আটপৌরে ঘোরাঘুরি ২ - রোন গ্লেসিয়ার এবং গ্রিমসেল পাস

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি
লিখেছেন ইয়াসির আরাফাত [অতিথি] (তারিখ: সোম, ০৭/১০/২০১৩ - ৬:০৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমরা লেক জেনেভার উত্তর তীরে থাকি। জায়গাটা অর্ধচন্দ্রাকৃতি লেকের ঠিক মাঝামাঝি, পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে অতি বিখ্যাত জেনেভা শহর, পূর্ব প্রান্তে মন্ট্রু (এটা আমার বাঙালি উচ্চারণ, আমার ফ্রেঞ্চ কলিগের উচ্চারণে, MONTREUX = মনথখ্রো)। দক্ষিণ দিক বাদ দিয়ে আমার বাসার তিনদিকে পঞ্চাশ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের সব এলাকা মোটামুটি ঘুরে ফেলেছি, কখনো গ্রীষ্মে, কখনো শীতে। আজকাল আর তাই সহজে মন ভরে না, ইচ্ছে করে দূরে দূরান্তে যেতে।

লোকেশন বাছাই করতে আমার সবচেয়ে প্রিয় এবং কার্যকর সঙ্গী গুগল ম্যাপস। অসাধারণ এই অ্যাপ্লিকেশনের জন্য গুগলকে আমি সকাল বিকাল ধন্যবাদ জানাই। অফিসের বিরক্তিকর মিটিংগুলোতে সুযোগ পেলেই ম্যাপ খুলে বসে থাকি, আর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এদিক সেদিক দেখি।

30-09-2013 12-36-04

ছবি ০ – যেখানে যেতে চাই

বেশ কিছুদিন ধরে আমার নজর কেড়েছিলো পাহাড়ি একটা এলাকা। রাস্তা ঘুরে ঘুরে ওপরে উঠে গেছে এটা দেখতে কেন জানি বেশ রোমাঞ্চকর লাগে। এখানে ম্যাপের গায়ে সেইরকম অনেকগুলো ভাঁজ দেখা যাচ্ছে। গত পর্বে লিখেছিলাম ইয়ুংফ্রাউইয়োকের কথা। এটা তার পূর্ব দিকে, আমার বাসস্থান থেকে সোয়া দু’শো কিমি দূরে। ওপরের ছবিতে দেখে যা মনে হচ্ছে, জায়গাটা ঠিক তাই, বেশ দুর্গম (!) এবং উঁচু, চারিদিকের সবুজের মাঝখানে নিজের সাদা রঙ নিয়ে সগর্বে দণ্ডায়মান। চার চারটা গিরিপথ বা পাস কিছু পর্বতকে চক্রাকারে ঘিরে রেখেছে, দৈর্ঘ্যে মোটামুটি একশ বিশ কিলোমিটার। এরকম একটা জায়গা ঘরের কোণে পড়ে আছে ভাবা যায়? গুগল বলছে পুরোটা একবার ঘুরে আসতে মাত্র দুই ঘণ্টারও কম সময় লাগবে। একটু আগে দুর্গমের পাশে আশ্চর্যবোধক চিহ্ন এজন্যই দিয়েছি। সুইসরা তাদের বেশিরভাগ এলাকাকে এমনভাবে পোষ মানিয়ে ফেলেছে, কোনকিছুকেই আর অগম্য বলার উপায় নেই। যেখানেই যাওয়া যাক না কেন, যত উঁচুতেই ওঠা হোক না কেন, রাস্তা কিংবা রেললাইন অথবা বিকল্প যান (কেবল কার, ফানিকিউলার, চেয়ারলিফট ইত্যাদি) একটা কিছু পাওয়া যাবেই।

ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে দেখি, এটা মোটামুটি বিখ্যাত এলাকা, সুইজারল্যান্ড এবং ফ্রান্সের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া রোন নদীর জন্ম এই চক্রের কেন্দ্রে থাকা রোন গ্লেসিয়ার থেকেই। মনে পড়ে গেল জনাব মাহমুদ জেনেভা কর্তৃক রচিত এই লেখাটির কথা। এটা পড়ে রোন গ্লেসিয়ার দেখার একটা তীব্র ইচ্ছে হয়েছিল, এবার সেটি এক নতুন মাত্রা পেলো। রথ দেখা কলা বেচা দুটোই মনে হচ্ছে হয়ে যাবে এই যাত্রায়।

গাড়ি নিয়ে যাব, কাজেই এবার টাইমটেবল নিয়ে ভাবনা নেই। একসময় গেলেই হল। তবে গ্রীষ্মকাল ফুরিয়ে আসছে, আজকাল সাড়ে সাতটা বাজতেই ঝপ করে সন্ধ্যা নেমে পড়তে চায়, বেশি দেরী করা ঠিক হবে না।

বিভিন্ন ঝামেলা চুকিয়ে বেরোতে অবশ্য পৌনে বারোটা বেজে গেল। যাত্রার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই বাচ্চারা কিঞ্চিৎ বিরক্ত হয়ে উঠলে হাইওয়ের পাশে একটা পেট্রল স্টেশনে গাড়ি থামালাম। গাড়ি পার্ক করে দশ কদম সামনে এগোতেই সুন্দর একটা জলাশয় ভেসে উঠল চোখের সামনে। সবুজাভ স্বচ্ছ জলে মাছেরা ঘোরাঘুরি করছে দেখে আমরা এতই মুগ্ধ হয়ে উঠলাম যে মনে হলো আজ আর বেশি দূরে গিয়ে কাজ নেই, এখানেই থেকে যাই। ঘন্টাদেড়েক এখানে কাটাবার পরে মুগ্ধতা কিছু কমে এলে আবার রোন গ্লেসিয়ারের পথে উঠে গেলাম। গিয়েই ছাড়ব আজকে। পৌঁছাতে বিকেল পাঁচটা বেজে যাবে, কি আর করা!

IMG_6685

ছবি ১ – মুগ্ধতার লেক

IMG_6686

ছবি ২ – লেকের অন্যপাশে ওয়াইল্ড ওয়েস্টের থীমে একটা অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, নাম ওয়েস্টার্ন সিটি। সময় ছিলো না ভেতরে যাবার, অন্য কোন দিন আসা যাবে।

IMG_6687

ছবি ৩ – ওয়েস্টার্ন সিটিতে যাবার সাঁকো

IMG_6666

ছবি ৪ – পান্নাসবুজ পানিতে মাছেদের ঘোরাঘুরি। শাটার স্পীড কম থাকলে মাছ আসে না, তাই ছবিটা একটু অনুজ্জ্বল।

আমাদের যাত্রাপথে পরবর্তী উল্লেখযোগ্য শহর হচ্ছে ব্রিগ। ইটালির সীমান্তে অবস্থিত এই শহর থেকেই মুলতঃ রোন নদী ফুলে ফেঁপে উঠেছে আশেপাশের পাহাড়ের বরফ গলা পানিতে, তার আগে আগে এটা বড়সড় পাহাড়ী ঝর্ণা ছাড়া আর কিছুই নয়। ব্রিগ থেকে দক্ষিণে মিলানের দিকে চলে গেছে বিখ্যাত সিমপ্লন পাস, যেটার গল্প আরেকদিন হয়তো বলব, এই পথে আমরা গেছি তিন চার বার। আর উত্তর পূর্ব দিকে চলে গেছে ফুরকা পাস, যেটা রোন গ্লেসিয়ারের কাছাকাছি গ্রিমসেল পাসে গিয়ে মিশেছে। ফুরকা পাস (২৪২৭ মি), গ্রিমসেল পাস (২১৬৫ মি), সাস্টেন পাস (২২২৪ মি) আর সেইন্ট গোথার্ড পাস (২১০৬ মি) এই চার গিরিপথবন্ধু হাত ধরাধরি করে ঘিরে রেখেছে আল্পসের একটা অংশকে, যার কথা আগেই বলেছি।

