সুখী রাজপুত্ররা আর নেই?

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি
লিখেছেন মুহম্মদ জুবায়ের (তারিখ: শনি, ০৮/১২/২০০৭ - ১১:০৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.

অস্কার ওয়াইল্ড-এর 'দ্য হ্যাপি প্রিন্স' গল্পটি অনেকেরই জানা, তবু সংক্ষেপে বলা যাক:

শহরের মাঝখানে উঁচু বেদিতে এক রাজপুত্রের মূর্তি, তার শরীর সোনার পাতে ঢাকা, দুই চোখে মহামূল্য নীলা, তরবারির খাপে বিশাল একটি রুবি। সবাই তাকে জানে সুখী রাজপুত্র নামে। একরাতে একটি ছোট্টো সোয়ালো পাখি শহরে আসে। শরতের শুরুতে তার সঙ্গী পাখিরা মিশরের দিকে উড়ে চলে গেছে। রাজপুত্রের মূর্তির দুই পায়ের মাঝখানের জায়গাটি সোয়ালো বেছে নেয় রাত্রিযাপনের জন্যে। ঘুমাতে যাবে, এমন সময় এক ফোঁটা পানি পড়ে তার গায়ে। মুখ তুলে সোয়ালো দেখে মেঘের চিহ্নমাত্র কোথাও নেই, তবু বৃষ্টি! এইসব ভাবছে, তখনই আরেক ফোঁটা। এতো বড়ো মূর্তি তাকে বৃষ্টি থেকে একটু আড়াল করতে না পারলে আর এখানে থেকে লাভ কি? অন্যত্র জায়গা খোঁজার জন্যে পাখা মেলতে যাবে, এই সময় আরেক ফোঁটা। সে অবাক হয়ে দেখে, মূর্তির চোখভরা অশ্রু। সোয়ালো জিজ্ঞেস করে, 'তুমি কে?'

'আমি সুখী রাজপুত্র।'

'তাহলে তুমি কাঁদছো কেন?'

'জীবনকালে আমি অশ্রু কাকে বলে জানতাম না। আমার প্রাসাদে দুঃখের প্রবেশাধিকার ছিলো না। দিনমান আমোদ-ফুর্তি নিয়ে থাকতাম, প্রাসাদের চার দেওয়ালের বাইরে কি আছে জানার চেষ্টা করিনি কখনো। এমন ফুরফুরে সুন্দর জীবন ছিলো আমার, পারিষদরা আমাকে ডাকতো সুখী রাজপুত্র নামে। মৃত্যুর পরে আমাকে এখানে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হলো মূর্তি হিসেবে। এখান থেকে শহরের সব কদর্য জিনিসগুলো দেখতে পাই। আমার না কেঁদে উপায় কি, বলো!' মূর্তি বলে চলে, 'ওই যে অনেকদূরে একটি বাড়িতে সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করা জীর্ণ-শীর্ণ এক মহিলাকে দেখতে পাচ্ছি। তার পুত্র জ্বরে আক্রান্ত। সে একটি কমলা চায়, কিন্তু পানি ছাড়া আর কিছুই দেওয়ার সামর্থ্য নেই মায়ের। বালকটি কাঁদছে। প্রিয় ছোট্টো সোয়ালো, তুমি আমার তরবারির খাপ থেকে রুবিটি তুলে নিয়ে ওদের দিয়ে আসবে?'

'কিন্তু আমার যে সময় নেই। বন্ধুরা সব মিশরে আমার জন্যে অপেক্ষা করছে।'

'ছোট্টো সোয়ালো, তুমি কি একটি রাত আমার জন্যে থাকতে পারো না? বালকটি বড়ো তৃষ্ণার্ত, তার মা দুঃখিত ও বিষণ্ণ।'

সোয়ালো সুখী রাজকুমারের তরবারির খাপ থেকে রুবি নিয়ে উড়ে যায়। গন্তব্যে পৌঁছে দেখে, মহিলা সেলাই করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে, বালক জ্বরে কাতর। রুবিটি মহিলার পাশে রেখে সোয়ালো বালকের চারপাশে ওড়ে, তার ঝাপটানো ডানার বাতাসে বালক বলে ওঠে, 'বাঃ, কী সুন্দর ঠাণ্ডা হাওয়া, মনে হয় আমি ভালো হয়ে উঠছি।'

