ফেসবুক জিনিসটা বিপদেই ফেলে দিয়েছে মানুষদের। চোখের সামনে দেখেছেন হয়তো ওই পাড়ার মকবুলকে। ছোটবেলা থেকে যার নাক দিয়ে দিনরাত পানি পড়তো। যে হয়তো একটা বাক্যও গুছিয়ে বলতে পারত না। নার্ভাস হলে তোতলানো শুরু করতো। রাস্তার নেড়ি একবার ঘেউ ঘেউ করলে যে বাবারে মারে বলে দৌড়ে ,মায়ের আঁচলের তলায় গিয়ে লুকাতো। ফেসবুক আসার পরে সেই মকবুলই হয়তো মিস্টিরিয়াস ম্যাক নাম নিয়ে রাতারাতি হয়ে গেছে বিরাট সেলেব্রিটি। সে এখন সমাজ রাজনীতি ধর্ম দর্শন বিজ্ঞান সব বিষয়ে সমান পারদর্শী। সব বিষয়ে সমানভাবে জ্ঞান দিয়ে পোস্ট দেয় আর সেই পোস্ট দেয়ামাত্র হাগুর হাগুর লাইক পরে। সে এখন বিরাট সাহসী, বিরাট বিপ্লবী। ভক্তরা ম্যাক ভাইয়া ম্যাক ভাইয়া বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠিয়ে ফেলে। এই দেখে কি আর মেজাজ ঠিক রাখা যায়? আর মেজাজ ঠিক থাকেনা বলেই দেশের আমজনতা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল, বিচারক, পুলিশ, আর্মির অনেকেই যার যা আছে তাই নিয়েই ঝাঁপিয়ে পরে একটু সেলেব্রিটি হবার জন্য, দুচারটা লাইক কামানোর জন্য। একটা পর্যায় পর্যন্ত এতে দোষের কিছু নেই বরং এতে লাভের পরিমাণই বেশী। যেমন আমার এক ডাক্তার বন্ধু মাঝেমাঝেই চমৎকার সব পোস্ট দিয়ে যায় তার কর্মক্ষেত্রে সে কিভাবে কি কাজ করছে তা নিয়ে। এক পুলিশ বন্ধু তার পুলিশ জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে লিখে। গবেষক বন্ধুরা লিখে তার গবেষণা নিয়ে, শিক্ষক লিখে তার ছাত্রদের নিয়ে। কিন্তু সমস্যা হয় তখনই যখন তাদের কেউ লেখক থেকে উপরে উঠে নিজেকে সমাজের ত্রাণকর্তা ভাবা শুরু করে। নিজেই বিচারক হয়ে বিচার শুরু করে দেয়। নিজেই সব সমস্যা খুঁজে বের করে তার সমাধানও করে ফেলে চটপট।
পুলিশ এর কাজ কি? মূলত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা। সেই আইন অনুসারে বিচার এবং শাস্তি দেয়ার দায় দায়িত্ব দেশের বিচারকদের। পুলিশ নিজেই যখন বিচারক হয়ে সব দায়দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয় আবার সোশ্যাল মিডিয়াতে সেটা ফলাও করে প্রচার করে হাগুর হাগুর লাইক কামানর চেষ্টা করে তখন শঙ্কিত হবার কারণ আছে অবশ্যই।
Dhaka Metropolitan Police এর ফেসবুক পেজটা মাঝেমাঝে দেখতাম। বেশ লাগতো। ইয়াবা পাচার করতে গিয়ে গ্রেফতার, ব্লগার হত্যার দায়ে গ্রেফতার, অজ্ঞান ও মলম পার্টি গ্রেফতার, বোমাসহ জামাত নেতা গ্রেফতার ইত্যাদি নানা খবর পেজে। সব ক্ষেত্রে গ্রেফতার হওয়াদের ছবি তার নীচে কয়েক লাইনে খবর। খবরগুলো দেখতে ভালোই লাগে। অপরাধী গ্রেফতার হচ্ছে, দেশের আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু স্ক্রল করতে এক পর্যায়ে এসে থমকে গেলাম। সেখানে এরকম একটি খবর -
রাজধানীতে মানব পাচারকারী চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার ও ১০ শিশু উদ্ধার
১২/০৯/২০১৫ খ্রিঃ তারিখ শনিবার সকাল ১১.০০ টায় রাজধানী রামপুরা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মানব পাচারকারী চক্রের ০৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে রামপুরা থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের নাম আরিফুর রহমান, হাসিবুল হাসান সবুজ, জাকিয়া সুলতানা ও ফিরোজ আলম খান শুভ।
