অণুগল্প-১০। চুমুক।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৯/০৭/২০০৯ - ৫:০৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কপালে কে যেন হাত রাখলো। তিনি চোখ মেলে তাকালেন।

তার জন্যে হাসপাতালে কেউ আসেনা। এই সময়ে তো নয়ই। আত্মীয়স্বজনদের সাথে যোগাযোগ কোন কালেই তেমন ছিলনা। মাঝেমাঝে এক দূর সম্পর্কের ভাগনীই শুধু দেখা করতে আসে।

দুপুর বেলাটিতে হাসপাতালটি একদম চুপচাপ হয়ে যায়। তাই তিনি চোখ বন্ধ করে ভাবছিলেন এই দীর্ঘজীবনের কথা। কতকিছু দেখা হোল, কত হাসি কত গান কত বেদনা। আবার কত কিছুই দেখা হোলনা।

হাতের স্পর্শে চোখ খুলে তিনি অবাক হলেন। তাঁর বিছানার পাশের ছোট্ট টুলটিতে একটি তরুনী বসে আছে। তাকে ঠিক চিনে উঠতে পারছিলেন না, এমন সময়ে মেয়েটি একটু লাজুক ভাবে হাসলো। বাঁ গালের টোলটি দেখে তার সবকিছু মনে পড়লো, এবং তিনি বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না যে জলজ্যান্ত মেয়েটিই তাঁর সামনে বসে আছে।

‘কেমন আছো?’ মেয়েটি এবারে কথা বলে। তার গলার স্বরটি সেই আগের মতোনই সংগীতময়।
তিনি অভিভূত হয়ে তাকিয়ে থাকেন। তিনি কি স্বপ্ন দেখছেন? তার কথা আটকে যায় গলায়। তারপরেও একটু অভিমানের সুরে বলেন,‘এতোদিন পর তোমার সময় হোল?’
মেয়েটি মাথা নামিয়ে ফেলে। বোধহয় আত্মগ্লানিতে। ফিসফিস করে করে বলে,‘হ্যাঁ-এখন সময় হোল।’
‘তুমি কি জানো যে আমি তোমাকে কি ভীষণ ভাবে শুধু একটিবারের জন্যে দেখতে চেয়েছি। ঈশ্বরের কাছে এই একটি চাওয়াই ছিল আমার জীবনে।’
‘আমি তো তাইই এলাম তোমার কাছে।’
‘তার মানে ঈশ্বর আমাদের কথা শোনেন?’
মেয়েটি আবার মুখ টিপে হাসে। ‘তাইতো মনে হচ্ছে।’

কতদিন আগে তাদের শেষবার দেখা হয়েছিল। চল্লিশ-পয়তাল্লিশ বছর হবে নিশ্চয়ই। আশ্চর্য্য-মেয়েটির চেহারা একদম বদলায়নি।

‘তোমাকে দেখতে একদম আগের মতোই লাগছে। তুমি একটুও বদলাওনি।’
রহস্যময় গলায় মেয়েটি বলে,‘তোমার চোখে আমি বোধহয় একই রকম থাকবো সব সময়।’
‘মনে আছে সেই দিনটির কথা? যেদিন আমাদের পালিয়ে যাবার কথা ছিল। আমি তোমার জন্যে বাস-স্টপে দাঁড়িয়ে ছিলাম, কিন্তু তুমি আসোনি। পরে শুনেছি ওইদিনই তোমার বিয়ে হয়ে যায়।’
মেয়েটির মুখে যন্ত্রণার ছাপ দেখা যায়। ‘জীবনটা হয়তো অন্যরকম হোত আমাদের। হয়তো ভাল, হয়তো খারাপ। আমি সেদিন তোমার কাছে আসতে পারিনি বলেই হয়তো চিরকাল তোমার মনের ভেতরে থাকতে পেরেছি। সেটাই বা কম কি?’
‘তা ঠিক। হয়তো এটাই ভাল হয়েছে।’

মাথার কাছের জানালাটি খোলা, কিন্তু তবুও তার একটু গরম লাগছে। বিছানার পাশের টেবিলে রাখা পানির বোতলের দিকের তিনি হাত বাড়ান।

মেয়েটি টুল থেকে উঠে দাঁড়ায়। ‘দাঁড়াও, আমি পানি ঢেলে দিচ্ছি।’

