প্রথম আলোর ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্রের পাকিস্তান ক্রিকেটদল প্রীতি প্রায় সবারই জানা। এই ভদ্রলোকের প্রায় সমস্ত ক্রিকেট সংক্রান্ত রিপোর্ট জুড়েই থাকে তীব্র রকমের পাকিস্তান-বন্দনা, এমনকি এমন কোন ম্যাচ যাতে পাকিস্তান খেলেও নাই সেই খেলাতেও কোন না কোন উদ্ভটভাবে পাকিস্তানের কোন খেলোয়াড়কে টেনে আনতে তার জুড়ি মেলা ভার। যেমন, ম্যাচ রিপোর্ট লিখেছেন অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের কোন ম্যাচের। কিন্তু তার মধ্যে হঠাৎ দেখা যাবে এমন কোন লাইনঃ 'অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ারনার যেভাবে মারমুখিভাবে ইংল্যান্ডের বোলারদের শায়েস্তা করছিলেন, তাতে শাহিদ আফ্রিদির কথা মনে পড়ে গেল। ঠিক এই মাঠেই পাঁচ বছর আগে ইংল্যান্ডের বোলারদের এর চেয়েও বেশী আক্রমণাত্মক একটা ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন আমাদের আফ্রিদি...'
কিন্তু উৎপল শুভ্রের সবচেয়ে নির্লজ্জ রকমের পাকিস্তান প্রেম বোধহয় আমরা এইবারের পাকিস্তানের বাংলাদেশ সফরে দেখতে পারছি। শুভ্র সাহেবের অতীত ট্র্যাক রেকর্ড মাথায় রেখেও তার এই সফর শুরু হওয়ার পর থেকে লেখা কলামগুলোতে যে পরিমান পাকি-প্রীতি ঝরে পড়েছে তা দেখলে পাকিস্তানের ক্রীড়া সাংবাদিকরাও লজ্জা পড়ে যেতে পারে। দেখা যাক তার লেখা সাম্প্রতিক কলামগুলো থেকে কিছু উদহারনঃ
১) ১৭ই এপ্রিল, ২০১৫, প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচের আগে 'রোমাঞ্চ ছড়াচ্ছে যে সিরিজ' কলাম থেকেঃ
"সেই কোচও যেনতেন লোক নন। কাউন্টি ক্রিকেটে যখন সারের পক্ষে খেলেন, ইংল্যান্ডে মায়েরা নাকি শিশুসন্তানকে ঘুম পাড়াতে ভয় দেখাতেন, ‘ওই যে ওয়াকার বল হাতে আসছে!’ হয়তো গল্পগাথাই। কিন্তু এসব গল্পগাথা কখন তৈরি হয়?
ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বিধ্বংসী ফাস্ট বোলারদের সংক্ষিপ্ত তালিকা করতে গেলেও তাতে ওয়াকার ইউনিস নামটি লিখতে হবেই। সেই ওয়াকার প্রায় ১৬ বছর আগের নর্দাম্পটন ম্যাচের সবকিছু মনে করতে পারেন। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ওই একটি ম্যাচই যে খেলেছেন! বাংলাদেশ-পাকিস্তান মুখোমুখি হলেই অনিবার্যভাবে যে ম্যাচ সামনে এসে দাঁড়ায়। "
-------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
"বাংলাদেশ দলে এক শর বেশি ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারের সংখ্যা যেখানে চার, পাকিস্তান দলে মাত্র দুজন। সেই দুজনের আবার এমন এক জায়গায় মিল, যেটি এই সিরিজে বড় নির্ধারকও হয়ে যেতে পারে। অবৈধ বলে ঘোষিত হওয়ার পর দুজনকেই বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। মোহাম্মদ হাফিজ এখনো সেই পরীক্ষার ফল জানার অপেক্ষায়। সাঈদ আজমল পাস করেছেন, তবে মুত্তিয়া মুরালিধরন উত্তর ক্রিকেটের সেরা অফ স্পিনার পরিবর্তিত অ্যাকশন নিয়ে আগের রূপে দেখা দিতে পারবেন কি না, এটি এখন কোটি টাকার প্রশ্ন।
পাকিস্তানের ওয়ানডে দলের বাকি ১৩ জনের তিনজন এখনো ওয়ানডে অভিষেকের অপেক্ষায়। আজমল-হাফিজের পর সর্বোচ্চ ৫৪টি ম্যাচ খেলেছেন যিনি, গত বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাঁর একটি বোলিং স্পেল ক্রিকেটীয় রূপকথায় পরিণত। প্রশ্ন হলো, মিরপুরের উইকেটেও কি ওয়াহাব রিয়াজ ব্যাটসম্যানদের মনে একই রকম ভয়ের কাঁপন ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন?"
