পুরাতন কিছু সিরিজ শুরু করে শেষ করা হয় নি। দায়দায়িত্ব পুরোপুরি আমার আলসেমির। এখানে আমার কোনো দোষ নাই। অনেক দিন হয়ে গেছে, তাই ওগুলো নিয়ে আবার শুরু না করে এখন কি করছি তার উপরে ভাবলাম কিছু লিখি। তড়িৎ প্রকৌশল আমার কাছে অনেকটা জাদুর মতন মনে হয়। পেছনের কার্যকলাপ কিছুই আপাতদৃষ্টিতে দেখা যায়না (সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে) কিন্তু শেষে গিয়ে ঠিক মতন ব্যবহার করলে লাইট বাল্ব জ্বালানো থেকে শুরু করে কম্পিউটার চালানোর মতন চমকপ্রদ সব ঘটনা ঘটানো সম্ভব।
ডিসক্লেইমার : এই লেখা একান্তই রসকষহীন এবং বোরিং হবে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা (এখানকার মানুষজন এবং আমার বন্ধুবান্ধবদের তুলনায়) আমার খুব বেশি একটা নেই, কাজ করার অভিজ্ঞতাও বেশ সীমিত। তবে যতটুকু শিখেছি চেষ্টা করবো যতটা সম্ভব নির্ভুলভাবে তুলে ধরবার।
তারপরও কিছু ভুল বললে শুধরে দিয়েন। লেখায় বেশ কিছু ইংরেজি শব্দ থাকবে। কারণ দুইটা – একটা ঘাড় ত্যাড়ামি। অক্সিজেনকে আমি অক্সিজেন বলতেই বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করি । অম্লজানের মতন বাংলা অনুবাদ আমার কাছে আরোপিত মনে হয়। আর দ্বিতীয়টা হল – আমি বিষয়গুলো শিখেছি ইংরেজিতে, বাংলা কখনোই তেমন ভাবে ব্যবহার করিনি, তাই ইংরেজিতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এককালে ভরবেগ ব্যবহার করলেও আমার কাছে মনে হয় মোমেন্টাম অনেকটাই সর্বজনীন এবং বহুল প্রচলিত।
পেশায় আমি তড়িৎ প্রকৌশলী। পড়াশোনা করেছি কন্ট্রোল, কমিউনিকেশন আর সিগনাল প্রসেসিং এ। ঘটনাচক্রে এখন কাজ করি পাওয়ার খাতে। তাই বেশিরভাগ জিনিসই OJT (On The Job Training) অর্থাৎ কর্মস্থলে নিজের চেষ্টায় স্বশিক্ষিত।
এই লেখায় পাওয়ার (বাংলা কি হবে?) প্রকৌশলের একেবারেই বেসিক কিছু বিষয় থাকবে। প্রথমে পোটেনশিয়াল/ ভোল্টেজ (বিভব), কারেন্ট নিয়ে কচকচ করে পরে সিঙ্গেল ফেইজ, থ্রি ফেইজ, ট্রান্সফর্মার, সুইচগিয়ার, রিলে, ব্রেকার, সুইচ, সাধারণ একটা কন্ট্রোল সার্কিট ইত্যাদি নিয়ে কেচাল করবো।
তো প্রথমে শুরু করি পানির সাথে তুলনা দিয়ে। খুব একটা টেকনিকাল বিবরণে যাবো না। সাধারণত বৈদ্যুতিক বর্তনীকে হাইড্রলিক সিস্টেম এর সাথে তুলনা করা হয় এভাবে –
উৎস: http://www.ikalogic.com/resistors-volt-and-current/