ব্রিগ থেকেই মোটামুটি রাস্তা একটানা ওপরে ওঠা শুরু করেছে। মাঝে একটা জায়গা অনেকখানি সমতল, সেখানে দেখলাম বেশ কিছু শহর গড়ে উঠেছে একটু পরপর, আর এদিক সেদিক ছোট ছোট গ্রাম তো আছেই। বাড়িগুলো বেশিরভাগই কাঠের, বারান্দা আর জানালা রং বেরংয়ের ফুল দিয়ে সাজানো। রাস্তার দুই পাশে উঁচু উঁচু সব পাহাড়, গাছপালা দিয়ে ভরা, সবুজের এমন কোন শেড বেই, যা এখানে পাওয়া যাবে না। শরৎকাল চলে আসাতে কিছু গাছের পাতায় রঙ ধরেছে, সামনে তা আরো ভয়ংকর সুন্দর রূপ নেবে। যেসব পাহাড় অংশতঃ ন্যাড়া, সেগুলো থেকে মাঝে মাঝেই ক্ষীণ থেকে মাঝারি ধারায় বেরিয়ে আসা ঝর্ণার দেখা পাওয়া যাচ্ছে। সব দেখে মনে হয়, আহা! পৃথিবীতে স্বর্গ বলে যদি কিছু থেকে থাকে তো সেটা এখানেই।

IMG_6744

ছবি ৫ – ব্রিগ যাবার পথ, গাছ আর ফসলী ক্ষেতের সমারোহ চারদিকে

IMG_6764

ছবি ৬ – ব্রিগের পরে পাহাড়ী ঝর্ণা

IMG_6771

ছবি ৭ – পথের একপাশে সুইস গ্রাম, প্রত্যন্ত বলে সুবিধাবঞ্চিত নয় মোটেই। বিদ্যুৎ আছে, পাকা সড়ক আছে, নিশ্চিতভাবে বিদ্যালয় এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা আছে। আর চারপাশে অদ্ভুত সুন্দর প্রকৃতি তো আছেই। নাগরিক সুবিধাগুলি এমনভাবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আয়োজন করা থাকে যে, সুইজারল্যান্ডের যে কোন অংশে একই মানের জীবনযাপন করা সম্ভব। ঈর্ষান্বিত না হয়ে পারা যায় না। আমাদের দেশে কি কখনো এমন সাম্যাবস্থা আসবে?

IMG_6781

ছবি ৮ – ফুরকা পাস এখানে সমতল। মাঝারি গতিতে আমরা ছুটে চলেছি গন্তব্যের দিকে (দূরে, ঐ পাহাড়সারির পেছনে কোথাও)

IMG_6786

ছবি ৯ – গ্রাম, নাকি শহর?

IMG_6790

ছবি ১০ – গ্লেসিয়ারে যাবার আগে শেষ বড় শহর মুয়েনস্টার গেশিনেন।

IMG_6795

ছবি ১১ – বাড়িগুলো সব ফুলে ফুলে শোভিত

IMG_6797

ছবি ১২ – জনৈক ব্যক্তি তার আহত ঘোড়াকে কাঁধে করে দুর্গম পথে চলেছে। নিশ্চয়ই কোন সাহসী বীরপুরুষের স্মরণে এই ভাস্কর্য। চলন্ত গাড়ি থেকে একটার বেশি স্ন্যাপ নেয়া সম্ভব হয় নি। আমাদের অবশ্য তাড়াও ছিলো।

IMG_6801

ছবি ১৩ – ছোট্ট শহর ওবারগমস। এখান থেকে গাড়ি ট্রেনে তুলে ফুরকাকে বাইপাস করা যায় একটা লম্বা টানেলের মাধ্যমে। আমাদের সে ইচ্ছে নেই মোটেই............

