কারো ফাঁসির খবরে আনন্দিত হবার কিছু নেই। মানুষের মৃত্যুতে আনন্দ করার কিছু নেই। মৃত্যু এক অমোঘ পরিণতি যা সব বর্ণের সব রকমের মানুষকে এক করে দেয়। যতবড় আসামীই তার অধিকার আছে ন্যায় বিচার পাওয়ার। যতবড় অপরাধীই হোক না কেন, তার অধিকার আছে সম্মানজনক একটা শাস্তি পাওয়ার। অনেক সভ্য দেশ থেকেই মৃত্যুদণ্ডের মতো অমানবিক বিধান বাতিল করা হয়েছে। সারাবিশ্বে মানবতা আজ হুমকির মুখে। ঘৃণা, হিংসা, প্রতিশোধ আকাঙ্ক্ষা, চোখের বদলে চোখ কখনো মানবজাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে না। মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, An eye for an eye leaves the whole world blind। একই ধরণের চিন্তাভাবনা ছিল নেলসন ম্যান্ডেলার। সাতাশ বছর যাদের কারণে জেলে কাটিয়েছেন, বের হয়ে ক্ষমতায় এসে তাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন অবলীলায়। আজ আমি অবাক হয়ে দেখি, চারপাশের মানুষজন কি অদ্ভুত নৃশংসতার সাথে উল্লাস করে যাচ্ছে একজন মানুষের মৃত্যু নিয়ে। এই নৃশংসতা, এই অমানবিকতা মানুষ হিসেবে আমাদের মানবতাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে গ্রীক দার্শনিক ও সমাজবিজ্ঞানী এরিস্টটল আক্ষেপ করে বলেছিলেন ...
আজি মানবের ভয়ে কাঁপে মানবতার হাঁটু
থাকতে সময় বাঁচাও তবে আপন আপন পুটু
যাক অনেক মানবতাবাদ *দালাম। এবারে একটু হেসে নেই (হি হি হি হি - ওপ্পা মতিকন্ঠ স্টাইল)। আসল কথা হচ্ছে আনন্দ চেপে রাখতে পারছি না। তাই মনের আনন্দে জগা লিখতে বসে গেছি। দেখলেন তো মানবতার *দানো কত সহজ। দুই ফোটা গান্ধী, এক ফোটা ম্যান্ডেলার সাথে কয়েক ফোটা reconciliation, benevolence, compassion, tolerance এর মূত্র মিশিয়ে দিলেই হয়ে গেল মানবতা। সমস্যা একটাই, নিয়মিত যদি এইভাবে মানবতা *দানো হয় তাহলে একসময় মানব জাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। একজন আরেকজনকে মারবে, মানবতাবাদী এসে বলবে আহা খোকাটা ভুল করে ফেলেছে। তারপরে আরও খোকারা আরও মারবে, মেরেই যাবে। মানবতাবাদী গাইবে, মেরেছে কলসির কানা, তাই বলে কি প্রেম দিবোনা? মানবতাবাদীদের মনে হয় ভানুর সেই কৌতুকের 'দেখি না কি করে' এর মতো। চোর ঘরে ঢুকার চেষ্টা শুরু করলো ব্যাটা বলে, আহা রসো আগে দেখি না কি করে। তারপর ঘরে ঢুকে পড়লো তখনও বলে, আহা আগে দেখি না কি করে। এরপর একে একে জিনিসপত্র নিলো, বস্তায় ভরল, উঠে নিয়ে রওনা দিল তখনও বলে যায়, আহা দেখি না কি করে। ৭১ এর পুরো নয় মাস জুড়ে ইউএন থেকে শুরু করে সকল নপুংসক মানবতাবাদী সংগঠনরা এরকম 'দেখি না কি করে' করেই চলেছেন। কোন বিশিষ্ট ব্যারনেস, কোন দূত, কোন মন্ত্রী, কোন চেয়ারম্যান এর কারণে গণহত্যা বন্ধ হয়নি। হয়েছে সাধারণ মানুষের প্রতিরোধ এর কারণে।
যাইহোক, বহুদিন বিরতি দিয়ে আবার জগাখিচুড়ি লেখার ভুত চাপল মাথায়। জগাখিচুড়ি রম্য রচনা নয়। স্যাটায়ারধর্মী লেখাও নয়। জগাখিচুড়ি হচ্ছে জগাখিচুড়ি। লেখকের মনে হাবিজাবি যা আসে তা নিয়ে প্রলাপবাক্য। কারো কাছে অশ্লীল মনে হতে পারে, সেজন্য লেখক দায়ী নহে। কারো কাছে হাসি আশা করে বিরক্তিকর মনে হতে পারে। সেজন্যও লেখক দায়ী নহে। পাঠক দায়ী। আমি হাটে মাঠে ঘাটে চান্স পেলে হালকা রসিকতা করার চেষ্টা করি। তাও আবার করি কনফিডেন্স এর সাথে। রসিকতা পছন্দ না হলে সেটা পাঠকের সেন্স অব হিউমার এর সমস্যা অথবা বদহজমজনিত সমস্যা। আমার কি দুষ?
