আমি আমার মায়ের কথা বলছি। (অখন্ড)।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: শনি, ০৯/০৫/২০০৯ - ১২:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(এই লেখাটি অন্য নামে আরেকটি ব্লগসাইটে প্রকাশিত হয়েছিল প্রায় একবছর আগে। জানিনা এই লেখাটি সচলায়তনের নীতিমালাকে লংঘন করলো কিনা।
লেখাটি একটু বড় বলে প্রথমে অর্ধেকটা দিয়েছিলাম। এখন শেষের অংশটুকুও একসাথে জুড়ে দিলাম। সবার ধৈর্য্যের পরীক্ষা হবে তাতে।)

আমাদের শৈশব বা কৈশোরের সময়টি ছিল বড় অদ্ভুত। আজকের সময়ের সাথে তুলনা করলে মনে হয় কত কিছু জিনিস ছিলনা তখন। এখন যেমন একটি স্কুল বা কলেজ পড়ুয়া ছেলের পকেটে থাকে সেলুলার ফোন, বাসায় ফিরে সে টিভিতে দেখছে স্যাটেলাইটের কল্যানে কত রকম চ্যানেলে কত রকম জিনিস, তারপর আছে ভিডিও গেম। কম্পিউটরে সে কতকিছু করছে, ইন্টারনেটে ই-মেল, চ্যাটিং, ব্লগিং এর মাধ্যমে যোগাযোগ করছে হাজার মাইল দূরের কারো সাথে।

আমাদের বিনোদন বলতে ছিল একটা জিনিসই। তা হচ্ছে রেডিও।
বিশেষতঃ রেডিওর নাটক ছিল আমাদের খুবই প্রিয় একটি অনুষ্ঠান। ঢাকা বেতার আর কোলকাতার আকাশবাণী, এই দুই জায়গাতেই অনেক ভাক ভাল নাটক হোত তখন। এখনো মনে আছে যে ঢাকার নাটকটি হোত রাত পৌনে দশটায়, আর কোলকাতারটি হোত দুপুর বেলায়। আমরা গলা শুনে তখনকার জনপ্রিয় কণ্ঠগুলোকে চিনে ফেলতে পারতাম।

কোলকাতা থেকে প্রচারিত একটি বাংলা নাটক আমার সারা জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এবং আশ্চর্য্যের ব্যাপারটি হচ্ছে এই যে এই নাটকটি আমি কিন্তু শুনিওনি। সে কাহিনী বলবার আগে আমাকে আরও একজনের কথা বলতে হবে।

তিনি হচ্ছেন আমার মা।

আমার মা ছিলেন বাবার সম্পূর্ণ বিপরীত। বাবা যদি হন হিটলার, তাহলে মা টি আমার হবেন নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়িনী (পরপর একটানা দশ বছরের জন্য)। বাবা যদি হন মধ্যাহ্নের অগ্নিগর্ভা সূর্য্য, মা তবে একটি শান্ত, নিস্পলক প্রদীপশিখা। বাবা যদি হন কঠিন ইস্পাত, মা তবে নরম তুলতুলে পালকের বালিশ।

আমার মায়ের খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছিল। তখন তার বয়েস কত ছিল সেটা বললে আপনারা অনেকেই এখন আঁতকে উঠে বলবেন, "এতো বাল্য বিবাহেরও কান কাটবে।" যদিও আমার জন্ম (আমি তাঁদের প্রথম সন্তান) তাদের বিয়ের চার বছর পরে হয়েছিল, আমার সাথে আমার মায়ের বয়সের পার্থক্য খুব বেশী না হওয়ায় আমাকে অনায়াসে তার ছোট ভাই বলে চালিয়ে দেওয়া যেতো।

যদিও সে আমলে মহিলারা খুব একটা পড়াশুনা করতেন না, আর বিয়ের পরে তো নয়ই, আমার মা কিন্তু তার পড়াশুনা বন্ধ করেননি। পরপর আমরা অনেকগুলো ভাইবোন হয়েছি। এরই সাথে মা আমার বিএ অবধি পড়েছেন। আর পড়ার বইয়ের পাশাপাশি পড়েছেন বাংলা সাহিত্যের রাশিরাশি বই।

আমার মা ছিলেন বইপাগল। জন্ম থেকেই আমি দেখছি আমাদের বাড়ী ভর্তি বই আর বই। কার বই ছিলনা সেখানে? আর তার সাথে বাড়ীতে নিয়মিত নেওয়া হোত বাংলা পত্রিকা। লালসালুতে বাঁধানো 'নবকল্লোল' পত্রিকার সংখ্যাগুলোর কথা আমার এখনো পরিষ্কার মনে আছে।