এ সময় তাদের হেফাজত হতে মোঃ মোবারক হোসেন, মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোঃ বাবুল, মোঃ আব্বাস, মোঃ স্বপন, মোঃ আকাশ, মোঃ মান্না ইব্রাহিম আলী, মোঃ রাসেল, মোঃ রফিক ও মোঃ ফরহাদকে উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য। তারা রাজধানীসহ আশপাশ জেলা শহর হতে শিশু সংগ্রহ করে পাচার করে আসছে।
রামপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এতক্ষণে অনেকেই হয়তো জেনে গেছেন ব্যাপারটা আসলে কি। আরিয়ান আরিফ আর কিছু পাগলাটে ছেলেপুলে মিলে পথশিশুদের জন্য তৈরি করেছিল 'মজার স্কুল' নামে একটি প্রতিষ্ঠান। নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে এদের থাকা খাওয়া শিক্ষা সবকিছুরই ব্যবস্থা করতো এরা। এরকম আস্পর্ধা সহ্য হবে কেন পুলিশের? পথ শিশুদের পথেই থাকার কথা তাদেরকে এনে কেন থাকা খাওয়া শিক্ষা দিতে যাবে কেন কিছু বেয়াদব পোলাপান? যেই রাষ্ট্রের সামর্থ্য বা ইচ্ছা নেই পথশিশুদের জন্য কিছু করার সেই রাষ্ট্রের নাগরিক যদি কিছু করতে যায় তবে সেটা রাষ্ট্রের জন্য অপমান তো বটেই। সেই অপমানের বদলা নিতেই পুলিশ এদেরকে ধরে নিয়ে গেছে। এরা নাকি আসলে শিশু অপহরণকারী! এই মজার স্কুলের হাসিখুশি শিশুদের এই ছবিগুলো দেখে চোখ ভিজে যায়। এই যদি হয় অপহরণের নমুনা আর অপহরণ হয়ে যদি এত হাসিখুশিই থাকে শিশুরা, তবে এইরকম অপহরণ হয়ে থাকাই তো ভালো।
ঢাকার মজার স্কুলের মতো করেই জামান পায়েল আর কিছু ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো তরুণ মিলে ময়মনসিংহে বানিয়েছে 'ঘাসফুল'। মজার স্কুলের খবর পত্রিকা আর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানতাম কিছুটা। নিজে তাদের এই চমৎকার উদ্যোগের কোন অংশও হতে পারিনি কখনও। ঘাসফুলকে সেই তুলনায় আরও কাছে থেকে দেখেছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের কিছু কাজে সামান্য অংশগ্রহণ করেছি। মজার স্কুলের মতই ঘাসফুলেরও খরচ যোগায় বারো ভূতে মিলে। কোন সরকারি সাহায্য নেই, কোন বিদেশি অনুদান নেই, শুধুমাত্র ফেসবুক সূত্রে পরিচিত কিছু মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় চলে স্কুলটি।
এরকম আরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, হচ্ছে, ভবিষ্যতেও হবে। বেশিরভাগ সময়েই কিছুদিন পর স্কুলগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে কোন সাহায্য সহযোগিতা না পেয়ে। আবার কেউ কেউ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হলেও একে টেনে নিয়ে যায় দিনের পর দিন। কিন্তু চলুক বা না চলুক এতে ক্ষতির তো কিছু নেই। অন্তত কিছু শিশু হয়তো কিছুদিনের জন্য হলেও একটু হাসিখুশি দিনকাটায়। আরও ভালো করে পরিকল্পনা করে আরও অনেক বড় কিছু কার্যকর কিছু হয়তো করা যায়। কিন্তু কে কবে বড় কিছু করবে সেই আশায় না বসে থেকে এই তরুণরা ছোট করে কিছু হলেও তো করছে, করার চেষ্টা করছে। যতদূর জানি এই স্কুলগুলোর নিবন্ধন আছে। এরা কেউ লুকিয়ে বা বিনা অনুমতিতে কিছু করছে না। তারপরেও যদি এদের কোন গাফিলতি থেকে থাকে, পদ্ধতিগত কোন ভুল থেকে না থাকে তবে সেটা ধরিয়ে দেয়া হোক। সেটা সংশোধন করা হোক। কিন্তু কথা নেই বার্তা নেই কার কাছে কি উড়ো খবর পেয়ে সেই স্কুলের লোকজনকে অপহরণকারী বলে ধরে রিমান্ডে নেয়ার কি মানে থাকতে পারে? এতটা করিৎকর্মা এতটা স্মার্ট যদি হয়ে যায় দেশের পুলিশবাহিনী তবে সেই কর্ম আর স্মার্টনেস ঠিক জায়গাতে ব্যাবহার করলেই দেশের অর্ধেক সমস্যা মিটে যাবার কথা!
