৭১-এ তাহলে আমরা যুদ্ধ করে অপরাধ করেছিলাম?

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি
লিখেছেন মুহম্মদ জুবায়ের (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৪/০১/২০০৮ - ৩:২৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার সারা শরীর কাঁপছে। সীমাহীন ক্রোধে। আক্রোশে। কিছু করতে না পারার অক্ষমতায়।

আজ প্রথম আলোতে এই রিপোর্টটি ছাপা হয়েছে।

বাড়তে বাড়তে রাজাকাররা আজ কোথায় এসে পড়েছে। কলাগাছ কাটতে কাটতে নাকি মানুষ ডাকাত হয়। তারা আজ বলতে সাহস পাচ্ছে, যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ নেওয়া অপরাধ ছিলো না। তারা এখন আমাদের টুঁটি টিপে ধরতে উদ্যত।

দুটি দেশের মধ্যে যুদ্ধের সময় শত্রুর পক্ষ নেওয়া অপরাধ না হলে অপরাধ কোনটা? আমরা যারা যুদ্ধ করেছিলাম, তারাই তাহলে অপরাধী? বিজয়ীরা অপরাধী? পরাজিতরা নয়?

কোথায় তাদের এই দুঃসাহসের উৎস আমার আর জানতেও ইচ্ছে হয় না ...

সত্যি আমি আর লিখতে পারছি না।

-----------------------
বিলম্বিত সংযোজন: প্রথম আলো-র রিপোর্টটি একসময় তাদের আর্কাইভেও আর পাওয়া যাবে না। সুতরাং একটি পিডিএফ কপি এখানে তুলে রাখা হলো। ফর দ্য রেকর্ড।


মন্তব্য

তানভীর এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল, তারা তাদের প্রিয় পাকিস্তানে গিয়ে থাকলেই পারে। বাংলাদেশকে অস্বীকার করে আবার বাংলাদেশেই থাকতে চাওয়া কেন! বিহারীগুলা তো অন্তত পাকিস্তানে যেতে চায়, নিচ্ছে না বলে যেতে পারছে না; এগুলা তারও অধম। এরশাদদাদুর চেয়েও বড় বিশ্ববেহায়া।

=============
"কথা বল আমার ভাষায়, আমার রক্তে।"

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমারও একই কথা। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা যারা করেছে বা করছে তারা তো আসলে আমাদের আশ্রিতমাত্র। কিন্তু ব্যাপারটা উল্টো হয়ে উঠছে ক্রমেই।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সচলায়তনের কি কোন নিষিদ্ধ শব্দের তালিকা আছে? থাকলে জানাবেন। জরুরী। নিশ্চিত হয়ে আবার একটা মন্তব্য দেবো। *, *, *, এবং * দের জন্য অযথা সচলায়তনে ব্যান খাওয়ার ইচ্ছা নাই।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

যা বলার বলে ফেলেছেন।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

মির্জা এর ছবি

আমরা জিন্দাবাদ আর জয় বাংলা নিয়ে চালিয়ে যাই, গ্রুপিং এবং নেতা ভগবান চালিয়ে যাই.........দেখবেন একদিন সত্যি সত্যি ঐ জানোয়ারগুলো বলবে যারা যুদ্ধের স্বপক্ষের তাদের সবার বিচার হওয়া উচিত!

আমরা যখন আমাদের ক্যাম্পাসে এদের বিরুদ্ধে নিঃর্দলিয়ভাবে সবাইকে নিয়ে রুখে দাড়াতে চেয়েছি তখন স্বাধিনতার পক্ষের বা ততটা পক্ষে বিপক্ষে না- কোন দলই আমাদেরকে সাহায্য করেনি!
শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এদের প্রবেশ নিষেধ করেতো আর দেশ এদের বদমায়েশি বন্ধ করা যাবে না!

চারুকলার জামাতি প্রধান যখন এদের প্রবেশ অবারিত করে দিল চারুকলারই হলে, যখন ছবি আকার স্থানে জোরপূর্বক গড়ে উঠলো মসজিদ, তখনো কিন্তু আমরা চুপ! আজ যদি এরা একটু সাহস দেখায়ই, তার জন্যে আমরাও দায়ি!

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আপনার ক্ষোভটা বুঝতে পারি। তবে যদি দোষ খোঁজার কথা বলেন তাহলে আরো পেছনে যেতে হবে। বলা হয়ে থাকে, শেখ মুজিব দালালদের ক্ষমা করেছিলেন। যদি করেই থাকেন, এরা তাঁর খুন হওয়া পর্যন্ত গর্তে মুখ লুকিয়ে ছিলো কেন? সেই সময়ে কেউ কেউ যে ফাঁক গলিয়ে যায়নি তা নয়, কিন্তু সাধারণভাবে তারাও মাথা নিচু করেই ছিলো। এদের ব্যাপক পুনর্বাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্যে অনেক কঠিন মূল্য দিয়েছি আমরা।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ধ্রুব হাসান এর ছবি

@ রনি ভাই আপনার অনেক কথার সাথেই একমত পোষন করি তবে জয় বাংলা আর জিন্দাবাদ নিয়ে আসলে কোন তর্কই হতে পারে না। জয় বাংলা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একটা অনন্য সিম্বল এর সাথে যারা জিন্দাবাদের তুলনা করে তারাই আজ মূল শক্তির যোগানদাতা যুদ্ধাপরাধীদের পেছনে! তবে আজ জিন্দাবাদওয়ালারাও যদি তাদের ভন্ডামী আপাতত ভুলে গিয়ে আন্তরিকভাবেই চান নপুংসকগুলোর বিচার, তা হলেতো বিচার হবেই বাংলাদেশের মাটিতে সহসা! কি বলেন?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- প্যালেস্টাইনে বুকে মাইন পেতে ট্যাংকের নিচে গড়িয়ে যায় কোন কিশোর। এই পদ্ধতিটিকে খুব গুরুত্বসহকারে বিশ্লেষণ করেন অনেকেই। কিন্তু আমাদের আশে পাশেই যে হাজারো মানুষ বুকে একেকটা ভিসুভিয়াস পুষে রেখেছেন সেই বিশ্লেষণে কেউ যায় না।

টগবগ করতে থাকা এই ভিসুভিয়াস থেকে যখন লাভা উদগীরণ শুরু হবে তখন হাজারো বাঙালীকে দমিয়ে রাখাটা কষ্টসাধ্যই হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় খান সাহেবকে যেমন বৈঠকখানায় ঢুকে খতম করা হয়েছিলো, বাংলা মায়ের ছেলেরা ঠিক তেমনি খতম করবে একেকটা দালালকে। পরিণামে যদি ফাঁসীর দড়িতেও পরে ঝুলতে হয় তাও ঝুলবে, কিন্তু বুকের আগ্নেয়গিরি আগে নিভিয়ে নিবে।

ভয় নেই জুবায়ের ভাই। বুকে আগ্নেয়গিরি পুষেরাখিয়েদের সংখ্যা কোনভাবেই কম নয়। কোন একটা আগ্নেয়গিরি ফাটুক আগে, দেখবেন বাকিগুলোও টপাটপ ফেটে চলেছে।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ধূসর গোধূলি/অলৌকিক হাসান, আশা করতে আমারও ইচ্ছে করে। কিন্তু বহু বছরের বাস্তবতা আমাকে সংশয়ক্লিষ্ট করে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বহু বছরের সংশয়ক্লিষ্টতা ভিসুভিয়াসকে পরিপক্কতা দান করেছে কিংবা করছে এখনো।

_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

কোথায় তাদের এই দুঃসাহসের উৎস আমার আর জানতেও ইচ্ছে হয় না ...

আড্ডাবাজ এর ছবি

আমরা সাজানো নাটক দেখছি। আমি অবাক হই না। অপদার্থ দেশদ্রোহী হান্নান যখন এদেশের মুক্তিযুদ্ধকে "সিভিল ওয়ার" বলে কোর্টে পার পেয়ে যায়, আর প্রধান বিচারপতি মামলার আসামী হান্নানের সেমিনারে গিয়ে ধর্মভিত্তিক বিচার ব্যবস্থার গুণগান গায়, তখন সেক্টর কমান্ডারদের আন্দোলনের পাশাপাশি জামাতীদের রাউন্ড টেবিলের মিটিং সাজিয়ে সিনথেসাইজড জাতীয়তাবাদীদের নতুন ব্রীড তৈরী করা হবে। এরকম হওয়ার কথাই তো ছিল। তাই হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত নেপথ্যের নির্লজ্জদের মুখ রক্ষা কি হবে?

অন্ধকারের উতস হতে উতসারিত আলো

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

এইসবের হিসেব চাওয়ার দিন আর কতোদূরে কে জানে!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অতিথি লেখক এর ছবি

১। আমার অবস্থাও জুবায়ের ভাইয়ের মত।

২। তবে, আমি মোটেই বিস্মিত নই। একজন লোক অপরাধ করে সভা সেমিনারে বলে বেড়াবে যে সে অপরাধ করেছিল সেটাই বরং বিস্মিত হবার মত ব্যাপার।

৩। ইশতিয়াক ভাইয়ের মত আমার জানা দরকার সচলায়তনে শব্দ নিষিদ্ধের তালিকা (যদি থাকে ) । প্রগতিশীল একটি ফোরামে নারীদের ধর্ষন প্রেক্ষিতে পাক আর্মিদের আমি কুকুর বলায় তারা সেটা পোস্ট করেনি। তাই আগে ভাগে জানা থাকলে ভাল ।

এখন একটু ব্যস্ত আছি । পরে বিস্তারিত লিখব।

নুরুজ্জামান মানিক

অতিথি লেখক এর ছবি

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়টি আইনী ব্যপার এবং বিচার হওয়া টা জরুরি কিন্তু বিচার আগেও কেন হয়নি আর এখনও বা কেন হচেছ না ,আন্দোলনেও কোন ঘাপলা আছে কিনা সেটা বিশ্লেষন করলে বেরিয়ে আসবে অনেক কিছু (?)

এই সেই বাংলাদেশ যেখানে আন্তর্জাতিক রাজাকার শিরোমনি (শাহ আজিজ )কে প্রধানমন্ত্রী করা হয়েছিল । যদু মিয়া, মওলানা মান্নান , আনোয়ার জাহিদ, নিজামী, মুজাহিদ এর কথা তো বলাই বাহুল্য।

৭২-৭৩ সালে জহির রায়হান এর বোন নাফিসা কবির’র বুদ্ধিজীবি হত্যা ও যুদ্ধাপরাধিদের বিচার আন্দোলন যে কারণে ব্যর্থ হয়েছিল সেই একি কারণে ব্যর্থ হয়েছে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম’এর ৯২-৯৪ সালের ঘাদানিক এর আন্দোলন । এবারের আন্দোলন ব্যর্থ যেন না হয় সেই প্রত্যাশায়

নুরুজ্জামান মানিক

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

পরমাশ্চর্যের বিষয়, অনেক খুঁজেও আজকের অন্য কোনো কাগজে (ইত্তেফাক, সংবাদ, ভোরের কাগজ, জনকণ্ঠ, আমাদের সময়, যুগান্তর) এই সংবাদটির নামনিশানা পেলাম না।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সুজন চৌধুরী এর ছবি

হুম , আমিও অবাক হলাম।
জামাতের বিষয় সরকারের সিদ্ধান্তটা কি ?
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আঃ, এই মিলিয়ন-ডলার প্রশ্নটির উত্তর আমার জানা থাকলে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সৌভাগ্যবান মনে করতে পারতাম।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সুজন চৌধুরী এর ছবি

হা হা হা হা ---
মাইকার পোটাও পা-ত্যাগ করছে , ওহন জিগাই কারে ?
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

জামায়াত সাপের ৫ পা দেখেছে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ধ্রুব হাসান এর ছবি