আমার ছেলেবেলাটি কেটেছে মায়ের ল্যাজে ল্যাজে ঘুরে। মা বই পড়ছেন, তো আমিও বই পড়ছি। মা উল বুনছেন, আমিও তার কাছে বসে শিখে ফেলি উল বোনাটা। মা এমব্রয়ডারী করছেন, আমিও তার পাশে সূঁই-সূতো নিয়ে প্রস্তুত।

মা বই পড়তে পড়তে এক সময় লেখালেখিও শুরু করে দিলেন। অনেক আগে 'ললনা' বলে একটি মহিলা সাময়িক পত্রিকা বেরোত। মায়ের গল্প ও কবিতা ছাপা হয় সেখানে বেশ কয়েকটা। বয়সে তখন ছোট ছিলাম বলে মায়ের গল্পগুলো পড়ার অনুমতি ছিলনা আমার। কিন্তু আমারও মনে ইচ্ছে জাগে। আমিও লিখবো।

অতএব কাগজ-পেনসিল নিয়ে বসে যাই। উদ্দেশ্য একখানি কবিতা লেখা। কিন্তু সমস্যা একটাই। লাইনের শেষে ছন্দ মেলাতে হবে। যতই চেষ্টা করিনা কেন, ছন্দ আর ধরা দেয়না আমার হাতে।
যাই হোক, বেশ কয়েক দিন ধরে ধস্তাধস্তির পর শেষে একখানি কবিতা প্রস্তুত হইলো। মাকে দেখালাম সেটা।
মা বললেন,"খুবই ভাল হয়েছে। এটা কি তুমি পত্রিকায় ছাপাতে চাও?"
আমার কবিতা পত্রিকায় ছাপা হবে? এত সুখ আমার ভাগ্যে সইবে তো? (বাংলা সিনেমার নায়িকার সুরে)।
মা বললেন। "ঠিক আছে। আমার কাছে দাও, আমি ফ্রেশ করে লিখে পত্রিকায় পাঠিয়ে দেবো।"

তারপর থেকে আমার তো আর দিন কাটেনা, রাত কাটেনা। পত্রিকা আসার সাথে সাথেই সেটা খুলে বাচ্চাদের সেকশনটা চেক করি। নাহ- আমার কবিতাটি নেই সেখানে। আবার অপেক্ষা।

একদিন অবশেষে আমার ভাগ্যের শিকাটি ছিঁড়লো। সেদিন মা ই প্রথম খুলেছিলেন পত্রিকাটি। তারপর আমাকে ডাকলেন,"দেখো-তোমার কবিতা ছাপা হয়েছে।"

আমি দৌড়ে এলাম মায়ের কাছে। পত্রিকার খোলা পাতাটির ঠিক মাঝখানে জায়গা পেয়েছে আমার কবিতাটি। "আক্তার ও ডাক্তার" ছিল কবিতাটির নাম। তার নীচে আমার নামটিও লেখা। আহা- কি আনন্দ! কিন্তু ভাল করে পড়ার পর আমার আনন্দটি খানিকটা ম্লান হয়ে গেল।

কবিতার লাইনগুলোকে পরিচিত কিন্তু আবার অচেনাও লাগছে। বুঝলাম যে মা আমার কবিতাটির প্লাস্টিক সার্জারী করেছেন। কিছু কিছু শব্দকে বদলে দিয়েছেন। তাতে কবিতাটির মান বেড়েছে নিঃসন্দেহে। কিন্তু কবিতাটি তো আমার রইলো না। আমার প্রথম যে লেখাটি ছাপা হোল সে লেখাটিকে নিজের বলে মনে করতে পারছিলাম না। যদিও বেশীরভাগই আমার লেখা যদিও কেউই জানবে না এ কথা। কিন্তু তারপরেও আমার আনন্দের মধ্যে রয়ে গেল এক ধরণের বিষাদ। পূর্ণচন্দ্রটিকে যেন এক চিলতে মেঘ এসে এক কোণা ঢেকে দিল।

মা আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,"খুশী লাগছে তোমার?"
তার মুখের দিকে তাকিয়ে আমার সত্যি কথাটা বলতে ইচ্ছে করলো না। ঘাড় নেড়ে বললাম, "হ্যাঁ-ভাল লাগছে।"
মা ও হাসলেন। "এই কিন্তু তোমার শুরু হোল। সব সময় লিখবে যা মনে আসে। আস্তে আস্তে দেখবে তুমি একদিন বড় বড় বই লিখে ফেলেছো।"

(আজো অবধি তাই করে চলেছি। যদিও কোন বড় বই লেখাটা এখনো হয়ে ওঠেনি।)