গত জগাখিচুড়ি লিখেছিলাম চ্যাট করা নিয়ে। লেখা প্রকাশের পর ইজ্জত নিয়ে টানাটানি পড়ে গেল। লোকজন আড়ালে আবডালে ফিসফাস করে, চরম উদাস ছোটবেলা সেক্স চ্যাট করতো। অনেকে আবার বলে, এখনো তো দেখি দিনরাত ফেসবুকে পড়ে থাকে, নিশ্চয়ই একই কাজ করে। চ্যাট করা মানেই যে খারাপ কিছু না সে কম্পিউটার চ্যাটই হোক আর ফোন চ্যাটই হোক এটা যখন লোকজনকে বুঝাতে গলদঘর্ম হচ্ছি তখন সাঈদী সাহেব আকামটা করে বসলেন। আকামটা আগেই করেছিলেন, সেটা লিক হয়ে গেল আরকি। তারপরে আবার কয়দিন আগে আবার এম কে আনোয়ার এর আকাম ধরা পড়লো। প্রথমে সাঈদীর কথোপকথন শুনে মনে হল, ওব্বাই কি বস! এরপর যখন আনোয়ার এর কথা শুনলাম তখন মনে হল, এর কাছে তো সাঈদী শিশু। এরপর দেখি আমাকে লোকজন পাকড়াও করে বলে, ভাই মৌলানা সাঈদীর সেক্স চ্যাট এর ব্যাপারে আপনার মতামত কি? এম কে আনোয়ার যে এই কামডা করলো সেইটা বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি? আপনার লেখায় পড়লাম ছোটবেলা আপনিও নাকি... আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবি সেই রাজকপাল কি আর আমার ছিল। রাজকপাল আমার না থাকলেও বন্ধু মিনহাজ এর ছিল। গলার স্বর সুমধুর বলে মেয়েরা খালি ফোনে গল্প করতে চাইত। কেউ আশেপাশে থাকলে সমাজ ও দেশের নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতো, আড়ালে মনে হয় সোনাপাখি, টিয়াপাখি উড়ে আয় ইত্যাদি চলতো। আমরা আশেপাশে থাকলে নানা আওয়াজ দিতাম ওই তোর প্যান্টের চেইন লাগা ইত্যাদি নানা কথা বলে। একবার মহা ক্ষেপে গেল। অন্যপাশে তরুণী লাইনে থাকা অবস্থায় খেঁকিয়ে উঠলো আমাদের উপর, আমি কি প্যান্ট পরে আছি যে চেন লাগাতে কস, লুঙ্গীর কি চেইন থাকে? বলেই জিভে কামড়। মেয়েরা লুঙ্গী জিনিসটা একদমই পছন্দ করে না। হয়তো মেয়েকে আগে বলেছিল, আই ওয়্যার অনলি জিনস অ্যান্ড শটস হানি। ক্ষ্যাত বিবেচনা করে ওই তরুণী মিনহাজের সাথে সম্পর্ক ওখানেই শেষ করে।
বন্ধু রনির ছিল ক্যাম কপাল। মেয়েরা নাকি তাকে ওয়েবক্যামে দেখতে চাইত আর দেখাতে চাইত! আমাকে একদিন বলে আয় তোকে শিখাই। বলে চ্যাটরত রমণীকে মেসেজ দিল, Wanna C2C? C2C মানে ক্যাম টু ক্যাম এটা শিখলাম। বলা মাত্র দেখি তার কম্পিউটারে পিড়িং করে একটা উইন্ডো ওপেন হয়ে সেখানে জনৈক লাস্যময়ী তরুণীর ছবি ভেসে উঠলো। আমি কাণ্ড দেখে বিমুগ্ধ, বিমোহিত। এর পরে চ্যাটে গিয়ে দুই তিনকথার পরেই বলতাম, Wanna