ভূমিকাঃ জীবনতো এক পথ পরিক্রমা । ট্রেনের জানালায় মুখ বাড়িয়ে নাম পড়তে না পড়তেই সারি সারি পার হয়ে যায় জীবনের স্টেশন…শৈশব…কৈশোর…তারুণ্য…। কখনো কেউ কাছে আসছে, কেউ দূরে যাচ্ছে, বুঝে ওঠার আগেই দ্রুতলয়ে জীবন ছুটে চলে গন্তব্যের শেষ স্টেশনে । এরই মধ্যে অজান্তে বুকের গহীনে থেকে যায় কোন স্মৃতি, কোন কথা, কোন সুর । সে শুধু বেজেই যায়…হাজার ব্যস্ততায়ও মনের কান পাতলেই শোনা যায় সেই কথা, সেই সুর…
আমার বাবা একজন সাদামাটা মানুষ । ঠিক তার সযতনে আগলে রাখা বহু ব্যবহারে রংচটা ছাতাটার মতই অনুজ্বল । বয়সী ছাতাটা খুলতে গেলেই বেশ কিছুক্ষন ধৈর্য্য ধরে কুস্তি করতে হ’ত । এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে যেই যার ছাতা তার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলেছি, “আব্বা, আপনার ছাতা খুলে না, খুলে দেন”, কোন এক জাদুমন্ত্রে তার এক টিপেই সেই কালো কাপড়ের ছাতা ভরা গাঙ্গের নাওয়ের মত বাদাম তুলে দিত । যদিও সেই ছাতার লোহার শিকগুলোকে আমাদের মনে হত বেঁকে গেছে, যে কোন সময় ভেঙ্গে যাবে… কিন্তু গোয়ার গোবিন্দ শিকগুলো ভাংতো না শত ঝড় ঝঞ্জাতেও । কাপড়ের কালো রং কোথাও কোথাও ধুসর হয়ে গেছিল, কিন্তু তার বেশি কিছু না । কোথাও কোন টুটা ফাটা দেখা দিলেই আব্বা বসে যেতেন সুই সুতা নিয়ে । শেষ পর্যন্ত চোখের জ্যোতি ভালই ছিল, নাকের ওপর চশমা ঝুলিয়ে সেলাইটা নিজের হাতেই করতেন । বড়জোর আমাদেরকে বলতেন সুইয়ে সুতো পরিয়ে দিতে, তার চেয়ে বেশি কিছু না ।
আমার বাবা বৈশিষ্ট্যহীন এক সাধারন মানুষ । না ছিলেন তূখোর মেধাবী, না শানিত তার্কিক, না প্রসিদ্ধ কবি, না বড় চাকুরে, না উর্দি পরা কোন জলপাই সবুজ সৈনিক, না কোন বিদগ্ধ বুদ্ধিজীবী । শৈশব, কৈশোরে বন্ধু বান্ধবদের মুখে যখন তাদের বাবাদের কত শত অর্জনের কথা শুনতাম, তখন নিজের প্রতি কেমন করুনাই হোত । আহা, আমার বাবার এমন কোন সাফল্য নেই যা নিয়ে বুক ফুলিয়ে বলা যেতে পারে ! তার সাদামাটা চাকরির (শুরু করেছিলেন ব্রিটিশ আমলে রেলওয়েতে টিকেট চেকার (সংক্ষেপে যা টি.টি. নামে পরিচিত) হিসেবে । রিটায়ার করেছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে । রেলওয়ে তার সারাজীবনের গর্ব, ভালবাসার জায়গা ছিল । রেলওয়ের কোন খবর পত্রিকায় এলেই উচু গলায় পড়তেন ।) বাইরে আর কোন অর্জন কখনও চোখে পড়েনি আমার অমল ধবল শৈশবে ।
একাত্তরের দুর্বিষহ সময়ে মা সবাইকে নিয়ে গ্রামে আশ্রয় নিলেন । আব্বা তখন নিখোঁজ । সিলেট থেকে পায়ে হেঁটে বাড়ি আসতে তার অনেক সময় লেগেছিল । স্বাধীন দেশে ভাই বোনরা এক এক করে পড়াশুনা করতে ঢাকায় ফিরে গেল । উঠোনে শুকাতে দেয়া ধানের ওপর হেঁটে বেড়াতে আর খড়ের গাঁদায় লুটোপুটি করতে মায়ের কাছে রয়ে গেলাম শুধু আমি । বাড়ির চাচাতো, জ়েঠাতো ভাই বোনদের সঙ্গে দল বেঁধে গ্রামের একমাত্র ইটের দেয়ালের সাদা রং