। অমায়িক হাসি দিয়ে বলল, সবই তার ইচ্ছা। দুইদিন আগে যেই ছেলে বাড়িতে ডিস্কো লাইট লাগিয়ে নাচত (তাও আবার একা একা না) সে ইংরেজি ছবিতে হালকা চুম্বন দৃশ্য দেখে চোখ বন্ধ করে বিড়বিড় করে ইন্নালিল্লাহে পড়ে।সে যাই হোক, সেই ছোকরাকে তাবলীগের দাওয়াত পাবার ভয়ে সবাই এড়িয়ে চলে। সেই ছোকরা একদিন সাথে ফিনফিনে দাড়ির এক পাকিকে সাথে নিয়ে আমার উপর হামলা করলো। আমাকে আটলান্টায় নিয়ে যেতে চায়, এক মিনি চিল্লায়। এক সপ্তাহ ঐখানে গিয়ে ধর্ম আলোচনা হবে, সাথে বিস্তর খানাদানা ফ্রি। পাকি এসে আমার হাত ধরে বলে, ভাই কি আছে দুনিয়ায়। আমি দুনিয়াতে অনেক কিছুই আছে, সানি লিওন আছে, পুনম পাণ্ডে আছে, এমনকি জাস্টিন বিবারও আছে - এই বলে চোখ টিপ দেই। সে যাই হোক, আবারও কোন থেকে কোন কোথায় চলে আসলাম। সেই পাকি আমাকে শোধনের অযোগ্য মনে করে আমাকে ফেলে আটলান্টা চলে গেল। আমিও বরং চিল্লার গল্প ফেলে রেখে জনসেবার গল্পে ফিরে আসি।
তো জনসেবার ভূত চাপার পর ওই তাবলীগের দাওয়াত দেয়ে হুজুরের মতো করেই লোকজন জনসেবার দাওয়াত পাবার ভয়ে আমাকেও এড়িয়ে চলতে লাগলো। রাস্তাঘাটে মানুষের সাথে দেখা হলে তারা চোখ নামিয়ে না দেখার ভান করে। কখন আবার চান্দা চেয়ে বসি এই ভয়ে। কয়েকজনকে নিয়ে এরপর আমাদের ছোট শহরে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করলাম। উদ্দেশ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবাইকে আমাদের জনসেবামূলক কার্যক্রম সম্পর্কে জানানো ও চান্দা তোলা। এখানের লোকজন বেশ দানশীল। কয়দিন আগে পাকিস্তানের ভূমিকম্প হবার পর মসজিদে ইমাম সাহেব সাহায্যের আবেদন জানানো মাত্র পনের বিশ মিনিটে ত্রিশ চল্লিশ হাজার ডলার উঠে গেল। আমার পরিচিত এক বাঙ্গালী ভদ্রলোকই পাঁচ হাজার দিলেন। সে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। খালি পেটে রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে ভালো লাগেনা বলে আমরা হালকা খাওয়া দাওয়ারও আয়োজন করেছিলাম। ফ্রাইড রাইস আর KFC এর ফ্রাইড চিকেন। সাথে যারা হালাল চিকেন ছাড়া খেতে চায়না তাদের জন্য ঘরে বানানো ফ্রাইড চিকেন। সবাই এসে দেখি হালাল চিকেন এর খোঁজ করে। চোখের নিমিষে লোকজন হালাল চিকেন শেষ করে। যারা পেলোনা তারা মন খারাপ করে হারাম চিকেন এর প্যাক বাসায় নিয়ে গেল। যাহোক লোকজন মুরগীর ঠ্যাঙ চিবুতে চিবুতে দীপালির গল্প শুনল। দীপালি সেই মেয়ে যে আর তার ছোটভাই পালা করে ভাত খেত। একেকজন একেক বেলায়। দীপালি সেই মেয়ে যে দুপুরে বাসায় এসে তার ভাত ছোটভাই খেয়ে ফেলেছে শুনে অভিমানে আত্মহত্যা করে। দীপালি গল্প, মঙ্গার গল্প বলার ফাঁকে ফাঁকে চলল রবীন্দ্রসঙ্গীত। আমরা ঘন্টাখানেক একঘণ্টা প্যাঁ পো করে হারমোনিয়াম বাজিয়ে রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে, আবৃত্তি আর নাটক করে গোটা চল্লিশেক লোকের কাছ থেকে চান্দা উঠালাম দুইশ আশি ডলার। তার মধ্যে আড়াইশো আমার তিন রুমমেট এর কাছ থেকে জোরপূর্বক আদায়। বাকি ত্রিশ ডলার অন্যান্য। আমাদের অনুষ্ঠানের খরচ ছিল তিনশ ডলার। সুতরাং লাভের পরিমাণ মাইনাস বিশ ডলার।
