৩০ জানুয়ারী ২০১২, প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠার একটি খবরের শিরোনাম, "হেলে পড়েছে তাজমহলের মিনার।"
খবরে বলা হয়েছে, তাজমহলের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদী শুকিয়ে যাওয়ার কারনেই এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের এক লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পৃথিবীর সপ্তমাশ্চর্যের অন্যতম স্থাপত্য তাজমহলের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের মিনারটি তিন দশক ধরে ধীরে ধীরে ৩ দশমিক ৫৭ সেন্টিমিটার হেলে পড়েছে।
বছর তিনেক আগে আমি পরিবারসহ তাজমহল দেখতে গিয়েছিলাম।
ভরদুপুরে খররোদে তাজমহলের ছবি।
[img][/img]
পড়ন্ত বিকেলে তাজমহলের ছবি।
[url][/url]
ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে আমার নজর পড়ে পরিবেশদূষণের শিকার তাজমহলের বিভিন্ন অংশের প্রতি।
বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন ধরেই চলছে বায়ুদূষণ, পরিবেশদূষণ, নদীদূষণ, শব্দদূষণ ইত্যাকার বিষয়ে নানাবিধ আলোচনা। বিশেষভাবে প্রত্যক্ষমান টেলিভিসনের 'টকশো'। আর নদীসমূহে পানিপ্রবাহের স্বল্পতা বা অপ্রতুলতার বিষয়টিতো কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশের বাঁচামরার প্রশ্ন।
যেহেতু এই বিষয়গুলো মাথায় ছিলো তাই পরিবেশদূষণের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ তাজমহলের দু-একটি অংশের প্রতি আমার নজর পড়ে।
তাজমহলের মূল ভবনের একটি দরজার ছবি। পরিবেশদূষণের কারনে দরজার পাথরের রঙ পরিবর্তিত হয়ে কেমন বিসদৃশ রূপ ধারণ করেছে!
এটি তাজমহলের মূল ভবনের দেয়ালের ছবি। দেখুন পাথরের রঙ পরিবর্তিত হয়ে কেমন রূপ ধারণ করেছে!
আমি ঘুরতে ঘুরতে ভাবছিলাম, প্রতিদিন তাজমহল দেখতে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার লোকের সমাগম হচ্ছে। ভারত বিরাট অংকের বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করছে, তাজমহল পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের একটি অন্যতম স্থাপনা, এত কিছু সত্ত্বেও তাজমহলের এই অবস্থা! দেখেশুনে মনে হয়, কিছুদিন আগ পর্যন্তও সম্ভবত তাজমহল সংরক্ষণে সুনির্দিষ্ট কোন নীতিমালা ছিলনা।
সবেইতো নিয়ম হলো ইঞ্জিনচালিত বাহন তাজমহলের একটি নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে প্রবেশ করতে পারবেনা। কারন হিসাবে বলা হলো, ইঞ্জিন হতে নির্গত ধূঁয়ার কারনে তাজমহলের মূল ভবনের রঙের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। সে কারণেই এই বিকল্প ব্যবস্থা।
তাজমহলের সাথে ঐতিহাসিক কারনেই অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে যমুনা নদী। সেই যমুনা নদীতে পানিপ্রবাহও অপ্রতুল। দর্শনীয় স্থান বিবেচনায় যমুনা নদীর পানি প্রবাহের ও তো এই অবস্থা বাঞ্চনীয় নয়।
তাজমহলের পাশ দিয়ে প্রবাহিত যমুনা নদী ও মিনারের ছবি।
তাজমহলের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া যমুনা নদীর ছবি।
[url][/url]
ছবিগুলো খুবই সাধারণ একটি ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে তোলা।
মন্তব্য
তাজমহল জিনিসটা দূর থেকেই দেখতে সুন্দর/ভালো লাগার কথা। একেবারে কাছে গেলে মনে হয় না অতো ভালো বা সুন্দর লাগবে!
তাজমহল হেলে পড়ছে, এটা খুব খারাপ খবর। আমার জন্য না, মমতাজ মহলের জন্য নিশ্চয়ই। শাজাহান যেভাবে ক্রাইম মাস্টর গোগোর মতো আঁখে নিকালকে গুটিয়া খেলতে চাচ্ছে। তাতে প্রেম বলে কিছু তো আর বাকি নাই দুনিয়াতে। আর যেখানে প্রেমই কাইত হয়ে আছে, সেখানে প্রেমের নিদর্শন কাইত হয়ে যাবে, এটাই তো স্বাভাবিক।
যমুনা নদীর এই হাল ক্যান! এই নদীর সেতু বানাইতেই আমাদের এতো টাকা লাগে!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ধুগোদা, এইটা আমাদের যমুনা না, এইটা রাধা-কৃষ্ণের যমুনা ।
আব্দুল্লাহ এ.এম.
উনি সেটা জানেন বলে মনে হয়! মাঝে মাঝে রসিকতা মাথার উপর দিয়ে যাওয়াটাও এক বিরাট রসিকতা
আমিও রসিকতা করেই বলছি, রাধা-কৃষ্ণের যমুনা
আব্দুল্লাহ এ.এম.