পরের রাতে আকাশে চাঁদ উঠলে সোয়ালো সুখী রাজপুত্রের কাছে বিদায় নিতে চায়। রাজপুত্র বলে, 'ছোট্টো সোয়ালো, আরেকটি রাত তুমি থেকে যাও। দূরে দেখতে পাচ্ছি স্বপ্নিল চোখের এক যুবক টেবিলে রাশি রাশি কাগজের ওপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে। সে একজন নাট্যকার, একটি নাটক তাকে লিখে শেষ করতে হবে। কিন্তু ভীষণ শীতে তার ঘরে আগুন নেই, ক্ষুধায় অজ্ঞান হয়ে পড়েছে সে।'

'আরেকটি রুবি তাহলে নাট্যকারকে দিয়ে আসতে পারি।'

'ছোট্টো সোয়ালো, আমার আর রুবি নেই। থাকার মধ্যে আছে দুর্লভ ভারতীয় নীলার চোখ দুটি। তার একটি তুমি নিয়ে যাও।'

সোয়ালো কেঁদে বলে, 'প্রিয় রাজকুমার, আমি তা কিছুতেই পারবো না।'

'ছোট্টো সোয়ালো, আমার কথা রাখো।'

সোয়ালো রাজপুত্রের একটি চোখ উপড়ে নিয়ে ঘুমন্ত নাট্যকারের টেবিলে রেখে আসে।

পরদিন সন্ধ্যায় আকাশে চাঁদ উঠলে সে সুখী রাজপুত্রের কাছে বিদায় নেবে। রাজপুত্র তাকে বলে, 'ছোট্টো সোয়ালো, আরেকটি রাত তুমি থাকতে পারো না?'

'শীত জাঁকিয়ে আসছে। এখুনি রওনা হতে না পারলে ঠাণ্ডায় জমে যাবো। প্রিয় রাজপুত্র, আমাকে যেতেই হবে। আমি তোমাকে কখনো ভুলবো না। বসন্তকালে ফিরে আসবো, তোমার দান করে দেওয়া রত্ন দুটির পরিবর্তে আরো বেশি লাল রুবি এবং সমুদ্রের মতো নীল রঙের নীলা এনে দেবো তোমাকে।'

সুখী রাজপুত্র বলে, 'নিচে দেশলাই ফেরি করা এক বালিকাকে দেখতে পাচ্ছি। তার হাত থেকে দেশলাইগুলো নর্দমায় পড়ে গেছে। মেয়েটি কাঁদছে, টাকা ছাড়া খালি হাতে ঘরে ফিরলে বাবা তাকে মারধোর করবে। আমার নীলার চোখটি তাকে দিয়ে এসো।'

'আমি আরেক রাত তোমার সঙ্গে থাকতে পারি, কিন্তু কিছুতেই তোমাকে অন্ধ করে দিতে পারবো না।'

'ছোট্টো সোয়ালো, আমার কথা রাখো।'

রাজপুত্রের অবশিষ্ট চোখটি উপড়ে নিয়ে সোয়ালো উড়ে যায়। বালিকা হাতে নীলা পেয়ে খুশিতে হাসতে হাসতে ছুটে যায় বাড়ির দিকে। ফিরে এসে সোয়ালো বলে, 'এখন তুমি সম্পূর্ণ অন্ধ, আমি আর কোনোদিন তোমাকে ছেড়ে যেতে পারবো না।'

'না ছোট্টো সোয়ালো, তোমাকে মিশরে যেতে হবে।'

'আমি তোমার সঙ্গে চিরদিন থাকবো।'

