ভূমিকম্প ও ঈশ্বর
ভূমিকম্পের সাথে ঈশ্বরের কোন সম্পর্ক নেই, পৃথিবীর ভেতরে যেই ফল্ট লাইন গুলা আছে তার সম্পর্ক আছে। এটা আমার বিশ্বাস না, সামান্য লেখাপড়া করে প্রাপ্ত জ্ঞান। আপনি বিশ্বাসী হলে সেই জ্ঞানের সাথে ঈশ্বরকেও যোগ করতে পারেন, সমস্যার কিছু নেই তাতে। কিন্তু জ্ঞানটুকু বাদ দিয়ে শুধু ঈশ্বরকে যোগ করলেই সমস্যা। 'মানুষের পাপ বেড়ে গেলে ভূমিকম্প হয়' এই কথা সম্পূর্ণ যুক্তিহীন, প্রমাণ বিহীন। তবে বিশ্বাসহীন নয়, বিশ্বাস করতেই পারেন। বিশ্বাস করার জন্য কোন যুক্তি প্রমাণের প্রয়োজন নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের তালিকায় যেমন নেপালের মতো কারো সাতে পাঁচে না থাকা নিরীহ মানুষেরা আছে, ধর্মের খুব একটা ধার না ধারা জাপানীরাও আছে। তেমনি মডারেট তুর্কীরা আছে, ধর্মপ্রাণ ইরানী এবং ইন্দোনেশিয়ানরাও আছে। যদি পাপের কারণে ভূমিকম্প হতো তবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের তালিকার এক নম্বরে চিলি থাকার কথা ছিলোনা। অনেক ভেবে চিন্তেও ফুটবল পাগল চিলিকে ঠিক পৃথিবীর সবচেয়ে পাপিষ্ঠ জাতি হিসেবে মেনে নেয়া যায়না। ইন্দোনেশিয়াকেও না। তালিকায় এর পরে থাকে উত্তর আমেরিকা, জাপান বা রাশিয়া। এদেরকে না হয় পাপিষ্ঠ হিসেবে ধরা যায়। কিন্তু তার পরেই আছে আমাদের বাংলাদেশ! সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পই হোক বা সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতি করা ভূমিকম্পই হোক তালিকাটা পুরোই র্যান্ডম। তাই পাপের সাথে বা ঈশ্বরের সাথে এর কোন সম্পর্ক আছে বলে সহজ যুক্তি বা প্রমাণে মনে হয় না ।
আমি ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ নই তবে সামান্য জ্ঞানে এটা জানি পৃথিবীর প্রধান ফল্ট লাইনের সাথে ভূমিকম্পের একটা সম্পর্ক আছে। বেশীরভাগ ভূমিকম্প এই ফল্ট লাইন ধরেই হয়। আফ্রিকার মাঝখানে বসে হাজার পাপাচার করলেও ভূমিকম্প হবার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। আর জাপান ইন্দোনেশিয়াতে ফল্ট লাইনের উপর বসে প্রার্থনা করলেও সেখানে ভূমিকম্প না হবার তেমন কোন সম্ভাবনা নেই।
ভূমিকম্প ও প্রার্থনা
তারপরেও যারা বিশ্বাসী তাদের জন্য প্রার্থনা করা লাভ বৈকি ক্ষতির কিছু নয়।। এতে মনের শক্তি বাড়ে, সাহস বাড়ে, মাথা ঠাণ্ডা রাখা যায়। কিন্তু প্রার্থনার আগে জ্ঞান আরও বেশী জরুরী।
