ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার শিক্ষক ছিলেন সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। ক্লাসে তাঁর ইংরেজি বক্তৃতা শুনতাম মন্ত্রমুগ্ধের মতো। সেই তাঁকেই আবার বিভিন্ন সভায় সেমিনারে শুনতাম বিশুদ্ধ বাংলায় বক্তৃতা করছেন। একটিও ইংরেজি শব্দ ব্যবহার না করে। সৈয়দ শামসুল হককেও যতোটুকু শুনেছি, তিনিও ইংরেজি-বাংলার মিশেল করেন না।
কর্মস্থলে যে বিভাগে আমি কাজ করি সেখানে কর্মীর সংখ্যা প্রায় শ'দেড়েক। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি এর মধ্যে শতকরা ৬০-৬৫ জন ভারতীয়। এরা নিজেদের মধ্যে কথা বলার সময় তামিল, তেলেগু, গুজরাতি এইসব ভাষা ব্যবহার করে। আশ্চর্য হয়ে দেখেছি, এরা কথা বলার সময় একটিও ইংরেজি শব্দ বলে না।
সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়া অঞ্চলে কর্মোপলক্ষে কিছুকাল ছিলাম, সেখানেও চিনারা বা মালেরা ইংরেজি শব্দ ছাড়াই দিব্যি নিজেদের ভাষায় কথা বলে।
আমরা পারি না। আমরা দশটি শব্দের একটি বাক্যে গড়ে ২-৩টি ইংরেজি শব্দ অবধারিতভাবে ঢুকিয়ে দিই। অথচ অনেক বিদেশী একবর্ণ বাংলা না জেনেও শুধুমাত্র ঐ ইংরেজি শব্দগুলোর কারণে আমাদের কথাবার্তার সারাংশ দিব্যি বুঝে ফেলে।
ঔপনিবেশিক শাসনকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, সেটি খোঁড়া অজুহাত। সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়া-ভারতও বৃটিশ শাসনের অধীনে ছিলো। আমরা কী এক বিচিত্র কারণে ইংরেজি বিদ্যা ফলানোকে এক ধরনের আভিজাত্যই হয়তো ভাবি। এর কারণ অনুসন্ধান অবশ্য আমার এই পোস্টের উদ্দেশ্য নয়।
বাংলা ভাষাপ্রেম যদি থাকে, আমাদের দরকার মুখের কথায় এবং লেখালেখিতে যতোটা সম্ভব বাংলা ব্যবহার করতে চেষ্টা করা এবং অপ্রয়োজনীয় ইংরেজি পরিহার করা। আমি কিন্তু ইংরেজি-বিদ্বেষী নই। ব্যবহারিক জীবনে কিছু কিছু বিদেশী শব্দ আমাদের ভাষার অংশ হয়ে গেছে। যেমন এখন আমি চেয়ার না বলে যদি কেদারা বলতে যাই তা খুবই হাস্যকর হয়ে যাবে। টেবিল শব্দের বাংলা আছে বলে আমার জানা নেই। ফোন? দূরালাপনী শব্দটা চালু করার চেষ্টা মনে হয় হয়েছিলো, উচ্চারণ-বান্ধব নয় বলে কাজে লাগেনি। তবে মোবাইল ফোনের বিকল্প হিসেবে নির্মলেন্দু গুণের উদ্ভাবিত মুঠোফোন চমৎকার। সত্যজিৎ রায় dictionary শব্দের বাংলা করেছিলেন 'দেখাশোনারি', impossible-কে করেছিলেন 'আম পচে বেল'! চলে কিন্তু।
সচলায়তন কিন্তু কয়েকটা চমৎকার কমপিউটার-ব্যবহার্য বাংলা শব্দ তৈরি করেছে। যেমন, homepage-কে 'নীড়পাতা', chatroom হয়েছে 'আড্ডাঘর'।
আমার বিশ্বাস সচলের সকল সদস্য অন্তত একটি করে এরকম ব্যবহারিক প্রতিশব্দ তৈরি করতে পারবেন। কয়েক মিনিট সময় খরচ করে একটি প্রতিশব্দ এখানে রেখে যান, একটি ভাণ্ডার তৈরি হোক। আমাদেরই কাজে লাগবে, আমার ভাষা সমৃদ্ধ হবে। শুধু লক্ষ্য রাখবেন আপনার বাংলা করা শব্দটি যেন উচ্চারণ-বান্ধব হয়। ভবিষ্যতে আপনার উদ্ভাবিত শব্দটির জন্যেই হয়তো আপনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন, কে জানে!
