কিছু লজিকাল ফ্যালাসি

অবাঞ্ছিত এর ছবি
লিখেছেন অবাঞ্ছিত (তারিখ: রবি, ১৯/০৯/২০১০ - ১২:৫২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

লজিক বা যুক্তি খুবই জটিল জিনিস। আমরা নিজেদের যুক্তিবাদি ভাবতে ভালবাসি। কথায় কথায় আমরা যুক্তি দেই, নিজেদের যুক্তিবাদী বলে দাবি করি। অনেক সময় একটা কথা বলে ভাবি "আহ্ কি যুক্তিটাই না দিলাম.. এইবার?"

কিন্তু সমস্যা হলো এইসব "মোক্ষম" যুক্তির অনেকগুলিই ফ্যালাসির দোষে দুষ্ট। হয়তো দেখে নিরীহ মনে হয় বলে অথবা আমরা এইসব "যুক্তি" দেখে এতই অভ্যস্ত যে দেখে ভাবি আসলেই "কড়া" যুক্তি। আমার চারপাশে আমি এইসব যুক্তির ছড়াছড়ি দেখি। ব্লগোস্ফিয়ারও তার ব্যতিক্রম নয়। এবং মোর অফটেন দ্যান নট, আমি নিজে জেনে শুনে এইসব ফ্যালাসি গুলো যুক্তি হিসেবে ব্যবহার করি। এই পোস্টে খুব পরিচিত এবং বহুল ব্যবহৃত কয়েকটা লিখছি। উল্লেখ্য, এই পোস্ট কোনো ব্যক্তি, কমিউনিটি, ব্লগ বা কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা সংক্রান্ত নয়। উদাহরণ সবগুলোই আমার মনগড়া, বানোয়াট। কারো কোনো বক্তব্যের সাথে কোনো মিল থাকলে তা নিতান্তই কাকতাল মাত্র।



অন্তর্জালে আমার স্বল্প পদচারণায় সবচেয়ে বেশি যেটা চোখে পড়ে তা হল যুক্তির নামে ব্যক্তি আক্রমণ -
Ad Hominem

এটি সাধারণত নিম্নরূপে দেখা যায় -

১ম ব্যক্তি "ক" বলছে
২য় ব্যক্তি ১ম ব্যক্তিকে আক্রমন করেছে
সিদ্ধান্ত: সেহেতু "ক" ভুল

উদাহরণ:
১ম ব্যক্তি : ঐ বেটির চুরি করা ঠিক হয় নাই
২য় ব্যক্তি : তুই তো "অমুক" এর চামচা... তুই তো এইটা কইবিই .. তোর ঐ ওস্তাদ কেমন আছে?


এরপর আমার সবচেয়ে বেশি চোখে যেটা লাগে তা হলো আগেরটারই একটু ভিন্নরূপ -

Ad Hominem Tu Quoque
এটি মোটামুটি এইরকম-

১ম ব্যক্তি "ক" বলছে
২য় ব্যক্তি : ১ম ব্যক্তির পূর্ব কাজ বা বক্তব্যের সাথে বর্তমান বক্তব্যের মিল নাই।
সিদ্ধান্ত: সেহেতু "ক" ভুল

উদাহরণ ১:
১ম ব্যক্তি : ঐ বেটির চুরি করা ঠিক হয় নাই
২য় ব্যক্তি : তুই তো ব্যাটা নিজেই চোর .. তাইলে আর তোর কথার দাম কি? তুই নিশ্চই ভুল।

উদাহরণ ২:
ঐদিন যখন মোখলেস "অমুক" করলো তখন তো কিছু বলো নাই। এখন আসছ কেন?

বলাই বাহুল্য কোনদিন কে কি করেছে বা করে নাই, তার সাথে আমি আজকে কি করছি তা ঠিক নাকি ভুল তার কোনোই সম্পর্ক নাই। নিজের দুর্বলতা ঢাকার জন্যে অন্যের বক্তব্যের ওজন কমাতে এইটা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়।


এর সাথেই যায়,
Guilt By Association

"ক" গোত্রীয় মানুষরা "গ" করে
"খ" ব্যক্তি "গ" করে,
তাই "খ" নিশ্চই "ক" গোত্রের।

উদাহরণ:
সব কুকুরের চারটা পা। তোমার বিড়ালেরও চারটা পা। তোমার বিড়াল আসলে কুকুর।


তবে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে হলো হিউমারের ব্যবহার।

Appeal to Ridicule

এই ক্ষেত্রে ব্যাঙ্গ দিয়ে যুক্তিকে প্রতিস্থাপন করা হয়।

"ক" হল একটা ব্যাঙ্গ , বেশ রসাত্মক যেটা "খ" এর দিকে ছুঁড়ে দেওয়া হলো-
সিদ্ধান্ত: "খ" মিথ্যা।

উদাহরণ ১:

পাছার বা".." কেটে মুখে লাগাইলেই দাড়ি হয়ে যায় নাকি? কি হাস্যকর তোমার যুক্তি!