কিছুদিন আগে আমাদের এলাকার উপর দিয়ে ভয়ঙ্কর কয়েকটা টর্নেডো চলে গেল। দশ বারোজন মানুষ চোখের নিমিষে মারা গেল, শতশত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেল কয়েক মিনিটের মধ্যে। বিধ্বস্ত মানে একেবারে বিধ্বস্ত। আস্ত দোতলা বাড়ি চোখের নিমিষে উড়ে গেল, পরে দেখে বোঝার উপায় নেই এইখানে কোন কালে কোন বাড়ি ছিল। টর্নেডোর সময় আমি হাইওয়েতে গাড়ি চালাচ্ছিলাম। মাত্র আধা ঘণ্টা পরেই কাছাকাছি আরেক হাইওয়েতে চলতে থাকা গাড়ি উড়িয়ে নিয়ে অন্যখানে ফেলেছে টর্নেডো বাবাজি। চার পাঁচজন স্পট ডেড। এখন টর্নেডোর খবর শুনে আমি যদি ঘ্যাঁচ করে গাড়ি ব্রেক করে আল্লা বিল্লা শুরু করি সেটা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। আবার চোখ বন্ধ করে যদি গাড়ি চালিয়েও যেতে থাকি সেটাও বোকামি হবে। যেটা করা উচিৎ সেটাই করেছি। টর্নেডো কোথায় কখন কিভাবে আসবে এই সম্পর্কে রেডিওতে যা যা তথ্য দিচ্ছিল সেগুলো জেনে নিকটস্থ আশ্রয়ে ছুটে গেছি। আমার বাড়ি কাছেই থাকায় নিকটস্থ আশ্রয় সেটাই হয়েছে। বাসায় পৌঁছানো মাত্র প্যাঁ পু করে ভয়ঙ্কর শব্দের সাইরেন শুরু। তার মানে বাসার বেইজমেন্ট বা নীচতলায় সবচেয়ে মাঝখানের কোন দরজা জানালা ছাড়া জায়গায় আশ্রয় নিতে হবে। আমরা গিয়ে আমাদের স্টোররুমে ঢুকলাম। সাইরেন শেষ না হওয়া পর্যন্তও বা খবরে বলা সময়ের আগ পর্যন্তও সেখান থেকে বের হওয়া ঠিক নয়। এই পর্যায়ে গিয়ে যদি আমি বিশ্বাসী মানুষ হতাম তবে কলমা বা কোন সূরা বা জালালি খতম হয়তো পড়া শুরু করতাম। তাতে লাভ নিয়ে সন্দেহ থাকলেও ক্ষতির সম্ভাবনা তেমন নেই। কিন্তু যেহেতু আমি বিশ্বাসী না, তাই মোবাইলে বসে বসে ওয়েদার ডট কম আর অন্যান্য সোর্স থেকে নানা খবর দেখলাম। নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে খবর দেখা আর প্রার্থনা করা কোনটার মাঝেই ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
ভূমিকম্প ও ঈশ্বরের ঘর
একই কথা ভূমিকম্পের জন্য প্রযোজ্য। ভূমিকম্প দেখে নিজ জায়গায় গ্যাঁট হয়ে বসে আযান দিলে সেই আযান শুনে ভূমিকম্প চলে যাবার একটা সম্ভাবনা আছে। কোন কিছুর সম্ভাবনাই শূন্য নয়। তবে চলে গেছে এমন কোন শক্ত প্রমাণ বা উদাহরণ নেই। অন্যদিকে ভূমিকম্প বা যে কোন দুর্যোগে কি করতে হবে সেই সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা থাকলে জান বাঁচানোর একটা বিরাট সম্ভাবনা আছে।
১৯৯৯ তে তুরস্কের ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় অর্ধ-লক্ষ লোক মারা যায় বলে ধারণা করা হয়। উইকি ইসলামে এই ছবিটি দেয়া আছে। সাথে গর্ব করে বলা আছে এতো এতো লোক মরে গেল কিন্তু এই মসজিদের কিছু হল না। মসজিদ পুরাপুরি অক্ষত।
একইভাবে ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরের সুনামির পর দাঁড়িয়ে থাকা এই মসজিদটির ছবি প্রচুর দেখা যায়। এই সুনামিতে ইন্দোনেশিয়া এবং আরও অন্যান্য দেশ মিলিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। কিন্তু মসজিদ অক্ষত।