বোতল থেকে গ্লাসে পানি ঢালে মেয়েটি। হাতের কাঁচের চুড়িগুলো সংগীত হয়ে বাজে। তিনি একদৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে থাকেন।

আহ-কি ঠান্ডা পানি! চুমুক দিয়ে তিনি টের পান তার শরীরের সবখানে ছড়িয়ে পড়ছে শীতলতা। আনন্দ আর ক্লান্তি মেশানো অনুভূতিতে তার চোখ বুজে আসে।

মেয়েটি আবার তার কপালে হাত রাখে। কি অপরূপ শীতল সে স্পর্শ! কি প্রগাঢ় মায়া! তার যেন ঘুম এসে যায়।

হঠাৎই তিনি সবকিছুর অর্থ বুঝতে পারেন। প্রচন্ড চেষ্টা করে চোখটি খোলেন তিনি। ওই অপরূপ মুখখানি ঝুঁকে আছে তার মুখের উপর।

তিনি ফিসফিস করে বলেন,‘ঈশ্বরকে অনেক ধন্যবাদ। তোমাকে অনেক ধন্যবাদ।’

চেয়ার থেকে মেয়েটি এবার উঠে দাঁড়ায়। হাসপাতালের বেডে পড়ে থাকা লোকটির প্রাণহীন দেহটির দিকে আর একবার তাকায় সে। এখানে তার কাজ শেষ। এখন তাকে যেতে হবে সেই জার্মানীর গ্যেটিংগেন শহরে। সেখানে লিউকেমিয়াতে আক্রান্ত একটি আট বছরের ছেলের শেষ ইচ্ছাটি পূরণ করার জন্যে তাকে এবার ডায়নোসর রূপ ধারণ করতে হবে।

মৃত্যুর দেবদূত একটি ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলেন। তার পর তাকে আর দেখা যায়না।


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এসব গল্প পড়লে অভিমান করতে বড় ইচ্ছে করে।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

অভিমান? সে জিনিসটি কি এখনো আছে নাকি এই ডিজিট্যাল জগতে?
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আমি সেকেলে হাসি

সাইফ তাহসিন এর ছবি

জাহিদ ভাই, একশব্দে "দারুন" , আপনার লেখা এতই অসাধারণ যে শুধুই অবাক হয়ে পড়ি, কল্পনাকেও হার মানান আপনি বারবার।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

জাহিদ হোসেন এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকুন।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আজরাইল?
গল্পটা মজার। কিন্তু আজরাইল না হয়ে অন্য চমক কিছু দেয়া হলে ভালো হত না? বেশ ইন্টারেস্টিং গল্প।
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আপনিই প্রথমে আজরাইলের কথা উল্লেখ করেছিলেন, পরে দেখলাম আরো কয়েকজনেরও ঐ একই মত। তাই আজরাইল নামটি উঠিয়ে দিলাম।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

মূলত পাঠক এর ছবি

খুব ভালো লাগলো।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

খুব ভালো লাগলো!
____________
অল্পকথা গল্পকথা

অনিকেত এর ছবি

আপনার লেখার আমি বিশাল ভক্ত---এইটা মনে হয় বার বার বলে বলে শুধু আপনার নয়--অনেক সচলের কান ঝালাপালা করে দিয়েছি। কাজেই এবার আর সে পথে গেলাম না।

গল্পটা ভাল লেগেছে। কিন্তু মৃদুল ভাইয়ের সাথে একমত---আজরাইল ব্যাটা কেমন যেন খাপছাড়া লাগছে। জানিনা কেন----আমি অবিশ্বাসী বলে কি? নাহ, তেমন মনে হয় না। তাহলে কি আজরাইল সম্পর্কে সকলের একটা "বিরূপ" ধারণা আছে বলে?সকলে তাকে একজন নির্মম চরিত্র জানে বলেই কী তার এই সহৃদয় আচরণটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হল না?? কে জানে---!!!

