• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

"ঠিক তিন বছর পর আত্মহত্যা করে যাবো আমি"

??? এর ছবি
লিখেছেন ??? (তারিখ: শুক্র, ১৩/০৭/২০০৭ - ২:৩৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

এভাবেই লিখেছিলেন সুনীল সাইফুল্লাহ। ১৯৭৯ সালের একটা কবিতায়। সত্তর দশকী বাংলা কবিতায় এরকম ধুন্ধুমার বিবৃতি নতুন কিছু ছিল না। আবুল হাসান তখন সবেমাত্র ক্রেজ-এ রূপ নিচ্ছে এই বাংলাদেশে।

কিন্তু শুধু স্বপ্নভঙ্গের বিবৃতিই ছিল না সুনীল সাইফুল্লাহর ঐ পংক্তিমালা। ঠিক ১৯৮২ সালেই আত্মহত্যা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া এই কবি। বয়স তখন তার পঁচিশ, বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রের জন্য একটু বেশি বয়স বুঝি বা। তাঁর মৃত্যুর পরপর বন্ধুদের উদ্যোগে তাঁর একমাত্র কবিতাগ্রন্থটি বেরয়, পাণ্ডুলিপিটি পাওয়া গেছিল বালিশের নিচে। মৃত্যুর আগে দিনরাত খেটে খেটে পাণ্ডুলিপির কাজ শেষ করেছিলেন তিনি। বইটার ভূমিকা লিখেছিলেন তাঁরই শিক্ষক কবি মোহাম্মদ রফিক।

কেমন লিখতেন সুনীল সাইফুল্লাহ? মোহাম্মদ রফিকের ঐ সহমর্মী এবং দায়সারা ভূমিকা ছাড়া আর কোনো গদ্যপ্রচেষ্টা গত পঁচিশ বছরে তাঁকে নিয়ে হয়েছে বলে জানা নেই। সত্তরের কবিতা নিয়ে নানা জায়গায় দিস্তা দিস্তা আলোচনা দেখি, কিন্তু সেখানেও জায়গা হয় না সুনীল সাইফুল্লাহর। মনে করিয়ে দেয় তাঁরই কবিতাকে:

যেখানেই নামি
আমার গোটা শরীর ডোবে না জলে
ডুবলে সত্যি
মাছেদের ক্রীতদাস হয়ে কাটিয়ে দিতাম বাকী জীবন

ডোবে নি সত্যি। বাংলা কবিতার ইতিহাসে সুনীল সাইফুল্লাহ তার আত্মহত্যার পঁচিশ বছর পরও দ্রবীভূত হয়ে উঠেন নি। বনের গাছের আর্তি দ্রবীভূত হয় না কাঠের পালংকে:

চন্দন কাঠের পালংকে ঘুমন্ত রাজকন্যার নিতম্ব ছুঁয়ে
উঠে আসে করাতবিদ্ধ যুবতী বৃক্ষের যন্ত্রণা

মোহাম্মদ রফিককে জিজ্ঞেস করতাম সুনীল সাইফুল্লাহর কথা। কেমন ছিলেন তিনি, ইত্যাদি। মোহাম্মদ রফিক অবশ্য এসব প্রশ্নের খুব উত্তর করতেন না। সুনীল সাইফুল্লাহকে নিয়ে খুব বেশি স্মৃতি নেই তার, দুজনের নান্দনিক অবস্থানের ভিন্নতার কারণে হয়ত। একজন জীবনভর জীবনেরই চর্চা করেছেন, অন্যজন নিভৃতে বসে-বসে ধাওয়া করেছেন নিজের মৃত্যুকেই:

আমার বুকের উপর দিয়ে ঘোড়া ছুটিয়ে রাজ্যসফরে চলেছেন মহারাজ
তাঁর পদস্পর্শ পাবার আশায় আমি শরীর ছড়াচ্ছি প্রান্তরময়

এমন কত অজস্র পংক্তি,কত প্রেম, কত কত আয়নাভাঙা ভায়োলেন্স!