IMG_6818

ছবি ১৪ – ওবারগমস পার হবার পরেই আবার পাহাড়ী আঁকাবাঁকা রাস্তা শুরু হয়ে গেছে। দুই তিনটা বাঁক ঘোরার পরে চোখের সামনে যে দৃশ্য ভেসে উঠল সেটাকে আমার ক্লান্ত মস্তিষ্ক প্রথমে চিনতে পারেনি একেবারেই। ম্যাপে দেখা গ্রিমসেল পাস এখন চোখের সামনে। একটা পাহাড় বেয়েই প্রায় খাড়া উঠে গেছে একেবেঁকে। আরো কিছুক্ষণ এখানে দাঁড়াবার ইচ্ছা ছিলো। দুই পাহাড়ের মাঝে সরু প্যাসেজ দিয়ে এমন হুড়হুড় করে ঠাণ্ডা বাতাস বইছে, টেকা গেলো না।

IMG_6822

ছবি ১৫ – ফেলে আসা পথ। রেললাইন সহ এই টানেলটি এখন পরিত্যক্ত। ওবারগমসের টানেল হবার আগে এখান দিয়েই ট্রেন চলাচল করত।

IMG_6825

ছবি ১৬ – গ্রিমসেল পাস এবং ফুরকা পাস এসে মিশেছে গ্লাতচ গ্রামে। সেখান থেকে ডানে ঘুরতেই উন্মুক্ত হল ফুরকা পাসের উঁচু অংশ। এবার আর চিনতে ভুল হয় নি। দূরে দেখা যাচ্ছে বেলভেডেয়ার হোটেল, যেটার গোড়ায় রোন গ্লেসিয়ারের বর্তমান অবস্থান

IMG_6830

ছবি ১৬ক – আরেকটু কাছে থেকে তোলা ছবি দেয়ার লোভ সামলানো গেলো না

IMG_6835

ছবি ১৭ – রাস্তা একশো আশি ডিগ্রী ঘুরে যাওয়ায় গ্রিমসেল পাস ডানে চলে এসেছে।

IMG_6837

ছবি ১৮ – আবারো লোভ

IMG_6847

ছবি ১৯ – একটা টিপিক্যাল বাঁক। রাস্তাগুলো যে এতো খাড়া উঠে গেছে, পাশে থেকে না দেখলে বোঝা যায় না

IMG_6848

ছবি ২০ – আর মাত্র দুইটা বাঁক ঘুরলেই গন্তব্য

IMG_6866

ছবি ২১ – পৌঁছে গেছি। নীচে দেখা যাচ্ছে ফুরকা আর গ্রিমসেল পাস, মাঝে তীরবেগে বয়ে যাওয়া রোন নদী। দূরে হামাগুড়ি দেয়ার মত করে ভেসে ভেসে এগিয়ে আসছে গাঢ় সাদা একটা মেঘ। আমি প্রায় চিমটি কেটেই ফেলেছিলাম হাতে। স্বপ্ন দেখছি নাকি?

IMG_6873

ছবি ২২ – কি আশ্চর্য! একটা মারমট। দুই পায়ে ভর দিয়ে মিনতি জানাচ্ছে এর তার কাছে, যদি কিছু খাবার পাওয়া যায়। এই ভদ্রমহিলা বিস্কুট দিয়েছিলেন।

IMG_6874

ছবি ২৩ – এবার একজনের পা চেপে ধরেছে বজ্জাতটা। কিছু পাবে না বোধহয়। ভদ্রলোকের কাছে কোন খাবার নেই।

IMG_6878

ছবি ২৪ – আজব দেশ, এখানে পার্কিং লটেও ঝর্ণা মেলে

IMG_6888

ছবি ২৫ – নদীর ধারা এখান থেকে শুরু, কিভাবে ছবি তুললে পানির প্রবাহটা ঠিকমতো আসতো বুঝতে পারি নি। কারো বিশেষজ্ঞ মন্তব্য পাওয়া গেলে খুশি হই।

