না বলে কয়ে একদিন ঝুম বৃষ্টি নামলো। সেদিন স্কুল ছুটি, এক দৌড়ে নীচে নেমে এলাম। আমাদের কলোনীপাড়ায় দিনের বেলায় বৃষ্টি মানেই খেলা শুরুর বাঁশি। কাউকে ডাকতে হয় না, সবাই নীচে নেমে আসে হুড়মুড়িয়ে, নেমেই শুরু করে দেয় দিগ্বিদিক জ্ঞান হারানো খেলা, ফুটবল খেলা। কে কোন দলে খেলছে তারও ঠিক থাকে না বেশির ভাগ সময়ে। যার পায়ে বল সেই পেলে, সেই ম্যারাডোনা আর বাকী সব্বাই যেন প্রতিপক্ষ; যে করেই হোক বল কেড়ে নিতেই হবে অন্যদের, গোল করা এ খেলায় কখনই মুখ্য নয়; বল নিয়ে কাদাজলে লুটোপুটিতেই আনন্দ। এমন কাদাজলে বল নিয়ে কি আর ভাল মত এগুনো যায়? আমাদের মাঠটিও একদম নেড়া, কোথাও ঘাসের চিহ্ন মাত্র নেই আর সে কারণেই বেজায় পিচ্ছিল। মাঠের মাঝামাঝি পিচঢালা রাস্তা। একটু পরপরই কেউ না কেউ পিছলে পড়ে যাচ্ছে আর অন্যরা সবাই তাই নিয়ে আমোদে মেতে উঠছে। আজকের বৃষ্টি একেবারে যাকে বলে ঝমঝম, থামবার কোনো নাম নেই। এত পানি কি করে ভেসে থাকে ঐ আকাশে! গোড়ালির উপর পানি জমে গেছে মাঠে, তাতে খেলা আর জমে উঠছে না। তবুও বল নিয়ে বেশ কিচ্ছুক্ষণ ঝাপাঝাপি করলো সবাই। গ্রামের বৃষ্টি যত সুন্দর, ঢাকার বৃষ্টি ততটা নয়, তবু ঢাকার মানুষও বৃষ্টির আকাঙ্ক্ষায় থাকে। তবে দীর্ঘস্থায়ী বর্ষণ শহরবাসীর দুর্ভোগ বাড়ায়। বৃষ্টি যদি হয় রিমি রিমঝিম রিমঝিম, তাতেই শহরবাসীর চিত্ত সুখী হয়। এমন বৃষ্টি আর নর্দমার একাকার হয়ে যাওয়া নোংরা জলে কোনো সুখ নেই, আছে দুর্গন্ধের জ্বালা আর চলাচলের দুর্ভোগ। কিন্তু আমরা অর্থাৎ আমি আর আমার বন্ধুরা আর দশজন শহরবাসীর তুলনায় ভিন্ন মেরুর চরিত্র নিয়ে চলি। এইযে জলাবদ্ধতা, এইযে অচল হয়ে যাওয়া রাস্তাঘাট, এইযে পরদিন বৃষ্টি চলতে থাকলে স্কুলে না যাওয়ার ছুতো- এতেই আমাদের দারুণ সুখ।
খেলা থেমেছে, বৃষ্টি না থামলেও তা কিছুটা ধরে এসেছে। মাহবুব ভাইদের মাঠমুখী জানলার কার্নিশের নীচে আমি আর নোমান দাঁড়িয়ে আছি। কেউ কেউ বাড়ি ফিরে গেছে, কেউ কেউ সাঁতার কাটতে চলে গেছে রাজারবাগ পুলিশ ফাঁড়ির পুকুরে। আমরা দুজন ঠায় দাঁড়িয়ে আছি, আমরা সবার চলে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি, আমাদের মাথায় তখন অন্য কিছু খেলা করছে, আমাদের মাথায় তখন বিশাল এক পরিকল্পনা, বিশাল একটা কিছু পাওয়ার বাসনা; যার ভাগ সবাইকে নিয়ে ভাগাভাগি করা যায় না। মাহবুব ভাইদের বাসা একতলায়, পেছনের লাগোয়া ছোট্ট বাগানে পেয়ারা গাছ আছে একটি, তাতে বড় একটা পেয়ারা, দু’চারদিন আগেই আমাদের চোখে পড়েছিল আর আমরা ছিলাম এমন একটি বৃষ্টির অপেক্ষায়। বৃষ্টির দিনে সবার