http://www.prothom-alo.com/sports/article/505204/
২) ১৯শে এপ্রিল, ২০১৫, দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচের আগে 'মিরপুরে আজ উৎসবের হাতছানি' কলাম থেকেঃ
"পরশু রাতে সেই রহস্যের জট খোলার আনন্দ নিয়ে কাল সকালে তামিম ইকবাল বলছিলেন, ‘আমাদের নিজেদের মধ্যেও এ নিয়ে বিস্ময়ের শেষ ছিল না। বলাবলি করতাম, আমরা পাঁচ শ করলেও মনে হয় ওরা তা চেজ করে ফেলবে। ওরা ৫০ রান করলেও আমরা বোধ হয় তা করতে পারব না।’ বারবার তীরে এসে তরি ডোবায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ শুধুই ব্যাটিং-বোলিংয়ে সীমাবদ্ধ ছিল না। বাংলাদেশ দলের জন্য ‘মানসিক বাধা’টাই হয়ে দাঁড়িয়েছিল সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। পরশু রাতে ৭৯ রানের জয়ের সবচেয়ে বড় মহিমা ওই বাধাটার মড়মড় করে ভেঙে পড়া।"
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
"উইকেট না পাওয়ার মতো রান দেওয়াতেও পরশুর ম্যাচে হাসানের খুব কাছাকাছি ছিলেন পাকিস্তানের এক অফ স্পিনার। তবে আগের ১১১ ম্যাচে তাঁর ১৮৩ উইকেট। সংবাদ সম্মেলনের ঘণ্টা দেড়েক পর সোনারগাঁও হোটেলের সুইমিংপুলের পাশে মাশরাফির সঙ্গে দেখা সাঈদ আজমলের। জুলফিকার বাবরের সঙ্গে আড্ডা মারছেন। মাশরাফির সঙ্গে খুব বন্ধুত্ব। মজা করে মাশরাফি বললেন, ‘কাল তো উইকেট পাচ্ছই। আমি খেলছি।’ এত বড় বড় ব্যাটসম্যানকে আউট করেছেন যে, আজমলের মাশরাফির কথা আলাদাভাবে মনে থাকার কোনোই কারণ নেই। তবে মাশরাফি আসলেই আজমলের ‘বানি’। দুটি ওয়ানডে ও একটি টি-টোয়েন্টিতে আজমলের ৮টি বল খেলেছেন, আউট হয়েছেন তিনবার। মাশরাফির তা খুব ভালো মনে আছে। যা শুনে আজমল বললেন, ‘ঠিক আছে, তোমার উইকেটটা আমার। আমারটা তোমার।’ শুধুই রসিকতা। বিনা যুদ্ধে সূচ্যগ্র মেদিনী না দেওয়ার প্রতিজ্ঞা নিয়ে মাঠে নেমে কেউ কি আর কাউকে উইকেট উপহার দেয়! প্রথম ম্যাচে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে খরুচে বোলিং করার পর আজকের ম্যাচে সাঈদ আজমল আর পাকিস্তান একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে। দলের মতো তাঁরও ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের জন্য উৎসবের হাতছানি!"