IMG_6891

ছবি ২৬ – উৎস থেকে শুরু করে গ্লাতচ পর্যন্ত রোনের প্রবাহ

IMG_6894

ছবি ২৭– এই ক্ষুদ্রাকৃতি হ্রদ থেকেই পানি গড়িয়ে পড়ছে। পানির ওপরে ভাসছে বিশালকায় বরফের চাঁই। গ্লেসিয়ার অবশ্য দেখা যাচ্ছে না। সেটা একটু আড়ালে

IMG_6896

ছবি ২৮ – গ্লেসিয়ারের ওপরিভাগ। পতাকা ওড়ানো ওই অবজার্ভেশন এরিয়ায় গেলে দেখা যাবে শেষ প্রান্তটি। অবশ্যই নির্ধারিত ফি সাত ফ্রাঁ এর বিনিময়ে।

IMG_6926

ছবি ২৯ – অবজার্ভেশন এরিয়ায় যাবার কোন ইচ্ছে দেখা যাচ্ছে না পুত্রের ভেতর। ক্রমাগত ডাকাডাকি অগ্রাহ্য করে প্রিয় চকোলেট চিপস বিস্কুট খাচ্ছে আনমনে। পেছনে স্যুভেনির শপ।

IMG_6943

ছবি ৩০ – অবশেষে দেখা মিলল গলন্ত গ্লেসিয়ারের। বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে নীচে যাওয়া সম্ভব নয় বলে দূর থেকে দেখেই মন ভরাতে হলো

IMG_6945

ছবি ৩১ – এইবারে পুরো গ্লেসিয়ার দেখা যাচ্ছে। নীচে ক্যানভাস দিয়ে ঢাকা এলাকাটার নীচে আছে গ্লেসিয়ার খুঁড়ে বানানো টানেল, সামনের দিকে কাঠের সাঁকো। আগ্রহীরা ইচ্ছে করলে ভেতরে গিয়ে দেখে আসতে পারে।

IMG_6971

ছবি ৩২ – ফেরার পথে রোনের পাহাড়ী অংশের একটা ক্লোজ আপ। এটি সহ বেশিরভাগ ছবির ফটো ক্রেডিট আমার স্ত্রীর। কাঁচা ড্রাইভার বলে গাড়ি চালাবার সময় আমাকে স্ট্রিক্টলি রাস্তার দিকে চোখ রাখতে হয়, এই সময়টায় আমার চোখের কাজ করে তার হাতের ক্যামেরাটি।

খুব দ্রুত সন্ধ্যা নেমে আসছে, আমাদেরকে ফিরতে হবে। যে পরিকল্পনা করে এসেছিলাম তার কিছুটা মাত্র করা হয়েছে, চারটি পাস ঘুরে আসা আজকে মোটামুটি অসম্ভব। কিন্তু একটি কাজ অন্ততঃ করা যায়। আবার ব্রিগের পথে না গিয়ে গ্রিমসেল পাস দিয়ে ফেরা যায় ইন্টারলাকেন হয়ে। সময় একটু বেশি লাগবে, তা লাগুক। নতুন জায়গা দেখা তো হবে!

গ্রিমসেল পাসের গল্প আসছে পরের পর্বে, অবশ্য একেবারেই ছোট আকারে।

(কিছু ছবিতে সূর্যের আলো, গাড়ির কাঁচে লেগে থাকা ময়লা ইত্যাদি অনাকাঙ্ক্ষিত দাগ দেখা যাচ্ছে। পোস্ট লেখকের ফটো এডিটিংয়ের জ্ঞানশূন্যতাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবার আবদার রাখা গেলো)


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

এভাবে লোভ বিলানোর জন্য আপনাকে মাইনাস । মন খারাপ
এত সব দুর্দান্ত ছবি আর প্রাঞ্জল বর্ণনার জন্য অবশ্য পরে প্লাস দিলাম । আরও কোন সুন্দর জায়গায় যান আর তাড়াতাড়ি পোস্ট দেন । অসহ্য সুন্দর আমার পৃথিবী !!!