একইভাবে Standing Mosque লিখে গুগলে খুঁজলে হাইতির ভূমিকম্প এবং জাপানের সুনামির পর অক্ষত মসজিদের ছবি পাওয়া যায়। জাপানে মারা গিয়েছিল পনের হাজারের মতো আর হাইতিতে প্রায় তিন লাখ। এখন এই সমস্ত ঘটনা থেকে একটাই অনুসিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়, যেহেতু আপনি মসজিদ না আপনি একজন মানুষ তাই সুনামি হোক আর ভূমিকম্প হোক আপনার ভয় পাবার যথেষ্ট কারণ আছে। ইন্দোনেশিয়া বা তুরস্ক বা হাইতি বা জাপানের মসজিদের ভেতরে থাকা বা বাইরে থাকা মুসলমানদের পরিণতি কি হয়েছে সেটা জানা যায়না। খুব সম্ভব সেই লাখ খানেক মানুষের মাঝে তারাও আছে। সেইসাথে যেই ছবিগুলা দেখানো হয় সেগুলো অক্ষত মসজিদের। ইন্দোনেশিয়াতে তো আর একটা মসজিদ ছিল না। ওই এলাকার বাকি মসজিদদের পরিণতি বা ভেঙ্গে পরা মসজিদ দেখতে গুগলে Standing Mosque এর বদলে Destroyed Mosqueলিখে খুঁজলেই হবে। Standing Mosque মিরাকলে ঘুরেফিরে উপরের চারটি মসজিদ আসলেও ভেঙ্গে পরা মসজিদের সংখ্যা অনেক অনেক বেশী। তাই ঈশ্বর যে সব মসজিদ মন্দির গির্জা বাঁচিয়ে ফেলেন এটাও একদমই নিশ্চিত না। তাই মসজিদের ভেতরেই থাকুন বা বাইরে জোর সম্ভাবনা পরিণতি ওই লক্ষ লক্ষ লোকের মতোই হবার।
ভূমিকম্প ও পাপের দেশ
২০১৫ সালের করা এক তালিকা অনুসারে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা দেশ হচ্ছে Vanuatu (আমি নিশ্চিত এই নামে যে একটা দেশ আছে সেটা বেশীরভাগ মানুষই জানে না, আমি জানলাম এইমাত্র), দ্বিতীয় দেশ Tonga । ম্যাপ দেখলেই এই দুটি দেশের ঝুঁকির কারণ বোঝা যায়। প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে এক খাচ্চর এলাকায় দুটি দেশ। ভ্যানুয়াতু যেখানে অবস্থিত সেটা প্রশান্ত মহাসাগরের সবচেয়ে অশান্ত এলাকাদের মধ্যে একটা। হ্যারিকেন, সাইক্লোন, টর্নেডো, সুনামি কি নেই সেখানে। মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে সেইখানে একটা আগ্নেয়গিরিও আছে। সেই খাঁড়ার উপর আবার চাপাতির ঘা হিসেবে দেশটা মেজর ফল্ট লাইনের প্রায় উপরে। প্রায় কাছাকাছি অবস্থা টোঙ্গারও। যেই দুই দেশ নামই বেশীরভাগ মানুষ জানেনা আর যেখানের জনসংখ্যা লাখখানেক মাত্র তারা মুসলমান না খেরেস্তান না ইহুদি না হিন্দু তাতে কি আসে যায়। তাই এরা পাপিষ্ঠ কিনা সেই হিসেব না করে তালিকায় ফিলিপাইন আর গুয়াতেমালা পার হয়ে পাঁচে চলে যাই। পাঁচ নম্বরে আছে আমাদের বাংলাদেশ (যেখানে চতুর্থ বৃহৎ মুসলমান জনগোষ্ঠী আছে, প্রায় ৯.২%) । আবার শুধু ভূমিকম্পের হিসাব করলে তালিকার একদম শুরুর দিকেই থাকবে ইন্দোনেশিয়া, পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মুসলমান জনগোষ্ঠী (মোট মুসলমান জনগোষ্ঠীর ১২.৪%) । পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর তিন ভূমিকম্পের একটি হয়েছে ইন্দোনেশিয়াতে।