প্রাইমারী স্কুলবাড়িতে যাওয়ার সময় গুরু গম্ভীর মুখ করে বুকের কাছে আদর্শলিপি আর বাল্যশিক্ষা বইদু’টো ধরে রাখি । ভাবখানা এমন আমার মতন এমন বিদ্যাধরি আর কে আছে ত্রিভূবনে? এই সময় আব্বা ডিউটি থেকে (তখন তিনি লাকসামে স্টেশনড) বাড়ি আসতেন মাসে দু’বার করে । দাউদকান্দি থেকে ছয় মাইল গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে আসার সময়ে তার একহাতে রংচটা “ডিউটি” ব্যাগ আর অন্য হাতে দড়ি বাঁধা কোন না কোন মৌসুমী ফল ঝুলতো । ডিউটি ব্যাগে এক সেট সুতির সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবী, লুঙ্গি আর গামছার সঙ্গে বাড়ির সব কুচো-কাচাদের জন্য বিস্কুট কিংবা তিলের প্রলেপ দেয়া গুড়ের নাড়ূর প্যাকেট থাকতো ।
আমার অবাক শৈশবের স্মৃতি জুড়ে আছে আব্বার জাল বোনা । মিতাচারী মানুষটি কথা বার্তায়ও ছিলেন স্বল্পবাক । বাড়ি এলেই তিনি গভীর মনোযোগ দিয়ে মাছ ধরার জাল বোনার কাজটি করতেন । জালটা আমাদের ঘরের সামনের কাঠের নকশা কাঁটা, রেলিংওয়ালা ‘টগবারান্দা’র এক কোনে ঝুলানোই থাকতো । প্রতিবার বাড়ি এসে আব্বা রুপোলি ঝিলিক দেয়া সিল্কের সুতোর কুন্ডলী আর কাঠের কলমের মত চিকন জিনিষটি (এর যে কী নাম হতে পারে, এখন আর তা মনে নেই) নিয়ে বসে যেতেন জাল বুনতে । প্রথমে কলমের মত কাঠিটিতে সুতা পেচিয়ে নিতেন, তারপর সেটা দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা জালের নিচের অংশটি থেকে বোনা শুরু করতেন । তার বা হাতে জালটির অংশ বিশেষ ধরা থাকতো, আর ডান হাতটা ওপরে ওঠা নামা করতো । একাগ্রচিত্তে জাল বোনা মানুষটিকে “ধ্যানী ব্রহ্মচারী” মনে হতো ।
আরেকটা কাজ তিনি খুব অধ্যাবসায়ের সাথে করতেন । সেটা হলো আমাকে অংক শেখানো । সন্ধ্যায় হারিকেনের ঝকঝকে চিমনির (দিনের আলো ফুরিয়ে আসার আগেই ভেজা কাপড় দিয়ে কাঁচের চিমনি পরিষ্কারের কাজটাও বাড়ি এলে আব্বাই করতেন) আলোতে পাটি বিছিয়ে শিমের বিচি নিয়ে আমাকে যোগ বিয়োগ শেখাতেন । যোগ যদিবা বুঝতাম, বিয়োগ কিছুতেই না । যোগের বেলায় সহজ ছিল ব্যাপারটা, পাটির বিছানার এক জায়গায় রাখা দু’টো বিচি আর অন্য জায়গায় রাখা তিনটি বিচি মিলে বেশ সহজেই পাঁচটা বিচি হয়ে যেত । কিন্তু আব্বা যখন বলতেন, “এবার দেখ এই পাঁচটা বিচি থেকে তিনটা বিচি নিয়া গেলাম । তাইলে এখন কয়টা বিচি থাকে?” আমি বোদ্ধা গানিতিকের মত গম্ভীর সুরে বলতাম, “ক্যান, পাঁচটা..?” আব্বা যতই বোঝাতেন তিনটা বিচি চলে গেছে,…আমার জিজ্ঞাসা, “কই গ্যাছে…? এইখানেইতো আছে, আব্বা ।” মোটকথা আমাকে বিয়োগ শেখাতে তাকে অনেক কসরত করতে হয়েছিল । যদিওবা বিয়োগ কোনক্রমে শেখাতে পেরেছিলেন, সাঁতার শেখাতে গিয়ে একেবারেই ব্যর্থ হলেন । কারন, পুকুরের মাঝখানে গিয়ে যেই আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলতেন, “নে এইবার হাত পা ছোড় । ডরাইস না, ডুববি না, আমি ধরমু…” কে শোনে কার কথা, ত্রাহি চিৎকার করে আমি তার গলা এমন জোরে জড়িয়ে ধরতাম যে আব্বা আমাকে সহ তলিয়ে যাওয়ার ভয়ে সাঁতার শেখানোর কাজে ক্ষ্যামা দিলেন ।
