বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে কথা বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে?

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি
লিখেছেন মুহম্মদ জুবায়ের (তারিখ: বিষ্যুদ, ২১/০২/২০০৮ - ১০:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রাজাকার-আল বদর বাহিনীর প্রাক্তন সংগঠক, নেতা ও দলপতি এবং অধুনা জামাতের দুই নেতা পাঠ্যপুস্তকে সংশোধিত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে "অসত্য" বলার সাহস করেছে।

আজকের 'প্রথম আলো'-র এই সংবাদে বিস্তারিত আছে।

এই লোকগুলি প্রমাণিত যুদ্ধাপরাধী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে তৎপর থেকেছে, আজও আছে। ৭১-এ নিরীহ মানুষকে খুন করার সপ্রমাণ অভিযোগ আছে তাদের নামে। নিজামী আজও নিজের এলাকায় মইত্যা রাজাকার নামে পরিচিত।

এরা বলবে কোনটা বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস? তাদের এই অধিকার কে দিলো?

আমাদের বোধহয় আশ্চর্য হওয়ার ক্ষমতাও লোপ পেয়ে যাবে খুব শিগগির।

সংযোজন:

৭১-এ গোলাম আজম, নিজামী ও মুজাহিদীর কীর্তিকলাপ বিষয়ে আমাদের জালাল ভাইয়ের সংগ্রহের একটি অংশ এনওয়াইবাংলা ডট কম-এ সংরক্ষিত আছে। লিংকগুলি নিচে:

গোলাম আজমের কীর্তিকলাপ
নিজামীর কীর্তিকলাপ
মুজাহিদীর কীর্তিকলাপ


মন্তব্য

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমারো মাথাটা একটু আউলা-ঝাউলা লাগছিলো। একটা ঘুম দিয়ে উঠে দেখলাম সব ঠান্ডা। গা সয়ে গেছে, বুঝলেন?

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আসলে সয়ে যে যায়নি তার প্রমাণ, পোস্ট করার কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনার একটা প্রতিক্রিয়া এলো। এই জিনিস সয়ে যাওয়ার নয়।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ২০০১ এর নির্বাচনের পর কাদের সিদ্দিকী একবার বলেছিলো না, "রাজাকারেরা আজকে পবিত্র সংসদে এসেছে কথা ঠিক, আবার এটাও ঠিক যে এই রাজাকারদের বাংলার মানুষই ভোট দিয়ে সংসদে এনেছে!"- অবস্থাটা হলো এমন যে আমরা নিজেরাই নিজেদের কফিনে পেরেক ঠুঁকেছি। এখন পঁচন ধরার পর এই পেরেক বের করতে সময় লাগছে আমাদেরই।

তাদের সাহস দেখে কষ্ট হয়। হায়েনাদের এই নোংরা সাহসের যোগানদাতা তো কোনো না কোনোভাবে আমরাই।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

এই কাদের সিদ্দিকীকে একসময় 'বাঘা সিদ্দিকী' বলা হতো। একবার বঙ্গভবনের কী একটা অনুষ্ঠানে নিজামীর পাশে বসে কথা বলা অবস্থায় তাঁর একটা ছবি কাগজে ছাপা হলো। দেখে মনে হয়েছিলো 'বাঘা সিদ্দিকী' এবার 'বিলাই সিদ্দিকী' হলেন! অথচ ৭১-এ দেখা হলে দু'জনের মধ্যে মাত্র একজনের জীবিত থাকার কথা।

এটা একটা উদাহরণ মাত্র। আরো শত-সহস্র আছে। নাহলে আমাদের এই দশা হয়!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