ফলাফল গুরুতর শিক্ষালাভ। মসজিদের মাইক আর রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ার মাইক এক জিনিস না। প্রথমটা দিয়ে হাঁক দিয়ে স্বর্গের টিকেট দেখিয়ে লাখ লাখ ডলার চান্দা উঠানো থেকে শুরু করে মানুষ খুন করানো পর্যন্ত সম্ভব অনায়াসে। দ্বিতীয়টায় চার আনা আটআনা টাইপের কিছু ভিক্ষা মিলতে পারে বড়োজোর। ঠিক যেমন আমি জ্ঞান বিতরণ করলে বড় সত্য কথা বলেছেন মাইরি বলে আহা উঁহু প্রশংসা করবে লোকে। কিন্তু আমার ডাকে আন্দোলনে বেড়িয়ে পরবে না। তবে বাঁশের কেল্লার ডাকে দুই চারটা জবাই টবাই করে ফেলা অনায়াসে সম্ভব। আমি মুগ্ধ হয়ে মাঝেমাঝে আমার জ্ঞানী বন্ধুদের আলোচনা শুনি। কে কোরআনের কোন সুরার বাজে ব্যাখ্যা করেছে, আমাদের নবীকে নিয়ে কে বাজে কথা বলেছে সেটা বলতে বলতে উত্তেজনায় তাদের হাত আপনাআপনি মুষ্টিবদ্ধ হয়ে যায়, মাথার দুপাশের শিরা দপদপ করতে থাকে, কেউ কেউ আবেগে কেঁদে ফেলে। অথচ আমি এখন পর্যন্ত এক বালকের পুড়ে কিমা হয়ে যাওয়া দেহ দেখে কাউকে কাঁদতে দেখিনি। মাইক হাতে নিয়ে আজকে যদি পনের বছরের ঝলসানো বালকের কথা বলি, তবে কেউ আমার ডাকে বের হয়ে আসবে না। উল্টোদিক থেকে মাইক হাতে ধরে বিশ্বজিৎ এর কথা বলবে, ফেলানির কথা বলবে, বলতেই থাকবে বলতেই থাকবে। অথচ মাইক হাতে নিয়ে যদি কেউ ডাক দেয় আমাদের নবীর অবমাননা করা হয়েছে তাহলে শতসহস্র ক্রোধান্মত্ত মানুষ বের হয়ে আসবে। কেউ বলবেনা ওই যে রামকে নিয়ে যে বাজে কথা বলা হল, ঐযে বৌদ্ধ বিহারের অপমান করা হল। বছরখানেক আগে কিলিং মিলনের ভিডিওটি দেখে বাথরুমে দাড়িয়ে হাউমাউ করে কেঁদেছিলাম, এতদিন পর পনের বছরের বালকের ঝলসানো শরীর দেখে শাওয়ারে দাড়িয়ে কাঁদি। বালকের জন্য না, অন্ধ মানুষদের জন্য।
মন্তব্য
আমিও চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি কাল রাতে, ওই বালকটার জন্য।
কিছু আর বলতে ইচ্ছা হয় না এই নিয়ে
পড়তে শুরু করেই কি আছে সামনে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল - সাথে মাথার ভেতরেই নানা মন্তব্য তৈরী হচ্ছিল, বলতে দ্বিধা নেই তারেকাণুর শশ্রুমন্ডিত ছবিও মনে পড়ে গেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসে ওস্তাদ এত রাতে আমাকেও শাওয়ারে পাঠালেন - আরেকবার! সাভারের সেই বোন কে যেদিন বাঁচানো গেলনা, মনে পড়ে তেমনি একটা দিন গেল আজ.................................