C2C? কিন্তু উত্তর আসতো, অসভ্য কোথাকার, তোর ঘরে কি মা বোন নেই ইত্যাদি টাইপের। একবার একজন বলে, ইতর কোথাকার, আমি রোজা। মানুষের কুচিন্তক মন দেখে মুষড়ে পড়লাম। মন উদাস করে রুমমেট ওশিলভকে জিজ্ঞেস করলাম, রোজা রেখে ওয়েব ক্যাম ব্যাবহার করলে কোন সমস্যা আছে কিনা। উত্তরে সেও দেখি কটমট করে তাকায়। বুঝলাম এদের সবারই মনে হয় ওয়েবক্যাম সংক্রান্ত কুঅভিজ্ঞতা আছে। আমেরিকায় অনেক এডমিশন, চাকুরীর ইন্টার্ভিউ হয় ওয়েবক্যামে। জানা ছিলোনা তখন। এক প্রফেসর আমাকে স্কাইপে ইন্টার্ভিউ নিতে চাইলো। একথা সেকথার পর দেখি আমাকে ক্যামে আসতে বলে। মিষ্টি স্বরে বলে, do you have cam? চ্যাট অভিজ্ঞতা থেকে জানতাম এই প্রশ্ন শুধু অসভ্য লোকেরাই করে। একবার ভাবলাম আপনার ঘরে কি বাপ ভাই নেই বলে হৈহল্লা শুরু করি। পরে বেশী ঝামেলা না করে নিজের ইজ্জত বাঁচিয়ে মানে মানে কেটে পড়েছি।
দীর্ঘদিন পর যখন দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেই তখন মূল উদ্দেশ্য ছিল শাহবাগের বিরিয়ানি খাওয়া। বিশ্বস্ত সূত্রে (অধিকার, আমার দেশ, দিগন্ত ও দেশের বুদ্ধিজীবী ইত্যাদি ) খবর পেলাম শাহবাগে দুই বেলা বিরিয়ানি দেয়। দেশে পৌঁছে কোনোমতে বাসায় বাক্স প্যাটরা রেখে দৌড়ে গেলাম শাহবাগ। কিন্তু গিয়ে দেখি ক্যামনে কি? বিরিয়ানি তো দূরের কথা পানিও পাওয়া যায়না। লোকজন খালি গলায় শুধু চিল্লা পাল্লা করে। এই যে শুনলাম এখানে মদ, গাঞ্জা, মেয়েমানুষ আর নাস্তিকের হাট বসেছে। ছেলেরা গেলেই নাকি মেয়েরা তাদের ইজ্জত মিজ্জত লুটে ফেলে। কিন্তু কিসের কি। বিমর্ষ মুখে কিছুক্ষণ শ্লোগান দিয়ে ভাবলাম,এর চেয়ে হেফাজতের সমাবেশে গেলে খোকার পানি আর এরশাদের কলাটা পাওয়া যেত।
কলার কথায় মনে পড়লো, কলার পরে হালুয়া আমার সবচেয়ে প্রিয় খাবার। আমেরিকাতে প্রথমবার এসে পৌঁছানোর কিছুদিন পরেই শবে বরাত। ধার্মিক তুর্কি রুমমেট ওশিলভকে বললাম, আয় আমরা হালুয়া বানায়ে শবে বরাত উদযাপন করি। ব্যাটা প্রথমে বলে, হালুয়া কি জিনিস, তারপর বলে শবে বরাত কি জিনিস। যে কোন জিনিসকে চিপে ভর্তা বানিয়ে তার সাথে চিনি মেশালে তাকে হালুয়া বলে এই বলে নানাভাবে হালুয়ার সংজ্ঞা দেয়ার চেষ্টা করলাম। অল্পেই বুঝে গিয়ে ও আচ্ছা ইউ মিন "হালভা" বলে চেঁচামেচি শুরু করলো। আমি ততদিনে বুঝে গেছি আমাদের বেশীরভাগ ভাল ভাল খাদ্যদ্রব্যের নাম তুর্কি ভাষায় প্রায় একইরকম। পিলাফ বা পিলাউ মানে পোলাও, কেবাব মানে কাবাব, কোফতে মানে কোপ্তা, বোরানি ঠিক বোরহানি না হলেও ইয়োগার্ট দিয়ে বানানোই একটা কিছু। পিয়াজ মানে খালি পিঁয়াজ না হলেও একরকমের সালাদ যেখানে পিঁয়াজও থাকে! দোলমা মানে আমাদের মাছ পটোলের দোলমা না হলেও কাছাকাছি, নানা রকমের স্টাফড সবজী আরকি। হেলিম বা হালুমি (Halloumi) মানে অবশ্য প্রথমে হালিম ভেবেছিলাম, পরে দেখি ছাগলের দুধের চিজ। অবশ্য বাংলা শব্দগুলা ভালোই গোলমেলে আছে। শুনতে যেরকম শোনায়, মানে ঠিক সেইরকম হয়না অনেক সময়েই। বহুদিন পর্যন্ত আমার ধারণা ছিল বালখিল্য মানে বালের খেলা অথবা বাল নিয়ে খেলা। পাদ দেয়ার পর যেই টিকা নিতে হয় সেটা পাদটীকা (টিকা নেয়ার ভয়ে তাই অপকর্মটি করতাম না কখনো!)। দাতব্য প্রতিষ্ঠান মানে দাঁতের ডাক্তারের চেম্বার। উফ, আবার কোন কথা থেকে কথায় চলে আসলাম। যেদিন থেকে জগাখিচুড়ি লেখা শুরু করেছি সেইদিন থেকেই আমার লাইনচ্যুত হবার অভ্যাস শুরু হয়েছে। আর আসলে আজ মাথারও ঠিক নেই। না করতে পারছি রসিকতা, না বলতে পারছি জ্ঞানের কথা।
ফিডিপাইডিস এর কথা খুব মনে পড়ে আজকাল। গ্রীক দৌড়বিদ। ব্যাটল আব ম্যারাথনে পার্সিয়ানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের খবর এথেন্সে পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব ছিল তার। দুইদিনে দেড়শ মাইল দৌড়ে যায় স্পার্টানদের কাছে যুদ্ধে সাহায্যের আবেদন নিয়ে। তারপর আবার ম্যারাথনে গ্রীকদের বিজয়ের খবর এথেন্সে পৌঁছে দেবার দায়িত্ব। Run, Pheidippides, one race more! the meed is thy due! দেড়শ মাইলের পর আর মাত্র পঁচিশ মাইলের দৌড়। তারপর বাকিটুকু ইতিহাস। ম্যারাথন থেকে পঁচিশ মাইল দৌড়ে এথেন্সের গেটে এসে ফিডিপাইডিসের চিৎকার, Rejoice, we conquer! আর সেইসাথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া। আমাদের দেড়শ মাইলের দৌড় আমরা নয় মাসে দৌড়ে ফেলেছি। বাকি সামান্য পঁচিশ মাইল। এটুকু দৌড়াতে আমাদের ৪২ বছর চলে গেল, এথেন্স গেট মরীচিকার মতো সামনে দেখে দিতে দিতেও হারিয়ে যায়। মাঝে মাঝে চিৎকার দেই, Rejoice, we conquer! তারপরেই দেখি পথ এখনও অনেকখানি বাকি।