মন্তব্য
বার্ড ফ্লু= মুরগিজ্বর
চমৎকার। না হয় একটা চেয়েছি। তাই বলে এতো কৃপণতা? চাইড্ডা ভাত চাইলে কেউ গুন গুনে চারটা ভাত দেয়?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আর্কাইভ= আড়ৎ
শো রুম= দর্শন দেউড়ি
খাপে খাপ।
অবশ্য আর্কাইভকে 'ভাণ্ডার'ও বলা যায়। আড়তে একটা বাণিজ্য-বাণিজ্য গন্ধ আছে।
.................................................................
...ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়া এ ফেব্রুয়ারি...
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
আর্কাইভ-এ যেহেতু সুরক্ষার বিষয়টি জড়িত শব্দটি 'রক্ষণভাণ্ডার' হলে মন্দ হয় না বোধহয়।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
বার্ডফ্লু হাস বা অন্য পাখি থেকেও ছড়ায় । অন্যান্য পাখিকুল মাইন্ড করতে পারে শুধু মুরগীকে মর্যাদা দিলে ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আপনার অনুকরণে madcow desease = গরুরোগ তুলনীয় ঘোড়ারোগ)।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ম্যাড কাউ= গাইপাগলী
আশ্চর্য!
ম্যাড কাউ = গরু পাগলা-ই কি ভালো শোনায় না?
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
(মাথা চুলকাই)
ভেবে দেখি তো, কিছু পারি কিনা।
চমৎকার উদ্যোগ, জুবায়ের ভাই!
মাথায় কি লাইস ... আই মীন উকুন? নাহলে চুলকায় কেন?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
টেলিফোন - দূরভাষ বলা যায় চাইলে
এমপিথ্রি প্লেয়ার - কান বাজনা ( এটি আমার ছোট ভাইয়ের তৈরি)
রিমোট কন্ট্রোল - টিপাটিপি ( এটি বাড়ীর সবার টিভি চ্যানেল নিয়ে মারামারি থেকে সৃষ্টি - আমরা এটাই বলি এখন )
প্লেট - বর্তন (এটি অনেক পরিবারেই ব্যবহৃত),
কাপ প্লেট- পেয়ালা - পিরিচ
স্কেল/ রুলার - রেখানি ( এটি বাংলা নয় , উতপত্তি -ছোটবেলার এক শিক্ষক)
বাথরুম - গোসলখানা
শাওয়ার - ঝাঁঝরি
------ = ছোট/ বড় বাইরে ( এটা বাচ্চাদের শেখানো যায়)
টিভি = ছবিবাক্স ( উতপত্তি - আমাদের বুয়া)
হারমোনিয়াম - গানটানা ( উতপত্তি - আমার ছোটবেলার গানের শিক্ষক)
ল্যাপটপ - বোতাম টেপা খাতা ( উৎপত্তি- শিশু পথশ্রমিক, চট্টগ্রাম)
=====================
"জানার মাঝে অজানারে করেছি সন্ধান
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান"- কবিগুরু
টেপাটিপি, কানবাজনা, আর গানটানা খুব ভালো লাগলেো।
আমার ভাগ্নে খুব ছোটোবেলায় বাটারফ্লাই-এর বাংলা করেছিলো মাখনমাছি!