মা কে দেখে আমি চিরটা কালই ভারী অবাক হয়েছি। খুব অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছিল বলেই কিনা আমি জানিনা, মা যেন তেমনি একটি কিশোরীই রয়ে গেছেন। বাবা বেরিয়ে গেলেই আমাদেরকে নিয়ে বিশাল আড্ডা বসাতেন। সেখানে কত রকম গল্প। কথায় কথায় হেসে ওঠেন তিনি। হঠাৎ হয়তো সঞ্চয়িতা খুলে রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করছেন। এখনো কানে তার গলা শুনি,
"দূরে, বহুদূরে
স্বপ্নলোকে উজ্জয়নীপুরে
খুঁজিতে গেছিনু কবে শিপ্রা নদীপারে
মোর পূর্বজনমের প্রথমা প্রিয়ারে।"

মায়ের মুখে শুনে শুনে কত কবিতা মুখস্থ হয়ে গেছে তার ইয়ত্বা নেই।

বাড়ীতে রেডিও ছিল একটাই। সেটের পুরো দখলদার ছিলাম আমি আর মা। আমার অন্য ভাইয়েরা যখন বাইরে দৌড়ঝাঁপ করে বেড়াচ্ছে, তখন আমি আর মা বসে রেডিওতে গান শুনছি, নাটক শুনছি।

মনে আছে একদিন ভোররাতে ঘুম ভেঙে শুনি বারান্দায় বসে মা রেডিও শুনছেন। আকাশবাণী কোলকাতার মহালয়ার অনুষ্ঠান হচ্ছে। স্বর্গতঃ বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গমগম গলায় মন্ত্রোচ্চারন অন্ধকারের মধ্যে কেঁপে কেঁপে উঠছে,
" যা দেবী সর্বভূতেষু শক্তিরূপেন সংস্থিতাঃ।
নমস্তসৈঃ, নমস্তসৈঃ, নমস্তসৈঃ, নমো নমাঃ।"

আমি চাদরের তলায় সে শব্দে কেঁপে কেঁপে উঠছি।
কেমন যেন অপরিচিত মনে হয় মাকে তখন আমার। এই কি সেই সদা হাস্যোজ্জ্বল নারীটি? এর সাথেই আমরা কিছুক্ষন আগে একসাথে বসে সাপলুডু খেলেছি? এই মানুষটিই কি গতকাল আমাকে দম ফাটানো হাসির গল্প বলেছিল রসিয়ে রসিয়ে?

এই মন্ত্রোচ্চারণ কি তবে অন্ধকারে একাকী বসে থাকা দেবীটির জন্যে?

বড় হবার সাথে সাথে একটি জিনিস আস্তে আস্তে বুঝতে পেরেছি। আমার মা তার দুঃখকে সযতনে সর্বদাই আবৃত করে রাখেন হাসির রংচঙ্গে মোড়কে। তার অভিমান, তার যন্ত্রণার খোঁজ আমরা কেউই কোনদিন পাইনি। আমার মা দুঃখের বিষে নীল হয়ে গেলেও তার বিন্দুমাত্র ভাগও আমাদেরকে নিতে দেননি। আমাদের কাছে তিনি সর্বদাই একটি আনন্দের ঝলমলে বেলুন।

এবার নাটকটির কথায় আসি।
একদিন সকালে মা আমাকে বললেন,"কাল তুমি দারুন জিনিস মিস করেছো।"
"কি জিনিস, মা?"
"কাল রাতে একটা খুব ভাল নাটক ছিল রেডিওতে। বাদল সরকারের নাটক।"

প্রখ্যাত নাট্যকার বাদল সরকার বা তার নাটককে নিয়ে কিছু বলবার নেই আমার। গুনীজন মাত্রেই সেটা জানেন।

"আচ্ছা-গল্পটা কি ছিল?"
"চারজন বন্ধু। ওদের নাম জিজ্ঞেস করেছে একজন। ওদের নাম হোল অমল, বিমল, কমল। প্রশ্নকারী ভাবছে যে চার নম্বরের নাম হয়তো পরিমল বা ওই জাতীয় কিছু একটা হবে। কিন্ত তার নাম ইন্দ্রজিৎ। সে আর তিনজনের মতো না । সে তাদের মতো হতে চায়না। এটা নিয়েই নাটক। এইজন্যেই নাটকটার নাম হচ্ছে 'এবং ইন্দ্রজিৎ'।"
"বাহ-সুন্দর কনসেপ্ট তো।"
"নাটকটাতে একটা ছোট্ট কবিতা ছিল। আমার অল্প মনে আছে। অনেকটা এ রকম।
কেন তুমি তরকারী বঁটি দিয়ে কুটবে
কেন তুমি দশটায় অফিসেতে ছুটবে
কেন তুমি ডালে দেবে আটখানা লংকাই
সব্বাই করে বলে সব্বাই করে তাই।

মানে আমরা সবাই একই ভাবে চলছি।"
"হুম।"
আমার মাথার উপর দিয়ে চলে গেল ব্যাপারটা। বিরক্ত হয়ে ভাবছি, যে প্রেম-ভালবাসার নাটক কি উঠে গেল নাকি দেশ থেকে?

