আমাদের কৈশোর নির্মিত হয়েছে আবুল হাসানের অভিমান দিয়ে। মফস্বলের এক নিভৃতে বসে বসে আমরা চুপচাপ আবুল হাসান ও তার মৃত্যুকে ভালোবাসতাম, কলমের ডগায় তখন কবিতা আসি-আসি করতো। কী অদ্ভূত বৈপরীত্য! বিকাশের ঐ গোটা সময়টা ধরেই খালি বিষাদ, নদীপারের রেস্তোরাঁ, রেললাইন ধরে একা একা হাঁটা, আবুল হাসানের কবিতার বই হাতে। নিজেদের জন্য প্রণয়িনী খোঁজার সেই বয়স, অথচ এর বদলে আমরা ভালোবাসতাম সুরাইয়াকে। ভালোবাসতাম নির্মলেন্দু গুণকে এবং নির্গুণ মহাদেব সাহাকেও, এরা ভালো বা খারাপ কবি বলে নয়, বরং আবুল হাসানের বন্ধু ছিলেন বলে। এতো প্রেম, এতো পক্ষপাত! "অতটুকু চায়নি বালিকা!"
তারপর সত্যি সত্যি যখন কবিতা লেখা শুরু হল, যখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাঢ়জীবনে প্রবিষ্ট হলাম, যখন সুনীল সাইফুল্লাহর ভায়োলেন্স আর কফিল আহমেদ-এর ইমেজারি আমাকে ছিনতাই করল, তখনো ঐ দ্রিমিকি দ্রিমিকি আয়োজনে আবুল হাসানের কথা মনে থাকতো, মনে পড়তো। অন্তত এই কটা লাইন:
তোমাকে ছুঁতে না-পেরে
আমি নিজ নিয়তির অন্তর্গত রোদনকে বললাম, দ্যাখো
আমি আর কাঁদতে পারবো না
অন্তর্গত যে রোদন, তার দিকে চেয়ে দেখি আজ। আবুল হাসানকে আমরা তো ছুঁয়েছিলাম। ভালোবেসেছিলাম। সে এক বয়স, যে বয়সে আবুল হাসানকে এড়িয়ে যাবার জন্য অন্য কোনো পথ খোলা নেই বাঙালি কবিতা পাঠকের। মোটে তিনটি কবিতার বই এই অকাল প্রয়াত কবির, আর আছে একটি অগ্রন্থিত কবিতার সংকলন। তা দিয়েই তিনি আরো বহুদিন শাসন করবেন অভিমানী কিশোরের হৃদয়কে।
আজ তার মৃত্যুদিনে পরম প্রেমের স্মৃতিসহ স্মরণ করছি তাকে। সেই সাথে স্মরণ করছি তার সাথে জড়িয়ে-থাকা আমাদের কিশোরবেলাকে। সেইসাথে স্মৃতি থেকে তার একটা কবিতা (সচলায়তনের ব্যানার দেখে স্মৃতি উসকে দিল):
যাই, এখন তাদের শরীরে শস্যের আভা ঝরে পড়ছে যাই
নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে তার তীব্রতায় তরুণ দুঃখের কাছে ফিরে যাই যাই
মৃত্যু আর মৃত্যু আর মৃত্যুর আঁধারে যাই
বিবর্ণ ঘাসের ঘরে ফিরে যাই, যাই
সেখানে বোনের লাশ, আমার ভাইয়ের লাশ খুঁজে নিতে হবে, আমি যাই
দেখি কারা দীর্ঘ মেঘে মেঘে ঢাকা পড়ে আছে, দেখি কোথায় সে ট্রেঞ্চ, ইটের নদীর তলদেশে
কোথায় সে নীলিমার নক্ষত্রবীথির শান্তি, সবুজ রঙের শীত
দেখি কারা এত উষ্ণ মৃত্যুতে স্থির, নির্যাতিত আলোয় স্থির, কোথায়
কাহারা আবার মেঘের সম্মুখে শাদা সোনালি রোদ্দূর
যাই, আমার বুকপকেটে তাহাদের নীল চিঠি নীল টেলিগ্রাম, যাই
