সঞ্জীব চৌধুরীর সাথে প্রথম ও শেষ দেখা যায়যায়দিন অফিসের ক্যান্টিনে। ব্রাত্য রাইসু পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, সম্ভবত কামরুজ্জামান কামুও সঙ্গে ছিলেন। শান্ত ও স্নিগ্ধ একটি মানুষ, কথা বলছিলেন নিচু স্বরে, কখনো মনেই হয় নি যে, এই মানুষটির মস্তিষ্কে কোনোদিন অতিরিক্ত রক্ত উঠে গিয়ে মৃত্যুসমান ঘটনার জন্ম দিতে পারে! অথচ তাইই হল। অগুনতি মৃত্যুর মিছিলে সামিল হলেন তিনিও, নিজের মাথায় তৈরি হওয়া এক আততায়ী ঘূর্নিঝড়ে।
এমনিতেই সিডরের আঘাতে মূক ও বধির হয়ে বসে ছিলাম। "নিরাপদ" দূরত্বে থেকে থেকে ভাবছিলাম দুর্ভাগা দেশটার কথা, শরণখোলার উপচে-ওঠা মরণের কথা। মৃত্যু কেন এই দেশে এত উপঢৌকন পাঠায়? অথচ এই এক দেশ, যে দেশের মানুষ তার যতটুকু আয়ু ততটুকুই খরচ করে জীবনকে তৈরি করায়, উপভোগের নেশা তো আমাদের নয়! কিন্তু তবু জীবন তৈরি হয় না, আধা-খ্যাঁচড়া হয়ে থাকে, দশবছরের কিশোরের লাশ ভেসে ওঠে পিতার মাছধরার জালে। এই দশটা বছরের স্বপ্ন আর ভালোবাসাকে মাটির নিচে পাঠিয়ে আবার জাল নিয়ে জলে নামবে পিতা। আবারো স্বপ্ন বানাতে শুরু করবে সে, আর দূরে, মহাসমুদ্রের কোনো এক গহীন বাঁকে, আরেকটি সিডর বা ক্যাটারিনা বা সুনামি মরণের ঝুলি নিয়ে তৈরি হবে। তারপর, কোনো এক সকালে বা সন্ধ্যায়, আবারো ঝাঁপিয়ে পড়বে ঐ আধাখ্যাঁচড়া জীবনগুলোর ওপর।
ঠিক সঞ্জীবের গানের মতই যেন, বয়স বাড়ে না উপদ্রুত উপকূলের। কেবল মরণই ঝাঁক বেঁধে আসে, শরণখোলায়।
[url]
|
[/url]
মন্তব্য
মূক ও বধির হয়ে আছি
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।
আবারো স্বপ্ন বানাতে শুরু করবে সে, আর দূরে, মহাসমুদ্রের কোনো এক গহীন বাঁকে
এই দশটা বছরের স্বপ্ন আর ভালোবাসাকে মাটির নিচে পাঠিয়ে আবার জাল নিয়ে জলে নামবে পিতা। আবারো স্বপ্ন বানাতে শুরু করবে সে, আর দূরে, মহাসমুদ্রের কোনো এক গহীন বাঁকে, আরেকটি সিডর বা ক্যাটারিনা বা সুনামি মরণের ঝুলি নিয়ে তৈরি হবে।
ঠিক। আমাদের তো এরকমই হচ্ছে, বারবার, প্রতিবার। স্বপ্ন ভেঙে যায়, আমরা আবার স্বপ্ন বানাই। জীবনের দাবিটা বোধহয় এরকমই।
....................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
সাদামাটা মানুষটাকে ভালো লাগতো তাঁর বিনয় আর স্বদেশী স্বকীয়তার জন্যে। ব্যান্ড সঙ্গীতকে ধারণ করলেও দেশীয় ঐতিয্যকে বর্জন করেননি কোন পর্যায়।
হায়! এই মৃত্যু উপত্যকাই আমার দেশ!
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
নতুন মন্তব্য করুন