মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশ (সিপিবি) এর সভাপতি। সাম্রাজ্যবাদী হেজেমনির বিরুদ্ধে আজীবন বিপ্লবী। বুর্জুয়াদের যম। বাংলাদেশের নিপীড়িত মেহনতি প্রলেতারিয়েতদের রক্ষাকর্তা। যার দাপটে বাঘ আর গরুও সাম্যবাদে অনুপ্রানিত হয়ে এক ঘাটে পানি খায়। এহেন ঘাগু কমরেড কিছুদিন আগে বিপ্লব করতে করতে সাম্রাজ্যবাদের সবচেয়ে বড় ডেরা আমেরিকায় এসে উপস্থিত হলেন। যখন শুনলাম তখন ভাবলাম 'বেশ বেশ এইবার বিপ্লবী কমরেড এক্কেবারে সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তির মোড়লের লুঙ্গি ধরে টান মারতে আমেরিকায় এসেছেন নিশ্চয়!' সেপ্টেম্বরের একুশ তারিখে কমরেডের শুভাকাঙ্ক্ষীরা তার সম্মানে একটা সম্বর্ধনার আয়োজন করেছিল। প্রবল উৎসাহে এর কিছুদিন পর অনলাইনে সেই সংবর্ধনায় দেয়া কমরেড সাহেবের বক্তব্য পড়তে বসলাম। কিন্তু কমরেডের বক্তব্য পড়ার পর থেকেই মাথা ঘুড়ছে। বক্তব্যর দুটো চম্বুক অংশ নীচে।
"আমি বলি আমি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী, আমেরিকা বিরোধী নয়। আমেরিকা গ্রেট নেশন।"
ওরে বাবা, এ দেখি বিসমিল্লাতেই গলদ। পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে বিপ্লবী কমরেড বলেন কিনা তিনি আমেরিকা বিরোধী না, আমেরিকা 'গ্রেট নেশন'?? এতো দেখি ভুতের মুখে রাম, ইয়ে মানে, আল্লাহ্র নাম ( অফ টপিকঃ রাম নাম মুখ ফস্কে বেড়িয়ে গিয়েছিল, দোহাই লাগে অনুভুতিতে আঘাত পেয়ে ৫৭ ধারায় মামলা কইরেন না, প্লেজ!)। আমি তো ভেবেছিলাম কমরেড ওবামাকে আল্টিমেটাম টাল্টিমেটাম দিবেন। কিন্তু উনি দেখি আমেরিকাকে মহান বানিয়ে দিলেন। এই মানুষই না কিছুদিন আগে বলেছিলেন 'আমেরিকা সর্প হয়ে দংশন করে ও ওঝা হয়ে ঝাড়ে'?? আমি কি কানে ভুল শুনছি? মাথা চুল্কাতে চুল্কাতে পড়তে থাকলাম।
"এক সময় আমেরিকা ক্রীতদাস বানিজ্যে এক নম্বরে ছিলো। অপরদিকে মে দিবসের উৎপত্তি এই আমেরিকাতে।"
প্রথম বাক্য পড়ে যেমন উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিলাম যে 'এই তো কমরেড ইস অন ফর্ম' বলে, এর পরের বাক্য পড়েই আবার সেই উত্তেজনা তেমনভাবেই সুড়ুত করে কমে গেল। মে দিবস পালন শুরু করার জন্য কমরেড সাহেব আমেরিকাকে সাধুবাদ জানালেন? মে দিবসের নেপথ্যের ঘটনা ১৮৮৬ সালে আমেরিকাতে ঘটেছিল তা ঠিক আছে। কিন্তু আমেরিকা যে মে দিবসই পালন করে না! লেবর ডে নামে আরেকটা দিন শ্রমিকদের অবদান স্মরণ করে আমেরিকায় ছুটি হিসেবে পালন করা হয়, কিন্তু সেটা হয় প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবারে। অনেক চেষ্টা করেও লেবর ডে ছুটিকে মে ১ তারিখে স্থানান্তরিত করা সম্ভব হয়নি। কমরেড দেখি 'গ্রেট নেশন' এ পদার্পণ করে আবেগে ইতিহাস গুবলেট পাকিয়ে ফেলছেন।
"এটা অপপ্রচার। ধর্মের সঙ্গে আমাদের কোন বিরোধ নেই। বিরোধ আছে ধর্মবাজ এবং ধর্মব্যবসায়ীদের সঙ্গে। ধর্ম পালনের ব্যাপারে আমাদের কোন বিরোধ নেই। কম্যুনিষ্টরা কিন্তু নাস্তিক নয়। নাস্তিকতা এবং আমার মতবাদ সম্পূর্ণ বিরোধী।"
এটা পড়ার পর আমার মাথা আক্ষরিক অর্থেই ভোঁভোঁ করে ঘুরতে লাগলো। কমিউনিজম আর ধর্মের বিরোধ নেই? সারা জীবন আমি তাহলে কি জানলাম? এ দেখি পুরাই 'ইউ নো নাথিং জন স্নো' অবস্থা! কমিউনিজমের দুই প্রবাদ পুরুষ ধর্ম নিয়ে কি বলে গেছেন তা দেখার জন্য গুগলের শরণাপন্ন হলাম। প্রথমেই কার্ল মার্ক্সঃ