জানিনা কি বলবো
- আমার এক ইউনি লাইফের ক্লাসমেইট আছে। ইদানিং টিনএজারদের মতো কোবিতা লেখে। কোবিতার বিষয়বস্তু ফেলানি, বিশ্বজিত। মনির হোসেন নিয়ে তার কাব্যিপনা এখনও পর্যন্ত দেখা যায় নাই।
- আমার এক কলিগ আছে। পাকিস্তানে সোয়াত অঞ্চল থেকে আসা। দিলদরিয়া লোক। তবে সেইটা শুধুমাত্র মুসলমানদের জন্য। মসজিদে সে টাকা দেয়। ফিলিস্তিন নিয়ে কেদে চোখ ভাসায়। সে আফ্রিকায় কিছু হলে সেটাতে কিছু দেয় না।
- দান খয়রাতের পেছনে মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা হওয়া দরকার। মসজিদে যায় না, আধুনিক পোলাপান, র উচ্চারণ করতে পারে না, দেশটা কেন আমেরিকা হয় না এইটা নিয়ে আফসোস এরকম শিক্ষিত ডক্টরেটধারিদের মধ্যেও এই দানখয়রাতের চল আছে। এরা স্কুলে টাকা ডোনেট করে, বন্ধুর চাচতো ভাইয়ের শ্যালকের ফেইসবুক স্ট্যাটাস দেখে অসুস্থ্য কারো ৪০ লাখ তোলার ক্যাম্পেইনে টাকা দেয়। এরাই আবার শিক্ষা চিকিৎসা সেক্টরে পাবলিক স্পেন্ডিঙের বদলে প্রাইভেট সেক্টরে সব দিয়ে দেবার জন্য গলা-মেধা-চিন্তা-কিবোর্ড সব খাটায়। আমার হাইপোথিসিস এরা মনের মধ্যের গিলটি ফিলিংস কাটাতে এইসব দান খয়রাত চ্যারিটি ইত্যাদি করে। সবকিছুর দায়দায়িত্ব সরকার নিয়ে নিলে গিলটি কাটানো বটি মিলবে কোথা! এরা মসজিদে দান খয়রাত করে পরকালের হিল্লে খোজা লোকেদের অর্ধার্মিক ভার্সন। দুই গ্রুপ মনের শান্তি খোঁজে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এইটা ইনভেস্টমেন্টও বলতে পারেন। পরকালে আল্লাহ হাজার গুনে ফেরত দিবেন এই বাক্যে বিশ্বাস রাখতে অনেকে আরাম পান। পাবেন কি পাবেন না সেটা পুরাপুরি বিশ্বাস করতে না পারলেও লোভের কাছে ধরাশায়ী হয়ে যান অনেকেই।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
There is nothing called free lunch .. everything is give and take
কাঁদিয়েই ছাড়লেন। লেখা কেমন হয়েছে সে বিষয়ে যাচ্ছি না। লেখাটি চোখের জল ঝরিয়েছে সেটুকুই জানাচ্ছি।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
দান নিঃস্বার্থভাবে করা খুব কঠিন। মানুষ একারণেই বেনামে দান করতে পারে না।
ওয়াজে "এই মাত্র জনাব শফিক ১০ হাজার টাকা দিলেন, সবাই বলেন নারায়ে তাকবীর" শুনতে আমরা খুবই পছন্দ করি।
যাকাতের শাড়ি লুঙ্গি দেবার সময় সাংবাদিক আসলে আমাদের আনন্দ হয়।
দান করার পেছনে তাই সূক্ষ্ম একটা স্বার্থের সূতা বাঁধা থাকে, সবসময়ই।
আর, 'সিলেক্টিভ' অশ্রুবিসর্জনের রোগ আমাদের মানবজাতিকে পেয়ে বসেছে, এর টিকা মনে হয় না কারও কাছে আছে
ভাল থাকুন,
শুভেচ্ছা
সেটাই
যে অফিসে কামলা খাটি, সেখানে বাংলাদেশীদের একটা মেইল গ্রুপ আছে। সেখানে প্রায়ই সাহায্যের আবেদন জানিয়ে মেইল আসে। বেশিরভাগই পাকিস্তানী গ্রুপ আর মুসলিম গ্রুপের সাথে সিসি হয়ে। একদিন একটা মেইল আসলো মুসলিম এতিম বাচ্চাদের সাহায্যের আবেদন জানিয়ে। নতুন জয়েন করেছি, ভাও বুঝতে না পেরে রিপ্লাই দিলাম, "দান খয়রাত খুবই ভালো জিনিস, কিন্তু শুধু মুসলিম এতিমদের জন্য কেন। সব ধর্মের এতিমদের সাহায্য করলে সমস্যা কী?"
