শঙ্খ ঘোষের কবিতাবই-এর নাম এটা। সভ্যতার মুখ বিজ্ঞাপনে বিজ্ঞাপনে ঢেকে যাচ্ছে! হেন বিষয় নাই যা বিজ্ঞাপনের ম্যাসেজ বহন করতে ব্যবহৃত হয় না। বিজ্ঞাপন অধ্যয়ন নামে কি কোনো বিষয় আছে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়? নানান বিষয়ের কথা শুনেছি, প্যারাসাইকোলজি বিভাগ পর্যন্ত আছে মার্কিন মুল্লুকের বিশ্ববিদ্যালয়ে, কলিন উইলসনের "অকাল্ট" পড়ে জানা যায়। কিন্তু বিজ্ঞাপন অধ্যয়ন? যেভাবে বিজ্ঞাপন আমাদের প্রাত্যহিক বিষয়গুলোকে পণ্যবিপণনের জন্য দিনের পর দিন টুইস্ট করে চলেছে, যেভাবে সে ঢুকে পড়ছে আমাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনে, যেভাবে সে তার ব্যাখ্যা হাজির করছে ধর্ম এবং ইত্যাকার সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে, তাকি ডিসিপ্লিন হিসেবে অধ্যয়নের যোগ্য হয়ে উঠে নি এখনো? নাকি বিজ্ঞাপনের সর্বগামী চরিত্রের কারণে তার কোনো ডিসিপ্লিনারী বাউন্ডারি নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে না। সাহিত্যে ধর্ম নিয়া মশকরা করলে ব্লাসফেমি হয়, বিজ্ঞাপনে কিন্তু হয় না। অথচ সাহিত্যের চেয়ে বিজ্ঞাপন ফার-রিচিং। বিশ্বাস না হয় দেখুন নিচের বিজ্ঞাপন টা:
[url]
[/url]
মন্তব্য
৫ দিলাম একটা খুবই সময়োপযোগী লেখার জন্যে। ভারতীয় বিজ্ঞাপন ইন্ডাস্ট্রি'র সাথে পাল্লা দিয়ে ওদের সমস্ত ট্রিক্স আমাদের বিজ্ঞাপনওয়ালারাও শিখে ফেলেছে। এই ধারাটা চরমে পৌঁছায় ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় করা গ্রামীন ফোন-এর বাংলা ক্রিকেট নিয়ে সেই লম্বা বিজ্ঞাপন দিয়ে। কোন কোন দিক দিয়ে প্রশংসনীয় অবশ্যই - গ্রামীন ফোন ক্রিকেট-কে স্পনসর করছে আর বিজ্ঞাপনওয়ালাদের ক্রিয়েটিভিটি-ও বিস্ময়কর। কিন্তু শেষ বিচারে আমরা সব ভোক্তাই। যতটা মানুষ বা বাঙ্গালী, ততটা পণ্যের ক্রেতা। দুইটা মোবাইল আর পাঁচটা সাবান বেশি বেঁচতে হলে যদি সুন্দর প্যাট্রিয়টিক বিজ্ঞাপন বানানো লাগে, তাহলে তাই সই। শুধু দেশ কেন, মাল্টিন্যাশনাল আর তাদের বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলা নিজের মা-কে বেঁচতে রাজী থাকবে।
হয়তো একটু বেশি কঠিন হয়ে গেল কথাটা। দারিদ্র্য তুমি মরে করেছো মহান - কথাটা পুরোটাই বুল্শিট। প্রতি বছর ৪ লক্ষ অভিবাসী মনে করিয়ে দেয়, দেশের দারিদ্র্য আসলে কি। এই সব কোম্পানী দেশে বিনিয়োগ আর কাজের সংস্থান আনছে, এটাকে অস্বীকার করিনা। কিছুটা হলেও দরকার আছে। কিন্তু প্রকৃত উন্নয়নে এদের অবদান কতটা সুদূরপ্রসারী? মোবাইল আর সাবান ভিত্তিক মডেল কি উন্নয়নের সফল মডেল হতে পারে? পশ্চিমের মতো বাংলাদেশেও কি আমাদের প্রাথমিক আইডেন্টিটি হবে ভোক্তা, পণ্যের ক্রেতা? বাজার-এর এই কি শেষ পরিণতি? উত্তর জানা নেই।