আমার পুত্র গেমবয় নিয়ে আসক্ত হয়েছিলো। আমি গেমবয়ের বাংলা নাম দিয়েছিলাম ছেলেখেলা।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
বুয়া সাহেবার টিভি=ছবিবাক্স চমৎকার লাগলো।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
ইংরেজী থেকে বাংলা উইকিপিডিয়ায় টর্নেডো নিবন্ধখানা অনুবাদ করতে গিয়ে আমি প্রচুর নতুন বাংলা প্রতিশব্দ যোগ করেছি এবং এখনো কাজ চলছে (হিমশিম খেয়ে)। আপনারাও এতে হাত লাগাতে পারেন এবং কোন প্রতিশব্দের ব্যাপারে আপত্তি থাকলে বা ভালো কোন প্রতিশব্দ জানা থাকলে নিবন্ধের আলাপ পাতায় প্রস্তাব রাখুন।
=============
"কথা বল আমার ভাষায়, আমার রক্তে।"
এক নজর দেখে এলাম। ভালো কাজ করছেন। টেকনিক্যাল শব্দ বিষয়ে খুব সাহায্য করতে পারবো বলে মনে হয় না। তবু চেষ্টা করা যাবে। একটি-দুটিও যদি যোগ করতে বা বিকল্প প্রস্তাব করতে পারি, মন্দ কি!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
weblog = জীবনজাল, হাওয়াইজীবন, অন্তর্জালজীবনী
আপনিও গুনে গুনে একটাই দিলেন! তবু তো দিলেন
খেয়াল ররে দেখবেন, আপনার দেওয়া প্রথম দুটিতে weblog-এর স্পষ্ট অর্থ নির্দেশ করছে না। তৃতীয়টি ভালো, কিন্তু উচ্চারণের ঝামেলায় মুখে উঠে আসা কঠিন। আরো ভাবা যাক।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
weblog-এর বাংলা কে যেন নেটনামচা দিয়েছিল। আমার কাছেও এটা পছন্দ হয়েছে।
=============
"কথা বল আমার ভাষায়, আমার রক্তে।"
লাজওয়াব!! জট্টিল পছন্দ হয়েছে। সচলে 'ব্লগ' সরিয়ে নেটনামচা দেওয়া হোক।
সম্ভবত রাসেল।
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
রাসেল ভাই দিয়েছিলো "নেটনামচা" নামটা। ফাটাফাটি।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
নেটনামচা নাকি নেটনামা!
====================
অবিরাম ছুটে চলায় হঠাৎ থমকে যাওয়া
'
=========================================
নিজেকেই নিজে চিনি না, পরকে চেনার মিছে বাহানা
সমস্যা হলো 'নেট' বাংলা নয়.
====================
অবিরাম ছুটে চলায় হঠাৎ থমকে যাওয়া
'
=========================================
নিজেকেই নিজে চিনি না, পরকে চেনার মিছে বাহানা
চেয়ার-টেবিলের মতো নেটও বাংলায় নিয়ে নেওয়া যায়।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
হ্যা।
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
কমপিউটারে ব্যবহারযোগ্য আমার নিজের তৈরি কয়েকটা পেশ করি।
cut = কাটো
paste = সাঁটো
copy = ছাপ / ছাপ্পা / ছাপো
delete = ছাঁটো / দূর হ!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আপনারগুলো খুব পছন্দ হলো।
আমি একখানে webmag অর্থে 'গতিপত্র' ব্যবহার করেছিলাম।
galleryর বাংলা কি 'দেখাঙ্গন' হতে পারে?
.................................................................
...ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়া এ ফেব্রুয়ারি...
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
'গতিপত্র'-টা খুব চমৎকার শব্দ। তবে গতি বললে আমরা সাধারণত speed-এর সমার্থক বুঝি। ফলে নেটসংলগ্ন না হলে ভুল বোঝার সম্ভাবনা থাকে। বোধহয় মানবেন।
'দেখাঙ্গন' সুন্দর শব্দ এবং শব্দার্থ দুই হিসেবেই। কবিদের হাতেই এগুলো ঠিকঠাক আসে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
"গতিপত্র" চমৎকার। গ্যালারি যদি ছবির হয় তাহলে "চিত্রাঙ্গন" হতে পারে কি?
মুহাম্মদ২০১৭
গ্যালারি যখন ছবির তখন 'চিত্রাঙ্গন' ঠিক আছে। কিন্তু যখন সেটা হবে নাটমঞ্চের ও ক্রীড়াঙ্গনের, তখন তো আবার আলাদা শব্দ খুঁজতে হবে। এজন্যই সব ভেবে আমি 'দেখাঙ্গন' প্রস্তাব করেছিলাম। কারণ তিনটা ক্ষেত্রেই 'দেখা' ক্রিয়াটি সংঘটিত হয়। কাজেই যে অঙ্গনে সেটি সাধিত হয়, সেটি 'দেখাঙ্গন'।
গতিপত্র-এর পক্ষে আপনার রায়ের জন্য ধন্যবাদ।
.................................................................
...ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়া এ ফেব্রুয়ারি...
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
ওয়েবম্যাগ মনে হয় পত্রজাল ও হৈতে পারে। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ভঙ্গীতে বলা যায় জাল পত্র পত্রের জাল
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
জাল পত্র পছন্দ না হওয়ার কারণে নেই। কিন্তু জাল শব্দ নিয়ে একটা ঘাপলা আছে। জাল বললে দুই নম্বরীও বোঝায় - জাল ভোট, জাল দলিল এইরকম সব।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
Gallery 'দর্শনাঙ্গন' কেমন হয়?
