তা সে অনেক বছর আগের ঘটনা। বার্ষিক পরিক্ষার পর স্কুলের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছি। সে সময়ে গ্রামে আমার বয়সী বেশ কয়েকজন জ্ঞাতিভাই ছিল। আমি গ্রামের বাড়িতে গেলে তাদের সাথেই মিশে যেতাম। লেখাপড়ায় তাদের খুব একটা গরজ ছিলনা।
সারাদিন হৈ-হুল্লোড় করে বেড়ানো, নৈকায় করে সোনামুখো বিলের মাঝে ঘুরে বেড়ানো, শাপলা-শালুক তোলা, পুকুরে জাল টেনে মাছ ধরা, বাওড়ে লম্ফ-ঝম্প করে গোসল করা, রাতের বেলা জ্ঞাতি চাচার ছাঁট দেওয়া মোরগ চুরি করে নিজেদের ভাঁড়ার থেকে চাল-ডাল, তেল-নুন, পিঁয়াজ-মরিচ সংগ্রহ করে পিকনিক করা, ইত্যাকার বাঁদরামিতো ছিলোই।
আমাদের গ্রামের বসত বাড়িটির সামনে দুধারে দুটি দহলিজ ঘর ছিল (এখনও আছে তবে বেহাল দশা)। আমরা এগুলোকে দলুজ বলতাম। এর একটাতে বসতেন সিনিয়ররা। আর অপরটিতে আমরা। সাধারনত বিকাল বা সন্ধ্যায় এ আসর বসতো। সিনিয়ররা রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করতেন, উজির-নাজির মারতেন। ভিলেজ পলিটিক্স নিয়ে ছক আঁটতেন। ফসলের দর-দাম, উৎপাদন ইত্যাকার বৈষয়িক আলোচনাও থাকতো। আর থাকতো, পারিবারিক সমস্যার আলোচনা ও সমাধান। তাঁরা প্রায় সকলেই পরিবার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করতেন। আমরা তাঁদের দলের নামকরণ করেছিলাম, 'কুক পার্টি'।
অপর দলুজটিতে চলতো আমাদের আড্ডা। সন্ধ্যা থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত। মাঝে এক ফাঁকে রাতের খাবার খেয়ে নেয়া হতো। আমরা সাধারনত ক্যারম, লুডু, তাস ইত্যাদি খেলতাম। পরের দিনের প্রোগ্রাম বানাতাম। আমাদের মধ্যে দু-একজন ছিল দুষ্টবুদ্ধির মাস্টার। তাদের বুদ্ধিমতো আমরা কখনও সখনও জনে (কৃষি শ্রমিকের কাজ) যেতাম। বর্ধিষ্ণু কোন কৃষকের জমিতে হয়তো নিড়ানোর কাজ চলছে। আমরা স্বদলবলে উপস্থিত হয়ে নিড়ানী হাতে কাজে লেগে গেলাম। অবশ্য আমি ছিলাম তাদের ভিআইপি মেহমান। আমাকে কোন কাজ করতে হতোনা। আসলে আমি এসব পারতামই না। মালিক পক্ষের কেউ কেউ আহাহা করকি করকি বলে ছুটে আসতেন। আমাদের মধ্যে ডেঁপো ছেলেটি হয়তো বলতো, চাচা, আপনার জমিতে নিড়ানী দেব এতে আর লজ্জার কি ? তা ছাড়া আমাদেরও তো টুকটাক খরচা-পাতি লাগে। মালিকপক্ষও এদের কারিকীর্তি সম্পর্কে ওয়াকেবহাল। আর্থিক ক্ষতি মেনে নিয়েও এদেরকে কিছু টাকা পয়সা দিয়ে বিদায় করতেন। চাচামিয়াকে ছালাম জানিয়ে প্রয়োজনে খবর দেবার অনুরোধ জানিয়ে বিদায় নেয়া হতো। সম্ভবত এভাবে এভাবেই এই দলটির নাম হয়ে গিয়েছিলো 'কৃষক পার্টি'। আমি ছিলাম পার্টির ভিআইপি সদস্য।