বহুকাল আগে Vance Packard নামে এক আমেরিকান ভদ্রলোক লিখেছিলেন The Hidden Persuaders নামে একটি বই। ৬০-৭০ এর দশকে বহুল পঠিত - কিন্ত ভ্যান্স বা তার বই, এখন কোনটারই চল নেই। তিনি দেখিয়েছিলেন বিজ্ঞাপন ইন্ডাস্ট্রি কিভাবে ব্যক্তি ও সমষ্টির সাইকোলজি ম্যানিপুলেট করে, কিভাবে একেবারে শূন্য থেকে পণ্যের চাহিদা তারা সফলভাবে তৈরী করতে পারে। গতকাল যা ছিল বাহুল্য (luxury), আগামীকাল সেটাই হয়ে যায় অতি প্রয়োজনীয় সামগ্রী (necessity)। মুক্ত বাজারে যদি যেতেই হচ্ছে, এই সব বই, এই সব শিক্ষাও আমাদের বাচ্চাদের স্কুল কলেজে শেখানো উচিত্ বলে ভাবি। লেখাটির জন্যে আবারো ধন্যবাদ।
P.S. শঙ্খ-র এই কবিতাটাও খুব প্রিয়!
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
সময়োপযোগি লেখা। ...
সুবিনয় দা,
যথার্থই বলেছেন।
আর বেশীরভাগ বিজ্ঞাপনই এখন যৌন নির্ভর। অমুক সাবান মাখুন, তমুক ক্রিমে ফর্সা হোন বা এই গুড়ো সাবান ব্যবহার করে হয়ে উঠুন সবচেয়ে রঙিন পোষাকের নারী; মাথা ঘুরিয়ে দিন তাবৎ পুরুষের। আবার আপনি পুরুষ হলে অমুক ডিওডোরেন্ট বা বডি স্প্রে লাগিয়ে রাস্তায় বা অফিসে গেলে নারীকূলে রব উঠবে 'হাই হ্যান্ডসাম! হাই হ্যান্ডসাম!' -- মোটামুটি এই হচ্ছে বিজ্ঞাপনগুলোর অন্তর্নিহিত দর্শন।
নারী-পুরুষের বাইরে শিশুরাও এখন বিজ্ঞাপন-বাণিজ্যের পণ্য। মোবাইল টেলিফোন, ডেটল, আসবাব, কি চাওমিন -- সব বিজ্ঞাপনে এখন শিশুরাই মডেল। কবে যে এই পুঁজির হাঙ্গর ভ্রুন শিশুদের বিজ্ঞাপন-পণ্য করে বসে!
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
মানতে পারলাম না বিপ্লব ভাই। গ্যালন গ্যালন বডি স্প্রে মাইরাও এই জিন্দেগীতে 'হাই হ্যান্ডসাম' রব শোনা হইলো না
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
অ্যাঁ!
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
বিজ্ঞাপন নিয়ে আপনাদের অবজার্ভেশন ঠিকাছে। বিজ্ঞাপনের কাজই পণ্য বিকানো, অন্য কিছুকে পণ্যে পরিণত করার মাধ্যমে। সেই চক্রে যদি ভগবান বা ভ্রুণশিশু যেই আসুক, পণ্যায়িত হবে নিশ্চয়। সেই কমোডিফিকেশন চক্রের দাপট কতদূর, সেইটাই ভাবছিলাম। সেটা কি কোনো সমাজে বিদ্যমান বাউন্ডারিগুলোকে তার প্রয়োজনে ভেঙেচুরে নিতে সক্ষম? সেই দিন নিশ্চয়ই আসবে যে, বায়তুল মোকাররমের খতিব টুপি পরেই শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপনে মডেল হচ্ছেন (এরকম যে, টুপি যেমন চুলের সুরক্ষা করে তেমনি সালসাবিল শ্যাম্পু....)