জানালা দরজা বন্ধ থাকে, চট করে কেউ দেখে ফেলবে না, ধরা পড়বার চান্স খুব কম। এদিক ওদিক ভাল করে দেখে নিলাম। না, কার্নিশের কোনায় একটা ভেজা কাক ছাড়া আর কোথাও কেউ নেই। আমি আর নোমান পা টিপে টিপে গাছের দিকে এগিয়ে গেলাম। অত বড় নয় গাছটি, দোতলার ঈমন ভাইদের জানলা পেরিয়ে আর উপরে ওঠেনি। যদিও ডালপালা খুব পিচ্ছল তবু পেয়ারাটি পেড়ে আনতে খুব বেশির বেশি মিনিট তিনেক লাগলো আমাদের। উফ কত বড় একটা পেয়ারা, দু’হাতের তালু ভরে ওঠে। আমরা দৌড়ে চলে এলাম বড় আমগাছটির নীচে। এই জায়গাটি কলোনীর একেবারে এক ধারে, কাউরো চলাচল থাকে না এখানে। গোপন কাজ সারবার মোক্ষম জায়গা এটি। পেয়ারা হাতে পাওয়া মাত্র যত জলদি সম্ভব আমগাছতলায় চলে আসাটা তাই আমাদের পরিকল্পনার মধ্যেই ছিল। ভাল করে দেখে নিলাম; না, আমগাছতলায় কেউ নেই। এই পেয়ারা নিয়ে ঘরে যাওয়া যাবে না, মা বকবে। আর তাছাড়া এর অর্ধেক নোমানের। আগে কাটতে হবে এটিকে। কি করে কাটি? ছুরিতো আনা হয়নি সঙ্গে! দুজনে মনস্থির করলাম কামড়ে কামড়ে ভাগাভাগি করে নিব। কে আগে কামড় দেবে তাই নিয়ে মিনিট খানেক ঝগড়া হল। পরে গাছতলা থেকে দুটো কাঠি কুড়িয়ে নিয়ে খানিক মুঠোতে আর খানিক বাইরে রেখে টস করে নিলাম। নোমান বড় কাঠিটি বেছে নেয়ায় প্রথম কামড়ের অধিকারটাও পেয়ে গেল।
কোকিলের নীড়ে একটু একটু করে তা দেয়া ডিমগুলোর কোনো একটি দুটি থেকে কাকের ছানা বেরিয়ে এসে কোকিলকে যেমন কখনও কখনও বোকা বানিয়ে দেয়, তেমনি করে দেয়াল ঘেঁষা বড় তিনটি কচুপাতার আড়াল থেকে বেরিয়ে এল কেপি; এই নামটি কলোনীর বড়ভাইদের দেয়া, দুটি বাজে শব্দের এব্রিভিয়েশন; ওর আসল নাম রনি। ডানপিটে ছেলেদের চরিত্রের সঙ্গে অনেকে যে বিচ্ছু উপমাটি ব্যবহার করে, আমি নিশ্চিত রনিকে দেখেই এই উপমার সৃষ্টি হয়েছিল। বয়সে আমাদের চেয়ে দু’চার বছরের ছোট। দুষ্টুমির এমন কোনো শাখা নেই যেখানে ওর বিচরণ নেই; গাছের উঁচুডালে চড়ে পাখির ডিম পেড়ে আনা, এক নর্দমার নোংরা পানিতে ভেসে ওঠা নোংরা মাছ ধরে অন্য নর্দমায় ছেড়ে আসা, কার্নিশ বেয়ে তিন কিংবা চারতলার কোনো ফ্ল্যাটের পায়খানার জানালার পর্দা খুলে এনে লুকিয়ে রাখা- এসব ছিল রনির বা’হাতের খেলা; সেসব অন্য এক অধ্যায়ে আরো বিস্তারিত বর্ণিত হবে। কচুপাতা দু’হাতে সরিয়ে কেপি এসে বললো- ‘আমারে দুই কামড় না দিতে দিলে চিল্লাচিল্লি করুম- দীপু ভাই আর নোমান ভাই পেয়ারা চোর, পেয়ারা চোর’। চুপচুপে ভেজা উদোম শরীর, শুধু একটি হাফপ্যান্ট পরা; ওর গায়ের রঙ এমন যে বৃষ্টির দিনে আধো অন্ধকারে সহসা চোখে পড়বার জো নেই। চোখ কটমট করে তাকালাম, তাতে কাজ হল না। চাইর কলোনীতে কোনো কাক উড়ে এসেও এটা ওটা ছো মেরে নিয়ে যাবার সময় কেপির চোখকে ফাঁকি দিতে পারে না, আমরাতো কোন ছাড়! কেপির চোখকে ফাঁকি দিয়ে পেয়ারা খাব, এমনটা ভাবাই আমাদের বোকামি হয়েছে। এর পরের অংশ আরো মর্মান্তিক, কামড় আর বসানো গেল না; না আমার, না নোমানের, না কেপি বদমাশটার।