====================
অবিরাম ছুটে চলায় হঠাৎ থমকে যাওয়া
'
=========================================
নিজেকেই নিজে চিনি না, পরকে চেনার মিছে বাহানা
ন্যাশনাল আইডি= জাতিচিহ্ন
সার্টিফিকেট=চিহ্নসূত্র/চিহ্নপত্র
টেলিপ্যাথি= উড়োসংযোগ
(অবশ্য আমার সবগুলো বইয়ে আমি মোবাইলকে উড়োসংযোগ নামে লিখি)
এগুলোও ভালো লাগলো। তাহলে উড়োসংযোগ কি মোবাইল, না টেলিপ্যাথি?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আপনার আবার বই!! সেখানে আবার প্রতিশব্দ !!!!!!!
এই মন্তব্যের অর্থ কী?
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
আশ্চর্য, এই আজব মন্তব্যটা চোখেই পড়েনি। অবশ্য সুমন চৌধুরী দেখছি আমার হয়ে উত্তরটা যথাসময়ে দিয়ে দিয়েছেন। ধন্যবাদ তাঁকে।
একটা প্রশ্ন, মডারেশনের ফাঁক গলে এই মন্তব্যটা ঢুকে পড়লো কীভাবে?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আপনার এই পোস্ট দেখে আমাদের একদা সহব্লগার মুখফোড়ের কথা মনে পড়ে গেলো। কিঞ্চিৎ নস্টালজিয়ায় ভুগলাম। হা মুখা, ফিরে আয়।
আর্কাইভের বাংলা আছে একটি। অভিলেখাগার।
সচলে ডিলিটের বাংলা করা হয়েছে ঘ্যাচাং। তবে ব্লগের প্রতিশব্দ করা হয়নি শব্দটির সার্বজনীন স্বীকৃতির কারণে। বরং ক্রিয়াপদে ব্লগানো, পোস্টানো চলে এসেছে।
নতুন প্রতিশব্দের ব্যাপারে আমারও অনেক উৎসাহ। আমার একটি দূরবর্তী পরিকল্পনা আছে যে বিষয়ে আমি লেখাপড়া করেছি এবং করছি, সে বিষয়ে বাংলায় কিছু লেখার। তখন কিছু স্বোৎসারিত প্রতিশব্দ ব্যবহার করার একটা গোঁয়ার্তুমি ইচ্ছে আছে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
নিজের একটা পোস্ট এবং দুটো কমেন্ট নষ্ট করে এই ঘ্যাচাং শব্দের মানে বুঝতে হয়েছে আমাকে
বস্তুটা কী তা বোঝার জন্য টিপ দিয়েছিলাম। দেখি আমার পোস্ট নেই...
হাতেকলমে শেখা
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
'অভিলেখাগার' শব্দটি ধ্বনিগত দিক থেকে বেশ গাম্ভীর্যপূর্ণ, কবিতায় শব্দটি ব্যবহার করবার জন্য আমার হাত নিশপিশ করছে। কিন্তু আর্কাইভ অর্থে আমি এটা প্রয়োগ করতে পারব বলে মনে হচ্ছে না। ওই বিশেষ অর্থে শব্দটিকে অসম্পূর্ণ মনে হয়। আর্কাইভ তো কেবল লেখার না, আলোকচিত্রের হতে পারে, চিত্রকলার হতে পারে, দলিলপত্রের হতে পারে...। সেক্ষেত্রে এমন গাম্ভীর্যপূর্ণ শব্দটিকেও খুব অসহায় মনে হয়।
এ বাংলাটা কে করেছিলেন বলা যাবে?
.................................................................
...ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়া এ ফেব্রুয়ারি...
