যদি সে ভালো না বাসে - অখণ্ড

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি
লিখেছেন মুহম্মদ জুবায়ের (তারিখ: সোম, ২৮/০৪/২০০৮ - ১১:০৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

লেখাটি সচলায়তনে ধারাবাহিক পোস্ট করতে শুরু করার পর কেউ কেউ স্পষ্টই খণ্ড খণ্ড করে পড়তে অনাগ্রহ জানিয়ে দিলেন। বললেন, একত্রে দিলে পড়তে সুবিধা হয়, নাহলে পাঠকের পাঠ-ধারাবাহিকতা ভঙ্গ হওয়ার আশংকা।

তখন মাঝপথে থামিয়ে দেওয়ার উপায় নেই। সুতরাং চললো। যাঁরা শুরুর দিকে পড়তে শুরু করেছিলেন, তাঁদের কেউ কেউ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন বলে সন্দেহ করি। অনেকে শেষও করলেন পড়ে। পোস্ট শেষ হওয়ার পর মনে হলো, বাঁচা গেলো।

রচনাটি নিয়ে আমারই নিজেরই প্রচুর অসন্তোষ। ধারাবাহিক প্রকাশের কালে একাধিক মন্তব্যের উত্তরে খুব বেশি কিছু এই লেখায় আশা না করার আবেদনও জানিয়েছি। সুতরাং যাঁরা পড়েননি তাঁদের আন্তরিকভাবেই ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম আলাদা পোস্টে

এখন সেখানে মন্তব্যের ঘরে দেখছি, অনেকে এখনো পড়তে আগ্রহী যদি অখণ্ড অবস্থায় পাওয়া যায়। আমার লেখা পড়তে কেউ আগ্রহ প্রকাশ করবেন আর আমি তাতে সাহায্য করবো না - তাই হয়? চোখ টিপি

সুতরাং অখণ্ড পিডিএফ আকারে তুলে দেওয়া হলো।


মন্তব্য

কনফুসিয়াস এর ছবি

অখন্ড পিডিএফের অপেক্ষায় ছিলাম, প্রথম সুযোগেই আজ নামিয়ে নিয়ে পড়ে ফেললাম পুরোটা তরতর করে।
জুবায়ের ভাইয়ের লেখনীর সব গুণাগুণ উপস্থিত এই লেখায়, পড়ে ভাল লাগলো, তবে সেই সাথে অল্প কিছু দোষও যুক্ত হয়েছে বলে মনে হলো। হাসি
প্রথমেই বলবো- উপন্যাসের নাম আমার পছন্দ হয়নি। শুরুতেই হয়নি, কোন কারণ ছাড়াই, এক ধরণের গোয়ার্তুমিই বলা যায় এটাকে। তারপরে পুরো লেখাটা পড়ার পরে সেই অপছন্দটা আবারো পোক্ত হলো। উপন্যাসের কাহিনি ঠিক এরকম নামের সাথে যায় না।
শুরুটা চমৎকার। ডিমের কুসুমের সাথে সকালের উপমা পড়েই খানিক্ষণ চোখ বুজে ছিলাম। চমৎকার ভাবনা। কিন্তু পরবর্তীতে আরো কয়েকবার এই কথাটার পুনরুল্লেখ দেখে মন খারাপ হলো। এই দারুণ কথাটা লেখকের কাছ থেকে সচেতনতা পেয়ে গেছে বেশি বেশি, আরেকটু নির্লিপ্ততা পেলে সৌন্দর্য বেড়ে যেত বহুগুণে!

প্রতিটা পর্বে উত্তম পুরুষে প্রত্যেকের গল্প শুনতে ভাল লাগছিল। কিন্তু, পাঠক হিসেবে আমাকে একটু কম সময় দিয়ে ফেলেছেন লেখক। জামালের সাথেই রিলেট করা গেছে ভালমতন, কিন্তু নিশি বা নীলার সাথে সেরকম একাত্মতার সুযোগ পাওয়া যায় নি তেমন।

বেশ কয়েকবার হতাশ হয়েছি, অনেকগুলো গল্পের আভাস পেয়েও সেই গল্পগুলোর পূর্ণতা না পেয়ে। সীমিত কলেবর প্রধান কারণ কী? হতে পারে। কিন্তু, আরেকটু বড় জায়গায়, যদি সম্ভব হয়, এই উপন্যাসকে সরাতে পারলেই ভাল হত।