তো, যাইহোক, একদিন সেই কুকপার্টির আলোচনায় সিদ্ধান্ত হলো যে, পর্যায়ক্রমে তাঁরা দলবেঁধে সবার শ্বশুর বাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে যাবে। আলোচনা করে প্রথম যাঁর শ্বশুর বাড়ি নির্দিষ্ট করা হলো, তাঁর উপর দায়িত্ব পড়লো নেমন্তন্ন কনফার্ম করার।
দু দিন বাদেই ওঁদের নেমন্তন্নের কনফার্মেশন এসে গেল। নানাবিধ আলোচনা করে তাঁরা নেমন্তন্নে যাবার প্রস্তুতি গ্রহন করলেন। তো, ওদেরই একজন আবার আড্ডা ভেঙ্গে যাবার পর আমাদের আড্ডায় আসতেন। ওঁর আবার অত তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে ইচ্ছে হতোনা। তা উনি এসে সুখরটি বড়ই রসিয়ে রসিয়ে পরিবেশন করলেন। সকালের নাশতায় নানা পদের পিঠা আর তার সাথে হেলে-রুটি-মুরগীর মাংস, দুপুরে খাসী পাড়া হবে ইত্যাকার কথাবার্তায় আমাদেরকে ঠেস দিয়ে একটু মজা করা আরকি !
নির্দিষ্ট দিনে ওঁরা খুব ভোরেই সাইকেলযোগে বেরিয়ে পড়লেন। আর আমরাও আমাদের পরিকল্পনা মতো চাল-ডাল, তেল-নুন নিয়ে নৈকায় চড়ে বসলাম। গন্তব্য, 'মেন্দে'। ।এখানে একটু বলতে হয়, এই মেন্দে হচ্ছে আমাদের বাড়ির সামনের বাওড়ের মাঝখানে একটা দ্বীপমতো জায়গা যা আমাদের পারিবারিক সম্পত্তি। প্রায় সাড়ে তিনশো বিঘা জমি, সাড়ে তিন দিকে বাওড় দ্বারা বেস্টিত। চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর আগে এই জায়গাটাতে অনেক গাছপালা, ঝোপঝাড়, বাগান ইত্যাদি ছিলো এবং প্রায় একশো বিঘা জমিতে খড় বাগান ছিলো। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের গ্রামের বাড়িটি মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রানজিট ক্যাম্প হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিলো। এটি দক্ষিণ বাংলার বিএলএফ (মুজিব বাহনী) এর ঘাঁটি ছিলো। দিনের বেলা মুক্তিযোদ্ধারা এই মেন্দেতেই অস্ত্রসহ অবস্থান করতেন।
তো, যা বলছিলাম, আমার এক জ্ঞাতিভাই যিনি শ্বশুর বাড়ির নেমন্তন্ন খেতে গিয়েছিয়েন, তাঁর অনেক ভেড়া ছিল, তা প্রায় শ'খানেক। শখ করে পুষতেন। দিনের বেলা সেই ভেড়াগুলোকে মেন্দেয় পাঠিয়ে দেয়া হতো চরে চরে ঘাসপাতা খাবার জন্য। ভেড়াগুলো দেখভাল করার জন্য একজন সার্বক্ষণিক লোক নিয়োগ করা ছিলো। তার কাজ ছিলো, সারাদিন ভেড়াগুলোকে চরিয়ে ঘাসপাতা খাওয়ানো আর পাহারা দেওয়া। লোকটার নাম ছিলো 'ভোদু'। অনেকের ধারনামতে সে একজন বু্দ্ধি-প্রতিবন্ধী ছিলো।
আমরা মেন্দেয় পৌঁছে একটা জায়গা বেছে নিয়ে রান্নাবান্নার ব্যবস্থা করতে লেগে গেলাম। ফাই-ফরমাস খাটার জন্য ভোদুকেও আমরা দলে নিলাম। এক সময় ভোদুকে বলা হলো বড়সড় একটা ভেড়া ধরে আনতে। সে আমতা আমতা করতে থাকায় আমার এক জ্ঞাতিভাই যে কিনা ঐ পরিবারেরই সদস্য, বললো, আমি অর্ডার দিচ্ছি, ধরে নিয়ে আয়, সমস্যা হলে দায়িত্ব আমার। তার আশ্বাস পেয়ে ভোদু বেশ বড়সড় একটা ভেড়া ধরে নিয়ে আসলো। ভেড়া জবাইতেও তাকে সক্রিয় ভুমিকায় রাখা হলো।
