শৈশবের স্মৃতি আমাকে নিত্য তাড়িয়ে বেড়ায়। ফেলে আসা খুব ছোট ছোট সাদামাটা ঘটনাগুলোকেও আমার কাছে একেকটা উচ্চাঙ্গের উপন্যাসের মত মনে হয় কিংবা কোনো কাব্যগাথা। অতীতের সেইসব মনিমুক্তা একত্রিত করে একটি মালা গাঁথবার ইচ্ছে আমার অনেক দিনের। সেই তাগিদেই শুরু করলাম-
শরীরটা বুড়িয়ে যেতে এখনও ঢের দেরী; তবু একদিনের না-কামানো মুখটি নিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়ালেই চিবুকের ছ’সাতটি সফেদ শ্মশ্রু যখন চিকচিক করে উঠে, ধাবমান সময়ের সেই খুনসুটিতে মনটা কেমন যেন উদাস হয়ে যায়! মাথার চুলেও পাক ধরেছে খানিক, বিলুপ্ত প্রাণীর মত দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে তার সম্মুখভাগ। প্রায় রাতেই ঘুম হয়না ভাল মতন। চোখের পাতা বন্ধ হলেই পুরনোতে হারিয়ে যাই। এমনিতেই আমি বড্ড স্মৃতিকাতর। অতীতের দৃশ্য ভাবলেই মনে হয়, আহা এই জীবনে কত কিছু অসম্পন্ন হয়ে রইল! ভবিষ্যতে এটা করবো, ওটা করবো- এমন স্বপ্ন দেখাও আর হয়ে ওঠেনা ইদানীং। তবে কি ভবিষ্যতের দৈর্ঘ্য সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে দিন দিন? হ্যা, অতীতটাকেই আজকাল মনে পড়ে বেশি। সেই লালরঙা শৈশবের অতীত, জলপ্রপাতের মত সদর্পে আছড়ে পড়া দুরন্ত কৈশোরের অতীত; খুব মনে পড়ে, মনে পড়ে আর থেকে থেকে বাস্প জমে ওঠে চোখের আকাশে, বুকটা কেমন হুহু করে ওঠে তখন! কোনো ধারাবাহিকতার ধার না ধেরে, দুপ করে এলোমেলো স্মৃতির কখন যে কোন বাতিটি জ্বলে উঠে মস্তিষ্কের স্মৃতি ভাণ্ডারে, তার কোনো বালাই নেই।
অন্যের চোখে আমার শৈশব আর কৈশোর নেহাতই সাদা কালো ঠেকবে হয়তো; আমার অতীতে কোনো সাফল্যের রেকর্ড নেই। না পড়ালেখায়, না খেলাধুলোয়, না কোনো সৃজনশীলতায়- আমার সত্যিই কোনো অর্জন নেই। তাতে বয়েই গেল! আমার অর্জন নাহয় মিশে থাকুক শত সহস্র অপারগতায়। আমার কিছুটা অর্জন কোনো এক প্রজাপতির বর্ণীল ডানায় বিস্ফারিত বিস্ময়ে চেয়ে থাকায়, আমার কিছু অর্জন ঘাসের ডগার ছোট্ট শিশির বিন্দু দেখে আপ্লুত হওয়ায়, আমার আরো কিছু অর্জন কোনো রোদ্দুর ভরা দুপুরে একটি ফড়িঙের পিছনে ছুটতে ছুটতে হাঁপিয়ে ওঠায়। সেই অর্জন আমার চোখে খুব রঙিন; সিস্তাইন চ্যাপেলের সিলিংয়ে সেই রঙ কোথায়!