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
আর্কাইভ-এর বাংলা প্রতিশব্দ হিসেবে অনেক জায়গায় সংগ্রহশালা ব্যবহার হতে দেখেছি। তেমনি ছবির গ্যালারি- ছবিঘর। আর নাট্যমঞ্চ/মাঠের গ্যালারি হিসেবে কি দর্শকসারি ব্যবহার করা যায় ? 'আজ গ্যালারি পরিপূর্ণ' না বলে 'আজ দর্শকসারি পরিপূর্ণ' শুনতে মনে হয় খারাপ শোনায় না। এটাও মনে হয় আগে কোথাও শুনেছি ।
=============
"কথা বল আমার ভাষায়, আমার রক্তে।"
দর্শকসারি উপযুক্ত মনে হলো।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আমি পড়েছি তপন রায়চৌধুরীর বাঙালনামায়। বেশ যুৎসই মনে হয়েছিলো, আর্কাইভের ভেতরে নিঃস্তব্ধ, প্রাচীন, গম্ভীর, স্বল্পালোকিত পরিবেশটা শব্দটার মধ্যে ফুটে আছে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
বাঙালনামা-য় চোখে পড়েছিলো অভিলেখাগার শব্দটা। চমৎকার ও লেখায় খুবই উপযোগী, তবে মুখে বলায় ব্যবহার-বান্ধব কি না সে সংশয়টা থেকে যায়।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
হিমু, আপনার উদ্ভাবিত কিছু শব্দের সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে সচলায়তনেই। আরো আসবে, তা নিশ্চিত জানি। চলুক।
ব্লগানো বা পোস্টানো শব্দগুলো আমার কাছে দারুণ উদ্ভাবন মনে হয়। ভাষা তো এইভাবেই সমৃদ্ধ হয়, এগিয়ে যায়।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
অথচ অনেক বিদেশী একবর্ণ বাংলা না জেনেও শুধুমাত্র ঐ ইংরেজি শব্দগুলোর কারণে আমাদের কথাবার্তার সারাংশ দিব্যি বুঝে ফেলে।
সেই জন্য বিদেশে বিশুদ্ধ বাংলা বলি মাঝে মাঝে, কিন্তু বুঝতে পারি হাড়ে হাড়ে যে সেটা কত কঠিন।
আমি ভাষার সাবলীল ব্যাবহারের পক্ষে। তাই ব্লগানো, পোস্টানো এই শব্দগুলির আগমনকে স্বাগত জানাই। কেবল বাংলা বলার জন্য কঠিন শব্দগুলির ব্যাবহার আমার কাছে ঠিক মনঃপুত হয়না। বলাবাহুল্য এটা আমার ব্যাক্তিগত মত
সর্বাংশে একমত।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
দারুন উদ্যোগ! মাথা খাটাতে হবে মনে হচ্ছে।
-----------------------------------
যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
মাথা কি এখনো খাটছে? কিছু পাওয়া গেলো?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
মুখারে মনে পড়ে.........
কি মাঝি? ডরাইলা?
জুবায়ের ভাইকে একটা বিশাল ধন্যবাদ দিতেই হয় এই রকম একটা উদ্যোগের জন্য। আমার দৌড় সম্ভবত এই ধন্যবাদ পর্যন্তই। তবু চেষ্টা করব একটু হলেও ভূমিকা রাখতে।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
Gallery 'দর্শনাঙ্গন' কেমন হয়?
====================
অবিরাম ছুটে চলায় হঠাৎ থমকে যাওয়া
'
=========================================
নিজেকেই নিজে চিনি না, পরকে চেনার মিছে বাহানা
computer - প্রিয়সঙ্গী।
mouse - অন্যহাত।
keyboard - লেখাচাবি।
====================
অবিরাম ছুটে চলায় হঠাৎ থমকে যাওয়া
'
=========================================
নিজেকেই নিজে চিনি না, পরকে চেনার মিছে বাহানা
computer গণকযন্ত্র হলে কেমন হয়? কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ার রাগিব যেমন নিজের পরিচয় লেখেন গণকমিস্ত্রি।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ফ্লাইওভার : উড়াল-রাস্তা
বিউটি পার্লার: রূপ-ঘর/সাজঘর
ফাস্টফুড : দ্রুতাহার (দ্রুত আহার)
উড়ালরাস্তা সুন্দর, তবে উড়ালপথ বোধহয় একটু বেশি উচ্চারণ-বান্ধব।
সাজঘর সচরাচর গ্রীনরুমের বাংলা হিসেবে চালু। বিউটি পার্লারের বাংলা রূপঘরই ভালো।
দ্রুতাহার পছন্দ হলো।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
উইকিপিডিয়ার জন্য অনুবাদ করতে গিয়ে এই পরিভাষার জন্যই খ্যান্ত দিয়েছি (quit)।
তারপর:
Global warming = বৈশ্বিক উষ্ণায়ন; ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি
Landfill = বর্জ্যভূমি; আবর্জনাভূমি
এখান থেকে পছন্দনীয় পরিভাষাগুলো নিয়ে বাংলা উইকিপিডিয়ার পরিভাষা অংশে যোগ করে দিলে কেমন হয়?
