১ম বিপিএল এর উপস্থাপনা নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম, এ লজ্জা রাখি কোথায় তারই ধারাবাহিকতায় এই লেখাটি।
১৭ জানুয়ারী, ২০১৩ ইং তারিখে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশে, বিপিএল টি-টুয়েন্টির ২য় আসর 'প্রাইম ব্যাংক বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ টি-টুয়েন্টি'র উদ্বোধন ঘোষণা করলেন, বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনাব জিল্লুর রহমান।
এবার বিপিএল এর একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতি। যেখানে গত বিপিএল অর্থাৎ ১ম বিপিএল এ এই পাকি ক্রিকেটারদেরই প্রাধান্য ছিলো।
কিছু দিন ধরে আলোচনায় থাকা একটি বিষয়, 'টাইগার'দের পাকিস্তানে ক্রিকেট খেলতে যাওয়া নিয়ে যে দোদুল্যমানতা, বর্তমান বিসিবি প্রেসিডেন্ট জনাব নাজমুল হাসান পাপন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন যে, 'টাইগার'রা পাকিস্তানে খেলতে যাচ্ছেন না। এটা একটি সময়োপযোগী সাহসী ইতিবাচক সিদ্ধান্তও বটে।
এরই ধারাবাহিকতায় পিসিবি, পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের বিপিএল এ খেলার ছাড়পত্র দেওয়া থেকে বিরত থাকে। ফলে পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা বিপিএল এ খেলা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
এবারে উদ্বোধন পরবর্তী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিয়ে কিছু কথা।
অনুষ্ঠানের শুরুটা দেখে মনে হয়েছিলো, সম্ভবত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড গতবারের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে এবারের অনুষ্ঠানমালা সাজিয়েছেন।
খুব আশাবাদী হয়েছিলাম, একটি বাংলাদেশী সৌরভ থাকবে এবারের অনুষ্ঠানমালায়।
শুরুর দিকে রুনা লায়লার 'দমাদম মাস্ত কালান্দার' গানটি ছাড়া বাকি সব ঠিকই চলছিলো। বিশেষ করে সাতটি দলের থিম থটের উপস্থাপনাতো ছিলো একশতভাগ বাংলাদেশী। এবারের বিপিএল এ যেন বাংলাদেশকেই দেখছিলাম। অবশ্য শুরুতেই চ্যানেল ৯ এর উপস্থাপকের ভুমিকায় সেই সীনা চৌহানকে দেখে একটু হতাশ হয়েছিলাম বটে।
এর পরই খেলাম সেই ধাক্কা। শ্রীলঙ্কার মেয়ে বলিউডি নায়িকা জ্যাকুলিন ফার্নান্ডেজের বম্বে (মুম্বাই) মার্কা ঝাকানাকা নৃত্য। আর তার পরে পাকি গায়ক আতিফ আসলামের উপস্থিতি।
এই টুর্নামেন্টে বিদেশী কোন দলতো খেলছেনা, না ভারতের না পাকিস্তানের। তবে কেন এই ভারতীয় মার্কা ঝাকানাকা নাচ আর পাকি গায়ক !
একটি শতভাগ বাংলাদেশী উপস্থাপনা কি গ্রহণযোগ্য ছিলোনা, কেন আমরা নিজেদেরকে এত দীন ভাবছি !
জাতি হিসাবে এটা আমাদের লজ্জার বিষয়ও বটে।
কিছু অর্বাচীনের দায় বহন করে চলেছে সারা জাতি।
মন্তব্য
চাইলেই যে ভুলগুলো থেকে সহজেই বেরিয়ে আশা যায় কেন সেগুলো আমাদের মাথায় চাপিয়ে দিয়ে পুরো জাতিকেই হেয় করা হয়। কিছু মানুষের হীনমন্যতার দায় কেন পুরো বাংলাদেশ কে বহন করতে হয়!
কিছু অর্বাচীনের দায় বহন করে চলেছে সারা জাতি !
