জুলহাস আর তনয়কে কুপিয়ে জঙ্গিরা পালিয়ে যাবার কিছুক্ষণ পর প্রতিবেশিরা কয়েকজন এগিয়ে আসে জুলহাসের মরদেহ দেখতে। দরজাটা আধো খোলা, তার মাঝামাঝি রক্তের উপর শুয়ে আছে জুলহাস- জুলহাসের নিথর দেহ, রক্তের ফোয়ারায় শুদ্ধ হচ্ছে ধর্ম, সে এক দেখার মত দৃশ্য! বাড়িতে খুব সম্ভবত বুড়ি মা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না; হতভম্ব বয়স্কা মহিলা বারবার সমবেত দর্শকদের মিনতি জানাচ্ছেন- একটু ধর, একটু ধর, হাসপাতালে নিয়ে যাও। অনেক ত্যানা প্যাঁচানোর পর দু'একজন ধরাধরি করে দরজা থেকে টেনে রক্তাক্ত শরীরটিকে একটু খোলা জায়গায় নিয়ে এল। তখনও রক্ত ঝরছে মাথা থেকে, অবিরাম ঝরছে; বুড়ি মা সেই রক্ত মাখা মাথাটিতে হাত বুলিয়ে আদর করছেন, আর বিলাপ করছেন- কে মারলো, কে মারলো এইভাবে?
মা, শুনুন, আপনার ছেলেকে হত্যা করেছে মস্তিস্ক প্রক্ষালিত দু'চারজন উন্মত্ত জঙ্গি; তবে এই হত্যায় ইন্ধন আছে আরো অনেকের, অনেকের বলতে কোটি কোটি মানুষের। যখনই কাউকে বলতে শুনবেন- 'হত্যা করা ঠিক নয়; তবে সমকামিতা, নাস্তিকতা এগুলোওতো অন্যায়'; যখনই দেখবেন এই পন্থায় কেউ ত্যানা প্যাঁচাচ্ছে, তার কুৎসিত মুখে দেখতে পাবেন আপনার সন্তানের খুনিকে।
মৃদুল আহমেদ অনেক ছড়া লিখেছেন, যার অনেকগুলোই অসাধারণ; বিশেষ করে এই ছড়াটি যতবার পড়ি (কিংবা আবৃত্তি করি) আমার বুকের ভেতর কেমন যেন একটা কষ্ট হতে থাকে, গলার ভেতরটায় দলা দলা ব্যাথা অনুভূত হয়, একটা অপরাধবোধ জড়িয়ে ধরে দশদিক থেকে ধেয়ে এসে।
মন্তব্য
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন