পত্রিকা খুললেই শত কোটি টাকার দুর্নীতি আর শত শত একর জমি আত্মসাতের কাহিনী!
গরিবের কথা বাদই দিই, যে মধ্যবিত্ত বিগত আট-দশ বছর ধৈরা মুদারাবা সঞ্চয়ী হিসাবে ব্যাংকে পাচশ-একহাজার টাকা কৈরা জমাইতেছে, জীবনসায়াহ্নে টঙ্গী কিংবা মদনপুরে আড়াই কাঠার একখান প্লট কিনবার আশায়, তার কাছে মেগা-দুর্নীতির এইসব অংক কী অর্থ বহন করে? পাচ বছরের স্কেলে কোনটা ফিকশন? গিয়াসউদ্দিন মামুনের পাচশকোটি টাকা, নাকি রহিমা বেগমের সেলাই মেশিনের ইনস্টলমেন্ট?
যে উদ্যমে বাংলাদেশের অদম্য নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষ একটা সাধারণ মৌলিক অধিকার অর্জনের স্বপ্নখান তার গোটা জীবনের সমান লম্বা কৈরা টাইন্যা যায়, শতকোটি টাকার ঝনাৎ ঝনাৎ আওয়াজে তার স্বপ্নের লাল পিরান তো ছিড়া ত্যানা হৈয়া যাওনের কথা!
আমার এইরকমই মনে হয়: মেগা-দুর্নীতির ঝাপটে তলে তলে আমাদের দেশের গ্রস মাইক্রো-সেভিংসের বারটা বাজতেছে! সিপিডির অংকে এই হিসাব ধরা পড়ে না, কারণ এক ফালুর হাজার কোটি টাকার দাপটেই পরিসংখ্যান সুজলা সুফলা হৈয়া ওঠে। দাত কেলায় জিডিপি... পাচ ছাড়ায়া গ্যাছে, আর চিন্তা নাই! কিন্তু জিনি ইনডেক্স দ্যাখেন, দ্যাখেন নিস্বায়ন কোন পর্যায়ে গেছে, কেন টাকার খোজ না কৈরাই মানুষরূপী পিশাচেরা ছয়-ছয়জন মানুষরে খুন কৈরা ফ্যালে, শেষে আলমারি খুইল্যা হাতে পায় একখান মোবাইল ফোন! ঐ পিশাচগুলারে দেশের বড় বড় বনরাক্ষসদের বাসায় চালের ড্রামের ভিতর বালিশের ভিতর বস্তা বস্তা টাকার সন্ধান কে দেখাইবে?
মন্তব্য
বিকল্প পাঠের কোন আঞ্জাম নাই সুমন ভাই...
বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
বুঝলাম না। এট্টু বুঝায়া কৈবা?
মধ্যবিত্তের দুর্নীতিবিরোধী যেই উল্লাস চলতেছে তার বিপরীতে এই দুর্নীতি বিরোধের আড়ালে যা ঘইটা যাইতেছে সেইটারে নিয়া আরো বেশি বিকল্প পঠনের প্রয়োজন মনে হয়...নাইলে আমরা আন্ধারে যামু আরো বেশি। বিকল্প পঠনের প্রয়োজনীয়তা নিয়া কইতেছিলাম আরকি।
বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
তবে মধ্যবিত্তের অনেকে কিন্তু দুর্নীতির সুবিধাভোগী, ২০/৩০ কোটি টাকা মেরে খাওয়ার সুযোগ পায় নি ঠিকই, তবে দুর্নীতি কালচারটা অন্তস্থ করেছে বলেই মনে হয়।
ঠিক। মধ্যবিত্ত অনেক এমবিগুয়াস একটা ক্যাটাগরি। তয় আমি সেই মধ্যবিত্তের কথা ভাবতেছি, যে কিস্তির টাকায় ফ্রিজ কিনে, পেনশনের টাকায় বাড়ি বানাইবার খোয়াব দেখে। তার জন্য এইসব দুর্নীতিগাথার ডেমনস্ট্রেশন ইফেক্ট কীরকম হৈতে পারে?
