মাটারহর্ন, মন্তে সারভিনো কিংবা মুঁ স্যারভাঁ, তিনটি নাম আছে তার। সুইস ইটালিয়ান সীমান্তে যারমাট শহরের কাছে অবস্থিত আল্পসের অন্যতম উঁচু পর্বতশৃঙ্গ, বড়ই রহস্যময়। উচ্চতায় পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টের অর্ধেকের কিছু বেশি, কিন্তু তার খ্যাতি বা কুখ্যাতি অন্য জায়গায়। লোকে তাকে চেনে কিলার মাউন্টেন হিসেবে, ১৮৬৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত পাঁচশোর বেশি পর্বতারোহী মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছেন একে জয় করতে গিয়ে। তবু মানুষের আকর্ষণ কমে না। প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ তার কাছে ছুটে যায়, মুগ্ধ হয়, রোমাঞ্চিত হয়, বেদনার্ত হয়।
বেড়াতে যাবার আগে এর খোঁজ খবর করছিলাম। উইকিতে দেখি, অত্যন্ত অসাধারণ এক গল্প জড়িয়ে আছে মাটারহর্ন বিজয়কে ঘিরে। মানুষের অধ্যবসায়, প্রচেষ্টা, নীচতা, অসাবধানতা অনেক কিছু মিলে কাহিনীটাকে হৃদয়ে দীর্ঘস্থায়ী দাগ কেটে দেবার মত ধারালো করে তুলেছে। গল্পটা সবাইকে শোনাতে ইচ্ছে হলো। শুধু উইকির লিঙ্ক দিয়ে দিতে পারতাম, পাঠকেরা নিজ দায়িত্বে পড়ে নিতে পারতেন। মন ভরল না। সময় নিয়ে অনুবাদ করে ফেললাম লেখাটা। উইকির কপি পেস্ট লেখা হিসেবে মডুদের হাতে কাটা পড়বে কিনা জানি না। নীচে বিস্তারিত দেখুন
১৮৬০ সন ইং, গ্রীষ্মকাল। এডওয়ার্ড উইম্পার প্রথমবারের মত মাটারহর্নের দেখা পেলেন। উইম্পার একজন ইংরেজ চিত্রকর কাম খোদাইশিল্পী, লন্ডনের এক প্রকাশনা সংস্থা তাকে চুক্তিবদ্ধ করেছে। মিশন অতি সাধারণ, যারমাট থেকে মাটারহর্নের কিছু স্কেচ একে নিয়ে যেতে হবে। মাটারহর্ন তখন পর্যন্ত মানুষের কাছে অধরা থেকে গেছে। ইংরেজ পর্বতারোহীদের মাঝে একে নিয়ে নানারকম গল্প চালু আছে, কিছু খারাপ কিছু ভালো, কিন্তু উইম্পারের মন থেকে সব নিমিষে মুছে গেল, তিনি শুধু রোমাঞ্চিত হতে লাগলেন। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন, মাটারহর্নকে জয় করবেন।
১৮৬১ সালে কিছু প্রস্তুতি নিয়ে ফিরে এলেন ইটালির ব্রুইল গ্রামে। নীচ থেকে দেখলে দক্ষিণ দিকটাকেই সবচেয়ে সহজ আর সম্ভাবনাময় মনে হয়, কাজেই এটাকেই টার্গেট করলেন। সুইস একজন গাইডকে সাথে নিয়ে ওঠা শুরু করবেন, পরিচয় হলো জাঁ আঁতোয়ান কারেল আর তার চাচার সাথে। কারেল নামে ফরাসী হলেও ইটালির নাগরিক, ইতিমধ্যেই কয়েকবার চেষ্টা করে ফেলেছেন মাটারহর্ণে ওঠার, সে নতি স্বীকার করে নি। হাল ছেড়ে দিতে রাজি নন, আবার চেষ্টা করছেন।
