বাতাসে শীতের গন্ধ । প্রকৃতিতে রংয়ের উৎসব শেষ করে পাতাদের ঝরে পড়াও শেষ । বাদামী রংয়ের শুকনো পাতা মাড়িয়ে বাড়ি ফেরার পথে কোথা থেকে ভেসে এল অনেক দিন আগের এই রকম শীতের কোন ইউক্যালিপটাসের শুকনো পাতার গন্ধ...নজরুলের সমাধির পাশে লাইব্রেরীর গেইটে লাল রঙ্গা বাস থেকে নেমে কলা ভবন পর্যন্ত হেঁটে আসতে আসতে মাটি থেকে কুড়িয়ে নিতাম ইউক্যালিপটাসের শুকনো পাতা । একটু ছিড়লেই সেই পাতা থেকে বের হ’ত অদ্ভুত এক সৌরভ...কোথা হতে ভেসে এলো ফেলে আসা দিনের গায়ে লেগে থাকা সেই সৌরভ...আর তার হাত ধরে চলে এল বন্ধুর মত বন্ধুদের স্মৃতিরা...
... ...
এই সব অদরকারী স্মৃতির কোন পরম্পরা নেই । তবু যদি কারুর আগ্রহ থাকে, তাহলে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম , দশম ও একাদশ পর্ব এখানে ।
... ...
৪৩.
তখনও স্কুলে পড়ি । মিয়াভাই সুদূর আমেরিকা থেকে দেশে এসেছেন । ভ্রাতৃবধূর সম্মানে মেজভাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে গিয়েছেন বেইলী রোডের মহিলা সমিতি মঞ্চে নাটক দেখাতে ।
চিত্রাঙ্গদা । রবীন্দ্রনাথের গীতি নৃত্যনাট্য । চিত্রাঙ্গদা মণিপুর রাজ্যের রাজকন্যা । অপুত্রক রাজা চিত্রাঙ্গদাকে অন্তঃপুরের যোগ্য করে গড়ে তুলেননি । তাকে শিখিয়েছেন পুরুষের বিদ্যা । শৌর্য্যে, বীর্য্যে সে এক “রাজপুত্র” । নাটকের শুরু তাই চিত্রাঙ্গদার কাছে সখীদের অনুমতি চেয়ে গান... “বেলা যায় বহিয়া, দাও কহিয়া / কোন বনে যাব শিকারে...”
সেই রকম শিকারের একদিনে গভীর অরণ্যে দেখা হয়ে গেল মধ্য পাণ্ডব অর্জুনের সাথে । সেই প্রথম চিত্রাঙ্গদা পঞ্চশরের আঘাত পেল হৃদয়ে । এদিকে পুরুষের পোশাকে সজ্জিত চিত্রাঙ্গদাকে “বালক” মনে করে অর্জুন চলে গেল উপেক্ষা করে । চিত্রাঙ্গদা সেই প্রথম জানলো, এতকাল শুধু ধনুর্বিদ্যা চর্চা করেছে, উপেক্ষা করেছে মনোহরণের দীক্ষা । তাই তার চোখে নেই সেই তীক্ষ্ণ কটাক্ষ চাহনি, যার কাছে পুরুষ হয় পরাস্ত । অঙ্গে নেই তার সেই বিলাস ব্যাসন, সুগন্ধির মায়াজাল যার কাছে পুরুষ করে আত্ম সমর্পণ । তাই সে গেল প্রেমের দেবতা পঞ্চশরের কাছে রূপ, মাধুর্যের প্রার্থনা নিয়ে, নারীত্বের যাচনা নিয়ে । সব শুনে পঞ্চশর এক বরষের জন্য চিত্রাঙ্গদাকে করে দিলেন অপরূপা । নতুন রূপের চিত্রাঙ্গদাকে দেখে অর্জুনের ব্রহ্মচর্য্যের ব্রত গেল ভেঙ্গে । রূপের দেবীর পায়ে এসে আত্মাহুতি দিল ত্রিভুবনের বীর অর্জুন । প্রেমের জোয়ারে ভাসিয়ে চিত্রাঙ্গদা আঁচল বন্দী করে ফেললেন অর্জুনকে । এদিকে বর্ষ ফুরিয়ে আসছে, অর্জুন “যুবরাজ” চিত্রাঙ্গদার শৌর্য্য, বীর্য্যের কথা জ্ঞাত হলেন । প্রেয়সী অপরূপা নারীর কাছে বীর চিত্রাঙ্গদার সুলুক সন্ধান জানতে চাইলেন । অপরূপা চিত্রাঙ্গদা অর্জুনকে সাবধান করে দিলেন, “ছি ছি, কুৎসিত কুরূপসী...” । কিন্তু ইতোমধ্যে অর্জুনের বোধহয় রূপের প্রেমে ভাটা পড়ে এসেছে, তাই সেই কুরূপসীর সন্ধান । চিত্রাঙ্গদাও এই মায়াজালে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন । পঞ্চশরের কাছে আবেদন করে রূপের এই আবরণ থেকে মুক্ত হয়ে দেখা দিলেন অর্জুনকে । সত্য উদ্ঘাটিত হ’ল । মিথ্যা মায়াজালের আবরণ পেরিয়ে যুগলের প্রেম দাঁড়ালো সত্যের ওপর । বহিরঙ্গের রূপের বিভ্রম ছাড়িয়ে প্রেম সন্ধান পেল অন্তর্লোকের অধরা মাধুরীর । চিত্রাঙ্গদা ফিরে পেলেন আপন রূপ, আপন পরিচয় । নারীর সত্যিকারের পরিচয় যে তার লাস্যময়ী রূপ মাধুর্য্যের ঊর্ধ্বে অন্য কোথাও, সেই কথা স্মরণ করিয়ে দিতে গাইলেন ...
মঞ্চে আপন মহিমায় উজ্জ্বল চিত্রাঙ্গদা নারীর প্রকৃত পরিচয় উন্মোচন করছেন । দেবীত্বের পরিচয়ের দূরত্বে নয়, দূর্বলতার অবমাননায় নয়, দুরূহ চিন্তার সমান অংশেই নারীর প্রকৃত পরিচয় । প্রেমে পড়ে গেলাম সেই শৌর্য্যে, বীর্য্যের নারীর । নিজেকে মনে হ’ল মণিপুর রাজ্যের রাজকন্যা (মিলটা লক্ষ্য করেছেন, মণিপুর ও মিরপুর ?) । মনস্থির করে ফেললাম, গোকুলে বেড়ে ওঠা অর্জুনের দেখা পেলে ঠিক এমন করেই বলব, “নহি দেবী, নহি সামান্যা রমণী / পূজা করি মোরে রাখিবে ঊর্ধ্বে, সে নহি নহি / হেলা করি মোরে রাখিবে পিছে, সে নহি নহি...”
৪৪.
সংশপ্তক । শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে ধারাবাহিক টিভি নাটক । নির্দেশনায় আবদুল্লাহ আল মামুন ।
নাটকের প্রথম দৃশ্য । গ্রামের শালিস । গ্রামের অরক্ষণীয়া দরিদ্র নারী হুরমতির বিরুদ্ধে । কুমারী হুরমতি সন্তানের জন্ম দিয়ে গ্রামের মুখে কলঙ্ক লেপে দিয়েছে । তাই শালিসের সিদ্ধান্ত, ধাতব পয়সা গরম করে হুরমতির কপালে ছ্যাঁকা দেয়া হোক । তাকে দেখে যেন কূলটা সকল নারী জানে চরিত্রহীনতার শাস্তি কত ভয়াবহ ।
ততদিনে মানবের বংশ বিস্তারের আদিম জ্ঞান জানা হয়ে গিয়েছে আমার । জানি হুরমতির অবৈধ সন্তানটির জন্ম হুরমতি একা দেয়নি । একটি পুরুষেরও ভূমিকা সেখানে ছিল । কিন্তু সেই শালিসে একবারও তার সন্ধান করা হয় না ! বেদনার্ত আমি জানলাম “কূলটা” শুধু নারী হয়, পুরুষ হয় না...