আব্বাকে নিয়ে শৈশবের আরেকটা জ্বলজ্বলে স্মৃতি আছে আমার । সারা দিনমান ধূলো বালি নিয়ে খেলার পরে রাতে যখন ঘুমাতে যেতাম, তখন ভীষন পিঠ চুলকাত । বিশেষতঃ খড়ের গাঁদার লুটোপুটিটা বেশ ভালই জানান দিত । কেমন করে যেন আব্বা সেটা টের পেতেন, আমার ছোট্ট পিঠে হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতেন । শৈশবের সেই ঘুমে কাদা বেলাতেও কোন রাতে যদি জেগে উঠেছি কোন অকারন কারনে, দেখেছি আব্বা তখনও হয় পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন, নয়তো তাল পাখা ঘুরাচ্ছেন আমার ওপর…
আমি অফিসিয়ালি স্কুল শুরু করার আগেই আটাত্তরে বড় আপার (ঢাকায় যার কাছে আমার অন্য ভাইবোনরা থাকতো) ক্যান্সার ধরা পড়ে । এক ঘন্টার নোটিসে মা আর আমি ঢাকায় আসি । আর ফেরা হয়নি…আট মাসের মাথায় সব আলো নিভিয়ে দিয়ে বড় আপা চলে গেল “না ফেরার” দেশে । মা, আব্বা, আমরা ভাইবোনরা এত ডাকলাম, বড় আপা একবারও সাড়া দিল না……সেই থেকে বনানী কবরস্থানে নিশ্চুপ শুয়ে আছে । উনত্রিশ বছরের মেয়েকে হারিয়ে আব্বা, মার কেমন লেগেছিল আমি আজও তা চিন্তা করার শক্তি অর্জন করিনি । আব্বা তখনো রিটায়ার করেননি, এক সময় তাকে ফিরতেই হলো লাকসামে । মাকে গ্রামের সংসারের পাট চুকিয়ে দিতে হলো । ভাঙ্গা মন নিয়ে মা ঢাকায় ফিরে এলেন ছেলেমেয়েদের আগলে রাখার জন্য ।
এক সময় আব্বা রিটায়ার করলেন । প্রফিডেন্ড ফান্ডের টাকায় মিরপুরের জায়গায় ছোট্ট দুই রুমের টিনশেডের বেশী কিছু করার সামর্থ্য তার ছিল না । সেই বাসার মেঝে অনেকদিন পর্যন্ত পাকা করা সম্ভব হয়নি । তখনও আমার ভাইবোনরা কেউই পুরোপুরি আয় রোজগার শুরু করেনি । মিয়াভাই আমেরিকায় পিএইচডির ছাত্র, মেজভাই ডি.এম.সি.তে সদ্য ইন্টার্নী শেষ করেছে । তারপরের তিন ভাই বুয়েটে, এক বোন জাহাঙ্গীরনগরে পড়ছে । আমার বড় ভাইটি হাই স্কুলে আর আমি প্রাইমারী স্কুলে । সব মিলিয়ে নিদারুন কঠিন সময় । বড় ভাইবোনদের মত করে সব বুঝিনি । তবু প্রতিটা মাস শেষ করে আনতে আমার মাকে যে মোটামুটি একজন অর্থনীতিবিদের মতই কঠিন যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ করতে হোত তা আমি নিশ্চিত ।
এহেন বাবার কাছ থেকে খুব উচ্চমার্গের কিছু শেখার আশা করা যায় না । যে দু’টো নীতি তিনি মেনে চলেছেন, তা খুব সাধারন । এক হ’ল শারীরিক পরিশ্রম করা (রিটায়ার করার পরেও কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে মিরপুরের বাসায় হেঁটেই আসতেন । আমরা কথায় কথায় কেন রিক্সায় চড়ি এটা কিছুতেই তার বোধগম্য হ’ত না) । সব সময়ে বলতেন, “আর্লি টু বেড এন্ড আর্লি টু রাইজ…” । নিজে তিনি দিন শুরু করতেন খুব ভোরে, ফজরের আজানের সঙ্গে সঙ্গে । নামাজ, কোরান শরীফ পড়েই চলে যেতেন মর্নিংওয়াকে । সকাল বিকাল দু’বেলা হাঁটতেন । ভোরের তাজা বাতাসে খালি পায়ে সবুজ ঘাসের ওপর হাঁটার উপকারিতা শুনে শুনে বড় হয়েছি আমরা সবাই । তবে আব্বার মর্নিংওয়াক থেকে আমার একটা বিশেষ পাওনা ছিল, ভোরের ফুল । বিশেষ করে শীতকালে মর্নিংওয়াক থেকে ফেরার পথে পড়ে থাকা শিউলি ফুল কুড়িয়ে এনে আমার টেবিলের ওপর রেখে দিতেন ।