Dhaka Metropolitan Police নিজেদেরকে আর হাসির খোরাক বানাবেন না। দয়া করে নিজেদের ভুল স্বীকার করে এই ছেলেমেয়েগুলোকে সসম্মানে মুক্তি দিন। মুক্তি দেয়ার পর আপনাদের ফেসবুক পেজে ক্ষমা চান। ভুল করে ক্ষমা প্রার্থনার মাঝে লজ্জার কিছু নেই। এই একটি ভুল আপনাদের বাকি ৯৯ টি ভালো কাজে পানি ঢেলে দিবে। আপনাদের পেজে নানা গ্রেফতারের খবর দেখে লোকজন বরং সন্দেহের চোখে তাকাবে। ইয়াবা গ্রেফতারের কথা বলে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে সে আসলে কারো প্রতিহিংসার শিকার নয়তো? অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়েছে যাকে সেই কি আসলেই সন্ত্রাসী নাকি পুলিশ তাকে সন্ত্রাসী বানাচ্ছে? অজ্ঞান পার্টি বলে যাদের ছবি দেয়া হয়েছে তারা কি আসলেই অজ্ঞান পার্টি নাকি চাঁদা না পেয়ে তাদের ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে। যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনারা নানা গ্রেফতারের খবর ছবিসহ প্রকাশ করছেন তাই সেটার দায়ভারও আপনাদের নিতে হবে। আইন যতটুকু বুঝি সে হিসেবে আমার বরং মনে হচ্ছে আপনাদের এরকম ফেসবুক এক্টিভিটি বরং বেআইনি। যতক্ষণ পর্যন্ত বিচারে দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত সেই মানুষকে অপরাধী ঘোষণা দেবার মানে নেই। সেখানে আপনারা নানা গ্রেফতারের খবর অপরাধীর ছবিসহ ফলাও করে প্রচার করেছেন। গ্রেফতার হওয়া নিরানব্বই ভাগ মানুষগুলো হয়তো আসলেই অপরাধী। কিন্তু সেইসাথে 'মজার স্কুল' এর উদ্যমী তরুণদের কোন সাক্ষ্য প্রমাণ বিচার ছাড়া আপনারা যেভাবে অপহরণকারী বানিয়ে দিলেন সেরকম একভাগ ঘটনা হয়তো আরও ঘটবে। আগে পিছের কোন খবর না জেনে এই তরুণদের অপহরণকারী বলে তাদের ছবি ফলাও করে ছাপিয়ে আপনারা যেভাবে তাদের হেনস্থা করলেন, হেয় করলেন এর দায়ভার কিন্তু আপনাদেরকেই নিতে হবে।
পরিশেষে শিরোনামে আপনাদেরকে ঠুলা বলেছি বলে মনে কিছু নিবেন না (ইয়ে মানে জানের ডর তো সবারই আছে)। আপনারা যেমন মাঝে মধ্যে চোর বাটপারের সাথে নিরীহ পাবলিককে ধরেও হালকা প্যাঁদানি দিয়ে ভুল করে ফেলেন, আমিও না হয় একটু ঠুলা বা ঠোলা বলে রগড় করে ভুলই করলাম। ভুল করে ক্ষমা চাইছি। এবার আপনাদের ক্ষমা চাওয়ার পালা। ক্ষমা চাওয়ার পর্ব শেষ হলে এধরণের অন্যায় গ্রেফতারের জন্য আপনাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার পালা। সেই ক্ষতিপূরণ হিসেবে নাহয় 'মজার স্কুল' কে কিছু সাহায্য সহযোগিতা করলেন। এতে হয়তো আপনাদের খানিকটা হলেও দায়মুক্তি ঘটবে। সবশেষে যাচাই করে দেখার পালা দেশের তথ্যপ্রযুক্তি আইন অনুসারে সরকারি কর্মকর্তা হয়ে আপনাদের এরকম একটি ফেসবুক পেজে অপরাধী প্রমাণ হবার আগেই কারো ছবি ছেপে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করার অধিকার আপনাদের আছে কিনা। লাইক পেতে কার না ভালো লাগে। এই যে এত এত কথা লিখছি সেও তো দুই চারটা লাইকের আশাতেই। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা হয়ে বেসরকারি লাইক কামানোর আগে দেখে নেয়া জরুরী সরকারি আইন অনুসারে সেটা বৈধ কিনা। আমার তো মনে হয় Dhaka Metropolitan Police এর মতো পেইজগুলোকে বরং তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি নিজেকে জনগণের সেবা করার দায়িত্বে নিয়োজিত একজন সরকারের বেতন ভুক্ত কর্মকর্তা জানছেন এবং সেই অনুসারে কাজ করছেন সমস্যা নেই। কিন্তু যেই মুহূর্তে আপনার নিজেকে রবিনহুড, চুলবুল পাণ্ডে, রজনীকান্ত, পানিশার, রবোকপ বা ক্যাপ্টেন আমেরিকা বলে মনে হওয়া শুরু সেখান থেকেই সমস্যারও শুরু। এরকম ট্রেন্ড চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে পুলিশেরা হয়তো তথাকথিত আসামিকে গ্রেফতার করেই তার সাথে সেলফি খিঁচে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দিবে, গ্রেফতারিং ট্রিপল মার্ডার আসামি, ফিলিং এক্সাইটেড। তারপর রিমান্ডে নিয়ে কচুয়া ধোলাই দিতে দিতে আবার সেলফি খিঁচে বলবে, গিভিং প্যাঁদানি টু আসামি। টেকিং আইন ইন মাই হ্যান্ড, ফিলিং হ্যাপি। ৫৭ ধারার নামে যেই উদ্ভট বস্তু তৈরি হয়েছে তা দিয়ে কে কাকে কবে কি বলে কিভাবে অবমাননা করলো তার পিছে না ছুটে তথ্যপ্রযুক্তির এরকম সরকারি অপব্যবহার ঠেকানোটা বোধহয় বেশী জরুরী। লেখার মূল বিষয়ও সেটাই। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে স্মার্ট হওয়াটা দোষের কিছু না। পুলিশ বা দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীরা যদি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে জনগণকে কিছু অতিরিক্ত সেবা দিতে পারে তবে সেটা অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার। কিন্তু একটু বেশী স্মার্ট হয়ে উড়ো খবর পেয়ে উড়ো আসামি ধরে খুশীতে উড়াল দিতে দিতে তাদের নামধাম ছবি সহ খবর ছেপে তাদের অপহরণকারী বানিয়ে দিলে ফেসবুকে দুই চারটা লাইক পাবেন বটে। কিন্তু সত্য জানার পর সেই সোশ্যাল মিডিয়াতেই যখন আপনাদের মুখে থু দেয়া হবে তখন "ওরে পুলিশ অবমাননা করছে রে, ৫৭ ভাই আপনি কোথায় বাঁচান" বলে চিৎকার চেঁচামেচি করবেন না যেন।
মন্তব্য
এই সমস্যার সমাধান হবে। আমি দেখতে চাই এই পুলিশ যারা এই কাজের জন্য দায়ী তাদের কী হয়। পুলিশ জেনে শুনেই তাদের ফাঁসিয়েছে।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