তাহলেও আমার কথা ঠিক। আপনার রসিকতা আমার মাথার উপর দিয়ে যাওয়ায় বিরাট রসিকতা হয়ে গেছে
আপনার কথা অকশ্যই সঠিক! তবে আমার রসিকতা বুঝতে না পারার জন্য নয়, রসিকতা করে আসর জমানোর ক্ষমতা সবার থাকে না, হয়তো আমার সে ক্ষমতার ঘাটতি আছে, উল্টা গুবলেট করে ফেলেছি
আব্দুল্লাহ এ.এম.
ধন্যবাদ, মতামতের জন্য। সেতু বানানোর পূর্বে সেতুবন্ধনের বিষয় আছেনা!
ভালইতো, মানে আমাদের জন্য কিঞ্চিত আশার আলো দেখা যাচ্ছে। এই সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশের এক প্রেমিক কয়েক বছর আগে সোনারগাঁয়ে আর একটা তাজমহল বানিয়ে ফেলেছে। বিশ্ব পর্যটকেরা এখন দুধের স্বাদ ঘোলে মিটাতে পারবেন ।]ছবি দেখুন-
আব্দুল্লাহ এ.এম.
জী, এখন দুধের স্বাদ ঘোলেই মেটানো যাচ্ছে।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
তাজমহল আর দূরে আগ্রা ফোর্টের মধ্য দিয়ে নাকি এক সময় যমুনা প্রবাহিত হত। এই ফোর্টেই শাহজাহান শেষ জীবনে বন্দী ছিলেন।
****************************************
জী, শাহজাহান শেষ জীবনে তাঁর স্নেহময়ী কন্যা জাহান আরার সঙ্গে আগ্রা ফোর্টেই বন্দী ছিলেন।
ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।
খুব খারাপ।
facebook
জী, খুব খারাপই বটে।
ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।
তবুও ওরা সংরক্ষণের দিকে নজর দিয়েছে। কিন্তু এদিকে আমাদের অবস্থা দেখেন।
এখানে আমার তোলা তাজমহলের ছবি দেখেন
...........................
Every Picture Tells a Story
খুব সুন্দর ছবি।
মন্তব্য এবং ছবির জন্য ধন্যবাদ।
শুনে খারাপ লাগলো। কিন্তু ৩.৫৭ সেন্টিমিটার হেলে পড়া জিনিষটা বুঝতে পারিনি। এটা কি ডিগ্রী হবে? সেটা তো অনেক বড় ব্যাপার।
ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।
তাজমহলের ভিতরে কি ঢুক্তে দেয়া হয়না, বাইরের ছবিগুলা কেমন যেন বড্ড সাদামাটা, অতো টানেনা কেন জানি।
হ্যাঁ, ঢুকতে দেয়তো, এবং সুন্দরও বটে।
মন্তব্যের জন্য
শুধু পরিবেশ দূষণের জন্যে একটা বড় ভবনের রং আলাদা আলাদা জায়গায় কি পরিবর্তন হয়?নাকি সেটা ওই আলাদা জায়গাটুকুর বিশেষ কোন দুর্বলতা??(চার নং ছবিতে পরিবেশ দূষণের জন্যে দরজার পাথরের রং পরিবর্তনের যে কথা আপনি বললেন সেটা দেখেই প্রশ্নটা মনে আসছিল।আর পাঁচ নম্বর ছবিটা দেখে প্রশ্নটা করতে রীতিমত বাধ্য হলাম।আমি শুধু জানার জন্যেই জিজ্ঞাস করছি কিন্তু)
আসলে এই বিষয়টা সম্পর্কে আমিও জানিনা। আমার নজরে যেটা পড়েছে সেটা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চেয়েছি মাত্র।
ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।
তাজমহলে মিনার হেলে পড়লে কী হয়?
সত্যিইতো, কিছু কী হয়, আমি জানিনাতো!
কিছু হয় না। সেটাই তো সমস্যা।
****************************************
খুব ই খারাপ সংবাদ
-শর্মালুনা
জী, ধন্যবাদ।
আসমা খান
সুস্থ থাকুন। ভাল থাকুন।
শুনেছিলাম অনেক আগেই। তখন পড়েছিলাম পত্রিকায়, ভারতীও কর্তৃপক্ষ নাকি অস্বীকার করছে হেলে পড়ার ব্যাপারটা।যাই হোক, তাজমহল এখনও দেখিনি, সত্যি বলতে কি, তাজমহল কেন জানি আমাকে টানে না। না না ভাব নিচ্ছি না। আসলেই টানে না। বিশাল একটা বিল্ডিং দেখে অবাক হতে মন চায় না।
"সি"
ধন্যবাদ, বিস্তারিত কথনের জন্য।
ইতিহাস পড়লে তাজমহলের প্রতি মুগ্ধতার বদলে বিষন্নতা ভর করে। তবে আগ্রা গেলে তাজমহলটা দেখার ইচ্ছে রাখি। এত ভুমিকম্প গেল তাজমহল একটু হেলে পড়লে অবাক হবার কিছু নেই। বরং এত বছর সোজা দাড়িয়ে থাকাটাই অবাক করে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
হ্যাঁ, কোন আবেগ থেকে নয় বরং একটি অনন্য স্থাপত্য হিসাবে দেখে আসুন। ভীতরের কারুকার্য অসাধারণ।
ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।
হেলে পড়লে ঠিক আছে, আমি দেখার আগে ভেঙ্গে না পড়লেই হল।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
জী, ধারনা করি খুব শীঘ্রই ভেঙ্গে পড়বেনা।
পড়বার জন্য।
নতুন মন্তব্য করুন