ধন্যবাদ, পড়বার ও মন্তব্য করবার জন্য।
জ্যাকুলিন - আতিফের নাচাগানার আগের অনুষ্ঠানটা বেশ ভালোই লেগেছে আমার কাছে। তবে অব্যবস্থাপনা ছিলো। এটা চোখে লাগে।
মধ্যরাত পর্যন্ত আশা করে ছিলাম, আপনি কিছু লিখবেন। শেষমেষ বড্ড ক্ষেদে এই কাঁচা হাতের লেখাটি।
ধন্যবাদ, নামটা শুধরে দিলাম।
হ্যাঁ, আপনিই বলুন, জ্যাকুলিন অথবা আতিফ এদের কারও উপস্থাপনা কি অনুষ্ঠানে নতুন কোন মাত্রা যোগ করেছে, বরং আমাদের নিজস্বতাকেই খর্ব করেছে। এর কোন প্রয়োজন ছিল বলে অন্তত আমি মনে করিনে।
আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি ভীষণ সমৃদ্ধ, কবে যে আমরা এটা বুঝব ???!!!
কিছু অর্বাচীনের দায় বহন করে চলেছে সারা জাতি।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।
বিপিএল এর ফ্র্যানঞ্চাইজি তে কাজ করার সুবাদে দুই আসরই কাছ থেকে দেখেছি। একটা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত, এখানে কেউ সংস্কৃতি নিয়ে মাথা ঘামায় না! কর্তাব্যাক্তিরা কোটি কোটি টাকা'র বাজেট দেখান, স্পন্সরদের জিজ্ঞাসা থাকেঃ "ভাই এবার স্টার কে আসবে?" এমনকি আমাদের এক সিনিয়র তো সানি লিওন এর নাম প্রস্তাব করে বসেছিলেন। টাকা, গ্ল্যামার, বিদেশী ব্র্যান্ড এর ভিড়ে দেশের মান-সম্মানের কথা কেউ মনে করতে চায় না! এমনকি এবারে ২-১দলের চিয়ারগার্লরাও বিদেশ থেকে আমদানীকৃত। পাকিস্তানি খেলোয়াড়রা আসছেনা জানিয়ে পিসিবি'র যে ঘোষণা, তাতেও দেখিচ বেশ কিছু মানুষের অভিমত যার সারকথা হচ্ছেঃ বাংলাদেশ কথা দিয়ে কথা রাখেনি, অতএব পিসিবি ঠিক কাজটাই করেছে! এমনকি কেউ কেউ পিসিবি জিন্দাবাদও জানিয়েছে!!!
ও ও; আরেকটা কথা! গতকাল শুরুর দিকে যতটা বাঙ্গালিয়ানা দেখতে পেয়েছেন, সেটা কিন্তু সিলেবাস এ ছিলো না! শেষ মূহুর্তে ২-১ জন বলিউডি শিল্পী'র শিডিউলজনিত সমস্যার কারনেই কিন্তু ঘটা করে দেশী ফ্লেভার ঢালা হয়েছে!!!
ও আচ্ছা, তাহলে উপস্থাপনার বিষয়ে আহ্লাদিত হবার কোন হেতু নেই ! যানজট এবং সিডিউলজনিত সমস্যার কারনে বাংলাদেশী সংস্কৃতির উপস্থাপনটুকু করা হয়েছে ! স্পন্সরদের রুচিবোধ সম্বন্ধে জেনে খুব ঘৃণাবোধ করছি।
আর তাদেরকে ধিক, যারা পাকিদের দালালি করছে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, বিষয়টি জানাবার জন্য।
হাহা। কার যেনো ১টা কথা আছেঃ "বড়কর্তাদের কানও বড়(লম্বা অর্থে) হয়!!"
গোটা অনুষ্ঠানমালায় দেখার মতো বিষয় ছিল শুধুমাত্র বিভাগভিত্তিক ঐতিহ্যিক অনুষ্ঠানগুলো, বাকীগুলো সব রাবিশ!
