ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি...০০৮

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি
লিখেছেন জোহরা ফেরদৌসী (তারিখ: রবি, ০৬/০১/২০১৩ - ৪:১০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাতাসে শীতের গন্ধ । প্রকৃতিতে রংয়ের উৎসব শেষ করে পাতাদের ঝরে পড়াও শেষ । বাদামী রংয়ের শুকনো পাতা মাড়িয়ে বাড়ি ফেরার পথে কোথা থেকে ভেসে এল অনেক দিন আগের এই রকম শীতের কোন ইউক্যালিপটাসের শুকনো পাতার গন্ধ...নজরুলের সমাধির পাশে লাইব্রেরীর গেইটে লাল রঙ্গা বাস থেকে নেমে কলা ভবন পর্যন্ত হেঁটে আসতে আসতে মাটি থেকে কুড়িয়ে নিতাম ইউক্যালিপটাসের শুকনো পাতা । একটু ছিড়লেই সেই পাতা থেকে বের হ’ত অদ্ভুত এক সৌরভ...কোথা হতে ভেসে এলো ফেলে আসা দিনের গায়ে লেগে থাকা সেই সৌরভ...আর তার হাত ধরে চলে এল বন্ধুর মত বন্ধুদের স্মৃতিরা...

... ...

এই সব অদরকারী স্মৃতির কোন পরম্পরা নেই । তবু যদি কারুর আগ্রহ থাকে, তাহলে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠসপ্তম পর্ব এখানে ।

... ...

২৮.

আমার মায়ের ছিল মানিক মিয়ার “ইত্তেফাক” এর প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা । সাধু ভাষার ইত্তেফাক আমাদের অনেক জ্বালিয়েছে । কাজী সালাউদ্দীন মোহামেডানের গোলপোস্ট লক্ষ্য করিয়া সজোরে বল শট করিয়াও লক্ষ্যভ্রষ্ট হইয়াছেন...প্রেসিডেন্ট জিয়া দেশের উন্নয়নে খাল কাটিতে কাটিতে টেকনাফ হইতে তেতুলিয়া খালে খালে দেশ ভরিয়া ফেলিয়াছেন...দেশে উন্নয়নের "স্রোত" বহাইয়া দিয়াছেন...জলপাই রং উর্দী পরা জেনারেল এরশাদ দূর্নীতি দূরিকরণের মিথ্যা মন্ত্র কপচাইয়া ক্ষমতা দখল করিয়াছেন...ছাত্র জনতা দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বিক্ষুব্ধ হইয়া সরকারী বাসে অগ্নি সংযোগ করিয়া দিয়াছে...

এক পর্যায়ে আমার “মীরজাফর” (সোহেল) ভাই ও আমি ইত্তেফাকের বিরুদ্ধে “বাম” মোর্চা গঠন করলাম । এই সাধু ভাষার হাত হইতে আমাদিগকে প্রাণে বাঁচিতে হইবেক (ততদিনে অন্য ভাই বোনেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের বাসিন্দা হওয়ার কারণে ইত্তেফাকের হাত হইতে নিস্তার পাইয়াছে) । আমরা ইত্তেফাকের পরিবর্তে “দৈনিক সংবাদ” চাই । সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কয়েক দফা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পরে পরিবারের “প্রধান প্রশাসক” আমাদের মা পরীক্ষামূলক ভাবে কিছুদিনের জন্য “দৈনিক সংবাদ” রাখিতে সম্মতি জ্ঞাপন করিলেন । কিছুদিনের মধ্যে তিনিও “সংবাদ” পড়িয়া তুষ্ট হইলেন । পরিবর্তনের এই জোয়ারে আমরা সচিত্র সন্ধানীরও গ্রাহক হইলাম ।

২৯.

সচিত্র সন্ধানীতে এক সময় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হতে শুরু করলো “একাত্তরের দিনগুলি” । জাহানারা ইমাম নামের এক নারীর জবানীতে জানা যাচ্ছে ১৯৭১র সেই দিনগুলির কথা । সচিত্র সন্ধানী প্রকাশের দিনটিতে আমরা রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করি হকার হাকিম ভাইয়ের জন্য । পুরো পরিবার গোল হয়ে বসি... আমার মা পড়ছেন আর কাঁদছেন...আমরা শুনছি আর কাঁদছি । এ যেন আরেক একাত্তর...যখন আমি মায়ের কোলে তিন মাসের শিশু...মায়ের কাছে শুনেছি...সেই দুঃসহ দিনে গ্রামের মানুষ উঠোনে হারিক্যানের আলোয় গোল হয়ে বসে শুনছে...নৌকার মাঝি শুনছে...শহরের মানুষ শুনছে... কাঁথার নীচে, লেপের নীচে, চাদরের নীচে লুকানো রেডিওতে শুনছে ...বিবিসি, ভয়েস অফ আমেরিকা, আকাশবাণী, স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের অনুষ্ঠান...এম আর আখতার মুকুলের “চরমপত্র”...শুনছে মুক্তির গান...শুনছে কোথায় কোন গেরিলা অপারেশনে বাংলার মুক্তি পাগল গেরিলারা জীবন বাজি রেখে উড়িয়ে দিয়েছে কোন ব্রিজ, কোন পাওয়ার স্টেশন... মুক্তির নেশায় উন্মাতাল এক জাতি রক্ত দিয়ে লিখছে এক নতুন ইতিহাস...নির্মাণ করছে এক নতুন মানচিত্র...বুনছে এক নতুন স্বপ্ন “স্বাধীনতা”...

জাহানারা ইমাম আমাদের কাছে নিয়ে এলেন সেই উন্মাতাল দিনের গল্প । একটি পরিবার হয়ে গেল একটি জাতির প্রতীক । পরিবারটির দৈনন্দিন গল্পে একে একে মিশে গেল অজস্র পরিবারের গল্প । এ এক অন্য রকম গল্প । হৃদয়কে পাথর করে তুলে আনা এক গহন বেদনার কথা । এক মায়ের বেদনার কথা । সত্যের দীক্ষা দেয়া এক মা সন্তানের সত্যনিষ্ঠার কাছে পরাভূত হয়ে বলছেন, “তোকে দেশের কাজে কোরবানি করে দিলাম, যা, তুই যুদ্ধে যা...” । এ এক অদ্ভুত বেদনার গল্প । এ এক শানিত বিতার্কিক তরুণের দেশপ্রেমিক হওয়ার গল্প...এ এক স্বপ্নবাজ তরুণের স্বপ্ন দেখার অধিকার অর্জনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের গল্প...এ এক জীবনানন্দ দাশের কবিতা পড়া প্রেমিক তরুণের গেরিলা হওয়ার গল্প...এ এক বন্দী শিবিরে আটকে পড়া জাতির নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের গল্প...এ এক জাতির স্বাধীনতার গল্প...

আমি একাত্তর দেখিনি । মায়ের কাছে তার দুঃসহ গল্প শুনেছি । ঢাকার নাখালপাড়ার আনোয়ারা বেগম নামে এক মা কোলের শিশুকে দুধ খাওয়াচ্ছিলেন । পাকিস্তানী সেনার গুলি মুলি বাঁশের বেড়া ভেদ করে তার বুকে গিয়ে লাগে...শিশুটির মুখে তখনো নিষ্প্রাণ মায়ের স্তন...শিশুটি জানেও না তার মা হারিয়ে গিয়েছে চিরতরে...এমনই অজস্র মায়ের, অজস্র শিশুর, অজস্র ভাইয়ের, অজস্র বোনের, অজস্র বাবার গল্প উঠে এলো জাহানারা ইমাম নামের এই নারীর দিনলিপিতে । রুমী, আজাদ, বদি, চুল্লু, মুনির চৌধুরী, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, আলতাফ মাহমুদের মত অজস্র নক্ষত্রদের কথা...আর তাঁদের আপনজনদের ত্যাগের কথা...বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এই মহাকাব্য লিখলেন এক নারী...তাইতো হওয়ার কথা...দেশমাতৃকার ডাকে পাঁজরের হাড়টি খুলে দিয়েছে কে ?...হৃদপিন্ডের অধিক প্রিয় সন্তানকে যুদ্ধের সাজে সাজিয়ে দিয়েছে কে ?...নয় মাস ব্যাপী সম্ভ্রম হারিয়েছে কে ?...সে তো কোন না কোন নারী...তাহলে সেই বেদনার কথা এমন নির্মোহ আর কে বলতে পারে ?

৩০.

জাহানারা ইমাম নামের এই নারী আমার জীবনে আবারও একবার উল্কার বেগে এলেন । নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচার বিরোধী গন আন্দোলনের পরে মানুষ যখন স্বপ্ন দেখছে স্বাধীনতার স্বপ্নগুলো সফল হওয়ার, তখন এক গোলামের “আমীর” হওয়ার দুঃস্বপ্নটি আক্রান্ত করলো বাংলাদেশকে...আবার একবার উত্তাল হয়ে উঠল বাংলাদেশ...জাহানারা ইমাম দেশ মাতৃকার ডাকে বের হয়ে এলেন গৃহকোন থেকে...ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির পতাকা তলে তখন দূর্বার আন্দোলন...ক্যাম্পাসে, শহীদ মিনারে, রাজপথের মিছিলে তখন অজস্র মা, অজস্র বাবা, অজস্র ভাই আর অজস্র বোনের মিছিল...হাত তাদের মুষ্টিবদ্ধ...কণ্ঠে শ্লোগান.. “ভুলি নাই, ভুলবো না কোনদিন”...

ক্যাম্পাসের সেই মিছিলে হাঁটছি আমিও । স্বপ্ন দেখছি...একদিন যাব এলিফ্যান্ট রোডের ক্ষণিকায়, যেখানে আছে শহীদ রুমীর প্রমাণ সাইজের ছবি...নীচে লেখা “আবার আসিব ফিরে...” বুকে জড়িয়ে ধরব শহীদ জননীকে...হেসে বলব, “আপনার বারুদে ঠাসা বুকটা জড়িয়ে ধরতে তো বেশ...”। সব স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়ে চলে গেলেন তিনি...আবারও একবার গেলাম শহীদ মিনারে...দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে এক সময়ে তাঁর খুব কাছাকাছি গেলাম...আলগোছে রাখলাম একটি ভালবাসার গোলাপ তাঁর পাশে...যে আলিঙ্গনটি দেয়ার কথা ছিল, তা আর দেয়া হল না...চোখের জলের বাঁধ মানে না...ঝাপসা চোখে বলি, “সালাম, হাজারো সালাম জননী, তোমাকে...তোমাদের এই ঋণ কোনদিন শোধ হবে না...”

.........

পাদটিকাঃ
শহীদ জননীকে তাঁর আলিঙ্গনটি দেয়া হয়নি । অনেক অনেক দিন পরে কেন জানি না এই ক্ষুদ্র কবিতাটি লিখেছিলাম তাঁর ও সকল শহীদ জননীদের স্মৃতিতে...তোমাদের এই ঋণ কোনদিন শোধ হবে না, কোনদিন না...

একজন জাহানারা ইমাম

স্বাধীনতার কুড়ি বছর পরেও যখন পুরাতন শকুনেরা
থাবা থেকে নখর বের করার দেখায় দুঃসাহস,
তখন তুমি সেনাপতির ধ্রুপদী মুদ্রায়
এসে দাঁড়াও শহীদ মিনারের বেদীতে;
তখন আর তুমি “ঢাকার সুদর্শনা সুচিত্রা সেন” থাকো না
তখন তুমি আর শুধুই একজন শহীদের দুঃখিনী জননী থাকো না,
তখন তুমি হয়ে যাও একজন ভীষণ বিদ্রোহী নেলসন মেন্ডেলা
তখন তোমার দু’চোখ স্বপ্নাতুর শেখ মুজিব
তখন তোমার দু’হাত লেনিনের উচ্চকিত শপথ
তখন তোমার দু’পায়ের অস্থিরতায় চে গুয়েভারা
তখন তোমার কণ্ঠে এসে বাসা বাঁধে কালবোশেখির মেঘের গর্জন ।

তখন নিযুত শহীদের করোটি ছুঁয়ে করা শপথের উন্মাদনায়
তুমি ছুটে বেড়াও দিকবিদিক,
রাজধানী এবং মফস্বল শহরের সব পিচ ঢালা রাজপথ
তোমার পায়ের নীচে গলতে থাকে মোমের মতন ।
তখন চৌষট্টি হাজার গ্রামের সব মেঠো পথ
তোমার কণ্ঠ ধ্বনি শোনার জন্য হয়ে যায় উন্মাতাল ।
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল জুড়ে সমস্ত নদী আর ঝর্নারা
তোমার অবিনাশী স্লোগানের জন্য উন্মুখ ।
তোমাকে অনুসরণ করে মিছিলের কাফেলায়
একে একে শামিল হয় সব অমৃতের সন্তানেরা,
ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, প্রীতিলতা, ইলা মিত্র আর
রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার থেকে শুরু করে
আলতাফ মাহমুদ, শহীদুল্লাহ কায়সার, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা,
সেলিনা পারভীন, মুনির চৌধুরী, ফজলে রাব্বী, গোলাম মোর্তজা...

তোমার আহ্বানে স্বর্গোদ্যান ছেড়ে সাহসী শেরপার মত নেমে আসে গেরিলারা
বাংলাদেশের সীমান্ত জুড়ে তিতুমীরের দুর্গের মত দুর্ভেদ্য দাঁড়ায়
রুমী, আজাদ, বদিউল, জুয়েল, চুল্লু, বাশার...

তখন আর সীমান্তের এক ইঞ্চি ভূমিও অরক্ষিত থাকে না,
তখন তোমার হৃদয় হয়ে যায় রক্তাক্ত বাংলাদেশের মানচিত্র ।


মন্তব্য

মানিক মনিরুল এর ছবি

অনেক দিন ধরেই সচলায়তনে লেখা পরছি, কিন্তু কখনই কন লেখায় মন্তব্ব করিনি। এই প্রথম আপনার লেখা পরে আমি সত্তিই অভিভুত। বিশেষ করে সব শেষে কবিতা আমার শরিরের লম দার করিএ দিয়ছে।

অনেক ভাল।

মানিক মনিরুল

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

মানিক, আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ।

আমি খুব ক্ষুদ্র মানুষ । এই জীবনের অর্জন কিছু নেই । শুধু আছে কিছু মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসার ঋণ । জাহানারা ইমাম তেমনই একজন মানুষ ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

মানিক মনিরুল এর ছবি

অস্টম পর্ব পরে অভিভুত হবার পর ভেবেছিলাম সব্গুল পর্বই পড় ফেলব। মাত্র শেষ করলাম।আমার বেশ কয়েক জন ব্ন্ধু আছে যারা সারাক্ষণ কানের কাছে বক বক করে নানা রকমের ফাল্তু আলাপ।আমি কিছু শুনি আর কিছু শুনেও না শুনার ভান করি। কিন্তু আপনার বকবকানি শুধু পড়ইনি অনুভব করেছি প্রতিটি মুহুর্ত। অনুভব করেছি সুন্দর স্মৃতি গুলো আসলেই কতটা সুন্দর হতে পারে। সুন্দর স্মৃ্তি চারন আমাদের চিন্তাভাবনাকেই পরিবরতন করেদেয় অনেকাংশে।

আপনি বায়লজি ক্লাসের কথা বলেছেন, আমি বায়্লজি ক্লাসে সারাক্ষণ শুধু অ্যমিবার ছবি আকতাম। অ্যমিবার সহজ সরল শারীরিক গঠণ আমাকে মুগ্ধকরে। অ্যমিবাই আমার প্রথম প্রেম। অ্যমিবাকে নিয়ে অনেক গল্প আছে আমার হাসি । সময় হলে একদিন গুছিয়ে বলব।

আপনার আরও লেখা চাই এবং পূর্বের সব লেখা পরে ফেলব বলে স্বিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আপনার শারীরিক সুস্থতা কামনা করছি।

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

অ্যমিবাই আমার প্রথম প্রেম। অ্যমিবাকে নিয়ে অনেক গল্প আছে আমার হাসি । সময় হলে একদিন গুছিয়ে বলব।

আপনার প্রথম প্রেমের গল্পটা যেন অবশ্যই লিখবেন ...খুবই ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে দেঁতো হাসি

আপনার শারীরিক সুস্থতা কামনা করছি ।

এইটা একটা কাজের দোয়া করছেনরে ভাই । খুব জরুরী শুভ কামনা আমার জন্য । দেখি কোন একদিন এই প্রার্থনার গল্পটা বলার সুযোগ পাই কি না !

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

ইটা রাইখ্যা গেলাম... রেখে গেলাম আপুনি। পরে এসে মন্তব্য করছি তোমার লেখায়।
তবে তোমার অসাধারণ কবিতাটির জন্য গুরু গুরু গুরু গুরু হাসি
তোমার জন্য শ্রদ্ধা।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

শ্রদ্ধা ? শ্রদ্ধাতো তাঁদের জন্য যাঁদের জন্য আজ আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

বেচারাথেরিয়াম এর ছবি

হৃদয় ছুঁয়ে গেল, এই পর্বটাকে স্মৃতিকথার থেকে হৃদয়কথা বেশি মনে হল।
গুরু গুরু গুরু গুরু