"The foundation of irreligious criticism is: Man makes religion, religion does not make man. Religion is, indeed, the self-consciousness and self-esteem of man who has either not yet won through to himself, or has already lost himself again. But man is no abstract being squatting outside the world. Man is the world of man – state, society. This state and this society produce religion, which is an inverted consciousness of the world, because they are an inverted world. Religion is the general theory of this world, its encyclopaedic compendium, its logic in popular form, its spiritual point d’honneur, its enthusiasm, its moral sanction, its solemn complement, and its universal basis of consolation and justification. It is the fantastic realization of the human essence since the human essence has not acquired any true reality. The struggle against religion is, therefore, indirectly the struggle against that world whose spiritual aroma is religion.
Religious suffering is, at one and the same time, the expression of real suffering and a protest against real suffering. Religion is the sigh of the oppressed creature, the heart of a heartless world, and the soul of soulless conditions. It is the opium of the people.
The abolition of religion as the illusory happiness of the people is the demand for their real happiness. To call on them to give up their illusions about their condition is to call on them to give up a condition that requires illusions. The criticism of religion is, therefore, in embryo, the criticism of that vale of tears of which religion is the halo.
Criticism has plucked the imaginary flowers on the chain not in order that man shall continue to bear that chain without fantasy or consolation, but so that he shall throw off the chain and pluck the living flower. The criticism of religion disillusions man, so that he will think, act, and fashion his reality like a man who has discarded his illusions and regained his senses, so that he will move around himself as his own true Sun. Religion is only the illusory Sun which revolves around man as long as he does not revolve around himself."
আমার ইংরেজি বোঝার ক্ষমতা হয়তো কমরেড সেলিমের থেকে কম, কিন্তু আমার তো পড়ে মনে হচ্ছে এর সারমর্ম হলো ধর্ম মানবসৃষ্ট, এবং একে শাসকগোষ্ঠী ব্যবহার করে শোষিতদের একটা মোহে আচ্ছন্ন করে রাখার জন্য, যাতে তাদের বাঁধা ছাড়া শাসন করা যায়। তাই শোষিতদের উচিৎ ধর্মের মোহ থেকে মুক্তি পাবার যথাসম্ভব চেষ্টা করা। এবার ভ্লাদিমির লেনিন কি বলে গেছেন একটু ঘেটে দেখিঃ
"Atheism is a natural and inseparable part of Marxism, of the theory and practice of scientific socialism."
"Religion is the opium of the people: this saying of Marx is the cornerstone of the entire ideology of Marxism about religion. All modern religions and churches, all and of every kind of religious organizations are always considered by Marxism as the organs of bourgeois reaction, used for the protection of the exploitation and the stupefaction of the working class."