বিরাট আমগাছ, ইয়া মোটা গুড়ি তার; গুড়ির যে পাশে আমরা তার অপর পাশ থেকে ঘুরে এসে সামনে যে দাঁড়ালো, সে সাক্ষাত যম। তার মুখে ঠাণ্ডা হাসি। এমন হাসি দেখেছিলাম গেল সপ্তাহে টিভিতে দেখানো বাংলা সিনেমায় এটিএম শামসুজ্জামান এর মুখে। যমের ডান হাতে ছোট্ট একটি জং ধরে যাওয়া কালচে ছুরি আর বাম হাত পকেটে। আমি আর নোমান চোখ চাওয়াচাওয়ি করলাম, কেপি বেজির মত সুড়ুত করে পালিয়ে গেল ঝোপের আড়ালে; বুঝে নিলাম ভাগ্যে পেয়ারা আর নেই। কিছু বলবার আগেই পকেট থেকে বাম হাত বের করে আমাদের দুজনের মাথায় দুটো বেদম ঠুয়া মারলো খসরু ভাই। ঝোপের আড়াল থেকে হাসির ফোয়ারা ছুটলো। হ্যা, খসরু ভাই আমাদের বন্ধু মহলে এক আতঙ্কের নাম। যমকেও মানুষ এতটা ভয় করে কিনা জানিনা। নোমান ততক্ষণে এত সাধনায় পাওয়া ধন বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করতে দুহাতে ধরা পেয়ারাটি কোমরের পিছন দিকে নিয়ে নিয়েছে। খসরু ভাই কর্কশ গলায় নোমানকে বললো- ল্যাবা, পেয়ারা দে, নাইলে মুন্নিরে যাইয়া কইয়া দিমু। মুন্নি হচ্ছে মাহবুব ভাইয়ের আরেক নাম। চড় থাপ্পরে আমাদের অরুচি নেই, খসরু ভাইয়ের কল্যাণে এসব আমাদের সয়ে গেছে। কিন্তু চুরির অপবাদ আমরা কক্ষনই নিতে পারি না। এই কচি বয়স থেকেই আমাদের আত্মসম্মানবোধ প্রখর। ক্লাস সেভেনে পড়লে কি হবে, আমি আর নোমান সুনীল পড়ি, বুদ্ধদেব গুহের কোজাগর পড়েও এক লাফে পেকে গেছি বেশ খানিকটা। আমাদের মগজের বয়স নাইন কিংবা টেন হবে, কিংবা আরেকটু বেশি। মুন্নি ভাইয়ের বোনটি আমাদের প্রায় সমবয়সী, ওদের বাসায় যদি জানে আমরা ছিঁচকে পেয়ারা চোর তাহলে ওরা বান্ধবীরা আমাদের নিয়ে হাসবে না? মুখ দেখাতে পারবো তখন? সমবয়সী মেয়েগুলো আমাদের দেখে চোর ভেবে মুখ টিপে হাসবে; আমরা তা সহ্য করবো কি করে? রাম সাইজের দুটো চড় খেয়ে আমাদের এত সাধের পেয়ারাটিকে তুলে দিতে হল খসরু ভাইয়ের হাতে। কষ্টে বুক ভেঙ্গে যাচ্ছে আমাদের দুই বন্ধুর। পেয়ারাটি চুরি করবার জন্য গত দুইদিন ধরে আমরা রীতিমত রেকি করেছি গোটা এলাকা, গত দু’রাত ঘুমাতে পারিনি আমরা। খসরু ভাই যম হলেও বেঈমান না, আমাদের হাতে ঈদের চাঁদের মতন চিকন দেখতে দুটো ফালি তুলে দিল, দয়ার