মানুষজন্মে এও কি সম্ভব সবিতা, সেই বুড়ি দত্যিটাকে সময়মত সিগ্রেট না-খাওয়ালে
তোমার আমার একদড়িতেই ফাঁসি হত তার আগে দীর্ঘকাল শিরাউপশিরা কর্তন প্রক্রিয়া

কিংবা:

আমার কপালে বুলেটের মত ঢুকে গিয়েছে তোমার মুখ
ক্ষতচিহ্নের রক্তপাত আঙুলে মুছে নিয়ে আমি নগরীর দেয়ালে দেয়ালে বৃক্ষের বাকলে লিখছি তোমার নাম

কিংবা:

যাবার পথে শরীর বিছিয়ে তুমি সারাদিন ডাকছো আমাকে
তোমার কথার ময়ুর সিংহাসন আসে একটি পদভারও সয় না আমার
আগুন ছাড়া আর কিছুতেই ভারহীন হয় না শরীর

বাংলা কবিতার "মূলধারায়" গত পঁচিশ বছর ধরে সুনীল সাইফুল্লাহ একটি আগন্তুকের নাম। অথচ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যারা নির্ভীক ভাম্পায়ারের মত নিশিযাপন করতাম, সুনীল সাইফুল্লাহ ছিলেন আমাদের কাউন্ট ড্রাকুলা। তার প্ররোচনাতেই সারারাত টুপটাপ মৌ ফুল ঝরতো, হেলেদুলে রাস্তা পেরুতো বিশালবপু গুঁইসাপ। আমি ক্যাম্পাসে পা রাখার সাত বছর আগে মৃত্যু হয় তাঁর, কিন্তু খুব কম দিনই আমি তাঁকে দেখি নি, এমনটা হয়েছে।

সুনীল সাইফুল্লাহর কবিতা পড়তে চান? শাহবাগ কিংবা নিউমার্কেটের বইয়ের দোকানে পাবেন না তাকে। ওয়েবে তো নয়ই। সাভারগামী বাসে চেপে চলে যান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। খোঁজ করুন তপু নামে এক পিয়নকে। বলুন আপনার মনোবাঞ্ছার কথা। হ্যাঁ, তিনিই আপনাকে দিতে পারেন সুনীল সাইফুল্লাহর এক কপি বই। ‌১৯৮২ সালে বের হওয়া বইটির বাকী সব কপিই তিনি পরম মমতায় নিজের বাড়িতে আগলে রেখেছেন আজ পঁচিশটি বছর ধরে।


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

সুনীল সাইফুল্লাহর বই ইউনিকোডিত করা হোক ।


আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

হ সুনীল সাইফুল্লাকে ডিজিটালে অমরত্ব দান করেন।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বলতে ভুইলা গেছি। জবর লাগছে রিভিউ আর কবিতা দুইটাই।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সুমন ভাই আপনার কাছে কপি থাকলে ইউনিকোডিত কইরা ফালান।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

সৌরভ এর ছবি

পড়তে চাই।
কোনভাবে ডিজিটায়িত করা গেলে ভালো লাগবে।

------ooo0------
বিবর্ণ আকাশ এবং আমি ...


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

??? এর ছবি

বই একটা আমার আছিল। কিন্তু সেইটা তো দেশে। যা লিখছি সব স্মৃতি থিকা।

হাসিব এর ছবি

ঐটা আননের ব্যবস্থা করেন । এরপর কোনভাবে স্ক্যান কইরা তুইলা দেন কোথাও । আমরা সবতে মিলা টাইপ কইরা সংরক্ষণ কইরা ফেলুম কোথাও ।


আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে

??? এর ছবি

ভাস্কর বা আরো যারা সাবেক জাহাঙ্গীর আছে, তাদের কারো-না-কারো কাছে একটা বই তো থাকা সম্ভব।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হুম...এইখানে প্রাক্তন জাহাঙ্গীরনগরদের কাছে আবেদন রইলো...(আমিও বিদেশে :( )
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

নজমুল আলবাব এর ছবি

ভালো লাগলো
এবং
প্রচন্ডভাবে পড়ার ইচ্ছা জাগলো।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

কিন্তু ভদ্রলোক আত্মহত্যা করলেন কেন?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