দুই দল পাহাড়ের গোড়ায় একসাথে ক্যাম্প ফেলল। উইম্পার হয়ত ভেবেছিলেন, ভালোই হলো, একসাথে যাওয়া যাবে। কারেল এর মনে ছিলো অন্যরকম ভাবনা। কোথাকার কোন বিদেশী এসে তার এতদিনের চেষ্টা আর সম্ভাব্য কৃতিত্বে ভাগ বসাবে, এটা মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই পরদিন খুব ভোরে উঠে চাচাকে নিয়ে ওপর দিকে রওনা দিলেন, উইম্পার আর তার গাইডকে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে। উইম্পার জেগে উঠে যা বোঝার বুঝে নিলেন, তড়িঘড়ি করে ছুট লাগালেন কারেলকে ধরে ফেলে পেছনে ফেলবার আশায়, কিন্তু ভয়ানক সব বাধার কারণে বারবার আটকে গেলেন। কারেল কি পথ খুঁজে পেয়েছিলেন? নাহ, তিনিও একই সব বাধায় আটকা পড়েছিলেন, একসময় চাচা ভাতিজাকে আগের কয়েকবারের মতোই ফিরে আসতে হয় নীচের দিকে।
দিন যায়। উইম্পার ছক কষেন কিভাবে বেয়াড়া চূড়াটাকে বাগে আনা যায়। ১৮৬২ সনে কয়েকবার চেষ্টাও করেন। প্রত্যেকবারেই দক্ষিণ দিক থেকে, লায়ন রিজের ওপর দিয়ে। নীচ থেকে দেখলে চূড়ার উত্তর দিকের হোয়ের্নলি রিজকে তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি দুর্গম মনে হয়, তাই তিনি বারবার লায়ন রিজ বেয়ে ওঠার চেষ্টা করছিলেন। সর্বোচ্চ ৪০০০ মিটার পর্যন্ত উঠতে পারেন একবার, কিন্তু নেমে ব্রুইল গ্রামে ফেরত আসার পথে আহত হন।
উইম্পার একাই মাটারহর্নকে বিজয়ের চেষ্টা করছিলেন না। একই বছর জুলাই মাসে জন টিনডাল, সঙ্গী ইয়োহান ইয়োসেফ বেনেন এবং তাদের গাইড বেশিরভাগ বাধা পেরিয়ে শিখরের প্রায় কাছাকাছি চলে আসেন। তাদের সমস্ত প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দেবার জন্য একটি গভীর ফাটল লুকিয়ে ছিলো, যেটাকে তারা অতিক্রম করতে পারলেন না। মাটারহর্ন তার চূড়াকে ছুঁতে দিলো না।
উইম্পার এতকিছুর পরও হাল ছেড়ে দেন নি। ১৮৬৩ সালে ব্রুইল গ্রামে ফেরত এলেন আবারও। কারেলকে খুঁজে বের করলেন, অনুরোধ করলেন তার গাইড হবার জন্য। কারেল রাজী হয়েছিলেন। দুইজনে মিলে পর্বতের মাঝামাঝি উঠেছেন, অল্প সময়ের নোটিসে ভয়ানক এক ঝড় ধেয়ে এলো, উড়িয়ে নিতে চাইল সবকিছু। কিছু পাথরের আড়ালে একটা তাঁবু গেড়ে উইম্পার আর কারেল ২৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করলেন, ঝড় থামল না পুরোপুরি। ফিরে যেতে বাধ্য হলেন দুইজনে। উইম্পার কি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন? পরবর্তী দুই বছর গুটিয়ে রইলেন, মাটারহর্নের কাছ এলেন না।