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

এই পর্বটাকে স্মৃতিকথার থেকে হৃদয়কথা বেশি মনে হল।

আসলেই তাই । হৃদয়েরই কথা । দূঃখ শুধু একবার ছূঁয়ে দেখিনি সেই মানুষটাকে । অথচ ছিলেন তো কাছেই ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

অতিথি লেখক এর ছবি

চোখটা বড় বেয়াড়া, সে কথা বলি না। লেখা নিয়েও বলতে যাওয়া অহেতুক। নিরব হয়ে বসে আছি।

স্বয়ম

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

স্বয়ম, আমার লেখার তো কোন গুন নেই ভাই...এ যে এমন এক মায়ের কথা যার কাছে শেষতক সত্যনিষ্ঠাই বড়...অপত্য স্নেহের চেয়ে দেশই বড়...নিজের শান্তির চেয়ে দ্রোহই বড়...এই মানুষকে ভাল না বেসে উপায় কি ?

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের এই মহাকাব্য লিখলেন এক নারী...তাইতো হওয়ার কথা...দেশমাতৃকার ডাকে পাঁজরের হাড়টি খুলে দিয়েছে কে ?...হৃদপিন্ডের অধিক প্রিয় সন্তানকে যুদ্ধের সাজে সাজিয়ে দিয়েছে কে ?...নয় মাস ব্যাপী সম্ভ্রম হারিয়েছে কে ?...সে তো কোন না কোন নারী...তাহলে সেই বেদনার কথা এমন নির্মোহ আর কে বলতে পারে ?

চলুক

চোখের জলের বাঁধ মানে না...ঝাপসা চোখে বলি, “সালাম, হাজারো সালাম জননী, তোমাকে...তোমাদের এই ঋণ কোনদিন শোধ হবে না...

গুরু গুরু

কবিতাটির জন্য আবারও গুরু গুরু

এই লেখায় পাঁচ তারা যে খুব কম হয়ে যায় আপুনি।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

এই লেখায় পাঁচ তারা যে খুব কম হয়ে যায় আপুনি।

ভালবাসার চেয়ে বড় কিছু নেইরে বোন । তারা দিয়ে কি আর ভালবাসা মাপা যায় ?

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

সাবেকা সুলতানা এর ছবি

আপনার লেখা দেখেই লগইন করলাম । এই লেখাটা অন্যরকম, এর প্রতিটি লাইনের সাথে যেন জড়িয়ে আছে আমাদের সবার কথা । তবে মনে হল লেখাটা আরেকটু বড় হলে পারত ।
কবিতাটি পড়েও মুগ্ধ হলাম চলুক

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

এর প্রতিটি লাইনের সাথে যেন জড়িয়ে আছে আমাদের সবার কথা ।

এক দম ঠিক কথা । এতো আমাদের সবার কথা । সকল শহীদের প্রতি ও তাঁদের আপনজনদের প্রতি আমাদের সবার অনুভূতিইতো এক ।

তবে মনে হল লেখাটা আরেকটু বড় হলে পারত ।

কিছু কিছু মানুষ থাকেন যাঁদেরকে না দেখেও দেখা হয়ে যায়...লৌকিক কোন সম্পর্ক ছাড়াই তাঁরা হয়ে যান আত্মীয়...আত্মার অনেক কাছের যে ! জাহানারা ইমাম আমার জীবনের তেমনই এক মানুষ । দেখি আবার কখনো তাঁর কথা বলা যায় কি না ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

ফাহিম হাসান এর ছবি

এই পর্বটা দুর্দান্ত হয়েছে

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ ফাহিম ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

এ সবই দেখেছি। এর সাথে সম্পৃক্তও ছিলাম। কিন্তু আপনার মতো করে প্রকাশ করার ভাষাজ্ঞান আমার নেই।
লেখাটা পড়ে আপ্লুত হলাম। চলুক

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

এ সবই দেখেছি। এর সাথে সম্পৃক্তও ছিলাম। কিন্তু আপনার মতো করে প্রকাশ করার ভাষাজ্ঞান আমার নেই।

কে জানে ? হয়তোবা আপনার লেখা পড়ে আমিও আপ্লুত হব ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার সব লেখা পড়লাম। খুব ভাল লাগলো। এরকম সুখপাঠ্য বাংলা কমই পড়েছি। জীবনের ছোটো ছোটো, আপাত নিরীহ ঘটনাগুলোকে একইসাথে সংযত ও পরিমিতভাবে Humour আর Emotion দিয়ে উপস্থাপন করা, সেগুলোকে গুরূত্বপূর্ণ করে তোলা সহজ নয়। আপনি এই কাজটি সুন্দর ভাবে করেছেন। আপনার আরও আরও লেখার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।