সেই যে একবার খালার বাড়ী বেড়াতে গিয়েছিলাম উল্লাপাড়ায়! বয়স তখন খুব কম, ঢাকার বাইরে গেলে খুব ভাল লাগতো আমার, বিশেষ করে গ্রামের বাড়ি গেলে। গ্রামের মাটি ফুঁড়ে কেমন যেন একটা আপন আপন গন্ধ! ভাল লাগার তালিকায় ছিল পুকুরে ছিপ ফেলে মাছ ধরা, উঠোনের গাছের নিচু ডালটিতে বসে নিজেকে টারজান টারজান ভাবা, একেবারে কোনোরকম উদ্দেশ্য ছাড়াই জমির সরু আল ধরে দৌড়ুতে থাকা, কিংবা কখনও অলস দুপুরে লাউয়ের ডগায় বসা প্রজাপতিটিকে দেখে হিংসায় জ্বলে মরা; তবে ভাল লাগার সবচেয়ে বড় কারণটি ছিল গ্রামে গেলে পড়ালেখা করতে হত না। ঢাকার বাইরে বলতে সাধারণত দুটি যায়গায় যাওয়া হত- নানীবাড়ি টাঙ্গাইল নইলে খালার বাড়ি উল্লাপাড়ায়। দাদা বাড়ি ছিল অনেক দূরে- নড়াইলে; যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল ছিল না তেমন, আর তা ছাড়া দাদার দিকের সবাই ঢাকায় থাকতো; কারুরই গ্রামে যাওয়ার তাগিদ ছিল না তেমন। উল্লাপাড়া বলতে গেলে ছিল আমার দ্বিতীয় বাড়ি। খালা, খালু আর তিন খালাতো ভাই আমাকে খুব আদর করতেন। খালা যেন পারলে নিজের কলজে কেটে আমার পাতে তুলে দেন। খালাতো ভাইদের মধ্যে একজনের খুব পাখি দেখার শখ। পাখিতো এমনিতেই দেখা যায়, কিন্তু বনে গিয়ে ঘন গাছের আড়ালে পাখি দেখার মধ্যে নাকি ভীষণ এক নেশা; ভাই আমার এমনটিই বলতো। তখন গ্রামগুলো অনেক অনেক গাছ-গাছালিতে ভরা ছিল। আধুনিকতার কেউটে তখনও ফনা তোলেনি গ্রামে। এক দুপুরে ঠেসে ভাত খেয়ে আমরা পাখি দেখতে বেরুলাম। আমি ঢাকার ছেলে; পাখি বলতে সবার আগে বুঝি কাক, তারপর চড়ুই, শালিক আর খাঁচায় পোষা টিয়া। ওমা, গ্রামের পাখিগুলো কত্ত সুন্দর! কত্ত রঙের পাখি! এতসব পাখি ঢাকায় বেড়াতে যায় না কখনও? গেলে কী এমন ক্ষতি! আমার খালাতো ভাই পাখি বিষয়ে বড্ড বাড়াবাড়ি মাত্রায় অভিজ্ঞ। ডাক শুনে চোখ বন্ধ করে পাখির নাম বলে দিতে পারে। বেশ লাগছিল পাখি দেখতে, ডাক শুনতে আর একটা একটা করে তাদের নাম জানতে। পরদিন গ্রামের পিছনের দিকে একটু দূরে খালের পার ঘেঁষা একটা জঙ্গলে গেলাম পাখির সন্ধানে। অত বড় নয়, অত সুন্দরও নয়, তবু মানুষের ছোঁয়ায় নষ্ট না হওয়া একটা স্নিগ্ধতা বিরাজমান ছোট্ট সেই বনটি ঘিরে। এত এত ঘন পাতার আড়ালে বসে থাকা পাখি চোখে না পড়লেও তাদের ডাক শুনে শুনে খালাতো ভাই একে একে বলে দিচ্ছিল তাদের পরিচয়। আমি শেখার দুরূহ চেষ্টা করছিলাম একটু একটু করে। জঙ্গলের অনেকটা ভেতরে একটু খানি খোলা জায়গা, ঘাসগুলো হাঁটুর চাইতেও লম্বা; গেল রাতের