মেঘের সম্মুখে রোদ, রোদে যাই, রোদ্দূরের মধ্যে চলে যাই
মন্তব্য
হাসান মোরশেদ কয়দিন আগে আমাকে আবুল হাসানের মৃত্যুদিনটি মনে করিয়ে দিয়ে আজ্ঞা করেছিলেন, আমি যেন কিছু লিখি আবুল হাসান নিয়ে। আজকে লিখতে গিয়ে দেখলাম সেই প্রবল প্রেমের অতি সামান্যই অবশিষ্ট আছে! কিঞ্চিত্ বিষাদগ্রস্থ হল মন। তারপর ভাবলাম, ঠিক আছে, তাইই লিখি। পৃথিবীতে কোনো প্রেমই চিরস্থায়ী নয়। মনে পড়ল জীবনানন্দ:
পৃথিবীর পুরনো পথের রেখা হয়ে যায় ক্ষয়
প্রেম ধীরে মুছে যায়, নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়।
হয় নাকি?
ধন্যবাদ হাসান মোরশেদ।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
আবদার করেছিলাম
ভীষন ব্যস্ত-জানিয়েছিলেন । এর মাঝে ও এই এক টুকরো লেখা । কৃতজ্ঞতা ।
জীবন বাবুর ঐ বিখ্যাত লাইন ও কিন্তু শেষ হয়েছে সংশয়ে । শেষ বললেই কি আর সবকিছু শেষ হয়ে যায় নাকি?
-----------------------------------------
ভালো নেই,ভালো থাকার কিছু নেই
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
সুমন ভাই, ওনার জীবন বা রচনা নিয়ে আরেকটু জানাইয়েন। উনি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন সেই সময়ে, সেই বিষয়ে আসলে বিশেষ অবহিত নই।
p.s. ব্যানারটা সুপার হইছে। জীবনানন্দেরও মৃত্যুদিন ছিল গত মাসে, কিন্তু মনে ছিল না।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
দুঃখের আরেক নাম আবুল হাসান..
কবির দুঃখ আমাকেও ছুঁয়েছিলো কৈশোরে।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
সুবিনয় মুস্তফী, আবুল হাসান ছিলেন মধ্য ষাটের কবি, তিনি ষাট দশকী বিমূর্ততা/পরাবাস্তবতা (মান্নান সৈয়দ), নাগরিক বৈদগ্ধ্য (শামসুর রাহমান, শহীদ কাদরী) ও গণজাগরণের খোয়াব (আল মাহমুদ, হাসান হাফিজুর রহমান) থেকে বাংলা কবিতাকে নিয়ে গিয়েছিলেন এক অতি ব্যক্তিগত আর ক্যাজুয়াল উচ্চারণের এক জায়গায়। পাঠকের জন্য নিঃশ্বাস নেয়ার একটা জায়গা তিনি তৈরি করেছিলেন তার কবিতায়, বলা যায়, পাঠকের নিজের কর্নার একটা ছিল আবুল হাসানের বিপণী বিতানে। এ ছাড়াও, আবুল হাসানের কবিতাগ্রন্থ প্রথম বেরয় (সম্ভবত) ১৯৭৩ সালে এবং শেষটি বেরয় ১৯৭৫এ। স্বাধীনতার স্বপ্নভঙ্গের বিবৃতিই তখন গোটা বাংলাদেশের কর্ডম্যাসেজ, আর সেটিই উঠে এসেছিল আবুল হাসানের বিষাদগ্রস্থ উচ্চারণে। ভেবে দেখুন, ১৯৭৪-৭৫ সালে যখন তার বোজম বন্ধু নির্মলেন্দু গুণ সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন দেখছেন বাকশাল প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে (তার আগে চাই সমাজতন্ত্র ১৯৭৫), তখনই, এক বিছানায় শুয়েও আবুল হাসান দেখছেন ক্ষয়, শুনছেন বিষণ্ণ দেশমাতার গলা। এই কারণেই স্বপ্নভঙ্গের বেদনা দিয়ে আক্রান্ত স্বাধীনতা-উত্তর প্রজন্ম আবুল হাসানের কবিতার কাছেই বেশি হোম ফিল করেছে।