তারপর পাকি ভাই আর পাকিদের বিশেষ ধরণের বাঙ্গালী ভাইয়েরা মিলে আমারে ধুয়ে দিলো। কেউ কেউ আমারে ঐক্য নষ্ট কারী, বাংলাদেশী পলিটিক্স এনে গ্রুপের দোষণকারী বলে সরাসরি কিংবা ত্যারচা করে গালি দেয়া শুরু করলো। লেসন লার্ন্ট, তারপরে আর দুই ভাইয়ের মিলনে বাঁধা দিতে যাই না।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
বাঙালি ধীরে ধীরে বাঙালি পরিচয় বিসর্জন দিয়ে মুসলমান হতে চাচ্ছে, 'একদম সাচ্চা মুসলমান'।
এজন্যই তারা নিজ দেশে দান-খয়রাত না করে সিরিয়ায় দান শুরু করেছে।
শব্দ পথিক
নভেম্বর ৮, ২০১৩
আমাকে একবার একজন মুসলিম মুসলিম ভাই ভাই বলায় আমি উত্তরে বলেছিলাম ইহুদী ভাই হলে সমস্যা কি। অগ্নি দৃষ্টি হেনে ভদ্রলোক চলে গেছিলেন।
পোস্ট পড়ে আর কথা বলাই উচিত না। দেওয়ালে মাথা টাকানো উচিত।
তবু মনে পড়ল বহুকাল আগে বাংলাব্লগের ঊষালগ্নে লেবাননে বোমা হামলা নিয়ে ছাগু আর সুফিদের মড়াকান্না। ১৯৭১ প্রশ্নে তারা সবাই যথারীতি "কনফিউজড".......
অজ্ঞাতবাস
সেটাই
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
না, কান্না পায় না, সরি, কান্না পাচ্ছেনা। কান্না একটি মানবিক ব্যাপার, আগে মানুষ হইয়া নেই, তারপর কান্দুমনে।
যখন মুসলমান হওয়া মানুষ হবার চেয়ে বেশি জরুরী, কান্না আপনি আশা করতে পারেন না।
হুম
সচলায়তনের সুবাদে আপনার সাথে আমার কিঞ্ছিত পরিচয় আছে এইটা জানার পর আমার এক বন্ধু আপনাকে বলতে বলেছে- "আপ্নে একটা অমানুষ"।
আমি আর কিছু নাইবা বললাম। নারায়ে তাকবীর।
-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------
নিজেকে আসলেই অমানুষ মনে হয় মাঝে মাঝে
মাঝে মাঝে? আপনি নিজেরে মানুষ মনে করার মত ভ্রান্ত ধারনা কেমনে লালন পালন করেন? একটা জরিপ চালায় দেখেন আপনারে কয় জন মানুষ বলে। ভাই আফসুস...শুধু লেখা অনেক কিছুই সম্ভব না। হইলে আপনি হয়তো কইরা ফেলতেন।
নাহ আসলে কিছু নাড়া দিলে সেই নিয়ে মাঝে মাঝে লিখে নিজে সান্ত্বনা পাওয়া চেষ্টা করি। কিন্তু দুদিন পরে আবার সব ভুলে যাই। সেজন্যই নিজেকে অমানুষ মনে হয়।
...
...
অমানুষের ব্যাপারে একমত।
.
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
অনেকবার অনেক কিছু লিখলাম আর মুছে ফেললাম। এই লেখাতে কিছু বলার মত ভাষা জানা নেই আমার।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
সবসময় যত্ন করে মন্তব্য লিখি, ফাজলামি করি। আমারও আসলে আজ কোন মন্তব্য লিখতে ইচ্ছা করছে না।
বালকের জন্যে নয়, অন্ধ মানুষদের জন্যে
চাপাকান্নার হাসি হাসলাম
মানবতার সঙ্গে রাজনীতি মেশাবেন না।
অথবা হরতালের সাথে লাশ
ময়নাপাখি
আমি আপনার সব লেখা পরি। এই প্রথম লিখছি আপনাকে। কালকের ঐ বালকটির কথা আমি ভুলতে পারছিনা।এতটা অমানুষ মানুষ কিভাবে হয় আমার জানা নেই। আমি খুব সাধারন একটি মেয়ে। আমি ছেলেটির জন্য দোয়া করেছি, কারন এর বেশি আর কিছু করার ক্ষমতা আমার নাই।
আমারও নেই
ভাই আপনে রবীন্দ্র সংগীত দিয়ে টাকা উঠাতে গিয়া হতাশ হয়েছেন? আমরা যারা আপনার লেখাটা পড়লাম তাদের কাছে সেই আবেদনটা জানান। দেখবেন আমাদের চরিত্রও এর বাইরে না।
.............