??? এর ছবি

বলা খুব মুশকিল। সুনীল সাইফুল্লাহ ছিলেন এক সামন্ততান্ত্রিক পরিবারের সন্তান। ফলে, হয়ত, মূল্যবোধ আর ক্ষমতার ক্ষয়িষ্ণুতার বীজ তিনি বহন করতেন ভেতরে ভেতরে। প্রচণ্ড মেধাবী ছিলেন, সেই মেধার অনাদর তাকে দেখতে হয়েছিল, ফলে তীব্র অভিমানবোধেরও ব্যাপার থাকতে পারে। কিন্তু সবচে রহস্যজনক ব্যাপার হল, আত্মহত্যা বিষয়ে তাঁর আগাম ঘোষণা। ১৯৭৯ সালে লিখলেন "ঠিক তিন বছর পর আত্মহত্যা করে যাবো আমি", আবার তারো আগে ১৯৭৭ সালে আরেকটি কবিতায় তিনি লিখছেন যে এক সাধু তাকে বলছে "পঁচিশ বছর বয়সে মৃত্যু হবে তোর"। বোঝা যাচ্ছে, আত্মহত্যার ব্যাপারে তাঁর একটা সুনিশ্চিত মনোভাব ছিল বহুদিন ধরে।

শিল্পীদের আত্মহন্তারক হওয়া বিচিত্র কিছু নয়, বরং এটা একটা নন্দনতাত্ত্বিক ট্রেন্ড অনেক সময়ে। সুনীল সাইফুল্লাহ যে সময়ের কবি, তখন স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নগুলো ভূলুণ্ঠিত। সেই স্বপ্নভঙ্গের বেদনা গোটা সত্তর দশকের কবিদের মধ্যেই টের পাওয়া যায়। ইন্টারেস্টিং হল, আমাদের সাহিত্যের আরেকজন ্আত্মহন্তারক কায়েস আহমেদও সত্তরের দশকের লেখক। ফজল মাহমুদ নামে সত্তর দশকের আরেকজন কবিও প্রকাশ্যে আত্মহত্যা করেছিলেন।

আরেকটা কথা শোনা যায়। এমন কি সুনীলের কবিতায়ও এর কিছু আলামত মেলে। সুনীলের একটা ইনসেস্ট রিলেশন ছিল। সহোদরার সাথে। সেটাকে নৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না-পারা কি সুনীলকে এই পরিণতির দিকে তাকে ঠেলে দিয়েছিল? কে জানে?

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

মন্তব্য থিকাও জানতে পারলাম অনেক কিছু। থ্যাঙ্কস।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

কবিদের সেনসিটিভিটির রেঞ্জ অন্যরকম। তথ্যগুলোর জন্য সুমন ভাইকে ধন্যবাদ।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ঝরাপাতা এর ছবি

দুর্ভাগ্য তিনি এতো তাড়াতাড়ি চলে গেলেন। দেখি দেশে ফিরে সংগ্রহ করার চেষ্টা করবো।
_______________________________________
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ডেইরি ফার্মে রাজ্জাকের দোকানের পাশে একটা বই এর দোকান হইছিল। ওরা বলছিল আরো কপি বাইর করবো। সম্ভবত করে নাই। জাবি তে যাতায়াত করেন এমন কেউ খোজ নিতে পারে।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

একটা কপি যোগাড় করুন যে কেউ ।
আমরা অন্ততঃ ওয়েবে তাঁর লেখা সংরক্ষন করি ।

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

??? এর ছবি

রাজ্জাকের দোকানে না থাকলেও ইংরেজি বিভাগে গিয়া তপুকে খোঁজ করলে এক কপি পাওয়া যাওনের সমূহ সম্ভাবনা। তবে তাকে মূল্য অফার করবেন না দয়া করে, এ বিষয়ে তার আবার এক অদ্ভূত রকমের পজিশন আছে। যদি তিনি একান্তই গড়িমসি করেন তাইলে শেষ চেষ্টা হিসাবে এই অধমের নাম বৈলা দেখন যাইতে পারে। সুসম্পর্ক আছিল আমাদের। তবে বহুৎ আগের কথা, মনে আছে কিনা কে জানে।

অপালা এর ছবি

কবিতা পড়তে চাই

অমিত এর ছবি

সবাই বিদেশে থাকলে দেশে কে ?অসাধারণ পোস্ট, রিভিউ আর মন্তব্য।
______ ____________________
suspended animation...