http://www.prothom-alo.com/sports/article/506812/
৩) ২৩শে এপ্রিল, তৃতীয় ওয়ান ডে ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের পর 'বাংলাওয়াশ! বাংলাওয়াশ!' কলাম থেকেঃ
"ইনিংসের শুরুতে বাংলাদেশের দুই ওপেনারের ব্যাটিং দেখে বুঝতে সমস্যা হচ্ছিল, আগের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি আসলে কে করেছেন! ২৩ বলে তামিমের ৮ রান, সৌম্যর তখন ৩৫ বলে ৩৩। কারণটা বোধ হয় মোহাম্মদ হাফিজ।
এই ম্যাচের আগের দিনই বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষায় পাস করার খবর পেয়েছেন মোহাম্মদ হাফিজ। তখনই অনুমিত ছিল, পরদিন নতুন বলটা তাঁর হাতেই তুলে দেওয়া হবে। তামিম ইকবালের সঙ্গে যে তাঁর পুরোনো ইতিহাস আছে। যেটিতে অবিসংবাদিত জয় হাফিজের। এই সিরিজের আগে দুই দলের ছয়টি ওয়ানডেতেই বোলিং ওপেন করেছেন হাফিজ। যার প্রথম পাঁচটিতেই সামনে ছিলেন তামিম। তিনবার তাঁকে আউট করেছেন। দুবার প্রথম ওভারেই শূন্য রানে। একবার প্রথম বলেও। ওই পাঁচ ওয়ানডেতে হাফিজের ৪৮ বল খেলে মাত্র ২১ রান করতে পেরেছেন তামিম। কাল তাঁকে উইকেট দেননি, তবে ২১ বলে ১১ রানের বেশি করতে পারেননি।"
http://www.prothom-alo.com/sports/article/510565/
৪) ২৫শে এপ্রিল, একমাত্র টি২০ ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের পর 'ওই 'বিশ্বাস'টাই আসলে সব!' কলাম থেকেঃ
"এই ম্যাচের আগের দিন দুপুরে একান্ত সাক্ষাৎকারে তাঁর অনেক কথাই মনে গেঁথে আছে। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এটি: আমরা পারব—ভেতরে এই বিশ্বাস থাকাটা খুব জরুরি। কথাটাকে শুধু ওয়ানডের জন্যই প্রাসঙ্গিক মনে করেছিলাম। মাশরাফির সঙ্গে কাটানো ঘণ্টা দেড়েক সময়ে সাক্ষাৎকারের বাইরেও কত কিছু নিয়ে কথা হয়েছে। পরদিনের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নিয়ে একটাও নয়। ওই ম্যাচের জয়-পরাজয় নিয়ে যে মনে কোনো প্রশ্নই জাগেনি।
বিদায় নেওয়ার সময় অবশ্য পরদিনের ম্যাচের জন্য শুভকামনা জানিয়েছিলাম। নিছকই ভদ্রতা করে। ওই শুভকামনায় কোনো কাজ হবে না, এ ব্যাপারে যে শতভাগ নিশ্চিতই ছিলাম। পাকিস্তানের সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ কীভাবে পারবে! বাংলাদেশ তো টি-টোয়েন্টি খেলতেই পারে না। হংকংয়ের কাছে পর্যন্ত হেরে বসে!
পাকিস্তানকে ১৪১ রানে আটকে দেওয়ার পরও আগের ধারণা থেকে সরে আসার কোনো কারণ দেখিনি। বরং ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের জয়ের ছবির বদলে মনে উঁকি দিচ্ছিল ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর। সেই রাতে এই মিরপুরেই পাকিস্তানকে ১৩৫ রানে বেঁধে রাখার পরও বাংলাদেশ ৫০ রানে হারতে ‘সক্ষম’ হয়েছিল।
কাল ৩৮ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর মনে হয়েছিল, সেই ম্যাচটাই বোধ হয় ফিরে আসছে আবার। ভয়ডরহীন তারুণ্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া সাব্বির রহমানের দুর্বিনীত স্ট্রোক প্লে দেখতে দেখতে তাই একটু লজ্জা-লজ্জাই লাগল। ওয়ানডে সিরিজ থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাসটাকে কী অবমূল্যায়নই না করেছিলাম!"