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
সুমন, আবুল হাসানের মৃত্যুর দিনটি কোনোদিনই ভুলি না, জীবনে প্রথম প্রিয় কবির মৃত্যু চাক্ষুষ করা ভোলা সম্ভব নয়। এই উপলক্ষে করে একটি রচনা লেখার পরিকল্পনা ছিলো। প্রস্তুতিও। লিখলাম না। ব্লগাসক্তি থেকে দূরত্ব রচনার প্রকল্পে (হয়তো সাময়িক, অথবা স্থায়ী) আছি। কারো কোনো ক্ষতি হয়নি। আবুল হাসান সম্পর্কে আমার অনুভূতি শুধু আমারই, সেভাবেই থাক আপাতত।
আপনাকে ধন্যবাদ আবুল হাসানকে স্মরণ করার জন্যে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
কারো ক্ষতি হলো কি না হলো সেই বিচারটা নিজে না করলেই কি নয় ? লিখতে থাকুন । আবারও বলি লিখতে থাকুন ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এতো অমুল্য স্মৃতি নিয়ে এইভাবে অব্যক্ত থাকবেন জুবায়ের ভাই?
ক্ষতি হয় কিনা জানিনা । লাভক্ষতির হিসেবের বাইরে যে বোধটুকু-সেখানে বোধ করি কিছুটা তোলপাড় হয় ।
----------------------------------------
ভালো নেই,ভালো থাকার কিছু নেই
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
না জুবায়ের ভাই, আমরা শুনতে চাই। ব্লগাসক্তি থেকে দূরে থাকার প্রকল্প কেন হাতে নিলেন সেটা জানি না, কিন্তু আপনার মুখ থেকে আবুল হাসান বৃত্তান্ত জানার খুব ইচ্ছা আমার। আশা করি, গুরুতর কোনো সমস্যা না-থাকলে, নিরাশ করবেন না।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
তোমার চিবুক ছোঁবো, কালিমা ছোঁবো না
আবুল হাসান
এ ভ্রমণ আর কিছু নয়, কেবল তোমার কাছে যাওয়া
তোমার ওখানে যাবো, তোমার ভিতরে এক অসম্পূর্ণ যাতনা আছেন,
তিনি যদি আমাকে বলেন, তুই শুদ্ধ হ' শুদ্ধ হবো
কালিমা রাখবো না!
এ ভ্রমণ আর কিছু নয়, কেবল তোমার কাছে যাওয়া
তোমার ওখানে যাবো; তোমার পায়ের নীচে পাহাড় আছেন
তিনি যদি আমাকে বলেন, তুই স্নান কর
পাথর সরিয়ে আমি ঝর্ণার প্রথম জলে স্নান করবো
কালিমা রাখবো না!
এ ভ্রমণ আর কিছু নয়, কেবল তোমার কাছে যাওয়া
এখন তোমার কাছে যাবো
তোমার ভিতরে এক সাবলীল শুশ্রূষা আছেন
তিনি যদি আমাকে বলেন, তুই ক্ষত মোছ আকাশে তাকা--
আমি ক্ষত মুছে ফেলবো আকাশে তাকাবো
আমি আঁধার রাখবো না!