সাগর খসরু ভাই কিছুটা ঝাল লবনও লাগিয়ে দিল যার পর নাই পাতলা পেয়ারার ফালি দুটোতে। আমরা ভেউ ভেউ করে কেঁদে ফেললাম। কচকচ শব্দে পেয়ারা চিবাতে চিবাতে খসরু ভাই চলে যাচ্ছিল, হঠাৎ পিছন ফিরে ঝোপের কাছটায় এসে খেকিয়ে উঠলো- কেপি বাইর হইয়া আয়। রনি কোনো শব্দ করলো না। মনে হল ঝোপের আড়ালে ও আর নেই। খসরু ভাই আত্মবিশ্বাস নিয়ে আবার বললো- বাইর হ, কেপি। কোনো শব্দ নেই। খসরু ভাই পকেট থেকে আধামুঠ কাঁচা মুসুরির ডাল বের করে মুখে পুরলো, আবার পকেট থেকে হাত চালিয়ে বের করে আনলো একটা কোকাকোলা টানবার ষ্ট্র। আমাদের কলোনীতে এই অস্ত্রটি খসরু ভাইয়ের হাত ধরেই এসেছে। ঠিক এমন ধরণের অস্ত্র টারজানে দেখেছিলাম জংলীদের মুখে। আমার দাদা খুব বই পড়তেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করে জেনেছিলাম এ ধরণের অস্ত্রের নাম ‘ব্লোগান’। দাদার সব কথা বুঝতাম না। তিনি বলতেন এইযে আমরা মানুষ, এই আমরা নাকি সবসময় এক রকম ছিলাম না; না দেখতে, না চালচলনে, না কাজকর্মে। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে মানুষ নাকি ভিন্নরকম ছিল। সেইসব ভিন্ন ভিন্ন সময়কে আবার ভিন্ন ভিন্ন নামে ভাগ করা হয়েছে। সেরকমই এক সময়ের নাম নাকি ‘প্রস্তরযুগ’, যা নাকি লাখ লাখ বছর আগে শুরু হয়েছিল। দাদার এইসব কথা আমার মাথার উপর দিয়ে যেত। বই পড়ার অভ্যাস হয়ে যাওয়ার কারণে এইসব যে একেবারে বুঝতাম না, তা না; তবে এইসব রসকষহীন বিষয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল না মোটেও। এইসব চুপচাপ বসে শুনলে পরে দাদার কাছ থেকে মাঝে মাঝে চার আনা পেতাম লজেন্স খাওয়ার জন্য। এই ব্যবস্থা না থাকলে দাদা আমাকে কখনই শ্রোতা হিসাবে পেতেন না। দাদা বলেছিলেন এই প্রস্তরযুগ থেকেই নাকি ব্লোগান অস্ত্রের চল ছিল; কিন্তু সময় আর প্রয়োজনের খাতিরে এই অস্ত্র বিভিন্ন জঙ্গলে জংলী মানুষদের হাতে বিভিন্নরুপে দেখা গেছে। শুরুতে বাঁশের ছোট চোঙ্গা তৈরি করে তাতে ছোট ছোট জংলা ফল-ফুলের বীচি ভরে প্রচণ্ড জোড়ে শ্বাস ছেড়ে পাখি কিংবা অন্য কোনো ছোট জন্তু শিকার করা হত। আরো পরে যুদ্ধ আর শিকারের প্রয়োজনে এইসব অস্ত্র বড় আকারে তৈরি হয়েছে, তাতে হালকা চোখা শলাকা ছুড়বার ব্যবস্থা ছিল, যা গেথে যেত মানুষ কিংবা কোনো জন্তুর শরীরে। বুক অথবা পেট ভরে জোরে শ্বাস ছাড়লে তার গতি নাকি অনেক। দাদার কিছু কিছু কথা না বুঝলেও মুখস্ত রাখতে হত, নইলে পরের বার চার আনা পাওয়া যেত না সহজে। সময়ের হাত ধরেই খসরু ভাইয়ের এই অস্ত্র রুপ নিয়েছে ষ্ট্র আর মুসুরির ডালে; তাতে শরীর ছিঁড়ে রক্ত বের