নাহ, এ তো দেখি পরিস্কার বাংলা, ইয়ে থুক্কু, ইংরেজিতে লেখা যে নাস্তিকতা আর কমিউনিজম একেবারে হাতে হাতে যায়! কমিউনিজমে বিশ্বাসী হতে হলে ধর্ম ত্যাগ করাই শ্রেয় তা মার্ক্স এবং লেনিন দুজনেই সাফ বলে গেছেন! এ ছাড়া, সোভিয়েত রাশিয়াতে রাষ্ট্রীয়ভাবে নাস্তিকতার প্রচলন ছিল। চীন এখনও নাস্তিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত, যেখানে ধর্ম সরকারের কঠোর পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রনের মাঝে পালন করতে হয়। কমরেড সেলিম তো তাহলে দেখি কমিউনিজমের সংজ্ঞাই পাল্টে ফেললেন!
রিপোর্টটা পড়া শেষ করার পর কিছুক্ষন অবচেতন হয়ে হাঁ করে কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। হঠাৎ বোটকা পচা একটা গন্ধ পেয়ে সম্বিৎ ফিরে এলো। কোথা হতে আসছে এই পচা গন্ধ? পরক্ষনে টের পেলাম গন্ধটা আসছে আমার কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে। এ হলো পচে যাওয়া বামের দুর্গন্ধ, যেই বাম নিজের দেশে বসে শোষিত শ্রেনির জন্য তামাম পুঁজিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আজীবন যুদ্ধ করে যাওয়ার ঘোষণা দিতে দিতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে, কিন্তু নিজের মেয়েকে পড়তে পাঠায় সাম্রাজ্যবাদী ভিনদেশে, সেই ভিনদেশে গিয়ে বলে 'এই দেশ একটা গ্রেট নেশন'। সেই পচে যাওয়া ভন্ড বামের দুর্গন্ধ, যে নিজের মতবাদ এবং আদর্শের সংজ্ঞা পাল্টে ফেলে জায়গা বুঝে অকপটে টুপি পড়ে ফেলে।
কোনমতে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে নিতে বারান্দার দিকে দৌড় মারলাম। মতিকণ্ঠ ঠিকই বলেছিলঃ 'বিপ্লব চাহিয়া লজ্জা দিবেন না!'
মন্তব্য
বাংলার কমিউনিস্টরা ধর্মভীরু, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়।
এনাদের বক্তব্য পড়লে মনে হয় কার্ল মার্ক্স ভ্লাদিমির লেনিন লিওন ট্রটস্কি প্রমুখ কবর থেকে উঠে এসে আরেকবার লজ্জায় অক্কা পেতেন।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
সম্পূরক প্রশ্নঃ কতিপয় পাপিষ্ঠ যে দাবী করেন-
এই প্রশ্নের জবাব কে দেবে, শুনি? হুমম??
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কমরেড সেলিম দিবেন না নিশ্চিত থাকতে পারেন। উনি ধর্মপ্রান মুমিন কমিউনিস্ট। নিজের বোনের বিয়ে রাশিয়ার মসজিদের হয়েছে এবং তাতে তিনি উপস্থিত ছিলেন সেই দাবীও জোর গলায় করে থাকেন।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
বাঘে মহিষে এক ঘাটে যেত শুনতাম, এখন গরু কেন?