জেসমিন পলাশ ।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

প্রশংসার জন্য ধন্যবাদ জেসমিন পলাশ। লেখা আসবে, তবে হয়ত নীড়পাতার প্রত্যেক পাতায় নয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

গ্রিমসেল পাসের ছবি ইন্টারনেটে দেখেছি বিভিন্নভাবে, এতো কাছ থেকে ছবি অবশ্য দেখা হয়নি। অসাধারণ লাগলো পুরো পোষ্টটা, বিশেষ করে ছবির সাথে খুব সুন্দর করে বর্ণনা করা দেখে। আর ছবিগুলোও খারাপ আসেনি আপনি যেভাবে বলছেন।

আর এতো কিছুর মধ্যে ওই মারমটের খাবার চাওয়াটা দেখে অবাক হয়েছি। কিন্তু প্রশ্ন হল ওই ব্যাটা এতো লোকের মধ্যে আসলো কোথা থেকে? ক্যামনে পা চেপে ধরতে হয় তাও জানে, এই ব্যাটা তো দেখি বড়ই চালাক!! দেঁতো হাসি

-নিহাদ-

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

মারমটরা পাহাড়ী প্রাণী, তারপর আবার উঁচু জায়গা পছন্দ করে। বেলভেডেয়ার তাদের জন্য চমৎকার বাসস্থান সন্দেহ নেই। আমার মনে হয়, এটা কারো পোষা

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি রথও দেখলেন কলা ও বেচলেন।
আমি দুধের স্বাদ(রোন গ্লেসিয়ার) ঘোলে(ছবি দেখে)মেটালাম। হাসি চলুক

-ছায়াবৃত্ত

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ধন্যবাদ ছায়াবৃত্ত। ঐদিন অল্প কয়েক ঘন্টায় অনেক কিছু দেখেছি বটে।

গান্ধর্বী এর ছবি

চলুক উফ এত সুন্দর সব ছবি! লোভ লাগছে খুব!

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ গান্ধর্বী

নীলকমলিনী এর ছবি

কবে যে যাবো ? এই বছর প্ল্যান ছিলো, স্বামীর কাজের ঝামেলায় হল না। আগামী বছর চেস্টা করব। সামারেই শুধু যেতে চাই, আর সামার এত ছোট, দেখতে দেখতে ফুরিয়ে যায়। আপনার লেখা থেকে অনেক কিছু জানছি, গেলে কাজে দেবে। ধন্যবাদ সুন্দর ছবিসহ লেখাটির জন্য।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ দিদি। কষ্ট করে আমাকে একটা মেইল দিয়েন

এ। আমি বাকি সব ডিটেইল জেনে নেবো আপনার কাছ থেকে।

এখানে সামার খুব একটা ছোট নয়। মে থেকে সেপ্টেম্বর পুরোটাকেই সামার ধরে নিতে পারেন। যদিও জুন জুলাইয়ে আঠারো উনিশ ঘন্টা আলো পাবেন, এত সময় আসলে ঘোরা হয়ে ওঠে না।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

বাহ্, কী সুন্দর সব জায়গা আর দারুণ সব ছবি !