সব মিলিয়েই ভাবছিলাম, বিজ্ঞাপনকে শাস্ত্র হিসেবে পাঠ করা হচ্ছে না কেন? বিজ্ঞাপনও তো সমাজের এ ধরনের দর্পণ, নাকি?
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
দেশে হচ্ছে কিনা জানিনা কিন্তু বাইরে তো advertising, communications, marketing - এই সব বিষয়ে প্রচুর ডিগ্রি কোর্স বিদ্যমান। ঢাবিতেও মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট ছিল একটা।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
আমি আসলে বিজ্ঞাপন অধ্যয়ন বলতে এক ধরনের সোশিওলজিক্যাল এপ্রোচের কথা বলতে চাইছিলাম। এমনিতে কম্যুনিকেশন তো একটা বিশাল সাবজেক্ট। সর্বত্র। কিন্তু আমি জানি না এর মধ্যে বিজ্ঞাপনকে একটা সমাজবাস্তবতা হিসেবে পাঠ করবার বিষয়টি কিভাবে আনা হয়। কম্যুনিকেশনস এর ছাত্র কেউ থাকলে জ্ঞান দেন এই বিষয়ে। মোদ্দাকথা, কম্যুনিকেশনস বা অ্যাড-কে টুলস হিসেবে নয়, সমাজ প্রপঞ্চ হিসেবে কতদূর পাঠ করা হয় এই সব বিভাগে?
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
ধন্যবাদ সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্যে। কিন্তু কোন্ কোম্পানি-র কথা বলছেন, বিজ্ঞাপনী সংস্থা? নাকি যেসব বিজ্ঞাপনী সংস্থা যেসব কোম্পানির জন্য বিজ্ঞাপন বানায় তাদের কথা? দেশীয় জিডিপি-তে বিজ্ঞাপনী সংস্থার অবদান কি, সেটা ভাস্কর আমার চেয়ে ভাল বলতে পারবে। আমি তো ম্যাক্সিমাম বিজ্ঞাপনী সংস্থার মাথায় বিদেশী এক্সপার্টদেরই দেখি। তাছাড়া, বিজ্ঞাপন তৈরিতেও বিদেশী প্রযুক্তি, সাইট ইত্যাদি হরদম ব্যবহার করেন আমাদের দেশী নির্মাতারা। প্রায়ই শুনি অমুক নির্মাতা সিঙ্গাপুরে এসেছেন তার বানানো অ্যাড এডিট করার জন্য। ইত্যাদি ইত্যাদি। আর ভারতীয় বিজ্ঞাপনী ট্যালেন্টের ধারেকাছে বাংলাদেশ আছে বলে আমার মনে হয় না, বাংলাদেশ রিলিজিয়াসলি ফলো করে বড়জোর।
..............................................................
[i}শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী![/i]
হা হা হা... ইমরুল। আধুনিক দর্শন যে মন্ত্রটার ওপর দাঁড়িয়ে, সেটা হল দেকার্তের cogito urgo sum বা I think therefore I am. ভোগবাদিতা/কনজিউমারিজমের জায়গা থেকে এই উক্তিটিকে খুবই দারুণভাবে ক্যারিকেচার করা হয়েছে এই বলে যে I shop therefore I am. পোস্ট দেয়ার সময় মনে ছিল না. পরে মনে পরাতে এই ক্যারিকেচারটা যোগ করে দিলাম।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
জামাল ভাষ্করের অংশগ্রহন আশা করছি এই পোস্টে।
জামাল ভাস্কর এই লাইনে বিশেষজ্ঞ মানুষ, উনি আরো পরে হয়ত বলবেন। তার আগে আমরা আমাদের প্রলাপগুলা পাইড়া ফালাই না ক্যান?