শুরুতে যা বলেছি সেটা দিয়েই শেষ করি। ফাজলামো করে বললেও, কথা সত্য। মানুষের মৃত্যুতে আনন্দিত হবার কিছু নেই। তবে কথা হচ্ছে, এইখানে মানুষ কেডা? কাদের মোল্লাকে যদি মানুষ বলে ডিফাইন করা হয়, তাইলে আজকে এই মুহূর্তে মানুষ নামক পদ থেকে পদত্যাগ করলাম। এইবারে পশু হয়েই উল্লাস করি বরং খানিক। পশু হয়েই কাঁদি খানিক জবাই হয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলতে থাকা কবি মেহেরুন্নেসার জন্য,কাঁদি খানিক কিশোর পল্লবের জন্য, কাঁদি খানিক সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবের জন্য, কাঁদি খানিক আলোকদী গ্রামের সাড়ে তিনশত মানুষের জন্য, কাঁদি খানিক আলী লস্করের স্ত্রী আমিনা, তার পেটের সন্তান, দুই মেয়ে খাদিজা তাহমিনা, দুই বছরের ছেলে বাবু আর বারো জনের কাছে ধর্ষিত হওয়া এগারো বছরের ধর্ষিত শিশুটির জন্য। অনেক কিছু ভাবা ছিল। প্রথম হায়েনার ফাঁসি হলে কি করবো। আনন্দে লাফাবো, কাচ্চি রান্না করতে বসে যাবো, চিৎকার করে জাতীয় সঙ্গীত গাইবো। কিন্তু কখনো ভাবিনি সেই ফাঁসি কার্যকর হবার পরে কান্না আসবে, বুক ফেটে হাহাকার আসবে। বোধকরি ১৬ই ডিসেম্বরেও মুক্তিযোদ্ধাদের একই অনুভূতি হয়েছিল। বিজয়ের মূল্য বিজয়ের আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছিল। আম্মার আব্বা, চাচা কেউ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। আমি যুদ্ধে আমার খুব কাছের কাউকে হারাইনি।তারপরেও আমি প্রতি মুহূর্তে আমার বুকের ভেতর অনুভব করি স্বজন হারানোর বেদনা। একটা মানুষের চোখের সামনে তার অন্তঃসত্ত্বা মা, বাবা, বোন, দুই বছরের ভাই কে মারার বেদনা, নিজ চোখের সামনে নিজ কন্যার ধর্ষিত হতে হতে মৃত্যুবরণ করতে দেখার বেদনা, নিজ কন্যার মস্তকবিহীন লাশ ঝুলতে দেখার বেদনা। আমি যদি পশু হয়ে অনুভব করতে পারি, কেউ কেউ মানুষ হয়ে কেন সেটা পারেনা?
মন্তব্য
এই অন্তহীন প্রশ্নের উত্তর দিতেই তো দাঁড়িয়ে গেছে আমাদের প্রজন্মরা !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
অসাধারন!
এটা অসামান্য এক উক্তি হয়ে থাকবে আমার কাছে।
শুরু আর শেষটা এতবেশি অসাধারন হয়েছে যে ভাষা হারিয়ে ফেলিছি।
মাঝখানে সত্যি জগাখিচুড়ি হয়েছে কিন্তু রসটা ছিলো সবসময়ের মতোই।
এরশাদ যেমন একটা গালি হয়ে গেছে তেমনি মানবতাবাদী ও একটা গালি হয়ে গেছে
মাসুদ সজীব
উত্তেজনায় তাড়াহুড়া করে লিখা এবারের খিচুড়ি। এমন দিলে আসলে লেখা ফাইন টিউনিং করা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে আবেগ ঝেড়ে দিছি
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
এ লেখাটা আসবে বলে জেগেছিলাম !