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

প্রশংসা মাথা পেতে নিলাম এবং পুরোটাই আমাদের ফটোগ্রাফারকে দিয়ে দিলাম হাসি

চরম উদাস এর ছবি

চলুক
দারুণ

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ঘুরতে চলে আসেন, একসাথে ট্যুর দেয়া যাবে

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ডুপ্লি ঘ্যাচাং

কড়িকাঠুরে এর ছবি

কিছু ছবি দেখে তো চকলেট চকলেট লাগলো পুরোটাই। ঘরবাড়ি, পাহাড়, ঘাস, গ্লেসিয়ার- খাইয়া ফেলতে পারলে আরাম পাইতাম খাইছে , চার্লি এন্ড দ্য চকলেট ফ্যাক্টরীর মত।

চলুক

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

এইভাবে তো ভাবি নাই। চকলেটই বটে! চলুক

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ডুপ্লি ঘ্যাচাং

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

বাক রহিত!!! ভাই, তারেকাণুর কথা বাদই দিলাম, সে একটা মূর্তিমান অভিশাপ। কিন্তু আপনি, জিপসি আর রাজু ভাই মিলে যা শুরু করেছেন তাতে করে ঘরে বসে থাকা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে! তবে ধন্যবাদ আপনাকে - আপনার ইয়ুংফ্রাউইয়োকের গল্প আমার ছেলের কাছে এতই ইন্টারেস্টিং লেগেছে যে সে ঘোষণা করে বসেছে সে বড় হলে আরেকটা ইয়ুংফ্রাউইয়োক বানাবে বাংলাদেশে, বাংলাদেশের মানুষদের জন্য!!

ছবি ৭ দেখে ধন্দে পড়ে গেলাম - কবিগুরু বাংলার গ্রমের কথা বলেছিলেন, নাকি এই গ্রামের কথা বলেছিলেন - ছায়া সুনিবীড় শান্তির নীড়। প্রকৃতির কোলে বসে আধুনিক নাগরিক জীবনের সব সুবিধা উপভোগ করা গেলে তার থেকে বড় শান্তি আর কী হতে পারে?

সমতলের মানুষ, তাই মাটি একটু উঁচু হলেই মনে হয় আরিব্বাসরে কী হতে যাচ্ছে! সেখানে এই পাহাড় দেখে কী মনে হয় বলাই বাহুল্য। তবে সবচেয়ে বেশী যে জিনিসটা মনে হচ্ছে তা হলো - শহর, অথচ হাইরাইজ বিল্ডিং নেই! কী দারুণ, কী দারুণ!

____________________________

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

আপনি দেশে থাকেন নাকি বিদেশ? দেশে থাকলে এলোমেলো না ঘোরাই লাভজনক, বেঘোরে প্রাণ হারানোর সম্ভাবনা অনেক কম তাতে। বিদেশ থাকলে আমার প্রশ্ন, ঘরে বসে থাকবেন কেন? নির্বিঘ্নে ঘোরার এমন সুযোগ কেউ ছাড়ে নাকি? তেলের দাম কম থাকতে থাকতে যত পারেন ঘুরে নেন। উইকেন্ড ফুইকেন্ড কিছুই বাদ দিয়েন না।

আপনার পুত্রকে আমার আগাম অভিনন্দন জানাবেন। ছোটবেলার স্বপ্নগুলো মানুষ সবসময় পূরণ করতে চায়, সে বড় কিছু একটা করে ফেলবে দেশের জন্য, আমি নিশ্চিত।

পাহাড়ের গায়ে গ্রামগুলো দেখলে আটোমেটিক্যালি মুখে চলে আসে, আহা! আহা! আহা! আর কোন শব্দ মনেই আসে না তখন।

ভালো থাকবেন। আশা করি পরের পর্বগুলো আপনার আনন্দের খোরাক যোগাবে আরও

এক লহমা এর ছবি

যেমন লেখা, তেমন ছবি। আহা! এইরকম-ই ঘুরতে থাকুন আর পোস্ট করতে থাকুন। পরের পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম।
আপনার পুত্রের অবস্থা দেখে আমার কন্যা যখন ঐ বয়সে ছিল সেই সব দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেল। একই অভিজ্ঞতা ছিল আমারও। হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ এক লহমা। সেইসব সোনাঝরা দিনগুলি নিয়ে কিছু পোস্ট কি আমরা পেতে পারি না? হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব সুন্দর চলুক চলুক চলুক
ইসরাত

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ইসরাত

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।