দ্বিতীয় যে জিনিষটি তিনি করতেন তা’হল প্রচন্ড মিতাচারী জীবন যাপন । যখন ছোট ছিলাম, তখন আব্বাকে মনে হ’ত ভীষনরকম কিপটা মানুষ । কিচ্ছু কিনতে চান না । যখন টাকা পয়সার হিসেব নিকেশ একটু বুঝতে শিখেছিলাম, তখন মনে হ’ত, তার কেনার সামর্থ্য নেই সেকারনেই সব সময়ে শুধু বলেন, “কাট ইয়োর কোট একোর্ডিং টু…” কিন্তু সত্যি যখন বড় হয়েছি (সংসারের আর্থিক চেহারাটা পালটে গিয়েছে ততদিনে), তখনও তার চাহিদা বাড়তে দেখিনি এক ফোঁটা । সুতির সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবী কিংবা সাদামাটা স্ট্রাইপ শার্টের বাইরে কখনো কিছু পরেননি । প্রতিবার ঈদে কী চাই প্রশ্নের জবাবে আব্বার এক জবাব ছিল, “আমারতো সব আছে ।” একবার ছোট’পা জোর করে এক জোড়া নতুন জুতা কিনে দিতে চেয়েছিল । আব্বা তাকে প্রশ্ন করেছেন, “আমারতো এক জোড়া জুতা আছে । পা এক জোড়া, জুতা দুই জোড়া দিয়ে কী করব?”
আব্বা আমাদের সংসারের নিভৃতচারী মানুষ । কখনই খুব সাড়াশব্দ করে নিজেকে প্রকাশ করতেন না । ছেলে মেয়ের প্রতি ভালবাসা, মায়া, স্নেহ প্রকাশেও ছিল তার পরিমিতিবোধ । কখনো কারুর অসুখ হলে, শুধু নীরবে বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতেন । গায়ে হাত দিয়ে জ্বর দেখা, উতলা গলায় “কেমন লাগছে” জিজ্ঞেস করা, তিনি পারতেন না । কিন্তু সারা রাত চুপচাপ মাথায় পানি ঢেলে যেতেন (ঠিক যেমন নীরবে রাতভর সন্তানের ঘুম ভাঙ্গা পিঠে হাত বোলাতেন) । যার উপস্থিতি এতটাই নীরব, তার অনুপস্থিতি কতটা তীব্র হতে পারে? কিন্তু কী অদ্ভুত ! যখন ছিলেন, তখন কখনই মন দিয়ে শুনিনি তার অজস্রবার বলা, “শুধু সাত তলাতেই মানুষ থাকে না, গাছতলাতেও থাকে । তারাও মানুষ”… অথচ এখন শপিং মলের মনোমুগ্ধকর (প্রায়শঃই অপ্রয়োজনীয়) কোন জিনিষের সামনে থেমে দাঁড়ালেই নিজের ভেতর থেকে শুনতে পাই, “কাট ইয়োর কোট…” এখন আর তেমন করে হয়তো ক্লথের কথা সারাক্ষন মনে না রাখলেও চলে, কিন্তু কেন যেন ‘কোট’টা আর বড় করতে ইচ্ছে করে না…চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাই স্যান্ডো গেঞ্জী আর লুঙ্গি পরা একজন দাঁড়িয়ে আছেন দরজায়…নাতি নাতনির হাত ধরে ছেলে-মেয়েরা ফিরে যাচ্ছে যার যার কুলায়…যতক্ষণ দেখা যায় মানুষটি দাঁড়িয়ে থাকবে…শেষ বাঁকটি ঘোরার সময় ছেলে-মেয়েরা পেছন ফিরে তাকাবেই…দূর থেকে পড়ন্ত বেলার শেষ আলোতেও সাদামাটা যে মুখটি দেখা যায়, কোথাও কোন অতৃপ্তির কণামাত্র নেই…কোন এক যাদুমন্ত্রে সবটুকুই নির্মল আনন্দের আলো ছায়া…