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
"সাব্বিরের ব্যাটে স্ট্রোকের ফুলঝুরি দেখতে দেখতে ম্যাচ শুরু হওয়ার ঘণ্টা তিনেক আগে এক কিশোরের সঙ্গে কথোপকথন মনে পড়ছিল। ছেলের কৌতূহল মেটাতে মা ফোন করেছেন প্রায় দুই যুগের সহকর্মী এবং বন্ধুকে। ওয়ানডেতে বাংলাওয়াশের পর টি-টোয়েন্টি নিয়েও তাঁর আশাবাদে জল ঢেলে দিয়ে বলেছি, ‘এই ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা পয়েন্ট জিরো জিরো ওয়ান পার্সেন্ট।’ ছোট্ট ছেলেটাকে তা বলা নিষ্ঠুরতা হয়ে যায় বলে তাকে একটু মোলায়েম করে বললাম, ‘টি-টোয়েন্টিতে তো বাংলাদেশ পারে না বাবা।’ অতটুকুন ছেলের উত্তরটা রীতিমতো চমকে দিয়েছিল, ‘ওয়ানডেতেও তো বাংলাদেশ ষোলো বছর পারেনি।’"
http://www.prothom-alo.com/sports/article/512227/
উপরের অংশগুলো যে বাংলাদেশের কোন নাগরিক নিজে ক্রিকেট দলের ব্যাপারে লিখেছেন, ভাবতে কষ্ট হয়। আমার জানামতে সাংবাদিকতায় পেশাদারিত্ব এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হয়, তাই ক্রীড়া সাংবাদিকেরা নিজেদের দেশের কোন খেলা নিয়ে ম্যাচ রিপোর্ট অথবা কলাম লিখতে গিয়ে কিছুটা ব্যাল্যান্স রাখার চেষ্টা করেন। তারপরেও বেশীর ভাগ সময় দেখা যায় তাদের লেখায় নিজের দলের প্রতি, নিজের দেশের প্রতি, ভালোবাসা, আনুগত্য কিছুটা হলেও প্রকাশ পেয়েই যায়। পাকিস্তানের ওসমান সামিউদ্দিন, ভারতের সিদ্ধার্থ মঙ্গা, আস্ট্রেলিয়ার পিটার ইংলিশ, এদের সবার লেখাগুলোতে কলামের ইঞ্চি বলতে গেলে পুরোটাই কিন্তু ব্যয় হয় নিজের দেশের উপর। অন্যদিকে উৎপল শুভ্র বরাবরই উল্টোটা করে থাকেন, বিশেষ করে যখন প্রতিপক্ষ পাকিস্তান হয়ে থাকে।
এমনিতে শুভ্র সাহেবের কলামগুলো পড়লে হাসি পায়, এবং তার পাকি-প্রীতির জন্য তাকে আরও অনেকের মত আমিও ব্যঙ্গ করে থাকি। কিন্তু পাকিস্তানের এবারের সফর শুরু হওয়ার পর থেকে তার লেখা কলামগুলো আমার কাছে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল পাকিস্তানকে এবার শুধু ১৬ বছরে প্রথমবারের মতই হারায়নি, তাদের কে ইতিমধ্যে ওয়ান ডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে ওয়াইটওয়াশ (তথাপি 'বাংলাওয়াশ') করেছে। একমাত্র টি২০ ম্যাচেও জিতেছে। প্রত্যেকটা খেলাতেই পাকিস্তানকে শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে, তাদের সেই বোলিং অ্যাটাক, যা নিয়ে শুভ্র সাহেবের বন্দনার শেষ ছিল না, এখন পর্যন্ত একটা ম্যাচেও বাংলাদেশকে অল আউট করতে সক্ষম হয়নি। যে কোন টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিরুদ্ধেই (সম্ভবত জিম্বাবুয়ে ব্যতীত) আমাদের টাইগার্সের এমন অনবদ্য খেলা ভূয়সী প্রশংসার প্রাপ্য ছিল। কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন পাকিস্তান, যাদের সাথে আমাদের পুরনো শত্রুতা (দুঃখিত, আমি রাজনীতি আর খেলা বরাবরই মিশিয়ে থাকি), যাদের আমরা ১৬ বছর ধরে হারাতে পারিনি, তখন কয়েকদিনের খেলাগুলোর ফলকে ঐতিহাসিক বললে ভুল হবে না।
তাই যখন দেখি যে এবারও উৎপল শুভ্র তার লেখায় নিজের দেশের দলকে ছেড়ে পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের সুখ, দুঃখ, হাসি, কান্না, অনুভূতি ইত্যাদি নিয়েই বেশী ব্যস্ত আছেন, যখন দেখি নির্লজ্জের মত এটাও তার স্বীকার করতে বাঁধে না যে নিজের দেশকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জেতার এক পারসেন্ট চান্সও দিতে তিনি অপারগ ছিলেন, তখন মনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। আমি জানি না উৎপল শুভ্রের সমস্যাটা কোথায়। তিনি কি আসলেই একজন নির্লজ্জ পাকিস্তান সমর্থক (বাংলায় যাদের পাকিস্তান ও জারজ শব্দ দুটো মিশিয়ে 'পারজ' বলে গালি দেয়া হয়ে থাকে), নাকি তিনি স্রেফ দেশের লাখ লাখ পারজের কাছে খবরের কাগজের কাটতি বাড়ানোর জন্য এমন সব কলাম লিখে থাকেন? যেই কারনেই হোক, আমার চিন্তা করলে খুব অবাক লাগে যে দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিকের ক্রীড়া সম্পাদক বারেবার এমন বেহায়ামি করেও তার চাকরি বহাল তবিয়তে ধরে রেখেছেন।
অবশ্য পরমুহূর্তেই মনে পড়ে যায় যে সেই 'শীর্ষস্থানীয়' দৈনিকের নাম 'প্রথম আলো'। তারপর মনে হয়, আসলেই, অবাক হচ্ছি কেন?