সবই কলিযুগের আছর, শেহাব ভাই। পুঁজিবাদী শক্তির শোষণের চাপে এককালের মহিষ আজ গরু হয়ে গিয়েছে। ছাগল যে হয়ে যায়নি এতেই খুশি থাকেন।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
এই জন্যি এনারা আজীবন তামাশার পাত্রই থেকে গেলেন । এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডিতে নতুন পা দেয়া ছেলেপেলেকে সাম্যবাদ আর আদর্শের কথা বলে সহজে দলে ভেড়ান । একটু জ্ঞান বুদ্ধি হবার পরপরই অধিকাংশ ছেলেমেয়েই এদের হিপোক্রেসি ধরতে পেরে সটকে পড়ে । অল্পকিছু ছেলেপেলে এদের দেখানো ভ্রান্ত আদর্শ বয়ে নিয়ে বাকি জীবন ধুঁকে ধুঁকে চলতে থাকে ।
মামুনুর রশীদ
==========
mamun babu ২০০১ at gmail.com
হাজার মানুষের ভিড়ে আমি মানুষেরেই খুজে ফিরি
যথার্থ কথা বলেছেন। পড়ার জন্য
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
সৎ, মেধাবী তরুণরাই ছাত্র ইউনিয়ন করে। মিছিলে মিছিলে, আন্দোলনে সংগ্রামে, প্রতিবাদে প্রতিরোধে, লাঠি টিয়ার গ্যাসে আস্তে আস্তে বুড়ো হয়।
তারপর একদিন কাজী জাফর হয়ে যায়।
তথ্যসূত্র দিতে ভুলে গেছেন, নিজ দায়িত্বে জুড়ে দিলুমঃ [১] ও [২]
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এভাবে বলতে হয় না ভায়েরা আমার। জাফর সাহেব অত্যন্ত 'সুইট' মানুষ ছিলেন।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
বিকল্প পণ্য ব্যাবহার করুন, ইতিহাস-ঐতিহ্যের ওপর চাপ কমান।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
বাম রাজনীতিবিদদের পাল্টিবাজী দেখলে দারুণ কৌতুক লাগে। বিপ্লব, প্রগতিশীলতা, সাম্রাজ্যবাদ, প্রলেতারিয়েত, আম্রিকা নিপাত যাক ইত্যাদি ইত্যাদি বলে মুখে ফেনা তুলেন; অথচ নিজের স্বার্থের বেলায় ঠিকই আপোষ করেন। যে কোন দলের রাজনীতিবিদরা পচে গেলে গন্ধ ছড়ান, কিন্তু বাম রাজনীতিবিদগণের চরিত্রে পচন ধরলে দুর্গন্ধ বেশিই ছড়ায়; হাজার হলেও মেহনতি মানুষের কথা বলেই তারা রাজনীতি করেন কি না।
কষ্ট হয় সেইসব তরুণ-যুবকদের জন্য, যারা এইসব পচে গলে নষ্ট হয়ে যাওয়া রাজনীতিবিদগণের দেখানো স্বপ্নের উপর ভরসা করে যৌবন উৎসর্গ করেন। দিন শেষে স্বপ্নভঙ্গের জ্বালা বুকে নিয়েই আবারও সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেন।
ফাহমিদুল হান্নান রূপক
পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
"তিনি বলেন, এমন হাস্যকর নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চেয়ে যদি পপুলার ভোটে জামাত কিংম্বা বিএনপি ক্ষমতায় আসতো তাও ভালো ছিলো।"
হ।
হেহে, তিনি একদা বলেছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্র জামাত তোষণ করে, আই গেস আমেরিকা যেহেতু এখন 'গ্রেট নেশন', তাই জামাতও 'গ্রেট পলিটিক্যাল পার্টি'।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
বাংলাদেশের কমিউনিস্টরা মাতাল ট্রাক ড্রাইভারের মতো। বাম দিকে সিগনাল দিলেও শেষতক ডানেই যায়। - কৃতজ্ঞতায় টমাস মল্কেয়ার, এন ডি পি নেতা, ক্যানাডা।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
গোল পিথিমিতে বামে চাপতে চাপতে আলটিমেটলি ডাইনেই আইসা পরতে হয়।