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
উত্তম প্রস্তাব। কিন্তু আপনি উইকিতে ক্ষ্যান্ত দিলে চলবে কেন?
global warming-এর বাংলা ভুবনোষ্ণতা কেমন হয়?
বর্জ্যভূমি সুন্দর।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ক্ষ্যান্ত দিয়েছিলাম হবে.... (ক্ষ্যান্ত বানানটা ভুল করেছিলাম -- আগের বার ) ... এই কাজে লোকজন পাওয়া যাবে কি? ... একলা চলো রে... করে আর কতদুর যাওয়া যাবে!?
ক্ষ্যান্ত দিয়েছিলাম বিশেষত হজমের অযোগ্য বস্তু কামড় দিয়ে... সেটা ছিল কপিরাইট/ মেধাস্বত্ব বিষয়ের প্রবন্ধ। আশংকা হচ্ছিল যে শেষে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যাবে। আর এই কথার মারপ্যাচ-ই তো হল আইনের শক্তি। তাই আর আগাইনি। পরিচিত একজন হবিতব্য জাজ আছেন (সুপ্রিমকোর্টের)... ওনারও লেখালেখি করার বদভ্যাস আছে - ব্যাপারটা বলাতে আগ্রহও প্রকাশ করেছেন। তবে কম্পিউটার উপকারী কিন্তু একটু দুর্বোধ্য বস্তু ওনার কাছে। একদিন সময় করে ওনার বাসায় গিয়ে দেখিয়ে দিয়ে আসতে হবে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
এইসব বিষয়ে বিদ্যাবুদ্ধি না থাকলেও যদি একটু সময় থাকতো, তাহলেও দাঁত বসানোর চেষ্টা করতে পারতাম।
সঙ্গী কাউকে না কাউকে পেয়ে যাবেন, এটুকুই আশা করতে পারি।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আমি একটা কথা বলি কেউ রাগ কইরেন না ...
কম্পিউটার, কিবোর্ড, মাউস, টিভি, রেডিও, ফ্রীজ, বিউটি পার্লার, ফাস্টফুড এগুলির বাংলা করার দরকার আছে কি?
যেগুলি প্রচলিত হয়ে গেছে থাক না যেমন আছে, এসব শব্দ গ্রহণ করে বাংলা ভাষা দিন দিন সমৃদ্ধ হচ্ছে এভাবে ভাবলে হয় না?
নতুন নতুন ইংরেজি শব্দ, যেগুলি এখনো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার শুরু হয়নি সেগুলির বাংলা করাতে কোন সমস্যা নাই, আসলে করাই উচিৎ (যেমন landfill, green house effect) ... কিন্তু "কম্পিউটার, কিবোর্ড, মাউস, টিভি, রেডিও, ফ্রীজ, বিউটি পার্লার, ফাস্টফুড" আমাদের জীবনযাত্রায় এমনভাএ মিশে গেছে যে এগুলির বাংলা করার চেষ্টা এখন আর বিড়ম্বনা ছাড়া কিছু হবে না ...
দর্শককে "ভিউয়ার্স" বলার নিন্দা জানাই, কিন্তু টেবিলকে "মেজ" বলা সমর্থন করি না ...
................................................................................