সহমত।
অব্যবস্থাপনা চোখে লেগেছে
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
এ দায় কার ?
ধন্যবাদ, মন্তব্যের জন্য।
পাকিস্তানীরা আসে নাই সেটাই না বিসিবি লিখিতভাবে ওদের চড় মারছে। ঢাকায় অন্য টুর্নামেন্টের খেলায়ও আসতে দেবে না। বিসিবির বহুত গালি দিছি এইবার একটা ধন্যবাদ।
বিদেশিরা আসলো মনে করেন কিন্তু এসে বাংলাদেশের গান নাচই পার্ফর্ম করলো সেইটা হৈলে কিন্তু খারাপ হৈত না।
আমাদের শিল্পী কী কম আছে? তাছাড়া নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীদের সংস্কৃতি তো অপূর্ব!
_____________________
Give Her Freedom!
জী, আমি চাই আমার জাতি কোমর সোজা করে মাথা উঁচু করে দাড়াক। তাতে আমি যেটুকু পাব তাতেই আমি সন্তুষ্ট।
ধন্যবাদ, মত প্রকাশের জন্য।
আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় শিল্পীকে বিভিন্ন দেশের অনুষ্ঠানে পারফর্ম করানো তো পুরনো একটা জিনিস, সেটা বলতে গেলে পৃথিবীর অনেক দেশেই হয়। এর জন্য নিজেদের হীনমন্যতায় ভোগার কোন দরকার আছে কি? কিংবা ধরুন আজকে যদি বিপিএল এ ইংল্যান্ডের কোন শিল্পী এসে পারফর্ম করতেন তাহলেও কি কোন সমস্যা ছিল?
জ্যাকুলিন ফার্নান্ডেজ এবং আতিফ আসলাম দুজনেই আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত শিল্পী, এ নিয়ে তো সন্দেহ নেই।
দেশীয় সংস্কৃতির উপস্থাপনের সাথে বিদেশী শিল্পীদের উপস্থাপন থাকলে ঠিক কি ধরনের দীনতা ফুটে উঠে, জানার আগ্রহ রইলো।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
যেসব দেশের ক্রিকেট বোর্ড একরকম বিপিএলকে বয়কট করেছে, অথবা বহুদিন ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেটকে প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত করে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেই চলেছে, সে সব দেশেরই "জনপ্রিয়" শিল্পীদের নিয়ে এসেই যদি আমাদের আসর মাতাতে হয়, তাতে আপনি হীনমন্যতায় ভোগার কোন কারন খুঁজে না পেলে আর কিছুই বলার নেই। ক্রিকেট ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে অবহেলার কথা আর নাই বললাম।
ধন্যবাদ, আপনার অবস্থান জানাবার জন্য।
শ্রীলংকার সাথে এরকম সম্পর্ক নাকি ?
আর আমাদের কিছুদিন আগের বোলিং কোচ জানি কে ছিল ?
তুচ্ছতাচ্ছিল্য-আর কোন কোন দেশ করেছে বলে আপনার মনে হয় ? এরকম একটি লিস্টি করুন, তারপর তাদের সবাইকে বয়কট করুন। ঠিক আছে ?