আবার অন্যদিকে পৃথিবীর সবচেয়ে কম প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা দেশ এর তালিকায় পুণ্যবান সৌদি, কাতার, আমিরাতকে দেখে খুশীতে দাঁত বের হয়ে গেলেও পাপিষ্ঠ ইসরায়েলকে দেখে দাঁত বন্ধ হয়ে যাবার কথা। তাই কোথায় কেমন দুর্যোগ হচ্ছে তার তালিকা নিয়ে পাঁচ মিনিট ঘাঁটাঘাঁটি করলেই পরিষ্কার হয়ে যায় ভূমিকম্প বা যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে পাপ পুণ্য এর কোন সম্পর্ক নেই। মহাসাগরের বিপদজনক এলাকা, আগ্নেয়গিরি, ফল্ট লাইন বা নানা ভৌগলিক ব্যাপার স্যাপারের সাথে সম্পর্ক আছে। এটা গত বছরের একটি মাসের ভূমিকম্পের ম্যাপ। সবসময় অবশ্যই একরকম হবে না, তবে এই ম্যাপ দেখে বেশ খানিক ধারণা করা যায় কোথায় কোথায় ভূমিকম্প হয়। ম্যাপের লাল লাইনগুলো ফল্ট লাইন। ভূমিকম্পের বড় একটা অংশ এই মেজর ফল্ট লাইন ধরেই হয়।
ভূমিকম্প হলে আযান দিলে সমস্যা নেই, তবে আগে অন্য সতর্কতাগুলো জরুরী। নিরাপদ স্থানে বসে যত খুশী আযান দিলে সমস্যা নেই। কিন্তু কিছু না করে নিজ জায়গাতে ঠায় বসে আযান দিতে থাকলে কোন বীমের তলে পড়ে চ্যাটকা খেয়ে মরার সম্ভাবনাই বেশী। সচেতনতা বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই। ভূমিকম্প খোদার আজাব না, পাপ করলে ভুমিকম্প হয় না। পৃথিবীর ভেতরের এনার্জি রিলিজের কারণে ভূমিকম্প হয়। সেই এনার্জির রিলিজ হয় ফল্ট প্লেন দিয়ে, তাই ফল্ট লাইনের কাছে থাকলে ভূমিকম্প হবে। ফল্ট লাইনের কাছে বসে হাজার দুয়া কালাম পড়লেও ভূমিকম্প হবে। ফল্ট লাইন থেকে দূরে বসে মদ গাজা খেলেও ভূমিকম্প হবে না। প্লেট বাউন্ডারি থেকে দূরে থাকলেও ভূমিকম্প হতে পারে তবে এই ম্যাপ দেখলেই বোঝা যায় বেশীরভাগ ভূমিকম্পই হচ্ছে লাল দাগের আশেপাশে। এখন যদি এই লাল দাগ বরাবর বসে পাপ পুণ্যের হিসাব করতে হয় তবে বলতে হবে উপমহাদেশ, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জাপান আর ক্যালিফোর্নিয়ার মানুষ সবচেয়ে পাপী। একইভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দশটি দুর্যোগের তালিকায় যেমন চীন, জাপান আছে তেমনি বাংলাদেশের নামও দুইবার আছে। তাই আপাতত পাপ পুণ্যের হিসাব বাদ দিয়ে নিরাপত্তার বিষয়গুলো দেখে নিন।
ভূমিকম্প ও কারণ
কী কারণে ভূমিকম্প হয় সেটের উত্তর খুব সহজ এবং ছোট। কি কারণে হয়না সেই তালিকা বরং জটিল ও বিশাল। তাই কী কারণে হয় না সেটা জেনে নেই আগে।
কী কী কারণে ভূমিকম্প হয় না -
পাপের পরিমাণ বেড়ে গেলে ভূমিকম্প হয়না।
বিয়ে বহির্ভূত যৌনসঙ্গম করলে ভূমিকম্প হয় না (বাচ্চা হতে পারে, গোপন ভিডিও বের হতে পারে, এমনকি এইডসও হতে পারে তবে ভূমিকম্প হবে না)