রান্না শেষে সবাই ভেড়ার মাংস দিয়ে পেট পুরে ভাত খেলো। ভোদুকেও খুব আপ্যায়ন করে খাওয়ানো হলো। অবশিষ্ট ভাত-মাংস সব ভোদুকে দিয়ে দেয়া হলো। তাকে পই পই করে বারন করে দেওয়া হলো, এ ঘটনা যেন কাউকে না বলে।
পরদিন বিকালে নেমন্তন্ন সেরে আমার সেই ভেড়ার মালিক জ্ঞাতিভাই ফিরে আসলেন। সন্ধ্যায় যথারীতি তিনি তাঁর ভেড়ার পালের খোঁজ নিতে গিয়ে বড় ভেড়াটি না দেখেতে পেয়ে ভোদুর কাছে জানতে চাইলেন। ভোদুর নির্বিকার উত্তর, কি জানি, আমিতো সব ভেড়াই ফেরত এনেছি। হ্যা, তবে বড় ভেড়াটিতো সত্যিই দেখছিনা। জ্ঞাতিভাইটি ভোদুকে নির্দেশ দিলেন, আগামীকাল যেন সে মেন্দের ঝোপঝাড়ে ভাল করে খোঁজে। পরদিন ভোদু দুপুরে খেতেও এলোনা। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলে আমার জ্ঞাতিভাইয়ের প্রশ্নের উত্তরে জানালো, খুঁজছিতো। পরদিন জ্ঞাতিভাই নিজে গেলেন, দুই জনে মিলে ঝোপঝাড়, আনাচে কানাচে সব জায়গাতেই তন্ন তন্ন করে খুঁজলেন কিন্তু ভেড়া আর পাওয়া গেলনা। আজ অব্দি পাওয়া যায়নি।
দীর্ঘকাল আগের কথা। তারপর অনেকদিন গত হয়েছে, আমার সেসব দিনের সঙ্গি সেই সব জ্ঞাতিভাইয়েরা কর্মজীবনে কে কোথায় কি ভাবে আছে তার খোঁজখবর আর রাখা হয়নি। কিছুকাল আগে এক পরিচিত জনের কাছে শুনেছিলাম তাদের মধ্যে কে একজন নাকি কোন এক বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। তখন বিশ্বাস হয়নি, এখন মনে হয়, হতেও পারে।
মন্তব্য
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
ধন্যবাদ। অনেক অনেক দিন পরে।
ভাল থাকুন।
আমরা ভেড়া পর্যন্ত যেতে পারিনাই, মাছ আর মুরগিতেই শেষ
ধন্যবাদ, পড়বার জন্য।
শেষের প্যারাতে ।।
ধন্যবাদ।
"এটি দক্ষিণ বাংলার বিএলএফ (মুজিব বাহনী) এর ঘাঁটি ছিলো। দিনের বেলা মুক্তিযোদ্ধারা এই মেন্দেতেই অস্ত্রসহ অবস্থান করতেন।"
দক্ষিন বাংলার বি এল এফ এর ঘাটি মানে তোফায়েল সেক্টর? এদিকে বিএলএফ কি মুক্তিযুদ্ধের সাথে কোনভাবে সম্পৃক্ত ছিল?
জী, তোফায়েল সেক্টরই। এদিকে বিএলএফ বেশ কিছু অপারেশন করেছিলো । মুজিব বাহিনীর এরিয়া কমান্ডার আলী হোসেন মনি, ঝিকরগাছার কমান্ডার সদ্যপ্রয়াত আব্দুল হাই, শার্শার কমান্ডার এম, এ, মাবুদ (বর্তমানে ডিজি পাসপোর্ট এন্ড ইমিগ্রেসন) এঁরা এখানে থেকেই অপারেশন পরিচালনা করেছেন।
সেই অপারেশনগুলো পকিস্তানের বিরুদ্ধে নাকি মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ছিল, সে বিষয়ে কি কোন কিছু পরিস্কার জানা যায়?