মানস প্রদীপ

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

আপনার আরও আরও লেখার অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ।

বলছেন ? ভেবে চিন্তে বলছেন ? এই ধরনের হাবিজাবি লেখা কিন্তু তারপর চলতেই থাকবে চলতেই থাকবে (যদি না মডুরা বিরক্ত হয়ে ঘ্যাচাং করে না দেয়)...তখন কিন্তু দেখবেন অরুচি এসে যাবে দেঁতো হাসি

আসল কথাটাই বলা হয়নি, মানস । আপনার নিকটি আমার খুব ভাল লেগেছে । খুব সুন্দর বাংলা নাম । বাংলা নামের প্রতি আমার বিশেষ দুর্বলতা আছে ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারণ!!! জাহানারা ইমামকে আমার কেমন জানি সমুদ্রের মতো মনে হয়; যার কোন সীমানা নেই, আছে শুধু বিস্তার। ওনার বুকে শুধুই দেশের জন্য ভালোবাসা।

তখন আর সীমান্তের এক ইঞ্চি ভূমিও অরক্ষিত থাকে না,
তখন তোমার হৃদয় হয়ে যায় রক্তাক্ত বাংলাদেশের মানচিত্র ।

কবিতা বুঝি না, তবে এই লাইনদু'টো বুকের মধ্যে গেঁথে গেলো।

কোনদিন কানাডা গেলে আপনার সাথে দেখা করে আসবো।

ফারাসাত

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

কবিতা বুঝি না, তবে এই লাইনদু'টো বুকের মধ্যে গেঁথে গেলো।

অনেক ধন্যবাদ । যাঁর জন্য এই কবিতা, তাঁর তুলনায় কবিতাটি ধুলার ধুলিসম ।

কোনদিন কানাডা গেলে আপনার সাথে দেখা করে আসবো।

কানাডা কেন আসতে হবে, ভাই ? আমি বাংলাদেশের মানুষ । দেশে গেলে লইট্যা শুটকির ভর্তা দিয়ে ভাত খাওয়ার নেমন্তন্ন আশা করছিলাম তো মন খারাপ

তবে হ্যা একবার যদি কানাডায় আইসাই পড়েন, আর ধারে কাছের শহরেও আসেন, তাইলে কিন্তু আওয়াজ দিয়েন । অটোয়াতেও ইলিশ মাছ আর সরিষা পাওয়া যায় । কচুর লতির সরবরাহও ভাল দেঁতো হাসি

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি চাটগাঁর মানুষ। আর আম্মা শুটকী সহ যেকোন রান্নার জন্য বিখ্যাত। যদি কোনদিন এইদিকে বেড়াইতে আসেন কষ্ট করে আওয়াজ দিয়েন। শুধু শুটকী না, টাকি মাছের ভর্তা, সস্ দিয়ে মুরগী, সর্ষে ইলিশ, ঐতিহ্যবাহী মেজবানী গরুর গোস্ত, শিমের বীচি টমেটো দিয়ে মাছের ঝোল, খাওয়ার পরে সাগর দই (এর বাইরে যদি আর কোন কিছু আপনার স্পেশাল ইচ্ছে থাকে) - এই সবের নেমন্তন্ন রইলো। খুশ??

ফারাসাত

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

আর আম্মা শুটকী সহ যেকোন রান্নার জন্য বিখ্যাত। যদি কোনদিন এইদিকে বেড়াইতে আসেন কষ্ট করে আওয়াজ দিয়েন। শুধু শুটকী না, টাকি মাছের ভর্তা, সস্ দিয়ে মুরগী, সর্ষে ইলিশ, ঐতিহ্যবাহী মেজবানী গরুর গোস্ত, শিমের বীচি টমেটো দিয়ে মাছের ঝোল, খাওয়ার পরে সাগর দই (এর বাইরে যদি আর কোন কিছু আপনার স্পেশাল ইচ্ছে থাকে) - এই সবের নেমন্তন্ন রইলো। খুশ??

খুশ ? আলবত খুশ । যে তালিকা দিলেন এর পরেতো দেশে আসতেই হচ্ছে । আর চাটগাঁ আমার প্রিয় শহর । সাকুল্যে একবার গেছি, কিন্তু ঢাকার তুলনায় অনেক পরিচ্ছন্য আর প্রাকৃতিক লেগেছে আমার কাছে ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।