মেয়েরা জিনস পড়লে ভূমিকম্প হয় না
নারী ‘উপযুক্ত’ পেষাক পরিধান না করলেও ভূমিকম্প হয়না (আফ্রিকাতে বেশ কিছু ট্রাইব নারী পুরুষ নির্বিশেষে দিব্যি দিগম্বর হয়ে ঘুরে, ওখানে ভূমিকম্প হয়না, হবেও না)
মেকআপ ব্যবহার করলে ভূমিকম্প হয়না।
নারীর চুল ও শরীর ঢেকে না রাখলে ভূমিকম্প হয়না।
মানুষ ব্যাপকহারে ধর্ম-বিমুখ হলেও ভূমিকম্প হয়না।
আনন্দ, রং তামাশা, নাচ গানায় মগ্ন থাকলেও ভূমিকম্প হয়না।
সমাজে ও রাষ্ট্রে অযোগ্য লোক এবং মহিলা নেতৃত্ব থাকলেও ভূমিকম্প হয়না।
মানুষের মধ্যে ভক্তি, শ্রদ্ধা, স্নেহ ভালবাসা কমে গেলেও ভূমিকম্প হয়না।
রাহুল গান্ধী গরুর মাংস খেলেও ভূমিকম্প হয়না।
অন্য যে কেউ যে কোন কিছু খেলেও ভূমিকম্প হয়না। (উল্টাপাল্টা কিছু খেলে পেট খারাপ হতে পারে, ভূমিকম্প হবে না)
পহেলা বৈশাখ পালন করলে ভূমিকম্প হয় না (ভ্যালেন্টাইন, ঈদ, পূজা কোন কিছু পালন করলেও না)
কী কী কারণে ভূমিকম্প হয় -
খুঁটিনাটি অনেক বিষয় আছে। তবে সহজ করে একই কথা আবার বলি। পৃথিবীর ভেতরের এনার্জি রিলিজের কারণে ভূমিকম্প হয়। সেই এনার্জির রিলিজ হয় ফল্ট প্লেন দিয়ে, তাই ফল্ট লাইনের কাছে থাকলে ভূমিকম্প হবে। উইকি থেকে নেয়া এই ছবিতে স্পেনের পাথুরে পাহাড়ি এলাকায় ফল্টের কাছে এসে পাথরের লেয়ারটা ক্যাঁতরে পড়েছে সেটাই দেখানো হয়েছে। এইখানের এই ক্যাঁতরে পরাটা মাত্র কয়েকফুট উঁচুনিচু হলেও মাটির দশ বিশ হাজার ফুট নীচের ফল্টের কারণে লেয়ারের ক্যাঁতরে পরাটাও হাজার হাজার ফিট হতে পারে।
তবে মেজর ফল্ট লাইন ছাড়া ভূমিকম্প হবে না এটা বললে পুরোপুরি ভুল একটা তথ্য দেয়া হয়। আম্রিকার ওকলাহোমাকে বলা হয় earthquake capital of world । উপরের ছবিতে যে লাল রঙের মেজর লাইন তার কোনটাই ওকলাহোমার উপর দিয়ে যায়নি। তবে ওকলাহোমার নিচে জালের মতো গুরাগুরা ফল্ট লাইন ছড়িয়ে আছে। তার উপর আবার দুষ্টু লোকে বলে তেল তুলে আর ফ্র্যাকিং করে ওকলাহোমার মাটির নীচটা একবারে ঝাঁজরা করে ফেলছে শয়তান তেল কোম্পানিরা। মোটের উপর বলা যায় ভূমিকম্পের একাধিক কারণ আছে তবে কোনটাই অবৈজ্ঞানিক বা ভূতুরে কোন কারণ নয়।
ভূমিকম্প ও করণীয়
বাংলাদেশে ভূমিকম্পে যত ক্ষতি হবে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হবার কথা ভূমিকম্পের ভয়ে বা প্রবল আতংকে দৌড়াদৌড়ি হুড়াহুড়ি কিলাকিলির মাধ্যমে। আমাদের অভাগা দেশে ভিড়ের মধ্যে কেউ 'ওই আইল রে, দৌড়া' বলে কেউ একজন হাঁক দিলে কি আইল, কে আইল, কেন আইল না দেখে না জেনে না বুঝে মানুষ দিক্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে দৌড় দিবে। দৌড় দিয়ে একজন আরেকজনকে পাড়িয়ে মারবে। আর দ্বিতীয় বড় ক্ষতিটা হবে ভূমিকম্পের পরবর্তী সাহায্য সহযোগিতা না পেয়ে, কোন পরিকল্পনা তৈরি না থাকার কারণে।