উদাহরণ ২:

তোমার তো খুউব বু্দ্ধি? এত বুদ্ধি নিয়ে ঘুমাও কেমনে? (এইটা অবশ্য অ্যাড হোমেনেম ও বটে)



Circumstantial Ad Hominem

১ম ব্যক্তি: "ক" সত্যি
২য় ব্যক্তি: "ক" সত্যি হলে প্রথম ব্যক্তির লাভ
সিদ্ধান্ত: "ক" মিথ্যা।

উদাহরণ:
"অমুক" বলতেসে "তমুক" ১২টা বাঘ মারস। কিন্তু "অমুক" হইলো "তমুকের" ভাতিজা। তাই "অমুকের" কথা মিথ্যা।



এইটা একটা মজার ফ্যালাসি। মানুষের অনুভুতিকে ব্যবহার করে তর্কে যেতার চেষ্টা -
Appeal to Pity

এই ক্ষেত্রে -
"ক" উপস্থাপনা করা হয় সহানুভূতি আদায়ের লক্ষ্যে
সিদ্ধান্ত: "খ" কে সত্যি বলে দাবি করা হয়।

উদাহরণ:
১ম ব্যক্তি: ঐ দেশের মানুষের ওয়ার্ক এথিক জিনিসটা আমার বেশ ভালো লাগে।
২য় ব্যক্তি: ঐ দেশের মানুষ তো শুনি বাপ মার বয়স হইলে বাস স্টপের বেঞ্চিতে বসায় রাখে। আপনি তাই করতে চান?



আরো কিছু টুকটাক ব্যবহার করি -

Appeal to Authority
১ম ব্যক্তি "ক" বিষয়ে জ্ঞানবান / কর্তৃপক্ষ
সিদ্ধান্ত: সেহেতু "খ" বিষয়ে ১ম ব্যক্তি যা বলবে তাই ঠিক

উদাহরণ ১:
১ম ব্যক্তি খুবই ভালো লেখক। সে বলছে "অমুক" ভুল... তাই "অমুক" অবশ্যই ভুল।

উদাহরণ ২:
আমার বয়স ৩২.. তোর বয়স ২৩। সেইদিনের পুঁচকে ছোঁড়া। আমার থেকে বেশি বুঝস?



বিশ্বাসের ব্যবহার অবশ্য অনেক পুরাতন।
Appeal to Belief

বেশির ভাগ মানুষ "ক" বিশ্বাস করে
সিদ্ধান্ত: তাই "ক" ঠিক

উদাহরণ: বেশির ভাগ মানুষ সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করে। তাই সৃষ্টিকর্তা একটা না থেকে যায় না।



বিশ্বাসের পর ধরি প্রথাকে

Appeal to Common Practice

বেশির ভাগ মানুষ "ক" করে
সিদ্ধান্ত: তাই "ক" ঠিক

উদাহরণ:
এইখানে আমরা সবাই নকল করি। সবাই তো করে; আমি করলে কি সমস্যা!

( হয়তো চলবে?)

(অন্তর্জাল ব্যবহার করা হয়েছে)


মন্তব্য

কৌস্তুভ এর ছবি

বেশি (গুড়) দিলে পোস্টে পিপড়া আসতে পারে বলে লোকজন অভিযোগ করতেছে। তাই উত্তম জাঝা! দিলাম।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

ধইন্যাপাতা আপনাকে হাসি
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

মডু ভাই, ধইন্যাপাতারও ইমো চাই দেঁতো হাসি
auto


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আপনারে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

(×ধইন্যা) - × বাদে দেন।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

চলুক

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

হাসি
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

দিগন্ত এর ছবি

এই প্রসঙ্গে আরো একটা প্রাসঙ্গিক ভিডিও ...


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

স্কেপটিক সোসাইটা হইলো বস্ একটা জিনিস। হাসি

ধন্যবাদ।
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

নাশতারান এর ছবি

আমার প্রথম (গুড়) টা আপনাকে দিলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ হাসি এতগুলো প্রথম গুড় পেয়ে নিজেকে স্পেশাল মনে হচ্ছে । হাসি
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আমারো প্রথম (গুড়) আপনার জন্য। ঠিক কোন বিন্দুতে এসে তর্ক, কুতর্কে পর্যবসিত হয় আমরা অনেকেই সেটা বুঝিনা।
বুঝতে পারাটা জরুরী।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অবাঞ্ছিত এর ছবি

এত গুড় খাইলে তো শুগার হাই হয়ে যাব!