১৮৬৫ সাল। একরোখা উইম্পার হার মেনে নিতে চাইছিলেন না। নতুন করে পরিকল্পনা সাজালেন। এবার রিজ বাদ পড়ল, পথ হিসেবে নির্বাচিত হলো সাউথ ফেস। জুনের একুশ তারিখে উইম্পার কিছু সুইস গাইডের সহায়তায় ওপরে উঠতে শুরু করলেন। কপাল তার খারাপই বলতে হবে, ভয়ানক এক পাথর ধ্বসের খপ্পরে পড়ে গেল দলটি। কেউ আহত না হলেও বাকি সবার মনোবল শূন্যে নেমে এসেছিলো, সপ্তমবারের মতো ফিরে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিলো না উইম্পারের।
মনের রাগ মেটাতে আশেপাশের অন্যান্য পাহাড়ে চড়া শুরু করলেন উইম্পার, সাথে সুইস গাইডের দল। সপ্তাহ দুয়েক চলল এই অভিযান। জুলাইয়ের সাত তারিখে তিনি ফেরত এলেন ব্রুইলে।
সদ্যগঠিত ইটালিয়ান আলপাইন ক্লাবের নেতা ফেলিশ জিওর্দানো এবং কুইন্টিনো সেলা এই সময়টাতে মাটারহর্ন বিজয়ের পরিকল্পনা বুনছিলেন। লক্ষ্য, ইটালির বাইরের কারো কাছে যেন এই গৌরব চলে না যায়। উইম্পারের ক্রমাগত প্রচেষ্টা তাদেরকে উদ্বেগে ফেলে দিয়েছিলো। এই দলের গাইড হচ্ছেন আমাদের পূর্বপরিচিত কারেল, তিনি তাগাদা দিচ্ছিলেন উইম্পার চলে আসার আগেই রওয়ানা হয়ে যেতে। প্রতিদ্বন্দ্বীকে ফিরতে দেখে কারেল কুইন্টিনোর কাছে বার্তা পাঠালেন,
“পরিকল্পনা গোপন রাখার সবরকম চেষ্টাই আমি করেছি, কিন্তু এই লোক, যার প্রাণ ভোমরা মনে হয় মাটারহর্নে, সবকিছুতেই গন্ধ শুঁকে বেড়াচ্ছে। সব ভালো গাইডকে ইতিমধ্যে দলে ভিড়িয়ে নিয়েছি, কিন্তু এই প্রেমিকপুরুষ মনে হচ্ছে হাতের কাছে যা পায় তাই নিয়েই রওনা দেবে। আমাদের হোটেলে ওকে দেখেছি, সামনা সামনি পড়ে যাওয়া এড়াতে চেষ্টা করছি”
উইম্পার এতকিছু জানতে পারলেন না। কারেলের কাছে গিয়ে আগের মতোই গাইড হবার প্রস্তাব দিলেন। কারেল প্রস্তাব ফিরিয়ে দেবেন এটা তিনি ভাবেন নি, অগত্যা অন্যান্য স্থানীয় গাইডের সন্ধানে বের হলেন। নিশ্চয়ই খুব অবাক হয়েছিলেন, যখন আর কেউই তার গাইড হতে রাজী হলো না। কানাঘুষায় জিওর্দানো এবং কারেলের পরিকল্পনা সম্বন্ধে জানতে পেরে কারেলের কূটচাল পরিষ্কার হয়ে গেলো তার কাছে। ইটালিতে সাহায্য পাবেন না এটা নিশ্চিত। অল্প দূরেই সুইজারল্যান্ড, কিন্তু মাঝে আল্পস পর্বতমালা বিশাল বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। টপকাবার একমাত্র উপায়, পায়ে হেঁটে তিওডুল পাস পাড়ি দেওয়া। কালবিলম্ব না করে কষ্টসাধ্য পথ ধরে রওনা হয়ে গেলেন যারমাটের দিকে।