ভূমিকম্পে কী কী করণীয় সেটা নিয়ে লিখতে বসলে এখন আস্ত একখানা বই লিখে ফেলা যাবে। কোনটাই আগে জানা জ্ঞান নয়, গুগলে গিয়ে দুই তিনটা শব্দ লিখে অর্জিত জ্ঞান। তাই এই লেখায় সেই জ্ঞান দিয়ে ভার আর বাড়াচ্ছি না। কারো যদি ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমার এই লেখা খানা পড়ার ক্ষমতা থাকে তাহলে তার মাত্র দশ মিনিট ব্যয় করে জেনে ফেলার সুযোগও আছে। সেগুলো পড়ে করণীয় জেনে নিন। সচলেই ভূমিকম্প ও তাতে করণীয় নিয়ে অনেক লেখা এসেছে এই বিষয়ে নানা বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে।
তানভীরের এই দুই লেখা থেকে জানতে পারবেন ভূমিকম্পে কী করণীয়/জীবন রক্ষার টিপস
এবং বাংলাদেশে ভূমিকম্প বিষয়ক ঝুঁকি, প্রস্তুতি ও করণীয়
দ্রোহীর পাঁচ পর্বের ভূমিকম্প ও বাংলাদেশ সিরিজ থেকে জানতে পারবেন ভূমিকম্পের কারণ ও করণীয় সম্পর্কে অনেককিছু।
দেশে একটা করে ভূমিকম্প হয় আর অসহায় হয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছু করতে পারি না। ভূমিকম্পের ঝাঁকুনি শেষ হতে না হতেই যখন শুরু হয় ভূমিকম্পের পাপ তত্ত্ব তখন আতঙ্কের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। সবশেষে সবাইকে বারবার সতর্ক করা, সচেতন হতে বলা ছাড়া আর কিছু মাথায় আসে না। যত খুশী দোয়া কালাম পড়ুন সমস্যা নেই। কিন্তু আগে ভূমিকম্প হলে নিরাপত্তার জন্য যা যা করণীয় সেগুলো করতে করতে দোয়া কালাম পড়ুন। আর সেইসাথে যারা বলে বৈশাখ পালনে বা নারীরা জিনস পরলে বা হাসি মশকরা মাস্তি করলে ভূমিকম্প হয় তাদের মুখে একটা করে ঝাঁটার বাড়ি মারুন। কারণ এদের লক্ষ্য ভূমিকম্প বিষয়ে আপনাকে সতর্ক করা নয় বরং ভূমিকম্পকে ব্যবহার করে নিজের উদ্দেশ্য হাসিল করা।
(ফুটনোট - আমি কোন ভূতত্ত্ব বা আবহাওয়া বিজ্ঞানী নই। যা যা তথ্য দেয়া হয়েছে সবই গুগল ঘেঁটে অল্পবিদ্যা আহরণ এর মাধ্যমে। যে কোন তথ্যে ভুল থাকলে আমাকে চিবি দিয়ে ধরলেই সাথে সাথে ভুল শুধরে দিবো। লেখার উদ্দেশ্য ভূমিকম্পের কারণ ও প্রতিকার ব্যাখ্যা নয়। প্রাকৃতিক এবং স্বাভাবিক ঘটনাকে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে ঈশ্বরের সাথে মিলিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা বন্ধ করাই লেখার দ্বিতীয় উদ্দেশ্য। আর প্রথম উদ্দেশ্য শুধু ঈশ্বরের আশায় বসে না থেকে মানুষ যেন সচেতন হয় সেই চেষ্টা করা।
তথ্যসূত্র - Wikipedia, Wikiislam, USGS )
মন্তব্য