………………………………………………………………………………………
এখন আমি অনেক বড় হয়েছি, আব্বা । জীবনের ঘাত প্রতিঘাতে কত কঠিন হয়ে গেছি ! তবু নির্ঝরের পিঠে হাত বুলিয়ে ঘুম পাড়াতে গিয়ে রোজ রাতে মনে পড়ে যায় কবেকার সেই ছোঁয়া, আর শুধু শুধু অকারনে দু’চোখ ঝাপসা হয়ে আসে…বড় অন্যায় করেছেন সারা জীবন কখনো আবেগ প্রকাশ না করে । নিজেও করেননি, আমাদেরকেও করতে দেননি । কোনদিন বলা হয়নি, “আব্বা ছোটবেলার সেই ছোঁয়াটা এখনো লেগে আছে পিঠে…”
মন্তব্য
নির্ঝরের জন্যে ভালোবাসা। আপনার বাবার জন্যতো অবশ্যই।
সাত্যকি
অনেক ধন্যবাদ সাত্যকি । নির্ঝরের জন্য ভালবাসাটুকু পৌঁছে দিতে পারব । আব্বার জন্য ভালবাসাটুকু ছড়িয়ে দিতে হবে পৃথিবীর সব বাবাদের জন্য । আব্বা চলে গেছেন আজ ছ'বছর । অথচ, কী আশ্চর্য্য মনেই হয় না...এখনো দেখতে পাই রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছেন...
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
অসাধারণ!!!!!!!!!!!
আর বলার মত কিছু পাচ্ছি না এই মুহূর্তে
-অতীত
অনেক ধন্যবাদ অতীত পড়ার জন্য, সময় করে জানানোর জন্যে ।
সচলায়তনের লেখা পড়তে খুব ভাল লাগে । লিখতেও খুব ইচ্ছে করে । কিন্তু জীবন এক ভীষন তাড়না, শুধু ছুটিয়ে নিয়ে বেড়ায় । দেখুন না মন্তব্যের জবাব লিখতে কত দেরী হয়ে গেল ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
আমার বাবাও এইরকম। দুনিয়ার কোন কিছুতেই যেন উনার আকর্ষন নেই। পুজোর সময় কিছু কিনে দিতে গেলে বকা শুনতে হয়। কিনে নিয়ে আসলেতো আরো বেশী। সবসময়ই বলেন আমারতো অনেক আছে। কি দরকার নতুন কিছু কেনার। অদ্ভুত এক মানুষ। কোন স্বাদ আহলাদ নেই, কোন কিছু পাওয়ার আকাঙ্খা নেই।
সবসময়ই ভাবি, ইসসসস যদি উনার মতো হতে পারতাম।
লেখার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
অদ্ভুত এক মানুষ। কোন স্বাদ আহলাদ নেই, কোন কিছু পাওয়ার আকাঙ্খা নেই।
আমার অনেক সময় মনে হয়, অনেক বড় কিছুর সন্ধান পেয়ে গেলে অনেক কিছুকে তুচ্ছ করা যায় ।
সবসময়ই ভাবি, ইসসসস যদি উনার মতো হতে পারতাম।
ঠিক বলেছেন । আমি শুধু ভাবি আমার নির্ঝর যেন আমার বাবার মত মানুষ হয় । কত অল্পতে একজন মানুষ কত বেশী আনন্দিত হতে পারেন তা আমি আমার বাবার মধ্যে দেখেছি ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
অসাধারন! আপনার বাবার সাথে কোথায় জানি আমার বাবারো মিল খুঁজে পেলাম, বিদেশে এসে আজকাল বাবার কথা বড্ড বেশি মনে পড়ে।
-- শফকত মোর্শেদ
অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য ।
আপনার বাবার সাথে কোথায় জানি আমার বাবারো মিল খুঁজে পেলাম, বিদেশে এসে আজকাল বাবার কথা বড্ড বেশি মনে পড়ে।
বিদেশে বাবা মাকে খুব মনে পড়বে । কারনে অকারনে দু'চোখ মুছবেন, সেকারনেইতো দেশ ছেড়ে আসা । মাঝে মাঝে মনে হয়, কোন পাপ ছিল পুর্ব জন্মে, তাই এই প্রবাস জীবন...