মা আবার কথা বলেন,"কালকের নাটকটা শুনে আমার একটা কথা মনে হোল।"
"কি কথা, মা?"
"তুমি বড় হয়ে ইন্দ্রজিৎ হয়ো। অমল, বিমল, কমল না, তুমি হবে ইন্দ্রজিৎ। কারোর মতন না। তুমি আলাদা। তুমি ইন্দ্রজিৎ।"

মায়ের কথা শুনে আমার মাথা ঝিমঝিম করতে থাকে।

আমি মায়ের কথা ঠিক বুঝতে পারিনে। ইন্দ্রজিৎ হবো মানে? কে এই ইন্দ্রজিৎ? সে দেখতে কেমন? কি করে সে?

"আমি কি ভাবে ইন্দ্রজিৎ হবো? দেখতে আমি অ্যাভারেজ, কাজে-কর্মেও তাই। আমি কিভাবে সাধারণের উপরে উঠবো? সাধারণ লেভেলেই থাকতে পারিনা।"

মা হাসেন। "মানুষের চেহারা বা তার কাজকর্মই কি সবকিছু? নিজের অন্তরের দিকে তাকাবে। সেখানেই লেখা আছে তুমি কেমন। সেখানেই তুমি ইন্দ্রজিৎ হবে।"

মনে মনে বাদল সরকার আর তার কাল্পনিক ইন্দ্রজিৎ কে তখন আমার ঘুষি মেরে গুঁড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। কি এক ঝামেলায় পড়লাম রে বাবা!

সেদিনের সে ক্ষণটি থেকে আমার জীবন আমূল বদলে গেল। মাথার ভিতর একটি কথাই শুধু ঘোরাফেরা করে আজ অবধি। আমাকে ইন্দ্রজিৎ হতে হবে। কি ভাবে তা জানিনা, শুধু জানি সে সাধারণ মানুষ নয়। ইন্দ্রজিৎ হওয়ার জন্যে আমি সেদিন থেকেই আস্তে আস্তে বদলে যেতে লাগলাম।

যদিও বাইরে থেকে আমাকে অসাধারণ ভাবার কোনই যুক্তিসংগত কারণ নেই, কিন্তু ভিতরে ভিতরে আমি অসাধারণত্বের সাধনায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। আর দশটা মানুষ যা, তা থেকে আমাকে আলাদা হতে হবে। সাধারণ মানুষের হাসিকান্না, চাওয়া-পাওয়া তো আমার জন্যে নয়। আস্তে আস্তে আমি দেখতে পেলাম যে দৈনন্দিন জীবনের জিনিসগুলো আমার কাছে মূল্যহীন হয়ে পড়ছে। মানুষের সংগটিও তেমন আকর্ষণীয় মনে হয় না।

তাহলে কোন জিনিসটি ভাল লাগে আমার? তেমন কোনকিছুই নয় আসলে। আমার যেন কোনকিছুতেই আর কিছু যায় আসে না। বিদ্যার্জন, ভাল চাকরী, টাকা-পয়সা, প্রেম-ভালবাসা সব কিছুই বড় পানসে লাগে। একসময় বুঝতে পারি যে আমি আস্তে আস্তে একাকী হয়ে পড়ছি। নিজস্ব একটি ভুবন গড়ে উঠছে আমার ভিতর। একমাত্র সেখানেই আমি স্বচ্ছন্দ, সেখানেই আমি প্রাণবন্ত। তবে কি আমি সেই কল্পনার জগতটিতেই কেবল ইন্দ্রজিৎ?

আমার জগতটিতে আরো বাসিন্দা আছে। তাদের কাউকেই চিনিনা বাস্তবে, অথচ তাদের সাথে মনেমনে কথা হয় নিয়মিত। ওদেরকে নিয়ে ভাবি। ওদের গল্প শুনি। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হলে ওদেরকে নিয়ে গল্প লিখি। লেখালেখির অভ্যাসটাতে যতি পড়েছিল অনেকদিন। আবার শুরু করেছি। এখন লিখতে ভাল লাগে। মায়ের কথা মনে পড়ে। মা বলেছিলেন, যা মনে আসবে তাই লিখবে।