ভূমিকম্প ও যে কোন ধরনের বিপর্যয়ের সময় মাথা ঠাণ্ডা রাখাটা জরুরী কিন্তু কঠিন। বিদেশের কোথাও কোথাও শুনি স্কুলে ফায়ার-ড্রিল, আর্থকুয়েক ড্রিলের মাধ্যমে বাচ্চাদের শিক্ষিত করে তোলা হয় কিভাবে বিপর্যয়টা মোকাবেলা করা যায়, সেরকম কিছু আমাদের দেশের জন্যও জরুরী মনে হয়। শুধু বাচ্চাদেরই নয় বড়দের জন্যও এটা প্রয়োজনীয় কেননা ঠিক বিপদের মধ্যে কি করতে হয় সেটা সম্পর্কে আমরা প্রাপ্ত বয়স্করাও ঠিক জানিনা। জানার মধ্যে এক গাদা লিখিত নির্দেশনা যা ঠিক সময়ে হয়তো মনেও আসবেনা। খুবই প্রাসঙ্গিক লেখাটা, ভূমিকম্পের ধর্ম ভিত্তিক ব্যাখ্যা গুলো আশে পাশে প্রায়ই শুনতে হয়। এবারো ঠিক পহেলা বৈশাখের আগের দিন ভূমিকম্প হওয়াতেই মনে হলো এবারও হয়তো কেউ বলে বসবে এই বেদাত উৎসব পালন থেকে বিরত থাকতেই ঈশ্বরের এই হুশিয়ারী। জানিনা এর মধ্যেই কেউ বলে ফেলেছে কিনা।
সোহেল ইমাম
এটাই সবচেয়ে বেশি জরুরী। ভূমিকম্পে যা হবে সেই ক্ষতি হয়তো ঠেকানো যাবে না। কিন্তু ভূমিকম্পের সময় এবং তার পরে শুধু প্যানিকের কারণে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে কোন ট্রেনিং না থাকার জন্য।
এক্কেরে পাঠ্যপুস্তক রচনা কইরা লাইছেন দেখি
জানি, একটু বেশিই খটমটে হয়ে গেছে
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
Fault - মানে দোষ, দোষ মানে গুণাহ । গুণাহ করলে ভুমিকম্প হবে। এতে এত ত্যানা প্যাচানোর কী আছে?
আপনে কি নাস্তেক?
হ, তার ওপর 'ফল্ট' এর পরের শব্দটা 'লাইন', প্রকৃতিও কয়- 'লাইনে আসুন'
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ক্যাডায় কইছে গজব নাই! আমার কমেন্ট কি এমনি এমনি লাফায়?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
- তিনে তো ফিলিপাইন্স দেখলাম, ইন্দোনেশিয়া নয়।
আলাদা করে লেখা নিয়ে বলার কিছু নেই, বরাবরের মতই ...
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
ঠিক ধরেছেন। শুধু ভূমিকম্পের তালিকায় ইন্দোনেশিয়া তিনে। সেটার সাথে প্যাঁচ লাগিয়ে ফেলেছিলাম। ঠিক করে দিলাম। অনেক ধন্যবাদ।
কিন্তু আমি যে শুনলাম মুন্নী সাহা লাইভ প্রোগ্রাম করে হিন্দুদের অনুষ্ঠান পহেলা বৈশাখকে প্রোমোট করছিল দেখে তৎক্ষণাৎ মিয়ানমারে ভূমিকম্প হয়?
..................................................................
#Banshibir.
মসজিদ না ভেঙে মানুষের বসতবাড়ি ভাঙলে মঙ্গল কার? মানুষতো আর মসজিদে বসবাস করেনা, বাসায় করে, সেখানেই মরে। বাসাগুলি না ভেঙে শুধু মসজিদ বা মন্দির ভেঙে গেলে মানুষের জান কম যেত। ব্যাপারটা এইভাবেও দেখা যায়।
গজব পার্টি'কে এভাবে ভরে দিলেন??
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
দারুণ কাজ করসেন বস !! স্যালুট!
কাল থেকে বিশাল জ্ঞান লাভ করছিলাম যে পহেলা বৈশাখ পালনের আগে এই ভূমিকম্প আল্লাহর তরফ থেকে একটা হুশিয়ারি সংকেত, এখন আপনি এটা কী বললেন বলুন তো?