ঠিক। তবে এর পরের কাহিনীটা আমি বলতেছি। দুর্নীতিবিষয়ক ধরপাকড় নিয়া মধ্যবিত্তের যে "উল্লাস" তোমার নজরে পড়তেছে, তার আড়ালে একখান স্থানু বিষাদের কারখানা চালু হৈয়া গ্যাছে। যে সমাজে কোনো রি-ডিস্ট্রিবিউটিভ পলিসি নাই, সেইখানে এইসব হাজারকোটি টাকার ধরপাকড়ের কাহিনী যে আরব্য রূপকথা, সেইটা না-বুঝার মত অবুঝ কিন্তু মধ্যবিত্ত না, কেননা সে বাজার কৈরা খায়। আর আমি কিন্তু দুর্নীতি-ইস্যুর আড়ালের কাহিনী নিয়া মাথা ঘামাইতেছিনা এইখানে, বরং ভাবতেছি মিডিয়া রিপ্রোডাকশনস অব করাপশনস লৈয়া। ঠিকাছে?
শুভরাত্রি, সচলায়তন।
সুমন ভাই দুর্নীতিবিরোধী উল্লাস কি করে সেইটার প্রমান আমার বাপ-মায়রে দিয়া কইতে পারি...কারন তারাও আপনের উল্লেখিত ঐ অংশের প্রতিনিধি। তারে রিসেন্টলি একটা জমি বিক্রী কইরা কিছু টাকা পাইছে হাতে, এখন সেই টাকা কই রাখবো এইটা নিয়া রাইত দিন ভাবে। কারন বেসরকারী ব্যাংক, সেইটা আন্তর্জাতিক হোক কি দেশী হোক তারে আর বিশ্বাস করতে পারতেছে না এই সেগমেন্ট। তাই তারা দেশী ব্যাংকের ব্যাপারে আগ্রহী হইলো, কিন্তু এই ক্ষণে তারা জানতে পারলো যে দেশে আর সরকারী ব্যাংক বইলা কোন অস্তিত্ত্ব থাকতেছে না। তাগো মাথায় হাত! তাইলে?
বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
এগজাক্টলি ভাস্কর! উল্লাসের দিন ফুরায়া গ্যাছে। ঐ দিন পত্রিকায় পড়লাম, আরব বাংলাদেশ ব্যাংক নাকি ৮০০ কোটি টাকা আইটি সেক্টর উন্নয়নের নামে সিঙ্গাপুরে পাচার করার ধান্ধা করতেছে। এখন বুঝ, আমার মা-র যা কিছু সম্বল তার সবটাই এই ব্যাংকে ডিপোজিট আকারে আছে। আমারে ফোন কৈরা জিগায়, কী করুম? সাংঘাতিক বিপন্ন গলা শুনলাম। এই হৈতেছে নিম্নমধ্যবিত্তের দশা, ব্যাংক আছে, ব্যাংকে টাকা আছে, তারপরও অনিদ্রা থিকা মুক্তি নাই! এইটা কিন্তু দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের বাইপ্রডাক্ট। যেসব প্রতিষ্ঠান আগে চালু আছিল (যেমন, বসুন্ধরা, এবি ব্যাংক, বেক্সিমকো) এইগুলার মধ্যে শাট-ডাউন সিনড্রম দেখা দিতে আরম্ভ করছে। এর ভূক্তভোগী কিন্তু মার্জিনাল মধ্যবিত্তরাই। এইটারেই আমি মধ্যবিত্তের "স্থানু বিষাদের কারখানা" কৈতেছিলাম।
তয় শহুইরা মধ্যবিত্তরা আছে ডিলেমায়। তার সামনে দিয়াই বাবুল ধনি হইছিলো, এইটাওতো তার চক্ষুশূল!
বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
ঠিক এই ডিলেমার কথাই কৈতে চাইতেছি ভাস্কর। শহুইরা মধ্যবিত্তের ডিলেমার শেষ নাই। তার চোখের সামনেই সব কিছু ঘটে। ফলে চক্ষে শূল পড়ে তার। আবার চোখ বন্ধ কৈরাও রাখবে না সে। দেখবে, আর দগ্ধ হবে। আবার মিডিয়ার কথা ধর। তোমার ব্লাডপ্রেসার বাড়ল কী কমল, সেইটা তার বিবেচনা না। মিডিয়ার স্বাধীনতা আর মুক্তচিন্তার স্বাধীনতা এক হৈয়া গ্যাছে বঙ্গদেশে। কিন্তু মিডিয়া মানেই কি মুক্তচিন্তা?
নতুন মন্তব্য করুন