হাসাইলেন... কান্দাইলেন...
সুন্দর
কিছু বলার নেই আসলে।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
"আরও কত মরলে মানুষ বলবে তুমি শেষে
বড্ড বেশী মানুষ গেল বানের জলে ভেসে"
:(
অনুভূতির প্রকাশ এতই সুন্দর যে না জানিয়ে পারলাম না। আপনি মনে হয় বড় হয়ে চরম উদাস হবেন
আপনি যদি বলেন আমার ধর্ম মানবতা তাহলে সবাই আহা আহা বলে কি করে উঠবে। সব ধর্ম বিশ্বাসেই পরকাল নামক একটি মূলা ঝুলানো থাকে তাই আমরা সেই মাইকের আহবানে ঝাঁপিয়ে পড়ি, আর মানবতা হলে আপনার আছে শুধু দায়িত্ব পালন(প্রতিযোগিতার শেষে কোনও পুরস্কার নাই) তাই এখানে ঝাঁপিয়ে পরা লোকের সংখ্যাও কম।
আবার আসছে ৩ দিনের হরতাল, আসুন আমরা আবারও কান্নার প্রস্তুতি নেই। কারন এতেতো কোনও রাজনিতিক মরছে না মরছে কেবল গরীব মেঙ্গো পিপল
এইসকল অন্ধ মানুষদের জন্য কাঁদার প্রয়োজন নেই, কারন সেটা হবে মানবিক বোধের চরম অপচয়। অন্ধত্বেই যাদের আনন্দ, অন্ধত্বই যাদের কাম্য, তাদের জন্য কিসের কান্না!
সেটাই
এর মাঝেই এগিয়ে যেতে হবে আমাদের
facebook
হ্যাঁ
লেখা নিয়ে কিছু বলার নেই, আমরা সবাই এমন। আমাদের আবেগগুলো কেঁদে ওঠে, অসহায় হয়ে আপনার মতোই লেখার মাঝেই আমাদের কান্না ঝরে। কিন্তু এই আমাদের সংখ্যাটা খুব খুব কম, চারিদিকে শুধু খাঁটি মুসলমান। খাঁটি মুসলমানদের একটাই মাত্র অনুভূতি আর সেটা হলো ধর্মানুভূতি। এই অনুভূতি ছাড়া তারা আর কোন অনুভূতিকে লালন করে না। আর অনুভূতি যখন একটাই হয় তখন সেটাকে মৌলবাদ বলে। মৌলবাদ মানেই কিন্তু শুধু বোমাবাজি নয়, মৌলবাদ মানে এককেন্দ্রিক, একসত্য এবং সবকিছু দিয়ে সেটাকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা। আর বাঙালিরা যখন আমেরিকা সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে যায় তখন তারা আরো বেশি সাচ্চা মুসলিম হয়ে যায়, নতুন মুসলমান হয়ে যায়। বাঙালি যখন সাচ্চা মুসলিম এর কোটা থেকে বেরিয়ে আসবে, খাঁটি মুসলমানের পোশাক থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে তখন তারা দীপালির গল্পে কেঁদে ওঠবে, সব মানুষের জন্যে কেঁদে ওঠবে। তখন তারা মানবিকতা অর্জন করবে, তার আগ পর্যন্ত মানবতাকে বুকে নিয়ে আমাদেরকে নীরবে কেঁদে যেতে হবে, কষ্ট বুকে চেপে আশায় আশায় দিন কাটাতে হবে। একদিন পরিবর্তন আসবে এমন স্বপ্নে কষ্টগুলোকে উড়িয়ে দিয়ে তাদের মতোই সামাজিক প্রাণী হয়ে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে নামতে হবে।
মাসুদ সজীব
হয় লাভ থাকতে হবে না হলে ব্যানারে নাম থাকতে হবে
এই দুইটা ছাড়া মানুষ দান করবে ক্যান?
সেটাই
nothing is free
কি মন্তব্য করবো বুঝতেছিনা?
মন্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকলাম
...
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
...