উপরে ডান দিকের চিত্রে, উচ্চ চাপের স্তম্ভ থেকে একটা ভালভ্ এর মধ্যে দিয়ে পানি নিম্ম চাপের অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। বৈদ্যুতিক বর্তনীতেও একই ঘটনা ঘটে। বামের চিত্রে উচ্চ পটেনশিয়াল (১০ ভোল্ট) থেকে নিম্ম পটেনশিয়ালের (০ ভোল্ট) দিকে বিদ্যুত প্রবাহিত হচ্ছে একটা রেসিসটেন্স (রোধ) এর মধ্যে দিয়ে। পটেনশিয়াল তৈরি করা হয় কোনো ভোল্টেজ এর উৎস ব্যবহার করে; যেমন – ব্যাটারি। রেসিসটেন্স হলো হাইড্রলিক সিস্টেমে ভালভ্ এর মতো। ভালভ্ কতটুকু খোলা তার উপরে পানির প্রবাহ নির্ভর করে। আর বিদ্যুতের প্রবাহ নির্ভর করে এই রেসিসটেন্স এর মান এর উপরে।
এই ঘটনাটাকেই বলে ও’মের সূত্র (Ohm’s law : V = IR ; এখানে V = পোটেনশিয়াল বা ভোল্টেজ, I = কারেন্ট, R = রেসিসটেন্স এর মান) । কন্সট্যান্ট বা ধ্রুবক ভোল্টেজের জন্যে, রেসিসটেন্স বেশি হলে কারেন্ট কম প্রবাহিত হবে, আর রেসিসটেন্স কম হলে কারেন্ট বেশি প্রবাহিত হবে। সাধারণ ভাবে যে তার দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হয়, সেটিও একটা রেসিসটেন্স হিসেবে কাজ করে (যেমন হাইড্রলিক সিস্টেমে দুই স্তম্ভের মাঝের পাইপের আকারের উপরেও প্রবাহ নির্ভর করবে) কিন্তু ছোটো বর্তনীতে তারের রেসিসটেন্স খুব কম হওয়ায় এবং বোঝার সুবিধার্থে আমরা তারের রোধকে সাধারনত অবজ্ঞা করি। ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জনক বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন তড়িৎ প্রবাহের এই ঘটনাটিকে ব্যাখ্যা করেন ভিন্ন চাপের বৈদ্যুতিক তরলের প্রবাহ হিসেবে। উচ্চ চাপকে ধণাত্মক ও নিম্ন চাপকে ঋণাত্মক হিসেবে ধরে নিয়ে ব্যাখ্যা আসে বিদ্যুত উচ্চ পটেনশিয়াল (ধণাত্মক) থেকে নিম্ন পটেনশিয়াল (ঋণাত্মকে) এর দিকে প্রবাহিত হয়। মজার ব্যাপার (সাথে অনেকটা আজবও) হলো ঘটনাটা আসলে ঘটে ঠিক উল্টো ভাবে। বিদ্যুত প্রবাহ নির্ভর করে ইলেক্ট্রনের প্রবাহের উপর। আর ইলেক্ট্রন প্রবাহিত হয় উল্টো পথে (ঋণাত্মক থেকে ধণাত্মক এর দিকে)।
কিন্তু আজও ফ্রাংকলিনের প্রথা অনুসারে তড়িৎ প্রকৌশলে “কনভেনশনাল কারেন্ট ফ্লো” তথা ধণাত্মক থেকে ঋণাত্মকের দিকে প্রবাহকেই ব্যবহার করা হয়। এতে অংক বা হিসাবের কোনো হের ফের হয় না, কেবল বিদ্যুত প্রবাহের দিক নির্ধারণ হয়।
উৎস: http://www.rare-earth-magnets.com/t-conventional-vs-electron-flow.aspx
ঘটনাটা কিভাবে ঘটে বুঝতে হলে কয়েকটা জিনিস বোঝা দরকার –
১) বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক বনাম ইলেক্ট্রন প্রবাহের দিক
২) ইলেকট্রনের ড্রিফট ভেলোসিটি
৩) কারেন্ট ও কারেন্ট ডেনসিটি
প্রথমটা নিয়ে হালকা আলোচনা করেছি। নিচের চিত্রে ইলেক্ট্রন প্রবাহের একটা খুবই স্থূল অ্যানালজি ব্যবহার করা হয়েছে। বাস্তবিক ঘটনাটা এভাবে না ঘটলেও, বোঝার জন্যে বেশ উপকারি চিত্রটা। ধরি একটা পাইপের মধ্যে কয়েকটা বল আছে। এখানে পাইপ হবে পরিবাহী পদার্থ বা কন্ডাক্টর (তার), আর বল হচ্ছে সেই পরিবাহীর মধ্যে মুক্ত ইলেক্ট্রন। বাম দিকে একটি ইলেক্ট্রনের উপর চাপ প্রয়োগ করে পাইপে প্রবেশ করালে সে গিয়ে তার পাশের ইলেক্ট্রনগুচ্ছকে চাপ দিবে। ফলে সর্বাপেক্ষা ডানের ইলেক্ট্রনটিও নড়তে শুরু করবে, এবং বিদ্যুত প্রবাহ শুরু হবে। বৈত্যুদিক সার্কিটে (বর্তনী) ডানের শেষ ইলেক্ট্রনটি ঘুরে আবার চাপের উৎসের কাছে ফিরবে। বর্তনীতে এই চাপ ইলেক্ট্রিক ফিল্ডের মাধ্যমে তৈরি করা হয়।
উৎস: http://www.clear.rice.edu/elec201/Book/images/img92.gif
এখানে লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো, প্রথম যে ইলেকট্রনটি বামে প্রবেশ করলো, তার পুরো বর্তনী ঘুরে আসতে অনেক সময় লাগলেও, “বিদ্যুত” প্রবাহ শুরু হতে কিন্তু খুবই অল্প সময় লাগবে। আর কনভেনশনাল ফ্লো অনুসারে সে প্রবাহ হবে ইলেক্ট্রন প্রবাহের বিপরীত দিকে। এই ইলেক্ট্রনের যে গতি, সেটিই হবে ড্রিফট ভেলোসিটি। । ড্রিফট ভেলোসিটি এর মান নির্ভর করবে পরিবাহক আর পরিবাহকের প্রস্থচ্ছেদের উপর। এটা খুবই ছোট একটা সংখ্যা। আর বিদ্যুত প্রবাহের গতি হবে ইলেক্ট্রিক ফিল্ড এর গতি, যা হলো আলোর গতির সমান (২.৯৯x১০^৮ মিটার/সেকেন্ড)। এই জায়গাটা খুব খিয়াল কইরা – ইলেক্ট্রনের বেগ কম, কিন্তু কারেন্টের বেগ হলো আলোর বেগের সমান।
কারেন্ট হলো পরিবাহকের মধ্যে দিয়ে কি পরিমান চার্জ প্রবাহিত হচ্ছে একক সময়ে (এক সেকেন্ডে) তার পরিমাণ। এর ইউনিট হলো – অ্যাম্পিয়ার ।
কারেন্ট ডেনসিটি হল পরিবাহকের একক প্রস্হচ্ছেদের মধ্যে দিকে কি পরিমাণ কারেন্ট প্রবাহিত হচ্ছে তার মান।
সমীকরণ গুলো কেমনে কি এই ব্যাপারে আগ্রহ থাকলে নিচের ভিডিও টা দেখতে পারেন।
http://www.youtube.com/watch?v=-KM5bq0O48o
(ভিডিও এমবেড করতে পারলাম না )
পরের বার এসিডিসি নিয়ে আলোচনা করবো নে ।
মন্তব্য
অনেক দূর দিয়ে গেল। আরো বড় এ্যন্টেনা দরকার।
চেষ্টা করছিলাম সহজ ভাষায় লিখতে। আমার ব্যর্থতা, দু:খিত। কোন যায়গাটায় আরেকটু যোগ করা দরকার?