জনৈক স্কটিশ পর্বতারোহী, লর্ড ফ্রান্সিস ডগলাস, এই সময় যারমাটে ছিলেন। ওনারও ইচ্ছা মাটারহর্নে ওঠবার। উইম্পারের সাথে তার দেখা হলো, কথা বলতে বলতে দুইজনে হোটেলে এলেন। সেখানে ছিলেন আরও দুই পর্বতারোহী রেভারেন্ড চার্লস হাডসন এবং ডগলাস রবার্ট হ্যাডো, এনারাও মাটারহর্নে উঠতে চান! হ্যাডো বয়সে তরুণ এবং অনভিজ্ঞ। শখের ঘোরা ঘুরতে এসেছেন যারমাটে। ইতিমধ্যেই ফ্রেঞ্চ গাইড মিশেল ক্রো কে দলে ভিড়িয়েছেন তাকে সাহায্য করার জন্য। সমমনা অনেক লোক পেয়ে উইম্পার একটা অভিযাত্রী দল করে ফেলতে চাইলেন, সবাই মিলে একসাথে উঠবেন মাটারহর্নে। যারমাটের সবচেয়ে কাছে আছে হোয়ের্নলি রিজ, ঐদিক দিয়েই ওঠার সিদ্ধান্ত হলো। আরও দুইজন গাইডকে দলে নেয়া হলো। একজন পিটার টৌগওয়াল্ডার, দ্বিতীয়জন তার ছেলে।
জুলাইয়ের ১৩ তারিখে খুব ভোরে কাফেলা রওনা দিলো, হোয়ের্নলি রিজের গোড়ায় পৌঁছাতে ছয় ঘণ্টা লেগে গেলো তাদের। যারমাট থেকে যেটা পাঁচ কিলোমিটার দূরে, আজকের দিনে তৈরী পথ থাকায় অভ্যস্তদের ঘণ্টা দেড়েক লাগে। এদিকে কারেল এবং তার সঙ্গীসাথীরা আগেই রওনা দিয়েছে লায়ন রিজ ধরে।
হোয়ের্নলি রিজকে নীচ থেকে যেমনই দেখা যাক, বাস্তবে পথটা অত দুর্গম ছিলো না। উইম্পারের ভাষায়,
“অনেক ওপরে উঠে এসেছি আমরা তখন। রিফেল কিংবা আরও কাছে ফুরগেন গ্লেসিয়ার থেকেও যে পথটাকে কার্যতঃ চলার অযোগ্য মনে হচ্ছিলো, দেখি আমরা চাইলে দৌড়াতে পারি এখানে”
রাত ফুরোলে উইম্পার আবার তার দলবল নিয়ে আবার রিজে ওঠা শুরু করলেন। তার নিজের লেখার দিকে আরেকবার দেখি,
“ঢালটার পুরো চেহারা বোঝা যাচ্ছে। তিন হাজার ফিটের মত এলাকা ধাপে ধাপে ওপরে উঠেছে, ঠিক যেন একটা প্রাকৃতিক সিঁড়ি। কিছু অংশ একটু কঠিন বটে, কিন্তু কোন জায়গাতেই আমাদের থেমে পড়তে হয় নি। সামনে কোন বাধা পেলে আমরা ডানে নাহয় বাঁয়ে সরে গেছি, পথ ছিলোই। বেশিরভাগ রাস্তাতে আমাদের দড়ি পর্যন্ত লাগে নি। কখনো হাডসন সামনে ছিলো, কখনো আমি। সকাল ছয়টা বিশে আমরা ১২,৮০০ ফিটে পোঁছাই, আধা ঘণ্টা বিরতি নিই। আবার শুরু করে ন’টা পঞ্চান্নতে যখন থামি, ততক্ষণে ১৪,০০০ ফিটে পৌঁছে গেছি”
চূড়ার কাছাকাছি পৌঁছে অবশ্য পরিস্থিতি বদলে যায়। রিজ ছেড়ে উইম্পার দল নিয়ে নর্থ ফেসে সরে আসেন। পথ ক্রমশঃই পিচ্ছিল, খাড়া এবং দুর্গম হয়ে আসছিলো, না সরে উপায় ছিলো না। উপরন্তু অনভিজ্ঞ হ্যাডোকে প্রতি মুহূর্তে সাহায্য করতে হচ্ছিলো কাউকে না কাউকে। ধীরে ধীরে চূড়া আরও কাছে চলে আসে, একসময় উইম্পার আর ক্রো সামিটে পা রাখেন। উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো দল।
প্রথমবারের মত মানুষের পদানত হয় মাটারহর্ন!