৪৫.
হঠাৎ একদিন “বড় হয়ে” যাওয়া । প্রাকৃতিক নিয়মে শরীরের পরিবর্তন । যতই আকাশের গায়ে গায়ে কাঁশ রং মেঘের রাজ্যে মন হারাক না কেন, কোন উপায় নেই সেই বিদঘুটে পরিবর্তনকে অস্বীকার করার । কোন প্রস্তুতি ছাড়াই একদিন সে চলে আসে । ইসলামিয়াত বইয়ের “হায়েজ নেফাছ” জাতীয় কিছু অকার্যকরী জ্ঞান ছাড়া কোন প্রতিরোধ নেই সেই পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ! শুধু আবছা একটা ধরনা, মেয়েরা বড় হলে কিছু একটা হয় । কিন্তু আমি তো এত শিগগীর বড় হতে চাইনি ! নিজের শরীর ও মনের ওপর কোন নিয়ন্ত্রণই নেই আমার । ভীষণ অসহায় আর বিপর্যস্ত কিশোরী জীবনের এই সময়ে সাধারনতঃ মা, বোন, খালা, ফুপুরা এগিয়ে আসে । আমার বেলাও তাই হ’ল । ছোট’পা আমাকে প্রথম ব্যাখ্যা করলো শরীরের এই পরিবর্তন । আর “রেখে ঢেকে” মানবের বংশ বিস্তার সম্পর্কিত “আংশিক” জ্ঞান । সেই সঙ্গে উচ্চারিত হ’ল সেই অমোঘ নিষেধাজ্ঞা, যা সব “বড় হওয়া” কিশোরীকে শুনতে হয়, “এখন থেকে নিজের বাবা আর ভাইদের ছাড়া কোন পুরুষকে বিশ্বাস করবি না...” । আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো, এই পৃথিবীর অর্ধেক অধিবাসীকে “অবিশ্বাস” করে করে বাঁচতে হবে ?
ছোট’পা আমাকে অবিশ্বাসের কারণও ব্যাখ্যা করেছিল । তার ব্যাখ্যায় মূর্ত হয়ে উঠেছিল রামায়ণের সেই দৃশ্য...পরম পরাক্রমশালী রাজা রাম নির্দেশ দিচ্ছেন স্ত্রী সীতাকে, “দেবী, সতীত্বের প্রমাণ দাও । অগ্নিতে প্রবেশ কর । যদি সত্যই তুমি সতী হও, তবে অগ্নি তোমাকে স্পর্শ করবে না...” প্রজাদের ইচ্ছার কাছে মাথা নত করলেন রাজত্বের অধীশ্বর । স্ত্রীর মর্যাদা তার কাছে কিছু না । অভিমানী সীতা মাতৃদেবী বসুন্ধরাকে বললেন, “জননী, পরিত্রাণ দাও এই অবমাননা থেকে...আমাকে গ্রহণ কর” । ধরণী দ্বিধা বিভক্ত হ’ল, সীতা পাতালে প্রবেশ করলেন ।
মেয়েদের বড় হয়ে যাওয়ার সঙ্গে লেগে থাকে “অপরাধবোধ”, এমন কি যে অপরাধ সে আদৌ করেনি, সেই অপরাধেরও অপরাধবোধ । নিজের শরীরের শুচিতা সামলে সুমলে রাখাটা তাই নারীর জীবনের প্রথম দায়িত্ব । অহরহ তাকে শুনতে হয়, পুরুষের শরীরে কোন প্রমাণ থাকে না, থাকে নারীর শরীরে । নারীর শরীরের সেই অশুচিতা স্পর্শ করে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র...কাজেই বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই অপরাধবোধের সন্ত্রস্ততায় তটস্থ করে দেয়া হয় “বড়” হয়ে যাওয়া কিশোরীকে ।