মাঝখানে একটা জায়গায়, জুবায়ের ভাই সম্ভবত অমনোযোগী ছিলেন। জামালের বর্ণনায়, যখন সে বলে, ছেলে সাজিদের সাথে তার সম্পর্ক সহজ রাখা গেছে- ভাল লাগে। কিন্তু দু/তিন প্যারা বাদেই ঠিক একই কথার পুনরুল্লেখ কেমন দুর্বল করে দেয় স্টেটমেন্ট।

ঘটনার ঘনঘটা হয়ে গেছে বলেও মনে হলো। খুব অল্প জায়গায় চরিত্রের ছড়াছড়ি, কিন্তু প্রত্যেকেই তারা আউট অব ফোকাসের বাসিন্দা রয়ে গেলেন। জামালের সৎ ভাই বোন, বা সৎ মা এবং কোন কোন ক্ষেত্রে বাবার কিছু ঘটনাও এইটুকু জায়গায় বাহুল্য মনে হয়েছে। বরং অন্যদিকে রিনি অথবা সাজিদ আরও কিছু জায়গা দাবী করতেই পারে।
একদম শেষে এসে ইরফান যে রম্যলেখাটি পাঠ করে, লেখা হিসেবে সেটি অসাধারণ, কিন্তু পুরো উপন্যাসের আয়তনের তুলনায় সেটিকে অপ্রয়োজনীয়রকম দীর্ঘ মনে হয়েছে।

সব মিলিয়ে, আমি বলবো, জুবায়ের ভাই হেলাফেলাই করেছেন উপন্যাসটা নিয়ে। হয়ত সেটা সময়ের অভাব, হয়তো সেটা কলেবরের সীমাবদ্ধতা, কিন্তু পাঠক বড়ই নির্দয়, পাঠকের চাহিদাও অপরিসীম।
সব শেষে শুধু এটুকুই বলবো- ঠিক এই উপন্যাসটাই, নিঃসন্দেহে জুবায়ের ভাই আরও অনেক অনেক ভাল লিখতে পারতেন।

-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

মন্তব্যে তারকা দেওয়ার নিয়ম কেন রাখা হয়নি কে জানে! থাকলে এই অসাধারণ পর্যবেক্ষণ/আলোচনা/সমালোচনা পাঁচ-তারকা খচিত হওয়ার উপযুক্ত হতো।

রচয়িতা এবারে যথার্থই কোণঠাসা। কৈফিয়ত নেই। ধন্যবাদ কনফুসিয়াস, দুর্বলতাগুলি স্পষ্ট করে নির্দেশ করার জন্যে। এগুলি অনেক কাজে লাগবে লেখাটি পুনর্লিখনের সময়। না-হয়ে-ওঠা উপন্যাসটি সচলে পোস্ট করার প্রত্যক্ষ সুফল পাওয়া গেলো, যা আমার উদ্দেশ্য ছিলো।

আবারও ধন্যবাদ ও অশেষ কৃতজ্ঞতা।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

শেখ জলিল এর ছবি

ধন্যবাদ।
সেভ করে রাখলাম। চার পর্ব পর আর পড়া হয়নি।
এবার সম্পূর্ণ উপন্যাস ধীরে ধীরে পড়তে পারবো।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

তারেক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ জুবায়ের ভাই। এইভাবে আবদার পূরণ হলে কী যে ভালো লাগে ! একটানে পড়ে ফেলেছি। আমি ভেবেছিলাম আরেকটু বড় হবে কিন্তু মাত্র চল্লিশ পৃষ্ঠা। এত পুঁচকে কেন? খাইছে
আপনার আরও বড় উপন্যাস চাই। বুঁদ হয়ে সারাদিন ধরে পড়া যায় মত... হাসি

এখন কেমন আছেন?
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

দ্রোহী এর ছবি

বিভিন্ন রকম ঠ্যালায় পড়ে "যদি সে ভালো না বাসে" কয়েক খন্ডের পর আর পড়া হয়ে উঠেনি।

ডাউনলোড করলাম। এইবার দ্যাখেন ক্যামনে পড়ি।


কি মাঝি? ডরাইলা?

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

জুবায়ের ভাই সচলায়তনে পিডিএফটি আপলোড করেছিলেন। কিন্তু কোন এক আপডেটের কারনে লিংকটি হারিয়ে যায়। লিংকটি এই মন্তব্যে যুক্ত করে দিলাম

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।