সামিটে ঘন্টাখানেক ছিলেন উইম্পার। বাকি সবাইও উঠে এসেছিলো ওপরে। এবার নামার পালা। হোয়ের্নলি রিজকেই নামার পথ হিসেবে বেছে নেয়া হলো। ক্রো নামলেন সবার আগে, তারপর যথাক্রমে হ্যাডো, হাডসন, ডগলাস, পিতা টৌগওয়াল্ডার, সবার শেষে উইম্পার এবং পুত্র টৌগওয়াল্ডার। খুব সাবধানে নামছিলেন তারা, একজন চলার সময় বাকি আর সবাই স্থির দাঁড়িয়ে থাকবে এই নিয়মে।
উইম্পারের ভাষায়,
“আমি যতদূর জানি, দুর্ঘটনার সময় কেউ নড়ছিলো না। আমি পুরোপুরি নিশ্চিত নই, আমার সামনে বাপ ব্যাটাও নিশ্চিত ছিলো না, কারণ বড় একখণ্ড পাথরের কারণে সামনের কিছুটা অংশ আড়ালে চলে গিয়েছিলো। ক্রো তার কুঠার একপাশে সরিয়ে রেখে মিঃ হ্যাডোকে সাহায্য করছিলো, রীতিমত পা ধরে ধরে জায়গামত বসিয়ে দিচ্ছিলো। আমি যতদূর বুঝেছি, ক্রো শেষবারের মত তার পা বসিয়ে দিয়ে ঘুরতে শুরু করেছিলো, এক দুই পা নেমে গিয়ে একটুখানি জায়গা করবে বলে। সেই মুহূর্তেই মিঃ হ্যাডোর পা হড়কায়, উনি ক্রো এর ওপরে গিয়ে পড়েন, তারপর দুইজনেই অদৃশ্য হয়ে যায়”
পড়ন্ত মানুষের হ্যাঁচকা টানে হাডসন এবং ডগলাস নিজের জায়গা থেকে ছিটকে পড়েন। রশি ঝুলতে ঝুলতে রিজ ছেড়ে নর্থ ফেসের দিকে চলে যায়, এবং ভারে ছিঁড়ে পড়ে। এমন আকস্মিক ঘটনার মর্মান্তিকতায় উইম্পার এবং টৌগওয়াল্ডার পিতাপুত্র এমনই বিহ্বল হয়ে পড়েন যে অনেকক্ষণ কেউই নড়তে পারছিলেন না। পুত্র টৌগওয়াল্ডার সবার আগে সম্বিত ফিরে পায়। সে নীচের দিকে নামতে শুরু করলে বাকিরা ধীরে ধীরে অনুসরণ করতে থাকে। একটা জায়গায় তিনজন একসাথে দাঁড়াবার সুযোগ হলে উইম্পার দড়িটা দেখতে চান। হতভম্ব হয়ে লক্ষ্য করেন যে তিন সেট রশির মধ্যে সবচেয়ে পুরনো আর দুর্বলটা ব্যবহার করা হচ্ছিলো, কেন তার মাথায় কিছুতেই ঢুকল না। কার ভুল ছিলো এটা?
উঁকিঝুঁকি মেরে তিনজনে দেখার চেষ্টা করলেন কোথাও কাউকে দেখা যাচ্ছে কিনা, কিন্তু বৃথাই সে চেষ্টা।
সময় গড়িয়ে যাচ্ছিলো, সবাই আবার নীচে নামতে শুরু করল। বিশ্রাম নেবার মত একটা নিরাপদ জায়গা খুঁজে পেতে সূর্যাস্তের পরেও এক ঘণ্টা লেগে গেলো। রাত কাটিয়ে পরদিন যারমাট পোঁছেই দ্রুত একটা রেসকিউ টিম তৈরী করা হলো। শুরু হলো হতভাগ্যদের খোঁজ। ক্রো, হ্যাডো এবং হাডসনের মৃতদেহ একসময় উদ্ধার করা হলো। বেচারা ডগলাসকে কোথাও পাওয়া গেলো না। উদ্ধারকৃত মৃতদেহগুলো যারমাট চার্চের আঙিনায় উপযুক্ত সম্মানের সাথে সমাহিত করা হয়। পরবর্তীতে মাটারহর্ন জয় করতে গিয়ে নিহত হওয়া সকল ব্যক্তির শেষ ঠিকানা হয় এখানেই।
পিটার টৌগওয়াল্ডারের ব্যাপারে একটা গুজব ওঠে। নিজেকে আর ছেলেকে বাঁচাতে সে নাকি রশি কেটে দিয়েছিলো। বিস্তারিত তদন্তে এটার কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি।
মন্তব্য
ধুর্মিয়া, হেডিং দেইখা ভাবলাম মাটারহর্নের মাথায় চইড়া বুদ্ধমুর্তির লগে ফটো খিঁচা আইছেন, তা না...