মায়ের কথায় আবার ফেরত যাই।

আমার মা এক অদ্ভুত মানুষ। তিনি নিজের ব্যাপারে বড় নির্লিপ্ত। তার কাছে বেশীর ভাগ পার্থিব জিনিসেরই খুব একটা বেশী মুল্য নেই। কিন্তু তার আছে একটি বিশাল হূদয়। আমরা যদি কোনদিন কিছু একটা চাইলেই তিনি যেভাবেই হোক সেটি দেবার চেষ্টা করেছেন। কোথায় টাকা পেলেন তিনি? মিস্টার হিটলার এর কাছ থেকে নিশ্চয়ই নয়।

এখন জানি তিনি গোপনে নিজের গয়না গুলো বেচেছেন। এখন তার হাত খালি, গলা খালি, কিন্তু তার পরেও কি অবলীলায় তিনি হেসে উঠেছেন। আমরা বাড়ী গেলে আনন্দে নেচে উঠেছে তার চোখের তারা, গলার স্বরে থইথই করেছে ভালবাসার রঙ্গধনু। তারপর সোজা রান্নাঘরে ছুটে গেছেন আমাদের পছন্দের জিনিসটি বানানোর জন্যে। মা তার নিজেকে আড়াল করে আমাদের সবাইকে দিয়েছেন তার সবটুকু।

বাবা যেমনই কঠিন প্রকৃতির ছিলেন, মা ছিলেন তেমনি নরম। মায়ের কাছে আমরা স্বাভাবিক শাসন পাইনি। হয়তো পরীক্ষার রেজাল্ট ভাল হয়নি। রেজালটের দূঃখের চেয়ে বেশী চিন্তিত বাবার ধমক নিয়ে। মা তখন এসে মৃদু স্বরে সান্ত্বনা দিয়েছেন, বলেছেন আগামী বার ভাল করে চেষ্টা করার জন্যে।
মায়ের কাছ থেকে যে আমরা শাসন পাইনি তা নয়। কিন্তু সেটা ছিল অন্যরকম। একবারের কথা বলি।

তখন বোধহয় আমি স্কুলের শেষদিকে পড়ি। এক বন্ধুর কাছ থেকে চেয়ে একটি বই এনেছি। লেখক বিদ্যুৎ মিত্র। বইটি ছিল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য (সর্ববিদ্যায় জ্ঞানান্বিত হতে হবে না?)। বইটিকে বুক শেলফের পিছনের দিকে লুকিয়ে রেখেছি, পরে সুযোগ পেলে পড়বো। আমার কপাল খারাপ, কি মনে করে মা একদিন ভাবলেন যে এলোমেলো বুকশেলফটিকে একটু গোছানো দরকার। আমি বাসায় ছিলাম না তখন। যাই হোক বাসায় ফিরে পড়তে বসেছি, এমন সময় মা ঘরে এলেন। মলাট দেওয়া বইটি আমার দিকে এগিয়ে দিলেন।
"এটা কি তোমার বই?"
লজ্জায় আমার কান অবধি লাল হয়ে গেল। মাথা নীচু করে থাকি।
"তুমি কি কিনেছো নাকি চেয়ে এনেছো?"
"চেয়ে এনেছি।"
মা বললেন, "বই পড়ার ব্যাপারে আমার কোন নিষেধ নেই। সব বই পড়ার অধিকার থাকা উচিৎ সবার। তবে বইটি পড়ার মত যোগ্যতা পাঠকের আছে কিনা সেটা দেখা দরকার। সব পাত্রে কি সব জিনিস মানায়?"
আমার মাথা নীচু হতে হতে তখন প্রায় হাঁটু ছুঁই ছুঁই করছে। আহা-এখন যদি একটা ভুমিকম্প হোত!
মা বইটি টেবিলের উপর রাখেন।
"যার বই তাকে কালকে ফেরত দিয়ে এসো।"
সেই সন্ধ্যার কথা মনে হলে আজো আমি লজ্জায় জড়োসড়ো হয়ে যাই। ছি ছি, মা কি ভাবলেন আমাকে? এই কি তাঁর প্রত্যাশার ইন্দ্রজিৎ?