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
আপনার বাবার গল্প শুনে খুব ভালো লাগলো। আপনার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা
খানিকটা অফ-টপিকঃ আমার খুব ইচ্ছা কোন রাজাকার কিংবা ঘুষখোর পিতার সন্তান তার বাবাকে নিয়ে কী ভাবে, তা জানার। বলা বাহুল্য, সে সৌভাগ্য আমার এখনো হয়নি। আদৌ হবে কিনা কে জানে
---আশফাক আহমেদ
অনেক ধন্যবাদ আশফাক ।
ঘুষখোর বাবারাও হয়তো সন্তানদের কাছে জাস্টফাই করে তাদের কাজকে যে ছেলেমেয়েদের জন্যই সব কিছু । কিন্তু নৈতিকতার মেরুদন্ডটিতো আর থাকে না । তবে সবাইতো আর নৈতিকতার কথা ভাবে না ...
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
আপনার আব্বার জন্য শ্রদ্ধা।
লেখা ভাল লেগেছে।
ধন্যবাদ বাউলিয়ানা ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তিথী, অনেক ধন্যবাদ । নতুন বছরে শুভেচ্ছা তোমাকে ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
জোহরা আপা, আপনার মাকে নিয়ে লেখাটা নিঃশব্দে পড়ে চলে গিয়েছি শুধু, লেখার সাহস পাই নাই, আজকে বাবাকে নিয়ে লেখাটাতেও যদি না জানানো হয় কী পরিমাণ মমত্বের স্পর্শ পেয়েছি আপনার লেখায়, যে লজ্জা অনুভব করেছি নিজের দায়িত্বহীন, নিঃশ্চিন্ত জীবনের কথা ভেবে, তাহলে ভুল করা হবে। কিন্তু বাবা-মাকে দেবার মতো কিছুই এই সন্তানের অর্জনে নেই মনে হয় ঘুরে-ফিরে...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
যাযাবর, আমার মাকে নিয়ে লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুব ভাল লাগছে ।
বাবা-মাকে দেবার মতো কিছুই এই সন্তানের অর্জনে নেই মনে হয় ঘুরে-ফিরে...
বাবা মাকে দেবার মত সামর্থ্য কোন সন্তানেরই থাকে না । বাবা মায়ের সে রকম প্রত্যাশাও থাকে না । নিজে মা হয়েছি । জানি যে শুধু ওর শুভ হোক এই চাই । মানুষের মত মানুষ হোক এই শুধু চাই ।
পৃথিবীর সকল বাবা মা ভাল থাকুক ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
তাসনীম, স্মৃতির শহর শেষ করে দিয়ে কী ভাল করলেন? যাক গে, শিগগীর কিছু শুরু করুন ।
আমাদের সাধারণ গল্পগুলো কত যে অসাধারণ হয়...আরো লিখুন।
আরো লিখতে বলছেন? লিখতে ইচ্ছেও করে । কিন্তু একদম সময় করে উঠতে পারি না । জানি একদিন সব ব্যস্ততা থেমে যাবে...ছুটির ঘন্টা বেজে উঠবে । এই পৃথিবীর কিছুই থামবে না এক মুহুর্তের জন্য । অথচ এখন জীবন থেকে এক দন্ডের ছুটি মেলে না ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
আমাদের সাধারণ গল্পগুলো কত যে অসাধারণ হয়...আরো লিখুন।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
খুচরো স্মৃতিগুলোও কতো বড় হয়ে মনে পড়ে এই লেখাগুলো পড়ে...
কখনো কখনো স্মৃতিই শেষ সঞ্চয়...
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
অসাধারণ! খুব, খুবই ভাল লাগলো।
অনেক ধন্যবাদ ও নতুন বছরের শুভেচ্ছা ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
নতুন মন্তব্য করুন