হাসিতে খুশিতে শুরু করে বেশ একটা ফুরফুরে মনে ঘুমাতে যাবার প্রস্তুতি নিতে যাবার সময় আবার আপনার সেই খুব খ্রাপ শেষাংশ!
.........
তবে এবারের ১৬ই ডিসেম্বরে মিস করবোনা !
(ম্যালা কিছু লিখে দেখলাম মন্তব্যও জগাখিচুড়ি হয়ে গেছে, মুছে দিলাম)
জয় বাংলা!
মন্তব্য লিখে আবার মুছেন কেন, মনে দুক্কু পাইলাম।
পাদটীকা - হাহহাহহাহাহহাহহাহাহহাহাহহাহহা
আপনার মতো পশু বা পশুদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাঁদতে চাই। আজীবন।
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
আপনে একজন অমানুষ তো বটেই, আপনার সাথে সাথে মানুষের পদ থেকে আমিও পদত্যাগ দিলাম।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
পদত্যাগ পত্র গৃহীত
সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম খবরটা শুনি আব্বুর কাছ থেকে। আব্বু ফোন দিয়েছিল, আমি অন্য ঘরে থাকায় আমার জামাইকে খবরটা দিয়েছিল। শুনে সেই ঘরেই কেঁদে ফেলেছিলাম। কত দীর্ঘ এই পথ চলা আমাদের, সামনে আরও কত দীর্ঘ পথ বাকি। তাও আজ মনে হচ্ছে শুরু তো হলো, কত লোকেই তো কত কথা বলেছে। কাল পর্যন্ত কত বড় বড় মানবাধিকারবারি এক খুনি রেপিস্টের জন্য লাল টেলিফোনে ফোন দিয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা দেশের ভিতরের বাইরের চাপের কাছে মাথা নত না করে প্রমাণ করেছেন, আসলেই তিনি শেখের বেটি।
চুলায় খাসি চাপিয়ে এসে বসে লেখা পড়ছি। এখনো মন স্থির হয় নি, আমেনার জন্য কাঁদি, আলোকদীর জন্য কাঁদি, আবার হাসি আজকের বিজয়ে। ঠিক বিশ্বাস হতে চায় না, আমরা সত্যিই পেরেছি, এদেশের মাটিতে অন্তত একজন রাজাকারকে শাস্তি দিতে পেরেছি। যদিও মৃত্যুদণ্ডও খুব কম হয়ে যায় এদের জন্য।
সামনে আরও শুভ সংবাদের প্রতীক্ষায় এখন।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
সামনে আরও শুভ সংবাদের প্রতীক্ষায় , সেইসাথে আরও অশুভ সংবাদের আশঙ্কায়। শুয়োর এর দল রাতের আঁধারে প্রথম রাগটা ঝাড়বে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এর উপর।
আসল কথা হচ্ছে আনন্দ চেপে রাখতে পারছি না।
...........................
Every Picture Tells a Story
চোখ থেকে মুছে ফেল অশ্রুজল ... এমন খুশীর দিনে কাঁদতে নেই
কাদের মোল্লার ফাঁসীতে যতটুকু খুশি হওয়ার কথা ঠিক ততটা হতে পারছি না। কেন যেন মনে হচ্ছে যে আমাদের এই অর্জনটুকু আমাদের শহীদদের জন্য অপমানজনক। একটা স্বাধীন দেশের যুদ্ধাপরাধী হিসেবে যতটুকু ঘৃণা নিয়ে এই রাজাকারের ফাঁসী হওয়া উচিত ছিলো, তা হয়নি। বরং অনেকের কাছে "শহীদ" খেতাব নিয়ে ফাঁসীতে ঝুলেছে। এর জন্য কি আমরাই দায়ী নই? খুশী হওয়ার চাইতে অনেক বেশী কষ্ট হচ্ছে সেই সব মানুষদের জন্য, যারা এইসব রাজাকারদের হাতে প্রাণ দিয়েছেন।
কাদের মোল্লা একাত্তর এ কোন বড় নেতা ছিলোনা, তেমন কোন পলিটিকাল ফিগার ছিলোনা। স্রেফ একটা খুনি কসাই ছিল। এত লো লেভেল এর একটা অপরাধীকে ঝুলাতে এত পরিশ্রম, এত মূল্য দিতে হবার কথা না। মূল্যের পরিমাণ অনেক বেশী হয়ে গেছে। তারপরেও হয়তো শহীদরা সামান্য হলেও শান্তি পাবেন।
একদম ঠিক কথা। এখন বাকিগুলারে ফাঁসিতে ঝুলাইতে হবে।
জয় বাংলা!