মা আমাদের কোন কিছুতে দুঃখ পেলে কখনো বকেন নি। শুধু চোখটি নামিয়ে নিতেন। একটুক্ষণ চুপ করে থাকতেন। তা যে কত বড় হয়ে আমাদের বুকে বিঁধতো। আহা-এমন মায়ের মনে কষ্ট দিলাম আমি। আর কোনদিন সে ভুলের পুনরাবৃত্তি হয়নি।

পিছন ফিরে যখন তাকাই, তখন দেখি মা আমাদের কাছে কোন কিছুই চাননি কখনো। না আমাদের টাকা, না আমাদের সময়, না আমাদের মনোযোগ। মাঝে মাঝে দেশে ফোনে করতে হয়তো দেরী হয়েছে। মা তার জন্যে কখনো অনুযোগ করেননি। কখনো বলেননি, আমাদের কথা চিন্তা করে কতরাত তিনি নির্ঘুম কাটিয়েছেন, জায়নামাজ ভিজিয়েছেন চোখের পানিতে। কিন্তু আমি জানি, আমি বুঝি।

প্রথমে যখন বিদেশে এলাম, তখন মা আমার জন্যে তৈরী করলেন এক সেট শোবার পোশাক। নীল রঙ্গের পাজামা আর জামা। আমি অবাক হয়েছিলাম।
"এ আবার কেন? আমি তো লুঙী পরে ঘুমাই চিরটাকাল।"
"বিদেশে যাচ্ছিস। ওখানে ডর্মে থাকবি। কত রকম লোক।"

জামাটি পরেছি অনেক। একসময় ছিঁড়ে গেলে ফেলে দিয়েছি। পাজামাটি পরা হয়নি কোনদিন। মাঝে মাঝে সেটিকে ক্লোজেট থেকে বার করে দেখি। কি সুন্দর করে তৈরী করেছেন মা । প্রতিটি স্টিচে লেগে আছে গুঁড়ো গুঁড়ো মায়া, কুচি কুচি স্নেহ আর বিশাল এক থাবা ভালবাসা। হালকা নীল কাপড়ের মধ্যে কালো পাইপিং করা ডিজাইন। মনে হয় একদম দোকানের জিনিস। এটি বানানোর সময়ে মায়ের চোখজোড়া কি জলে ভরে উঠেছিল? মা কি জানতেন যে তার এই ছেলেটি আর কোনদিন দেশে ফিরবেনা?

আমি জানি আমার কাছে মা একটা জিনিস চেয়েছিলেন। আমি যেন লিখি। আমি যেন লেখক হই। আমার পড়াশুনা, আমার ডিগ্রি, আমার চাকরি এসব নিয়ে মা খুব একটা মাথা ঘামান না। এ তো যে কেউই অর্জন করতে পারে। তার ইন্দ্রজিৎ ছেলেটি হবে আলাদা। তার নামে বই বেরোবে, তাকে লোকে চিনবে।

অনেক দিন ধরে লেখালেখি হয়নি কোন। মা মাঝে মাঝে একটু বলেন,"দিনে এক লাইন হলেও লিখিস।"
আর লেখা? কোথায় সময়? কোথায় মনোযোগ?

মা কিন্তু তার লেখালেখি চালিয়ে যাচ্ছেন। টুকটুক করে বেশ কয়েকটা বইও বের হয়েছে। কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প। আমি জানি মা নিজের বইয়ের বদলে আমার বইটি দেখে আরো অনেক বেশী খুশি হতেন।

মা প্রতিবারই বলেন,"একটা বই বের করতে পারবি না?"
"মা, তুমি কি পাগল হয়েছ? আমার বই কে ছাপবে? কে চেনে আমাকে? কে কিনবে আমার বই?"
"তোর লেখার হাতটি ভাল ছিল। একটা উপন্যাস লিখে ফেল। বই ছাপানোর টাকা আমি দেব।"
সেই আমার চিরচেনা মায়ের গলার স্বর। মনে পড়ে তার খালি গলা আর খালি হাতের কথা। আমার বইয়ের জন্য এবার তুমি কি বেচবে মা?
"টাকা দিয়ে বই ছাপতে বলছো আমাকে? ও আমার ভাল লাগে না।"
মা অসহায়ের মতো বলেন,"তাতে কি হয়েছে? একটা বই ছাপা হোকনা। দেখিস তোর লেখা পড়ে সবাই কত ভাল বলবে।"
আমি হাসি। "তোমার কাছে তো মা আমি সর্বগুণে গুণান্বিত। আমি যা দু' কলম লিখি, তা পড়ার মত লোক এই দুনিয়ায় তুমি ছাড়া আর কে আছে?"
মা তার দাবীটি ভোলেন না। "এবার তোকে ছেড়ে দিলাম। পরের বার কিন্তু তোকে বই বার করতেই হবে। নাহয় পান্ডুলিপিগুলো আমাকে দিয়ে যা। আমিই তোর বই বার করে দেব।"
"বাদ দাও তো মা।"

এখন মনে হয়, মা আমার কাছে মাত্র এই একটা জিনিসই চেয়েছিলেন। সেটা কি আমি তাকে দিতে পারতাম না? নাহয় লোক-টোক ধরে একটা বই কোনমতে ছাপাতামই। কয় পয়সাই বা আর লাগতো? আমেরিকায় বসে কত পয়সা প্রতিমাসে আজেবাজে খাতে উড়ে যাচ্ছে। এযাবত লেখা ছোট গল্পগুলোকে একসাথে করলে কি একটা ছোটখাটো বই হোত না?