মন্তব্য
পাকিস্তান আমলে একবার হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি সেনাশাসকদের বলেছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানের যোগাযোগের দুটো মাধ্যম আছে। একটা পিআইএ, আরেকটা সোহরাওয়ার্দি।
বর্তমান বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে আইএসআই-সমর্থিত বৃহত্তর জামায়াত আর ক্রিকেট। জামাতের কথা বলতে গেলে তো আলুপেপারের অটোকারেকশনে "দুর্বৃত্ত", "যুবক", এইসব চলে আসে। তাছাড়া জামাতের পাছা চাটলে লোকজনও ছিছি করে। তাই পাকিস্তান ধারণাটাকে বাংলাদেশের জনমনে জিইয়ে রাখার জন্য আলুপেপারের ক্রিকেটই ভরসা। দেখেন না, আফ্রিদি রিটায়ার করার পর উটপোঁদ ওহাব রিয়াজকে হাবিজাবি বিশেষণ বসিয়ে মাথায় তোলার ধান্ধা শুরু করেছে?
উটপোঁদকে একটা পেলাসটিকের আফ্রিদি-যৌনপুতুল কিনে দিয়ে অবসর নিতে বলা উচিত।
এরকম একটা লেখা দরকার ছিলো।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
ঘটনা সত্য। দেশের পোলাপানের পাকিপ্রীতি টিকে থাকার পিছনে এইরকম পারজের অবদান কম না। তবে এরে নিয়া লেখা ব্যয়টা নিদারুণ অপচয় মনে হয়।
স্বয়ম
এসব লেখা দিয়ে উৎপল শুভ্রের মত মানুষের কিছুই হবে না। কিন্তু পষ্টেরিটির জন্য এমন কিছু লেখার প্রয়োজন আছে বলেই মনে করি। একটা আর্কাইভ হিসেবে রাখার জন্য হলেও।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
উৎপল সাহেবকে গরু রচনা লিখতে বললে উনি সম্ভবত এভাবে শুরু করবেন:
গরু একটি উপকারি প্রাণি। গরু মাঠে ঘাস খায়। মাঠে ক্রিকেটও খেলা হয়। সবচে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারে পাকিস্তান দল। পাকিস্তান দলের আফ্রিদি একজন দেবতাতূল্য খেলোয়াড়... (তবে গরু উপকারী প্রাণি বলা প্রথম লাইনটা তিনি না-ও লিখতে পারেন!)
লেখাটা দরকার ছিল। কিছু নমুনা সংরক্ষিত থাকুক।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
চ
দেবদ্যুতি
আমি ভদ্রলোকের কষ্ট লাঘবের প্রচেষ্টা হিসেবে আগামীকালের প্রথম আলু পত্রিকার খেলাধুলা পাতার জন্য কিছু শিরোনাম প্রস্তাব করছিঃ
"আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম?"