আমি খুব দুরন্ত কিশোরী ছিলাম না । খেলা-ধুলা, দৌড়-ঝাপ, পাড়া বেড়ানো ধরনে কিশোরীও না । আমার পরিবারও এমন কিছু রক্ষণশীল ছিল না । বরঞ্চ, ছয় ভাইয়ের প্রশ্রয়েই বড় হয়েছি । আমার বেড়ে ওঠায় মা-বাবা কোন অতিরিক্ত সীমানা টেনে দেন নি । মা ভাত বাড়তে গিয়ে মাছের মাথাটা, মুরগীর রানটা ছেলেদের দিয়ে ন্যাজা আর ডানা আমার পাতে দেননি । ডিম, দুধের ভাগ থেকে শুরু করে পড়াশোনার খরচের ভাগেও গণতান্ত্রিক ছিলেন । আমার বাবা পিঠাপিঠি ভাই সোহেলের তুলনায় আমাকেই বেশী স্নেহ করেছেন । কিন্তু আমার পরিবারেও সূর্যাস্ত আইন ছিল অলঙ্ঘনীয় । যে কোন মূল্যে মাগরিবের আজানের আগে ঘরে ফিরতে হবে । “সূর্যাস্ত আইন” আর “অবিশ্বাস”ই হ’ল কিশোরী জীবনের প্রাকৃতিক পরিবর্তনের বিরুদ্ধের যুদ্ধে প্রথম “ঢাল” । জানি না, আমার যেসব বন্ধুদের খেলা-ধূলা, দৌড়-ঝাপ ও পাড়া বেড়ানোর অভ্যাস ছিল, তাদের আর কী কী ঢাল ছিল । সে সবের অস্ত্রের রক্ষাব্যুহে কতটাই বন্দী লেগেছিল তাদের...
...
পাদটীকাঃ ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি’র অনুপ্রেরণা এসেছিল এক বন্ধুর খোমা খাতার চিরকুট থেকে । সেবা, আমার সেই বন্ধু থাকে ক্যালিফোর্নিয়াতে । বন্ধুদের কথাই শুধু লেখার ইচ্ছে ছিল । কেমন করে যেন আরও অনেক গল্প এসে গেল । কিছু গল্প নিজের, কিছু গল্প আরও অনেকের । এই পর্বের খসড়া করে রেখেছিলাম শাহবাগ আন্দোলনের শুরুর দিকে । সেই আন্দোলনের উত্তাপের মধ্যে এই অর্থহীন স্মৃতিচারণ সচলায়তনে দিতে ইচ্ছে করেনি । তাই বেশ দেরী হ’ল । এই পর্বটি ও আগামী পর্বটি উৎসর্গ করছি শাহবাগের লাকি আক্তারকে । লাকি, আপনাকে শ্রদ্ধা ।
মন্তব্য
বলি আপুনি, অর্জুনের দেখা যখন পেয়েছিলে বলেছিলে তো--
“নহি দেবী, নহি সামান্যা রমণী / পূজা করি মোরে রাখিবে ঊর্ধ্বে, সে নহি নহি / হেলা করি মোরে রাখিবে পিছে, সে নহি নহি...”
খুব জানতে মন চায় কেন এমন নিয়ম সমাজের?
দোষী হলে দুজনেই হবে নাহলে কেউ নয়।
সেই সব ঢালের গল্প একদিন শুনাব। মেয়েদের হুট করে বড় হয়ে যাওয়ার মত কষ্ট সেই বয়সে আর কিছু নাই।
নিজের শরীর, মন সব নিজের কাছেই অচেনা লাগে। সময়গুলো খুব বিব্রতকর, মাঝে মাঝে অপমানজনক ও বটে। কেন যে সমাজের নিয়মগুলো এমন-- কেন যে!!!
অনেক দিন পরে এই সিরিজটা আবার পড়লাম, খুব ভালো লাগল। তোমার এই লেখাগুলোর জন্য ভীষণ অপেক্ষা করে থাকি-- জান কি??