পৃথিবী যে গোলাকার তা ম্যাগেলান সাহেব হাতেকলমে জাহাজে চড়ে প্রমান করতে না গিয়ে কোন বামাতিকে কয়েক বছর ফলো করলেই পারতো। নেহায়েত জানটা হারাতে হতো না।
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
ফর্মাল লজিকের পরিবর্তে ডায়েলিক্টেকাল লজিক প্রয়োজন
একটু খেয়াল করলে দেখব চারিদিকে এ রোগ - - - - আর্জেন্টিনা বনাম বাজিল, আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি, ধর্মান্ধতা বনাম নাস্তিকতা, জাতীয়তাবাদ বনাম আন্তর্জাতিকতাবাদ- ----। আমারা, প্রকৃতপক্ষে, আরিস্টেটলীয় চিন্তার কাঠামোতে অর্থ্যাৎ ধর্মান্ধ চিন্তার কাঠামোতে আবদ্ধ। আমারা শয়তান বনাম ফেরেস্তা বা বেহেস্ত বনাম দোযখ বা ভাল বনাম মন্দ - এই ধরনের বিপরীতমুখী বিচ্ছিন্ন কাঠামোতে সবকিছুকে দেখতে অ ভ্যস্ত। আমারা মা ঝখানে অন্য কিছুর অস্তিতব মানতে রাজী নই। ফর্মাল লজিকের (আরিস্টেটলীয় চিন্তার কাঠামো) সাথে ফাজি লজিকের বা ডায়েলিক্টেকাল লজিকের একটা গুরুতবপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। ফর্মাল লজিক যেখানে সবকিছুকে ভাল/মন্দ স্কেলে সম্পর্কহীনভাবে মাপে, ডায়েলিক্টেকাল লজিক সব ঘটনাকে অবিচ্ছিন্ন চলমান মাত্রায় সম্পর্কযুক্তভাবে দেখতে চায়। সাম্প্রদায়িকতার মত জটিল কোন ঘটনা বিশ্লেষণে ডায়েলিক্টেকাল লজিক প্র্য়োগ করতে না শিখলে আমারা প্রচণ্ড ভুল করব। বুর্জোয়াদের/ ধর্মান্ধদের হাত থেকে বাঁচব না। আমাদেরকে ধর্ম থেকে ধর্মান্ধতাকে, ধর্মান্ধতা থেকে ধর্ম-ব্যবসাকে, প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম থেকে ব্যক্তি ধর্ম-লোকজ ধর্মকে, ঈশ্বর বিশ্বাস থেকে আচারকে পৃথক করতে শিখতে হবে। আমাদেরকে ধর্মকে অখণ্ড সত্তা হিসেবে নয়, তার বিভিন্ন শ্রেণী রূপকে আলাদা করতে হবে, সামন্ত ধর্ম-সাম্রাজ্যবাদী ধর্মকে গরীব-অসহায়-নির্যাতিতের ধর্ম থেকে সুনির্দিষ্ট করতে হবে। যান্ত্রিক বস্তুবাদ নয়,দ্বন্দ্বমূলক বস্তবাদ প্রয়োগ করতে শিখতে হবে। মার্কস -এঙ্গেলস -লেনিন -গ্রামসি প্রমুখ তাদের রচনায় একাধিক স্থানে যান্ত্রিক বস্তুবাদের চাইতে দ্বন্দ্বমূলক ভাববাদের প্রশংসা করেছেন। আমরা যান্ত্রিক বস্তুবাদী বা দৃষ্টবাদীদের মত ধর্মদ্রোহী নই, আমরা ধর্মের সকল রূপকে এক কাতারে বিচার করি না। আমারা গরীব-অসহায়-নির্যাতিতের দীর্ঘ নিঃশ্বাসকে কেড়ে নিতে চাই না, বরং সে যাতে সমতার ভিত্তিতে সেটা পালন করতে পারে তার জন্য লড়াই করি। আমাদের সংগ্রাম সামন্ত ধর্ম-সাম্রাজ্যবাদী ধর্মের বিরুদ্ধে, আমরা ধর্ম ব্যবসাকে-ধর্ম বিদ্বেষকে-পুরুষতন্ত্রকে পরাভূত কতে চাই। আমাদের সকল কাজের মূল লক্ষ্য মানুষের মানুষ হওয়ার পথে সমস্ত বাধা দূর করা, মানুষের অন্তর্নিহিত সৃজনশীলতার উন্মোচন ঘটান।সৃজনশীলতার প্রতিবন্ধক কেবল দারিদ্র নয়, আস্তিকতা-নাস্তিকতা-পুরুষতন্ত্র-জাতীয়তাবাদও হতে পারে। ROJAVA বিপ্লব এই সকল সত্যকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেছে।
সারাদিন আমেরিকাকে গালমন্দ করে বেলা শেষে নিজের মেয়েকে সেই আমেরিকায় পড়তে পাঠানো জায়েজ করার জন্য খানিকটা ডায়ালেক্টিক্স তো লাগবেই। কয়েক কেজি ভারি ভারি শব্দ যোগ না করলে সাম্রাজ্যবাদপ্রেমের মড়া কি জলে ডুববে, বলেন?