...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”
এইসব কথায় ফল্ট লাইন ভেজে? টেকটোনিক প্লেট ইজ জাস্ট আ থিয়োরি! বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত মাটির নিচে প্লেট-টেট কিছু খুঁইজা পান নাই। কোনও এক বিজ্ঞানী 'থিয়োরি' দিছেন, লোকে এইটা নিয়াই লাফাইতাছে। এককালে তো হাতি আর কচ্ছপ নিয়াও 'থিয়োরি' ছিল, তাই না। কালের বিবর্তনে সেই সব পৌত্তলিক 'থিয়োরি' দুনিয়ার বুক থেকে হারায়া গেছে। সময় মত 'টেকটোনিক প্লেট' সংক্রান্ত ইয়াহূদী থিয়োরি কিংবা 'ফল্ট লাইন' সংক্রান্ত নাছারা থিয়োরিও বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আপনি যেমন ২+২=৫ বলতে পারেন না, ঠিক একইভাবে ফল্ট লাইনের জন্য ভূমিকম্প হয়, এটাও বলতে পারেন না। অর্থাৎ, ২+২=৪ (রেফারেন্সঃ বেসিক'স অব এডিশান, চ্যাপ্টার নং-১, ভার্স নং-২)। অর্থাৎ, গজবের জন্যই ভূমিকম্প হয়। আপনি মনে হয় আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন, ব্রাদার। অতএব, পূর্বপ্রস্তুতি বা পরিকল্পনা এসব বেদায়াতী-দুনিয়াবি লাইন ছেড়ে ছহীহ লাইনে আসুন।
অটঃ উদাস'দা, প্রথম টেবিলে অনেক আগের ভূকম্পনগুলার রিক্টর স্কেল মান কি অনুমিত?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ঠিক বলছেন। সবই তত্ত্ব মাত্র।
অট - আমি নিশ্চিতভাবে জানিনা কিভাবে এত আগের ভূমিকম্প রিক্টর স্কেলে মেপেছিল। আমার জ্ঞান ওই উইকি থেকে চোথা মারা পর্যন্তই। ধারণা করি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ থেকে একটা অনুমিত মান ওইটা। ভূমিকম্প ইস্পিসালিস্ট 'দ্রোহী' কে ধরেন। ঠিক ঠিক বলে দিবে কিভাবে মাপা হইছে।
হুমম... উইকিতেও ব্রাকেটে (est) লেখা। দ্রোহীদার জন্য নিয়া বসলাম।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
6.5 Magnitude Earthquake Hits Vanuatu
বরাবরের মতোই- দারুণ!
_________________
[খোমাখাতা]
মনে আছে, একবার ভুমিকম্পে সবাই বের হলেও, আমার বেশ সময় লেগেছিল -আমি স্যান্ডেল খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
...কী লাভ বেঁচে থেকে যদি খালি পায়েই হাঁটা লাগে? একমত।
..................................................................
#Banshibir.
কথা সত্য
ভালো লিখেছেন ভাই।
জরুরি লেখা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আপনি কি বলতে চাচ্ছেন "গজব" বলে কিছু নাই??!! নোংরামি লেখা লেখেন কেনু?
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হবে দেখি। জব চার প্রকার ... আ গ গু আর ফু(ব্লো) ... ইত্যাদি ইত্যাদি।
দেশে গরু গাধা বাইরা গেলে ভূমিকম্প হয়
এইডা না হইছে একটা হক কথা
এতে কথা বইলা লাভ নাই, শুনেন বাংলাদেশে কি এর আগে এত ভূমিকম্প হইছে? না, হয় নাই। বর্তমান বাংলাদেশে ভূমিকম্প হওয়ার মূল কারণ শাহবাগী “নাস্তেক”দের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ৫ই মে ইসলামের হাগার হাগার সৈনিকদের জুলুম করে হত্যা করা!
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
মিনহোয়াইল
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আবার জিগায়!
দিলেন শান্তির উপদ্রবে অশান্তি করে
নিত্যদিনের ঘনঘন এই নাড়াচাড়ার দোষটা ঘোষের উপর থেকে সরিয়ে জাতি যখন যাবতীয় অনাচার-বেলেল্লাপনার উপর চাপিয়ে, দু'চার কথা শুনিয়ে নেকি অাদায় ও তওবা করতপূর্বক হাঁপ ছেড়ে বেশ কয়েক দন্ড শান্তির শায় সহি মউজ-মাস্তি করছিল- তখনই চরম ঔদাসিন্যের সাথে এরূপ অহেতুক রম্য উপদেশ দিয়ে অাগুনে পানি ঢেলে দিলেন যেন
এখন কম্পনানুভূতিতে অাঘাত না লাগলেই হল
যা হোক, এরকম সময়োচিত লেখা বরাবরই প্রত্যাশিত.....অার টর্নেডোর সামনে তো পড়িনি জীবনেও, কিন্তু ভিডিওতে সেটার ভয়ঙ্কর সুন্দর রূপ দেখে বার বার মনে হয় একটাবার ছুঁয়ে দেখি, সামনে দাঁড়াই মাটি অাঁকড়ে!!
নতুন মন্তব্য করুন