জোড়া হাফসোল পরবর্তী দানবীর হবার মানসে আমিও একবার ক্যাম্পেইন শুরু করেছিলাম। অনেকেই রেসপন্স করেছিলেন, কিন্তু ফিল্ডে নামামাত্র কাউকে খুঁজে পেলাম না। এ বিষয়ে আমি একটা পোস্ট লিখতে চাচ্ছি, নীড়পাতায় একটা লেখা এখনো আছে, তাই আপাতত দিতে পারছিনা।
শব্দ পথিক
নভেম্বর ৮, ২০১৩
লিখে ফেলেন এখন
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নিরবতাই শ্রেয়। কিইবা বলতে পারি! নিজেকে বড্ড অসহায় মনে হচ্ছে।
-এস এম নিয়াজ মাওলা
সেটাই
বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আপনি লোকটা ভালো না, সুবিধার না।
বাট্, আই লাভ ইউ ম্যান।
-------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
লেখাটার স্যাটায়ারিক এঙ্গেলটা টাচি। মানুষ নিজের নিরাপত্তাকেই প্রাধান্য দেয় সবচেয়ে বেশি, সবসময়; সেক্ষেত্রে, ধর্মীয়-সংস্কার সম্ভবত কনফিডেন্স দেয়। পৃথিবীজোড়া ক্রমাগত সহিংসতার খবর প্রতিদিন পাই, অনুভূতি তাই ভোঁতা হয়ে গেছে- আপনি ঝলসানো দেহটা দেখে শাওয়ারে আশ্রয় খুঁজেছেন- আর আমি স্তব্ধ হয়ে দেখেছি তার বাবার চোখে অদ্ভুত শূন্যতা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ঘটনার কিছুক্ষন পরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। রাতে ঘুমাতে কষ্ট হয়- ঝলসে সাদা হওয়া ছেলের দিকে নির্বাক-নিষ্পলক বাবার চোখ- ঘুমের মধ্যে তাড়িয়ে বেরায়; একটা অক্ষম ক্রোধ নিজেকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করায়- প্রতিবাদ জানাই;
(নির্লিপ্ত নৃপতি)
প্রতিবাদ জানাবো তারপর দুইদিন পর আবার ভুলে যাব
সব লেখার শেষটা এরকম মন খারাপ করে দেয় কেন?
জানিনা
আপনার লেখা পড়ে যখন ব্যাপক হাসি পায় তখনই আপনি লেখার শেষে মন-খারাপ করে দেন !
সিলেক্টিভ মানবতা বড় খারাপ জিনিস। ফটিকছড়িতে শান্তিপূর্ণ মিছিলের মানুষকে কুপিয়ে মারলে যারা ফেইসবুকে উল্লাস করে, তারাই দেখি হেফাজতের প্রোগ্রামে পুলিশের গুলিতে (১, ১১, ৬১, ২৫০০০ যাই বলি) খুন হওয়া মানুষের জন্য বিলাপ করে। বিশ্বজিতকে কুপিয়ে মারার ভিডিও দেখে যারা কানতে কানতে বন্যা বানায় দেয় মনির হোসেন নিয়ে তাদের কোন বিকার নাই।
আস্তিক-নাস্তিক, লিবারেল-কনজার্ভেটিভ, সাদা-কালো, নারী-পুরুষ বেঁচে থাকার অধিকার সবারই আছে। এমনকি ফাঁসির আসামীকে হত্যা করা আর দশটা খুনের মতই ঘৃণ্য অপরাধ।
সিলেক্টিভ মানবতাই চলে সবসময়
হ্যান কারেংগা ত্যান কারেংগা ---- স্বার্থ ছাড়া ক্যান কারেংগা!!
আগে নিজে এই সব গোল্ডফিশ মেমোরী টাইপের আবেগ থেকে উপরে উঠি, তারপর মন্তব্য করবো। তার আগে এই লেখায় মন্তব্য করার যোগ্যতা আমার নেই।
____________________________
স্বার্থ ছাড়া কিছুই হয়না
আমি সব সময় ব্যাথাতুর থাকি।ব্যাথা দিয়ে ব্যাথা প্রশমন করা যায় না তাই।আপনার যেন এ ধরনের স্ট্যাটাস আর লিখতে না হয় আশা রাখি।
ভাই, বাঙালির "ইসলাম-ধর্মীয় অনুভুতি" হইলো সবচাইতে স্পর্শকাতর জিনিস। ইহা লজ্জাবতী গাছের পাতা অপেক্ষা বহু গুন সংবেদনশীল। দীনের দরদে কান্দনের পরে আর তাগো মইধ্যে কোনো চোখের পানি অবশিষ্ট থাকে না।
আপনার লেখাটা এক নিঃশ্বাসে শেষ করলাম। কিছু বলার ভাষা নেই।
--
কচু পাতা
নতুন মন্তব্য করুন