বৃষ্টির কারণে মাটি বেশ নরম। আমরা জুতা হাতে নিয়ে প্রায় নিঃশব্দে এগুতে থাকলাম, পাখি দেখার সময় নাকি বেশি শব্দ করতে নেই, খালাতো ভাইয়ের কাছ থেকে এটি একেবারে প্রথম ধাপের তালিম। একটু এগোতেই দেখা গেল সেখানে একটি অতিকায় বৃক্ষের শাখায় শাখায় অনেকগুলো পাখি একত্রে কলতান জুড়ে দিয়েছে। সল্প আলোয়, ঘন পল্লবের অবগুণ্ঠনে আর হরেক কাকলীর সংমিশ্রণে কারোই বিশেষত্ব সেখানে পৃথক করে ধরা দেয় না; কোনটি কোকিল, কোনটি শালিক, কোনটি ঘুঘু আর কোনটি হরিয়ালের স্বর; কিংবা কিচিরমিচির করে উঠলো চড়ুই নাকি বুলবুলি; এক ঝাঁক বুনো টিয়া বসে গাইছে কি সেথায়; ঐ বুঝি বৌ কথা কও ডেকে উঠলো, কার চঞ্চু খসে বেরিয়ে এল অমন অপূর্ব সুর- না, কিছুই স্পষ্ট নয়। তবে এই সামগ্রিক এলোমেলোর মাঝেও একটি অনবদ্য প্রাকৃতিক লয় আছে, সেটি আনন্দের, সেটি প্রাণের জানান দেয়া উচ্ছাসের।
খুব মনে পড়ছে অম্লমধুতে মাখামাখি একটি বিকেল। ঝাকে ঝাকে ছেলে-মেয়েরা কলোনীর মাঠে খেলতে নামে বিকেল বেলায়। বিভিন্ন ধারার শব্দ ভেসে আসে- ঐ আদিল পাস দে, আউট দ্যাট (‘হাউ ওয়াজ দ্যাট’ তখনও শেখা হয়ে ওঠেনি), ঐ তুই দুধভাত, যা আমি খেলুম না, সেতু ক্যাচ ধর, বরফ-পানি, এক্কাদোক্কা, টিলো-এস্প্রেস, কলতান, কিচিরমিচির- হাজার পাখির প্রাণের জানান দেয়া উচ্ছাস; সেই আহ্বান উপেক্ষা করা যায় না, করা যায়নি। স্বভাবে আমি নতুন পরিবেশে বড্ড আড়ষ্ট ছিলাম। প্রথম স্কুলে ভর্তি হবার পর একুশ দিনের মাথায় নাকি পাশের বেঞ্চিতে বসা সহপাঠীর সঙ্গে প্রথম কথা বলেছিলাম; ক্লাস টিচার জানিয়েছিলেন মা-কে। কলোনীতে এসেছি প্রায় তিন সপ্তাহ হতে চলেছে, প্রতি বিকেলে হাজার পাখি একত্রে হাতছানি দেয়, ছুটে যেতে ইচ্ছে করে ঐ প্রাণের মাঝে; তবু কেমন যেন এক অজানা লাজুকতার বেষ্টনী ঘিরে রাখে আমায়। আমি চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র তখন, বয়স দশের এদিক ওদিক। পুরোন ঢাকায় কেটেছে শৈশবের প্রথম দশক। সেখানে ছাদের গায়ে লাগানো ছাদে বানরের মত লাফিয়ে লাফিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি সারা পাড়া, দেয়াল টপকে পাশের বাড়ীর জামরুল গাছে হানা দিয়েছি প্রায় প্রতি দুপুরে; কিন্তু নতুন এই ঠিকানায় নিজেকে থিতু করতে দ্বিধা হচ্ছে ভীষণ। বারান্দা থেকে বাইরে তাকালেই সবাইকে আমার অনেক দূর দেশের মানুষ বলে মনে হয়। এতগুলো অচেনা চেহারায় বন্ধুর মত কাউকে খুঁজে পাই না। বাইরে গেলে কার সাথে কথা বলবো? কাউকে চিনিনা, দম আটকে মরে যাব যে! হ্যা, যে