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
I think that I shall never see
A billboard lovely as a tree,
In fact unless the billboards fall
I shall not see a tree at all.
-Ogden Nash
জয়েস কিল্মারের বিখ্যাত 'ট্রী' কবিতার এই স্বল্পতর খ্যাত প্যারোডিটি ব্যবহার করে একটা রচনা লিখতে বহুদিন আগে এক স্কুল ছাত্রীকে অনুপ্রানিত করেছিলাম। সেটা প্রথম পুরস্কার পেয়েছিল, এবং হয় তো তার ফলেই কার্জন হলের সুন্দর সবুজকে আড়াল করা বিলবোর্ড গুলো ( যার মধ্যে ছিল গ্রামীন টেলিফোনের সুবিশাল একটি) দূর হয়।
চমত্কার! ওগ্ডেন ন্যাশ বিলবোর্ড নিয়েও রম্য পদ্য লিখে গেছেন দেখছি। নেট ঘেটে জানলাম যে ন্যাশ সেই ১৯৩৩ সালে এই কবিতাটি লিখে গেছেন। আর তার ৭৫ বছর পরে এসে কবিতাটি এখন আমাদের জন্যে রেলিভ্যান্ট।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
অগডেন ন্যাশের উদ্ধৃতি মজার লাগল। সুবিনয় ঠিকই বলেছেন, এই কবিতা এখন আমাদের জন্য রেলিভ্যান্ট। তবে যেভাবে লেখা হয়েছে সেভাবে বোধয় না। আমরা গাছের ডালপালা ছেঁটে (প্রয়োজনে কেটে) বরং বিলবোর্ডকে দৃশ্যমান রাখার ব্যবস্থা করি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের চেয়ে অনেক শক্তিশালী এই বাংলাদেশে।
আরেকটা বিষয় বিলবোর্ড প্রসঙ্গে। বিলবোর্ডের ব্যবসা করে আমার এক বন্ধু। কঠিন এক চক্কর সেটা। ঠিক চর দখলের আরবান ভার্সন। তারা প্রথমে দৃশ্যমানতা বিচার করে কোনো বাড়ি বা অফিসের ছাদ মনে মনে ঠিক করে। তারপর সেই বাড়ির মালিককে বিলবোর্ডের প্রস্তাব দেয়া হয় একটা আর্থিক লাভ দেখিয়ে। মালিক রাজি হলে ভাল, আর রাজি না হলে রাজি করানোর সম্ভাব্য সকল ব্যবস্থা করা হয়। অনেক বড় সিণ্ডিকেট, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর খালেদার ছোট পোলা কিভাবে এই ব্যবসা মনোপলাইজ করেছিল সেই খবর অনেকেই জানেন।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
এই পোস্টে আমারে বিজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞ বানাইয়া দেওয়া হইলো দেইখা আসলে একটা কথাই মাথায় আইলো নেই বনে বাঘ শিয়াল রাজা। তয় সুমন ভাই এখন বিজ্ঞাপণ নিয়া ব্যবসায়িক শিল্প বিষয়ক পাঠ আসলেই বহুত হয়...এক্কেরে পিওর অ্যাডভার্টাইজিং নিয়াই স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেওনের সুযোগও আছে। অন্যান্য যেকোন বিষয়ের মতোই বিজ্ঞাপন নিয়াও বাংলাদেশে বিদেশী বইয়ের উপরেই নির্ভর করতে হয়।
বিজ্ঞাপণ বিষয়টা আসলে কি? এইটা কি আসলে পণ্য বেচতে পারে? মানে বিজ্ঞাপনে বিশ্বাসী ভোক্তারা কি বিজ্ঞাপণের নান্দনিকতা কিম্বা আইডিয়ার শক্তি দেইখা পণ্য কিনতে শুরু করে? এইটা নিয়া বিজ্ঞাপণ শিল্পের নামীদামী লোকগো মধ্যেই বহুত বিতর্ক আছে, আমি নিজে মনে করি বিজ্ঞাপন দিয়া পণ্যবিক্রী বাড়ান যায় না...একাডেমিক যেকোন কারিগরী বিদ্যার মতোন বিজ্ঞাপণ বড়জোর সার্ভিস প্রোভাইড করে মাত্র।