গল্পে (অনুবাদে)
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমিও তো বুদ্ধমূর্তি খুঁজতে আইছিলাম...
তাইলে তো ট্যাগে ইতিহাস/অনুবাদ না দিয়া ভ্রমন/সমসাময়িক লাগায় দিতাম
৫০১ নম্বর হিসাবে উইকিতে ঢুকার কোন খায়েশ আমার নাই। যদি কোনদিন কেবল কারে চড়ে পীকে যাওয়া যায়, তাইলে আমি বুদ্ধমূর্তি ব্যাগে নিয়ে যামু
ধন্যবাদ
আমিতো ভাবলাম মাটারহর্ন জয় করে ফেলেছেন। অন্তত নতুন একটা পর্বতশৃঙ্গ সম্পর্কে জানলাম, এটাই বা কম কী?
শব্দ পথিক
নভেম্বর ১৮, ২০১৩
শিরোনামটা বিভ্রান্তিকর হয়ে গেছে। পোস্ট করার সময় এই ব্যাপারটা মাথায় আসে নি
অনুবাদ ভালো লেগেছে। আর শুরুতে আমিও সত্যানন্দের মতোই ভেবেছিলাম
ধন্যবাদ অমি বন্যা। শিরোনামটা নিয়ে ভাবা দরকার ছিলো
আমিও ট্যাগ খেয়াল করিনি। ভেবেছিলাম বাঙালী ম্যাটারহর্ন জয় করে ফেলেছে!
অনুবাদ ভালো হয়েছে। তবে অনুবাদের দিকে ঝুঁকো না। তোমার মৌলিক লেখাই ভালো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তিমির পাখি হয়ে যাওয়া আর আমার মত ভুঁড়িয়াল কেরাণীর ম্যাটারহর্ন জয় করা সমান সম্ভাবনা নিয়ে নিয়ে আছে। দেখা যাক ভবিষ্যতে কি হয়। তারকাণুরে ধরেন, বাঙালি ম্যাটারহর্নে উঠুক, আমরা একটু উল্লসিত হই।
আহা! আপনি উদার হস্তে প্রশংসা করতে জানেন
অনুবাদ ভালো লেগেছে। আপনার নিজের লেখাই আশা করেছিলাম যদিও
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
অন্যের জয় করা দেখেই যা খুশি হয়েছি, নিজে করতে পারলে রকেট হয়ে যেতুম। কিন্তু সে তো অসম্ভব
এ ভাই, অনুবাদ যদি করেনই, ইংরেজী উইকি থেকে অনুবাদ করে বাংলা উইকিতে দেন না - বাংলা উইকিটা একটু সমৃদ্ধ হোক।
সাহায্যসূচী দেখুন এখানে
আসুন না, বাংলা উইকির অনুবাদ প্রকল্পে যুক্ত হয়ে যান।
____________________________
অনুবাদ প্রকল্পে যুক্ত হবার চেষ্টা করব
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
অনেক কিছু জানতে পারলাম। ভাল লাগল, যদিও সবার মত আমিও ভেবেছিলাম আপনি বুঝি মাটারহর্নের চুড়ায় গিয়েছিলেন।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
ছেলেবেলার ক্যালেণ্ডারে সুইজারল্যাণ্ডের ছবিতে যে পর্বতচুড়া দেখতাম মনে হচ্ছে ইনিই তিনি। তবে রূপযৌবন হারিয়ে একটু বৃদ্ধ হয়েছেন মনে হচ্ছে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
সম্ভবতঃ এনাকেই দেখেছেন, কারন এঁকে অনেকেই সুইজারল্যান্ড, মায় আল্পসের প্রতীক বলে থাকেন। তবে এঁরা তো চিরতরুণ, যৌবন চলে যাওয়াতে ফটোগ্রাফারের বিশাল ভূমিকা আছে বলে হয়
উপভোগ্য অনুবাদ, সেইসাথে অনেক কিছু জানলাম। অনেক ধন্যবাদ, ভাই।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকেও, মিলু।
নতুন মন্তব্য করুন