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
মনে থাকে যেন ।
হায়রে আমার “আজাইরা” স্মৃতিচারন, তাও আবার আমার এই ভইনের এত ভাল লাগে
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
অনেক অপেক্ষার পর, অবশেষে।
হায়.. চিত্রাঙ্গদা!
লেখায় পাঁচ তারা।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
এত তারা দিয়ে আমি করব কী, তিথী ? যাক গে তারা পেয়ে, বুড়োর এই গানটা মনে পড়ে গেল ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
অসম্ভব সুন্দর !
ধন্যবাদ, অতিথি লেখক । আপনার নামটা জানতে পারলে ভাল লাগতো ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
বুড়ো হয়েছি, কয়েক বছর আগে অর্ধ শতাব্দী পার করে দিয়েছি। এখন আর আগের মতো একটানা কোনো কিছু পড়তে পারি না। কিন্তু, জোহরা বোন, আপনার এই 'সিরিজ'-এর সব ক'টা লেখা একসাথে না পরে থামতে পারি নি। হেসেছি, কেঁদেছি, চোখ মুছে ঝাপসা চোখে আবার পড়ে গেছি।
আমি জন্মেছি ভারতীয় হয়ে আর স্ব ইচ্ছায় বরণ করেছি মার্কিন নাগরিকত্ব। কিন্তু, আমার বাবার ভিটে সোনার গাঁ, পানাম। মা-এর ফরিদপুর। ১৯৪৭-এর পর থেকে তাঁরা উদ্বাস্তু হয়ে গেলেন। নিরুপায় তাঁরা তাঁদের জন্মভূমিকে ভরে দিয়েছেন আমার চেতনায়। বৃহত্তর সমাজ জীবনের পটে আমার সবচেয়ে আনন্দের ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম। কত যে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম তাকে নিয়ে! সমস্ত স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন হয়ে গেল যখন মুজিবুর নিহত হলেন আর তার পরে একদিন বাংলাদেশের গা থেকে খসে গেল তার সেকুলারিজম-এর জয়পতাকা। আমার বাবা-মা যেন আবার নুতন করে, এবার তাদের সাথে সাথে আমিও উদ্বাস্তু হয়ে গেলাম! আমি জন্মে সে দেশ দেখি নাই, কিন্তু আমি সে দেশের কেউ না - কথা গুলা লিখতে আমার হাত ভারী হয়ে যায়! আপনার লেখায় আমি যেন ভেসে বেড়ালাম আমার সেই সোনার দেশে। ভেসে বেড়াল এক ছোট্ট মানুষ - যার চোখে অনেক স্বপ্ন। যে বিশ্বাস করে একদিন বাংলাদেশ পৌঁছবে তার গন্তব্যে।
সচলায়তনে আমি এসেছি মাত্র-ই কয়েকদিন, এক সপ্তাহ হতেও দেরী আছে। আমি যাঁকে এক অসাধারন মানুষ বলে মানি, সেই ডাঃ মেহেদী হাসান-এর শাহবাগ নিয়ে লেখা থেকে ঘোরাঘুরি করতে গিয়ে আপনার এই অমুল্য রত্নভান্ডার-এর খোঁজ পেলাম। এখন থেকে নিয়মিত আপনার পরবরত্তী লেখার অপেক্ষায় থাকব।
ভাল থাকুন (যতটা সম্ভব), আর লিখতে থাকুন আপনার অসামান্য লেখা।
এক লহমা
দিলেনতো আমার দুই চোখ ভিজিয়ে ! যখন করেই ফেললেন এই অপকর্মটা, তাহলে আর বোনকে আপনি/ আজ্ঞে করবেন না । ছোট বোনকে কী বলে ডাকতে হয় জানেন নিশ্চয়ই ?