পণ্য বিপনণের বাজারে একটা শব্দ খুব প্রচলিত...যার বাংলা অর্থ আমার জানা নাই...সেই ব্র্যান্ড শব্দটাই বিজ্ঞাপনের একমাত্র উদ্দেশ্য বিধেয় সব। ভোক্তা সমাজে একটা পণ্যের পরিচিতি নির্মাণমূলক শাস্ত্র হইলো এই বিজ্ঞাপন...পরিচিতিটা হইলো ব্র্যান্ড...বিজ্ঞাপন শিল্প এক্কেরেই ভোক্তাসমাজের গড় রুচীবোধ তাড়িত একটা উপস্থাপন।
এই খানে যৌনতা পণ্য হয় কারন যৌনতা ভোক্তা সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। যা করলে ভোক্তাগো দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাইবো বিজ্ঞাপন শিল্প তাই করে। বিজ্ঞাপনী আইডিয়া আসলে পণ্যের পরিচিতিমূলক মেথড আর ভোক্তাসমাজের জনপ্রিয় রুচীবোধরে উসকাইয়া দিতে পারলেই সফল বইলা পরিগণিত হয়।
বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন শিল্পও এই সরল নিয়মেই চলে। এইখানে কারিগরী অবস্থা বাজারের ভলিউম অনুযায়ী খুব লাভজনক না বইলা তার খুব বেশি উন্নয়ন হয় নাই, যেই কারনে বাঙালী বিজ্ঞাপনী ছবির নির্মাতারা মুম্বাই, সিঙ্গাপুর কিম্বা মালয়েশিয়া যায়...শ্যুটিংটা এইখানেই হয় সম্পাদনা আর রঙ ব্যবস্থাপনা বিদেশে।
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
ভাল অবজারভেশন!
ধন্যবাদ ভাস্কর মূল্যবান মন্তব্যের জন্য। আসলে পিউর অ্যাডভার্টাইজিং না, বরং অ্যাডভার্টাইজিং সমীক্ষার ওপর কোনো কোর্স আছে কিনা সেটা আমার কনসার্ন ছিল। বিজ্ঞাপন কিভাবে বানানো হয়, কিভাবে ভাল কম্যুনিকেট করা সম্ভব, কিভাবে ভোক্তা শ্রেণীকে অ্যাড্রেস করতে হয় সেসব তো আছেই। কিন্তু বিজ্ঞাপনকে একটা প্রপঞ্চ হিসেবে পড়ার কোনো সাবজেক্ট আছে কি না। এই যেমন এখানে যে বিজ্ঞাপনটা আছে, একটা ভার্মেলন-এর বিজ্ঞাপনের জন্য পুরা ডেথ রিচুয়ালকে নিয়ে স্যাটায়ার করা হৈল। একটা উপন্যাসের জন্য এমনটা করা হৈলে সেটা ব্ল্যাসফেমি হৈত, কিন্তু বিজ্ঞাপনের জন্য করা হওয়ায় সেটা হৈল না। বিজ্ঞাপনকে এভাবে পাঠ করার কোনো রীতি আছে কিনা সেটা জানতে চাইছি।
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
সুমন ভাই আমি আসলে আপনের চাওয়াটারে ভুল বুঝছিলাম...বিজ্ঞাপনরে একটা সামাজিক প্রপঞ্চ হিসাবে কিন্তু বিজ্ঞাপনের অ্যাকাডেমিশিয়ান গুরুরাও দেখছে...অগিলভি সাহেবের একখান বই আছে on advertising ঐ বইয়ে উনি আসলে বিজ্ঞাপনের প্রভাব প্রতিপত্তি সামাজিক সংস্কৃতির লগে বিজ্ঞাপনের সম্পর্ক তৈরীর কথাই বলছেন। তিনি বিজ্ঞাপনের সুখকর অংশ নিয়াই বিশ্লেষণ করছেন যদিও...এছাড়াও গায়ত্রী স্পিভাকের বিজ্ঞাপন বিষয়ে আলোচনা আছে যদ্দূর জানি...এমনকি গুরু হোমি ভাবাও তার আলোচনার ক্ষেত্র হিসাবে বিজ্ঞাপনরে রাখছেন...একটা পুস্তক পাইলাম অনলাইনে...মনে হইলো বিজ্ঞাপনের সামাজিক প্রপঞ্চ নিয়া সেইখানে ভালোই আলোচনা করছেন জনৈক Anne M. Cronin। বইটার নাম Advertising and Consumer Citizenship: Gender, Images and Rights...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
সম্ভবতঃ বিজ্ঞাপন ব্যাপারটা visual culture'এর বিষয় হিসাবে আলোচিত হইতেছে মধ্য নব্বই থেইকাই...মানসদা মনে হয় এই বিষয়ে তার post স্নাতকোত্তর পড়ালেখা করতেছিলো...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...