শুধু জানি---গল্পটার পরিণতিটা ঠিক জুতসই হলো না।

আশা করি আপনাকে এইসব বলে মনে কষ্ট দিই নি।
শেষ পর্যন্ত এইটে আপনার নিজের লেখা গল্প, এখানে আপনি নিজে ঈশ্বর এবং আপনি যেভাবে ভেবেছেন গল্প এগুবে সেই ভাবেই। শুধু আপনার গুনমুগ্ধ পাঠক হিসেবে আমার অভিমতটুকু জানালাম।

শুভেচ্ছা জানবেন।

স্নিগ্ধা এর ছবি

ভালো লাগলো, অনেক! আপনার লেখায় 'মায়া' ব্যাপারটা এত স্পষ্টভাবে থাকে যে, ভালো না লাগানোটাই কঠিন!

মামুন হক এর ছবি

অসাধারণ!! আর কী বলব ভেবে পাচ্ছিনা।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

সুন্দর। তবে আজরাইল কেমন যেন খাপছাড়া হয়ে গেল...

--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

দারুণ ভালো লাগলো।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

উপরের সবাইকে ধন্যবাদ লেখাটি পড়বার জন্য এবং তাদের মন্তব্যের জন্যে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আমার কাছে কিন্তু আজরাইল হিসাবেই ভালো লেগেছিল, মৃত্যু সম্পর্কিত ভয়টা যেন হঠাৎ উড়ে গেল আপনার লেখার জোরে

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

জাহিদ হোসেন এর ছবি

মৃত্যু সম্পর্কে আমার ধারণার কথা নীচে বলেছি। সেটি সঠিক না ভুল তা আমরা প্রত্যেকেই নিজে নিজে নির্ণয় করতে পারবো একদিন।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

পান্থ, সচলাসিক্ত কাটাতে আজকাল লগায় না এর ছবি

ভালো লাগলো জাহিদ ভাই।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ভালো লাগলো... বেশ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

মৃত্যুটা যদি এমন রোমান্টিক হয়, তবে আর ভাবনা কী? চলুক

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আমি নিজে মনে করি যে মৃত্যু জিনিসটি ভয়াবহ কোন কিছু নয়। সেই ধারণাটিকেই এখানে চালানোর চেষ্টা করেছি মাত্র। শীর্ষেন্দুর একটি ছোটগল্প আছে, নাম বোধকরি "দেখা হবে"। সেটি পড়বার থেকেই মৃত্যু এবং পরপার সম্পর্কে এক ধরণের শান্তিময় ধারণা পোষন করি।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আজরাইল নামটার প্রস্থান গল্পটাকে অনেকটাই কোমল করে দিলো।
অসাধারণ একটা গল্প।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

জাহিদ হোসেন এর ছবি

এই লেখাটিতে প্রথমে মৃত্যুদূতের নাম "আজরাইল" দেওয়া হয়েছিল। তাতে কয়েকজনের কাছে মনে হয়েছিল যে আজরাইল নামটি ব্যবহার না করলেই ভালো হোত। কেননা আজরাইল নামটি শুনলেই মনের মধ্যে এক ধরণের ভয়-ভয় ইমেজ ভেসে ওঠে যা এই লেখাটিতে বর্ণিত মৃত্যুদূতের কোমলতার সাথে ঠিক মানায় না। শেষমেশ আজরাইল নামটিই তুলে দিয়েছি।
কিন্তু এই প্রসংগে অন্য একটি চিন্তা মাথায় এলো। আমাদের প্রত্যেকের কাছে কিছু কিছু শব্দ বিশেষ অর্থ বহন করে। যেমন আজরাইল নামটি শুনলেই বুকের ভিতর হিম হয়ে আসে, অথচ মৃত্যুর দেবদূত বললে তেমনটি মনে হয়না। স্বাধীনতার পরপর "কোলাবরেটর" শব্দটি ছিল একটি ভয়ানক ঘৃণ্য শব্দ, এখনকার মানুষের কাছে বোধহয় তেমনটি নয়।
আবার ধরুন "ইশ্বর" শব্দটির কথা। আমরা অবলীলায় শব্দটি গল্পে কবিতায় ব্যবহার করি, কিন্তু খুব কম ক্ষেত্রেই "আল্লাহ" শব্দ ব্যবহার করে গল্প কবিতা বানাই। (আমি নিজেও তার ব্যতিক্রম নই)। কেন-উপরের এই লেখাটিতে ইশ্বরের বদলে আল্লাহ লিখলে কি হোত? মুখফোড়ের জনপ্রিয় "আদমচরিত" সিরিজেও ইশ্বর শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে আল্লাহর বদলে। যেন ইশ্বর আর আল্লাহ দুটি আলাদা সত্ত্বা। একটাকে নিয়ে লঘু-আলাপ বা কল্পকাহিনী ফাঁদা যায়, কিন্তু অন্যটিকে নিয়ে নয়।
এমনি আরেকটি শব্দ "হারাম" যার অর্থ যতদূর জানি হচ্ছে "নিষিদ্ধ"। কিন্তু এই দুটি শব্দ কি আমাদের মনে একই ধরণের সিরিয়াসনেস আনে?
এই মন্তব্য কারো উদ্দেশ্যে নয়। জাস্ট-মনের চিন্তাগুলোকে এক জায়গায় লিখে রাখলাম। তারপর ঝাঁকের কই আবার ঝাঁকে মিশে যাবো।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