যত দ্রুত এসব পাপীদের বিচার শেষ করা হবে তত দ্রুতই দেশে শান্তি ফিরে আসবে। এদের বিচারের বাইরে রেখে কোন ভালো উদ্যোগই সফল হতে পারেনা। এখনি সময় এই ব্যাপারটাকে পায়োরিটি দিয়ে দ্রুত বিচার শুরু করা।

হেলাল এর ছবি

দালালরা সংবাদ স েম্মলন করে নিজেদের অপকর্মের পক্ষে সাফাই গাওয়া কি প্রকারান্ত্রে মুক্তিযোদধাদের বিরুেদধ আমাদের বিচারপতিদের কাছে বিচার চাওয়া নয়?শুধু রাজপথে মিছিল করে তাদের দাবি আদায় করার বাকি। তার আগেই হায়েনাদের কি আমাদের আদালতে বিচার করা যায়না? অগ্নীগিরি আর কতকাল সুপ্ত থাকবে?

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমাদের রাজনীতিকদের সীমাহীন অপরিণামদর্শিতা, অদূরদর্শিতার (বেআক্কেলপনা বলতে সাধ হয়) কারণে আমরা অক্ষমের আক্রোশে ফুঁসছি। তারা, আমাদের শত্রুপক্ষ, এখন নিজেদের এতোটাই বলশালী মনে করে যে এসব প্রকাশ্যে বলার সাহস দেখায়। ভরসার কথা একটাই যে, তাদের এই ধারণার ভিত খুব শক্ত নয়। অপরাধবোধ তাদের সেই শক্তি কোনোকালে দেবে না।

আর নতুন প্রজন্ম, যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি, নির্বোধ নয়, তারা যথেষ্ট সচেতন। আমরা হারবো না।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

আলিবর্দি খান এর ছবি

এই ওয়েবসাইটটি সম্প্রতি আমার নজরে এসেছে। http://www.firozmahboobkamal.com

সেখানে একাত্তরের আত্মঘাতের ইতিহাস নামক প্রবন্ধটির কিছু অংশ তুলে ধরছি,
"বাংলাদেশে একাত্তরের ঘটনাবলি নিয়ে প্রচুর মিথ্যাচার হয়েছে। বিকৃত হয়েছে ইতিহাসের পাঠ্যপুস-ক। লেখা হয়েছে অসত্যে ভরপুর অসংখ্য গ্রন', গল্প, উপন্যাস ও নাটক। নির্মিত হয়েছে বহু ছায়াছবি। এখনও সে বিকৃত ইতিহাস রচনার কাজ চলছে জোরেসোরে। এ পরিকল্পিত মিথ্যাচারের লক্ষ্য একটিই। আর তাহলো, দেশ-বিদেশের মানুষ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম থেকে সত্যকে আড়াল করা। এবং যারা একাত্তরের লড়াইয়ে বিজয়ী হয়েছে তাদের কৃত অপরাধগুলো লুকিয়ে ফেরেশতাতুল্য রূপে জাহির করা। সে সাথে বিরোধী পক্ষকে দানব রূপে চিত্রিত করা। যারা দেশকে আন-র্জাতিক অঙ্গনে ভিক্ষার ঝুলিতে পরিণত করলো, গণতন্ত্রকে পাঠালো নির্বাসনে এবং মানুষকে পাঠালো ডাষ্টবিনের পাশে কুকুরের সাথে উচ্ছিষ্ঠ খোঁজের লড়াইয়ে তাদেরকে আজ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বলা হচ্ছে বস'ত সে পরিকল্পনারই অংশ রূপে। এ মিথ্যাচারের আরেক বড় লক্ষ্য, একাত্তরে বাংলার মুসলামানদের মধ্যে যে রক্তক্ষয়ী বিভক্তি সৃষ্টি হল, সেটিকে স'ায়ী রূপ দেয়া। এমন ইতিহাস রচনার লক্ষ্য তাই দেশের কল্যাণ নয়, সত্যকে তুলে ধরাও নয় বরং এখানে প্রাধান্য পেয়েছে ব্যক্তি ও দলের ইমেজকে বড় করে দেখানো।"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।