পরিবর্তনশীল এর ছবি

আমাদের বয়সী কিংবা আমাদের থেকে কম বয়সী যারা আছে
একটা খোঁচা তাদের প্রায় খেতে হয়। আমরা দেশের ইতিহাস নাকি
সঠিকভাবে জানি না।
এখন বুঝতে পারলাম, কারণ কি?
এ দেশে দেশবিরোধীরা দেশের ইতিহাস (পাঠ্য বইয়ের ভুল ইতিহাস বোধ-হয় এরই কারণ) নিয়ে কথা বলে।
নতুন-দের অজ্ঞতা নিয়ে না বকে - এই অজ্ঞতার মূল নিঃশেষ করতে হবে অচিরেই।
---------------------------------
চোখের পাতায় হাত রেখে ওরা আমাকে স্বপ্ন দেখার যন্ত্রণা দেয়।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে যে বিভ্রান্তি তার দায় আমাদের শাসকদের মতলববাজি। ফলে ইতিহাসের নানারকম সংস্করণ আমরা দেখি। যুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার জন্যে, উদাসীন করে তোলার জন্যে যা যথেষ্ট। তবু আজও নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানতে আগ্রহী দেখলে ভালো লাগে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

কনফুসিয়াস এর ছবি

তাদেরকে বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে কথা বলবার অধিকার আসলে আমরাই দিয়েছি।
আমরা মানে, আমি, আপনি, তিনি, সে- সবাই। এটাই দুঃখ।
-----------------------------------
যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

অমি রহমান পিয়াল এর ছবি

আপোষের এই উপত্যকা আমাদের দেশ না


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই


তোর জন্য আকাশ থেকে পেজা
এক টুকরো মেঘ এনেছি ভেজা
বৃষ্টি করে এক্ষুনি দে তুই
বৃষ্টি দিয়ে ছাদ বানিয়ে শুই

অতিথি লেখক এর ছবি

অচিরেই স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে অপতৎপরতায় লিপ্ত সকলের বিচার হয়ে যাওয়া উচিত। অপতৎপরতা বলতে সে সময়ে স্বাধীনতা বিরোধী যে কোন কর্মকাণ্ডকে বুঝাচ্ছি। শুধু যুদ্ধাপরাধী বা রাজাকার বললে স্থুল করে বলা হয়।

পুরো বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এগিয়ে যেতে হলে আগে তো স্থিতিশীলতা লাগবে। কিন্তু এই বিচার না হলে রাজনীতি ও সমাজে স্থিতিশীলতা আসা সম্ভব নয়, যে স্থিতিশীলতাটাই মুখ্য। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ, তারা যেন দ্রুত সুবিচার করে পরবর্তী সরকারকে একটা ফ্রেশ স্টার্টের সুযোগ করে দেন।

-----------------
মুহাম্মদ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

অনুরোধে কিছু হবে না। জাহানারা ইমিম চলে গেছেন খুব অসময়ে। তেমন যোগ্য ও একাগ্র কাউকে আমরা আর পেলাম না বলে সেই আন্দোলনও আর হলো না। একদিন হবে, এই আশাটা জাগিয়ে রাখি।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

এম. এম. আর. জালাল এর ছবি

এই কাদের সিদ্দিকীকে একসময় 'বাঘা সিদ্দিকী' বলা হতো। একবার বঙ্গভবনের কী একটা অনুষ্ঠানে নিজামীর পাশে বসে কথা বলা অবস্থায় তাঁর একটা ছবি কাগজে ছাপা হলো। দেখে মনে হয়েছিলো 'বাঘা সিদ্দিকী' এবার 'বিলাই সিদ্দিকী' হলেন! অথচ ৭১-এ দেখা হলে দু'জনের মধ্যে মাত্র একজনের জীবিত থাকার কথা।

আমরা মানে, আমি, আপনি, তিনি, সে- সবাই।

সত্য কথা।====
এম. এম. আর. জালাল
"ফিরে দেখুন একাত্তর ঘুরে দাঁড়াক বাংলাদেশ।"


এম. এম. আর. জালাল
"ফিরে দেখুন একাত্তর ঘুরে দাঁড়াক বাংলাদেশ।"

আরশাদ রহমান এর ছবি

একমত @ কনফুসিয়াস।
দায় শুধু শাসকদের নয় আমাদেরও।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

শুনতে ভাল না লাগলেও কথাটা সত্যি।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

৭১-এ গোলাম আজম, নিজামী ও মুজাহিদীর কীর্তিকলাপ বিষয়ে আমাদের জালাল ভাইয়ের সংগ্রহের একটি অংশ এনওয়াইবাংলা ডট কম-এ সংরক্ষিত আছে। মূল পোস্টের সঙ্গে লিংকগুলি জুড়ে দেওয়া হলো। দলিল গুলি পিডিএফ ফর্ম্যাট-এ, সুতরাং যে কেউ ইচ্ছে করলে সংগ্রহেও রাখতে পারবেন রেফারেন্স হিসেবে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

দ্রোহী এর ছবি

বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে কথা বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে?