বিকেলের কথা বলছিলাম- আমার বড় বোন অনেক বকেটকে সাজিয়ে গুছিয়ে, সুন্দর করে চুল আচরে, হাফপ্যান্টের পকেটে এক টাকার একটি নোট গুঁজে দিয়ে নীচে পাঠালো আমাকে; প্রায় জোর করেই পাঠালো। এক টাকা তখন কম কিছু নয়। এক টাকায় আস্ত এক ঠোঙ্গা বাদাম পাওয়া যেত, কিংবা বড় এক ঠোঙ্গা ভর্তি ঝালমুড়ি, চাইলে এক টাকায় কিনে ফেলা যেত সেই বয়সের ছোট মুঠো ভর্তি নাবিস্কো কোম্পানির আনারসের ছবি আঁকা লজেন্স। আমাদের বাসা দোতলায়, সিঁড়ি ভেঙ্গে একতলায় নামলাম ঠিকই; কিন্তু সিঁড়িঘর থেকে আর বাইরে বেরুতে পারছি না। পা দুটো পাথরের মত ভারী হয়ে উঠছে। এর অনেক বছর পরে প্রথম মঞ্চ অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে এমনটা হয়েছিল; বুকে কেমন যেন ভূমিকম্পের মত অনুভূত হয়, পা একদমই চলতে চায় না। যাইহোক একসময় জিদ করেই বেরিয়ে এলাম। এরপর শুরু হল যাকে বলে ভয়াবহ এক মঞ্চ জড়তা। হাতদুটো পকেটে রাখবো নাকি বাইরে? আরেকটু জোরে হাঁটবো নাকি ধীরে? এইযে আমার সমবয়সী মেয়েগুলো এক্কাদোক্কা খেলছে, ঐযে বড় মাঠে ফুটবল, দেয়ালে উইকেট এঁকে গাছের ডালকাটা ব্যাট দিয়ে ব্লক ব্লক খেলছে জনাকয়েক, এরা কেউ আমার পরিচিত নয়। এতগুলো অপরিচিত চোখের সামনে নিজেকে খুব বোকা বোকা লাগছে, মনে হচ্ছে সবাই ড্যাবড্যাব করে চেয়ে আছে শুধু আমার দিকেই। আমার হাঁটা দেখে হাসছে কি ওরা? ঐযে তবে পিছন থেকে দু’কাঁধে বেণী ঝোলানো মেয়েটি খিলখিল করে হেসে উঠলো! আমি বুঝতে পারছি আমার বুকটা ভীষণ ভাবে কাঁপছে। একটু দাঁড়াতে হবে, কোথাও একটু অবশ্যই দাঁড়াতে হবে। কোথায় দাঁড়াবো? খোলা মঞ্চে একা দাঁড়িয়ে পারফর্ম করা ভয়ানক কঠিন। অনভিজ্ঞ পারফর্মাররা তাই মঞ্চের মাইকটাকে আগলে ধরে, কিংবা যদি মঞ্চে টেবিল অথবা চেয়ার থাকে অথবা অন্য কোনো প্রপ তবে বাঁচবার একটা পথ পাওয়া যায়; আর যদি লেকটার্ন থাকে তবেতো সোনায় সোহাগা; বুক থেকে শরীরের নিম্নাংশ আড়াল করে হাতের উপর সামনের দিকে ভর দিয়ে বেশ আরাম করে দাঁড়ানো যায়- এসব শিখেছিলাম অনেক পরে; কিন্তু ঐ দশ বছর বয়সেও কিছু বুঝে না বুঝে কোনো একটি অবলম্বন খুঁজছিলাম। আমি গুটিগুটি পায়ে হাঁটছি, কিছু একটা খুঁজছি। হঠাৎ চোখে পড়লো দেয়ালের পাশে একটি লাল রঙের বিদ্যুতের খাম্বা। কেন যেন মনে হল এই লাল পাইপটি (এই নামেই এখনও সেটি পরিচিত) আমার জন্মজন্মান্তরের সখা। কেমন আপন আপন চোখে চেয়ে আছে আমার দিকে! স্নেহে আর ভালবাসায় কাছে টেনে নিতে চাচ্ছে। যেন বলছে- এসো ভাই, আমার গায়ে ঢেলান দিয়ে দাঁড়াও, কেউ তোমাকে কিচ্ছুটি বলবে না, কেউ হাসবে না তোমাকে দেখে। আমি প্রায় দৌড়ে গিয়ে দাঁড়ালাম সেখানে। আমি কলোনীতে আসবার পর এই লাল পাইপের সাথেই আমার প্রথম পরিচয়, সে-ই আমার প্রথম বন্ধু।