হ্যাঁ ভাস্কর, বই আছে কিছু। কিন্তু এটা আলাদা জ্ঞানকাণ্ড হিসাবে কোথাও মনে হয় এখনো এক্সিস্ট করে না। কিন্তু খুবই ইন্টারেস্টিং একটা বিষয় সমাজ বা সংস্কৃতি গবেষণার ক্ষেত্রে। বিজ্ঞাপনের কনটেন্ট এনালিসিস তো আমার খুব প্রিয় বিষয় একটা।
আরেকটা বিজ্ঞাপন:
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!
বিজ্ঞাপনবিদ্যা
টিভিস্ক্রিনের মধ্যস্থতায় আমাদের মধ্যবয়সী নারী ও পুরুষেরা তুচ্ছ ক্রিমের পৌরহিত্যে যেভাবে ডিঙিয়ে আসা চৌকাঠ পেরিয়ে রাতারাতি যৌবরাজ্যে পুনঃসমর্পিত হতে পড়িমরি করে ছুটছে, তাতে পৌঢ়ত্বধারী মানুষের সংখ্যা আখেরে কমে যাবে কি না এ সন্দেহে মুখে প্রশ্নবোধক চিহ্ন এঁকে সমুদয় ব্ল্যাক বেঙ্গল গোটেরা বিজ্ঞাপনবাণিজ্যে নিয়োজিতদের দিকে তাকিয়ে আছে সার সার
বিজ্ঞাপনবিদ্যার খুব রমরমা সময় এখন, মানুষের স্পর্শকাতর সব এলাকা এখন ওদের করায়ত্তে, ওরা দিনেদুপুরে মানুষকে বোকা বানাবার সব কৌশলই শিখে গেছে, শিশুর মুখ দিয়ে ওরা এমন বাক্য বলাচ্ছে যা তাদের কখনো বলার কথা নয়, আবার বুড়ো বলছে শিশুর মতো করে, ওরা প্রেমপ্রত্যাশী মরিয়া যুবককে সানগ্লাস দিয়ে খুশি করে দিচ্ছে
বিজ্ঞজনেরা বিজ্ঞাপনের ব্যাপারে আমাদের সাবধান হতে বলেছেন, তাঁরা এমনকি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন 'মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে' বলে, এখন তো দিন আরো বদলে গেছে, এ খাতে এখন বহু প্রতিভাধরের ভিড়, টাকার কাছে তারা আজ বিকিয়ে দিচ্ছে সমুদয় মেধাফল, বিজ্ঞাপন তাই আজ ফুলেফেঁপে ঢোল হয়ে দাঁড়াতে চাচ্ছে এসে শিল্পের কাতারে
বিজ্ঞাপনে এখন ঢেকে যায় শুধু মুখ নয়, আমূল মানুষ
নতুন মন্তব্য করুন