কারুবাসনা এর ছবি

আপনার লেখা বেশি ভাল লেগেছে কবিতার থেকে।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।

??? এর ছবি

হৈলে সেইটা তার কবিতারই গুণে। সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস...

সুনীল সাইফুল্লাহর কবিতা নিয়ে আমি বেশ কয়েকবার লেখার চেষ্টা করেছি জীবনে। লেখা হয়েছেও, কিন্তু মনের মত হয় নাই। ফলে প্রকাশ করা হয় নাই। এটা লিখেছি পরিচিতিমূলক লেখা, সচলের জন্য।

আশিক আহমেদ এর ছবি

কবিতা পড়তে চাই। দেখি জোগাড় করা যায় নাকি।

অমিত আহমেদ এর ছবি

একজনের লেখা পড়ে আরেকজনের লেখা পড়ার ইচ্ছে আমার তেমন জাগে না। এবার জাগলো...
অসম্ভব সুন্দর লিখেছেন!

আমি একটা চেষ্টা চালাব বই সংগ্রহের এই ডিসেম্বরে!


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

সুনীল সাইফুল্লাহকে চিনতাম না। কিন্তু আপনার লেখা পড়ে ফজল মাহমুদকে মনে পড়ে গেলো। অনেকদিন পর। কুমিল্লা থেকে সে ঢাকা এলো, তার পরপরই আমার সঙ্গে পরিচয় এবং স্বল্পকালীন ঘনিষ্ঠতা। বয়সে বছর দুয়েকের ছোটো ছিলো। আমার সঙ্গে সূর্যসেন হলে কিছুকাল বাসও করেছিলো। অসম্ভব সুন্দর হস্তাক্ষর তার, সেই সুবাদে তখন সে আবদুল মান্নান সৈয়দের সঙ্গে ফররুখ আহমদের নির্বাচিত কবিতা বইটির পাণ্ডুলিপি তৈরির কাজ করেছিলো।

গুজব শোনা গেলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমঘিত সম্পর্কে জড়িয়েছে ফজল। তখন ফজলের সঙ্গে আমার যোগাযোগ কমে গেছে। মেয়েটি ফজলের চেয়ে বয়সে বড়ো, আমাদের ব্যাচমেট। শুরুতে নাকি আপা করে বলতো। পুরু চশমা-পরা অতি সাধারণ দেখতে মেয়েটি - তার চালচলন বা পোশাক-আশাক দেখে মনে হতো এ মেয়ে দর্শনশাস্ত্র পাঠ করার জন্যেই ধরাধামে অবতীর্ণ হয়েছে। মজার কথা, আমাদেরই আরেক বন্ধু (ফজলের মতো সে-ও কুমিল্লার)- সে একাধারে কবি ও গল্পকার - এই মেয়েটিকে উদ্দেশ করে কিছু কবিতা রচনা করেছিলো। মনে আছে রসিকতা করে সে বলতো তার এবং মেয়েটির নামের আদ্যক্ষর একই এবং টাটা নামটি তারই অনুকরণ।

কিছুকাল পরে শোনা গেলো, ফজল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। তার আর কোনো খবর জানতাম না, আত্মহত্যার খবরটি জানার আগে। আমার তখনকার প্রতিক্রিয়াটি স্পষ্ট মনে আছে - বোকা নাকি?

পরে বুঝেছি, সমীকরণটি অতো সোজা আসলে নয়।

ধন্যবাদ সুমন, আপনার লেখাটির সুবাদে পুরনো ও মৃত বন্ধুটিকে একটু স্মরণ করার উপলক্ষ তৈরি হলো।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

??? এর ছবি

ধন্যবাদ জুবায়ের ভাই। সুনীল সাইফুল্লাহকে চেনার খুব কারণ নেই, কারণ জাহাঙ্গীরনগরেই তখন খুব অল্প লোকে তাকে চিনত। বরং ফজল মাহমুদ কবি হিসেবে বেশি পরিচিত ছিলেন। উনি শুনেছি প্রকাশ্য দিবালোকে রোকেয়া হলের সামনে উনার প্রেমিকার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বিষপান করেছিলেন।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