রাগ করার প্রশ্নই নেই।
অনেক ইংরেজি শব্দ বাংলা হয়ে গেছে তা তো মূল লেখাতোই উল্লেখ করেছি। আপনার মতো আমিও বলেছি চেয়ার-টেবিলের বাংলা প্রতিশব্দ খোঁজা অর্থহীন। কমপিউটার-মাউস ইত্যাদি বিষয়েও একই রকম হতেই পারে।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্যে।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
একটু দ্বিমত আছে। এ শব্দগুলি প্রতিদিনের ব্যবহারের অংশ এমনি এমনি হয়নি, হয়েছে যথাযথ পরিভাষার অভাবে, আরো সূক্ষ্মভাবে ভাবলে বলা যায়, পরিভাষা সম্পর্কে সচেতনতা কিংবা নিজের ভাষা সম্পর্কে গর্বের অভাবে। পরিভাষা নিয়ে আমাদের ভেতরে উৎসাহ তো থাকতে হবে! একটা ভাষা কতটুকু সবল ও দূরবিস্তারী তা বোঝা যায় সে ভাষায় নতুন শব্দের মাধ্যমিক স্তরের ব্যবহার দেখে। ইংরেজিতে যেমন ল্যাটিন আর গ্রীকের সর্বোত্তম মাধ্যমিক ব্যবহার করা হয়েছে। এখনও নতুন কোন শব্দ তৈরি করা হয় গ্রীক আর ল্যাটিন থেকে নিয়ে, ইটিমোলজি দেখলেই বোঝা যায়।
বাংলায় মাউস বলা খুব সহজ, কারণ যখন মাউস প্রথম এসেছে, মাউসের সাথে তার পরিভাষাটি আমরা নেড়েচেড়ে কখনো দেখিনি। অভিকর্ষজ ত্বরণ কথাটি আমাদের মুখে সময়মতো তুলে দেয়া না হলে আমরা বলতাম যে গ্র্যাভিটেশনাল অ্যাক্সিলারেশন কথাটাই তো সোজা, আবার অভিকর্ষজ ত্বরণের মতো খটমট শব্দ কেন রে বাবা?
বাংলা ভাষার গ্রহণক্ষমতা এবং সৃজনক্ষমতা নিয়ে আমার মধ্যে কিছু ডাঁট (স্নবারি) কাজ করে। পরিভাষা নিয়েও পরীক্ষার সুযোগ আছে, সেটি কাজে লাগানোর মতো মানসিকতাকেও আমাদের লালন করা উচিত। টেবিলকে এতদিন পরে মেজ (ফারসী) বলার কোন মানে হয় না, কিন্তু নতুন ইংরেজি শব্দের পরিভাষা খোঁজার চেষ্টাটুকু সবসময় আমাদের মধ্যে কাজ করা উচিত। বিউটি পার্লার এর সহজ বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে সজ্জালয়, যদিও আমরা মুখে বলি না, হয়তো বলবোও না, কিন্তু লেখায় ব্যবহার করতে কোন সমস্যা নেই। রেডিওর বাংলা বহুদিন যাবৎ আছে, বেতার, আমরা সহজে বলি না, কিন্তু "বাংলাদেশ বেতার" এ ব্যবহার করি। সরল মৌখিক ব্যবহারের পাশাপাশিও কিছুটা গম্ভীর, লিখিত ব্যবহারের জন্যে পরিভাষার যথেষ্ঠ প্রয়োজন রয়েছে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আমার এই পোস্টের পেছনে সেটাই মূল কারণ। সম্পূর্ণ একমত।
এইখানে আমি কিছু দ্বিধাগ্রস্ত। শুধুমাত্র লেখালেখির জন্যে কিছু পরিভাষা, বিশেষত পেশাভিত্তিক ও কারিগরী, থাকা অবশ্যই সম্ভব। কিন্তু প্রতিদিনের মৌখিক ব্যবহারে লাগে, এই ধরনের শব্দগুলি উচ্চারণ-বান্ধব হওয়া খুব জরুরি বলে মনে করি।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
গম্ভীর ব্যবহারের জন্যে উচ্চারণবিরূপ হবার প্রয়োজন নেই তো। আর মূল বিদেশী শব্দও তো সবগুলো উচ্চারণবান্ধব নয়।
হাঁটুপানির জলদস্যু
মানছি। এখানেই ওই মানসিকতার ব্যাপারটা চলে আসছে। উচ্চারণে খটোমটো হলেও প্রচলিত অনেক ইংরেজি শব্দে এক ধরনের অভ্যস্ততা তৈরি হয়ে গেছে বলেই পরিবর্তনটা শক্ত। উচ্চারণ-বান্ধব হলে কিছুটা বাড়তি আগ্রহ হওয়া সম্ভব। ব্যতিক্রমও আছে। একটা খুব সাধারণ উদাহরণ, ইনস্যুরেন্স শব্দটি মুখে মুখে সারাক্ষণ আমরা বলি, অথচ বাংলায় বীমা শব্দটি চমৎকার এবং সহজে উচ্চারণযোগ্য।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
কার উদ্ভাবন জানা নেই, computer illiterate-এর বাংলা হিসেবে 'কম্পুকানা' আমার খুব পছন্দের (নিজে প্রায় ওই গোত্রের বলে হয়তো)। এখানে তুলে রাখা হলো।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
নতুন মন্তব্য করুন