পরদিন সোয়ালো সুখী রাজপুত্রকে দেশ-বিদেশে তার দেখা সব বিষয়ে অনেক কথা বলে। রাজপুত্র বলে, 'প্রিয় ছোট্টো সোয়ালো, তুমি আমাকে বিচিত্র সব কাহিনী শোনালে। কিন্তু জানো, মানুষের দুর্ভোগের চেয়ে বিচিত্র কোনো কাহিনী কোথাও নেই, দুঃখ-দুর্দশার চেয়ে বড়ো কোনো রহস্য নেই। ছোট্টো সোয়ালো, যাও, শহরের ওপর দিয়ে উড়ে এসে আমাকে জানাও তুমি কি দেখলে।'

ফিরে এসে সোয়ালো বৃত্তান্ত জানায় রাজপুত্রকে, ধনীরা সুন্দর বাড়িঘরের ভেতরে খুবই আনন্দে আছে। ভিখারিরা তাদের দুয়ারে অপেক্ষমাণ। সরু অন্ধকার গলিতে ক্ষুধার্ত শিশুরা ফ্যাকাশে মুখে বসে আছে। একটি ব্রিজের নিচে দুই বালক শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার জন্যে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে আছে। পাহারাদারের তাড়া খেয়ে ঠাণ্ডা বৃষ্টির ভেতরে তাদের রাস্তায় নামতে হলো।

রাজপুত্র বলে, 'আমার শরীর থেকে একটি একটি পাতা খুলে নিয়ে তুমি দিয়ে এসো ওই দুঃখীদের।'

সোয়ালো পাখি সমস্ত সোনার পাত বিলিয়ে দিয়ে আসে। হাসি ফোটে দুঃখীদের মুখে। ঝলমলে সুখী রাজপুত্রের মূর্তি তখন ধূসর, কদাকার চেহারা নিয়েছে। তাকে আর সুখী রাজপুত্র বলে চেনা যায় না।

এর মধ্যে তুষারপাত শুরু হয়, ক্রমে বরফ জমাট বাঁধে। ছোট্টো সোয়ালো শীতে কুঁকড়ে যেতে থাকে, কিন্তু সে কিছুতেই রাজপুত্রকে ছেড়ে যাবে না। ডানা ঝাপটে সে নিজেকে উষ্ণ রাখার চেষ্টা করে। একসময় টের পায়, সে মরে যাচ্ছে। শেষ শক্তি দিয়ে সে রাজপুত্রের কাঁধে উঠে বসে। বলে, 'বিদায়, প্রিয় রাজকুমার। আমি তোমার হাত একবার চুম্বন করতে পারি?'

'ছোট্টো সোয়ালো, আমি খুব খুশি যে তুমি শেষ পর্যন্ত মিশরে যাচ্ছো। কিন্তু হাতে নয়, আমার ঠোঁটে চুম্বন করো তুমি। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।'

'কিন্তু আমি মিশরে যাচ্ছি না রাজকুমার, যাচ্ছি মৃত্যুর গৃহে। মৃত্যু তো ঘুমের সহোদর, তাই না?'

রাজপুত্রের ঠোঁটে চুম্বন করে মৃত সোয়ালো মূর্তির পায়ের কাছে পড়ে যায়। সুখী রাজপুত্রের মূর্তি ঠিক সেই সময় সশব্দে ভেঙে পড়ে, মাঝখানে চিড় ধরে তার হৃদয়টি আধখানা হয়ে ভেঙে গেছে।

২.

আমাদের অঞ্চলের পুরাণ, ইতিহাস বা সকল ধর্মীয় কথাকাহিনীতে সুখী রাজকুমারের মতো চরিত্রের অভাব নেই। অখণ্ড ভারতবর্ষে বা তৎপরবর্তীকালেও এইসব চরিত্রের দেখা পাওয়া যেতো। অথচ আমাদের কালে এই প্রজাতির মানুষ কী উপায়ে বিলুপ্ত হয়ে গেলেন, তার উত্তর পাওয়া কঠিন।