রোকেয়া হলের সামনে প্রকাশ্যে বিষপানের ঘটনাটি সঠিক নয় বলে মনে হয়। শুনেছিলাম, জাহাঙ্গীরনগরে আবাসিক হলে তার নিজের কক্ষে ঘটনাটি ঘটায় সে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

??? এর ছবি

হা হা হা... এভাবেই রূপকথা তৈরি হয়! :)

ভাস্কর এর ছবি

সুনীল সাইফুল্লাহরে নিয়া লিখনে প্রথমেই সুমন ভাইরে ধন্যবাদ। ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনের টাইমে আমি একরাত সুনীল সাইফুল্লাহর রুমে ছিলাম এমএইচ হলে। তার কবিতায় আমিও-আমরা ভাসতাম।

আমার কপিটা দিয়া আসছিলাম ছাত্র ফ্রন্টের লাইব্রেরী পথিকৃৎ'এ...আরেক কপি জোগার কইরা ফেলুম শীঘ্রই।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

অচেনা এর ছবি

আপনাকে বাঁচানোর আন্দোলন করে ভুল করি নাই।

-------------------------------------------------
যত বড়ো হোক ইন্দ্রধনু সে সুদূর আকাশে আঁকা,
আমি ভালোবাসি মোর ধরণীর প্রজাপতিটির পাখা॥

আছহাবুল ইয়ামিন এর ছবি

"দু:খ ধরার ভরা স্রোতে"
একটুও ধুলো নেই বইটিতে। কালের আঘাতে ভিতরের হলুদ হয়ে যাওয়া পাতাগুলো না দেখলে বোঝার উপায় নেই যে বইটির বয়স ২৫। আসলেই পরম মমতায় বইগুলো আগলে রেখেছেন তপু ভাই।

তপু নামে এখন আর সেখানে কোন পিয়ন নেই। তপু ডাকনামধারী লোকটি এখন তার পূর্ণ নাম “মো: তোফাজ্জল হোসেন” নামে বেশী পরিচিত। পদোন্নতি পেয়ে নতুন পদবী – সিনিয়র সর্টার। পিয়ন তপুর খোঁজ নিতে গিয়ে প্রথমে একটু বিড়ম্বনায় পরতে হয়েছিল।

যথারীতি কোন বিনিময় মূল্য নিতে অস্বীকার করলেন তপু ভাই। ফিরে আসার আগে তার অনুরোধ - "ভাই, আপনি সবাইকে বলবেন, বইটির কপি বের করতে। আর মাত্র কয়েকটি কপি আছে আমার কাছে। জীবিত থাকলে অনেক বড় কবি হতেন সুনীল সাইফুল্লাহ।" তার জানামতে কয়েকবার উদ্দ্যোগ নেয়া হয়েছিল বইটির পুনঃ মূদ্রণ করার। কিন্তু তিনি নিশ্চিত না, কোনটি আলোর মুখ দেখেছে কি না। আবার শেষে দুঃখ করে বললেন, "এখন তো আর জাকসু নেই। তারা থাকলে হয়ত কিছু হত।" (এ বইটি জাকসুর উদ্দ্যোগে প্রকাশিত)।

তপু ভাইকে পাবেন বিভাগ অফিসের প্রথম ডেস্কেই। আর অফিস সময়ের বাইরে তাঁকে পাবেন তার কোয়ার্টারের E-৬৮ নং বাসায়।

বইটি মূলত সুনীলের জীবনের শেষ তিন বছরের কবিতার সংকলন। সম্পাদকীয় থেকে জানলাম, আত্মহননের আগের দুই মাস ধরে কবি নিজেই কবিতাগুলো বাছাই করে পান্ডুলিপিটি তৈরী করেছিলেন। তখন কেউ বুঝতে পারেনি এটি তার অন্তিম যাত্রার প্রস্তুতি।