রাজনীতি আর অভিবাসন যে কত মানুষকে শেকড় ছাড়া করে...আর তার বেদনা যে কী মর্মস্পর্শী, সে শুধু সেই জানে যে পুড়েছে সেই দহনে ।
মাহমুদুজ্জামান বাবুর এই গানটা শুনেছেন তো...ভোর হয়নি, আজ হ’ল না...পরশু ঠিক আসবেই এই আশাবাদ তুমি ছেড়ো না... ? নতুন ভোরের স্বপ্নের আশাবাদ বুকে নিয়েই আগাতে হবে, আনতে হবে নতুন ভোর ।
সবশেষে, আমার লেখার যে অকুন্ঠ প্রশংসা করলেন, তার যোগ্য আমি নই । তারপরেও আপনার প্রশংসা আমি মাথা পেতে নিলাম । আশীর্বাদ করবেন যেন ভালো থাকি ও মায়ের রেখে যাওয়া আলোটুকু প্রাণপনে ধরে রাখার চেষ্টা করি ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
প্রিয় বোন,
যেভাবে ডাকার, সে’ভাবেই ডাকতে পারি, তবে সেটা হতে হবে উভয়ত, তাই তো?
আন্তর্জালের ভাই-বোনেরা ডাকে অমিত-দা বলে। খুব ভাল লাগবে তুমিও যদি ডাকো সেভাবেই।
আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। উপহার দিতে ইচ্ছে করছে।
সাধ্য বলতে তো দু-চারটে কথা কোনোমতে। তাই -
*** *** *** ***
কথা
চলে তো একদিন যেতেই হবে,
সেটা বড় কিছু কথা না
তার আগে কত পথ হেঁটে গেলাম - কথা সে’টাই।
ধুয়ে মুছে মিলিয়ে তো যাব-ই,
সেটা আর কি এমন কথা
তার আগে কত রং ঝরিয়ে গেলাম - কথা সে’টাই।
কথা তো ফুরিয়ে যাবেই,
সেটা কোনো কথা নয়,
কি কথা রেখে গেলাম, - কথা সে’টাই।
বিস্মৃতির অনন্ত আকাশে মিশে যাব,
সে কিছু বড় কথা নয়
কত চোখ তার আগে ভিজিয়ে গেলাম - কথা সে’টাই।
মুঠো খালি করে যাবে সকলেই,
মনে রাখার মত কথা সেটা নয়।
প্রজন্মের হাতে কি রেখে গেলাম - কথা সে’টাই।
যেতে যেতে অন্ধকার কত ঝেপে এল
কথা নয় সেটা-ও
ক’টা প্রদীপ জ্বেলে রেখে গেলাম - কথা সে’টাই।
অমিতাভ চক্রবর্ত্তী, মার্চ ২৬, ২০১৩
*** *** *** ***
আমার কথা আপাতত ফুরাল।
ভাল থেকো।
এক লহমা
ওক্কে অমিত’দা, তোমাকে দাদাই ডাকছি । কিন্তু, নো “দাদাগিরি”
কবিতা ভালু পাইছি
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
অমিত'দা দেখলেই কিন্তু শেষের কবিতার অমিত লোকটাকে মনে পড়ে। সে বেশ দুষ্টু ছিল।
শালুক চিনেছে গোপাল ঠাকুর
(বাকিটা আর জানায়া কাম নাই, ছুড ছেলেপিলেদের আকথা কুকথা না শিখানোই ভাল, কি কও! )
না না, এখানে এসব চলবে না। স্নেহ সতত একমুখী এবং সেটা আমার মত ছোট ছোট ছেলেপিলেদের দিকে, হুঁ।
ছোট ছেলেপিলেদের এই এক দোষ । হিংসায় পেট ভরা
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
তা কেন। বড় হয়ে গেলে তো আর কেউ আদর করে না, ছোট থাকতেই চেয়েচিন্তে যা পাই কুড়িয়ে নিই।
চিন্তার কিছু নাই। আমার স্নেহের ভান্ডার খালি হইতে ঢের বাকি আছে! খানিক্ষণ আগে কৌস্তুভ-এর 'দীপ জ্বেলে যাই' পড়ে মুগ্ধ হয়ে ভাবছি ঠিক কি ভাবে আহ্লাদ জানালে যথাযথ হবে। আর আধাঘন্টা সময় চাই। ক্ষিধা লাগছে, খালি পেটে আর যে যাই পারুক, আমি কিসুই পারি না! আর, জোহরা দিদিভাই, 'দাদাগিরি' চলবে না বলে যত-ই ফতোয়া দাও, ওইটা বয়সের ধর্ম, টাইম-টু-টাইম ঐ কুকীর্তি হৈয়া যাইবই। হ চ্যাষ্টা দিমু না করনের!