কেউ কেউ মনে করে মুজিব বাহিনীর কাজ ছিল ডিসেম্বরে ভারতের বাংলাদেশ অধিক্রমের আগ পরযন্ত মুক্তিবাহিনীকে ঢাকা থেকে যত দুরে পারা যায় পিছিয়ে রাখা। মুক্তিবাহিনীর সাথে চার বি এল এফ এর সমন্বয়হিনতা তুংগে উঠলে ২৯শে জুন অস্থায়ী সরকারের সাথে ইন্দিরার ডান হাত ডিপি ধর এর মধ্য়স্থতায় সম্ঝোতার কথা জানতে পারি।
ভারতীয় বিশেষ বাহিনীর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও গতানুগতিক মুক্তিযোদ্ধার চাইতেও বহুগুন শক্তিশালি গোলাবারুদে সম্রিদ্ধ এই দলটির সাথে পাকিস্তানিদের সম্মুখযুদ্ধের কোন বিবরন আমি পড়িনি। কিনতু এখানে সেখানে অপারেশানে ব্য়াস্ত মুক্তিযোদ্ধাদের খামাখা ঝামেলায় ফেলা, অথবা দরশনায় ট্য়ান্ক আক্রমনের প্রারম্ভে ভারতীয় বাহিনীর চাইতে অগ্রসর মুক্তিযোদ্ধা প্লাটুনকে 'ভুল করে' খুন ফেলার গল্প লোকমুখে শুনতে পাই।
এই জবাবটি চতুর্থবারের মতো লিখছি। তিনবার জবাব লিখে পোস্ট দেবার আগেই বিদ্যুৎ চলে গেছে। খুব বিরক্তিকরর বটে।
আমি একজন খুব অল্প জানা মানুষ। বয়সের অভিজ্ঞতায় যে টুকু জানি বুঝি তাই শেয়ারর করাটা জরুরী মনে করলাম। ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন।
ঐ সময়ে ঐ এলাকায় বিএলএফ যে কয়টি অপারেশন করেছে প্রায় সব কটিই স্থানীয় রাজাকারের বিরুদ্ধে। সম্ভবত একবার তারা পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলো। ঠিক জানিনা, সেটা পরিকল্পিত আক্রমন ছিলো নাকি আক্রান্ত হয়ে আত্মরক্ষার প্রয়াস।
তদানিন্তন চার তুখোড় নেতা, সিরাজুল আলম খান, শেখ ফজলুল হক মনি, আব্দুর রাজ্জাক এবং তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে ষাট হাজার বিশ্বস্থ সমর্থক সমন্বয়ে বিএলএফ (মুজিব বাহিনী) গঠিত হয়েছিলো। সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী এফএফ (মুক্তি বাহিনী) বাহিনী থাকতে সমান্তরাল আরেকটি বিশেষ বাহিনী কেন প্রয়োজন হয়েছিলো তা সম্ভবত সাধারণজনের অজ্ঞাত। আমার জানামতে বিএলএফ সারা বাংলাদেশে সম্মুখ যুদ্ধে খুব একটা অংশ নেয়নি। তাদেরকে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। সে সময়ে কানাঘুষায় যা জেনেছিলাম, (আপনাদের মনপুত না হলে আমার জানা ভুল) মুক্তিযুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে যুদ্ধের নেতৃত্ব বামদের করায়ত্ব হবার আশংকায় মুজিব বাহিনীকে সর্বদা প্রস্তুত রাখা হয়েছিলো। অবশ্যই আমার জানা ভুল হতে পারে। আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।
রাজশাহীর দরগা পাড়ায় গেলেই চরে বেড়ানো ভেড়া চোখে পড়লেই সবার জিহ্বা লকলক করে উঠত, কিন্তু সাহস ছিল না ! বহুত মারদাঙ্গা পাড়া ছিল তো
facebook
আরে, আপনাকে ধরতো কেমনে, পাহাড়ে চড়ে বসে থাকতেন !