না হলেও জ্বলুনির চোটে চোখের পানি নাকের পানি এক হয়ে যায়। ঝোপের মধ্যে কয়েকটি পাতা ফুটো হয়ে গেল, বাবাগো, মাগো বলে শরীর ডলতে ডলতে ঝোপের আড়াল থেকে বেরিয়ে এলো কেপি। খসরু ভাই ওর হাতেও এক ফালি চাঁদ দিয়ে উল্টো রাস্তা ধরলো। কোনো অপকর্মে বিপক্ষের কাউকে সাক্ষী রাখতে নেই, আর ধরা পড়লেও তার মুখ যেন বন্ধ থাকে সে ব্যবস্থা করা যে কত জরুরী তা সেদিন খসরু ভাই আমাদের কাগজে কলমে বুঝিয়ে দিয়ে গেল, আমরাও গুরুর তালিম নিলাম। আমরা তিনজন অসহায়ের মত তাকিয়ে রইলাম তার চলে যাওয়ার দিকে আর শুনতে পেলাম পেয়ারা চাবানোর কচকচ শব্দ।
যারা ভাবছেন এই ঝড়ঝাপটার মাঝে আর কেউ যখন মাঠে ছিল না তখন কি করে খসরু ভাই আমাদের পেয়ারা চুরি করতে দেখলো, কি করে ঠিকঠাক বুঝে নিল পেয়ারা নিয়ে আমরা আম গাছের গোঁড়ায় গিয়েই দাঁড়াবো, সেই পেয়ারা কাটবার প্রয়োজন পড়বে আর সে কারণে তার সঙ্গে থাকা ছুরি, এমনকি প্রজাপতি মার্কা দিয়াশলাইয়ের বাক্সে ঘর থেকে তৈরি করা লাল মরিচের গুড়ো আর লবন একত্র করে নিয়ে আসা, ভীষণ প্রয়োজন মোকাবিলায় ব্লোগান সঙ্গে রাখা- এই সবই গাঁজাখুরি গপ্প, কিংবা কাকতাল; তারা খসরু ভাইকে সত্যিই চেনেননা, তাকে কোনোদিন দেখেননি। আমি নিশ্চিত আমরা যখন গত দুদিন ধরে পেয়ারা আর আমগাছতলা রেকি করছিলাম তখন থেকেই খসরু ভাই হাড়েহাড়ে জানতো কি হতে যাচ্ছে। আমাদের দক্ষতার উপরও তার ভরসা ছিল অগাধ, তাই ছুরি লবন সব তৈরিই ছিল তার সঙ্গে।এই দৃশ্যপটে কেপির আবির্ভাব ঘটবে আর সেই বিচ্ছুপনাকে প্রতিহত করতে মুসুরির ডাল এবং ষ্ট্রর প্রয়োজন পড়বে, তাও জানা ছিল তার। তাছাড়া আমার ধারণা তার মাঝে কোনো বুজরুকি ক্ষমতা আছে। সে আমাদের মনের কথা বিশেষ করে যেটি কুটিল সেটি আমরা নিজেরাই জানবার অনেক আগে জেনে যায়, অথচ তার কার্যকলাপ কেউ কখনও টের পায়না। তিন বছর ধরে এই কলোনীতে আছি। এই তিন বছরে যতবার তাকে দেখেছি ততবারই তাকে নতুন করে আবিস্কার করেছি। কিরীটী রায়, ব্যোমকেশ কিংবা ফেলুদা বলতে গেলে নেহাত শিশু এই খসরু ভাইয়ের গোয়েন্দাগিরির তুলনায়; আর যখন আমাদের আমটায়, পেয়ারাটায়, ঝালমুড়িটায় অন্যায্য ভাগ বসায় তখন মনে হয় খসরু ভাইই বুঝি পটলডাঙ্গার সেই টেনিদা।
(চলবে)
প্রথম পর্বের লিঙ্ক- http://www.sachalayatan.com/yaseen/56055
মন্তব্য
চলুক, ভালো লাগছে। (হাসি টাসির ইমো আশে পাশে দেখছিনা, নতুন বাজেটে কি এই ইমোটিকন গুলোর উপরও ভ্যাট বসেছে?)
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
ধন্যবাদ
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
নতুন মন্তব্য করুন