অনেক ধন্যবাদ হাসি

আপনার সাথে সম্পূর্ণ সহমত। সমস্যা হলো এগুলো দেখে আমরা এতই অভ্যস্ত যে ঝানু তার্কিকরা্ও এগুলোর ফাঁদে পা দিয়ে বসে।

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

অতিথি লেখক এর ছবি

লন বারমুডার সুগার কিউব(লেখাটার জন্য) হাসি



তারাপ কোয়াস

অবাঞ্ছিত এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

লো ক্যালোরি সুগার এবং পাঁচ তারা রেটিং দিলাম ।
auto

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

অবাঞ্ছিত এর ছবি

হে হে । অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

আহ চিনি -বেশি হলেও সমস্যা , কম হলেও । ব্যাটার জন্য মরার দশা হয়েছিল গতমাসের ১২ তারিখে ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

যুক্তি অ্যাবসলিউট কিছু না, কনটেক্সভেদে তার চেহারা ও গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি পালটায়। প্রত্যেক যুক্তির পেছনেই সাধারণত একটা উদ্দেশ্য থাকে এবং যুক্তি নিজেই সেই উদ্দেশ্যদ্বারা বায়াসড হয়। যুক্তি হোক আর মাইরপিট, সবার ওপরে 'মাইট ইজ রাইট'।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

মানতে পারলাম না। মধ্যযুগীয় ধ্যান ধারণা এইটা।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

দ্বিমত মুর্শেদ ভাই। ওইটাই বরং আধুনিক ধারণা। এমন কি ট্রুথও অ্যবসুলিউট কিছু না। তবে 'সবার উপরে মাইট ইজ রাইট' নিয়ে কিছুটা প্রশ্ন আছে।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

যুগের সাথে যুক্তির ইন্টারপ্রেটেশন পালটায় এটা অন্তত ক্লিয়ার হলো। হাসি

মাইট ইজ রাইট এর বিষয়ে আরেকটু বিস্তারিত বলি। মানুষের (সম্ভবত, প্রত্যেক জীবেরই) মূল উদ্দেশ্য সার্ভাইভ করা। বাকি যতো কাজ সবই কোনো না কোনোভাবে এই উদ্দেশ্যকেই সাপোর্ট করে যায়। ইন জেনারেল, মানুষ নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছে 'মিলেমিশে' থাকলে এই অস্তিত্ব রক্ষার কাজটা সহজ হয়। মিলেমিশে থাকার প্রয়োজনে সামষ্টিক স্বার্থের সাথে মানানসই ব্যক্তিক আচরণও সংজ্ঞায়িত হয়। যুক্তির নিরিখে কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক, তা এই সামষ্টিক ও ব্যক্তিক আচরণের একটা চলকমাত্র।

মিলেমিশে থাকার ব্যপ্তিটা আবার ক্ষেত্রবিশেষের ওপর নির্ভর করে। বন্দুকের 'জোর' যেখানে যথেষ্ট, সেখানে শ্লোগানের 'জোর' এর পাত্তা নেই। আবার যেখানে শ্লোগানের জোর ডমিনেন্ট, সেখানে শ্লোগানটাই সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।

মানুষ যতোই ইনফর্মেশন টেকনোলজিতে উন্নতি করছে, ততোই মেলামেশার ব্যপ্তিটা বাড়ছে, সামষ্টিক স্বার্থের সাথে মানানসই ব্যক্তিক আচরণের সংজ্ঞাটাও অভিযোজিত হচ্ছে। এখানে যেটা হচ্ছে, তা হলো 'জোর' এর পাল্লাটা বন্দুক থেকে শ্লোগানের দিকে ঝুঁকছে। কিন্তু যুক্তির সংজ্ঞার যে পরিবর্তন, তা সবসময় 'জোর' এর সাথেই থাকছে।

-----
'মাইট' কনসেপ্ট না থাকলে ইভেন সৃষ্টিকর্তাকেও কেউ পুঁছতো না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

মনমাঝি [অতিথি] এর ছবি

যুক্তি অ্যাবসলিউট কিছু না, কনটেক্সভেদে তার চেহারা ও গ্রহণযোগ্যতার মাপকাঠি পালটায়। প্রত্যেক যুক্তির পেছনেই সাধারণত একটা উদ্দেশ্য থাকে এবং যুক্তি নিজেই সেই উদ্দেশ্যদ্বারা বায়াসড হয়।

ইন্টারেস্টিং মনে হওয়ায় আপনার বক্তব্যটা একটু বোঝার চেষ্টা করলাম

আসলে আপনি কি 'যুক্তি' আর 'যুক্তির ব্যবহারের' মধ্যে একটা পার্থক্য নির্দেশ করতে চাইছেন ? আপনার মতে কি এই পার্থক্যের আলাদা আলাদা নিজস্ব ভ্যালিড অস্তিত্ব আছে ? নাকি এটা একই অবিচ্ছেদ্য সত্তার ভ্যালিড রূপভেদ মাত্র ?