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
আপনার কোন দোষ নাই, এখন বয়স এমন হয়েছে যে মাথায় নতুন কিছু ঢোকে না।
হুমমম। ইন্দ্রজাল বটে। আর একটুর জন্য ১-১ এ আমাকে প্রায় ফেল করায়া দিছিল
থ্রি ফেজ এর পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ওইটা আমার কাছে আসলেই ইন্দ্রজাল। করকরানের বই পড়ে আগামাথা কিচ্ছু বুঝতে পারি নাই।
থ্রি ফেইজ বড়ই জটিল জিনিস আমি হয়তো খুবই উপর দিয়ে যাবো। ইংরেজিতে যাকে বলে বেয়ারলি স্ক্র্যাচিং দ্যা সারফেইস :(। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
ভাই, করকরান কে আমরা বলতাম করকরানি, কারণ বয়েলস্টেডের (এসি) বই পড়ে তাও কিছু বুঝতাম, করকরান কিছুই বুঝতাম না। কপাল ভাল সমীর স্যারের মত একজন স্যার পেয়েছিলাম তাই এসি সার্কিট কিছু শিখতে পেরেছি - না হলে তো মাঠে মারা যেতাম। - অয়ন
ভালো লাগলো। দারুণ সহজ করে লিখেছেন।
সৌরভ কবীর
Ac,dc,signal system,electromagnetism এ ফেল করসিলাম। এবার বুঝেন তাইলে কি অবস্থা হইসিল
অনেক ধন্যবাদ
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
ইলেক্ট্রিকাল সিস্টেমের সমস্যা হলো কিছুই চোখে দেখা যায় না তো, সব কল্পনা করে নিতে হয়। এ কারনে জিনিসটা অনেক কঠিন লাগে । তবে হতাশ হয়েন না, ফেইলিওর ইজ দ্যা পিলার অব সাকসেস !
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
পড়লাম। আঁকিবুকিগুলোও দেখলাম তবে খুব যে একটা বুঝেছি তা বলবোনা। লিখতে থাকুন, যাঁরা বোঝার তাঁরা ঠিক বুঝবে।
ভাল থাকুন।
অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
সুন্দর করে জটিল জিনিসগুলো বুঝিয়েছেন, ভাই অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আপনার এই পোস্ট দেখে তো আমার এখন টেলিকমিউনিকেশন আর ইলেকট্রনিক্স নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে। - অয়ন
অনেক ধন্যবাদ লিখে ফেলুন না !
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
সুন্দর প্রচেষ্টা। আশনাই বেড়ে গিয়েছিল যখন পড়লাম "এই লেখায় পাওয়ার (বাংলা কি হবে?) প্রকৌশলের একেবারেই বেসিক কিছু বিষয় থাকবে"। কিন্তু মনে হয়েছে আপনি এক্কেরে 'শুরু' থেকে শুরু করার চাপ বোধ করেছেন, কিন্তু আবার জটিল/গভীরে যাবারও একটা অস্থিরতা আপনাকে ছাড় দেয়নি। হয়তো ঠিক সেকারনেই তড়িতের সবগুলো কাঠখোটটা বুনিয়াদি কথা রসিয়ে বলার প্রয়োজন মনে করেননি। এতে করে পোস্টটাকে লেকচার লেকচার মনে হয়েছে।
তড়িটের কাঠখোটটা লেকচার আপনার ভাল লাগতোনা বলেই তো আপনি এই সিরিজ শুরু করেছেন, ঠিকনা? তাহলে আমাদেরকেও লেকচার থেকে মুক্তি দিন। যদি একান্তই একেবার শুরুর কথাগুলোকে রসালো করার ইচ্ছা না থাকে, তাহলে বরং এই লেখার " কেঠো বুনিয়াদি ফুট-ফরমায়েস" খাটতে সরকারি বইটাকে কিছুটা সহায়ক ভুমিকা রাখতে দিতে পারেন।
এতে করে হয়তো আপনি আপনার দরকারি কথাগুলো (পাওয়ার প্রকৌশল?) তে আরো দ্রূত আসতে পারবেন?