এ ভ্রমণ আর কিছু নয়, কেবল তোমার কাছে যাওয়া
যে সকল মৌমাছি, নেবুফুল গাভীর দুধের সাদা
হেলেঞ্চা শাকের ক্ষেত
যে রাখাল আমি আজ কোথাও দেখি না-- তোমার চিবুকে
তারা নিশ্চয়ই আছেন!
তোমার চিবুকে সেই গাভীর দুধের শাদা, সুবর্ণ রাখাল
তিনি যদি আমাকে বলেন, তুই কাছে আয় তৃণভূমি
কাছে আয় পুরনো রাখাল!
আমি কাছে যাবো আমি তোমার চিবুক ছোঁবো, কালিমা ছোঁবো না!
...................................................................
অসংখ্য 'নেই'-এর ভিড় ঠেলে
জ্বলজ্যান্ত 'আছে' খুঁজে পাওয়া হলো আসল ফকিরি
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
অচেনা এই কবির গুনমুগ্ধ হয়ে গেলাম। অপূর্ব।
অতটুকু চায়নি বালিকা
এত শোভা এত স্বাধীনতা
চেয়েছিল আরো কিছু কম
আয়নার দাঁড়ে দেহ মেলে দিয়ে
বসে থাকা সবটা দুপুর
চেয়েছিল মা বকুক
বাবা তার বেদনা দেখুক
একটা জলের খনি
তাকে দিক তৃষ্ণা এখনি
চেয়েছিল একটি পুরুষ তাকে বলুক রমণী
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
খুবই ভাল লাগল। ধন্যবাদ এমন চমৎকার লেখার জন্যে।
আজকের দিনের জন্য এটাকে স্টিকি করা হল।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ঠিকাছে
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ধন্যবাদ। কিন্তু না স্টিকাইয়া কি হৃদয়ে স্টিকি কৈরা রাখনের কোনো ব্যবস্থা নাই?
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
বকাটা কি আমি দিলেই কাজ হবে, নাকি আপনার মেয়েকে দিয়ে বকা দেওয়াবো? কী যে ভীমরতি ধরা কথা-বার্তা বলেন না! তাড়াতাড়ি নামান কিছু। অপেক্ষায় আছি।
সুবিনয় মুস্তফী আর ইশতিয়াক রউফের মন্তব্য পড়ার পর মনে হৈল, আমাদের আবুল হাসান প্রেম খুব বেশিদূর আগায় নাই পরের প্রজন্মগুলোতে। বিষয়টা ভাববার মত।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
একসময় আবুল হাসানের সংগে আমার গভীর রাতগুলা পার করে দিতাম। আবুল হাসানের মৃত্যূ হয়েছিল। একসময় আমিও মারা গেলাম। রাতগুলাকে আর গভীর হতে দেখি না এখন।
__________________________
suspended animation...
আমি ৩ বছর ধরে ঘুরছি আবুল হাসানের ১২৫ টা নিখোঁজ কবিতার পেছনে
যদি উদ্ধার করতে পারি
এবারের বইমেলায় একটা নতুন বই পাবেন আবুল হাসানের
দারুণ খবর! আশা করি পেয়ে যাবেন।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
মরে গিয়ে বেঁচে আছি আমিও।
এভাবে বেঁচে থাকার কথা ছিল না।
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
এতোটা বয়স পেরিয়ে এলাম, তবু কি জানলাম, চড়ুইয়ের ঠোঁটে কেনো এতো তৃষ্ণা?
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
এই তো.... রাত যত গভীর হচ্ছে, আবুল হাসানের প্রেমিকেরা ততই মুখ খুলছে... হায় প্রেম.... বিগত দিনের...