পাকিস্তানের বাইশ পরিবারের ধনসম্পদ নিয়ে আমাদের একদা কতো ক্ষোভ ছিলো। স্বাধীন বাংলাদেশে ন্যায্য-অন্যায্য নানা উপায়ে গজিয়ে ওঠা কোটিপতির সংখ্যা বাইশ হাজার হলেও হতে পারে। অথচ ঘরের পাশের প্রতিবেশীকে অনাহারী রেখে এই কোটিপতিদের অধিকাংশই কোরবানির হাটে সবচেয়ে দামি গরুটি কেনার জন্যে কুৎসিত প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন, পরকালের পুণ্য অর্জনের জন্যে জান কোরবান করেন। এঁদের কেউ কেউ হতদরিদ্রদের জন্যে কালেভদ্রে দান-ধ্যান করে থাকেন, তবে নিন্দুকেরা বলে যে তার পেছনে মানুষের কল্যাণের চেয়ে পরবর্তী নির্বাচনে ভোটের চিন্তাই বেশি থাকে।

আমেরিকায় দেখেছি, অনেক ধনী মানুষ বিভিন্ন সেবামূলক কাজে প্রচুর অর্থ দান করেন তাঁদের নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে। আমাদের দেশে স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন কেউ কেউ, নামকরণ করেন নিজের বা স্ত্রীর নামে অথবা রাজনৈতিক দলের প্রধানকে খুশি করার মানসে। এমনকি নিজের নামেও। নাম কেনাটাই উদ্দেশ্য, অন্যকিছু নয়।

আর আমাদের কালের রাজকুমার ও রাজপুরুষদের (মহিলারাও পিছিয়ে নেই) কথা নতুন করে না বলাই ভালো।

দুঃখের কথা, আজকের যুগে সুখী রাজকুমারের মতো হৃদয়বানরা সচরাচর সম্পদ ও বিত্তের অধিকারী হন না। যাঁরা হন, তাঁরা হৃদয়বৃত্তির ধার বেশি ধারেন না। সব মানুষের মধ্যেই কল্যাণকামী একটি হৃদয় সুপ্ত থাকে। সামর্থ্যহীন আমরা চাই, সমর্থদের মধ্যে সুখী রাজপুত্রের হৃদয়টি সঞ্চারিত ও প্রসারিত হোক। আর আমাদের ভেতরের সুখী রাজপুত্রটি চিরকাল বেঁচে থাক।

২০০৫


মন্তব্য

সুজন চৌধুরী এর ছবি

চমত্কার লেখা ভালো লাগলো,
দাদা অনেক দিন পরে লেখা দিলেন?
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ভালো লাগলেই আমি খুশি। হাসি

অনেকদিন পর? কী আর এমন! মাসখানেক। অনুপস্থিতি লক্ষ্য করার মানুষও তাহলে আছে! এইসব সময়ে মনে হয় পৃথিবীটা বড়ো ভালো জায়গা।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

পুতুল এর ছবি

সামর্থ্যহীন আমরা চাই, সমর্থদের মধ্যে সুখী রাজপুত্রের হৃদয়টি সঞ্চারিত ও প্রসারিত হোক। আর আমাদের ভেতরের সুখী রাজপুত্রটি চিরকাল বেঁচে থাক।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আপনার মন্তব্য কই? কইয়ের তেলে কই ভাজা! হাসি

এইরকম কইরে কইতে ইচ্ছে কইরলো। দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আমরা আমাদের মুল্যবোধ,সহমর্মিতা,শুভবোধ ও শ্লীলতার গর্ব করি ।
মানুষে মানুষে তীব্র বৈষম্যের মতো এতো অশ্লীল আর কিছুই নয় । আমরা যতোই মুল্যবোধ,সংস্কৃতি,ধর্মের চাদরে নিজেদের ঢেকে রাখি ততোই আরো বেশী অশ্লীল হয়ে উঠে বৈষম্যে।

-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

মানুষের দুর্ভোগের চেয়ে বিচিত্র কোনো কাহিনী কোথাও নেই, দুঃখ-দুর্দশার চেয়ে বড়ো কোনো রহস্য নেই।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অনেক দিন পর জুবায়ের ভাইয়ের লেখা। নতুন করে আবার পড়লাম দ্য হ্যাপি প্রিন্স।
আমাদের রাজপুত্ররা কি কখনো এমন হবে!