জীবনে কত কিছুর স্বপ্ন দেখেছি। ভাল রেজাল্ট, বিদেশ যাওয়া, উঁচু ডিগ্রি, চাকরি, বিয়ে, বাচচাকাচ্চা আর কত কি। এখন মনে হয় এর অনেক কিছুই মামুলি জিনিস। অতি সাধারণ। একজন ইন্দ্রজিতের জন্য বেমানান। "সব্বাই করে বলে সব্বাই করে তাই।"

একলা ঘরে মা আশায় বসে থাকেন। হয়তো একদিন ছেলেটির মতিগতি ফিরবে। একদিন সে হয়তো তার মায়ের এই আশাটি পূরণ করবে। হয়তো একদিন সে এসে দোরগোড়ায় কড়া নাড়বে। তার হাতে থাকবে একটি বই। ছেলেটি মায়ের হাতে বইটি তুলে দেবে। "শুধুমাত্র তোমার জন্যে, মা।"

আনন্দে মায়ের চোখে হয়তো সেদিন জল আসবে আবার। ছেলেটির মাথায় তিনি সস্নেহে হাত বুলিয়ে দেবেন। ছদ্ম অনুযোগের সুরে বলবেন, "এতদিন পর তোর মায়ের কথা মনে পড়লো।"
ছেলেটিও হাসবে, "এবার আর খালি হাতে আসতে চাইনি, মা। সবকিছুর যোগাড়যন্তর করতে একটু দেরী হয়ে গেল।"
মা বইটি নেড়েচেড়ে দেখবেন। "বাহ-কি সুন্দর ছাপা। দেখলেই পড়তে ইচ্ছে করে।"

প্রবাসের শীতার্ত সন্ধ্যায় গাড়ি চালাতে চালাতে ছেলেটি আনমনা হয়ে যায়। তার ক্লান্ত চুলে পরিশ্রমের কুয়াশা, তার পরেও চোখের কোণায় চিক চিক করে স্বপ্নটি। হবে, একদিন হবে। ছেলেটি ইন্দ্রজিৎ হবেই হবে। মা বলেছেন না?


মন্তব্য

রেনেট এর ছবি

চমৎকার লাগলো। পরের পর্বের অপেক্ষায়।
---------------------------------------------------------------------------
No one can save me
The damage is done

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

আরেফীন [অতিথি] এর ছবি

অপেক্ষায় রইলাম হাসি

তানভীর এর ছবি

চলুক

এক সাথেই পুরোটা দিতে পারতেন।

অনিকেত এর ছবি

খুব ভাল লাগছে ---চলুক জোর কদমে----
আর আপনার মায়ের জন্যে বিনম্র শ্রদ্ধা--!!
এমন চমৎকার একজন মা পাওয়া ভাগ্যের কথা-----!!!

ছায়ালীন [অতিথি] এর ছবি

দুর্দান্ত লেখা !

পরের পর্ব কবে আসবে?

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ধুরো!! বাকিটা দেন তাড়াতাড়ি! মনে হল যেন পড়তে পড়তে শেষে এসে খেয়াল করলাম বইয়ের শেষ ফর্মা নেই!

সচল জাহিদ এর ছবি

অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী পর্বের জন্য

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অনিকেত এর ছবি

কাঁদিয়ে ছাড়লেন জাহিদ ভাই----
আমার এখন আর কোন কিছুই কাজ করছে না--মাথাটা কী রকম জানি ফাঁকা ফাঁকা হয়ে গেল----

এই রকম একজন আত্মত্যাগী মহীয়সীকে আপনি মা হিসেবে পেয়েছেন---আপনি নিশ্চয়ি জানেন আপনি কত ভাগ্যবান।

আমিও বলব, লেখা থামাবেন না জাহিদ ভাই---নাহয় আমার মতো লোকের বুক ভাঙ্গবে প্রতিবার (আপনার 'নির্বাসনে যাবার আগে' লেখাটি আমার প্রিয়তম পোষ্টের একটি) কিন্তু তাতে কী? এই বছরের শেষে লেখাগুলো জড়ো করে ছাপিয়ে দিন---

আগেও লিখিছি--এখন আবার লিখছি--আপনার মা-কে আমার বিনম্র শ্রদ্ধা--
ভাল থাকবেন, জাহিদ ভাই---

লাল-মডু এর ছবি

এই লেখাটি অন্য নামে আরেকটি ব্লগসাইটে প্রকাশিত হয়েছিল প্রায় একবছর আগে। জানিনা এই লেখাটি সচলায়তনের নীতিমালাকে লংঘন করলো কিনা।