আহা বেশ বেশ!
চমৎকার লাগলো।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ, স্মৃতির শহর ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
অনেকদিন বাদে লিখলেন আপু। ভাল লাগছে। কত পুরান সিরিজের অপেক্ষায় আছি, আসেই না। আপনার "ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি", পুতুল ভাইয়ের "তীর্থের কাক" টানা চলতে চলতে বিরতি নিয়ে নিল। ত্রিমাত্রিক কবির সিরিজটা যে কই আছে কে জানে।।
ওয়েলকাম ব্যাক। বরাবরের মতই রানীর বেশে প্রত্যাগমন।
ধন্যবাদ এত অকুণ্ঠ প্রশংসার জন্য ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
এই লেখাগুলোর জন্য ভীষণ অপেক্ষা করে থাকি। ধন্যবাদ।
তারিক, অনেক ধন্যবাদ সময় করে পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
প্রথম থেকেই তোমার লেখার ভক্ত। কি যে ভাল লেখো, তাড়াতাড়ি পরের পর্ব দিয়ে দাও।
নীলকমলিনী দিদিভাই, আমিওতো তোমার মিষ্টির মহাভক্ত । কোনবা পথে তোমার বাড়ি যাই ?
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
পথ তো সোজা, কলকাতা-ডায়মন্ডহারবার-রানাঘাট-তিব্বত!
তাইতো বলি নীলকমলিনীর রাশি রাশি মিষ্টিগুলো সব যায় কোথা...হিংসুটে ছোট ছেলেপিলের পেটে...পথঘাটের কী বিতান্তই দিল
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
সুযোগ পেলুম কই! বছরশেষে যামুগা, প্যাঁচ কষছি
চমৎকার
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
ধন্যবাদ, ঈয়াসীন ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
আপনার লেখা নিয়ে আর নতুন করে কিছু বলার নেই । শুধু এটুকুই বলি লিখে যান যখনই সময় পান । মেয়েদের হঠাত বড় হয়ে যাওয়া নিয়ে লিখুন পরের কোন পর্বে । এই বিষয়গুলো তেমন করে লেখায় আসে না, আসা উচিত ।
ভাল থাকবেন ।
ধন্যবাদ, সাবেকা পড়ার জন্য ও মন্তব্য করার জন্য । এক বিশেষ ধরনের আনন্দ হয় এই রকম অনুপ্রেরনা পেলে ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
অনেক চেনা কথা সুন্দর গুছিয়ে বলে গেলেন আপু... মন ছুঁয়ে গেল খুব!
অনেক ধন্যবাদ, রংতুলি পড়ার জন্য ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
এই প্রৌঢ় বয়সে আপনার লেখা পড়ে নিজেকে আবার নতুন করে দেখি।
অনেক ধন্যবাদ ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
ইয়ে, মানে, ছোটোদের সামনে কি এইসব কথা বলতে আছে?
হক কথা । একদম মনে ছেলো না...কিরা কাটছি এরাম ভুল আর হবে নাকো
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
মর্ম, দেরীতে হলেও কথা রেখেছি, ভাই । ঘরের চাবি ভাঙ্গা ভাঙ্গির সব পর্বে “ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি” ট্যাগ দিয়ে দিয়েছি। এখন একটাই লজ্জার বিষয়। লোকে গুরুদেবের গান “খোঁজ দ্য সার্চ” করতে গিয়ে এই অখাদ্য-এর সন্ধান পেয়ে যাবে
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
নতুন মন্তব্য করুন