সেটাই। প্রবীর শিকদার বা ভ্যাট ইস্যুর মতো এখানেও হয়তো নানা জল ঘোলা করে পরে একটা সমাধান হবে। কিন্তু জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত সেটা আসলে কোন সমাধান না।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
শিশুনির্যাতক ক্রিকেটার শাহাদাত এখনো ধরা পড়ে নি। বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, শাহাদাত তাঁর সাথে দেখাও করতে গিয়েছিলো [সূত্র]। তারপরও পুলিশ নাকি এই বদমাশের খোঁজ পায় না। উল্লেখ্য, শাহাদাতের নামেও মামলা করা হয়েছে [সূত্র]।
একজন ফেরারি আসামী কারো নাগালে থাকলে তার আইনগত বাধ্যবাধকতা কী? বিসিবি সভাপতি কি পুলিশকে জানিয়েছেন যে একজন লোক যাকে পুলিশ খুঁজছে সে এসে তার অফিসে বসে আছে?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ওরকম কিছু জানালে যদি শাহাদাত মারে?
ঠিক মারের ভয়ে না, কী বলবেন বুঝতেই পারেননি তাই দেখাও করেননি।
বাংলাদেশ পুলিশ দেখি দারুণ স্মার্ট হয়ে গেছে। সপ্তাহ গড়িয়ে গেলেও মামলা করা আসামিকে পুলিশের ১০টা টিম মিলেও ধরতে পারে না। আর মজার ইশকুলের ওদের এমন চট্ জলদি ধরে ফেললো? ব্রাভো!!
সবচেয়ে বড় উদ্বেগের ব্যাপার, এই উদ্যোগী তরুণরা নাকি স্বীকারও করে ফেলেছে যে তারা শিশুপাচারকারী! এইভাবে বিশ্বাস হারাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ।
এই গ্রেফতারের ও সেটা গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারের পিছনে যারা ছিলো তাদের ছবিও অপরাধী হিসাবে ছাপানো হোক।
এদের বুকে এখন কী ভয়ান হতাশা কাজ করছে ভাবতে পারছি না...
মজার স্কুল না খুলে একটা কওমী মাদ্রাসা খুলে জঙ্গিট্রেনিং দিলেও এই সমস্যা হতো না...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
কিন্তু আপনি কামডা কি ঠিক করলেন? মজার ইশকুল নিয়ে লিখতে বসে ঘাসফুল নামক আরেক শিশুপাচারকারি প্রতিষ্ঠান যার সাথে কি না আপনারও যোগসাজস আছে, সেটার কথাও প্রকাশ করে দিলেন। শিজ্ঞিরি সংশ্লিষ্ঠদের গা ঢাকা দিতে বলেন!!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ঘাসফুলকে সতর্ক করেছি এইজন্য। কবে এসে আমাদেরকেও পুলিশে ধরে কে জানে।
শুধু এ ঘটনায় নয়, স্পষ্ট প্রমাণ (অস্ত্র-মাদক ছাড়া) আদালতে প্রমাণ হওয়ার আগে যে কোন অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করে কি এভাবে বলে দেওয়া যায় এ বা এরা এই অপরাধী? কিন্তু বাংলাদেশে এটা দিনের পর দিন হচ্ছে। পুলিশ যেমন করছে তেমনি পত্রিকাও করছে। এমন অবাধ স্বাধীনতা পৃথিবীর আর কোথাও আছে কিনা জানা নেই!