হুমম। দু:খের কথা কি জানেন ? সমস্যা হচ্ছে রসিয়ে বলার মতন রস আমার ভিতরে ঠিক নেই। বিধায় স্কুলে তড়িৎ প্রকৌশলের কোনো লেকচারই আমার ঠিক খারাপ লাগে নাই বরং বুঝতে পারলে একটা উত্তেজনা আসতো। অবশ্য অনেক কিছু অনেক কিছুই মাথার উপ্রে দিয়ে যেতো
সমস্যা হলো, শুরু করতে গিয়ে মনে হলো কোন খান থেকে শুরু করা দরকার আমি জানি না। এই সমস্যায় পড়েছিলাম সেদিন আমার এক কেমিকৌশলী সহকর্মীকে মোটর নিয়ে বুঝাতে গিয়ে দেখলাম সে আমাকে জিজ্ঞেস করছে "ফেইজ কি"? তাই ভাবলাম গোড়া থেকেই শুরু করি। তবে আপনার কথা ঠিক, এইভাবে এগুলে বছর দু'য়েক লাগবে পাওয়ার পর্যন্ত যেতে।
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
অনেক তাড়াতাড়ি গভীরে চলে গেলেন।
নিজে হাইভোল্টেজ সাবস্টেশন প্রটেকশন ডিভাইস নিয়ে কাজ করি। থ্রিফেইজ থেকে শুরু করে সবকিছুই এ্যামবেডেড পোগ্রামিংয়ের কাজ। সবই ইমাজিনেশনের উপর (বর্তমানে ডিসটেন্স প্রটেকশন নিয়ে ঝামেলায় আছি। আর কতো ইমাজিন করা যায় )। কিন্তু কাজ করতে গেলে দেখা যায় ঠিকই কাজ করছে
ইর্ন্টারশীপের সময় আমিও আমার কলিগ মিলে রাবার (অফিস), ক্লীপ(অফিস), চুম্বক (ই-বে থেকে কিনেছিলাম), পাওয়ার সাপ্লাই (অফিস) দিয়ে মটর বানিয়েছিলাম। থিউরিও সাথে কাজের সম্পর্ক থাকলে এইসব নিয়ে কাজ করতে মজাই লাগে।
---ফ্রুলিংক্স
হুমম মনে হয় সমীকরণ বাদ রাখা দরকার ছিলো। সমস্যা হলো, থ্রি লাইন ছাড়া পাওয়ার নিয়ে কিভাবে আলোচনা করবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। তাই ভাবলাম একটু পেছন থেকেই শুরু করি।
হাইভোল্টেজ সাবস্টেশনের প্রটেকশন ডিভাইস এর ব্যাপারে আজকের দুনিয়ায় সবই এমবেডেড সিস্টেম নির্ভরশীল এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমি যে ইন্ডাস্ট্রিতে আছি, এদের জন্য ইলেক্ট্রিকাল ইন্ফ্রাস্ট্রাকচারে পয়সা খরচ করা লাভজনক নয় (পড়ুন ইনভেস্টমেন্ট উইথাউড ডিরেক্ট রিটার্ন)। তাই অনেক পুরোনো সিস্টেমে , বিশেষ করে লো এবং মিডিয়াম ভোল্টেজ মোটর কন্ট্রোল সেন্টার টাইপের জিনিসগুলোতে এখনো অনেক ইলেক্ট্রোমেকানিকাল রিলের ছড়াছড়ি। তাছাড়া লোভোল্টেজ (৪৮০ ভোল্ট) লেভেলের প্রায় সব মোটর প্রোটেকশনই কিন্তু থার্মাল আর ম্যাগনেটিক এলিমেন্ট নির্ভর।
আপনি কি রিলে বানান না ব্যবহার করেন?