ব্লগসাইটে প্রকাশিত লেখার ক্ষেত্রে সচলায়তন '৭২ ঘন্টার নীতি' অনুসরন করে । সুতরাং আপনার লেখা নীতিমালা লংঘন করেনি ।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

s-s এর ছবি

খুব রুচিশীল একজন মা পাওয়া যে কত ভাগ্যের ব্যাপার সেটা বড় হয়েই উপলব্ধি করেছি বারবার, আপনিও নিশ্চয়ই।

আদৌ কি পরিপাটি হয় কোনো ক্লেদ?ঋণ শুধু শরীরেরই, মন ঋণহীন??

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

মাকে নিয়ে লেখা কখনো খারাপ হয় না। এটাও হয়নি। খুব ভালো লাগলো আপনার লেখার চাইতে আপনার মাকে।
অফটপিকঃ আপনার মায়ের নামটা কি জানতে পারি?

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

রেনেট এর ছবি

দ্বিতীয় অংশ পড়ে আফসোস হল...এই লেখায় ২ বার পাঁচ তারা দিতে পারলাম না।
স্রেফ অসাধারন!
---------------------------------------------------------------------------
No one can save me
The damage is done

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভাল লাগলো।
পুরটায় একসাথে পড়তে পারায় বেশ আনন্দিত।
--------------
শিকড়ের টান

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এতবড় লেখা, পড়তে পারবো না ভেবেছিলাম। পড়া শুরু করে থামতে পারিনি আর।

খুব সুন্দর লিখেছেন। অন্যরকম একজন মা।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

লেখাটি শেষ করলাম। আপনার লেখার প্রশংষা সবাই করবেন আমি সেটা না করলেও কিছু যাবে আসবে না। আমি আপনার মা'কে সশ্রদ্ধ সালাম জানাই। ওনার মাঝে নিজের মায়ের অনেক ছায়াই পেলাম, বিশেষত পড়ালেখা নিয়ে।

মা আজকাল পড়ার সময় পান না, কিন্তু একটা সময় ওনার পড়ার সাথে পাল্ল দেওয়াটা ছিলো রীতিমতোন অসম্ভব!
ভালো থাকুন।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আগামী বইমেলায় আপনার বই কিনে পড়ার অপেক্ষায় রইলাম ইন্দ্রজিৎ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

কাল পড়েছিলাম প্রথম অংশটুকু। মন্তব্য করা হয়নি। আজ পুরোটা একসাথে পড়লাম আবার। এক নিঃশ্বাসে। অসাধারণ একটা লেখা। স্রেফ দুর্দান্ত।

প্রতিটি স্টিচে লেগে আছে গুঁড়ো গুঁড়ো মায়া, কুচি কুচি স্নেহ আর বিশাল এক থাবা ভালবাসা।
চাইলে এরকম করে প্রায় পুরো লেখাটাই উদ্ধৃত করা যায়। কীভাবে যে লেখেন এরকম করে! একদম ছুঁয়ে গেল।

আপনার মাকে সশ্রদ্ধ সালাম। এমন মা পাওয়া সত্যিই পরম ভাগ্যের ব্যাপার। আশা করব, আগামী বইমেলায় আপনার বই অবশ্যই বের হবে। ক্রেতার লাইনে এখনই দাঁড়িয়ে গেলাম, 'ইন্দ্রজিৎ'দা হাসি

তানবীরা এর ছবি

ইন্দ্রজিত মায়ের আশা পূরন অবশ্যই করবে।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মূলত পাঠক এর ছবি

কী করে লেখেন এমন!

রানা মেহের এর ছবি

মাকে ভালোবাসা
ইন্দ্রজিত এই দেবীর আশা পুরণ করুক
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আজকাল হাতে সময় পাইনে একদম। লেখা দেওয়া তো দূরের কথা, অন্যের লেখা পড়বার মত সময়ও পাইনে। মাকে নিয়ে পুরনো লেখাটা পোস্ট করবার পর কার কেমন লাগলো তা আর দেখা হয়নি।
আপনাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ পড়ার আর মন্তব্য করার জন্যে। আলাদা করে লিখতে গেলে অনেক সময় লাগবে তাই এখানেই সে কাজটি করে ফেলছি।
ভাল থাকুন। আনন্দে থাকুন। সব মায়েদের জন্যে আমার বিনম্র শুভেচ্ছা।
ও হ্যাঁ-রিটন, আপনি আমার মায়ের নামটি জানতে চেয়েছিলেন। থাক না হয় সেটা। আমার মা তেমন পরিচিত কেউ নন।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।