কে আবার দেবে? আমরাই দিয়েছি.......... মসনদে বসিয়ে ××× চাটতে বাকী রেখেছি কি?


কি মাঝি? ডরাইলা?

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

কনফুসিয়াস, আরশাদ রহমান, প্রকৃতিপ্রেমিক ও দ্রোহীর মন্তব্যে আমি দ্বিমত পোষণ করি।

একটা জিনিস খেয়াল রাখা দরকার যে বাংলাদেশের প্রায় ৩৬ বছরের ইতিহাসে অধিকাংশ সময় শাসনক্ষমতায় ছিলো অনির্বাচিত শক্তি। যারা নির্বাচিত হয়ে এসেছিলো তারাও সাধারণ মানুষের স্বার্থের বা মনোভভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করেছে বলা মুশকিল।

ফলে, স্বাধীনতাবিরোধীদের সমাজ-রাজনীতিতে পুনঃস্থাপন ও পুনর্বাসনের পেছনে ইন্ধন ও প্রশ্রয় ছিলো ক্ষমতাসীনদের, ক্ষমতাহীন জনগণের নয়। ক্ষমতাহীন আমি সে দায় নিতে অনিচ্ছুক। আমাদের শাসকরা জনগণের অনুভূতির মূল্য দেয়নি, তার দায় আমার নয়। আর এই ক্ষমতাহীন আমাদের সামর্থ্য ছিলো না দানবীয় রাষ্ট্রশক্তির ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাওয়ার। পেশীর জোরে, ভয় দেখিয়ে তাদের ইচ্ছা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। মতলববাজি করে ইতিহাস ভুলভাবে লেখা হয়েছে। ভুল শেখানো হয়েছে। আমি এবং আরো কোটি মানুষ তার ভুক্তভোগী, কিন্তু তবু বলি, দায় আমাদের নয়।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

যুবায়ের ভাই পুরো সঠিক বলেছেন। দায় জনতার ওপর চাপিয়ে দিয়ে পার পাওয়া যাবে না। এই মুহূর্তেও আমরা বাস করছি এক অনির্বাচিত সরকারের অধীনে। যারা নির্বাচিত হয়ে এসেছিলো, তারা শর্টকাট প্রয়োজনের দিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। তাদের ভুলকে ঠিকমত লাথি মারার আগেই আবার স্বৈরাচার উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। অচিরেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া উচিত জনতার আদালতে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

দ্রোহী এর ছবি

হবে না। লিখে রাখেন, হবে না বিচার। উল্টো তারা আরও উপরের দিকে উঠে যাবে।


কি মাঝি? ডরাইলা?

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

হতাশাগ্রস্ত হলে তাদেরই লাভ।
কি হবে/না হবে, তা অনিশ্চিত। তাই কি হওয়া উচিত, তার দিকেই মনোযোগ দেই। আমরা যত ৩৭ বছরের ব্যর্থতার ডায়লগ আওড়াবো, তারা ততোই খুশী হবে। আগে কাজ শেষ হোক, তারপরে ভুল-ঠিক নিয়ে কথা বলা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

একমত।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

"আমরা যত ৩৭ বছরের ব্যর্থতার ডায়লগ আওড়াবো, তারা ততোই খুশী হবে। আগে কাজ শেষ হোক, তারপরে ভুল-ঠিক নিয়ে কথা বলা।"
এইটা ইম্পর্টেন্ট ,,, আগে কাজ শেষ হোক ,,, এখন কিভাবে শেষ করতে হবে সেটা আলোচনা করা উচিত
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।