আপনি আসলেই পশু আছেন ভাই।
কীসব দুর্দান্ত লেখা লিখছেন দুদিন ধরে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আসলেই ভাবিনি এ বিজয়ে অট্টহাসিতে ফেটে না পড়ে, চোখের পানিতে বরণ করতে হবে।
--
মাগো তুমি রেখো জেনে, এই আমরাই দেব এনে,
আঁধারের বাধা ভেঙে রাঙা ভোর, রোদ্দুর মাখা দিন।
http://www.youtube.com/watch?v=8OB_uPY4i4M
বহুদিন পর জগাখিচুড়ি, জানতাম কাঁদাইবেন
আমিও পাশবিক আনন্দে হেসে এবং মানবিক দুঃখে কেঁদে দিলাম (যার জন্য যেটা প্রযোজ্য)
জয় বাংলা!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
জয় বাংলা!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
জয় বাংলা!
জয় বাংলা!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
জয় বাংলা!
ভেবেছিলাম কাচ্চি খেতে না পারার দুঃখে বুঝি খিচুড়ি।
অতপর, মানবতার এক ফোটা/দু'ফোটার ঘুটায় সাদা পায়রা উড়তে দেখে ব্যাপক কনফু
এবং শেষমেশ হাতে ঠিক রুমাল ধরিয়ে দেবার উদাসীয় কায়দায় আপনার উদ্দেশ্যে বলতে
বাধ্যই হলাম, লুক্টা পুরাই পাষবিক টাইপ!!!
মনের কথাগুলো কখনই গুছিয়ে বলা কিংবা লেখা হয়ে ওঠে না। তাতে কি আপনি আছেন না? আপনার কালো অক্ষরে আমরা অনেক পাঠক নিজেদেরকে খুঁজে পাই।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
শেষ প্যারায় ওলোটপালোট করে দিলেন, প্রস্তুত ছিলাম অবশ্য!
মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছা হয়, সব ব্লগার মিলা উদযাপন করতে পারতাম- হায় সবাই কত দূর দূর দেশে থাকেন!
চিয়ার্স, বস। আমরা পারা শুরু করলাম, আরো পারবো। খালি ভোটটা জায়গা মত দিতে হবে !
অবশ্যই উদযাপন করতে পারবো কোন না কোন দিন, আপাতত আরও অনেক অনেক পথ বাকি
সন্দেহজনক!!
সুবোধ অবোধ
খোকার পানি আর এরশাদের কলা ... বুঝেনইতো
facebook
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
[b][b]জয় বাংলা[/b][/b]
জয় বাংলা
আনন্দ বেদনার এক সাথে মিশেলে এ এক যুগপৎ অনুভূতি! প্রকাশ করার মত ভাষা এই অধমের কলমে/কীবোর্ডে নেই।
____________________________
আজি মানবের ভয়ে কাঁপে মানবতার হাঁটু
থাকতে সময় বাঁচাও তবে আপন আপন পুটু
অনেক ভালো লিখেছেন উদাস ভাই।
কেঁদে চলেছি।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
হাসাতে হাসাতে অদ্ভুতভাবে কথাগুলো বলে যান।
এবং আরেকটি সত্য বানীঃ
সবসময় লিখে যাবেন এই প্রত্যাশা রইল।
--
কচু পাতা
নতুন মন্তব্য করুন