লাল পাইপে ঢেলান দিয়ে কিছুক্ষণ ফুটবল খেলা দেখলাম। বোনের দেয়া এক টাকা দিয়ে জাম্বো সাইজের এক ঠোঙ্গা বাদাম কিনে খাওয়া শুরু করলাম। পুরো এক ঠোঙ্গা বাদাম আমার একার; সে বড়লোকি দেখে কে! সবাই কী মজা করে খেলছে! আমারও খেলতে ইচ্ছে করছে খুব, কিন্তু ওরা কি নেবে আমায়? মাঠের একদিকে একটি স্লিপার। কলোনীতে আসা অবধি ঐ স্লিপারে চড়বার জন্যে মনটা আঁকুপাঁকু করছে। আমাদের পুরান ঢাকার মহল্লায় এই রকম স্লিপার ছিল না। পার্কে গিয়ে চড়েছি; কিন্তু নিজেদের পাড়ায় নিজেদের একটি স্লিপার, তাতে যখন ইচ্ছে চড়া- এমনটা সপ্নেও ভাবা যায়?
বিকেল তখন শেষান্তে। পশ্চিমের আকাশটা কি সুন্দর দেখাচ্ছে! এখনও ঠিক ঠিক মনে আছে; দেখে মনে হচ্ছিল আকাশের গায়ে কেউ বুঝি জাফরানের কৌটো উল্টে দিয়েছে। জাফরানের রঙটা খুব ছোটবেলা থেকেই আমার প্রিয়। কালেভদ্রে বাসায় পোলাও রান্না হলে মাকে দেখতাম সামান্য জাফরানে সেই অমৃত রাঙিয়ে দিতে। এই রঙটা আমি ছোটবেলা থেকেই চিনি। এই কলোনীতে মোট চারটা বিল্ডিং। তাই সবাই বলে ‘চাইর কলোনী’। একটু পর মাগরিবের আযান শোনা গেল। আযানকে মনে হল যেন খেলা শেষের তিনটি ধ্বনির বাঁশি। সেই ধ্বনির সাথে সাথেই খেলা থেমে গেল যার যার। আমি ঘরে ফিরবো, তবে মনটা খারাপ; লাল পাইপ আর বাদাম ওয়ালা ছাড়া আর কারো সাথে দুটো কথা হল না। হঠাৎ, হাফপ্যান্ট পরা রোগা-লম্বা একটি ছেলে এসে বললো- ‘কি নাম তোমার? আমার নাম শিহাব’। আমিও নাম বললাম, কোন ক্লাসে পড়ি জানালাম। ও বললো- ‘তাইলে তো আমরা সমান সমান’। বাহ, ‘সমান সমান’- কী মধুর মত কানে বাজলো শব্দ দুটি! সমান সমান, মানে বন্ধু! ওর পাশে আরেকজন; নাম জানালো- নোমান, তার পাশেই পাভেল। সত্যিই বন্ধু! এরা সত্যিই আমার বন্ধু! এই অচেনা ছেলেগুলো আমার বন্ধু! মঞ্চের জড়তা কেটে যাচ্ছে ধীরে ধীরে, ডিম থেকে খোলস ভেঙ্গে বেরিয়ে আসছে আরেকটি পাখির ছানা। এই পাখিও একদিন এলোমেলো কলতানে মুখর করে তুলবে এই জাফরানি রঙে রাঙানো বিকেল, এই পাখিদের বনানী, এই কলোনী, এই চাইর কলোনী।
(চলবে)
মন্তব্য
চাইর কলোনীর কাহিনীটা আরো লিখুন, ভালো লাগছে।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
ইচ্ছা আছে চালিয়ে যাবার। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
নতুন মন্তব্য করুন