সত্যিই, আজ অব্দি পাওয়া যায়নি। লাশটাও না।
বনফুলের একটা গল্প আছে, নিমগাছ।
পুরো গল্প জুড়ে নিমগাছের বর্ণনা দিয়ে শেষ লাইনে টুক করে লিখে দিলেন- এবাড়ির বউটারও ঠিক একই দশা
আপনার গল্প পড়ে শেষ লাইনটা মিস করলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আমারটা গল্প নয়, স্মৃতিচারণ।
ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।
মজারু।
আপনারা মজা পেলেই না তবে আমার লেখা সার্থক।
তাদের মধ্যে কে একজন নাকি কোন এক বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। তখন বিশ্বাস হয়নি, এখন মনে হয়, হতেও পারে।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ধন্যবাদ, খুঁটিয়ে পড়বার জন্য।
ইশ্ কী সুন্দর করে লেখেন আপনি! আপনার সাথে দেখা হলে "গল্প বলেন, গল্প বলেন" করে অস্থির করে দেব কিন্তু
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
আ মরণ ! থির কি আর এখন আছি নাকি, সারা দিনমান গিন্নী শুধু বকেই যাচ্ছে, 'কি ছাইপাশ যে লেখো সারাদিন'!
অতি সুন্দর মন্তব্যের জন্য অতীব প্রীত হইলাম। (মনটা খুব প্রসন্ন বোধকরি!)।
আমি তো প্রতিদিনই ঘুমের কাছে ভেড়ার মতো গুম হচ্ছি। লেখা ভালো লেগেছে।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ধন্যবাদ।
মুক্তিযুদ্ধের এই কিছু না জানা অধ্যায়গুলো আমরা কবে যে সত্যি জানতে পারব। ওরকম একটা দুঃসময় এর ভিতরেও রাজাকার নয়; একই শত্রুর বিরুদ্ধে এমন দুইটা দল সাধারণতঃ অন্তঃদ্বন্দ (বানান কি ঠিক হলো?) ভুলে একসাথে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কিন্তু এরা ঐ সময়েও নিজেদের বিরুদ্ধে ছিল বলে শোনা যায়। অদ্ভুত।
ভেড়া খেতে বেশ ভাল হয়েছে। যদিও পরোক্ষ। খাসী খাওয়ার ব্যবস্থা করেন রাতঃস্বরণীয়দার সাথে কথা বলে।
অনেক অনেক কিছুই অজানা থেকে যাবে। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের বেনিফিসিয়ারী তাঁদের অনেকেই নিরাপদ অবস্থানে থেকে নীতি নির্ধারকের ভূমিকা পালন করেছিলেন। সেখানে অবস্থান করে নানা ধরনের রাজনীতি করেছেন। আর যে সকল নাম না জানা কৃষক শ্রমিক জীবন বাজী রেখে যুদ্ধ করেছিলেন, যে সব পরিবার বিভিন্ন ভাবে মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছিলেন, কোটি কোটি টাকা খরচ করে লক্ষ লক্ষ পৃষ্ঠার মুক্তিযুদ্ধের যে ইতিহাস লেখা হয়েছে, সেখানে তাঁদের জন্য একটি লাইনও বরাদ্দ রাখা হয়নি। আরও অনেক অজানা বিষয় আছে যে গুলো কোনদিন আলোচিত হবেনা। মুক্তিযুদ্ধের সত্যিকার নায়ক কারা ? যাঁরা কোন কিছু পাবার আশায় নয়, সত্যিকার দেশপ্রেম নিয়ে তাঁদের মাতৃভূমিকে মুক্ত করতে যুদ্ধ করেছেন তা সে জীবনের বিনিময়ে হলেও। তাদের কোন দস্তাবেজ আমরা রাখিনি। মুক্তিযুদ্ধে জীবনদানকারীদের কোন লিষ্টি নেই। আশ্চর্য নয়কি?
নতুন মন্তব্য করুন