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমাদের রাজপুত্ররা কী করে বা করতে পারে, আমরা জেনেছি এবং ক্রমশ জানছি।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

বেঁচে গেলেন! আমি আর দুইদিন গেলে মেসেজ পাঠিয়ে গুঁতাতাম লেখার জন্য। হাসি অনেক দিন পর পুরনো গল্প পড়লাম। ভাল এবং দুঃখ দুটাই লাগলো।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

হায় হায়! দু'দিন দেরি কেন করলাম না! চিঠি (হলোই বা গুঁতো!) পেতে যে কী ভালো লাগে! যদি চিঠি লিখবেন বলেন তাহলে আবার কিছুদিন না হয় অফ যাই। চোখ টিপি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

হায় হায়! আমি গাই কী, আমার সারিন্দায় বাজায় কী?! অনেক বেশি দিন ধরেই লেখেন নাই। আমার জন্য ভালই ছিল অবশ্য। আপনার লেখা বড় হলেও পড়তে বসে যাই। আর একবার নেশা ধরে গেলেই তো শেষ! পুরো সিমেস্টার সচলায়তনের ময়দানে ঘাস খেয়ে আর ব্লগ পড়ে কাটিয়ে দিলাম, এখন প্রফেসরকে দেখানোর মত কিছু একটা তৈরি করার জন্য দৌড়-ঝাঁপ দিয়ে মরছি! আর এক সপ্তাহ, এরপর দেখবেন খোলা-চিঠি লিখে ভরে ফেলেছি আপনাকে ডেকে ডেকে!

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আপনার লেখা বড়...

এই জ্বালায় মনে হয় ঢাকার সম্পাদকরা আতঙ্কে থাকেন। একবার একটা উপন্যাস দিলাম, আমাকে কিছু না জানিয়েই এখান থেকে ওখান থেকে এক চতুর্থাংশ ফেলে দিয়ে ছাপলো তারা। কারণ লেখা বড়ো হয়ে গেছে...

ছোটো লেখার চেষ্টা করে দেখেছি। পারি না। মনে হয় বড়ো হলে পারবো! চোখ টিপি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

বড় লেখক পৃষ্ঠা মেপে লেখে না। মুগ্ধ পাঠকও পৃষ্ঠা মেপে পড়ে না। কাজের চাপে কখনো কখনো বড় লেখা এক পাশে সরিয়ে রাখে, পরে পড়বো দেখে। আপনার লেখাগুলো ঘন্টা খানেকের বেশি ফেলে রাখা যায় না। উশখুশ লাগে। ছোট লেখার পিঞ্চ অফ ইমোশন আর বড় লেখার কমপ্লিটনেস অফ থট -- দুটোই মেলে আপনার লেখায়। সচলায়তন ভাল লাগার কারণ এরকম আরো অনেক লেখক/লেখিকা। আমি আসলেই মনে মনে ভাবছিলাম একটা মেসেজ দেওয়ার কথা। বেশি বড় কিছু দেওয়ার আগে আর ৩ টা দিন সময় দেন এই অধমকে। আরো ২ টা হোমওয়ার্ক ডিউ। খাইছে

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আপনার অকৃপণ প্রশংসায় বুকের ছাতি ফুলতে ফুলতে ফেটে যাওয়ার উপক্রম। খুব সততার সঙ্গেই বলছি, এতে লজ্জিত বোধ করি। অশেষ কৃতজ্ঞতা।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ভাল্লাগলো।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ধুসর গোধূলি এর ছবি
মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

মাহবুব মুর্শেদ ও ধূসর গোধূলি, অনেক ধন্যবাদ।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

তারেক এর ছবি

বকেয়া পড়াশোনা চলছে... খুব ভালো লাগলো পড়ে। সামর্থ্যবানদের মাঝে হৃদয়বান সুখী রাজপুত্ররা বেড়ে উঠুক।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

ঝরাপাতা এর ছবি

অসাধারণ একটা লেখা। স্যালুট জুবায়ের ভাই।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

তিন মাস আগের পুরনো লেখায় নতুন মন্তব্য পেতে তো মজাই। ধন্যবাদ তারেক ও ঝরাপাতা।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।