এ প্রসঙ্গে আরেকটা প্রশ্ন জাগে অবধারিত ভাবেইঃ যুক্তি, এথিক্স আর জীবন - এই ৩টা জিনিষ কি ১০০% মিউচুয়ালি কো-এক্সটেনসিভ ও ইনক্লুসিভ ?

আপনার উত্তর ১ম ও ২য় প্রশ্নে না-সূচক বা ৪র্থ প্রশ্নে হ্যাঁ-সুচক হলে আমি দ্বিমত প্রকাশ করছি।

যাই হোক, বাঞ্ছিতকে সবাই এত কিছু দিচ্ছে - গুড়, ধইন্যাপাতা, বারমুডা সুগার কিউব থেকে শুরু করে লো-ক্যালরি চিনি পর্যন্ত - এমন চমৎকার আর ভীষন প্রাসঙ্গিক একটা পোস্টের জন্য - তখন আমারো কিছু একটা দেওয়া অবশ্য কর্তব্য বিবেচনায় আমি দিলামঃ--

FOR OBANCHITO

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আমার কাছে যুক্তির ব্যবহারটাও যুক্তির অংশ; কারণ, যুক্তির অ্যাবসলিউট অস্তিত্ব নাই, ব্যবহারদ্বারাই যুক্তির আচরণ নির্ধারিত হয়। [অবশ্য যা করা হয়, সবই যুক্তির অংশ না, এটা অনেকটা যা করে সামলানো যায়...]

যুক্তি, এথিক্স আর জীবনকে এভাবে সাজালে কেমন হয়? এথিক্স = ব্যক্তির বোধে যা হওয়া উচিত, যুক্তি = সমষ্টির বোধে যা হওয়া উচিত আর জীবন হলো যুক্তিকে ব্যবহার করে টিকে থাকার চেষ্টা।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

পৃথিবী [অতিথি] এর ছবি

Guilt By Association

"ক" গোত্রীয় মানুষরা "গ" করে
"খ" ব্যক্তি "গ" করে,
তাই "খ" নিশ্চই "ক" গোত্রের।

উদাহরণ:
সব কুকুরের চারটা পা। তোমার বিড়ালেরও চারটা পা। তোমার বিড়াল আসলে কুকুর।

এই অংশটা পড়ার পর একটা অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন মাথায় আসল- আরোহী যুক্তি প্রয়োগের(inductive reasoning) ক্ষেত্রে কি কোন সীমানা বেধে দেওয়া যায়?

অবাঞ্ছিত এর ছবি

অবশ্যই যায়। এইখানে ইনডাকটিভ রিজনিং এর মানে কি সেইটা আগে বুঝতে হবে।

সঙ্গা তো, উইকি থেকেই দেই-

Inductive reasoning, also known as induction or inductive logic, or educated guess in colloquial English, is a kind of reasoning that allows for the possibility that the conclusion is false even where all of the premises are true.[1] The premises of an inductive logical argument indicate some degree of support (inductive probability) for the conclusion but do not entail it; i.e., they do not ensure its truth. Induction is employed, for example, in the following argument:
All of the ice we have examined so far is cold.
Therefore, all ice is cold.

কাজেই, আরোহী যুক্তি (অংকের ক্ষেত্রে এই সঙ্গা প্রযোজ্য না) কোন সিদ্ধান্ত দেয় না, বরং উদাহরণের ভিত্তিতে কোনো কিছুর সম্ভাবনা ব্যক্ত করে। কাজেই এর সীমানা একেবারেই সংকীর্ণ।

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ভাল্লগাছে!! থাম্বস আপ!!

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অবাঞ্ছিত এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

তাসনীম এর ছবি

নাহ গুড় দিতেই হবে। (গুড়)...

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অবাঞ্ছিত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ হাসি
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

প্রাকৃতছ জন এর ছবি

ভাল্লাগছে!
নামগুলা সুন্দর

অবাঞ্ছিত এর ছবি

নাম সুন্দর হলেও জিনিসগুলা বড়ই কুৎসিত।
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।