"সে আমার পাশে এসে বসেছিল, বাঁশির মতন বিবসনা
আমি তাকে কাঁদতে দেখেছিলাম গুণীর হাতের বেহালার মতো"
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
শুয়োরের বদলে আরো শুয়োরের পাল পাওয়া যেতে পারে-
কিন্তু কোকিলের বদলে কোকিল আজ অসম্ভব
দুঃখের বদলে দূর মানুষের মানবী মমতা কেউ তোমাকে দেবেনা ।
বিনয়াসক্তি বিষয়ক আপনার পোষ্টে মন্তব্য করেছিলাম- আবুল হাসানে আসক্ত হয়েছিলাম বলে নিরাসক্ত হয়ে পড়তে পারি আর সকলকেই ।
আমাদের শহরে,আমাদের বেড়ে উঠার প্রতিবেশে কিন্তু হাসানের প্রতি তীব্র ভালোবাসাই দেখেছি । অগ্রজ মাহবুব লীলেন,জফির সেতু-আমাদের সময়ে আমি,আরিফ জেবতিক,সুমন সুপান্থ- একটু পরে নজমুল আলবাবদের সকলকে ভুগিয়েছে এই ভালোবাসা ।
-----------------------------------------
ভালো নেই,ভালো থাকার কিছু নেই
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
গণিকা আমার অপ্সরা প্রিয়তমা
শাড়ি খুলে রেখে পরো আকাশের নীল
যুগল কুসুমে থরোথরো অনুপমা
চোখ দুটো হোক জোছনার গাঙচিল।
- এরকম আরো কত উচ্চারণ আমাদের ছাত্রজীবনের আড্ডাকে জমজমাট করেছে ! হায়, আবুল হাসান! হায়, সেইসব আড্ডা!
আবুল হাসানের নতুন কবিতা উদ্ধারের সম্ভাবনা নিয়ে আমি একটু আশঙ্কায় আছি। যদি কবিতাগুলো আগের মত ভালো না লাগে ?
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
........
........
যতই আনো ও আঙুলে অবৈধ ইশারা,
যতই নাচাও মৌনতার সারস .....
আমি আর কারো প্রেমিক হবো না কোনদিন।
আমি আজ সব প্রেমিকের প্রতিদ্বন্দ্বী হবো।
ঠিকঠাক মনে নেই। তবে এটুকু ঠিক- প্রবলভাবে আলোড়িত হয় এখনো প্রথম আবুল হাসান পাঠের মতোই।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
পছন্দের পোস্টে যোগ করা হলো।
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
কিন্তু আমার জানতে ইচ্ছা করে এখনকার কিশোররা, যারা বিভিন্ন শহরে কবিতাচর্চা করছে, তারা কার কবিতার সাথে বেড়ে ওঠছে? মে বি যারা সেই বয়সটা সম্প্রতি পেরিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের কোনো না কোনো মফস্বলে, তারা ভাল বলতে পারবেন।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
আহার কবিতাসমগ্র আর তাঁকে নিয়ে লেখা যত পোস্টের লিঙ্ক আছে-- আজ সব আবারো পড়ে গেলাম।
নিঃসঙ্গতার এই লাবণ্যময় বিষণ্ন বেহালাবাদকের কাছে আমার ঋণের শেষ নেই.......
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আবুল হাসান মাদকে আক্রান্ত ছিলাম আমরাও, কবিতাযাপন শুরুর প্রথম দিকটায়। কবির জীবনি নির্ভর একটা বইও খুঁজে পেয়েছিলাম, কার লেখা মনে নাই। নিজের অনুভূতিতে জীবনানন্দ সংত্রান্ত বেদনাবোধ ছড়িয়ে পড়েছিল আবুল হাসানেও, আজও আলতো ঘা দিয়ে যায় সেই বেদনা। কেবলই মনে হয় ওরাঁ পায়নি ।
আরও একটা কিম্ভুত ব্যাপার, বরিশালজন্ম !
এখন মনে পড়লে হাসি পায়, কবি নির্মলেন্দু গুনকে প্রথম লিখেছিলাম এই সম্বোধনে " একদা প্রিয় কবি আবুল হাসানের প্রিয় বন্ধু" !
এতোটাই আক্রান্ত ছিলাম ।
নতুন মন্তব্য করুন