শিশুদের নিয়ে একটা সংগঠনে আমিও টুকটাক কাজ করি, সেটি ও শুধু ফেসবুক ভিত্তিক। সেখানে যারা একেবারে মাঠ পর্যায়ে কাজ করে এই ঘটনা তাদের জন্যে কতটা আঘাত হয়ে আসবে সেটি নিয়েই ভাবনায় আছি।পথ শিশু নিয়ে সচলে একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম বছর খানিক আগে। সেখানে কিছু প্রস্তাবনার কথা বলেছিলাম, রাষ্ট্র আন্তরিক হলে তেমন কিছু পদক্ষেপ নিয়েই পথ শিশুদের ভাগ্য বদলে দিতে পারে।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
দরকারি লেখা। এগুলো দেখলে, পড়লে, জানলে - ভয়াবহ লাগে।
আশা করি তাদের মুক্তি দেওয়া হবে শীঘ্রই এবং ক্ষমা চাওয়াও হবে পাবলিকলি।
facebook
ছবিগুলি দেখে ভীষণ মন খারাপ হয়ে গেল।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
ভাবতে ভাল লাগে, পুলিশ এগিয়ে যাচ্ছে! তবে পাবলিকও এগোচ্ছে বটে। আলোচিত খবরটা আমি যেভাবে দেখলাম তা হল, টিভি সমূহের স্ক্রলে অকস্মাৎ একটি নয়া খবরের আগমন ঘটলো- বনশ্রীতে একটি বাসা থেকে ৪ শিশু পাচারকারী গ্রেফতার, ১০ শিশু উদ্ধার। তারপর বহু চ্যানেলে খবরের মধ্যে এবং স্পেশাল বুলেটিনে খবরটি দেখতে দেখতে খবরটির ভয়াবহতা যেন কিছুটা কমতে থাকলো। এক পুলিশ অফিসারের বয়ান শোনা গেল, তিনি অনেকটা এভাবে বললেন- "এক অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করতে এসেছি। এখানে কোন শিশুই অভিযোগ করে এমন কোন কিছু বলে নি, যাতে মনে হতে পারে যে তাদের অপহরণ করা হয়েছে। বরং তারা বলেছে যে তাদের যত্ন সহকারে থাকা খাওয়া সহ লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্ভবত একটি শিশুর অভিভাবকেরা কোন কারনে ভুল বুঝে অভিযোগ করেছে। তবে এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালিত করার জন্য কোন বৈধ অনুমতি তারা সংগ্রহ করে নি"। কিছুটা স্বস্তি নিয়ে অন্য সব বিষয়ে মনোনিবেশ করতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু পরদিন থেকে ফেসবুকে ভিন্ন কাহিনী ভেসে এলো।
ডিএমপি'র কৈফিয়ত একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেউ একজন কারো বিরুদ্ধে মামলা করলেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিতেই হবে, এ কথা কি বিশ্বাসযোগ্য? সব কিছু বোঝার পরও বিষয়টিকে এতটা জটিল করে তোলার পিছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে কি না সে প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে।
আবার, যে টিভি মিডিয়া ভালভাবে কিছু খতিয়ে না দেখে সম্মিলিত ভাবে এমন একটি বিস্ফোরক সংবাদে দেশ ভাসিয়ে দিল, তারা এখন মুখে কুলূপ এঁটে বসে আছে কেন? কেন কোন ফলো আপ নিউজ নেই সে জবাব কে দিবে?
পুলিশের জন্য ৫৭ ধারার প্রয়োগ নাই? যে উদাহরণ দেখালো পুলিশ, তাতে ভবিষ্যতের এধরণের অন্তত শখানেক প্রতিষ্ঠানের আতুরঘরে মৃত্যু ঘটলো। কেননা ওই ছেলেরা যে কাজ করছে, আমাদের মতো অকর্মরা ওরকম কাজ মনে মনে করার প্ল্যান করতেই থাকি। সাহস করে নামতে পারি না। এবার তো সেরকম স্বপ্নও দেখা যাবে না। গাঁটের পয়সা খরচ করে কে আর হয়রানি আমদানী করতে চায়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মনে হচ্ছে পুলিশ কুল ও আজকাল " টি আর পি " বাড়াতে ব্যস্ত..……সেলিব্রেটি দের মত।
এ্যানি মাসুদ
দেবদ্যুতি
পুলিশ ভালো এই কথা যে বলে বা বলতে চায়, তার মুখে মুতি
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ভাল বলেসেন, পুলিশের কাজ বিচার করা না।
নতুন মন্তব্য করুন