"বড় দলকে সম্মান দিতে জানেনা বাংলাদেশ।"
"বাংলাওয়াশ নামক মহামারির কবলে আজ বিশ্বক্রিকেট।"
আলুর লিঙ্ক দুইদিন পরে কাজ করবে না। এইখানে ছবি হিসেবে জমা থাকুক।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
শুধু উৎপল না, তার নেতৃত্বে পুরা আলুর খেলার পাতারই একই অবস্থা। নিজ নামে বেশি লেখা ছাপাইতে কেমন কেমন লাগে দেখে অনলাইন ডেস্কের নামে এইরকম পাকিপ্রেমি আর্টিকেল নামায়। সাম্প্রতিক রান্না আব্বাস নামে আরেক শুয়োরের পয়দা দেখা যাচ্ছে।
আরও কিছু
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
দারুণ সংযোজন কবি। কিছুদিন পর আসলেই লিংকগুলো কাজ করে না, সেক্ষেত্রে এগুলো একেবারে দালিলিক প্রমাণ হিসেবে থেকে গেলো।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
ধন্যবাদ ত্রিমাত্রিক কবি, কষ্ট করে এসব লিঙ্কের স্ক্রিনশট এখানে এটাচ করে দেয়ার জন্য।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
সময় উপযোগী দারুণ পোষ্ট। আমি নিজেও এই বিষয় নিয়ে একটা লেখা শুরু করেছিলাম। বারবার রং বদলানো শুয়োরগুলোকে ধরিয়ে দিতে কারো না কারো ইতিহাসকে তুলে রাখার দায়িত্ব ছিলো, আপনি সেই কাজটি করেছেন তাই কৃতজ্ঞতা। যতদিন উৎপল শুয়োরটার পাকু প্রেম ঝরতে থাকবে ততদিন আমাদের কলমও চলতে থাকবে।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
ধন্যবাদ মাসুদ ভাই। আর আপনার লেখাটিও চাইলে সম্পন্ন করে দিয়ে দেন। কয়েকটা লেখা প্রতিবাদ স্বরূপ থাকা উচিৎ উৎপল শুভ্র ও তার মত বরাহ শাবকদের বিরুদ্ধে।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
এই উৎপল শুভ্র যে পেহলে রোশনির প্রধান ক্রীড়া সাংবাদিক থাকবেন, তাই থাকা উচিত। এরা একজন আরেকজনের পরিপূরক।
অনেক ধন্যবাদ লেখাটার জন্য।
ত্রি্মাত্রিক কবির ইমেজের কাজটাও ভাল হয়েছে।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
আপু পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
লেখাটা খুবই দরকারি একটা লেখা। আমি নিজেই ভাবতেসিলাম শুরু করে দিব কিনা। ভালো হল লেখাগুলো লিঙ্ক এবং স্ক্রিনশট সহ সংরক্ষন হয়ে থাকলো। প্রথম আলো বরাবর টুইট করেছি। লাভ হবে না আমি নিশ্চিত। যতদিন না তাদের জাতীয়ভাবে লজ্জা না দেয়া যায়। যেদিন তারা দেখবে পাকিস্তানের পক্ষে লেখে তাদের লজ্জায় পড়তে হচ্ছে, একমাত্র সেদিনই তারা লেখা ছাপানো বন্ধ করবে।
বাংলাদেশ এর অনেক মানুষের চিন্তাভাবনার শুরুটা হয় প্রথম আলো পড়ে। এবং বাংলাদেশ এ পাকিস্তান এর এত বড় সমর্থক গোষ্ঠী থাকার একটা বড় কারণ হল প্রথম আলো এবং উটপোদ।
--সাগর
উৎপল শুভ্র 'নিমিত্ত'। তার সংসারে স্বামী মতিউর এমন লেখাই প্রত্যাশা করেন অগনিত আওয়ামীলীগ বিরোধী পাঠকের কথা ভেবে।কেননা এরাই তো বাংলাদেশ।
-শূন্য থেকে শূন্য
দলিল হয়ে থাকল এই পোস্ট।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
এইটার দরকার ছিল।
দরকারি পোস্ট। আফসোস একটাই - "উৎকট" শুভ্র তার পাকিপ্রেমময় দুর্গন্ধময় লেখা থামাবেন, সে সৌভাগ্য দেখার সুযোগ বোধ করি আমাদের হবে না। তার সময় ফুরালে তার চ্যালাপ্যালারা চালিয়ে যাবে। "প্রথম আলো" বলে কথা!
হবে না। প্রথম আলুতে মতি চোরার সাথে কাজ করে। লেখার জন্য ধন্যবাদ।
নতুন মন্তব্য করুন