বইয়ের প্রথম দিকের কবিতাগুলোতে ঝরে পড়েছে ধমনীতে বয়ে চলা রক্তের প্রতি তীব্র ঘৃণা। শেষের দিকের একটা কবিতায় মনে হল ইনসেস্ট রিলেশন কথা স্বীকার করেছেন। হয়ত এগুলোর কোন একটি তার সিদ্ধান্তের কারণ হতে পারে।

কবিতার ভাল সমাঝদার নই আমি।কবিতাকে নিজের মত করে বোঝার চেষ্টা করি। তাই কোন গুনগত আলোচনায় গেলাম না। তবে আপনারা কেউ ওয়েবে হোস্ট করতে আগ্রহী হলে বইটি ডিজিটাইজ করে দিতে পারি।

??? এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ আছহাবুল ইয়ামিন। আমি দুঃখিত আপনার মন্তব্য আগে খেয়াল করি নি। আশা করছি আপনার মন্তব্য সবার চোখে পড়বে। হ্যাঁ... আমার অনুরোধ বইটা ডিজিটাইজ করে দিন। প্লিজ।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আহছাবুল আমিন'কে ধন্যবাদ । ডিজিটাল বা যে কোনো ফর্মে আমাদের হাতে এলে,সচলায়তনের পক্ষ থেকে আমরা একটা ই-বুক করতে পারবো ।

সুমন রহমান যদি একটু উদ্যোগ নেন তাহলে সম্ভব বোধ করি ।

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

??? এর ছবি

হাসান মোরশেদ, আছহাবুল ইয়ামিন-এর মেইল অ্যাড্রেস তো কর্তৃপক্ষের কাছে আছেই। তাকে যোগাযোগ করা যেতে পারে। বই পেয়ে গেলে সচলের ই-বুক প্রকল্পের মধ্যে একে সংকুলান করে দেয়া সম্ভব, সবাই চাইলে। প্রয়োজন পড়লে, আর আপনারা চাইলে, আমি সম্পাদনার কাজটুকু করে দিতে পারব।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

'আপনারা' শব্দটা অমিট করে দেন । সম্পাদনা'র দায়িত্বটা আপনি নেন ।
আহছাবুল আমিন এর সাথে যোগাযোগের কি করা যায় দেখছি ।
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ঠিক আছে আমি যোগাযোগ করব আহছাবুল আমিনের সাথে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

বামে ই-বইয়ের লিংকটা কাজ করছে না। খোঁচা দিলে এই পোস্টে চলে আসে। তাছাড়া বইটা সম্পর্কে একটা পোস্ট দেয়া উচিত।

ব-e লেখার কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছি।

-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

নঈম তারিক এর ছবি

ইউনিকোডে দ্রুত কম্পোজ করার কাজটি আমি করে দিতে রাজি। এর জন্য বইটি/বইয়ের ফটোকপি/স্ক্যান করা ইমেজ দরকার। ব্যবস্থা করতে পারেন?
ইমরুলের কপিটা আমার কাছে ছিলো কিছু দিন, আমার কাছ থেকেই কি হারিয়েছে? হতে পারে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

নঈম তারিক,
আপনার আগ্রহের কথা জেনে ভালো লাগল। আছহাবুল ইয়েমীন নামে এক পাঠক ইতিমধ্যে বইটা কম্পোজ করে এবং স্ক্যান করে আমাদের পাঠিয়েছেন। বইটার সম্পাদনার দায়িত্বে আছেন সুমন রহমান। হাসান মোরশেদ ভাই ইউনিকোডে রুপান্তরিত করে প্রুফও দেখে ফেলেছেন। সুমন রহমানের কাছ থেকে একটা মুখবন্ধ পেলেই মনে হয় প্রকাশের কাজ শুরু হবে। অবশ্য এব্যাপারে সুমন রহমান এবং হাসান মোরশেদই সিদ্ধান্ত নেবেন, আমি না।

আপনার আগ্রহের জন্য আবারও ধন্যবাদ।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

এক লহমা এর ছবি

এই বই কি ডিজিটাল ফর্ম্যাটে এখন পাওয়া যাচ্ছে?
অত্যন্ত সুন্দর রিভিউ।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সবজান্তা এর ছবি

বইটি সচলায়তন থেকে ইবুক হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে অনেকদিন আগেই। বইটি পাবেন, এখানে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।