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
জী, জোর গলায় হয়তো আপনার সাথে দ্বিমত পোষণ করতে পারবোনা। পুরাতন প্রজন্ম বলেই হয়তো একটু রক্ষণশীল ! তারপরও যেটা বলতে চাই, ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবাই জানেন ভারত কখনই আমাদের জাতীয় ক্রিকেটকে তার প্রাপ্য মূল্যায়ন করেনি। উপরন্তু বিভিন্ন সময়ে আমাদের জাতীয় দলকে হেয় প্রতিপন্ন করবার মানসে বিভিন্ন সময়ে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশকে ভারতে কোন সিরিজ খেলারও সুযোগ তারা দিতে নারাজ। এমতাবস্থায় সীনা চৌহান বা অরুনলাল অথবা জ্যাকুলিন ফার্নান্ডেজকে কি আমাদের খুবই প্রয়োজন ? তাছাড়া বিপিএল এ ভারতীয় কোন প্লেয়ারের খেলার অনুমতিও নাই। আর আমাদের ক্রিকেট বোর্ডের ন্যায্য একটি সিদ্ধান্তের কারনে পিসিবিতো তাদের প্লেয়ারদের বিপিএল এ খেলার ছাড়পত্রই দিলোনা। তাই বলছিলাম, এদেরকে বাদ দিয়ে আমরা কী.......। ইংল্যান্ডের ব্যাপারেও আমার একই মত। তারাও খুব উন্নাসিক। তারা বাংলাদেশের টেষ্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছে। যাই হোক, এটি আমার নিতান্তই ব্যক্তিগত অভিমত। আপনার মতকেও আমি শ্রদ্ধা করি বটে।
ধন্যবাদ, মতামত জানাবার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে। আসলে আমি আপনার দৃষ্টিভঙ্গিটাই জানতে চাইছিলাম। আমাদের দেশে বিরোধিতা করার জন্যই বিরোধিতা করার যে মানসিকতা গড়ে উঠছে এটা আমার কাছে বোধগম্য হয়না। কিন্তু আপনি সেরকম কোন কারণ দেখাননি দেখে ভালো লাগলো। দেখুন, আমাদের দেশের রুনা লায়লা যখন উর্দু গান গায়, তখন কিন্তু একপক্ষ তাকে সমর্থনই করে, যেখানে বাংলাদেশী হয়ে বাংলায় গাওয়ার যৌক্তিকতাই বেশি, কারণ আতিফ আসলাম কিংবা সুনিধি চৌহান এসে নিঃশ্চয় বাংলায় গাইবেন না।
আবার আমাদের খেলোয়াড়রা কিন্তু ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলছেন, এমনকি যথেষ্ট সম্মানের সাথেই খেলছেন।আমাদের দেশের অনেক শিল্পীই বছরের বড় একটা সময় পশ্চিম বাংলায় অনুষ্ঠান করেন। তখন কিন্তু সেখানে তাদের সাদরেই গ্রহণ করা হয়। এমনকি আমি যতটুকু জানি, সেখানে তাদের গানের চাহিদাও বেশি। রক সংগীত এ বাংলাদেশ অনেক এগিয়েও আছে। তাই আমার যেটা মনে হয়, শিল্প-সংস্কৃতি কোন গন্ডিবদ্ধ উপকরণ নয়, একে আরো দশটা ক্ষেত্রের সাথে এক না করেই বিবেচনা করা ভালো মনে করি। তবে অবশ্যই এটা ব্যক্তিগত মতামত।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
সাহিত্য-শিল্প-সংস্কৃতি ইত্যাকার বিষয়ে ভারতকে নিয়ে আমার কোন অনীহা নেই। আমি নিজেই প্রচুর ভারতীয় সিনেমা দেখি, গান শুনি, বইও পড়ি। আমি একটা গন্ডীর মধ্যেই থাকতে চেয়েছি, সেটা ক্রিকেট। এই ক্রিকেট বিষয়েই আমাদের ভারত নির্ভরতা কমাতে হবে। পারলে তাদেরকে পরিত্যাগ করতে হবে।
আর নৃত্য-গীত-বাদ্য-অভিনয় ইত্যাকার বিষয়ে বলবো, আমাদের দেশে বিদেশী বিশেষ করে বললে ভারতীয় ও পাকিস্তানি শিল্পীরাতো হরহামেশাই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন। এ বিষয়ে আমার কোন প্রকার গাত্রদাহ নেই। এ থেকে নিশ্চয় আমার দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে একটা ধারনা পাবেন।
ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন।
চেয়েছি
ক্রিকেট বিষয়ে ভারত নির্ভরতা কমানো বা ভারতকে পরিত্যাগ করবার জন্য অন্য পদক্ষেপগুলি কেমন হতে পারে?
__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে
নতুন মন্তব্য করুন