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
রিলে বানানোতে একটু হেল্পাই।
আমাদের সবগুলো রিলেই ডিজিটাল। ১০/১২ বছর আগে ইলেক্ট্রোমেকানিকাল ছিলো। অফিসের মিউজিয়ামে ওদের বানানো সবগুলো সিরিজ রক্ষিত আছে। কয়েকবছর আগে দেখেছিলাম।
মোটর প্রোটেকশন, থার্মাল প্রোটেকশন নিয়ে কিছু কাজ করেছিলাম। কিন্তু অনেকবছর আগে এই ফাংশনগুলো আমাদের ডিভাইসে ডেভোলপ করা।বর্তমানে কাস্টমারও এইসব ফাংশন নিয়ে খুব একটা ডিমান্ড দিচ্ছে না।
আমাদের হাইভোল্টেজ ফিডার প্রোটেকশন, ডিসটেন্স প্রোটেকশন, রেলওয়ে প্রোটেকশন এবং এগুলোর কমিউনিকেশন (IEC 61850) নিয়েই বেশী কাজ করতে হয়।
কিছুদিন কন্ট্রোল ডিভাইস (হাই ভোল্টেজ ফিডার) নিয়ে কাজ করেছিলাম। সবগুলো মিলিয়ে জগাখিচুড়ি অবস্হা। মাঝেমধ্যে পুরো ট্রাক (১০ টন) হারিয়ে ফেলি।
--ফ্রুলিংক্স
আমাদের বেশির ভাগ সিস্টেমই ১০/১২ এর থেকে অনেক পুরানো ইলেক্ট্রোমেকানিকাল, সলিড স্টেট, সবই আছে ৬১৮৫০ এর গুস মেসেজিং হালকা ব্যবহার করেছি। এ বি বি না এস ই এল?
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
গুস ম্যাসেজিং নিয়ে কম্যুউনিকেশনের লোকজন ব্যাপক ব্যস্ত। একটি কন্ট্রোল ডিভাইসে গুস মেসেজগুলো IEC 870-5-103 মেসেজগুলো কোডিং করেছিলাম। তারপরও ঐ লাইনে আর পা বাড়াইনি। বর্তমান স্মার্টগ্রিডে গুস মেসেজ খুবই গুরুত্বপূর্ন।
কোনটা রেখে কোনটা বলি??
আমার দেখার/জানার ইতিহাস
AEG-->ALSTOM-->AREVA-->Schneider (বর্তমান)
(গত ৩০ বছরের হাতবদল)
মেকানিকাল ডিপার্টমেন্টে লেবেল ১-টার্ম ১ এ ইলেক্ট্রিকালের একটা কোর্স করতে হয়। আমাদের বেলায় যে স্যার ক্লাস নিত তার কথা কিচ্ছু বুঝতাম্না। ফলে প্রথম ক্লাসটেস্টে সবাই জিরো পেলাম।এই কোর্সে আমাদের সাথে মোটামুটি এক দশবছরের পাগলা সিনিয়র ও ছিল। উনি একদিন ক্লাসে বলেই বস্লো ঐ মিয়া কি পড়াও কিচ্ছু বুঝিনা। শুনে সেই স্যার রেগেমেগে লাল হয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে গেসিল। ঊনার হাতে এই কোর্সের হাতেখড়ি হওয়াতে আমি এই জিনিস ব্যাপক ডর পাইতাম।তয় আপনি সুন্দর করে গুছায়ে লিখসেন।
অনেক ধন্যবাদ
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
ভালো লেগেছে।
বালুকনা
তড়িৎ প্রকৌশল এর যা জানি, সবই HSC এর। বড় আশা করে বসেছিলাম, আশা ধরে রেখে তাকিয়ে থাকলাম।
ব্রুটাস
ভার্সিটিতে ফিজিক্স ২ কোর্সটা নিয়ে ভাবছিলাম আবার এইচএসসির বই নাড়া দিতে হবে আপনাকে ধন্যবাদ যে সেটা আর করতে হল না, এক ব্লগ পোস্ট পড়েই অনেক কিছু মনে পড়ে গেল। সিরিজ আশা করছি।
মিনহাজ.রাতুল
নতুন মন্তব্য করুন