অনিকেত এর ছবি

এইটা খুবই ইন্টারেস্টিং পয়েন্ট তুলেছেন জাহিদ ভাই।

আমি নিজে মূলতঃ 'অবিশ্বাসী' মানুষ---তাই আল্লাহ/ঈশ্বর কোন শব্দেই কিছু যায় আসে না আমার কাছে। কিন্তু এইটা ঠিক যে বঙ্গ সাহিত্যে ঈশ্বরের জনপ্রিয়তা 'আল্লাহ'-র চেয়ে বেশি। আমার মনে হয় একটা কারণ হতে পারে এই যে, ঈশ্বর বলতে সাধারনত সৃষ্টিকর্তা কে বোঝা হয় এবং সেই সৃষ্টিকর্তা কোন 'বিশেষ' ধর্মের নন। বলতে পারেন সৃষ্টিকর্তার generic name হল ঈশ্বর। সেই তুলনায় আল্লাহ বা ভগবান অনেক বেশি 'নির্দিষ্ট', বহুলাংশে 'সঙ্কীর্ণ'। আল্লাহ সব সময়েই মুসলমানের আর ভগবান হিন্দুদের। কিন্তু কোন পক্ষই খুব সম্ভবত ঈশ্বর নামে অস্বস্তি বোধ করে না।

আর মানুষের মস্তিষ্ক আসলে বড় অদ্ভুতভাবে কাজ করে। আপনি যদি নীল রঙে 'নীল', হলুদ রঙে 'হলুদ', সবুজ রঙে 'সবুজ' লিখে কাউকে বলেন যে রঙ অনুযায়ী নামগুলো পড়তে--দেখবেন কারোর কোন অসুবিধাই হচ্ছে না। কিন্তু একটু রঙ আর নামের রদ বদল করে দিন যেমন হলুদ রঙে 'সবুজ' লিখুন বা লাল রঙে 'কাল'---এবং এখন যদি রঙ অনুযায়ী কাউকে পড়তে বলেন--দেখবেন সে ক্রমাগত হোঁচট খাচ্ছে। এর কারণ হল---আমাদের মাথায় যে কোন কিছুর একটা 'ধ্বনিগত' রূপ রয়েছে। হলুদ শুনলে আমরা হলুদ রঙের কিছুই দেখতে আশা করি---লাল রঙের কিছু না।

আমার মনে হয় মস্তিষ্কের এই অদ্ভূত 'লেবেল' দেয়ার সিস্টেমের কারণেই আমাদের ভাবনা-চিন্তা দারুন ভাবে প্রভাবিত হয়।

দী-ঈ-ঈ-ঈ-র্ঘ মন্তব্য লেখার জন্যে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আপনার ব্যাখ্যাটি যুক্তিসংগত মনে হচ্ছে আমার কাছে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

অনিকেত'দা আর জাহিদ ভাই, ব্যাপারটা তো ইন্টারেস্টিং আসলেই। চিন্তিত

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ভুতুম এর ছবি

অসম্ভব ভালো লাগলো।

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

নিবিড় এর ছবি

চলুক


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

ধন্যবাদ, নিবিড় আর ভুতুম।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

সবজান্তা এর ছবি
guest_writer  এর ছবি

তাহলে, অপেক্ষা করে যাব শেষ পর্যন্ত...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।