আপনার কমেন্ট হয় নাই। আপনি এই জিনিস কোন দিক থেকে এই পোস্টের সাথে ফিট করালেন? নাকি কপি পেস্ট করে দিলেন কোথাও থেকে?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
এমন দাঁতভাঙ্গা শব্দের অর্থ শিখে তারপর তার প্রয়োগ করতে করতেই দিন চলে গেলে বিপ্লবটা ক্যামনে হবে কমরেড?
সময় গেলে যে সাধন হয় না...
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
উরিব্বাস। কমেন্টটা পড়ার পর থেকে মাথা ঘুরতেসে!
এইটা পড়ে আসেন, মাথা উল্টোদিকে ঘুরে ব্যাল্যান্স হয়ে যাবে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
মাথা উল্টাদিকে ঘুরবে এই কনফিডেন্স আপনি কই পাইলেন? এখন একই দিকে দ্বিগুণ গতিতে ঘুরতেসে!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
প্রিয় ওসমান ভাই,
লেখাটা কি ক্লক-ওয়াইজ পড়েছিলেন, নাকি এন্টি-ক্লক-ওয়াইজ?
[ বিদ্রঃ ফর্মাল পড়াশুনার সাথে ডায়ালেক্টিক্যাল পড়াশুনার একটা গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। ফর্মাল পড়াশুনা যেমন কেবলই ডান থেকে বামে কিংবা বাম থেকে ডানে হয়, পরিবর্তনের স্কেলের সাথে সম্পর্কহীনভাবে, ডায়লেক্টিক্যাল পড়াশুনা সেখানে পাঠকের ডির্যেকশন্যাল ওরিয়েন্টেশনকেও পাঠ্যবস্তুর অ্যাঙ্গুলার মোমেন্টামের সাথে অবিচ্ছিন্ন চলমান মাত্রায় সম্পর্কযুক্ত দেখতে চায়। ডায়লেক্টিক লজিক সংক্রান্ত কোনও জটিল ঘটনা বিশ্লেষণে ডায়ালেক্টিক পঠন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে না শিখলে আমরা প্রচণ্ড ভুল করব। ]
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ক্লকওয়াইজ এবং এন্টিক্লকওয়াইজ ঘূর্ণন যেই তলে চিন্তা করতেসেন সেইটার ৯০ ডিগ্রীতে আরেকটা তল কল্পনা করে তার ক্লকওয়াইজ ঘোরা চিন্তা করতে পারেন। দিমাত্রিক চিন্তা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। ত্রিমাত্রিক চিন্তা করেন।
সময়কেও সাথে নিই, চতুর্মাত্রিক ভাবনা হবে। আর ডায়লেক্টিক্যাল চিন্তায় আপনাকে অতি অবশ্যই জোড় সংখ্যক মাত্রা নিয়ে ভাবতে হবে। তিন মাত্রা আবার কেমন কথা? ডান, বাম আর মধ্যম?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
চমৎকার লিখেছেন নাসের ভাই! অন্যরা না বুঝলেও, আমি অন্তত আপনার মন্তব্য দারুন এপ্রিশিয়েট করেছি!
ডাইকোটোমাস ও এক্সক্লুশনিস্ট (বিপরীতাত্নক ও বর্জনাত্নক?) আরিস্টেটলীয় চিন্তাকাঠামো-প্রসূত ফর্মাল লজিকের সীমাবদ্ধতা ও জাড্য কাটিয়ে উঠে ডায়েলিক্টেকাল বা ফাজি কন্টিনিয়ামের জগতে প্রবেশ করলে আসলেই ব্যর্থ, বিভ্রান্ত ও বিমূঢ় বামাতিরা বুঝতে পারবেন শেষেরটা কেন ও কিভাবে বিবর্তনের কানাগলিতে হেজেমজে-মরেপচে গিয়ে ফসিলায়িত হওয়ার বদলে দ্বন্দ্বমূলক নির্দ্বন্দ্ববাদ বা সুবিধামূলক মিলনবাদের পরম বৈজ্ঞানিক মরমী চেতনা বিকাশের মাধ্যমে আত্নসংরক্ষণবাদী-ফেল্টু বামাতি-নব্যতেলাপোকা-বিপ্লবীদের অন্তর্নিহিত সৃজনশীল নৈতিকতাবোধের উন্মোচন ঘটানোর দিশা দেখায়! তাদের জানা উচিত, আমরা গরীব-অসহায়-নির্যাতিতের দীর্ঘ নিঃশ্বাসকে কেড়ে নিতে চাই না, বরং সে যাতে নিজেদের মধ্যে সমতার ভিত্তিতে সেটা চিরটাকাল একনিষ্ঠভাবে পালন করতে পারে - যাতে সেই দীর্ঘশ্বাসের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ও মনোপলি পায়, এবং আমরাও যাতে তাদের মাথায় ফর্মাল লজিকের নারকোল ভাঙার বদলে ফাজি লজিকের আঠালো কাঠাল ভাঙার ব্যবসা আর পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ-বুর্জোয়াতন্ত্র-বেনিয়া, লুম্পেন, ফড়িয়া, লুটেরা ও মুৎসুদ্দীতন্ত্র-ধর্ম ব্যবসা-পুরুষতন্ত্র-জাতীয়তাবাদ- ও বর্ণবাদের সাথে লালন সাঁইয়ের মত 'মিলন হবে কত দিনে' গাইতে গাইতে দ্বন্দ্বমূলক নির্দ্বন্দ্ববাদ বা সুবিধামূলক মিলনবাদের বৈজ্ঞানিক ফাজি (Fuzzy) রাজনীতির রোমান্টিক খেলা চালিয়ে যেতে পারি চিরস্থায়ীভাবে -- তার জন্যই তো আমাদের এই সুমহান কঠিন লড়াই!
এমন চমৎকারভাবে, জলবৎ-তরলং করে বিষয়টা বুঝিয়ে দেয়ার জন্য -- আপনাকে শতসহস্র লালনীল ফাজি সালাম, কমরেড!
****************************************
হুয়াট এ ফাজি লজিক, মাইরি!
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এদিকে, বাংলার বামাতিরা যারা রাশিয়ায় বৃষ্টি হলে বাংলায় ছাতা ধরত তারা তো বেশ দোটানায় পড়েছে। পুতিন ব্যাটা আইসিসের উপর হামলা করায়। নানান রকম হেজিমনি-দেরিদা-ফুকেও কুল পাচ্ছে না।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
বিপ্লব বিপ্লব !!!
প্রতিটি বাংলা সিনেমায় যেমন একটা জোকারের চরিত্র থাকা চাই তেমনি প্রতিটি দেশের রাজনীতিতে একটা জোকার দল থাকা লাগে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বামপন্থী দলগুলোর নেতারা সেই জোকারের দায়িত্ব নিয়েছে।
ভাই জোকারের দল তাই বলে কয়টা দরকার? ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, বাসদ, সিপিবি, জাগপা, সমাজ কৃষক সমাজবাদী দল, পুরা তো জোকার ওভারডোজ হয়ে যাচ্ছে!
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...
নতুন মন্তব্য করুন